১৯ নভেম্বর ২০২৩, ৪:৩২ পিএম
ম্যাচ সামারি
ভারত ২৪০ (৫০ ওভার)
রাহুল ৬৬ (১০৭) স্টার্ক ৩/৫৫
কোহলি ৫৪ (৬৩) কামিন্স ২/৩৪
অস্ট্রেলিয়া ২৪১/৪ (৪৩ ওভার)
হেড ১৩০ (১২০) বুমরাহ ২/৪৩
লাবুশেন ৫৮* (১১০) সিরাজ ১/৪৫
ফল : অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচের আগের দিন প্যাট কামিন্স বলেছিলেন, ভারতীয় সমর্থকদের চুপ করিয়ে দিতে চান। অধিনায়কের ইচ্ছাকে বাস্তবে রুপ দিতেই যেন মাঠে নামলেন অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। রোহিত শর্মা যথারীতি আরেকটি ঝড়ো ইনিংস খেললেন বটে, তবে তার বিদায়েই খেই হারানোর শুরু স্বাগতিকদের। উজ্জীবিত বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে চেপে ধরল অজিরা। দায়িত্বশীল দুটি ইনিংসে ভারতকে একটা লড়াই করার মত পুঁজি এনে দিলেন ভিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। তবে বিশ্বকাপ ফাইনাল মানেই ভিন্ন দল হয়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়া শানাল পাল্টা আক্রমণ। শুরুতেই কয়েকটি উইকেট নিয়ে আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ভারত সমর্থকদের গর্জন গেল চুপসে। রোহিত-কোহলিদের দর্শক বানিয়ে, অবিশ্বাস্য এক সেঞ্চুরিতে প্যাট কামিন্সের দলকে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মত বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দিলেন ট্রাভিস হেড।
আহমেদাবাদের নারেন্দ্রা মোদি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের একপেশে ফাইনালে ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাটিং করে ভালো শুরুর পর মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ভারত পায় ২৪০ রানের মামুলি সংগ্রহ। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারালেও হেড ও মার্নাস লাবুশেনের রেকর্ড জুটিতে ৭ ওভার হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় কামিন্সের দল।
১৯৮৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়া শেষ ১০ আসরের ছয়টিতেই চ্যাম্পিয়ন হল। এর আগেরটি এসেছিল ঘরের মাটিতে, ২০১৫ সালে।
আহমেদাবাদের ১ লক্ষ ৩০ হাজার দর্শকদের উল্লাসে মাতিয়ে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্যাট কামিন্স। ব্যাটাররা দুর্দান্ত ফর্মে বলেই হয়ত আগে ব্যাটিং আশাবাদী করছিল ভারতীয় সমর্থকদের। তাদের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের আরেকটি প্রদর্শনী মেলে ধরেন রোহিত। অন্যপ্রান্তে ইনফর্ম শুভমান গিল সুবিধা না করতে পারলেও ভারত অধিনায়ক শুরু থেকেই ছিলেন সেরা ছন্দে।
রোহিতের দুরন্ত ব্যাটিংয়ের মাঝেই অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন মিচেল স্টার্ক। শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মাত্র ৪ রানে ক্যাচ তুলে দেন শুভমান। ক্রিজে গিয়ে কয়েকটি বাউন্ডারিতে রোহিতের সঙ্গে রানের চাকা বাড়িয়ে দেন কোহলিও। এই দুজনের ব্যাটে ৮ ওভারেই ভারত তুলে ফেলেছিল ৬১। এরপর থেকেই অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচে ফেরার শুরু।
আরও পড়ুন: ২৪০ রান নিয়ে লড়াই করতে পারবে ভারত?
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আক্রমণে আসার পর প্রথম তিন বলে ১০ রান করার পর আরেকটি বড় শটের চেষ্টা ছিল রোহিতের। কিন্তু টাইমিং না হওয়ায় টপ এজ হয়ে বল চলে যায় আকাশে। দৌড়ে কভার পয়েন্টে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচে রোহিতের ৩১ বলে ৪৭ রানের ইনিংসের ইতি টানেন ট্রাভিস হেড। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার চার মারেন ৪টি, আর ছক্কা ৩টি। পরের ওভারে কামিন্সের আঘাত।
ভারতের চাপ বাড়িয়ে শেষের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শ্রেয়াস আইয়ার ফেরেন মাত্র ৪ রানেই। পাওয়ার প্লেতে আক্রমনাত্বক ব্যাটিং করা ভারতের রানের চাকা এরপর থেকে ধীর হতে থাকে।। অস্ট্রেলিয়ার আঁটসাঁট বোলিংয়ে কোহলি ও রাহুলকে সংগ্রাম করতে হয় রানের জন্য, বিশেষ করে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার রাহুলকে।
সাবধানী ব্যাটিংয়ে এই বিশ্বকাপে টানা পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন কোহলি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে অর্ধশত রানের দেখা পান ভারত তারকা। মাঝের ওভারগুলোতে ম্যাক্সওয়েল-অ্যাডাম জাম্পারা কতোটা ভালো ছিলেন, সেটার প্রমাণ মেলে ইনিংসের একটি পর্যায়ে ভারতের ৯৭ বল পর বাউন্ডারি মারায়। সেটি আসে রাহুলের ব্যাট থেকে, যা তার ইনিংসের একমাত্র বাউন্ডারিও।
ফিরতি স্পেলে এসে কোহলিকে বোল্ড করে আহমেদাবাদে সুনসান নীরবতা নামান কামিন্স। লাফিয়ে ওঠা বলে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার, কিন্তু বল টেনে নেন স্ট্যাম্পে। আর তাতে শেষ হয় ৫৪ রানের ইনিংস এবং অসাধারণ একটি বিশ্বকাপও। ১১ ম্যাচে প্রায় ৯৬ গড় ও ৩ সেঞ্চুরিতে বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ ৭৬৫ রান করেছেন কোহলি। তার বিদায়ের পর ইনিংস টেনে নেওয়ার দায়িত্বটা ছিল রাহুলের। মন্থর ফিফটি করলেও শেষের দিকে তার ঝড় তোলার সামর্থ্য আশা যোগাচ্ছিল ভারতকে।
তবে চাপ ধরে রেখে অন্যপ্রান্তে রবীন্দ্র জাদেজাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরান জশ হ্যাজলউড। সমর্থকদের হতাশ করে ৬৬ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন রাহুল। রাউন্ড দা উইকেটে এসে স্ট্রার্কের করা চমৎকার এক ডেলিভারিতে আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। বল খেলেন ১০৬টি। শেষ ৪ উইকেটে মাত্র ৩৪ রান করতে সমর্থ হয় ভারত। সুরিয়াকুমার যাদব সহ টেল এন্ডারদের কেউই পারেননি দ্রুত রান তুলতে। ফলে এক পর্যায়ে ২৮০ প্লাস স্কোরের দিকে চোখ রাখা ভারতকে থামতে হয় ২৫০ রানের আগেই। ৫৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার স্টার্ক।
আরও পড়ুন: কোহলি,রোহিতদের সমর্থন দিতে গ্যালারিতে তারকাদের মেলা
রান তাড়ায় প্রথম বল থেকেই ছড়ায় রোমাঞ্চ। জাসপ্রিত বুমরাহ’র বলে ডেভিড ওয়ার্নার স্লিপে একটা সুযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু স্লিপে থাকা দুই ফিল্ডারের ফাঁক গলে হয়ে যায় বাউন্ডারি। ঘটনাবহুল প্রথম ওভারে অস্ট্রেলিয়া করে ১৫ রান। টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম ওভারে উইকেট নেওয়াটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলা মোহাম্মদ শামি ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন। দ্বিতীয় বলে ফিরিয়ে দেন ওয়ার্নারকে। আহমেদাবাদে তখন কান পাতা দায়।
চার ও ছক্কায় মিচেল মার্শের শুরুটা ছিল দারুণ, কিন্তু বুমরাহ'র অনেক বাইরের বল তাড়া করে রাহুলকে ক্যাচ দেন এই অলরাউন্ডার। আসরে আলো ছড়াতে না পারা স্টিভ স্মিথ ফাইনালেও হতাশ করেন দলকে। বুমরাহ’র ভেতরে ঢোকা একটি বলে এলবিডব্লিউর ফাঁকে পড়েন তিনি। যদিও রিভিউ নিলেই বেঁচে যেতেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার, কারণ বল পিচ করেছিল অফস্ট্যাম্পের বাইরে।
৪১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন প্রচন্ড চাপের মুখে অস্ট্রেলিয়া। তবে ক্রিজে যে ছিলেন হেড, যিনি আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সেমিফাইনালেও রান তাড়ায় ব্যবধান গড়ে দিয়েছিলেন। এদিন অবশ্য একটু হিসেবী ব্যাটিং করেছেন এই বাঁহাতি, পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী ব্যাট চালিয়ে বাজে বল পেলেই কেবল কাজে লাগিয়েছেন। ফলে ক্রমেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে থাকে ভারত। শিশিরের প্রভাবে স্পিনারদের জন্য বল গ্রিপ করা কঠিন হয়ে যাওয়ায় সেভাবে কার্যকর হতে পারেননি কুলদীপ যাদব ও জাদেজা। সেই সুযোগে ফিফটি তুলে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যান হেড। টেস্ট মেজাজে ব্যাটিংয়ে অন্য প্রান্তে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন লাবুশেন।
ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারতকে একেবারেই ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়ে সেঞ্চুরিও করেন হেড। তৃতীয় অস্ত্রেলিয়ান ব্যাটার হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে শতরানের দেখা পেয়েছেন তিনি। পুরো ভারতকে হতাশায় ডুবিয়ে লাবুশেনকে নিয়ে ১৯২ রানের জুটিতে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আউট হন হেড। এর আগে খেলেন ১২০ বলে ১৩৭ রানের এক ইনিংস, যেখানে চার ছিল ১৫টি ও ছক্কা ৪টি।
তবে লাবুশেন অপরাজিত থাকেন ১০৮ বলে ৫৮ রানে। ৪৩তম ওভারের শেষ বলে উইনিং রান আসে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে। রাহুল, সিরাজদের চোখের জলে ভাসিয়ে শিরোপা উল্লাসে মেতে ওঠে অস্ট্রেলিয়া দল।
২৬ জুন ২০২৫, ৭:০৪ পিএম
গল টেস্টে বীরত্বপূর্ণ ড্র থেকে টনিক নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। টেস্ট স্ট্যাটাসের রজত জয়ন্তী উৎসবের আঁচও লাগেনি ক্রিকেটারদের গায়ে। কলম্বোর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শ্রীলঙ্কা স্পিনারদের বিষধর ছোবলে গল-এর অর্জন দিয়েছে বিসর্জন।তৃতীয় দিনেই কলম্বো টেস্টের গতিপথ নির্ধারিত হয়ে গেছে।
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় কলম্বোর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আর একটি বড় ব্যবধানে হারের পথ তৈরি হয়েছে। চতুর্থ দিনের চ্যালেঞ্জটা ছিল ইনিংস হার এড়ানো। তবে এই দিনে শেষ ৪ জুটির পক্ষে ৯৭ রানের সেই চ্যালেঞ্জ পাড়ি দেয়া দুরূহ হয়ে গেছে। শেষ ৪ জুটি এদিন খেলেছে মাত্র আধ ঘন্টা। যোগ করতে পেরেছে মাত্র ১৮ রান। তৃতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ থেমেছে ১৪৪-এ। ফলে ইনিংস এবং ৭৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান চক্রে ০-১ এ সিরিজ হতাশার শুরু করেছে বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে বেশ ক'টি স্পটে ধরেছে ফাঁটল। বল পড়ে লো বাউন্স এবং আনইভেন বাউন্স করা শুরু করে দিয়েছে। তাতেই শ্রীলঙ্কার দুই স্পিনার প্রবথ জয়সুরিয়া-থারিন্দু রত্নায়েকের বল ঘুরেছে যথেষ্ট। আগের দিন ১৩ রানে ব্যাটিংয়ে থেকে স্পিনারদের গর্জে ওঠার দৃশ্য দেখেছেন লিটন। চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় ওভারে বলের পিচিং পয়েন্টের ফাটল, গর্ত দেখিয়ে লিটন করেছিলেন অভিযোগ।
তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বড় হামানদিস্তা এনে ফাটল সমান্তরাল করেও বিপর্যয় থামানো সম্ভব হয়নি। মাঠকর্মীদের চেষ্টায় সনাতনী কায়দায় পিচ সমান্তরাল করার চেষ্টার পরের বলেই লিটন প্রবথ জয়সুরিয়ার টার্নিং ডেলিভারিতে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে যেয়ে উইকেটের পেছনে দিয়ে এসেছেন ক্যাচ (৪৩ বলে ১৪)। দিনের ৫ম বলে লিটনের এভাবে চলে যাওয়া টেল এন্ডারদের ভালই সংক্রমিত করেছে। প্রথম ইনিংসে লেজের জোরে ২৪৭ পর্যন্ত ইনিংস টেনে নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় ইনিংসে লেজের জোর দেখাতে পারেনি নাজমুল হাসান শান্ত'র দল।
আগের দিনের পড়ন্ত বেলা থেকে শুরু করা প্রবথ জয়সুরিয়ার স্পেলটি ভয়ংকর (৬-০-১৮-৪) রূপ পেয়েছে। এদিন তিন শিকার করেছেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। লিটনকে দিয়ে শুরু। পরের ওভারে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে নাঈম হাসান (৮ বলে ৫) স্ট্যাম্পিংয়ে কাটা পড়েছেন। তার পরের ওভারে তাইজুল দিয়েছেন রিটার্ন ক্যাচ (১৫ বলে ৬)। তাতেই টেস্ট ক্যারিয়ারে ত্রয়োদশতম ৫ উইকেট শিকার (১৮-২-৫৬-৫) পূর্ণ করেছেন প্রবথ জয়সুরিয়া। এবাদতকে এলবিডাব্লুউতে ফিরিয়ে শেষ শিকারটি করেছেন আর এক বাঁ হাতি স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকে। তার শিকার ২টি (৫.২-০-১৯-২)।
একদিন আগেই বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার রজত জয়ন্তী উৎসব করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিশাল কেক কেটে টেস্ট মর্যাদার রজত জয়ন্তী উৎসবে উন্মোচিত হয়েছে টেস্ট ক্রিকেটারদের অনার্স বোর্ড। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা করেছেন অতিথিরা। তবে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ওই উৎসব থেকে টনিক নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। গল টেস্টে বীরত্বপূর্ণ ড্র ফিকে হয়ে যাচ্ছে কলম্বোতে।
কলম্বোর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ দলের বিপর্যস্ত অতীতটাই যেনো আর একবার ফিরে পেতে যাচ্ছে শান্ত’র দল। ইতোপূর্বে এই ভেন্যুতে ৩টি টেস্টের প্রতিটিতেই বড় হারকে নিয়তি বলে মেনে নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ২০০১ সালে ইনিংস ও ১৩৭ রানে, ২০০২ সালে ২৮৮ রানে এবং ২০০৭ সালে ইনিংসও ২৩৪ রানে হারের সেই কষ্টটা এবারো বুঝি ভুলিয়ে দিতে পারছে না বাংলাদেশ দল। তৃতীয় দিনে এসে টেস্টের গতিপথ প্রায় নির্ধারিত হয়ে গেছে। তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ১১৫/৬।
এই ভেন্যুতে এখন আরও একবার ইনিংস হারের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ইনিংস হার এড়ানোর জন্য এখন দরকার ৯৭ রান। যেভাবে বল ঘুরতে শুরু করেছে, শ্রীলঙ্কার তিন স্পিনার যেভাবে টুটি চেপে ধরেছে, তাতে আপাতদৃষ্টিতে ইনিংস হার এড়ানোটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এদিন দু দলের স্পিনারদের ছোবলে ২৮৩ রানে পড়েছে ১৪টি উইকেট। ২৯০/২ স্কোর নিয়ে এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কা থেমেছে ৪৫৮/১০-এ। এই দিন শ্রীলঙ্কার ৮ উইকেট ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ ১৬৮ রানে। দিনের প্রথম ঘন্টায় ৫২ রান যোগ করে ৩ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার বড় লিডের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ বোলাররা। লাঞ্চের পর ৭০ মিনিটে স্কোরশিটে ৫৭ উঠতে শ্রীলঙ্কা হারিয়েছে শেষ ৪ উইকেট।
দিনের শুরুটা করেছিলেন তাইজুল ইসলাম। দিনের ৬ষ্ঠ ওভারে আগের দিনের সেঞ্চুরিয়ান পাথুম নিশাঙ্কাকে কাভারে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন তিনি। গল-এ ১৮৩’র পর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে থেমেছেন এই সেঞ্চুরিয়ান ১৫৮-তে। ধনঞ্জয়াকে সেট হওয়ার আগে ফিরিয়ে দিয়েছেন তাইজুল। আর্ম বলে ধনঞ্জয়াকে (১০) করেছেন এলবিডাব্লুউ।
লাঞ্চের পর থারিন্দু (১০) এবং আসিথাকে শিকারে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৭তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের মাইলস্টোন পূর্ণ করেছেন (৪২.৫-৪-১৩১-৫)।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এমন কৃতিত্ব তাইজুলের জন্য দ্বিতীয়বার। আর দুবারই শ্রীলঙ্কার মাটিতে। ২০২১ সালে পাল্লেকেলের (৫/৭২) পর এবার সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাবে পেলেন ইনিংসে পাঁচ উইকেটের দেখা।
গল টেস্টে নিজেকে চেনানো অফ স্পিনার নাঈম হাসানও এদিন দারুণ বল ঘুরিয়েছেন। আগের দিন চান্দিমালের শিকারী নাঈম টেস্টের তৃতীয় দিন শিকার করেছেন ২ উইকেট। সেঞ্চুরির পথে সওয়ার কুশল মেন্ডিজকে (৮৭ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় ৮৪) ফাঁদে ফেলে স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। দিনুশাকে (১১) করেছেন বোল্ড। টেস্টে ফেরাটা সুখকর হয়নি মিরাজের। ৭৫ রান খরচায় উইকেটহীন কাটিয়েছেন এই অফ স্পিনার।
ইনিংস হার এড়াতে হলে করতে হবে ২২২। এই টার্গেটটা সম্ভবত মাথায় না রেখেই তৃতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে বাংলাদেশ দল। তার প্রতিফলনই ছিল ব্যাটিংয়ে। আগের ৭টি টেস্টে ৩৯-এর বেশি করতে না পারা এনামুল হক বিজয় এদিন এসেই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেছেন। এমন মেজাজটা ধরতে পেরে আসিথা দিয়েছিলেন বাউন্সার। সেই বাউন্সারের জবাব হুকে দিতে যেয়ে নিজের মৃত্যু ডেকে এনেছেন বিজয়। দিয়ে এসেছেন শর্ট লেগে ক্যাচ (১৯ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ১৯)।
৩১ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপের ব্যাটিং পার্টনার সাদমান বাঁহাতি স্পিনার প্রবথ জয়সুরিয়াকে কাভারে খেলতে যেয়ে ক্যাচে থেমেছেন (২৪ বলে ১২)। শ্রীলঙ্কা সিরিজে আগের তিনটি ইনিংসের তিনটিতেই মুমিনুল দিয়ে এসেছেন উইকেট। চতুর্থ ইনিংসেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অফ স্পিনার ধনঞ্জয়ার বলে স্লিপে দিয়েছেন ক্যাচ (৪৮ বলে ১৯)।
স্পিনের বিপক্ষে বরাবরই দক্ষ মুশফিকুর রহিম প্রবথ জয়সুরিয়ার টার্ন অনুমান করতে পারেননি। ব্যাকফুটে ডিফেন্স করতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড (৫৩ বলে ২৬)। যখন তখন দিনের খেলা শেষ হবে, সেই হিসাবটা মাথায় ছিল না মিরাজের। থারিন্দুর বলে এলবিডাব্লুউতে (১৬ বলে ১১) কাটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে দিয়ে আম্পায়াররা প্রকারান্তরে তা জানিয়ে দিয়েছেন মিরাজকে।
শ্রীলঙ্কার তিন স্পিনার প্রবথ (১৫-২-৪৭-২), ধনঞ্জয়া (৪-১-১৩-২), থারিন্দু (২.৪-০-১০-১) যেভাবে বল ঘোরাচ্ছেন, তাতে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন পার করাটা হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
গুরুত্বপূর্ণ ছাড়া এখন নিউজিল্যান্ড দলের অন্য কিছু সিরিজেই অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন কেন উইলিয়ামসন। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী মাসে জিম্বাবুয়েতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলের বাইরে রাখা হয়েছে তারকা এই ব্যাটারকে।
কিউদের নতুন প্রধান কোচ রব ওয়াল্টার ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই ত্রিদেশীয় সিরিজকে কাজে লাগাতে চাইছেন। সেই লক্ষ্যে ঘোষিত স্কোয়াডে দলে জায়গা মিলেছে অ্যাডাম মিল্নে ও বেভন জ্যাকবসের।
উইলিয়ামসন বর্তমানে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে মিডলসেক্সকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এছাড়াও তিনি দ্য হান্ড্রেডে লন্ডন স্পিরিটের হয়ে খেলবেন, তাই নিউজিল্যান্ডের এই সফরে তিনি থাকছেন না। এর আগে মিস করেন পাকিস্তানের সাথে সাদা বলের সিরিজও।
আর গতিময় পেসার লকি ফার্গুসনকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। আরেক ডানহাতি পেসার কাইল জেমিসন প্রথম সন্তানের অপেক্ষায় আছেন, তাই তিনি দলের বাইরে আছেন। অন্য পেসার বেন সিয়ারস সাইড ইনজুরিতে ভুগছেন।
মিল্নে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর এই প্রথমবার জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টিতে ফিরলেন। টেক্সাস সুপার কিংসের হয়ে চলমান মেজর লিগ ক্রিকেটে ৪ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে দারুণ ছন্দে আছেন অভিজ্ঞ এই পেসার। আর জ্যাকবস প্রথম জাতীয় দলে ডাক পান গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে। তিনি আইপিএলের নিলামে গত বছর দল পান মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে।
আইপিএলের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ মিস করা গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র ও অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনাররা দলে ফিরেছেন। তবে ওপেনার ডেভন কনওয়ে দলে জায়গা পাননি।
ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ম্যাচ আগামী ১৬ জুলাই হারারেতে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তবে ওই সময় মেজর লিগ ক্রিকেটের ফাইনাল থাকায়, নিউজিল্যান্ড স্কোয়াডে থাকা কেউ যদি সময়মতো জিম্বাবুয়েতে পৌঁছাতে না পারেন, তাহলে পরে তার বিকল্প খেলোয়াড় স্কোয়াডে ডাকা হবে বলে জানানো হয়েছে।
যে পিচে প্রথম দিন ব্যাটিংয়ে ধুঁকেছে বাংলাদেশ, সেই পিচেই দ্বিতীয় দিন শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডাররা করেছে স্বাচ্ছন্দে ব্যাটিং! মিরাজ-এবাদতের প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশ দলের বোলিং শক্তি অনেক বেড়ে যাওয়ার কথা। তবে কলম্বোয় এই দিন আতঙ্ক ছড়াতে পারেনি বাংলাদেশ বোলররা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের একটি পার্টনারশিপও সেঞ্চুরির মুখ দেখেনি, সেখানে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় জুটি যোগ করেছে ১৯৪ রান। লেজের জোরে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ২৪৭/১০ স্কোর। এই স্কোর যে যথেষ্ট নয়, ব্যাটিং বান্ধব হয়ে ওঠা সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠের পিচ সে কথাই বলছে। দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ২৯০/২। ইতোমধ্যে নিয়েছে স্বাগতিক দল ৪৩ রানের লিড। যেভাবে স্বাচ্ছন্দে ব্যাট করছে শ্রীলঙ্কা, তাতে স্বাগতিক দলের রান পাহাড়ে বাংলাদেশের চাপা পড়ার শঙ্কাই প্রবল।
প্রথম দিন লেজের জোরে দিন পার করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনেও টেল এন্ডাররা টপ অর্ডারদের দিয়েছেন শিক্ষা। আগের দিনের ২২০/৮-এর সঙ্গে এদিন বাংলাদেশের শেষ দুই জুটি যোগ করেছে ২৭ রান। খেলেছে তারা ৫১টি বল। দিনের চতুর্থ ওভারে পেসার আসিথা ফার্নান্দোর লো বাউন্সি ডেলিভারিতে এবাদত এলবিডাব্লুউতে থেমেছেন ৮ রানে। দিনের নবম ওভারে বাঁ হাতি স্পিনার দিনুশার আর্ম বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন তাইজুল। ৬০ বলে ৩৩টি মূল্যবান রানের ইনিংসে ৫টি বাউন্ডারি মেরেছেন তাইজুল। সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠানরত টেস্টে অভিষিক্ত সোনাল দিনুশা পেয়েছেন ৩ উইকেট (৩/২২)। পেসার আসিথা ফার্নান্দোরও শিকার ৩ উইকেট (৩/৫১)।
ওভারপ্রতি ৩.১০ গড়ে বাংলাদেশের স্কোরকে দ্রুত টপকে যেতে দরকার স্ট্রাইক রেট বাড়িয়ে নেয়া। ইনিংসের শুরু থেকে সেদিকে চোখ রেখেছে শ্রীলঙ্কা টপ অর্ডাররা। দ্বিতীয় দিনে ওভারপ্রতি ৩.৭১ হারে রান তুলে দ্রুত লিড নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এবাদতকে কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি দিয়ে ইনিংস শুরু করে ইতিবাচক ব্যাটিং প্রদর্শনীর আভাস দিয়েছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। গল টেস্টে সেঞ্চুরির পর কলোম্বোতেও তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছেন এই ওপেনার। গল-এ মাত্র ১৭ রানের জন্য মিস করেছেন ডাবল পাথুম। সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দ্বিতীয় দিন শেষে ১৪৬ রানে অবিচ্ছিন্ন এই ওপেনারের চোখ এখন ডাবলের দিকে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ ধারাবাহিক চান্দিমাল এদিন কাঁটা পড়েছেন নার্ভাস নাইনটিজে। ৯৩ রানের মাথায় অফ স্পিনার নাঈম হাসানকে রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে বল উঠে গেছে শুন্যে, সহজেই তা গ্লাভসবন্দি করেছেন উইকেট কিপার লিটন। ৯০'র ঘরে এটি তার দ্বিতীয় ইনিংস। এর আগে ২০২২ সালে গল-এ পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৪ রানে থেমেছেন। সেই ইনিংসে অবশ্য অবিচ্ছিন্ন ছিলেন তিনি। পার্টনারের অভাবে পূর্ণ হয়নি তার সেঞ্চুরি। তবে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার পরও পাথুম নিশাঙ্কাকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রেখেছেন ১৯৪ রানে অবদান।
এমন নিরানন্দ দিনে ও ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। তাইজুলের বলে স্লিপে দিয়েছিলেন ক্যাচ চান্দিমাল। ১০ রানের মাথায় সে যাত্রায় বেঁচে ইনিংসটা টেনে নিয়েছেন তিনি ৯৩ পর্যন্ত। আম্পায়ার্স কল-এ অবধারিত এলবিডাব্লু থেকে বেঁচে গেছেন ওপেনার উদারা। তাইজুলের মিডল এন্ড লেগ স্ট্যাম্পে পিচিং ডেলিভারি ব্যাক প্যাডে আঘাত লেগেও আম্পায়ার্স কলে গেছেন বেঁচে তিনি। ২১ রানের মাথায় ভাগ্য সহায় হওয়া সেই উদারাকে ফিরিয়েছেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল। রিভিউ আপীল নিয়ে তাকে এলবিডাব্লুউতে ফিরিয়েছেন তাইজুল ৪০ রানের মাথায়।
সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে বাংলাদেশের অতীত মোটেও সুখকর নয়। তিন টেস্টের দুটিতে ইনিংস আর অন্যটিতে বড় রানের ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এখানকার পীচ গল-এর মতো নয়, শুরু থেকেই টার্ন পেতে শুরু করে স্পিন। তাই এখানে অনায়াসে ছড়ি ঘোরাতে পারেন স্পিনাররা - এই মাঠের অতীত রেকর্ড বলছে তাই। ১৮ বছর পর এসএসসিতে ফিরেতা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটাররা। গল-এ বীরত্বপূর্ণ ড্র থেকে টনিক নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। প্রথম দিন ধুঁকেছে ব্যাটাররা। বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম দিনে ১৯ ওভার কম ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। তারপরও লেজের জোরে প্রথম দিন পাড়ি দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। এদিন স্কোর টেনে নিতে পেরেছে ২২০/৮ পর্যন্ত।
দিনের প্রথম ঘন্টায় উইকেট পড়েছে ১টি। তবে ওই ঘন্টায় রান পাওয়া যে কতোটা কষ্টের, টপঅর্ডাররা তা জানিয়ে দিয়েছেন। বিজয়কে হারিয়ে ওই ঘন্টায় ১২ ওভারে রান উঠেছে মাত্র ২৩! এক যুগেও টেস্টের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি বিজয়, নিজেই এই ফরম্যাট থেকে নিষ্কৃতি চান, এসএসসিতে টেস্টের প্রথম দিন নির্বাচকদের তা জানিয়ে দিয়েছেন এনামুল হক বিজয়। লঙ্কান পেসার আসিথা ফার্নান্দোর দ্বিতীয় ওভারে পর পর দুই বলে উইকেটের পেছনে দুবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ার পরও রানের মুখ দেখেননি।
আসিথার পরের ওভারে প্লেড অনে থেমেছে তার টেস্টে ১৪তম ইনিংসে। গল টেস্টের প্রথম ইনিংসের ছবিটাই যেনো মনে করিয়ে দিয়েছেন বিজয়। সেই ইনিংসে ১০ বলে ০ তে শেষ তার ইনিংস, এসএসসির প্রথম ইনিংসেও তা-ই! শ্রীলঙ্কা সফরে টানা তিন ইনিংসের চিত্র ০,৪ ও ০! ৮ টেস্টে ১৪ ইনিংসের সমষ্টি ১৪৩। একজন ওপেনারের ১২ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে নেই কোনো ফিফটি, গড় মাত্র ১০.২১। এর পরও কী টেস্ট খেলার দাবি করবেন বিজয়?
আরও পড়ুন
আশরাফুলের স্মৃতিময় ভেন্যুতে দুঃসহ অতীত ভুলতে চায় বাংলাদেশ |
![]() |
প্রথম ঘন্টায় রানের জন্য যতোটা ধুঁকেছে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ঘন্টায় ততোটা ধুঁকতে হয়নি। এই ঘন্টায় মুমিনুলকে হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করেছে ৪৮ রান। সেট হয়ে মুমিনুল আত্মাহুতি দিয়েছেন। ধনঞ্জয়ার বলে কাভারে ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে ফিরে এসেছেন তিনি ২১ রানের মাথায়।
দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশকে ভালই ধাক্কা দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এই সেশনে স্কোরশিটে ৭৩ উঠতে হারিয়েছে বাংলাদেশ ৩ উইকেট। বিশ্ব ফার্নান্ডোর আউটসাইড অফ ডেলিভারিতে পুশ করতে যেয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন শান্ত (৮)।
থারিন্দুর আউটসাইড অফ ডেলিভারিতে স্ল্যাশ করতে যেয়ে সাদমান মিস করেছেন ফিফটি (৯৩ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৪৬)। অভিষিক্ত বাঁ হাতি স্পিনার সোনাল দিনুশার আউটসাউড অফ ডেলিভারিতে খেলতে যেয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন (৫৬ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ৩৪)।
দিনের শেষ সেশন পাড়ি দিতে সংযমী হতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। দিনুশাকে সুইপ করতে চেয়ে ডিপ স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন তিনি (৭৫ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৩৫)।
৭ম উইকেট জুটিতে নাঈম হাসানকে নিয়ে ভালই প্রতিরোধ করছিলেন মিরাজ। ইনজুরি থেকে ফিরে বড় ইনিংস খেলার সম্ভাবনা দেখিয়েছিলেন তিনি। তবে বিশ্ব ফার্নান্ডো দ্বিতীয় স্পেলের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন তিনি ৩১ রানে।
আরও পড়ুন
টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে বড় উন্নতি শান্তর, এগিয়েছেন মুশফিক-নাঈম |
![]() |
মিরাজকে দারুণ সঙ্গ দেয়া টেল এন্ডার নাঈম হাসান দুর্ভাগের শিকার। আসিথা ফার্নান্ডোর আউটসাইড অফ ডেলিভারি খেলতে যেয়ে ইনসাইড এজ হয়ে স্ট্যাম্পের উপরের বেলস নিয়েছে উড়িয়ে। তার ২১ রানের ইনিংসে দুইশ-তে পৌছে গেছে বাংলাদেশ।
সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কার দুই পেস বোলার আসিথা ( ২/৪৩) এবং বিশ্ব ফার্নান্ডোর (২/৩৫) পাশে অভিষিক্ত বাঁ হাতি স্পিনার সোনাল দিনুশা করেছেন দারুণ বোলিং (২/২২)। প্রথম দিনের স্কোরের সঙ্গে শেষ দুই জুটি কতোটা যোগ করতে পারে এবং মিরাজের প্রত্যাবর্তন টেস্টে ৫ বোলারকে নিয়ে শ্রীলঙ্কার উপর প্রতি আক্রমন কতোটা জোরালো হয়, সেদিকে তাকিয়ে এখন বাংলাদেশ সমর্থকরা।
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৭ দিন আগে
৭ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৭ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে