১৯ নভেম্বর ২০২৩, ৪:৩২ পিএম
ম্যাচ সামারি
ভারত ২৪০ (৫০ ওভার)
রাহুল ৬৬ (১০৭) স্টার্ক ৩/৫৫
কোহলি ৫৪ (৬৩) কামিন্স ২/৩৪
অস্ট্রেলিয়া ২৪১/৪ (৪৩ ওভার)
হেড ১৩০ (১২০) বুমরাহ ২/৪৩
লাবুশেন ৫৮* (১১০) সিরাজ ১/৪৫
ফল : অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচের আগের দিন প্যাট কামিন্স বলেছিলেন, ভারতীয় সমর্থকদের চুপ করিয়ে দিতে চান। অধিনায়কের ইচ্ছাকে বাস্তবে রুপ দিতেই যেন মাঠে নামলেন অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। রোহিত শর্মা যথারীতি আরেকটি ঝড়ো ইনিংস খেললেন বটে, তবে তার বিদায়েই খেই হারানোর শুরু স্বাগতিকদের। উজ্জীবিত বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে চেপে ধরল অজিরা। দায়িত্বশীল দুটি ইনিংসে ভারতকে একটা লড়াই করার মত পুঁজি এনে দিলেন ভিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। তবে বিশ্বকাপ ফাইনাল মানেই ভিন্ন দল হয়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়া শানাল পাল্টা আক্রমণ। শুরুতেই কয়েকটি উইকেট নিয়ে আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ভারত সমর্থকদের গর্জন গেল চুপসে। রোহিত-কোহলিদের দর্শক বানিয়ে, অবিশ্বাস্য এক সেঞ্চুরিতে প্যাট কামিন্সের দলকে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মত বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দিলেন ট্রাভিস হেড।
আহমেদাবাদের নারেন্দ্রা মোদি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের একপেশে ফাইনালে ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাটিং করে ভালো শুরুর পর মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ভারত পায় ২৪০ রানের মামুলি সংগ্রহ। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারালেও হেড ও মার্নাস লাবুশেনের রেকর্ড জুটিতে ৭ ওভার হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় কামিন্সের দল।
১৯৮৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়া শেষ ১০ আসরের ছয়টিতেই চ্যাম্পিয়ন হল। এর আগেরটি এসেছিল ঘরের মাটিতে, ২০১৫ সালে।
আহমেদাবাদের ১ লক্ষ ৩০ হাজার দর্শকদের উল্লাসে মাতিয়ে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্যাট কামিন্স। ব্যাটাররা দুর্দান্ত ফর্মে বলেই হয়ত আগে ব্যাটিং আশাবাদী করছিল ভারতীয় সমর্থকদের। তাদের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের আরেকটি প্রদর্শনী মেলে ধরেন রোহিত। অন্যপ্রান্তে ইনফর্ম শুভমান গিল সুবিধা না করতে পারলেও ভারত অধিনায়ক শুরু থেকেই ছিলেন সেরা ছন্দে।
রোহিতের দুরন্ত ব্যাটিংয়ের মাঝেই অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন মিচেল স্টার্ক। শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মাত্র ৪ রানে ক্যাচ তুলে দেন শুভমান। ক্রিজে গিয়ে কয়েকটি বাউন্ডারিতে রোহিতের সঙ্গে রানের চাকা বাড়িয়ে দেন কোহলিও। এই দুজনের ব্যাটে ৮ ওভারেই ভারত তুলে ফেলেছিল ৬১। এরপর থেকেই অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচে ফেরার শুরু।
আরও পড়ুন: ২৪০ রান নিয়ে লড়াই করতে পারবে ভারত?
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আক্রমণে আসার পর প্রথম তিন বলে ১০ রান করার পর আরেকটি বড় শটের চেষ্টা ছিল রোহিতের। কিন্তু টাইমিং না হওয়ায় টপ এজ হয়ে বল চলে যায় আকাশে। দৌড়ে কভার পয়েন্টে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচে রোহিতের ৩১ বলে ৪৭ রানের ইনিংসের ইতি টানেন ট্রাভিস হেড। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার চার মারেন ৪টি, আর ছক্কা ৩টি। পরের ওভারে কামিন্সের আঘাত।
ভারতের চাপ বাড়িয়ে শেষের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শ্রেয়াস আইয়ার ফেরেন মাত্র ৪ রানেই। পাওয়ার প্লেতে আক্রমনাত্বক ব্যাটিং করা ভারতের রানের চাকা এরপর থেকে ধীর হতে থাকে।। অস্ট্রেলিয়ার আঁটসাঁট বোলিংয়ে কোহলি ও রাহুলকে সংগ্রাম করতে হয় রানের জন্য, বিশেষ করে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার রাহুলকে।
সাবধানী ব্যাটিংয়ে এই বিশ্বকাপে টানা পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন কোহলি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে অর্ধশত রানের দেখা পান ভারত তারকা। মাঝের ওভারগুলোতে ম্যাক্সওয়েল-অ্যাডাম জাম্পারা কতোটা ভালো ছিলেন, সেটার প্রমাণ মেলে ইনিংসের একটি পর্যায়ে ভারতের ৯৭ বল পর বাউন্ডারি মারায়। সেটি আসে রাহুলের ব্যাট থেকে, যা তার ইনিংসের একমাত্র বাউন্ডারিও।
ফিরতি স্পেলে এসে কোহলিকে বোল্ড করে আহমেদাবাদে সুনসান নীরবতা নামান কামিন্স। লাফিয়ে ওঠা বলে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার, কিন্তু বল টেনে নেন স্ট্যাম্পে। আর তাতে শেষ হয় ৫৪ রানের ইনিংস এবং অসাধারণ একটি বিশ্বকাপও। ১১ ম্যাচে প্রায় ৯৬ গড় ও ৩ সেঞ্চুরিতে বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ ৭৬৫ রান করেছেন কোহলি। তার বিদায়ের পর ইনিংস টেনে নেওয়ার দায়িত্বটা ছিল রাহুলের। মন্থর ফিফটি করলেও শেষের দিকে তার ঝড় তোলার সামর্থ্য আশা যোগাচ্ছিল ভারতকে।
তবে চাপ ধরে রেখে অন্যপ্রান্তে রবীন্দ্র জাদেজাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরান জশ হ্যাজলউড। সমর্থকদের হতাশ করে ৬৬ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন রাহুল। রাউন্ড দা উইকেটে এসে স্ট্রার্কের করা চমৎকার এক ডেলিভারিতে আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। বল খেলেন ১০৬টি। শেষ ৪ উইকেটে মাত্র ৩৪ রান করতে সমর্থ হয় ভারত। সুরিয়াকুমার যাদব সহ টেল এন্ডারদের কেউই পারেননি দ্রুত রান তুলতে। ফলে এক পর্যায়ে ২৮০ প্লাস স্কোরের দিকে চোখ রাখা ভারতকে থামতে হয় ২৫০ রানের আগেই। ৫৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার স্টার্ক।
আরও পড়ুন: কোহলি,রোহিতদের সমর্থন দিতে গ্যালারিতে তারকাদের মেলা
রান তাড়ায় প্রথম বল থেকেই ছড়ায় রোমাঞ্চ। জাসপ্রিত বুমরাহ’র বলে ডেভিড ওয়ার্নার স্লিপে একটা সুযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু স্লিপে থাকা দুই ফিল্ডারের ফাঁক গলে হয়ে যায় বাউন্ডারি। ঘটনাবহুল প্রথম ওভারে অস্ট্রেলিয়া করে ১৫ রান। টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম ওভারে উইকেট নেওয়াটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলা মোহাম্মদ শামি ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন। দ্বিতীয় বলে ফিরিয়ে দেন ওয়ার্নারকে। আহমেদাবাদে তখন কান পাতা দায়।
চার ও ছক্কায় মিচেল মার্শের শুরুটা ছিল দারুণ, কিন্তু বুমরাহ'র অনেক বাইরের বল তাড়া করে রাহুলকে ক্যাচ দেন এই অলরাউন্ডার। আসরে আলো ছড়াতে না পারা স্টিভ স্মিথ ফাইনালেও হতাশ করেন দলকে। বুমরাহ’র ভেতরে ঢোকা একটি বলে এলবিডব্লিউর ফাঁকে পড়েন তিনি। যদিও রিভিউ নিলেই বেঁচে যেতেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার, কারণ বল পিচ করেছিল অফস্ট্যাম্পের বাইরে।
৪১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন প্রচন্ড চাপের মুখে অস্ট্রেলিয়া। তবে ক্রিজে যে ছিলেন হেড, যিনি আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সেমিফাইনালেও রান তাড়ায় ব্যবধান গড়ে দিয়েছিলেন। এদিন অবশ্য একটু হিসেবী ব্যাটিং করেছেন এই বাঁহাতি, পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী ব্যাট চালিয়ে বাজে বল পেলেই কেবল কাজে লাগিয়েছেন। ফলে ক্রমেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে থাকে ভারত। শিশিরের প্রভাবে স্পিনারদের জন্য বল গ্রিপ করা কঠিন হয়ে যাওয়ায় সেভাবে কার্যকর হতে পারেননি কুলদীপ যাদব ও জাদেজা। সেই সুযোগে ফিফটি তুলে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যান হেড। টেস্ট মেজাজে ব্যাটিংয়ে অন্য প্রান্তে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন লাবুশেন।
ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারতকে একেবারেই ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়ে সেঞ্চুরিও করেন হেড। তৃতীয় অস্ত্রেলিয়ান ব্যাটার হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে শতরানের দেখা পেয়েছেন তিনি। পুরো ভারতকে হতাশায় ডুবিয়ে লাবুশেনকে নিয়ে ১৯২ রানের জুটিতে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আউট হন হেড। এর আগে খেলেন ১২০ বলে ১৩৭ রানের এক ইনিংস, যেখানে চার ছিল ১৫টি ও ছক্কা ৪টি।
তবে লাবুশেন অপরাজিত থাকেন ১০৮ বলে ৫৮ রানে। ৪৩তম ওভারের শেষ বলে উইনিং রান আসে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে। রাহুল, সিরাজদের চোখের জলে ভাসিয়ে শিরোপা উল্লাসে মেতে ওঠে অস্ট্রেলিয়া দল।
No posts available.
১১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫২ এম
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে একাই হারিয়ে দেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই! বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়া এই পেসার ব্যাট হাতেও ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। ৪০ রানের বেশ ইফেক্টিভ ইনিংস খেলেছেন সেদিন। দলকে চাপমুক্ত রাখার পাশাপাশি জিতে নিয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
ঠিক এই জায়গায় অর্থাৎ অলরাউন্ডার নৈপুণ্য দেখিয়ে দেশের কঠিন সব ম্যাচ অনুকূলে নিয়ে আসতেন সাকিব আল হাসান। দেশ সেরা অলরাউন্ডারের অনুপস্থিতিতে এই জায়গায় বিশাল একটা গ্যাপ তৈরি হয়েছে। শূন্যস্থান পূরণে টিম ম্যানেজম্যান্ট থেকে কোনো আশু পরিকল্পনা আছে কিনা, দ্বিতীয় ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে আজ এমনই প্রশ্নের মুখে পড়েন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
সাকিব বলেছেন,
‘সাকিব ভাই বিশ্বে একজন। উনি টিমে থাকা মানে একজন বোলার নিয়ে টেনশন করতে হয় না, একজন ব্যাটার নিয়েও টেনশন করতে হয় না।’
তিনি আরও বলেছেন,
‘সাকিব ভাইয়ের মতো একজন অলরাউন্ডার পাওয়া দুষ্কর। বাংলাদেশে উনার ব্যাক আপ তৈরি করা কঠিন। এই স্থান পূরণে যথাসম্ভব চেষ্টা আমরা করবো। যারা বোলার আছেন, ব্যাটার আছেন তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তাহলে এই অভাটা পূরণ করতে পারবো।’
এ সময় সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সাকিব। প্রথম ম্যাচে বল হাত ৩ উইকেট এবং ব্যাট হাতে ১৭ রান করা ২২ বর্ষী এই পেসার বলেছেন,
‘জয় ছাড়া আমাদের আর কোনো অপশন নেই। দ্বিতীয় ম্যাচে ১০০ পার্সেন্ট নিয়ে নামতে হবে। আগের ম্যাচে যে ভুল করেছি, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছি, কিভাবে ভুল শুধরে খেলা যায়। এই ম্যাচ না জিততে পারলে সিরিজ থেকে বাদ পড়ে যাব আমরা।’
২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিতে আইসিসি র্যাংকিংয়ে আটের ভেতর থাকতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। সে হিসেবে আফগানিস্তান সিরিজ মেহেদী হাসান মিরাজদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরেছে লাল সবুজ দল। বাকি দুই ম্যাচে জেতার বিকল্প নেই তাদের।
আবু ধাবিতে আগামীকাল সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। তার আগে দলের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন তানজিম হাসান সাকিব। ২২ বর্ষী এই পেসারের মতে, পছন্দের ফরম্যাটের বিশ্বকাপে কোয়ালিফায়ার খেলা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য মানায় না। বিশ্বকাপের আগে বাকি ম্যাচগুলো জিতে সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়াই এখন একমাত্র লক্ষ্য বাংলাদেশ দলের।
সাকিব বলেছেন,
‘ওডিআই আমাদের ফেভারিট ফরম্যাট। এখানে ১০ নম্বরে থাকাটা আশা বাঞ্জ্যক নয়। আরও উপরের দিকে থাকাটা মানায়। আসলে যেটা হয়ে গেছে, সেটা গেছে। এখন কিভাবে পরবর্তী ম্যাচগুলো জেতা যায় সেটাই আমাদের টার্গেট। ২০২৭ বিশ্বকাপে কিভাবে সরাসরি খেলা যায় সেটা মাথায় রাখতে হবে। কোয়ালিফায়ারে খেলা বাংলাদেশের মানায় না।’
প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়াতে আগামীকাল বাঁচা-মরা ম্যাচে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের জন্য। সিরিজে ফেরা এবং বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে জয় প্রয়োজন মিরাজদের। সাকিব বলেছেন,
‘জয় ছাড়া আমাদের আর কোনো অপশন নেই। দ্বিতীয় ম্যাচে ১০০ পার্সেন্ট নিয়ে নামতে হবে। আগের ম্যাচে যে ভুল করেছি, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছি, কিভাবে ভুল শুধরে খেলা যায়। এই ম্যাচ না জিততে পারলে সিরিজ থেকে বাদ পড়ে যাব আমরা।’
প্রথম ম্যাচে প্রঁচুর ডট খেলেছে বাংলাদেশ। হারের অন্যতম কারণ ছিল এটি। সাকিব বলেছেন,
‘আমাদের অনেক বেশি ডট বল খেলা হয়ে গেছে, এটা নিয়ে সবাই কনসার্ন। ৫০ ওভারের ম্যাচে আপনি যদি একটা কমপিটিটিভ স্কোর না দিতে পারেন তাহলে জয় পাওয়াটা কঠিন হয়ে যায়। এই উইকেট আমরা কিভাবে স্কোর করতে পারি ওটা নিয়ে আলোচনা করেছি।’
শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে সাকিব বলেছেন,
‘এখানে স্কোর করা কঠিন। স্লো, মাঝে মাঝে এক্সর্টা বাউন্স করে। আমরা মনে হয় বাইরে বাইরে বল করেছি। নেক্সট মিটিংয়ে এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। স্ট্যাম্পে বল করবো আমরা ।’
দ্বিতীয় ম্যাচ ফসকে যাওয়ায় আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় আবশ্যক ছিল নিগার সুলতানাদের। তবে ব্যাটারদের আরেকটি ব্যর্থতার দিনে নারী বিশ্বকাপে হার দেখতে হলো লাল সবুজ দলকে। কিউই মেয়েদের ২২৭ রানের জবাব দিতে নেমে ১২৭ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। আসরে টানা দ্বিতীয় হার নিগারদের। হারের বৃত্ত ভাঙল নিউজিল্যান্ড।
গুয়াহাটিতে আজ টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নামে নিউজিল্যান্ড। দলীয় ৩৫-৩৮ রানের মধ্যে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে কিউই শিবিরে অন্ধকার নামিয়ে দেন বাংলাদেশের লেগ স্পিনার রাবেয়া খান। যদিও এরপর দেশের বোলারদের একপ্রকার শাসন করেন সোফি ডিভাইন ও ব্রুক হ্যালিডে।
কিউই মেয়েদের চতুর্থ জুটি যখন ভাঙে ততক্ষণে তারা নিরাপদ স্থানে। ৬৯ রানে ব্রুক প্যাভিলিয়নে ফিরলে শতোর্ধ্ব (১১২) জুটি ভাঙে। দলীয় পুঁজি দাঁড়ায় ১৫০ রান।
ব্রুক ফেরার পর সোফিও ফেরেন। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক করেন ৬৩ রান। তারপরও ম্যাডি গ্রিনের প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ২২৮ রানের লক্ষ্য দিতে পারে নিউজিল্যান্ড।
দেশের বোলারদের মধ্যে রাবেয়া খান সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট তোলেন। মারুফা আক্তার, নাহিদা আক্তার, নিশীতা আক্তার ও ফাহিমা খাতুন তোলেন একটি করে উইকেট।
জবাব দিতে নেমে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ। ৩৩ রানে হারিয়ে বসে ৫ উইকেট। দুই অঙ্কের রান স্পর্শ করতে ব্যর্থ হয় প্রথম সারির পাঁচ ব্যাটার। রাবেয়া হায়দার (৪), শারমিন আক্তার (৩), নিগার সুলাতানা (৪), সোবহানা মোস্তারি (২) ও সুমাইয়া আক্তাররা (১) ছিলেন আসা যাওয়ার মিছিলে।
দলীয় সাত রানে টাইগ্রেসদের প্রথম জুটি ভাঙে। রোজমেরি মেয়ারের পেসে কাটা পড়েন শারমিন। সাজঘরে ফেরার রাস্তা তৈরি করে দেন রাবেয়া। একে একে ফেরেন বাকিরাও।
এদিন প্রথম পাওয়ারপ্লেতে ৩ উইকেটে মাত্র ২২ রান করতে পারে বাংলাদেশ। ২০ ওভারে সে রান ঠেকে ৪০ রানে। ত আর ৮৮ রানে তারা হারিয়ে বসে ৭ উইকেট।
নিশ্চিত পতনের মুখে থাকা দলের জন্য কিছুক্ষণ লড়াই করেন ফাহিমা আক্তার। দীর্ঘক্ষণ মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকেন তিনি। ফেরার আগ পর্যন্ত ৮০ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন ফাহিমা। শেষ দিকে রাবেয়ার প্রচেষ্টা ছিল সম্মান বাঁচানোর। হয়নি সেটা। টপ-মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার দিনে তাদের সে লড়াই ছিল কেবল নিয়মরক্ষার। শেষ পর্যন্ত ১২৭ রানে থামে দল।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে লিয়া তাহুহু ও জেস কের তিনটি করে উইকেট তোলেন। দুটি উইকেট তোলেন রোজমেরি মেয়ার।
ক্যাপ্টেন্সির গুণের জন্য প্রশংসিত আকবর আলী। বয়সভিত্তিক দল বা ঘরোয়া ক্রিকেট—আকবরের নেতৃত্ব মানেই শিরোপা উৎসব। এবারও সেই ধারাবাহিকতা পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশি হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক এবার এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালে পা রেখেছেন। এনসিএলের টি-টোয়েন্টি সংস্করণের প্রথম আসরে তার নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রংপুর।
আজ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এনসিএল টি-টোয়েন্টির দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চিটাগংকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছে রংপুর। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ খুলনা। এর আগে বৃহস্পতিবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে চিটাগংকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে খুলনা। এলিমিনেটরে ঢাকাকে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল রংপুর। আজ রংপুর দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চিটাগংকে হতাশ করে ট্রফির মঞ্চে পা রাখতে সক্ষম হয়।
এই জয়ে রংপুরকে অপেক্ষা করতে হয় শেষ বল পর্যন্ত। জয় পেতে প্রয়োজন ছিল মাত্র এক রান। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের ওপর শেষ মুহূর্তের চাপ গড়ে দেন নাইম ইসলাম। তবে শেষ বলে মোহাম্মদ আশরাফুল হাসানের বল বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে ফাইনালে পৌঁছে দেন তিনি।
শেষ ওভারে রংপুরের প্রয়োজন ছিল তিন রান। প্রথম দুই বল ডট। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নেন নাইম। চতুর্থ বল আবারও ডট। পঞ্চম বলে আলাউদ্দিন বাবু এক রান নেন, স্কোর সমতায় ফেরে। তবে শেষ বলে নাইম ইসলাম বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দেন।
এদিন টস জিতে চিটাগংকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান আকবর আলী। সাদিকুর রহমান ও ইয়াসির আলীর ফিফটিতে ভর করে রংপুরকে ১৬৮ রানের টার্গেট ছুড়ে দেয় চিটাগং। জবাব দেয় সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। জাহিদ জাভেদ ও নাসির হোসেনের ভয়ডরহীন শুরু, আর ফিনিশিং করেন মোহাম্মদ নাইম।
লক্ষ্য তাড়ায় রংপুরের উদ্বোধনী জুটি ৭৬ রান পর্যন্ত গড়তে সক্ষম হয়। নাসির ও জাহিদ শুরু থেকে সাবধানী, দুই ওভারে যোগ করেন মাত্র ৯ রান। তৃতীয় ওভারে আহমেদ শরিফ প্রথম ও পঞ্চম বলে দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিরবতা ভাঙেন। চতুর্থ ওভারে ৯ রান যোগ হয়, পঞ্চম ওভারে নাসির হোসেন জাতীয় দলের স্পিন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ আশরাফুল হাসানের শেষ দুই বলে একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান।
উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর ইকবাল হোসেনের সঙ্গে জুটি গড়েন নাসির। এসময় নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি। ফেরার আগে ৪১ বলে ৫৪ রান করেন। যা সাজানো ছিল ৪টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কায়। দলীয় ১১৮ রান পর্যন্ত টপঅর্ডারের তিন ব্যাটার ফেরার পরও জয় নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি রংপুরকে।
শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত করেন নাইম ইসলাম ও আলাউদ্দিন বাবু। মাঠ ছাড়ার আগে ১৯০.৪৮ স্ট্রাইক রেটে ২১ বলে ৪০ রান করা আকবর আলী প্রতিপক্ষ বোলারদের শাসন করে মাঠ ত্যাগ করেন। আর শেষদিকে নাইম ইসলাম ও আলাউদ্দিন বাবু দলকে আরও একটি জয় উপহার দেন।
তিন সংস্করণ মিলে ভারতের হয়ে ৫০তম ম্যাচ খেলছেন যশস্বী জয়সওয়াল। সে ম্যাচটি আবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। এই মাঠে আজই প্রথমবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেছেন ভারতের তরুণ ব্যাটার। তবে জয়সওয়ালের মনোমুগ্ধ ব্যাটিংয়ে প্রথম দর্শনেই যেন প্রেম দিল্লির সঙ্গে!
জয়সওয়ালের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন আজ ভারত তুলেছে ৩১৮ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলাররা তপ্ত রোদে শুধু খেটেই গেছেন, বিপরীতে সারা দিনে নিতে পেরেছেন শুধু দুটি উইকেট। তিন পেসার ও তিন স্পিনার ব্যবহার করেছে উইন্ডিজ। ঘূর্ণি জাদুতে উইকেট দুটি নিয়েছেন জোমেল ওয়ারিক্যান।
দিনের ৯০ ওভারের মধ্যে ৫৩টি করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনাররা। নতুন বলে পেসাররা ছিলেন ব্যর্থ। তাঁদের দারুণভাবে সামলে ওপেনিং জুটিতে ভারতের ওপেনার জয়সওয়াল ও লোকেশ রাহুল যোগ করেন ৫৮ রান। ইনিংসের ১৮তম ওভারে প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করা রাহুলকে স্টাম্পিংয়ের সৌজন্যে ফেরান ওয়ারিক্যান। ৩৪ বলে ৩৮ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে।
দ্বিতীয় উইকেটে স্পিন সামলে দলের স্কোর ২৫১ রানে পৌঁছে দেন জয়সওয়াল ও সাই সুদর্শন। ততক্ষণে সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি উদযাপন করে নেন জয়সওয়াল। দুজনে নির্বঘ্নে কাটিয়ে দেন দ্বিতীয় সেশন। সুদর্শনও হাঁটছিলেন তিন অঙ্কের পথে। তৃতীয় সেশনে তাঁর আক্ষেপ বাড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয়বার ব্রেক-থ্রু এনে দেন ওয়ারিক্যান। ১৬৫ বলে ১২ চারে ৮৭ রানে ফেরেন সুদর্শন।
তৃতীয় সেশনে ৬৭ রানের আরেকটি অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন অধিনায়ক শুবমান গিল ও জয়সওয়াল। ২০ রানে অপরাজিত গিল। ১৭৩ রান থেকে কাল দ্বিতীয় আবারও ব্যাটিংয়ে নামবেন জয়সওয়াল। ইনিংসে এখন পর্যন্ত মেরেছেন ২২টি চার। টেস্টের উদ্বেধনী দিনে ভারতের হয়ে কোনো ব্যাটারের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান তোলার রেকর্ড এটি।