ক্রিকেট

তিনবার পৃথিবী ঘুরা দূরত্ব পেরিয়ে কানুভাইয়ের কাছে আশরাফুল 'শচীন'

 
রিফাত এমিল
রিফাত এমিল
ঢাকা

১৬ অক্টোবর ২০২৩, ৩:১০ পিএম

news-details

কানুভাই, নামটা আহমেদাবাদ ছাড়ার ঠিক আগেই শুনলাম। বিখ্যাত কেউ না তো অবশ্যই। ঐ যে 'দিনে এনে দিনে খাওয়া' গোত্রের প্রতিনিধিত্ব করেন কানুভাই। উবার ড্রাইভার। ভারত পাকিস্তান মহারণের (যদিও ম্যাচ একপেশে) সাক্ষী হয়ে এবার গন্তব্য পুনে, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে। আহমেদাবাদ ছাড়ার আগে কানুভাই রীতিমতো গল্পের উপাদান যোগাড় করে দিয়ে গেলেন।



উবার কল, অ্যাপে দেখালো আসতে সময় লাগবে মিনিট তিনেক। প্রথমেই বোঝা গেলো কানুভাই সময় মেনে চলা হোক, হাজির দুই মিনিটে। কানুভাই অবাক করে গেলেন শুরু থেকে। আলো আঁধারি রাস্তা, কানু ভাইয়ের আধো আধো ইংরেজি ঠিকই বোঝা যায়। 'তোমার দেশ?' প্রশ্নের জবাবে উত্তর 'বাংলাদেশ' শুনেই কানুভাই শুরু করলেন গল্পের ঝাঁপি।



সেই গল্পে প্রবেশের আগে কানুভাইকে চেনানো দরকার। যাপিত জীবনে ক্রিকেটারদের পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার পরেও কানুভাইয়ের পপরিসংখ্যান রীতিমতো মুগ্ধ করেছে। প্রায় সাত বছর উবার চালিয়েছেন। ছয় হাজারের বেশি লোক কানুভাইকে পছন্দ করে দিয়ে রেখেছে 'ফাইভ স্টার'। এক লক্ষ ৪৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি কিলোমিটার গাড়ি চালিয়েছেন। উবারই বলছে, কানুভাই তার ছোট্ট গাড়িটা বিশাল মন নিয়ে সোজা চালিয়ে গেলে তিনবার পৃথিবীর পথ পড়ি দিতেন!



কানুভাই বাংলাদেশি শুনেই শুরু করলেন ক্রিকেটীয় আলাপ। একটাবার জিজ্ঞেস করা লাগেনি। শুরুতেই আনলেন, 'তোমাদের আশরাফুল কই? ও হচ্ছে শচীনের মতো। দুই হাজারের পরের সময়টায় ও কিন্তু একাই টেনেছে দলকে।' কানুভাই থামেনি। চলেছে গাড়ি, বেড়েছে আলাপ। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে বাংলাদেশ হারানোর রান, স্কোরকার্ডও বলে দিলেন এমনভাবে যা অনেক বাংলাদেশিকেও বলতে ইন্টারনেটের সাহায্য নিতে হবে। ২০০৭ বিশ্বকাপের ভারতের বিদায় কানুভাইকে দুঃখ দিয়েছে আবার '১১ দিয়েছে সীমাহীন আনন্দও। সঙ্গে বলেও রাখলেন এবারের বিশ্বকাপটা কানুভাই ঘরের রেখেই দিতে চান।



প্রায় মিনিট ১৬ এর আলাপে কানুভাই মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেলেন। ৪৯ বছর বয়সী কানুভাই শীঘ্রই ৫০ এ পা দিবেন। জীবনের অর্ধশতকে এসে কানুভাই তিনবার পৃথিবী ঘুরা দূরত্ব পেরিয়ে বাংলাদেশের জন্য শুভকামনাও জানিয়ে রাখলেন। 



ক্রিকেটাররা মূলত বেঁচে থাকে নিবেদনে, মূহুর্তে। মানুষ রান, শতক সব বেমালুম ভুলে যায়। ঐ যে মূহুর্ত, ঐ যে লড়াই, সেসব দিয়ে আশরাফুল আহমেদাবাদের কানুভাইয়ের কাছেও স্মৃতিতে রয়ে গেছেন। আর কানুভাই? একরাশ মুগ্ধতায় এক বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীকে অবাক করে দিয়ে গেলেন।

No posts available.

bottom-logo