
টপ অর্ডারের ব্যাটাররা হলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া সৈনিক মাহমুদউল্লাহ আরও একবার লড়ে গেলেন দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে। রিশাদ হোসেন তুললেন শেষের ঝড়। রান তাড়ায় ওপেন করতে নামা নাইম শেখ লড়লেন শেষ পর্যন্ত। তবে শুরুর দিকে তার ডিফেন্ডিং ব্যাটিংই কাল হলো খুলনা টাইগার্সের। ফরচুন বরিশাল পেল দারুণ এক জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৩০তম ম্যাচে বরিশাল পেয়েছে ৭ রানের জয়। ৯ উইকেটে তামিম ইকবালের দল করেছিল ১৬৭ রান। আশা জাগিয়েও খুলনার ইনিংস থেমেছে ৬ উইকেটে ১৬০ রানে।
ব্যাট হাতে বরিশালের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নময়। একাদশে চার পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামা খুলনার অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ নিজেই ওপেন করেন। আর কী একটা ওভারই না করেছেন জাতীয় দলের এই অলরাউন্ডার। দ্বিতীয় বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে দেন তামিম ইকবালকে। দারুণ এক টার্নিং ডেলিভারিতে এরপর দাভিদ মালানকেও গোল্ডেন ডাক উপহার দিয়ে বোল্ড করেন মিরাজ।
চার মেরে রানের খাতা খোলা মুশফিকুর রহিম খানিক বাদেই হন রান আউট। ১৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়ে যাওয়া বরিশালের রানের গতি এরপর বেশ কমে যায় স্বাভাবিকভাবেই। অষ্টম ওভারে গিয়ে ইনিংসের প্রথম ছয়ের আর আসে তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে।
এরপর জিয়াউর রহমানকেও ছক্কায় উড়িয়ে হাসি ফোটান বরিশাল সমর্থকদের মুখে। তবে সেটা বেশিক্ষণ টেকেনি আর। ফিরতি স্পেলে এসে তাওহীদের ৩৬ রানের ইনিংসের ইতি টানেন মিরাজ। পরের ওভারে ফের উইকেট। এক রানেই থামেন মোহাম্মদ নবি।
সেখান থেকে বরিশালের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাথমিক কাজটা করেন মাহমুদউল্লাহ। আর লড়াকু স্কোর এনে দেওয়ার দায়িত্বটা সামলান রিশাদ। তরুণ এই লেগ স্পিনার জিয়াউরকে হাঁকান হ্যাটট্রিক বাউন্ডারি। চাপের মুখে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলা মাহমুদউল্লাহ ৩ চার ও ২ ছক্কায় আউট হন ঠিক ৫০ রানে।
বিশাল সব ছক্কার সমাহার ঘটানো রিশাদও চলে গিয়েছিলেন ফিফটির খুব কাছে। সেটা শেষ পর্যন্ত না পারলেও খেলেন মাত্র ১৯ বলে ৩৯ রানের খুনে ইনিংস, যা নিশ্চিত করে দেয় বরিশালের দেড়শ রানের স্কোর। ৩৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার ছিলেন মিরাজ।
ব্যাট হাতে খুলনাও পায়নি আদর্শ সূচনা। শূন্য রানে ইমরুল কায়েসকে সাজঘরের পথ দেখান জাহানদাদ খান। এরপর সেই নাইম ও মিরাজের সেই জুটি, যা আদতে দলকে ফেলে দেয় আরও অস্বস্তিদায়ক অবস্থানে। মাঝেমধ্যে কিছু বড় শট খেললেও উভয়ই রান করেন বেশ ধীরলয়ে।
ফলে প্রায় একশ স্ট্রাইক রেটের ব্যাটিংয়ে এই জুটি ৫৯ রান যোগ করলেও তা চাপ বাড়িয় দেয় বেশ। ১০ ওভার শেষে খুলনার বোর্ডে জমা জয় কেবল ৬৪ রান। মোহাম্মদ নবির প্রথম শিকার হয়ে মিরাজ যখন ফেরেন ৩৩ রানে, তখন নাইমের নামের পাশে রান ৩২ বলে ২৮, এক পর্যায়ে যা দাঁড়ায় ৪৪ বলে স্রেফ ৩৫ রানে!
ফলে ক্রিজে গিয়ে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের চাপটা নিতে হয় আফিফ হোসেনকে। রিপন মন্ডলকে চার ও ছক্কা মারা নাইম ৪৯ বলে পূরণ করেন ফিফটি। আফিফ ২৭ রানে বিদায় নেওয়ার পর অবশ্য কয়েকটি বড় শট খেলে খুলনা শিবিরে জয়ের আশার সঞ্চার করেন নাইমই।
৬ বলে ২৫ প্রয়োজন, এমন সমীকরণে টানা দুই ছক্কায় অসম্ভবকে সম্ভব করার দিকে এগিয়ে গেলেও পারেননি আর। ৫৯ বলে ৭৭ রানের ইনিংসটি তাই খুলনাকে উপহার দেয় একরাশ আক্ষেপের। বরিশালের সেরা বোলার জাহানদান ২০ রানে শিকার করেন ২ উইকেট।
No posts available.
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১১ পিএম
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৫ পিএম
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:৩৫ পিএম

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ আসরের পর্দা উঠতে যাচ্ছে ২৬ ডিসেম্বর। আসন্ন টুর্নামেন্ট ঘিরে ইতোমধ্যেই ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে বাড়ছে উত্তেজনা-আগ্রহ। আসরকে নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও সফলভাবে আয়োজনে অঙ্গীকারবদ্ধ বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
আজ বিসিবির এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, খেলোয়াড়, দর্শক, ম্যাচ কর্মকর্তা এবং টুর্নামেন্ট সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের প্রধান লক্ষ্য।
বাংলাদেশ সরকারের জনসমাগম সংক্রান্ত বর্তমান নির্দেশনা অনুসরণ করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে এবারের বিপিএলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সমাপনী অনুষ্ঠান জমকালো করতে চায় গভর্নিং কাউন্সিল।
সরকারের পক্ষ থেকে বিপিএলের সূচিও ৪ দিন পিছিয়ে দেওয়ার পরামর্শ ছিল। তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করে পূর্ব নির্ধারিত সূচিতেই হবে দ্বাদশ আসর।

আইপিএল নিলামের ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি। মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মিনি নিলামে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজুর রহমানকে দলে ভেড়ায় কলকাতা নাইট রাইডার্স। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ দাম।
রেকর্ড দামে আইপিএল দল পাওয়ার পরের দিনই আইএল টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামেন বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার। এমআই এমিরাটসের বিপক্ষে ম্যাচে চলতি আসরে নিজের সেরা দিন পার করেন ‘কাটার মাস্টার’ খ্যাত এই পেসার।
দুবাইয়ে আজ টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩৭ রান তোলে এমআই এমিরাটস। শুরুটা দাপুটে হলেও শেষটা রঙিন হয়নি তাদের। এর পেছনে বড় কারণ ছিলেন মোস্তাফিজ। ৩০ বছর বয়সী বাংলাদেশি পেস সেনসেশন এদিন ৪ ওভার বোলিং করে নেন ৩ উইকেট। রান খরচে কিছুটা বিলাসিতা দেখান। ৮.৫০ ইকোনমি রেটে তিনি দেন ৩৪ রান।
এর আগে চলতি টুর্নামেন্টে ২ উইকেট ২২ রানের বোলিং ফিগারই ছিল মোস্তাফিজের সেরা। এবার সেটিকেও ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। আসরে এখন পর্যন্ত তার মোট উইকেট সংখ্যা ৯টি। সেরার দৌড়ে থাকা ওয়াকার সালমানখিলের ঝুলিতে রয়েছে ১২ উইকেট। তবে ওয়াকারের চেয়ে একটি ম্যাচ কম খেলেছেন বাংলাদেশি এই পেসার।
টুর্নামেন্টে দিল্লি ক্যাপিটালসও শীর্ষে থাকার লড়াইয়ে টিকে আছে। এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে দলটির জয় ২টি। আজ এমআই এমিরাটসের বিপক্ষে জয় পেলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা গালফ জায়ান্টসের সঙ্গে ব্যবধান কমবে।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১২তম সংস্করণে সরাসরি চুক্তিতে ছয়জন বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে ভিড়িয়েছে রংপুর রাইডার্স।
তাঁরা হলেন—ডেভিড মালান (ইংল্যান্ড), কাইল মায়ার্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), খুশদিল শাহ (পাকিস্তান), ইফতিখার আহমেদ (পাকিস্তান), ফাহিম আশরাফ (পাকিস্তান) ও আকিফ জাভেদ (পাকিস্তান)।
২০২৪–২৫ মৌসুমের বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলেছেন ডেভিড মালান, কাইল মায়ার্স ও ফাহিম আশরাফ। বাকি তিনজন আগের মৌসুমেও রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলেছিলেন।
আজ এক বিবৃতিতে ছয় বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে ভেড়ানোর তথ্য জানায় রংপুর রাইডার্স। সাবেক চ্যাম্পিয়ন দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়,
“অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের অন্তর্ভুক্তি দলের ব্যাটিং ও বোলিং ইউনিটকে আরও শক্তিশালী করবে এবং বিপিএল ২০২৬-এ শিরোপা জয়ের পথে দলকে এক ধাপ এগিয়ে নেবে।”
রংপুর রাইডার্স দল:
সরাসরি চুক্তি
(দেশি): নুরুল হাসান সোহান, মোস্তাফিজুর রহমান
(বিদেশি): খাজা নাফি, সুফিয়ান মুকিম, ডেভিড মালান, কাইল মায়ার্স, খুশদিল শাহ, ইফতিখার আহমেদ, ফাহিম আশরাফ ও আকিফ জাভেদ
নিলাম থেকে
লিটন কুমার দাস, তাওহিদ হৃদয়, নাহিদ রানা, রকিবুল হাসান, আলিস আল ইসলাম, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি, নাঈম হাসান, মেহেদি হাসান সোহাগ, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আব্দুল হালিম, এমিলো গে ও মোহাম্মদ আখলাক।
সিলেটে চলতি মাসের ২৬ তারিখ বিপিএল শুরু হবে, যা শেষ হবে ২৩ জানুয়ারি।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টির আগে দুঃসংবাদ ভারতীয় শিবিরে। পায়ের চোটের কারণে ছিটকে গেছেন শুবমান গিল।
ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার নেট অনুশীলনের সময় চোট পান গিল। তাঁর চোটের বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হওয়ার কথা ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ। তবে ঘন কুয়াশার কারণে এখনো হয়নি ম্যাচের টস। গিলের অনুপস্থিতিতে ওপেনিংয়ে সুযোগ মিলতে পারে উইকেটকিপার ব্যাটার সঞ্জু স্যামসনের।
এর আগে কলকাতা টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চোটে পড়ে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ থেকে ছিটকে যান গিল। টি-টোয়েন্টি সিরিজে ফিরলেও ফর্মে ছিলেন না তিনি। প্রথম ম্যাচে করেন ৪ রান, দ্বিতীয় ম্যাচে শুন্য, তৃতীয় ম্যাচে করেন ২৮ রান।

আইপিএল মিনি নিলামে ১৮ কোটি রুপিতে মাতিশা পাথিরানাকে দলে ভিড়ায় কলকাতা নাইট রাইডার্স। একইসঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমানকে ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কিনে নেয় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। বাংলাদেশের পেসারকে কেনায় কেকেআরের প্রশংসা করলেও পাথিরানার দাম নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত।
আজ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শ্রীকান্ত বলেন,
‘পাথিরানা বড় ঝুঁকি। সে হিট অ্যান্ড মিস বোলার। তবে কেকেআর মোস্তাফিজুর রহমানকেও নিয়েছে, যেটা খুব বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত। ব্রাভোর উপস্থিতির কারণে পাথিরানা কেকেআরে যাবে, এটা অনুমানই করা যাচ্ছিল। কিন্তু তার দাম আর এতগুলো দলের আগ্রহ অবাক করেছে।’
নিলামে পাথিরানাকে ঘিরে আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। শুরুতে দিল্লি ক্যাপিটালস ও লখনৌ সুপার জায়ান্টস দর হাঁকাতে থাকে। পরে লড়াইয়ে নামে কলকাতা নাইট রাইডার্স। শেষ পর্যন্ত লখনৌকে ছাড়িয়ে ১৮ কোটি রুপিতে এই পেসারকে দলে নেয় কলকাতা।
ভিন্নধর্মী বোলিং অ্যাকশনের জন্য পরিচিত পাথিরানা আইপিএলে অভিষেক করেন ২০২২ সালে, সেবার খেলেন দুই ম্যাচ। ২০২৩ মৌসুমে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ১৯ উইকেট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হয়ে ওঠেন। পরের মৌসুমে ছয় ম্যাচে নেন ১৩ উইকেট।
২০২৫ আসরে ১২ ম্যাচে ১৩ উইকেট নেন পাথিরানা, রান দেন ওভারপ্রতি ১০.১৪ করে। নিলামের আগে পাথিরানাকে ছেড়ে দেয় চেন্নাই, নিলামে তাকে ফেরানোর চেষ্টাও করেনি।
নিলামে পাথিরানাকে নিয়ে অতিরিক্ত দর হাঁকানোর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শ্রীকান্ত। এক মৌসুম খারাপ গেলেই যেভাবে অনেক বড় নাম আলোচনার বাইরে চলে যায়, তার উদাহরণ টানেন শ্রীকান্ত।
‘লখনৌ ১৮ কোটি পর্যন্ত গেল। সে কি সত্যিই এত বড় বোলার? শেষ আইপিএলে তার পারফরম্যান্স ছিল খুবই সাধারণ। অনেক খেলোয়াড় এক মৌসুম খারাপ করলেই বাদ পড়ে যায়। জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক এক মৌসুম ভালো না করায় এখন দৃশ্যপটেই নেই। একই কথা ডেভন কনওয়ের ক্ষেত্রেও।’