৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২০ পিএম
আসরের শুরু থেকেই ঢাকা ক্যাপিটালসকে ভোগাচ্ছেন ব্যাটাররা। এদিন অবশ্য তাড়া কাজের কাজটা ঠিকই করে দিলেন। নিজের সেরা সময়কে মনে করিয়ে দেওয়া এক ইনিংসে সাব্বির রহমান রীতিমত ছড়ি ঘোরালেন বোলারদের ওপর। চিটাগং কিংসের রান তাড়ায় ইনিংসের শুরুটা ভালো হলেও মাঝে কিছুটা লড়াই করেছিল ঢাকা। তবে মোহাম্মদ মিঠুন ও শামিম হোসেনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ল চিটাগং।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১৪তম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ঢাকা করেছিল ৫ উইকেটে ১৭৭ রান। চিটাগং সেটা তাড়া করেছে ৭ উইকেট ও ৩ বল হাতে রেখে।
রান তাড়ায় চিটাগংয়ের শুরুটা হয় ইতিবাচক। প্রথম কয়েকটি ওভারে পারভেজ হোসেন ইমন সেভাবে সুবিধা না করতে পারলেও উসমান খান ছিলেন ইতিবাচক। পাকিস্তান ব্যাটার প্রায় প্রতি ওভারেই চার ও ছক্কার মারের মাধ্যমে রানের চাকা সচল রাখেন। পাওয়ার প্লের শেষের দিকে গিয়ে ছন্দ পান ইমনও। তাতে বোর্ডে বিনা উইকেটে জমা হয় ৫৫ রান, যা জয়ের পথ অনেকটাই সুগম করে দিয়েছিল দলটির।
আরও পড়ুন
নাহিদের গতিতে মুগ্ধ ইফতিখার, প্রশংসায় পঞ্চমুখ সোহানের |
![]() |
এরপর আক্রমণে এসেই ইমনকে ফেরান ফরমানউল্লাহ সাফি। তবে ঢাকাকে ম্যাচে ফেরার আর সুযোগ না দিয়ে এরপর গ্রাহাম ক্লার্ককে নিয়ে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেওয়া জুটি গড়েন উসমান। ঢাকা অধিনায়ক থিসারা তার করা প্রথম ওভারেই হজম করেন ১৮ রান।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ফিফটি করার পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি উসমান। ৩৩ বলে ৫৫ রান করার পর শিকার হন মুস্তাফিজুর রহমানের। তবে তার আগেই চিটাগংয়ের পূর্ণ হয় দলীয় শতক।
সেট ব্যাটার ক্লার্ক একপ্রান্ত আগলে এরপর এগিয়ে নেন ইনিংস। সাথে পেরেরার ওভারে ১২ রান দিয়ে তাল মেলান মোহাম্মদ মিঠুনও। তবে ১৪ থেকে ১৬, এই তিন ওভারে মাত্র ১৯ রান নিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় চিটাগং।
তবে সেখান থেকে দলের হাল ধরেন মিঠুন ও শামিম হোসেন। ৩২ রানের অপরাজিত জুটিতে দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। অভিজ্ঞ মিঠুন ২১ বলে করেন ২৯, আর শামিম মাত্র ১৪ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় করেন ৩০ রান।
এর আগে সন্ধ্যায় আগে ব্যাট করা ঢাকার ইনিংসকে অনায়াসেই ভাগ করা যায় দুই ভাগে। একটিতে থাকবেন সাব্বির রহমান, যেখানে তিনি রান করেছেন অবলীলায়। আরেক দলে থাকবেন অন্য ব্যাটাররা, যাদের রান করতে কিছুটা ভুগতেই হয়েছে।
আরও পড়ুন
সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ নেই সাইফের, আরও ভালো করার প্রত্যয় |
![]() |
লিটন দাসকে ছাড়াই এই ম্যাচ খেলতে নামা ঢাকাকে হতাশ করে মাত্র ১ রানেই আউট হয়ে যান তারকা ব্যাটার জেসন রয়। স্টিফেন এস্কিনাজিকে নিয়ে এরপর জুটি গড়েন তানজিদ হাসান তামিম। তবে দুই ব্যাটাররা পারেননি সেভাবে চালিয়ে খেলতে। ফলে ঢাকার রান সেভাবে এগিয়ে যেতে পারেনি এই সময়ে।
এস্কিনাজির বিদায়ের পর হতাশ করেন এস্কিনাজিও। সাব্বির ক্রিজে গিয়ে শুরুতে খুব একটা আশা জাগাতে পারেননি। প্রথম ৯ বলে করেন মাত্র ৪ রান। অন্যপ্রান্তে ৪২ বলে ফিফটি করেন তানজিদ। তিন ছক্কা ও দুই চারে আরাফাত সানির এক ওভারেই ২৬ রান নিয়ে সাব্বিরের ঝড়ের শুরু এরপরই।
পাকিস্তান পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিমকে টানা দুই ছক্কার পর হাঁকান একটি চারও। চোখ জুড়ানো সব শটে সাব্বির মনে করিয়ে দেন তার সেরা সময়কে। পঞ্চাশ পা রাখেন স্রেফ ২০ বলে। অন্যপ্রান্তে সেভাবে আর সমর্থন না পেলেও এরপর একাই ঢাকাকে লড়াকু পুঁজি এনে দেওয়ার কাজটা করেন সাব্বির। অপরাজিত থাকেন মাত্র ৩৩ বলে ৮২ রানে, যেখানে ছিল ৯টি ছক্কা ও ৩টি চার।
২৮ জুন ২০২৫, ১:০০ পিএম
২৬ জুন ২০২৫, ৭:০৪ পিএম
নাজমুল হোসেন শান্ত'র টেস্ট ক্যাপ্টেনসির রেকর্ডটা খারাপ নয়। তার অধিনায়কত্বে ১৪ টেস্টে ৪ জয়, ১ ড্র'র বিপরীতে ৯ হার। টেস্ট ক্যাপ্টেনসি অধ্যায়ে তার ব্যাটিং রেকর্ডটাও খারাপ নয়। ১৪ টেস্টে ৩ সেঞ্চুরি, ২ ফিফটিতে ৩৬.২৪ গড়ে ৯০৬ রান। সাকিবের টেস্ট ক্যাপ্টেনসির রেকর্ডও শান্ত'র মতো নয়। টেস্ট ক্যাপ্টেন সাকিবকে ৪টি টেস্ট জিততে নেতৃত্ব দিতে হয়েছে ১৯টি ম্যাচ।
২০২৩ সালের নভেম্বরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটে টেস্ট ক্যাপ্টেনসির অভিষেক জয় দিয়ে উদযাপন করেছেন শান্ত। ২০২৪ সালে পাকিস্তান সফরে রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে শান্ত'র নেতৃত্বে ২-০তে জয়ও কম গর্বের নয়। শ্রীলঙ্কা সফরে আসার আগে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে বাংলাদেশ দল শান্ত'র নেতৃত্বে। তবে ওই সিরিজের প্রথম টেস্টে সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে বাংলাদেশের হার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে। তার বিরূপ প্রভাব পড়েছে বিসিবিতেও।
২০২৪ সালে তিন সংস্করণেই অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এ বছরের শুরুতে টি–টোয়েন্টির ক্যাপ্টেনসি ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার শুণ্যস্থান পূরণ করেছে বিসিবি লিটন দাসকে দিয়ে। শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে তাঁকে না জানিয়ে কেড়ে নেয়া হয়েছে ওয়ানডে ক্যাপ্টেনসি। বয়সভিত্তিক দল থেকে একসঙ্গে বেড়ে ওঠা টিমমেট করা হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে দেয়া হয়েছে ওয়ানডে ক্যাপ্টেনসি। এভাবে ক্যাপ্টেন্সির ব্যাটন কেড়ে নেয়ায় মনোকষ্টে ছিলেন। কলম্বো টেস্টে ইনিংস এবং ৭৮ রানে হারের পর প্রকাশ হয়েছে সেই কষ্ট। টেস্টের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শান্ত।
শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট সিরিজের আগে এই ফরম্যাটে অধিনায়কত্বের মেয়াদ এক বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল। তবে মেয়াদ পার করেননি। মেয়াদ শুরুর এক মাসের মধ্যেই টেস্ট ক্যাপ্টেনসি অধ্যায়ের যবনিকা টেনেছেন।
ওয়ানডে ক্যাপ্টেনসি হারিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিলেন বড় একটা চাপ নিয়ে। এই চাপে পিষ্ট হয়ে ব্যাটিংয়ে তার বিরূপ প্রভাব পড়ার শঙ্কা করেছিলেন অনেকে। তবে শ্রীলঙ্কা সফরে বাংলাদেশ ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। ১০০.০০ গড়ে করেছেন ৩০০ রান। গল টেস্টে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি (১৪৮ও ১২৫) করে দ্বিতীয়বারের মতো এমন কৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাটারদের মধ্যে প্রথম রেকর্ড করেছেন। তবে গল টেস্টে ইনিংস ঘোষণায় বিলম্ব করায় বিস্তর সমালোচনা হয়েছে তাকে নিয়ে।কলম্বো টেস্ট শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ১৪তম টেস্ট অধিনায়ক ক্যাপ্টেনসি ছেড়ে দেয়ার ঘোষনা দিয়েছেন।
টেস্ট ক্যাপ্টেনসি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে এটাও একটা কারণ হতে পারে। তবে তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক নির্বাচনকে মেনে নিতে পারেননি তিনি। ক্যাপ্টেনসি ছেড়ে দেয়ার কারণ হিসেবে তা বলতে দ্বিধা করেননি নাজমুল হোসেন শান্ত।সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন- ' টেস্ট সংস্করণে আর এই দায়িত্ব পালন করতে চাই না। এটা ব্যক্তিগত কোনো কিছু নয়। দলের ভাল'র জন্য আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ড্রেসিংরুমে কয়েক বছর ধরে, লম্বা সময় ধরে আমার থাকার সুযোগ হয়েছে। তিনজন অধিনায়ক দলের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে। দলের ভাল'র জন্য তাই ক্যাপ্টেনসি ছেড়ে দিলাম। ক্রিকেট বোর্ড যদি মনে করে, তিন অধিনায়কই রাখবে, এটা তাদের সিদ্ধান্ত।'
গল টেস্টে বীরত্বপূর্ণ ড্র থেকে টনিক নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। টেস্ট স্ট্যাটাসের রজত জয়ন্তী উৎসবের আঁচও লাগেনি ক্রিকেটারদের গায়ে। কলম্বোর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শ্রীলঙ্কা স্পিনারদের বিষধর ছোবলে গল-এর অর্জন দিয়েছে বিসর্জন।তৃতীয় দিনেই কলম্বো টেস্টের গতিপথ নির্ধারিত হয়ে গেছে।
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় কলম্বোর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আর একটি বড় ব্যবধানে হারের পথ তৈরি হয়েছে। চতুর্থ দিনের চ্যালেঞ্জটা ছিল ইনিংস হার এড়ানো। তবে এই দিনে শেষ ৪ জুটির পক্ষে ৯৭ রানের সেই চ্যালেঞ্জ পাড়ি দেয়া দুরূহ হয়ে গেছে। শেষ ৪ জুটি এদিন খেলেছে মাত্র আধ ঘন্টা। যোগ করতে পেরেছে মাত্র ১৮ রান। তৃতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ থেমেছে ১৪৪-এ। ফলে ইনিংস এবং ৭৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান চক্রে ০-১ এ সিরিজ হতাশার শুরু করেছে বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে বেশ ক'টি স্পটে ধরেছে ফাঁটল। বল পড়ে লো বাউন্স এবং আনইভেন বাউন্স করা শুরু করে দিয়েছে। তাতেই শ্রীলঙ্কার দুই স্পিনার প্রবথ জয়সুরিয়া-থারিন্দু রত্নায়েকের বল ঘুরেছে যথেষ্ট। আগের দিন ১৩ রানে ব্যাটিংয়ে থেকে স্পিনারদের গর্জে ওঠার দৃশ্য দেখেছেন লিটন। চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় ওভারে বলের পিচিং পয়েন্টের ফাটল, গর্ত দেখিয়ে লিটন করেছিলেন অভিযোগ।
তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বড় হামানদিস্তা এনে ফাটল সমান্তরাল করেও বিপর্যয় থামানো সম্ভব হয়নি। মাঠকর্মীদের চেষ্টায় সনাতনী কায়দায় পিচ সমান্তরাল করার চেষ্টার পরের বলেই লিটন প্রবথ জয়সুরিয়ার টার্নিং ডেলিভারিতে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে যেয়ে উইকেটের পেছনে দিয়ে এসেছেন ক্যাচ (৪৩ বলে ১৪)। দিনের ৫ম বলে লিটনের এভাবে চলে যাওয়া টেল এন্ডারদের ভালই সংক্রমিত করেছে। প্রথম ইনিংসে লেজের জোরে ২৪৭ পর্যন্ত ইনিংস টেনে নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় ইনিংসে লেজের জোর দেখাতে পারেনি নাজমুল হাসান শান্ত'র দল।
আগের দিনের পড়ন্ত বেলা থেকে শুরু করা প্রবথ জয়সুরিয়ার স্পেলটি ভয়ংকর (৬-০-১৮-৪) রূপ পেয়েছে। এদিন তিন শিকার করেছেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। লিটনকে দিয়ে শুরু। পরের ওভারে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে নাঈম হাসান (৮ বলে ৫) স্ট্যাম্পিংয়ে কাটা পড়েছেন। তার পরের ওভারে তাইজুল দিয়েছেন রিটার্ন ক্যাচ (১৫ বলে ৬)। তাতেই টেস্ট ক্যারিয়ারে ত্রয়োদশতম ৫ উইকেট শিকার (১৮-২-৫৬-৫) পূর্ণ করেছেন প্রবথ জয়সুরিয়া। এবাদতকে এলবিডাব্লুউতে ফিরিয়ে শেষ শিকারটি করেছেন আর এক বাঁ হাতি স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকে। তার শিকার ২টি (৫.২-০-১৯-২)।
একদিন আগেই বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার রজত জয়ন্তী উৎসব করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিশাল কেক কেটে টেস্ট মর্যাদার রজত জয়ন্তী উৎসবে উন্মোচিত হয়েছে টেস্ট ক্রিকেটারদের অনার্স বোর্ড। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা করেছেন অতিথিরা। তবে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ওই উৎসব থেকে টনিক নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। গল টেস্টে বীরত্বপূর্ণ ড্র ফিকে হয়ে যাচ্ছে কলম্বোতে।
কলম্বোর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ দলের বিপর্যস্ত অতীতটাই যেনো আর একবার ফিরে পেতে যাচ্ছে শান্ত’র দল। ইতোপূর্বে এই ভেন্যুতে ৩টি টেস্টের প্রতিটিতেই বড় হারকে নিয়তি বলে মেনে নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ২০০১ সালে ইনিংস ও ১৩৭ রানে, ২০০২ সালে ২৮৮ রানে এবং ২০০৭ সালে ইনিংসও ২৩৪ রানে হারের সেই কষ্টটা এবারো বুঝি ভুলিয়ে দিতে পারছে না বাংলাদেশ দল। তৃতীয় দিনে এসে টেস্টের গতিপথ প্রায় নির্ধারিত হয়ে গেছে। তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ১১৫/৬।
এই ভেন্যুতে এখন আরও একবার ইনিংস হারের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ইনিংস হার এড়ানোর জন্য এখন দরকার ৯৭ রান। যেভাবে বল ঘুরতে শুরু করেছে, শ্রীলঙ্কার তিন স্পিনার যেভাবে টুটি চেপে ধরেছে, তাতে আপাতদৃষ্টিতে ইনিংস হার এড়ানোটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এদিন দু দলের স্পিনারদের ছোবলে ২৮৩ রানে পড়েছে ১৪টি উইকেট। ২৯০/২ স্কোর নিয়ে এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কা থেমেছে ৪৫৮/১০-এ। এই দিন শ্রীলঙ্কার ৮ উইকেট ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ ১৬৮ রানে। দিনের প্রথম ঘন্টায় ৫২ রান যোগ করে ৩ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার বড় লিডের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ বোলাররা। লাঞ্চের পর ৭০ মিনিটে স্কোরশিটে ৫৭ উঠতে শ্রীলঙ্কা হারিয়েছে শেষ ৪ উইকেট।
দিনের শুরুটা করেছিলেন তাইজুল ইসলাম। দিনের ৬ষ্ঠ ওভারে আগের দিনের সেঞ্চুরিয়ান পাথুম নিশাঙ্কাকে কাভারে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন তিনি। গল-এ ১৮৩’র পর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে থেমেছেন এই সেঞ্চুরিয়ান ১৫৮-তে। ধনঞ্জয়াকে সেট হওয়ার আগে ফিরিয়ে দিয়েছেন তাইজুল। আর্ম বলে ধনঞ্জয়াকে (১০) করেছেন এলবিডাব্লুউ।
লাঞ্চের পর থারিন্দু (১০) এবং আসিথাকে শিকারে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৭তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের মাইলস্টোন পূর্ণ করেছেন (৪২.৫-৪-১৩১-৫)।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এমন কৃতিত্ব তাইজুলের জন্য দ্বিতীয়বার। আর দুবারই শ্রীলঙ্কার মাটিতে। ২০২১ সালে পাল্লেকেলের (৫/৭২) পর এবার সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাবে পেলেন ইনিংসে পাঁচ উইকেটের দেখা।
গল টেস্টে নিজেকে চেনানো অফ স্পিনার নাঈম হাসানও এদিন দারুণ বল ঘুরিয়েছেন। আগের দিন চান্দিমালের শিকারী নাঈম টেস্টের তৃতীয় দিন শিকার করেছেন ২ উইকেট। সেঞ্চুরির পথে সওয়ার কুশল মেন্ডিজকে (৮৭ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় ৮৪) ফাঁদে ফেলে স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। দিনুশাকে (১১) করেছেন বোল্ড। টেস্টে ফেরাটা সুখকর হয়নি মিরাজের। ৭৫ রান খরচায় উইকেটহীন কাটিয়েছেন এই অফ স্পিনার।
ইনিংস হার এড়াতে হলে করতে হবে ২২২। এই টার্গেটটা সম্ভবত মাথায় না রেখেই তৃতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে বাংলাদেশ দল। তার প্রতিফলনই ছিল ব্যাটিংয়ে। আগের ৭টি টেস্টে ৩৯-এর বেশি করতে না পারা এনামুল হক বিজয় এদিন এসেই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেছেন। এমন মেজাজটা ধরতে পেরে আসিথা দিয়েছিলেন বাউন্সার। সেই বাউন্সারের জবাব হুকে দিতে যেয়ে নিজের মৃত্যু ডেকে এনেছেন বিজয়। দিয়ে এসেছেন শর্ট লেগে ক্যাচ (১৯ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ১৯)।
৩১ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপের ব্যাটিং পার্টনার সাদমান বাঁহাতি স্পিনার প্রবথ জয়সুরিয়াকে কাভারে খেলতে যেয়ে ক্যাচে থেমেছেন (২৪ বলে ১২)। শ্রীলঙ্কা সিরিজে আগের তিনটি ইনিংসের তিনটিতেই মুমিনুল দিয়ে এসেছেন উইকেট। চতুর্থ ইনিংসেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অফ স্পিনার ধনঞ্জয়ার বলে স্লিপে দিয়েছেন ক্যাচ (৪৮ বলে ১৯)।
স্পিনের বিপক্ষে বরাবরই দক্ষ মুশফিকুর রহিম প্রবথ জয়সুরিয়ার টার্ন অনুমান করতে পারেননি। ব্যাকফুটে ডিফেন্স করতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড (৫৩ বলে ২৬)। যখন তখন দিনের খেলা শেষ হবে, সেই হিসাবটা মাথায় ছিল না মিরাজের। থারিন্দুর বলে এলবিডাব্লুউতে (১৬ বলে ১১) কাটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে দিয়ে আম্পায়াররা প্রকারান্তরে তা জানিয়ে দিয়েছেন মিরাজকে।
শ্রীলঙ্কার তিন স্পিনার প্রবথ (১৫-২-৪৭-২), ধনঞ্জয়া (৪-১-১৩-২), থারিন্দু (২.৪-০-১০-১) যেভাবে বল ঘোরাচ্ছেন, তাতে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন পার করাটা হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
গুরুত্বপূর্ণ ছাড়া এখন নিউজিল্যান্ড দলের অন্য কিছু সিরিজেই অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন কেন উইলিয়ামসন। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী মাসে জিম্বাবুয়েতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলের বাইরে রাখা হয়েছে তারকা এই ব্যাটারকে।
কিউদের নতুন প্রধান কোচ রব ওয়াল্টার ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই ত্রিদেশীয় সিরিজকে কাজে লাগাতে চাইছেন। সেই লক্ষ্যে ঘোষিত স্কোয়াডে দলে জায়গা মিলেছে অ্যাডাম মিল্নে ও বেভন জ্যাকবসের।
উইলিয়ামসন বর্তমানে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে মিডলসেক্সকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এছাড়াও তিনি দ্য হান্ড্রেডে লন্ডন স্পিরিটের হয়ে খেলবেন, তাই নিউজিল্যান্ডের এই সফরে তিনি থাকছেন না। এর আগে মিস করেন পাকিস্তানের সাথে সাদা বলের সিরিজও।
আর গতিময় পেসার লকি ফার্গুসনকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। আরেক ডানহাতি পেসার কাইল জেমিসন প্রথম সন্তানের অপেক্ষায় আছেন, তাই তিনি দলের বাইরে আছেন। অন্য পেসার বেন সিয়ারস সাইড ইনজুরিতে ভুগছেন।
মিল্নে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর এই প্রথমবার জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টিতে ফিরলেন। টেক্সাস সুপার কিংসের হয়ে চলমান মেজর লিগ ক্রিকেটে ৪ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে দারুণ ছন্দে আছেন অভিজ্ঞ এই পেসার। আর জ্যাকবস প্রথম জাতীয় দলে ডাক পান গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে। তিনি আইপিএলের নিলামে গত বছর দল পান মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে।
আইপিএলের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ মিস করা গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র ও অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনাররা দলে ফিরেছেন। তবে ওপেনার ডেভন কনওয়ে দলে জায়গা পাননি।
ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ম্যাচ আগামী ১৬ জুলাই হারারেতে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তবে ওই সময় মেজর লিগ ক্রিকেটের ফাইনাল থাকায়, নিউজিল্যান্ড স্কোয়াডে থাকা কেউ যদি সময়মতো জিম্বাবুয়েতে পৌঁছাতে না পারেন, তাহলে পরে তার বিকল্প খেলোয়াড় স্কোয়াডে ডাকা হবে বলে জানানো হয়েছে।
যে পিচে প্রথম দিন ব্যাটিংয়ে ধুঁকেছে বাংলাদেশ, সেই পিচেই দ্বিতীয় দিন শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডাররা করেছে স্বাচ্ছন্দে ব্যাটিং! মিরাজ-এবাদতের প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশ দলের বোলিং শক্তি অনেক বেড়ে যাওয়ার কথা। তবে কলম্বোয় এই দিন আতঙ্ক ছড়াতে পারেনি বাংলাদেশ বোলররা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের একটি পার্টনারশিপও সেঞ্চুরির মুখ দেখেনি, সেখানে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় জুটি যোগ করেছে ১৯৪ রান। লেজের জোরে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ২৪৭/১০ স্কোর। এই স্কোর যে যথেষ্ট নয়, ব্যাটিং বান্ধব হয়ে ওঠা সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠের পিচ সে কথাই বলছে। দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ২৯০/২। ইতোমধ্যে নিয়েছে স্বাগতিক দল ৪৩ রানের লিড। যেভাবে স্বাচ্ছন্দে ব্যাট করছে শ্রীলঙ্কা, তাতে স্বাগতিক দলের রান পাহাড়ে বাংলাদেশের চাপা পড়ার শঙ্কাই প্রবল।
প্রথম দিন লেজের জোরে দিন পার করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনেও টেল এন্ডাররা টপ অর্ডারদের দিয়েছেন শিক্ষা। আগের দিনের ২২০/৮-এর সঙ্গে এদিন বাংলাদেশের শেষ দুই জুটি যোগ করেছে ২৭ রান। খেলেছে তারা ৫১টি বল। দিনের চতুর্থ ওভারে পেসার আসিথা ফার্নান্দোর লো বাউন্সি ডেলিভারিতে এবাদত এলবিডাব্লুউতে থেমেছেন ৮ রানে। দিনের নবম ওভারে বাঁ হাতি স্পিনার দিনুশার আর্ম বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন তাইজুল। ৬০ বলে ৩৩টি মূল্যবান রানের ইনিংসে ৫টি বাউন্ডারি মেরেছেন তাইজুল। সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠানরত টেস্টে অভিষিক্ত সোনাল দিনুশা পেয়েছেন ৩ উইকেট (৩/২২)। পেসার আসিথা ফার্নান্দোরও শিকার ৩ উইকেট (৩/৫১)।
ওভারপ্রতি ৩.১০ গড়ে বাংলাদেশের স্কোরকে দ্রুত টপকে যেতে দরকার স্ট্রাইক রেট বাড়িয়ে নেয়া। ইনিংসের শুরু থেকে সেদিকে চোখ রেখেছে শ্রীলঙ্কা টপ অর্ডাররা। দ্বিতীয় দিনে ওভারপ্রতি ৩.৭১ হারে রান তুলে দ্রুত লিড নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এবাদতকে কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি দিয়ে ইনিংস শুরু করে ইতিবাচক ব্যাটিং প্রদর্শনীর আভাস দিয়েছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। গল টেস্টে সেঞ্চুরির পর কলোম্বোতেও তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছেন এই ওপেনার। গল-এ মাত্র ১৭ রানের জন্য মিস করেছেন ডাবল পাথুম। সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দ্বিতীয় দিন শেষে ১৪৬ রানে অবিচ্ছিন্ন এই ওপেনারের চোখ এখন ডাবলের দিকে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ ধারাবাহিক চান্দিমাল এদিন কাঁটা পড়েছেন নার্ভাস নাইনটিজে। ৯৩ রানের মাথায় অফ স্পিনার নাঈম হাসানকে রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে বল উঠে গেছে শুন্যে, সহজেই তা গ্লাভসবন্দি করেছেন উইকেট কিপার লিটন। ৯০'র ঘরে এটি তার দ্বিতীয় ইনিংস। এর আগে ২০২২ সালে গল-এ পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৪ রানে থেমেছেন। সেই ইনিংসে অবশ্য অবিচ্ছিন্ন ছিলেন তিনি। পার্টনারের অভাবে পূর্ণ হয়নি তার সেঞ্চুরি। তবে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার পরও পাথুম নিশাঙ্কাকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রেখেছেন ১৯৪ রানে অবদান।
এমন নিরানন্দ দিনে ও ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। তাইজুলের বলে স্লিপে দিয়েছিলেন ক্যাচ চান্দিমাল। ১০ রানের মাথায় সে যাত্রায় বেঁচে ইনিংসটা টেনে নিয়েছেন তিনি ৯৩ পর্যন্ত। আম্পায়ার্স কল-এ অবধারিত এলবিডাব্লু থেকে বেঁচে গেছেন ওপেনার উদারা। তাইজুলের মিডল এন্ড লেগ স্ট্যাম্পে পিচিং ডেলিভারি ব্যাক প্যাডে আঘাত লেগেও আম্পায়ার্স কলে গেছেন বেঁচে তিনি। ২১ রানের মাথায় ভাগ্য সহায় হওয়া সেই উদারাকে ফিরিয়েছেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল। রিভিউ আপীল নিয়ে তাকে এলবিডাব্লুউতে ফিরিয়েছেন তাইজুল ৪০ রানের মাথায়।
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৭ দিন আগে
৭ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে