ইতিবাচক ফুটবলের বার্তা ছিল মিকেল আর্তেতার। তার দল শুরুটা করল ঠিক সেভাবেই। ভাগ্য সহায় হলে প্রথম দশ মিনিটেই মিলতে পারত গোল। তবে সেটা আর হয়নি। বরং সময় গরানোর সাথে সাথে ছন্দ ফিরে পাওয়া পিএসজি দেখাল প্রাধান্য। গোলের দেখাও মিলল অনায়াসেই। কোনঠাসা আর্সেনাল একটা গোল করল বটে, তবে তাদের ম্যাচের দ্বিতীয় সেরা দল বানিয়ে পাঁচ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পা রাখল লুইস এনরিকের পিএসজিই।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে ২-১ গোলে জিতেছে পিএসজি। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ স্কোরলাইনে জিতে দলটি পা রেখেছে এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় ফাইনালে।
শিরোপার লড়াইয়ে পিএসজির প্রতিপক্ষ ইন্তার মিলান, যারা বার্সেলোনাকে ৭-৬ গোলে হারিয়ে জায়গা করে নিয়েছে তিন বছরের মধ্যে নিজেদের দ্বিতীয় ফাইনালে।
প্রথম লেগে ঘরের মাঠে পিএসজিকে দেখা যায়নি সেরা ছন্দে। তাতেও ধরা দিয়েছিল জয়। প্রতিপক্ষের মাঠে তৃতীয় মিনিটেই বিপদে পড়ে যাচ্ছিল দলটি। খিভিচা কোয়ারাতসখেলিয়া পিএসজির বক্সের কাছে জুরিয়েন টিম্বারের কাছে নবল হারান, যেখান থেকে বক্সের ভেতর করা তার ক্রসে হেড নেন ডেকলান রাইস, যা থাকেনি লক্ষ্যে।
প্রথম লেগে পিএসজির জয়ে বড় অবদান ছিল দুর্দান্ত কিছু সেভ করা গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোনারুম্মার। এই ম্যাচেও হয়নি তার ব্যতিক্রম। থমাস পার্টির বক্সে ভেতর বাড়ানো লম্বা থ্রো থেকে বল পেয়ে লক্ষ্যে জোরাল শট নেন গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি। তবে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে যান পিএসজি গোলরক্ষক, উপহার দেন পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক সেভ।
প্রথম দশ মিনিটে পিএসজিকে ব্যস্ত থাকতে হয় রক্ষণ সামলাতেই বেশি। অষ্টম মিনিটে ফের ত্রাতার ভূমিকায় হাজির হন দোনারুম্মা। আরও একবার থ্রো-ইন থেকে বক্সের ভেতর বল পায় আর্সেনাল। এবার নিখুঁত শট নেন অধিনায়ক মার্টিন ওডেগার্ড। তবে ঝাঁপিয়ে এক হাতে সেটা আটকে দেন ইতালিয়ান এই গোলকিপার।
১৬তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল পিএসজি। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বাঁদিক থেকে কাট করে বক্সে প্রবেশ করে শট নেন জর্জিয়ান। ডেভিড রায়াকে পরাস্ত করতে পারলেও বল ফিরে আসে পোস্টে লেগে।
ছয় মিনিট বাদে আরেকটি ভালো সুযোগ নষ্ট হয় পিএসজির। বক্সের ভেতর ভালো পজিশনে থাকলেও দুর্বল শট নিতে পারেন ডিসাইর দৌরে। ২৭তম মিনিটে লিড নেয় পিএসজি, আর সেটা ছিল দেখার মত এক গোলই।
আর্সেনাল ফ্রি-কিক ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে বল পেয়ে যান ফাবিয়ান রুইজ। প্রথমে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন, জায়গা তৈরি করেন আর এরপর বাঁ পায়ের বুলেট শটে খুঁজে নেন ঠিকানা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৪৬তম ম্যাচে এটি তার প্রথম গোল।
বিরতির পর গোছানো ফুটবল উপহার দেয় আর্সেনাল। ৬৩তম মিনিটে দারুণ এক সুযোগও তারই ফলশ্রুতিতে পেয়ে যান বুকায়ো সাকা। বাঁদিক থেকে কাট করে নেন কার্লিং শট, যা ছিল লক্ষ্যেই। তবে পিএসজির যে একজন দোনারুম্মা আছেন! আলতো করে বলটি ক্লিয়ার করেন কর্নারের বিনিময়ে।
এর মিনিট দুয়েক বাদে আশরাফ হাকিমির শট আর্সেনালের বক্সে একজনের হাতে লাগলেও শুরুতে তা পেনাল্টি মনে হচ্ছিল না। তবে ভিএআর দেখে রেফারি পেনাল্টি দেন পিএসজিকে।
তবে দলকে হতাশ করেন ভিতিনিয়া। ধীরে ধীরে এগিয়ে যান তিনি, যা দেখে রায়াও মুভ করেন সেভাবেই। ডান দিকে নেওয়া ভিতিনিয়ার নেওয়া শট শেষ পর্যন্ত রুখে দেন রায়া।
৭২তম মিনিটে ম্যাচ থেকে আর্সেনালকে প্রায় ছিটকেই দেন হাকিমি। বদলি নামা উসমান দেম্বেলে পাস থেকে বক্সের ভেতর বল পেয়েই জাল খুঁজে নেন মরক্কোর এই ডিফেন্ডার।
দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ গোলে পিছিয়ে যাওয়ার আর্সেনাল ৭৫তম মিনিটে পায় একটা লাইফলাইন। একটু আগেই বদলি নামা লিয়ানড্রো ট্রোসার্ড মারকুইনহোসের কাছ থেকে বলের দখল নিয়ে বক্সের ভেতর পাস দেন সাকাকে। ইংলিশ উইঙ্গারের প্রথম শট গোলকিপার আটকে দিলেও ফিরতি শটে গোলের দেখা পান সাকা।
তবে পরের মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ ও সেরা সুযোগটাও নষ্ট করেন তিনি। ছয় গজের ভেতর পরাস্ত হয়ে গিয়েছিলেন দোনারুম্মাও। ফাঁকায় থাকা সাকার কাজ ছিল কেবল বল লক্ষ্যে রাখা, তবে তিনি সেটা উড়িয়ে মারেন পোষ্টের অনেক ওপর দিয়ে।
ওই মিসের পর আর্সেনালের মনোবলও যেন হারিয়ে যায় দ্রুত। বাকি সময়ে পিএসজি রক্ষণ সামাল দেয় দক্ষতার সাথেই। আর সেটাই তাদের ২০১৯-২০ মৌসুমের পর আবার নিয়ে যায় ফাইনালে।
২ জুলাই ২০২৫, ৯:৩৭ পিএম
২ জুলাই ২০২৫, ৯:০৫ পিএম
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পর্তুগাল ফরোয়ার্ড দিয়াগো জতা ও তার ভাই আন্দ্রে। দুজনের এমন অকাল মৃত্যুতে শোক নেমেছে পুরো ফুটবল দুনিয়ায়। সতীর্থ থেকে কোচ, প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় কিংবা ক্লাব সবাইকেই ছুঁয়ে গেছে জতার মৃত্যু। সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে অনেকেই জতাকে নিয়ে দিয়েছেন আবেগি পোস্ট।
যেই তালিকায় আছেন জতার লম্বা সময়ের পর্তুগিজ সতীর্থ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে জতার ছবি দিয়ে রোনালদো লিখেছেন,
“অবিশ্বাস্য লাগছে! এইতো সেদিনই তো তুমি জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেললে, দিন কয়েক আগে বিয়ে করলে, তোমার পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি জানি তুমি সবসময় তাদের সাথে থাকবে। শান্তিতে থাকো, জতা ও আন্দ্রে। আমরা তোমাকে মিস করব!”
২০২০ সালে ইয়ুর্গেন ক্লপের অধীনে লিভারপুলে যোগ দেন জতা। তার এমন মৃত্যু শোকাহত ক্লপও,
“জতা এবং তার ভাই আন্দ্রের মৃত্যুর খবর শুনে আমি শোকাহত। সে কেবল একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড়ই ছিলেন না, একজন দুর্দান্ত বন্ধু, একজন স্নেহশীল এবং যত্নশীল স্বামী এবং বাবাও ছিলেন! আমরা তাকে অনেক মিস করব! বাচ্চারা, পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং তাদের যারা ভালোবাসতেন তাদের সকলের জন্য আমার প্রার্থনা, শান্তিতে বিশ্রাম নিন।”
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে লিভারপুলও। এছাড়াও রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনোইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি সহ প্রায় সব ক্লাবই জতার মৃত্যুতে জানিয়েছে সমবেদনা।
২২ জুন বিয়ে করেন শৈশবের প্রেমিকাকে। তাদের কোল জুড়ে রয়েছে তিনটে ফুটফুটে সন্তানও। বিয়ের ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়োগো জতা পোস্ট করেন মাত্র দিন পাঁচেক আগে। পাঁচ দিন পর আজ তিনি নিজেই হয়ে রইলেন ছবি। এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন লিভারপুল ফরোয়ার্ড দিয়োগো জতা।
বুধবার রাত থেকেই অনেক ইউরোপিয়ান সংবাদ মাধ্যমে চাওর হয় জতার দুর্ঘটনার খবর। দুর্ঘটনাটি ঘটে স্পেনের জামোরা প্রদেশের এ–৫২ মহাসড়কে। ২৮ বছর বয়সী পর্তুগিজ ফুটবলার তাঁর ভাই আন্দ্রেকে নিয়ে ল্যম্বরগিনি চালাচ্ছিলেন। অন্য একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে।
দুর্ঘটনায় জতার ভাই আন্দ্রে সিলভাও মারা যান। যিনি নিজেও একজন ফুটবলার ছিলেন। পর্তুগালের ২য় বিভাগের ক্লাব পেনাফিয়েলে খেলতেন ২৬ বছর বয়সী সিলভা। দুই ভাইয়ের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে আচ্ছন্ন গোটা ফুটবল দুনিয়া।
২০১৯ এ আরেক স্প্যানিশ ফুটবলার হোসে আন্তেনিও রেয়েসও একইভাবে ওভারস্পিডের কারণে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। যেখানেও তার সঙ্গে তার এক ভাই নিহত হন। আবারও স্পেনেই আরো এক ফুটবলারের গাড়ি দুর্ঘনায় মৃত্যুর সাক্ষী হলো বিশ্ব।
দিয়োগো জতা বিয়ের পিড়িতে বসেছিলেন দারুণ এক সময়েই। মে মাসে লিভারপুলের হয়ে জিতলেন প্রিমিয়ার লিগ। এই মৌসুমে ৬ টি গোলও ছিল তার। পর্তুগালের হয়ে জিতলেন নেশনস লিগও। এর পরেই বিয়ের পিড়িতে। জীবনের এত মধুর সময় পার করা জতা মিলিয়ে গেলেন হঠাৎই।
২০১৪ সালে পর্তুগালের ক্লাব পাকোস দে ফেরেইরায় পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন জতা। দুই বছর পর লা লিগার ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদে যোগ দিলেও ক্লাবটির হয়ে কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। ধারে খেলেছেন পোর্তো ও উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডার্সে। ২০১৮ সালে ইংলিশ ক্লাব উলভারহ্যাম্পটনে যোগ দিয়ে দুই বছর কাটিয়ে যোগ দেন লিভারপুলে। ২০১৭–১৮ মৌসুমে উলভারহ্যাম্পটনের হয়ে জেতেন লিগ কাপ। লিভারপুলের হয়ে গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ জয়ের সঙ্গে জেতেন ২১–২২ মৌসুমের এফএ কাপও। পর্তুগালের হয়ে নেশনস লিগ জিতেছেন দুবার ২০১৯ সালে এবং গেল জুনে।
ক্লাব ফুটবলে ৩০২ ম্যাচে ১০২টি গোল ও ৪৮ টি অ্যাসিস্ট জতার। প্রিমিয়ার লিগে ১৯০ ম্যাচ খেলে করেছেন ৬৩ টি গোল ও ২৪ অ্যাসিস্ট। পর্তুগালের হয়ে ছিলেন ৫০ ম্যাচ খেলার দ্বারপ্রান্তে। ৪৯ ম্যাচ খেলে গোল করেন ১৪টি ও অ্যাসিস্টে অবদান ছিল তাঁর ১২ বার।
ফুটবলের ক্যারিয়ারটা তাঁর এখানেই সীমাবদ্ধ থাকলো। ক্লাবের জার্সি কিংবা পর্তুগালের হয়ে আর কোন ম্যাচে খেলা হবে না তার। ম্যাচ গোল আর অ্যাসিস্টের সংখ্যাগুলো আর বদলাবে না। তবে লিভারপুল যেমন সবসময় বলে থাকে ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’। ঠিক সেভাবে আপনাকেও আজ সবাই বলবে, ‘দিয়োগো জতা, ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’।
সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন লিভারপুল ফরোয়ার্ড দিয়োগো জতা। বুধবার রাতে স্পেনের জামোরা শহরে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান পর্তুগিজ এই ফুটবলার।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, স্পেনের জামোরা শহরে ঘটে এই দুর্ঘটনা। ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম খবর পায় জামোরায় একটি গাড়ি দুঘটনা ঘটেছে। এরপরই জানা যায় সেখানে ফুটবলার দিয়োগো জতা ও তাঁর ভাই নিহত হয়েছেন।
বিস্তারিত আসছে…
গত মৌসুম শেষ না হতেই জোর গুঞ্জন ছিল বার্সেলোনার আগ্রহ নিয়ে। তবে শুরুতেই লুইস দিয়াজের ক্লাব ছাড়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে লিভারপুল। তারকা এই উইঙ্গারের দিকে এরপর নজর ছিল বায়ার্ন মিউনিখের। তবে ইএসপিএন একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, জার্মান ক্লাবের প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
গত মৌসুমে লিভারপুলের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন দিয়াজ। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই কলম্বিয়ান উইঙ্গার ১৭টি গোল করে লিভারপুলের প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। স্বাভাবিকভাবেই তাকে দলে টানার দিকে আগ্রহী হয় ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলো।
লিভারপুলে দিয়াজের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ আরও দুই বছর বাকি রয়েছে। ইএসপিএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সম্প্রতি দিয়াজকে নেওয়ার জন্য বায়ার্ন মিউনিখের ক্রীড়া পরিচালক ম্যাক্স এবার্ল লিভারপুলের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করেন। আর তখনই তাকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, লিভারপুল তাকে নিয়ে কোনো দলবদলের আলোচনায় যেতে রাজি নয়।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তো থেকে লিভারপুলে যোগ দেন দিয়াজ। প্রাথমিকভাবে ট্রান্সফার ফি ছিল ৩৭.৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যা বিভিন্ন শর্ত পূরণ সাপেক্ষে বোনাস মিলিয়ে ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত গড়াতে পারে।
এখন পর্যন্ত লিভারপুলের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪৮টি ম্যাচ খেলেছেন দিয়াজ। নামের পাশে রয়েছে ৪১টি ও ২৩টি অ্যাসিস্ট। প্রিমিয়ার লিগ ছাড়াও জিতেছেন এফএ কাপ ও দুটি লিগ কাপ।
বুধবার মরক্কোর রাজধানী রাবাতে অবস্থিত রয়্যাল মরোক্কান ফুটবল ফেডারেশন পরিদর্শন করেছেন মাননীয় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এই সময় ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল জনাব তারিক নাজেম ও ডিরেক্টর জনাব হাসান খারবোশ তাঁকে স্বাগত জানান এবং ফেডারেশনের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন। সেখানে মরোক্কান ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বাংলাদশে কোচ, ফুটবলার, রেফারি তৈরিতে সাহায্য করত আগ্রহের কথা জানানো হয়েছে।
আলোচনা চলাকালে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তাসহ সার্বিক সহযোগিতার প্রস্তাব দেওয়া হয় মরক্কোর পক্ষ থেকে। তারা ফুটবল ‘ইকোসিস্টেমে’ নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছে, যা দিয়ে তারা বিশ্ব ফুটবলে এখন নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের এই প্রস্তাব বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য দারুণ এক আশার সঞ্চার হতে পারে। ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে চমকের পর চমক জাগিয়ে প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। সেই পথচলায় বিদায় করে হারায় স্পেন-পর্তুগালের মত দুই পরাশক্তিকে।
আর মরক্কোর সেই দলটিতে ছিলেন বেশ কয়েকজন বিদেশী লিগে খেলা ফুটবলার, যারা দুটি দেশের নাগরিকত্ব থাকলেও শেষ পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলার জন্য বেঁছে নেন মরক্কোকে। এই তালিকায় এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য নাম পিএসজির আশরাফ হাকিমি, রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাহিম দিয়াজের মত খেলোয়াড়রা। বাংলাদেশ দলেও এই বছর শুরু হয়েছে সেই ধারা। এরই মধ্যে জাতীয় দলে খেলে ফেলেছেন ইংলিশ ফুটবলের হামজা চৌধুরী, ইতালিয়ান লিগে খেলা ফাহমিদুল ইসলাম, কানাডিয়ান লিগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সামিত শোম।
পরিদর্শনের সময় মাননীয় উপদেষ্টাকে ফেডারেশনের ফুটবল কমপ্লেক্সের বিভিন্ন অবকাঠামো—প্রশিক্ষণ মাঠ, আধুনিক মেডিকেল ও রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার, ফিটনেস ইউনিটসহ অন্যান্য ক্রীড়া সুবিধাসমূহ ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এসময় কর্মকর্তারা মরক্কোর ফুটবলের কাঠামো, খেলোয়াড় উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
মরোক্কান ফুটবল ফেডারেশনের আন্তরিক আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ মরক্কোর জাতীয় দলের সাম্প্রতিক অর্জন, বিশেষ করে সর্বশেষ ফিফা বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে মরক্কো জাতীয় দলের বিপুলসংখ্যক অনুরাগী রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে তিনি দুই দেশের মধ্যে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের প্রস্তাব করেন, যা ক্রীড়াক্ষেত্রে দুই দেশের পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা জোরদারে ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক মানের একটি ফুটবল ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে মরোক্কোর পরামর্শ, দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উপরও গুরুত্বা দেন উপদেষ্টা।
এই আলোচনায় উভয় পক্ষই আশা প্রকাশ করেন, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদের এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মরক্কোর মধ্যে ফুটবল উন্নয়ন ও ক্রীড়াবিষয়ক সহযোগিতার একটি কার্যকর ও টেকসই ভিত্তি গড়ে উঠবে।
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১০ দিন আগে
১২ দিন আগে
১২ দিন আগে
১৯ দিন আগে
১৯ দিন আগে
২২ দিন আগে