
সার্বিয়ায় ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে দেশই ছাড়তে হলো সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচের।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন, সার্বিয়া ছেড়ে পরিবারসহ গ্রিসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছেন জোকোভিচ। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নভি সাদ শহরের একটি রেলস্টেশনে ছাদ ধসে ১৬ ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি এবং ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেন।
জোকোভিচ তাঁর ১১ বছর বয়সী ছেলে স্তেফান এবং ৮ বছর বয়সী মেয়ে তারাকে গ্রিসের রাজধানী অ্যাথেন্সে অবস্থিত সেন্ট লরেন্স কলেজে ভর্তি করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি সমুদ্রের ধারে একটি বাড়িও কিনেছেন। গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জোকো, যা তাঁকে গ্রিসে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেবে।
আরও পড়ুন
| টানা দুই হ্যাটট্রিকে ভুটান লিগে উজ্জ্বল শামসুন্নাহার |
|
প্রতিবাদের পক্ষে সাহসী অবস্থান- ২০২৪ সালের নভি সাদ রেলস্টেশন ট্র্যাজেডির পর সার্বিয়ার ছাত্ররা দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে। জোকোভিচ সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে এই আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানান।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয় এক আহত ছাত্রকে উৎসর্গও করেন জোকোভিচ। বেলগ্রেডে একটি বাস্কেটবল ম্যাচে ‘স্টুডেন্টস আর চ্যাম্পিয়নস’ লেখা সোয়েটার পরে উপস্থিত হন। এ ছাড়া তিনি আন্দোলনের সময়কার কিছু ইমোশনাল ছবি ইতিবাচক বার্তাসহ সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন, যা ব্যাপক সাড়া ফেলে।
আরও পড়ুন
| বিসিসিআই প্রধান ‘হচ্ছেন না’ শচীন |
|
নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোকোভিচ লেখেন,
‘আমি যুবসমাজের শক্তি এবং তাদের ভালো ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষায় গভীরভাবে বিশ্বাস করি। তাদের কণ্ঠস্বর শোনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সার্বিয়ার সম্ভাবনা অপরিসীম, আর এর শিক্ষিত যুবক-যুবতীরাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের প্রয়োজন বোঝাপড়া এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা। তোমাদের পাশে আছি – নোভাক।”
জোকোভিচের এই অবস্থানের কারণে তাঁকে এখন সার্বিয়ান সরকারের বিরাগভাজন হতে হয়েছে। এক সময় যিনি ছিলেন দেশের গর্ব, এখন তিনি সরকারের চোখে বিতর্কিত ব্যক্তি। তবে তাতে জোকোভিচের অবস্থান বদলায়নি—তিনি বিশ্বাস করেন, সত্য ও ন্যায়ের পাশে দাঁড়ানো একজন ক্রীড়াবিদের দায়িত্ব।
No posts available.
২২ অক্টোবর ২০২৫, ৫:১৩ পিএম

প্রায় ৩ ঘণ্টার দীর্ঘ লড়াইয়ে লরেন্সো মুসেত্তিকে হারিয়ে হেলেনিক চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছেন নোভাক জোকোভিচ। যার সৌজন্যে এটিপি ট্যুরের উন্মুক্ত যুগের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ডও গড়েছেন সার্বিয়ান তারকা।
অ্যাথেন্সে শনিবারের ফাইনালে মুসেত্তিকে ৪-৬, ৬-৩ ও ৭-৫ গেমে হারান জোকোভিচ। দুই শীর্ষ বাছাই খেলোয়াড়ের মধ্যে লড়াইটি চলে ২ ঘণ্টা ৫৯ মিনিট ধরে।
এটিপি ট্যুর ক্যারিয়ারে জোকোভিচের এটি ১০১তম শিরোপা। এই তালিকায় রজার ফেদেরারের চেয়ে মাত্র ২ শিরোপা দূরে জোকোভিচ। আর ১০৯ শিরোপা নিয়ে সবার ওপরে জিমি কনরস।
হার্ড কোর্টের রেকর্ডে ফেদেরারকে এরই মধ্যে পেছনে ফেলে দিয়েছেন জোকোভিচ। এটি তার ৭২তম শিরোপা। এতদিন ৭১ শিরোপা নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন ফেদেরার ও জোকোভিচ।
প্রথম সেটে জোকোভিচকে ৪-৬ গেমে হারিয়ে লিড নেন মুসেত্তি। তবে ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেননি শীর্ষ বাছাই এই তারকা। দ্বিতীয় সেটে ৬-৩ গেমে জেতেন। পরে টাইব্রেকারে যাওয়া তৃতীয় সেট ৭-৫ গেমে নিজের করে নেন তিনি।
তবে এথেন্সে চ্যাম্পিয়ন হলেও তুরিনের এটিপি ফাইনালসে খেলবেন না জোকোভিচ। কাঁধের চোটের কারণে নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সার্বিয়ান তারকা। ফলে তার জায়গায় সুযোগ পাচ্ছেন রানার্স-আপ হওয়া মুসেত্তি।

গত সেপ্টেবরে ইউএস ওপেনের ফাইনালে কার্লোস আলকারাজের কাছে হেরে যান ইয়ানিক সিনার। সেই ম্যাচ হারের ফলে ৬৫ সপ্তাহ পর র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান হারিয়ে ফেলেন ইতালিয়ান তারকা। দুই মাস পর আবারও শীর্ষে ওঠার হাতছানি দুই নম্বর বাছাই সিনারের।
সোমবার প্যারিস মাস্টার্সের ফাইনালে জয় পেলেই শীর্ষে উঠবেন এই তারকা।
প্যারিস মাস্টার্স শুরুর আগে চলতি বছর র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ফেরাকে অসম্ভব বলেছিলেন সিনার। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে ক্যামেরন নরির কাছে হেরে যান শীর্ষ বাছাই আলকারাজ। ফলে আবারও শীর্ষে ওঠার রাস্তা তৈরি হয় সিনারের।
আরও পড়ুন
| আলকারাজকে হারিয়ে চমক নরির |
|
শনিবার রাতে সেমিফাইনালে আলেকজান্ডার জেভারেভকে ৬-০, ৬-১ সেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছান সিনার। ইনডোরে সিনারের এটি টানা ২৫ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড। এই জয়ে প্রথমবারের মতো প্যারিস মাস্টার্সের ফাইনালে উঠলেন সিনার।
প্যারিসের লা ডিফেন্স এরিনায় কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেননি তৃতীয় বাছাই জেভারেভ। তিনটি ব্রেক পয়েন্ট জিতে ৬-০ তে প্রথম সেট জিতে নেন সিনার। প্রথম সেট মাত্র ৩০ মিনিটে জেতেন তিনি।
দ্বিতীয় সেটেও ধরে রাখেন আধিপত্য। দুটি ব্রেক পয়েন্ট নিজের করে নিয়ে ৬-১ ব্যবধানে জিতে নেন সেট।
ফাইনালে ফ্রান্সের ফ্লেক্স অগার-আলিয়াসিমের বিপক্ষে নামবেন সিনার। সেমিফাইনালে আলেকজান্ডার বুবলিককে ৭-৬(৭-৩), ৬-৪ সেটে হারিয়ে ফাইনালে ওঠেন এই ফরাসি তারকা।

ক্যামেরন নরির কাছে প্যারিস মাস্টার্সের দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে বিদায় নিয়েছিলেন শীর্ষ বাছাই কার্লোস আলকারাজ। তাঁর প্রতিদ্বন্দী দুই নম্বর বাছাই ইয়ানিক সিনার অবশ্য হতে দেননি কোন অঘটন। বেন শেলটনকে সহজে হারিয়ে প্রথমবার প্যারিস মাস্টার্সের সেমিফাইনালে পৌঁছালেন ইতালিয়ান এই তারকা। ইনডোরে সিনারের এটি টানা ২৪ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড।
প্যারিসের লা ডিফেন্স এরিনায় শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম বাছাই শেলটনকে সরাসরি ৬-৩, ৬-৩ সেটে হারান সিনার। এই জয়ে বিশ্ব র্যাংকিংয়ের আবারো শীর্ষস্থান দখলের কাছাকাছি এগিয়ে গেলেন এই তারকা। সোমবার প্যারিস মাস্টার্সের শিরোপা জিতলে চলতি বছর প্রথম মাস্টার্স শিরোপা ঘরে তুলবেন সিনার। সেইসাথে বিশ্ব র্যাংকিংয়ের এক নম্বর স্থান আবারো পুনরুদ্ধার করবেন। ম্যাচ শেষে সিনার জানালেন, তিনি এই মুহূর্তে র্যাংকিং নিয়ে ভাবছেন না।
এদিন দ্রত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাত্র ৭০ মিনিটে জয় নিশ্চিত করেন সিনার। শেলটনের বিপক্ষে এটি টানা সপ্তম জয় ২৪ বছর বয়সি এই তারকার। ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত সিনার বলেন,
‘খুবই খুশি। আজকের ম্যাচ খুব কঠিন ছিল। তাঁর সার্ভিং অসাধারণ, তবে আমি ভালো খেলতে পেরেছি।’
সেমিফাইনাল সিনারের প্রতিপক্ষ জার্মান তৃতীয় বাছাই অ্যালেক্সান্ডার জভারেভ। জভারেভ দুই ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে ডানিয়েল মেদভেদভকে ২-৬, ৬-৩, ৭-৬ (৭-৫) সেটে হারিয়েছেন।

প্যারিস মাস্টার্সের কোর্ট বড় অঘটনের সাক্ষী হলো! উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনালে কার্লোস আলকারাজের কাছে হারের শোধ নিলেন ক্যামেরন নরি। বিশ্বের এক নম্বর বাছাইকে ৪-৬, ৬-৩, ৬-৪ সেটে হারিয়ে দিলেন ৩০ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ তারকা।
আলকারাজের বিপক্ষে এটাই নরির ক্যারিয়ারের প্রথম জয়। টুর্নামেন্টে টানা ১৭ ম্যাচ জয়ের পরে তিনি শেষ ষোলোতে পৌঁছালেন।
আলকারাজকে হারানোকে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় জয় উল্লেখ করে নরি বলেন,
‘এটা আমার জন্য বিশাল কিছু। চোট থেকে ফিরে এসেছি, গত বছর এখানে প্রথম রাউন্ডের বাছাই পর্বেই হেরেছিলাম। এবার সেই জায়গা থেকে ফিরে ক্যারিয়ারের বড় জয়টা পেয়েছি। বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড়ের বিপক্ষে প্রথম জয়, এমন আত্মবিশ্বাসী একজনের বিপক্ষে জেতা দারুণ অনুভূতি।’
শেষ ষোলোর ম্যাচে আগামীকাল নরি খেলবেন মোনাকোর ভ্যালেন্টিন ভ্যাচেরটের বিপক্ষে।

প্যারিস মাস্টার্স থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিলেন নোভাক জোকোভিচ। আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে এই ঘোষণা দেন সার্বিয়ান তারকা। টানা দ্বিতীয়বারের মতো মৌসুমের শেষ এটিপি মাস্টার্সে খেলবেন না জোকোভিচ। প্যারিসের লা ডিফেন্স অ্যারেনায় ২৫ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই টুর্নামেন্ট।
এক্সে জোকোভিচ ঘোষণা দেন,
‘প্রিয় প্যারিস, দুর্ভাগ্যবশত আমি এই বছরের প্যারিস মাস্টার্সে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না। এখানে অসাধারণ স্মৃতি এবং দুর্দান্ত সাফল্য রয়েছে, বিশেষ করে সাতবার শিরোপা জয় করতে পেরেছি। আশা করি পরের বছর সঙ্গে দেখা হবে।’
চলতি মৌসুমে খুব কম সংখ্যক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন ২৪ বারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ী জোকোভিচ। চারটি গ্র্যান্ড স্লামের বাইরে তিনি মাত্র আটটি এটিপি ট্যুরে খেলেছেন। এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ফ্রেঞ্চ ওপেন, উইম্বলডন এবং ইউএস ওপেন সব গ্রান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছান এই তারকা।
সবশেষ অফিশিয়াল টুর্নামেন্ট হিসেবে সাংহাই মাস্টার্স খেলেন জোকোভিচ। তবে সেখানে ভালো করতে পারেননি তিনি। বিদায় নেন সেমিফাইনাল থেকে। গত সপ্তাহে সৌদি আরবে সিক্স কিংস স্ল্যামে আমন্ত্রিত ছয়জন খেলোয়াড়ের একজন ছিলেন জোকোভিচ। তবে হেরে যান ইয়ানিক সিনারের কাছে। তারপর তৃতীয় স্থানের জন্য টেলর ফ্রিটজের বিপক্ষে নামেন। কিন্তু এক সেট খেলার পরই কোমরের অস্বস্তিতে খেলা ছেড়ে উঠে যান।