উইকেটে স্পিন ধরবে বলেই ভারত একাদশ সাজাল তিন স্পিনার নিয়ে। সবাই দিলেন নিজের সেরাটা। তাতে পাকিস্তান ব্যাটারদের কাজটা হয়ে গেল বেশ কঠিন। চাপের মুখে দারুণ এক ফিফটি করলেন সাউদ শাকিল। তবে অন্য ব্যাটাররা সেভাবে অবদান না রাখায় বোর্ডে জমা পড়ল মামুলি স্কোর। ভারতের দুই ওপেনার অল্পেই ফিরলেও ‘চেজ মাস্টার’ বিরাট কোহলি আরও একবার দেখালেন, কেন তিনি ওয়ানডে গ্রেটদের একজন। তার ব্যাটে চড়ে পেশাদার রান তাড়ায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের উড়িয়ে সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলল রোহিত শর্মার দল।
দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ‘এ’ গ্রুপের হাইভোল্টেজ ম্যাচ পারেনি প্রত্যাশা অনুযায়ী উত্তাপ ছড়াতে। ৪৯.৪ ওভারে পাকিস্তান গুটিয়ে গিয়েছিল ২৪১ রানে। ভারত সেই টার্গেট পাড়ি দিয়েছে ৬ উইকেটে, মাত্র ৪২.৩ ওভারেই।
টানা দুই ম্যাচ জিতে ভারতের সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল। আর দুই ম্যাচ হেরে বাদ পড়ার শঙ্কায় পাকিস্তান।
আরও পড়ুন
১৪ হাজারি ক্লাবে শচিন-সাঙ্গাকারাকে পেছনে ফেললেন কোহলি |
![]() |
ছোট টার্গেটের পেছনে ভারত শুরু থেকেই ব্যাট করে আগ্রাসী মেজাজে। নাসিম শাহর করা দ্বিতীয় ওভারে ট্রেডমার্ক পুল শটে ছক্কা হাঁকান রোহিত। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে অন্য প্রান্তে এক ওভারে দুটি চার মারেন শুবমান গিল। দারুণ ছন্দে ব্যাট করা রোহিতকে বিপজ্জনক হওয়ার আগেই থামান শাহিন।
ইনসুইং ইয়র্কারে রোহিতকে বোকা বানিয়ে বোল্ড করেন এই বাঁহাতি পেসার। তবে সেই ধাক্কা কাটিয়ে শাহিনের করা পরের দুই ওভারে দুটি করে চারের মার আসে গিলের ব্যাট থেকে।
৩৫ রানে একটা সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি, তবে হারিসের বলে মিড অফে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন খুশদিল শাহ। বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচে অপরাজিত সেঞ্চুরি করা গিল এদিনও ছিলেন চেনা ছন্দেই। তাকে ফেরাতে দরকার ছিল বিশেষ কিছুর।
আর সেটা নিয়ে হাজির হন আবরার আহমেদ। দুর্দান্ত এক ক্যারম ডেলইভারিতে বিভ্রান্ত করেন গিলকে। বোল্ড হওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় ভারত ওপেনারের ৭ চারে ৪৬ রানের ইনিংস।
তবে ওই সময়ের মধ্যেই কোহলি সেট হয়ে গেছেন ভালোভাবেই। চাপ না নিয়ে, বড় শট না খেলেই সিঙ্গেলস-ডাবলসেই চলে যান ত্রিশের ঘরে।
আরও পড়ুন
একদিনের মাথায় স্থগিত সাকিবের নিবন্ধন |
![]() |
আর সেই পথেই ভারতের সাবেক অধিনায়ক পূর্ণ করেন ওয়ানডে ক্রিকেটে তার ১৪ হাজার রান। মাত্র ২৮৭ ইনিংসেই তিনি এই মাইলফলক স্পর্শ করেন, যা ইতিহাসেরই দ্রুততম। এই তালিকায় এতদিন শীর্ষে ছিলেন ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটার শচিন টেন্ডুলকার। ২০০৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষেই তিনি যেদিন প্রথম ব্যাটার হিসেবে ১৪ হাজারি ক্লাবে নাম লেখান, তখন তার লেগেছিল ৩৫০ ইনিংস।
কোহলি ও শচিন বাদে ওয়ানডেতে ১৪ হাজার রান আর করেছেন কুমার সাঙ্গাকারা। সাবেক শ্রীলঙ্কা ব্যাটার ২০১৫ সালে পূর্ণ করেন ১৪ হাজার রান। সেজন্য তাকে খেলতে হয়েছিল ৩৭৮ ইনিংস।
নাসিমকে চার মেরে ৬২ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন কোহলি। তৃতীয় উইকেটে তিনি ও শ্রেয়াস আইয়ার মিলে ধীরে দলকে নিয়ে যান জয়ের পথে। ভারতের জয় যখন নিশ্চিত, সেই সময়ে শ্রেয়াস (৫৬) ও হার্দিক (৮) আউট হন অল্প সময়ের মধ্যে। বাকি অংশে ম্যাচের মূল রোমাঞ্চ ছিল কোহলির সেঞ্চুরি।
দলের জয় আর তার সেঞ্চুরির রানের ব্যবধান এগিয়ে যাচ্ছিল প্রায় একই গতিতে। শেষ পর্যন্ত খুশদিলের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে চার মেরে দলকে জেতানোর পাশাপাশি তুলে নেন ওয়ানডেতে নিজের ৫১তম সেঞ্চুরি।
এর আগে দিনের শুরুতে বল হাতে ভারতের শুরুটা অবশ্য ছিল না খুব ভালো। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নেওয়া মোহাম্মদ শামি ইনিংসের প্রথম ওভারে দেন পাঁচ ওয়াইড। তবে ১১ বলের সেই ওভারে আসে মাত্র ছয় রান। হার্ষিত রানার করা চতুর্থ ওভারে দুটি ক্লাসিক চার মেরে বাবর আজম আভাস দেন ফর্মে ফেরার। তবে ওই পর্যন্তই। ভারতের পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেভাবে রান বাড়াতে পারছিলেন না ওপেনাররা।
ফখর জামানের চোটে দলে আসা ইমাম-উল-হক শুরু থেকেই ছিলেন আড়ষ্ট। রানের জন্য তার সংগ্রাম চাপ বাড়িয়ে দেয় বাবরের অপর। সেটা সরাতে গিয়ে হার্দিক পান্ডিয়ার অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে ফেরেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে।
পরের ওভারে বিদায় নেন ইমামও। কুলদ্বীপ যাদবের বলে মিড অফে বল ঠেলে নিতে চেয়েছিলেন এক রান। তবে আকসার প্যাটেলের সরাসরি থ্রোয়ে শেষ হয় তার ২৬ বলে ১০ রানের ইনিংস।
এরপর পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরানো একটা জুটি গড়েন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সাউদ শাকিল। তবে ১০ থেকে ২৫ ওভারের মধ্যে মন্থরগতিতে ব্যাট চালান দুজনেই। এই সময়ে বাইন্ডারিও সেভাবে হয়নি, আবার তারা সিঙ্গেলসও সেভাবে বের করতে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে তো দুজনই ব্যাটিং করছিলেন ৮০-এর কম স্ট্রাইক রেটে!
২৫ ওভারে মাত্র ৯৯ রান করা পাকিস্তানের জন্য বড় স্কোর গড়ার কাজটা কঠিন করে দেয় এই জুটি। যদিও এরপরের কয়েকটি ওভারে কয়েকটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে কিছুটা রানের চাকা সচল করেন রিজওয়ান ও শাকিল মিলে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ নিয়ে চিন্তায় নিউজিল্যান্ড |
![]() |
৬৩ বলে ফিফটি পূরণ হয় শাকিলের। জুটিতেও হয়ে যায় শতক। তবে হার্দিকের বলে ৪৪ রানে জীবন পাওয়া রিজওয়ান পারেননি বেশিদূর যেতে। টেস্ট মেজাজের ইনিংসের ইতি ঘটে আকসারকে বড় শট মারতে গিয়ে। ৭৭ বলে মাত্র তিন চারে পাকিস্তান অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রান।
৫৮ রানে জীবন পাওয়া শাকিলও ব্যর্থ হন তা কাজে লাগাতে। ৬২ রানে মিড অফে ক্যাচ বানিয়ে তাকে সাজগরের পথ দেখান হার্দিক। এরপর একটা মিনি ধস নামে পাকিস্তান ইনিংসে, ২০০ রানেই চলে যায় ৭ উইকেট।
সেখান থেকে লড়িয়ে এক ইনিংসে পাকিস্তানকে একটা ফাইটিং স্কোর এনে দেওয়ার কাজ করেন খুশদিল শাহ। আগের ম্যাচে ফিফটি করা এই অলরাউন্ডার শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ২ ছক্কায় করেন ৩৮ রান।
৪০ রানে তিন উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার কুলদ্বীপ।
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
২০ দিন আগে
২১ দিন আগে
২২ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৮ দিন আগে
ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ উপকূল ঘেঁষে থাকা গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম নিজস্ব ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। ষোড়শ শতাব্দীতে ডাচ কলোনী গড়ে উঠেছে এখানে, মহাসাগরের গর্জনের মধ্যেও এখনো পাঁচশ’ বছর আগের বাড়ি-ঘর, দূর্গ টিকে আছে। ২১ বছর আগে প্রলয়ঙ্কারী সুনামীর আঘাতে ভেসে যাওয়া জনপদ, ক্রিকেট স্টেডিয়াম আবারো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। ২৭ বছর আগে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষিক্ত হওয়া এই ভেন্যুটি এখন টেস্টের হাফ সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে। আর মাত্র ২টি টেস্ট হলেই শ্রীলঙ্কার প্রথম ভেন্যু হিসেবে টেস্ট ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করবে।
এই স্টেডিয়াম স্মরণীয় হয়ে আছে বিশ্বের সর্বকালের সেরা স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরণের অসামান্য কৃতি-তে। এই ভেন্যুতে মাত্র ১৫ টেস্টে ১১১ উইকেট শিকারী সাবেক এই অফস্পিনারের আবেগঘন ফেয়ারওয়েলের স্মৃতি এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
টেস্ট ইতিহাসে প্রথম এবং একমাত্র ৮০০ উইকেট ক্লাবের সদস্যপদটা পেয়েছেন তিনি এই ভেন্যুতেই। ভারত টেল এন্ড ব্যাটার প্রাজ্ঞন ওঝাকে দারুণ এক ছোবলে স্লিপে মাহেলা জয়বর্ধনের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে পূর্ণ করেছেন ৮০০তম উইকেট।
১৫ বছর আগে সেই কৃতির স্বাক্ষর রাখা বলটি গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের মিউজিয়ামে আছে সংরক্ষিত। এই স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার আর এক লিজেন্ডারি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউসের ফেয়ারওয়েল মঞ্চ তৈরি করে রেখেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। ৩৮ বছর পূর্ণ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭ বছর কাটিয়ে ফেয়ারওয়েলের সামনে দাঁড়িয়ে অলরাউন্ডার ম্যাথুউস।
এই গল-এ কৃতিমানদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমও। বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ডটা তার এই ভেন্যুতে, ২০১৩ সালে। ৪৩৭ মিনিট স্থায়ীত্ব পাওয়া মুশফিকুর রহিমের সেই ডাবল, ৫ম উইকেট জুটিতে মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে ২৬৩ রানের পার্টনারশিপে কী অসাধ্যই না সাধন করে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কা ৫৭০/৪ ডি. এর জবাব দিতে এসে যেখানে বড় ধরণের শঙ্কার মুখে পড়ার কথা, সেখানে প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানের লিড নিয়ে উল্টো স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকেই কী না চাপের মুখে ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ।
এক যুগ আগে গল-এ বীরত্বগাঁথা ৬৩৮ স্কোরের কল্যানে জয়ের সমান ড্র’র সেই সুখ স্মৃতি নিয়ে মঙ্গলবার স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অবতীর্ন হবে নাজমুল হাসান শান্ত’র দল। এই টেস্ট দিয়ে চলমান চক্রে (২০২৫-২৭) আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধন হচ্ছে। যে চক্রে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ ১২টি টেস্ট। সর্বশেষ চক্রে ১২ টেস্টে ৪ জয়ে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলে পয়েন্ট টেবিলে ৭ম হওয়ার রেকর্ড থেকে টনিক নিয়ে পারফরমেন্সের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী করার প্রত্যয় শান্তদের।
গল-এ ফেয়ারওয়েল টেস্টে মুরালীধরনের ৮০০ টেস্ট উইকেটের কৃতিত্ব নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠার রিপোর্ট।
গল-এ হয়ে যাওয়া ৪৮ টি টেস্টের রেকর্ড কথা বলেছে ব্যাটারদের পক্ষে। এই ভেন্যুতে ১৫টি ৫০০ প্লাস স্কোর, যার মধ্যে ৬টি-তে ৬শ। ব্যাটিং বান্ধব গল-এ প্রথম ইনিংসে গড়ে ৩৭৩ রানও কম নয়। এমন এক ব্যাটিং বান্ধব মাঠে টেস্টে ২ হাজার রান পূর্ণ করেছেন ইতোমধ্যে ৩ শ্রীলঙ্কান। মাহেলা জয়বর্ধনে ২৩ টেস্টে ২ হাজাত ৩৮২, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউস ৩৩ টেস্টে ২ হাজার ২০৬, দিমুখ করুণারত্নে ২৪ টেস্টে ২ হাজার ৪০ রান করে গল-এ হল অব ফেম-এ জায়গা করে নিয়েছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮১ রান করতে পারলে চতুর্থ শ্রীলঙ্কান হিসেবে গল-এ ২ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদ পাবেন দিনেশ চান্দিমাল।
গল-এ পেস বোলারদের নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। এই ভেন্যুতে অতীতে ছড়ি ঘুরিয়েছেন স্পিনাররা। এই ভেন্যুতে মুরালীধরন ১৫ টেস্টে পেয়েছেন ১১১ উইকেট, হেরাথ ১৯ টেস্টে ১০২ উইকেট। ভ্যাপসা গরমের পাশাপাশি বৃষ্টি আক্রান্ত করতে পারে এই টেস্টে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে তা।
এসব দুশ্চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে স্মৃতিময় ভেন্যুতে ফর্মে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন মুশফিকুর। গল-এ অনুশীলন করতে এসে দেখেছেন উইকেট। হাতের স্পর্শ দিয়ে বিশেষ কিছু অনুভবের চেষ্টা করেছেন। গত বছর বিসিবির সভাপতি হিসেবে ফারুক আহমেদের দায়িত্ব গ্রহনের অভিষেকে লাহোরে ১৯১ রানের ইনিংস উপহারে দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম অভিনন্দন। তবে টেস্টে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ম্যাচের সেঞ্চুরি পূর্ণ করার আগে নার্ভাস নাইনটিজ জুজু-তে ভুগছেন মুশফিকুর। লাহোর টেস্টে ম্যাচ উইনিং ১৯১’র পর ৭ টি টেস্টে তার রানের সমষ্টি মাত্র ১৯৮! সর্বশেষ ১৩ ইনিংসে তার গড় ১৫.২৩!
২০১৩ সালে গল-এ ৫ম উইকেট জুটিতে ২৬৩ রানের পথে আশরাফুল-মুশফিকুরের চওড়া হাসি।
টেস্ট ক্যারিয়ারে ২ দশক পূর্ণ করে বিগউলের সুর যখন শুনতে পাচ্ছেন, তখন টেস্টে বাংলাদেশের একমাত্র ৬ হাজার ক্লাবের সদস্য ৯৮তম টেস্টে স্ব মহিমায় উদগ্রীব হবেন, এটাই স্বাভাবিক। এক যুগ আগের সুখস্মৃতি থেকে টনিক নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রের শুরুটা হোক আশা জাগানিয়া, সে অপেক্ষায় এখন বাংলাদেশের সকল ক্রিকেটপ্রেমী।
জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক ও বালিকা (অনূর্ধ্ব -১৭) এর জাতীয় আসরের পর্দা উঠলো সোমবার (১৬ জুন)। মোহাম্মদপুর সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব মো: মাহবুব-উল-আলম। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: ইকবাল হোসেন, ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক মো: মোস্তফা জামান।
ক্রীড়া পরিদপ্তর, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশের ৮ টি বিভাগের প্রতিভাবান অনূর্ধ্ব-১৭ বালক ও বালিকাদের নিয়ে জাতীয় এই আসর শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী ম্যাচে বালকদের বিভাগে বরিশাল বিভাগকে ১-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে খুলনা বিভাগ বালক দল। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন খুলনা বিভাগের আল কাফি।
আরও পড়ুন
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে বিপাকে ইন্তারের ইরানিয়ান ফরোয়ার্ড তারেমি |
![]() |
২০২৪ সালের জুন মাসে উপজেলার খেলা দিয়ে শুরু হয়েছিলো এই টুর্নামেন্ট। যেখানে অংশ নিয়েছিলো দেশের প্রায় ১,১০,২৬৪ জন খেলোয়াড়। এরপর প্রতিভাবান খেলোয়াড় নিয়ে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় শেষ হয়োছিলো এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। টুর্নামেন্টের ফাইনাল জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ জুন।
জাতীয় এই আসর থেকে প্রতিভাবান ৪০ জন বালক ও ৪০ জন বালিকা বাছাই করা হবে। এই ফুটবলাররাই পরবর্তী সময় জায়গা করে নিবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।
১৫ জুন ২০২৫, ৫:৫১ পিএম
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞ কোচ রিচার্ড পাইবাস বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কে যোগ দিয়েছেন ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট ও ট্রেনিং পরিচালকের ভূমিকায়। স্বল্পমেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে ইংলিশ এই কোচ বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ তারকার সন্ধান করার জন্য কাজ করবেন তিনি।
পাইবাসের রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একাধিক দেশ এবং বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের সঙ্গে কাজ করার বিশাল অভিজ্ঞতা। প্রশাসক হিসেবেও বেশ সুনাম রয়েছে তার। এবার বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কে কাজ করার জন্য বাংলাদেশে এসেছেন গত শনিবার।
আরও পড়ুন
সিটিতে যোগ দিয়ে ব্যালন ডি'অরের স্বপ্ন দেখছেন শেরকি |
![]() |
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কের জানিয়েছে,
“গেম ডেভেলপমেন্ট এবং ট্রেনিং ডিরেক্টর হিসেবে পাইবাসকে গর্বের সাথে স্বাগত জানাচ্ছে বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্ক। একজন বিশ্বমানের স্বপ্নদ্রষ্টা এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে আধুনিক ক্রিকেট ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে একটি নতুন ক্রিকেট বিপ্লব গড়ার লক্ষ্যে কাজ করবেন।”
পাইবাস নিয়োগ পেয়েছেন তিন মাসের জন্য। বিবৃতিতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক প্রধান কোচ জানিয়েছেন তার পরিকল্পনার কথা। “এখানকার প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের সাথে দেখার সুযোগ পেয়ে আমি রোমাঞ্চিত। ভবিষ্যতের তারকাদের খুঁজে বের করাই হবে আমার প্রধান লক্ষ্য।”
২০১২ সালে পাইবাসকে বাংলাদেশ জাতীয় দলেরকোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তার সাথে চুক্তি করেছিল ২ বছরের চুক্তি। কিছু সময়ের জন্য হাই পারফরম্যান্স প্রোগ্রামেও যুক্ত ছিলেন। তবে কয়েক মাস বাদেই তিনি পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন
গাড়ি বিক্রেতা-ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ে গড়া অকল্যান্ডের অদ্ভুত ক্লাব বিশ্বকাপ যাত্রা |
![]() |
পাইবাসের কোচিং ক্যারিয়ার শুরু হয় দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনি ১৯৯৯ ও ২০০৩ সালে দুই মেয়াদে পাকিস্তান জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া পাইবাসের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের ডিরেক্টর অব ক্রিকেট হিসেবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। এছাড়া ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র শুরুর আগেই বাতাসে ভাসছিল ভারত ক্রিকেট বোর্ডের ফাইনালের স্বাগতিক হওয়ার খবর। তবে সেটা আর হচ্ছে না বলেই দাবি যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ-এর। প্রথম তিন আসরের মত আগামী তিন আসরেও নাকি ইংল্যান্ডের মাটিতেই হতে যাচ্ছে শিরোপা লড়াই।
সম্প্রতি দ্য টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এরই মধ্যে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডকে (ইসিবি) মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, পরবর্তী তিন আসরের ফাইনালও আয়োজন করতে যাচ্ছে দেশটি।
আরও পড়ুন
‘কাঠুরে’ মার্করামের হাত ধরেই এল দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন সূর্যোদয় |
![]() |
২০২১ সালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ফাইনাল হয়েছিল সাউথ্যাম্পটনে। ২০২৩ সালে হয়েছিল দ্য ওভালে। আর সদ্য শেষ হওয়া তৃতীয় ফাইনালটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহাসিক লর্ডসে। তিন ফাইনালের একটিতেও ইংল্যান্ড না খেললেও প্রতিবারই গ্যালারি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। আয়োজক হিসেবে ইংল্যান্ডের ধারাবাহিক সফল ব্যবস্থাপনা, আবহ ও দর্শদের অংশগ্রহণ ফাইনাল আয়োজনে ইংল্যান্ডকেই এগিয়ে রেখেছে।
২০২৫ থেকে ২০২৭ চক্রের ফাইনাল অবশ্য ভারতের ক্রিকেট বোর্ড নিজেদের দেশে আয়োজনের জোর আগ্রহই প্রকাশ করেছিল। তারা আহমেদাবাদ, কলকাতা ও মুম্বাইয়ের আধুনিক স্টেডিয়ামের ফাইনাল আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে আইসিসি বাণিজ্যিক মূল্যায়ন ও দর্শক সহজলভ্যতার ভিত্তিতে সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, আইসিসির বার্ষিক সভায় আগামী জুলাইয়ে ফাইনালের স্বাগতিক দেশ নির্বাচনের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হবে। আর সব ঠিক থাকলে ২০২৭, ২০২৯ এবং ২০৩১ সালের ফাইনালগুলোও ইংল্যান্ডের স্টেডিয়ামগুলোতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
১৫ জুন ২০২৫, ৩:২৮ পিএম
নীল আকাশের নীচে আমি, রাস্তা চলেছি একা… বাংলার কিংবদন্তি এই গান এইডেন মার্করামের শোনার কোনো কারণ নেই। যদি শুনে থাকতেন, তাহলে লর্ডসের ব্যালকনিতে ফেরার পথে গুনগুন করে নিশ্চয় এই গানটিই গাইতে চাইতেন তিনি। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাস গড়া জয়ে যে তিনি একাই ছুটেছেন অমরত্বের পথে, যেখানে তার পেছনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল গোটা একটা জাতির দীর্ঘদিনের হাহাকার আর না পাওয়ার বেদনা।
রান তাড়ায় মার্করাম ১৩৬ রানে থাকা অবস্থায় জশ হ্যাজেলউডের ওভারেই হয়ত চেয়েছিলেন ম্যাচটা শেষ করে দিতে। তবে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়লেন ট্রাভিস হেডের হাতে। করতালির মাধ্যমে পুরো লর্ডস দাঁড়িয়ে গেল সম্মান জানাতে। অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা একে একে এগিয়ে আসলেন মার্করামের কাছে, যিনি ১৫ বছর পর তাদের স্বাদ দিয়েছেন ফাইনালে হারের ভুলে যাওয়া এক অভিজ্ঞতার। তবে আশেপাশের সবকিছু যেন তখন ধারন করতে পারছিলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার এই স্টাইলিশ ব্যাটার। তিনি ব্যাটটাকে এমনভাবে কাঁধে নিয়ে নিলেন, যেন একজন কাঠুরে সদ্যই কেটে আসলেন এক শতবর্ষী বটগাছ। ক্লান্ত, অবসাদগ্রস্ত এক চাহনিতে ফুটে উঠল অনেক না পাওয়া কষ্টের পূর্ণতা দেওয়ার অভিব্যক্তি।
আপনি যদি পুরো ম্যাচটা না দেখে কেবল মার্করামের আউট হওয়ার পরের চিত্রগুলো দেখেন লর্ডসের বিখ্যাত ড্রেসিংরুমে যাওয়া পর্যন্ত, মনে হতেই বাধ্য যে হয়ত দলকে বিপদে ফেলে বাজে এক শট খেলে তিনি উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। নির্লিপ্ত, ধীরগতিতে এমনভাবে নিজেকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন, যেন নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারেননি। আসলেই কি তাই?
মার্করাম তো তার আগে খেলে ফেলেছেন সম্ভবত দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা এক ইনিংস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন অমিত সম্ভাবনা নিয়ে। অ-১৯ বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দিয়ে আভাস দিয়েছিলেন ভবিষ্যতে জাতীয় দলের অধিনায়ক হওয়ারও। তবে লর্ডসের ফাইনালের আগ পর্যন্ত ক্রিকেটার ও অধিনায়ক হিসেবে নিজের নামের প্রতি সেভাবে সুবিচর করতে পারেননি। দুই বার টেস্ট দল বাদ পড়েছিলেন ফর্মের কারণে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগেও প্রশ্ন ছিল, মার্করাম কীভাবে দলে থাকে!
আরও পড়ুন
মার্করাম বীরত্বে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা দক্ষিণ আফ্রিকার |
![]() |
সেই মার্করামই যখন চতুর্থ দিনের ঝকঝকে সকালে আউট হলেন, তখন দক্ষিণ আফ্রিকা ইতিহাস গড়া থেকে কয়েক কদম দূরে। মূল কাজটা করার পর তিনি চেয়েছিলেন দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়তে, সেটা না হওয়াতেই হয়ত সাজঘরের ফেরার পথে দেখা মেলেনি তার হাসি মুখের। নাকি এর সাথে মিশে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের যুগ যুগের চাপা কান্নাও?
১৯৯৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা যখন মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত এখনকার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতে, তখন কে ভেবেছিলে যে পরের আইসিসি ইভেন্টে শিরোপা জিততে তাদের অপেক্ষা করতে হবে ২৭ বছরের? কে ভেবেছিল বৃষ্টি, ভাগ্য, ক্রিকেটের আইন সব দাঁড়িয়ে যাবে তাদের সাফল্য রুখে দিতে? কে ভেবেছিল দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বয়ে বেড়াতে হবে ‘চোকার্স’ নামের এক অনাকাঙ্ক্ষিত খেতাব? কেউই হয়ত নয়।
আর এই কারণেই বারবার শিরোপার খুব কাছে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সেই বিখ্যাত টাই হওয়া সেমিফাইনাল থেকে শুরু করে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের হার… মার্করাম শৈশব থেকে ক্রিকেটার হওয়ার পথচলায় সবই দেখেছেন মাঠের বাইরে ও মাঠে থেকে। তিনিও তাই ধারণ করেন কষ্টের সেই বোঝা, যা এতদিন চেপে ছিল গোটা দক্ষিণ আফ্রিকার কাঁধে। হয়ত এই কারণেই ফাইনালে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি করে ব্যাটটা কাঁধে নিয়েছিলেন মার্করাম, পুরো জাতির বোঝা যে এই ইনিংসের প্রতিটি বলেই বয়ে বেরিয়েছেন তিনি।
অবশ্য বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই মার্করামের মাঝে এমন কিছুর সম্ভাবনা দেখা হচ্ছিল। একজন ক্ল্যাসিক্যাল ব্যাটার হওয়ার সব স্কিলই আছে তার। নতুন বল খেলার দক্ষতা, ইনিংস মেরামত করা, পাল্টা আক্রমণ করা বা বড় ইনিংস খেলা, সবই আছে তার মাঝে। তবে ক্রিকেটে আপনি কি করতে পারেন, তার চেয়ে বড় প্রশ্ন আপনি কি করে দেখাতে পারছেন। আর এখানেই বারবার তিনি আটকে যাচ্ছিলেন একটি সীমার মাঝে। হয়ত এজন্যই যে, তিনি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটা বরাদ্দ রেখেছেন দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালের জন্য।
আরও পড়ুন
অবশেষে দ.আফ্রিকার ‘চোকার্স’ ট্যাগ মুক্তির আনন্দ |
![]() |
অথচ প্রবল চাপ নিয়ে নামা সেই ফাইনালে প্রথম ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ব্যাট করতে নামেন, ২৮২ রানের টার্গেটের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকার আবার চোক করার সম্ভাবনা নিয়েই তখন আলোচনা ছিল বেশি। তবে ইনিংসের প্রথম ডেলিভারি থেকেই মার্করাম এমনভাবে ব্যাট চালানেন, যেন এই ইনিংসে তিনি যতক্ষন চাইবেন, ঠিক ততক্ষণই ব্যাট করে যেতে পারবেন।
আর শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। নির্ভুল এক ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে সুযোগই দেননি কোনো। তৃতীয় উইকেটে পুরো ইনিংসে চোট নিয়ে খেলা টেম্বা বাভুমাকে সঙ্গ দেন ঢাল হয়ে। অধিনায়ককে সাহস যুগিয়েছেন চালিয়ে যেতে। হয়ত মার্করাম জানতেন, এই ফাইনালটা তাকে জেতার জন্যই খেলতে হবে। আর শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে তিনিই হবেন কাণ্ডারি। হয়ত রি কারণেই এক বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে অল্পের জন্য শিরোপার স্বাদ পাননি অধিনায়ক হিসেবে।
মাঠে থেকে শেষটা না করতে পারলেও মার্করাম কাজের কাজটা করে তবেই আউট হয়েছেন। এরপরও কেন মার্করামের আউট হয়ে ফেরার পথে অমন মিশ্র অনুভূতি? তৃপ্তির আনন্দ বোধহয় এমনই হয়। সময়টা তাই মার্করামের, সময়টা তাই দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের জয়গান গাওয়ার, যা তাদের হাতে ধরা দিয়েছে সবচেয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত উৎস থেকে। যা পারেননি গ্রায়েম স্মিথ, হার্শেল গিবস, শন পোলক, এবি ডি ভিলিয়ার্স বা ডেল স্টেইন, তা কিনা ধরা দিল মার্করামের হাত ধরে! ক্রিকেট বা জীবন এভাবেই তো বারবার মিলিয়ে দেয় সব হিসাব-নিকাশ।