একজন ফুটবলারের সম্ভাব্য যা যা জেতার বা অর্জন করার স্বপ্ন থাকে, তার সবই হয়ে গেছে পূর্ণ। বিধাতা লিওনেল মেসিকে দলগত ও ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছেন দুহাত ভরেই। সব জিতেও ছিল যে একটা আক্ষেপ, তাও মিটেছে বিশ্বকাপ জেতার মাধ্যমে। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে মেসির কাছে তাই মনে হচ্ছে, বিশেষ আর কিছু চাওয়ার নেই তার।
বার্সেলোনায় বেড়ে ওঠা মেসি তার ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটাই কাটিয়েছেন সেখানেই। নিজের সেরা সময়ে বদলে দিয়েছেন ক্লাবের ইতিহাসও। ক্লাব ফুটবলের সম্ভাব্য সব শিরোপা জেতার পাশাপাশি ব্যক্তিগত রেকর্ডেও হয়েছেন অনন্য। ঠিকানা বদল হলেও এখন ছুটছেন চেনা গতিতেও। সাথে জাতীয় দলের হয়ে যোগ হয়েছে একটি বিশ্বকাপ ও দুটি কোপা আমেরিকাও। রেকর্ড ৮টি ব্যালন ডি’অর তো রয়েছেই।
আরও পড়ুন
ইয়ামালের মাঝে নিজের ছায়া দেখছেন মেসি |
![]() |
আর কিছু কি চাওয়ার আছে মেসির? সিমপ্লেমেন্তে ফুটবলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অকপটে জানিয়েছেন সেই কথাও।
“এখানে আমি আর কিছু চাইতে পারি না। আমার কেবল বিশ্বকাপ জেতাটাই বাকি ছিল। আমি সব কিছুই জিতেছি, আমি সবকিছু অর্জন করে ফেলেছি।”
২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ জেতার পর মেসি আভাস দিয়েছিলেন, এটাই হতে পারে তার শেষ বিশ্বকাপ। তবে কোচ ও সতীর্থরা বারবার বলেছেন, আরেকটি বিশ্বকাপে তাকে চান তারা। স্পষ্ট করে কিছু না বললেও মেসি এখনও যেভাবে খেলছেন, তাতে আগামী বছরের বিশ্বকাপে তার অংশ নেওয়া খুবই সম্ভব। গত বছরের কোপা আমেরিকার পারফরম্যান্স যে পালে দিয়েছে বাড়তি হাওয়া।
তবে মেসি এখনও কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখতে পাচ্ছেন।
"এই বছরটা আমি ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেব, তা দেখার মূল বিষয় হতে যাচ্ছে। আমি যদি আপনাকে বলি যে, আমি এটা নিয়ে ভাবছি না, তাহলে সেটা বড্ড ভুল হবে।”
১ জুন ২০২৫, ৩:১৯ এম
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছে অক্লান্ত প্রচেষ্টা। সেই ডেভিড বেকহ্যাম থেকে শুরু করে লিওনেল মেসি, কে না খেলেছেন পিএসজির জার্সিতে! তারকার হাট বসেছিল কোচদের ক্ষেত্রেও। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আর জয় করা হচ্ছিল না দলটির। অবশেষে তারুণ্য নির্ভর একটি দল নিয়ে বাজিমাত করলেন লুইস এনরিকে, প্যারিসের ক্লাবটিকে দিলেন পরম অধরা এক শিরোপা জয়ের স্বাদ।
রোববার রাতের একচেটিয়া ফাইনালে ইন্তার মিলানকে ৫-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে পিএসজি। ম্যাচে দুটি গোল করে একটি গোল করিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন ফ্রান্স উইঙ্গার ডেজিরে দুয়ে।
ইতিহাসের অংশ হতে পেরে ম্যাচ শেষে বাধভাঙ্গা উল্লাস ফুটে উঠল তার কণ্ঠে।
“বলে বোঝাতে পারব না কেমন লাগছে। আমাদের কাছে এটাই সব। সমর্থকরাই আমাদের এই শিরোপা জেতার মূল প্রেরণা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করাটা ছিল আমাদের একটা স্বপ্ন। এটা আমারও স্বপ্ন, সত্যি বলতে পুরো দলের সবারই স্বপ্ন ছিল এটা জেতা। এটা এক অবিশ্বাস্য অনুভূতি। এই ফলাফল কোনো যাদুবল আসেনি। আমাদের দলটা দুর্দান্ত, আর এইভাবে জয় পাওয়াটা দারুণ ব্যাপার।”
ইন্তারকে ফাইনালে স্রেফ উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মত ট্রেবল জয়ের স্বাদ পেয়েছে পিএসজি। ক্লাবের এই ঐতিহাসিক অর্জনে পথ ধরে ইতিহাস গড়েছেন কোচ এনরিকেও। পেপ গার্দিওলার পর ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় কোচ হিসেবে দুটি ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের হয়ে ট্রেবল জেতার কীর্তি এখন তার।
দায়িত্ব নিয়ে প্রথম মৌসুমেই এই সাফল্যে এনরিকে দেখছেন নতুন সম্ভাবনা।
“এই শিরোপা আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার একটা ফল। এটা তো কেবল শুরু। তরুণদের নিয়ে গড়া এই দলটি ক্লাবে একটা নতুন যুগের সূচনা করেছে। আসি আশাবাদী, পিএসজির সামনে অপেক্ষা করছে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।”
ফাইনালের আগে লুইস এনরিকে বলেছিলেন, ইতিহাস গড়তে চায় তার দল। তবে বারবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে খালি হাতে ফেরা পিএসজির সেজন্য দরকার ছিল এমন পারফরম্যান্স, যে হয়ত ফাইনালের মঞ্চে আগে দেখাই যায়নি। প্রথম মিনিট থেকে ইন্তার মিলানকে দ্বিতীয় সেরা দল বানিয়ে বিরতির আগেই তাই ম্যাচের লাগাম নিয়ে নিল ফরাসি ক্লাবটি। দ্বিতীয়ার্ধে তাদের দুর্দমনীয় ফুটবলের সামনে খড়কুটোর মত উড়ে গেল ইতালিয়ান ক্লাবটি। ইতিহাস গড়ে অধরা চ্যাম্পিয়িন্স লিগ জয়ের স্বাদ পেল পিএসজি।
মিউনিখের অ্যালিয়ান্জ অ্যারেনায় রোববারের ফাইনালে পিএসজি পেয়েছে ৫-০ গোলের জয়। এর মধ্য দিয়ে এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় ফাইনালে গিয়ে প্রথমবারের মত শিরোপা উঁচিয়ে ধরল লিগ ওয়ানের ক্লাবটি।
এর সাথে ক্লাবটি গড়ল নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মত ট্রেবল জয়ের স্বাদ। এর আগে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লিগ ওয়ান ও লিগ কাপে।
পিএসজির সাথে সাথে ইতিহাস গড়েছেন এনরিকেও। পেপ গার্দিওলার পর মাত্র দ্বিতীয় কোচ হিসেবে দুটি ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের হয়ে ট্রেবল জিতলেন তিনি। এর আগে এই কীর্তি তিনি গড়েছিলেন ২০১৫ সালে, বার্সেলনার হয়ে। আর গার্দিওলা দুইবার ট্রেবল জেতেন ২০০৯ সালে বার্সেলোনার কোচ হিসেবে, আর দ্বিতীয়বার ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ২০২২ সালে।
এই ম্যাচটি ছিল ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় পিএসজি ও ইন্তারের মুখোমুখি লড়াই। ফাইনালের আগে ইন্তার তিনবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী হলেও এই মৌসুমের ফর্ম বিবেচনায় ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামে এনরিকের দল। ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই প্রাধান্য বিস্তার করে পিএসজি বুঝিয়ে দেয়, উপভোগ্য ফুটবলে তারা দাপট দেখাতে চায়।
ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় বলার মত প্রথম আক্রমণেই ইন্তারকে চমকে দেয় পিএসজি। গোল হজমে মিলানের ক্লাবটির বাজে ডিফেন্ডিং রাখে বড় ভূমিকা। মাঝমাথে ভিতিনিয়া বলের দখল নিয়ে বক্সের ভেতর ডানদিকে পাস বাড়ান ডেজিয়ের দুয়েকে। নিজে গোলে শট না নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ঘুরে বক্সের তাকিয়ে খুঁজে নেন ডান উইং দিয়ে উঠে আসা আশরাফ হাকিমিকে। মরক্কান ডিফেন্ডার নিখুঁত এক নিচু শটে বল জালে পাঠাতে আর ভুল করেননি।
এই গোলটি পিএসজির জন্য বিশেষ কিছুই ছিল, কারণ, ২০১৯ সাল থেকে ফাইনালে প্রথমে গোল করা দলগুলোই জিতে আসছে শিরোপা। তবে যিনি এই গোলটি করেছেন, সেই হাকিমি উদযাপন করা থেকে বিরতই থাকেন। পিএসজির আগে যে ইন্তারের জার্সিতেই খেলেছিলেন তিনি।
গোল হজমের পর ইন্তার যেন আরও চাপে পড়ে যায়। আর টানা আক্রমণে পিএসজি বজায় রাখে আধিপত্য। সেই ধারায় ২০তম মিনিটে দারুণ এক পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বাঁদিক দিয়ে উঠে এসে বক্সের বাইরে পাস দেন দুয়েকে। ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া তার শট ইন্তার ডিফেন্ডার ফেদেরিকো ডিমারকোর গায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে ইয়ান সোমারকে ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে।
এই গোলের মধ্য দিয়ে অনন্য রেকর্ড গড়েন দুয়ে। ১৯ বছর ৩৬২ দিন বয়সে ফাইনালে জালের দেখা পেয়ে তিনি হয়ে যান চ্যাম্পিয়ন্স লিগেরর শিরোপার লড়াইয়ের ম্যাচের চতুর্থ কনিষ্ঠ গোলস্কোরার। তার আগে এই কীর্তি ছিল কেবল প্যাট্রিক ক্লুভার্ট (১৯৯৫) এবং কার্লোস আলবার্তো (২০০৪)।
শুধু তাই নয়, এই গোল ফরাসি উইঙ্গারকে জায়গা করে দেয় রেকর্ডের এমন পাতায়, যেখানে নেই ফুটবল ইতিহাসের গ্রেটরাও। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে ফাইনালে গোল ও অ্যাসিস্ট উভয়ই করা সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় তিনিই।
মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে দুই গোল হজম করে খেই হারিয়ে ফেলে ইন্তার। দলটি বলের দখল রাখে এবং আক্রমণাত্মক ফুটবলে সিমোনে ইনজাগির দলকে বারবার ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। সেটা কাটিয়ে ইন্তার গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও পিএসজির অদম্য প্রেসিংয়ের সামনে আটকে যায় তাদের সব প্রচেষ্টা।
উল্টো বিরতির আগে পুরোপুরি আধিপত্য দেখানো পিএসজির বিরতিহীন আক্রমণে ছন্দহীন ফুটবল খেলে ইন্তার। তার মাঝেও ৩৪তম মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ানের চমৎকার পাস থেকে সুযোগ এসেছিল মারকুস থুরামের সামনে, যা তিনি কাজে লাগাতে পারেননি।
৩৮তম মিনিটে ফের সুযোগ এসেছিল থুরামের। জটলার মধ্যে কর্নার থেকে দুর্দান্তভাবে লাফিয়ে উঠে দূরের পোস্টে হেড নেন, তবে সেটা পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
৪৪তম মিনিটে বাম দিক থেকে দুয়ে মাপা ক্রস দেন দেম্বেলেকে, ফরাসি উইঙ্গার যে শট নেন, তা শেষ মুহূর্তে গোললাইন অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়।
একচেটিয়া প্রাধান্য দেখানো পিএসজি ৬৫ শতাংশ বল দখলে রেখে প্রথমার্ধে গোলের জন্য শট নেয় ৮টি, যার ৩টি থাকে লক্ষ্যে।
৫৮তম মিনিটে পিএসজি মিডফিল্ডার জায়র-এমেরি দূরপাল্লার শট নেন, যা গোলরক্ষক সোমার ব্লক করে দেন দৃঢ়তার সাথেই। এর খানিক বাদে তৃতীয় গোলের দেখা পায় পিএসজি। বক্সের ভিতরে ওয়ান-টু পাসের মাধ্যমে বল পেয়ে ডান পায়ের জোড়াল এক শটে ইন্তার গোলরক্ষককে পরাস্ত করে দুয়ে মেতে ওঠেন বাধভাঙ্গা উল্লাসে।
এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে সরাসরি তিন গোলে অবদান রাখার রেকর্ড করেছেন তিনি।
৮৯তম মিনিটে পিএসজিকে শিবিরকে উল্লাসে ভাসান একটু আগেই বদলি হিসেবে নামা ১৮ বছর বয়সী সেনি মায়ুলু। ব্র্যাডলি বারকোলার কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁদিক থেকে বক্সে প্রবেশ করে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে খুঁজে নেন ঠিকানা।
এই গোলের আগে ও পরে আরও কিছু সহজ সুযোগ এসেছিল পিএসজির সামনে, যা কাজে লাগাতে পারলে অনায়াসেই ৬-৭ গোলে জেতা সম্ভব হত তাদের জন্য।
তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে মেসি-নেইমার-এমবাপেদের মত তারকাদের নিয়েও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চূড়ান্ত সাফল্য মেলেনি পিএসজির। সেখানে অনেকটা আনকোরা একটা দল নিয়ে লুইস এনরিকে এই মৌসুমে নিয়ে গেছেন ফাইনালে। শিরোপার মঞ্চে দাঁড়িয়ে স্প্যানিশ এই কোচ বললেন, সময় এখন তাদের ইতিহাস গড়ার।
এনরিকে যা বলেছেন, সেটা অবশ্য ক্লাব হিসেবে পিএসজির জন্য যথার্থই। বছরের পর বছর ধরে কাড়ি কাড়ি অর্থ গুনে তারকার হাট বসিয়েও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ আর পায়নি দলটি। সেরা অর্জন ২০২০ সালে রানার্সআপ হওয়া। শনিবার রাতে মিউনিখে ইন্তার মিলানের বিপক্ষে ফাইনাল তাই নতুন উচ্চতায় যাওয়ার সুযোগ লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়নদের জন্য।
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এনরিকে তার দলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে ইতিহাস গড়ার।
“আপনি তখনই ইতিহাস গড়েন, যখন আপনি এমন কিছু করবেন যা ক্লাবের কেউই আগে করতে পারেনি। এই খেলোয়াড়দের অসাধারণ মানসিকতা আছে। আমরা যেখানে থাকতে চেয়েছিলাম, সেখানেই পৌঁছেছি। এখন শুধু মূল কাজটা শেষ করা বাকি।”
২০১৫ সালে এনরিকের হাত ধরে বার্সেলোনা শেষবারের মত জিতেছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। সেবারও ট্রেবল জিতেছিল দলটি। এবার পিএসজিকে নিয়ে সেই দুর্দান্ত অর্জন থেকে মাত্র একধাপ দূরে আছেন অভিজ্ঞ এই কোচ। এই মৌসুমে হেসেখেলেই লিগ জেতা পিএসজি ইন্তারের সাথে ফাইনালে ফেভারিট হিসেবে মাঠে নামবে।
তিনবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী ইন্তারের চ্যালেঞ্জ সাম্লানোর জন্য নিজের দলকে প্রস্তুত দেখছেন এনরিকে।
“এবারই সময় কিছু করে দেখানোর। এই প্রতিযোগিতার আমাদের শুরুটা কঠিন ছিল। এই পর্যন্ত আসতে প্রতিটি ধাপেই আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। এসবই আমাদের দল হিসেবে আরও দৃঢ় করেছে। আমরা কখনো ভয় পাইনি, আর আগামীকালও (শনিবার) পাব না।”
দুই বছর আগে খুব কাছে গিয়েও হতাশায় পুড়তে হয়েছিল। এই মৌসুমে আরও একবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ইন্তার মিলান। সামনে বাধা পিএসজি, যারা আবার লড়ছে ট্রেবল জয়ের লক্ষ্য, যারা লুইস এনরিকের কোচিংয়ে আছে সেরা ছন্দে। কাজটা তাই কঠিনই মনে হচ্ছে সিমোনে ইনজাগি। ইন্তার কোচ তাই মনে করেন, চাপমুক্ত ফুটবল খেলাটাই হবে তাদের মূল লক্ষ্য।
২০২৩ সালের ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করেছিল ইন্তার। সেবারও ডাগআউটে ছিলেন ইনজাগি। ভালো খেললেও গোলের সামনে বিস্ময়কর সব মিস করে তালগোল পাকিয়ে হেরেছিল সেই ফাইনালে ইতালিয়ান ক্লাবটি। তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয় ফাইনালে এমন কিছু এড়াতে চাইবে সেরি আ ক্লাবটি।
সংবাদ সম্মেলনে ইনজাগি সতর্ক করে দিয়েছেন দলকে, আগের ফাইনাল হারের আক্ষেপ মেটাতে তারা যেন মরিয়া না হয়ে ওঠেন।
“আমি খেলোয়াড়দের মধ্যে দৃঢ় সংকল্প দেখছি, তবে সেটা চাপময় নয়। আমাদের উচিত হবে সঠিক মনোযোগ ও সংকল্প নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া। আমি চেয়েছি তারা যেন মনকে মুক্ত রাখে এবং সেরা প্রস্তুতিটা নেয়।”
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইন্তারের ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ায় বড় ভূমিকা আছে লাউতারো মার্তিনেজের। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী এই ফরোয়ার্ড ১৩ ম্যাচে ৯ গোল করেছেন, যা দলীয় সর্বোচ্চ। সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেনও দুটি গোল। সাথে অন্যদের দলগত পারফরম্যান্স মিলিয়েই আন্ডারডগ হিসেবেই ফাইনালে চলে গেছে ইন্তার।
ইনজাগির মতে, বড় ম্যাচে চাপ নেওয়ার ক্ষমতা আছে তার দলের।
“আমাদের দলে বিশ্বকাপজয়ী, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় আছে। তাই আমরা জানি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মত একটা ফাইনাল ম্যাচে কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়। এটা বিশ্বকাপ বা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।”
এছাড়াও ইনজাগি নিশ্চিত করেছেন যে, চোট কাটিয়ে সেমিফাইনাল এবং শেষ চারটি সেরি আ ম্যাচ মিস করা ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন পাভার্ড ফাইনালের জন্য সম্পূর্ণ ফিট আছেন।
ক্যারিয়ারের সেরা একটা মৌসুম কাটাচ্ছেন, সাথে রয়েছে দলের ট্রেবল জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা৷ ইন্তার মিলানের সাথে ফাইনালে পিএসজির জয় তাই বাড়িয়ে দিতে পারে উসমান দেম্বেলের ব্যালন ডি’অর জয়ের দাবি। তবে ফরাসি ফরোয়ার্ডের চিন্তায় আপাতত এই বিষয়টি নেই। স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, চ্যাম্পিয়ন হওয়াই তার কাছে মূখ্য ব্যাপার।
শনিবার রাতে জার্মানির মিউনিখে ইন্তারের বিপক্ষে মাঠে গড়াবে ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব প্রতিযোগিতার ফাইনাল। এই ম্যাচে পিএসজির তুরুপের তাস হতে পারেন দেম্বেলে, যিনি এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৩০ গোল করেছেন। এর মধ্যে স্রেফ গত ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ১৮ ম্যাচেই রয়েছে ২৪টি গোল।
ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে দেম্বেলে বলেছেন, ক্লাবের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের দিকেই সব মনোযোগ তার।
“আপনি যখন পিএসজিতে খেলবেন, তখন আপনার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ট্রফি জেতা। আর বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো একটা শিরোপা। আমি ব্যক্তিগত পুরস্কার নয়, বরং দলের সাফল্যের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছি। ব্যালন ডি’অর নিয়ে চিন্তা আমার মাথায় আছে ঠিকই, তবে এই মূহুর্তে আমি শুধুই দলের কথা ভাবছি।”
দেম্বেলের প্রতিভা নিয়ে সংশয় ছিল না কখনই। বার্সেলোনায় ছয় বছরের অনুজ্জ্বল অধ্যায়ের পর পিএসজিতে প্রথম মৌসুমেও ছিলেন না সেরা ছন্দে। তবে এই মৌসুমে লুইস এনরিকের অধীনে তিনি নতুন করে জ্বলে উঠেছেন।
ফ্রান্স তারকাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত পিএসজি কোচও।
“এই মৌসুমে দেম্বেলে আমাদের দলের সেরা খেলোয়াড়দের একজন, হয়ত সবারই সেরা। সে গোল করে, গোল করায়, পাস দেয়, লড়াই করে, রক্ষণেও সাহায্য করে – এটাই একজন নেতার আসল মানসিকতা। সে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।”
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
১০ দিন আগে
১১ দিন আগে
১২ দিন আগে
১২ দিন আগে
১২ দিন আগে
১২ দিন আগে
১২ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে