২০ অক্টোবর ২০২৫, ১:৫৭ পিএম
অন্য সব দিনের মতোই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শুরু হয় সোমবার সকালে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন। গা গরমের ওয়ার্ম-আপ সেশনের পর ফিল্ডিং অনুশীলন। এরপর ব্যাটিং-বোলিং ঝালিয়ে নিতে চলে যান ক্রিকেটাররা। এর মাঝেই ব্যতিক্রম হিসেবে দেখা যায়, নেট সেশনে ছোট ব্যাটের ব্যবহার।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোরে নিজেদের রুটিন অনুশীলন করেন সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্তরা। এর সঙ্গে সোমবার যোগ হয় মূল মাঠের সেন্টার উইকেটে 'ক্যাচিং ব্যাট' দিয়ে ব্যাটিং ড্রিল।
নাসুম আহমেদ, তানভির ইসলাম, রিশাদ হোসেনের পাশাপাশি আরও দুজন নেট বোলারের বিপক্ষে ওই ছোট আকারের ব্যাট দিয়ে বেশ লম্বা সময় ব্যাটিং ড্রিল করেন প্রায় সব ব্যাটার। মূলত স্পিনারদের বলে পিচিংয়ের কাছাকাছি গিয়ে খেলার চেষ্টা করেন তারা।
টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং অনুশীলনে লম্বা হাতল ও তুলনামূলক ছোট প্লেটের ‘মঙ্গুজ’ ব্যাটের ব্যবহার দেখা যায় প্রায়ই। টেস্ট ক্রিকেটে সুইং সামলানোর জন্য তুলনামূলক সরু প্লেটের ব্যাট দিয়েও অনুশীলন করেন অনেকে।
এবার বাংলাদেশের ব্যাটাররা ক্যাচিং ব্যাটের ব্যবহার করেছেন স্পিন সামলানোর প্রস্তুতি নিতে। প্রথম ওয়ানডেতে মিরপুরের কালো পিচে ব্যাটারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেছেন দুই দলেরই স্পিনাররা।
একা ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং এলোমেলো করে দেন রিশাদ হোসেন। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিক ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ফিঙ্গার স্পিনার খ্যারি পিয়েরে ও রস্টোন চেজ। দুই স্পিনারের ২০ ওভার থেকে বাংলাদেশ করতে পারে মাত্র ৪৭ রান।
খুব অস্বাভাবিক কিছু না হলে সিরিজের বাকি দুই ম্যাচেও থাকবে একই উইকেট। তাই প্রথম ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামার আগে ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলন সারেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। যেটি মূলত ক্যাচিং সেশনে ব্যবহার করেন কোচেরা।
অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই ব্যাট ব্যবহারের পেছনে ভাবনা ব্যাখ্যা করেন বাংলাদেশের স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ।
“ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলন করার মাধ্যমে ব্যাটাররা ‘গ্র্যাভিটি লেভেল’ নিচে নামাতে সুবিধা পায়। টার্নিং উইকেটে মাথা সবসময় বলের কাছে থাকতে হয়। যদি পায়ের মুভমেন্ট ধীর হয়, তাহলে স্পিনাররা সহজে আউট করে ফেলতে পারে। ছোট ব্যাটের অনুশীলনের ফলে ফ্রন্ট ফুট বা ব্যাক ফুট, যেভাবেই খেলুন না কেন- মাথা বলের কাছেই থাকবে এবং বলটা দেরিতে খেলবেন।”
“যখন কোনো ব্যাটার পায়ের ভালো ব্যবহার শুরু করে, ভালো বল থেকেও সিঙ্গেল নিতে থাকে, একজন স্পিনার হিসেবে আমি তখন বুঝি, আমরা একটা খারাপ বল হবেই। এসব কারণে ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলন এত গুরুত্বপূর্ণ।”
ফিল্ডিং সেশন শেষে মাঠের মাঝেই ব্যাটারদের নিয়ে আলোচনায় দাঁড়িয়ে যান প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। এরপর কেউ কেউ চলে যান ইনডোরে। কয়েকজন থেকে যান সেন্টার উইকেটে। সেখানে এলোমেলো শট না খেলে, ম্যাচের মতোই দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করতে দেখা যায় তাওহিদ হৃদয়, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনদের।
মুশতাক জানালেন, অনুশীলনেই ম্যাচের মতো আবহ তৈরি করে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিশ্চিত করার লক্ষ্য ছিল তাদের।
আরও পড়ুন
টেস্টে পাকিস্তানের নতুন ‘বুড়ো’ আফ্রিদি |
![]() |
“আমরা নেট প্র্যাকটিসকে ম্যাচ আবহের খুব কাছাকাছি নিয়ে যেতে চেয়েছি। ব্যাটারদের ‘মাসল মেমরি’ তৈরি হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তাদের যেন মনে হয়, ‘এটাই সেই পরিবেশ, এটাই হবে ম্যাচের উইকেট।’ আমাদের পরিকল্পনাই ছিল ম্যাচের মতো পরিস্থিতি তৈরি করা, ব্যাটসম্যানদের শেখানো কিভাবে মাঝের ওভারগুলোতে সিঙ্গেল নিতে হয়। স্পিনাররাও নিজেদের ফিল্ড সাজিয়েছিল, যাতে পুরোটা আসল ম্যাচের মতো লাগে।”
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
No posts available.
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৬:০৯ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫:২০ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫:১৭ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৩:২১ পিএম
স্পিনারদের
দাপটের আভাস নিয়েই মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের
বিপক্ষে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নামছে বাংলাদেশ দল। প্রায় দেড় বছর পর এবার দ্বিপাক্ষিক
সিরিজ জয়ের হাতছানি তাদের সামনে।
হোম অব ক্রিকেটে দ্বিতীয় ওয়ানডে শুরু হবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে। প্রথম ম্যাচের মতোই দ্বিতীয়টিতেও স্পিনবান্ধব উইকেট
হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। প্রথম ওয়ানডেতে মাত্র ২০৭ রান করেও ৭৪ রানের বড় জয়ে সিরিজে ১-০
ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
স্পিনের দাপট থাকা ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮৮.৪ ওভারের মধ্যে ৬২ ওভার বল করেছেন স্পিনাররা।
মাত্র ৩৫ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন। এবার দ্বিতীয় ওয়ানডের দলে যোগ করা হয়েছে
আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকেও।
মঙ্গলবারের
ম্যাচে তাই ৪ স্পিনার নিয়ে খেলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রিশাদের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে
ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তানভির ইসলাম। তাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন নাসুম। সেক্ষেত্রে
বিশ্রাম পেতে পারেন প্রথম ওয়ানডেতে মাত্র ২ ওভার করা তাসকিন আহমেদ।
এমনটা
হলে দুই বছর পর আবার বাংলাদেশের একাদশে দেখা যাবে দুই বাঁহাতি স্পিনার। ২০২৩ সালের
অক্টোবরে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একসঙ্গে খেলেছিলেন নাসুম
ও সাকিব আল হাসান।
এতে আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে, ওয়ানডে সিরিজের বাকি অংশে স্পিন সহায়ক উইকেটেই খেলা হবে।
তবে বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ সতর্ক করে দিয়েছেন, এমন উইকেটে আরও সাবধান
থাকতে হবে স্পিনারদের।
“আমি মনে করি, একজন স্পিনার হিসেবে যখন আপনি এমন ধরনের উইকেট দেখেন, তখন আপনি বেশি রোমাঞ্চিত হয়ে পড়েন। আর যখন রোমাঞ্চিত হন, তখন নিজের প্রক্রিয়াটা ভুলে যান। অথচ প্রক্রিয়াই সবকিছু।”
“উইকেট পেতে হলে শুধু ভালো বল করলেই হবে না, ভালো ওভার করতে হবে। টার্নিং উইকেটে মেডেন ওভার করতে হবে, ধারাবাহিকভাবে ভালো ওভার করতে হবে- তবেই উইকেট আসবে। আমার বার্তাটা খুবই সহজ- আপনি যদি নিজের প্রক্রিয়াটা মনে রাখেন, উইকেট আসবেই।”
প্রথম
ম্যাচে কালো মাটির উইকেটে দুই দলের ব্যাটাররাই রানের জন্য হিমশিম খেয়েছেন। বাংলাদেশ
যেখানে পরিকল্পনা নিয়ে ধীরে ধীরে রান তোলার চেষ্টা করেছিল, সেখানে ৫১ রানের উদ্বোধনী
জুটির পরই ভেঙে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।
দ্বিতীয় ম্যাচে তাই দুই দলই প্রথম ওয়ানডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা
সাজাতে চায়। প্রথম ম্যাচে ১৮৩টি ডট বল খেলার পর মাঝের ওভারগুলোতে স্ট্রাইক রোটেশনের
দিকে জোর দিয়েছে বাংলাদেশ।
মুশতাক বলেন,
“ফিল সিমন্স এবং মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ব্যাটারদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন কীভাবে মাঝের ওভারগুলোতে সিঙ্গেল নিতে হয়। স্পিনাররাও নিজেদের ফিল্ড সেট করেছিল, যাতে পুরোটা অনুশীলনে আসল ম্যাচের মতো পরিবেশ তৈরি হয়।”
অন্যদিকে, কঠিন কন্ডিশনে খাপ খাওয়ানোর দিকেই মনোযোগ দিচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের বাঁহাতি
স্পিনার খারে পিয়েরে বলেন, দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে ব্যাটাররা।
“আমাদের ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে মানিয়ে নিতে হবে, দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। আমাদের দলে অনেক ভালো ব্যাটার আছে। বিষয়টা কেবলই মানিয়ে নেওয়ার। আর এটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট- তাই কঠিন হবেই, চ্যালেঞ্জও থাকবে। কিন্তু আমাদের উপায় খুঁজে বের করতেই হবে।”
আর
বাংলাদেশের বোলারদের বিশেষ করে স্পিনারদের চেষ্টা থাকবে মূলত ক্যারিবিয়ানদের মানিয়ে
নিতে না দেওয়ার। সেটি করতে পারলেই ৪ সিরিজ পর আবার ওয়ানডেতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ট্রফি
ঘরে তুলতে পারবে বাংলাদেশ।
জাতীয়
দলে একসময় লেগ স্পিনারের অভাবে ভুগত বাংলাদেশ। রিশাদ হোসেনের আগমনে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছে তারা। তবে টেস্টে এখনও কব্জির মোচড়ে বল ঘোরানোর মতো কাউকে
পায়নি বাংলাদেশ।
পাকিস্তানি
স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদের বিশ্বাস, সাদা বলের দুই সংস্করণ মতো টেস্টেও ভাল করতে
পারবেন রিশাদ। তবে সেজন্য আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট
খেলে রিশাদকে টেস্টের জন্য তৈরি হওয়ার বার্তাও দিয়েছেন মুশতাক।
২০২৩
সালের মার্চে টি-টোয়েন্টি ও একই বছর ডিসেম্বরে ওয়ানডে অভিষেকের পর থেকে এখন জাতীয় দলে
দুই ফরম্যাটেই নিয়মিত মুখ রিশাদ। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে টেস্টেও খেলবেন তিনি, এমনটাই
আশা করেন মুশতাক।
ওয়েস্ট
ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন বাংলাদেশের স্পিন
কোচ।
“শতভাগ (আশা করি রিশাদ টেস্ট খেলবে)। কারণ এখন প্রায় সব দলেরই শেষ ৪ ব্যাটার ব্যাটিং করতে পারে। বিশেষ করে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। তবে রং-আন করতে পারা লেগ স্পিনারের বিরুদ্ধে, রিশাদের মতো উচ্চতা ও বাউন্স পাওয়া স্পিনারের বিপক্ষে শেষ ৪ ব্যাটারের কাজ সহজ হবে না।”
“আমরা যদি টেস্টে বা ৫০ ওভারের ক্রিকেটে লেগ স্পিনার খেলাতে পারি সেটি কাজে লাগতে পারে। যেহেতু শেষ ৪ ব্যাটার রং-আন পড়তে পারবে না, টেস্ট ক্রিকেটেও রিশাদ খুব কার্যকর হবে। তবে তার সেই জায়গাটি অর্জন করে নিতে হবে। ভালো বোলিং করতে হবে।”
একসময়
ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিয়মিত জায়গা পেতেন না রিশাদ। জাতীয় দলে খেলেই নিজের জায়গা পোক্ত করতে
হয়েছে তার। এখনও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিয়মিত নন তরুণ এই লেগ স্পিনার।
২০১৮
সালে অভিষেক হলেও, দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম শ্রেণির ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত মাত্র
২১ ম্যাচ খেলেছেন রিশাদ। যেখানে তার শিকার ৩১ উইকেট।
মুশতাক
বলেছেন, জাতীয় দলের খেলা না থাকলে রিশাদের উচিত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা।
“রিশাদ টেস্ট খেলতে অনেক আগ্রহী। আমি তাকে বলব (প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে)। সে নিজেও আগ্রহী। কারণ সে জানে, লাল বলে যত বেশি খেলবে, তত ভালো হবে বোলিং।”
অনেক
সময় একটি জয়ই বদলে দিতে পারে অনেক কিছু। যেমনটা হয়েছে বাংলাদেশ দলের বেলায়ও। ওয়ানডেতে
ধুঁকতে থাকা দলটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জেতার পর ৩-০ ব্যবধানে সিরিজের
ট্রফি ঘরে তোলার ব্যাপারে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে।
আফগানিস্তানের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারের পর গেল গেল রব উঠে গিয়েছিল
বাংলাদেশ ক্রিকেটে। নিজেদের প্রিয় ফরম্যাটে টানা ৪ সিরিজ হেরে যাওয়ার ধাক্কা ভালোভাবে
নেয়নি সমর্থকরাও। আরব আমিরাত থেকে দেশে ফেরার পর উত্তেজিত জনতার আক্রোশের মুখে পড়েন
ক্রিকেটাররা।
সেখান
থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের
মাঠে নিজেদের চেনা কন্ডিশনে ক্যারিবিয়ানদের দাঁড়াতেই দেয়নি মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
প্রথম
ম্যাচে সহজ জয়ের পর এখন আলোচনায় আসছে সিরিজ হোয়াইটওয়াশের আলোচনা। গত বছরের ডিসেম্বরে
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। এবারের নিজেদের
দেশে সেই পরাজয়ের বদলা নেওয়া সুযোগ।
মিরপুর
শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি
হবে বাংলাদেশ। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে অতিথিদের হোয়াইটওয়াশের প্রসঙ্গ।
বাংলাদেশের
স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ বলেন, ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতার বিশ্বাস আছে তাদের দলের।
“ইনশাআল্লাহ্! আপনারা জানেন, আমি যখনই কথা বলি... কোচ হিসেবে আমরা চেষ্টা করি ক্রিকেটারদের মধ্যে বিশ্বাসটা জন্ম দিতে। বিশ্বাসই সব কিছু। আমার বিশ্বাস যদি দুর্বল হয়, অবশ্যই ক্রিকেটাররা সেটি গ্রহণ করবে না। তাই আমরা সেটি করার চেষ্টা করি।”
“আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মূলত টেম্পারমেন্ট ও বিশ্বাসের ব্যাপার। আমি বলতে পারি, বাংলাদেশে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে। তারা যে কোনো দলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। আমাদের সেটি বিশ্বাস করতে হবে।”
আগের ম্যাচে ব্যাটিংটা ঠিক মনমতো হয়নি ইংল্যান্ডের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ঝড় তুলে রানের সেই ক্ষুধা ভালোভাবেই মেটাল ইংলিশরা।
ক্রাইস্টচার্চে আজ প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৩৪ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। ফিল সল্ট ও হ্যারি ব্রুকের ঝোড়ো ফিফটির পর টম বেন্টনের ছোট্ট কেমিওতে নিজেদের কুড়ি ওভারের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তোলে তারা। জবাবে ১৮ ওভারে ১৭১ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। তাতে তিন ম্যাচের সিরিজে ৬৫ রানের জয়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সফরকারীরা।
ইংল্যান্ডের রান পাহাড়ের জবাবে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। ১৮ রানে সাজঘরের পথ ধরেন দুই কিউই ব্যাটার। ব্রাইডন কার্সের বলে ক্যাচ তুলে আউট হন টিম রবিনসন (৫ বলে ৭)। তিনে নামা রাচিন রবীন্দ্র দুই চারে ৩ বলে ৮ করে কার্সের দ্বিতীয় শিকার হন।
আরও পড়ুন
‘ক্যাচিং ব্যাট’ দিয়ে কেন ব্যাটিং অনুশীলনে সৌম্য-শান্তরা |
![]() |
এরপর মার্ক চ্যাপম্যানকে নিয়ে ধস ঠেকান সাইফোর্ট। তবে দলীয় ৮৭ রানে তাদের জুটি ভাঙতেই দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে সেখানেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ১০৪ রানে ছয় উইকেট হারানোর পর ইংল্যান্ড কত বড় ব্যবধানে জিতে সেটাই ছিল দেখার ।
সপ্তম উইকেটে জেমস নিশাম ও মিচেল সেন্টনার ২৩ বলে ৫৭ রানের এক জুটি কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ১৬.১ ওভারে দলীয় ১৬১ রানে এই জুটি ভাঙতেই প্রতিরোধও মেষ হয় কিউইদের।
ইংল্যান্ডের হয়ে সেরা বোলার ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে চার উইকেট নেওয়া আদিল রাশিদ। দুটি করে শিকার লুক উড, ব্রাইডন কার্স ও লিয়ান ডওসনের।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডেরও শুরুটা ভালো হয়নি । দলীয় ২৪ রানে আউট হন জস বাটলার। তবে এরপর জ্যাকব বেথেলকে নিয়ে তান্ডব চালান সল্ট। পাওয়ার প্লে’তে ৬৮ রান তোলে ইংল্যান্ড। ৬ ওভারের শেষ বলেই ভাঙে তাদের ২৪ বলে ৪৪ রানের জুটি।
বেথেল ফেরার পর এবার সল্টের সঙ্গে চার-ছক্কার বৃষ্টি নামান অধিনায়ক ব্রুক। ৩৩ বলে ফিফটি করেন সল্ট। আর খুনে মেজাজে ব্যাট চালানো ব্রুক মাত্র ২২ বলেই ফিফটি করেন। একটা সময় মনে হচ্ছিল দু’জনই বুঝি তিন অঙ্ক স্পর্শ করবেন।
১৭.২ ওভারে দলের রান যখন ১৯৭, কাইল জেমিসনের বলে ক্যাচ তুলে ফেরেন ব্রুক। আউট হওয়ার আগে ৬ চার ও ৫ ছয়ে ৩৫ বলে ৭৮ রান করেন ডান হাতি ব্যাটার। শেষ হয় সল্টের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে তাঁর ৬৮ বলে ১২৯ রানের দুর্দান্ত জুটি। জেমিসনের একই ওভারেই ফিরেন সল্ট। ১১ চার, এক ছয়ে তিনি খেলেন ৫৬ বলে ৮৫ রানের ইনিংস। এরপর শেষ দিকে ঝড় তোলার কাজ করেন ১২ বলে ২৯ রান করা বেন্টন।
আরও পড়ুন
টেস্টে পাকিস্তানের নতুন ‘বুড়ো’ আফ্রিদি |
![]() |
চার ওভারে ৪৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন জেমিসন। একটি করে উইকেট নেন জেকব ডাফি ও মিচেল ব্রাসওয়েল।
অকল্যান্ডে সিরিজের শেষ ম্যাচ আগামী বৃহস্পতিবার।
প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের স্পিনে রীতিমতো হাঁসফাঁস করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। মিরপুরের ঘূর্ণিক্ষেত্রে কাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামছে এই দুই দল। ঘূর্ণি লড়াইয়ে বোলিং আক্রমণে আরও শক্তি বাড়িয়েছে স্বাগতিকেরা। শেষ দুই ওয়ানডের জন্য গতকাল দলে ডাকা হয় বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে।
বাংলাদেশের পথে হাঁটাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজও। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচে দলে যোগ দিচ্ছেন বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেন। আজ রাতে ঢাকায় পৌঁছে দলের সঙ্গে যুক্ত হবেন তিনি। এক বিসিবি কর্মকর্তা ক্রিকবাজকে বলেছেন, ‘আকিল আজ রাতে ঢাকায় পৌঁছাবেন এবং ওয়ানডে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।’
আরও পড়ুন
‘ক্যাচিং ব্যাট’ দিয়ে কেন ব্যাটিং অনুশীলনে সৌম্য-শান্তরা |
![]() |
যদিও ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য আকিলকে দলে নেওয়ার প্রসঙ্গে এখনো অফিশিয়ালি কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। প্রথম ওয়ানডেতে তিন স্পিনার— গুডাকেশ মোটি, খারি পিয়েরে ও রস্টন চেজকে খেলিয়েছিল সফরকারী দল। তবে তাঁদের চেয়ে বেশি সুফল পায় বাংলাদেশের স্পিনাররা।
৩২ বছর বয়সী আকিলকে দলে ভিড়িয়ে শক্তি বাড়াচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৮ মাস আগে ওয়ানডে খেলেছেন সবশেষ তিনি। ২০২৩ সালে জুলাইয়ে হারারেতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলেন। টি-টোয়েন্টি দলে অবশ্য নিয়মিত আকিল। ৩৮ ওয়ানডেতে ৪.৮৪ ইকোনমিতে ৫৭ উইকেট তাঁর।
এ ছাড়া ২৪ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার রামন সিমন্ডসকেও প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে ডাকা হয়েছে। তিনি এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ওয়ানডে স্কোয়াডে থাকা দুই পেসার জেডিয়া ব্লেডস ও শামার জোসেফকে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।