
বেন স্টোকস ও উইল জ্যাকসের জমে ওঠা জুটি কোনোভাবেই ভাঙতে পারছিল না অস্ট্রেলিয়া। তখনই যেন জাদু দেখালেন স্টিভ স্মিথ। তবে বল হাতে নয়, বরং স্লিপে দাঁড়িয়ে ক্যাচ নিয়ে। মাইকেল নেসারের বলে বাম দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচে জুটি ভাঙেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।
পরে আরেকটি ক্যাচ নিয়ে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যাচের রেকর্ড। যেখানে তার সঙ্গী ভারতীয় কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড়। তাদের দুজনের ওপরে শুধু ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও সফলতম ব্যাটার জো রুট।
ব্রিসবেনে দিবারাত্রির টেস্টে চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডকে ২৪১ রানে গুটিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। তাদের সামনে এখন লক্ষ্য মাত্র ৬৫ রানের। ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেট নিয়ে দলের সবচেয়ে সফল বোলার নেসার।
আরও পড়ুন
| রোহিতের ২০০০০, জয়সওয়ালের সেঞ্চুরিতে সিরিজ ভারতের |
|
স্লিপে দাঁড়িয়ে স্মিথ নিয়েছেন তিনটি ক্যাচ। যার সৌজন্যে তার ক্যারিয়ারে এখন ক্যাচের সংখ্যা ২১০টি। নন-উইকেটকিপারদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসে ক্যাচের তালিকায় এখন দুই নম্বরে উঠে গেছেন ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটার।
স্মিথের সমান ২১০ ক্যাচ নিয়ে আগে থেকেই দুই নম্বরে ছিলেন দ্রাবিড়। তবে অনেক কম ম্যাচেই তাকে ছুঁয়ে ফেলেছেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ১২১ ম্যাচে নিয়েছেন ২১০ ক্যাচ। আর দ্রাবিড় তার ১৬৪ টেস্টের ক্যারিয়ারে নিয়েছিলেন ২১০টি ক্যাচ।
এই তালিকায় সবার ওপরে রুট। ব্রিসবেন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস পর্যন্ত ১৬০ ম্যাচে রুটের ক্যাচ ২১৩টি। এখনও খেলা চালিয়ে যাওয়ায় সামনের দিনগুলোতে রুট আর স্মিথের মধ্যে ক্যাচের লড়াইটা হয়তো দেখা যাবে জমজমাটভাবে।
তবে অ্যাশেজের হিসেবে অবশ্য এরই মধ্যে সবার ওপরে স্মিথ। ঐতিহ্যবাহী এই সিরিজে ৩৯ ম্যাচে ৬৬ ক্যাচ নিয়েছেন তারকা ব্যাটার। ৩২ ম্যাচে ৫৪ ক্যাচ নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার ইয়ান বোথাম।
No posts available.

দল হারুক কিংবা জিতুক—মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর কাজটাই করে যান একান্তচিত্তে। গতকাল ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ম্যাচে জয় পায়নি দুবাই ক্যাপিটালস। ঠিকই বল হাতে জাদু দেখিয়েছেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার।
মোস্তাফিজ ৪ ওভারে নিয়েছেন ২টি উইকেট। ক্যাচ ধরেছেন ২টি। আজও মোস্তাফিজ বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন। ৩ ওভার বোলিং করে ২২ রান খরচায় নিয়েছেন ২ উইকেট। ভাগ্য ভালো, আজ তার দল আবু ধাবি নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে বড় জয় পেয়েছে।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে ১৮৬ রান তোলে দাসুন সানাকার দল। রভম্যান পাওয়েলের অপরাজিত ৫২ বলে ৯৬ রানের ইনিংসে ভর করে শক্তিশালী পুঁজি পায় দল।
লক্ষ্য পূরণে নেমে ডেভিড উইলি ও মোস্তাফিজুর রহমানের তোপে পড়ে নাইট রাইডার্সের ব্যাটাররা। একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে ১০৩ রানে থামিয়ে দেয় জেসন হোল্ডারদের।
মূলত মোস্তাফিজ ও উইলির তোপে শুরুটা ভালো না হওয়াটাও বড় ধাক্কা ছিল নাইট রাইডার্সের। তার মধ্যে ওয়াকার সালমানখিলের স্পিন পড়তে গিয়ে রীতিমতো হাপিয়ে ওঠেন আন্দ্রে রাসেল ও রাদারফোর্ডরা।
দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট পাকিস্তানি স্পিনারের। চার উইকেট তোলেন সালমানখিল। দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ নবি, মোস্তাফিজ ও উইলি।

যখন সব শেষ হয়ে যাবে—রাজনীতি, ক্রিকেট; তখন সাকিব আল হাসান কী করবেন? মানুষ তাঁর কোন দিক স্মরণ করবে, ক্রিকেটার সাকিবকে নাকি রাজনীতিবিদ সাকিবকে?
‘বিয়ার্ড বিফোর উইকেট’ নামক পডকাস্টে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অলরাউন্ডার সাকিব এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আজ। সেখানে নিজের যাপিত জীবন, ইচ্ছা-উদ্দীপনা ও ফেলে আসা দিন তুলে ধরেছেন সাবেক অধিনায়ক।
সাকিব বলেন, “আমার মনে হয়, ক্রিকেট ক্যারিয়ার প্রায় শেষ করেছি। হয়তো এখন রাজনীতির অংশ বাকি আছে। এটা এমন কিছু যা আমি বাংলাদেশের মানুষ এবং মাগুরাবাসীর জন্য করতে চাই। এটা ছিল আমার ইচ্ছা, যা এখনো আমার ইচ্ছা। দেখা যাক, আল্লাহ আমাকে কোথায় নিয়ে যান।”
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন সাকিব আল হাসান। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে ফেরেননি তিনি। ক্যারিয়ারের পাঠ শেষ করার আগে রাজনীতিতে যোগ দেওয়াটা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি।
সাকিব বারবার দেশে ফিরতে চাইলেও ফেরা হয়নি। তবে তিনি জানিয়েছেন, ঠিকিই দেশে ফিরবেন এবং দেশ, বিশেষ করে মাগুরার মানুষের জন্য রাজনীতি করে যাবেন।
পডকাস্টে সাকিব বলেন, “আমি অবশ্যই চাই বাংলাদেশে ফিরতে। কারণ, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। আমি বাংলাদেশে ফিরে যাব।”

আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দশম আসর। মহাযঞ্চের আগে পাকিস্তান দলের অধিনায়ক পরিবর্তন নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে। বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সালমান আলি আগা।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) এক ভিডিও বার্তায় পাকিস্তান দলের অধিনায়ক কথা বলেছেন বিশ্বকাপে তাঁদের প্রস্তুতি, দলের ফিটনেস ও লক্ষ্য নিয়ে।
গ্রুপ ‘এ’ তে পাকিস্তানের সঙ্গী ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস। অধিনায়ক বদলের গুঞ্জন উঠলেও আগা জানান, তাঁর নেতৃত্বেই বিশ্বকাপ খেলবে পাকিস্তান।
বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলে বড় কোন পরিবর্তন হবে না বলে জানান আগা, ‘বিশ্বকাপের আগে বড় কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। যে কম্বিনেশন তৈরি হয়েছে, সেটাই থাকবে।’
সামনের দুটি বিশ্বকাপ জিততে চান আগা, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং পরবর্তী ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিততে চাই। এগুলো আমার স্বপ্ন। সত্যি হলে দারুণ লাগবে।’

২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সবশেষ বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। দেশসেরা এই অলরাউন্ডার এরপর আর দেশের হয়ে খেলেননি। বেশ কয়েকবার সম্ভবনা জেগেছিল, সাকিবেরও ইচ্ছা ছিল মিরপুর শেরে বাংলায় ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলবেন।
সাকিবের সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। তবে আশা মরেও যায়নি। কারণ, এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাননি তিনি। ৩৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার এখনও স্বপ্ন দেখেন মাতৃভূমিতে ফিরবেন, লাল-সবুজ জার্সি গায়ে জড়াবেন।
বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন সাকিব। সেখান থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন লিগে খেলছেন। ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি–টোয়েন্টিতে (আইএলটি টি–টোয়েন্টি) এমআই এমিরেটসের হয়ে খেলা সাকিবের বর্তমান গন্তব্য আরব আমিরাত।
আইএলটি টি–টোয়েন্টি চলাকালীন ‘বিয়ার্ড বিফোর উইকেট’ নামক পডকাস্টে অংশ নেন সাকিব। তার সঙ্গে অতিথি ছিলেন ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মঈন আলী।
পডকাস্টে সঞ্চালকের এক প্রশ্নে দেশের জার্সিতে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি মিলিয়ে ৪৪৭ ম্যাচ খেলা সাকিব বলেন,
“আমি অবশ্যই চাই বাংলাদেশে ফিরতে। কারণ, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। আমি বাংলাদেশে ফিরে যাব।”
নিজের লাইফস্টাইল নিয়ে সাকিব বলেন,
“তুমি যে ‘স্বাভাবিক জীবন’-এর কথা বলছ, সত্যি বলতে আমি কখনোই সে জীবন চাইনি। আমি বাংলাদেশে যে জীবনটা কাটাচ্ছিলাম, সেটা আমার ভালোই লাগত। এমন না যে আমি সেই জীবনটা অপছন্দ করতাম। আমি তো আমার মতো করেই স্বাভাবিক জীবনে ছিলাম।”
সাকিব আরও বলেন, “আমার কখনো বেশি বন্ধু ছিল না। ছোটবেলা থেকেই বাইরে বেশি যেতাম না। আমি বোর্ডিং স্কুলে পড়েছি, আর বড় হতে হতে ভালো দিকনির্দেশনা পেয়েছি। এগুলো আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।’

পার্থে অস্ট্রেলিয়ার কাছে দুই দিনে হারের পর ব্রিসবেনে পিংক বলের টেস্টে ইংল্যান্ড হারল ৮ উইকেটে। সিরিজের আগে বেন স্টোকস হুংকার দিয়ে ইতিহাস রচনার কথা জানালেও আদতে তা ধোপে টেকেনি। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট ২-০ পিছিয়ে যাওয়ার দারুণে মন খারাপ সফরকারীদের। বিশেষ করে ক্যাপ্টেন স্টোকস তো বলেই দিলেন—দলে দুর্বলচিত্তের মানুষদের কোনো স্থান নেই।
দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৬৫ রানের লক্ষ্য ১০ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলেছে স্মিথের দল। ম্যাচের চতুর্থ দিন খানিক লড়াই করেন বেন স্টোকস। তবে তাকে থামিয়ে দিয়ে অনায়াসেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
আজ ম্যাচ শেষে সম্প্রচার চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টোকস জানিয়েছেন, বিপদকালে তাঁর দল কতটা প্রেসার নিতে পেরেছে সেটাই আলচ্য।
তিনি বলেন, ‘‘ওরা (অস্ট্রেলিয়া) গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়া দুর্বলদের জায়গা নয়। আমরা দুর্বল নই, কিন্তু এখন ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছি। সামনে তিনটি ম্যাচ আছে, আমাদের কিছু একটা খুঁজে বের করতেই হবে।”
প্রথম ইনিংসে থিতু হয়ে যাওয়ার পর রান আউটে কাটা পড়লেও দ্বিতীয় ম্যাচে ঠিকই এক প্রান্ত আগলে ব্যাট চালিয়ে যান স্টোকস। প্রায় ২২৯ মিনিট ক্রিজে পড়ে থেকে ১৫২ বল মোকাবিলা করে ফিফটি করেন ইংল্যান্ড অধিানয়ক।
স্টোকস যখন ব্যাট হাতে বাইশগজে নামেন তখন দল মৃতপ্রায়। সেটা জাগিয়ে তোলেন তিনি। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। তাই অনেকটা রাগ করে তিনি বলেন, ‘‘আমি অনেকবার বলেছি। অস্ট্রেলিয়া সফর দুর্বল লোকদের জন্য না। তারমধ্যে যে ড্রেসিংরুমে ক্যাপ্টেন আমি, সেখানে তো কখনই নয়।’’
ম্যাচশেষে বিবিসির ‘টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল’-এ দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ইংল্যান্ড দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম জানিয়েছেন, দলের প্রস্তুতির মোটেও ঘাটতি ছিল না। বরং অতিরিক্ত অনুশীল হয়েছে।
তিনি বলেন, “প্রস্তুতির অভাব ছিল—আমি তা মনে করি না। বরং আমরা হয়তো একটু বেশি অনুশীলনই করেছি। এই ম্যাচের আগে পাঁচটি জোরালো ট্রেনিং সেশন ছিল। কখনো কখনো ঘাটতি পুষিয়ে নিতে গিয়ে অতিরিক্ত করার প্রবণতা তৈরি হয়।”
তিনি আরও বলেন,‘‘ক্রিকেট কেবল শারীরিক বা টেকনিক্যাল প্রস্তুতির খেলা নয়, মানসিক প্রস্তুতিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ব্যাটিংয়ে ঘাটতি ছিল, বোলিংয়ে তো ছিলই, আর ফিল্ডিংতেও ঘাটতি চোখে পড়ার মতো। ভালো দলের বিরুদ্ধে ১০ উইকেট নেওয়াই কঠিন, সেখানে ১৫টা নিতে গেলে কী পরিস্থিতি দাঁড়ায় সবাই জানে।’’