
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ততায় দীর্ঘ একটা সময় খেলেননি ঘরোয়া ক্রিকেটে। তবে ভারতের জার্সিতে লাল বলের ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময় পেছনে ফেলতে সেখানেই ফিরতে হয়েছে রোহিত শর্মাকে। তবে রঞ্জি ট্রফিতে ফেরার ম্যাচেও যথারীতি ব্যর্থ ভারত অধিনায়ক। এক ডিজিটেই আউট হয়ে দীর্ঘায়িত হল তার রান খরা।
রঞ্জি ট্রফিতে মুম্বাইয়ের বিকেসি-তে শরদ পাওয়ার একাডেমিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিপক্ষে গ্রুপ ‘এ’ ম্যাচে সকালেই ব্যাট করতে নামেন রোহিত। তবে সবাইকে হতাশ করে টিকতে পারেন মাত্র ১৯ বল, আর রান আসে মোটে তিন।
আরও পড়ুন
| অবসর সিদ্ধান্ত কোহলি-রোহিতের ওপরই ছেড়ে দিলেন গম্ভীর |
|
এর মধ্য দিয়ে অব্যাহত রইল লাল বলের ক্রিকেটে রোহিতের লম্বা সময় ধরে চলা বাজে ফর্ম। গত বছর ঘরের মাঠে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচটি টেস্ট টেস্টে মাত্র একটি ফিফটি করেন রোহিত। দশ ইনিংসের চারবার আউট হন এক ডিজিটে।
এরপর অস্ট্রেলিয়া সফরে পাঁচ ইনিংসে তার মাত্র একটি দুই অঙ্কের স্কোর ছিল, যেখানে তিনি পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে অংশ নিয়েছিলেন। অধিনায়ক হলেও শেষ টেস্টে থেকে নিজের নাম সরিয়েও নেন রোহিত।
সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ মৌসুম রোহিত শেষ করেন টেস্টে মাত্র ১০.৯৩ গড় নিয়ে। ১৬ ইনিংসে তার এই গড় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০০৬ সালের পর থেকে কমপক্ষে ১৫ ইনিংস ব্যাট করা (শীর্ষ ছয়ে ব্যাট করা) খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন গড়। তার ওপরে আছেন কেবল ইংল্যান্ডের হাসিব হামিদ, ২০১৮ মৌসুমে ১৮ ইনিংসে তার গড় ছিল মাত্র ৯.৪৪।
আরও পড়ুন
| রোহিতের চোখে অশ্বিন সত্যিকারের ‘ম্যাচ উইনার’ |
|
No posts available.
৭ নভেম্বর ২০২৫, ৪:২৬ পিএম
৭ নভেম্বর ২০২৫, ২:৫৯ পিএম

বিশ্বকাপ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক লরা ভলভার্টকে (১০১) আউট করতে যে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ নিয়েছিলেন অমনজোত কৌর, সেটিই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয় ভারতের পক্ষে। পরে ম্যাচ শেষে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেছিলেন, ‘ওই ক্যাচটা জীবনের সবচেয়ে বড় মুহূর্ত ছিল।’
ভারত বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ এখনো সারা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে সতেজ। আর এই সাফল্যের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দলের সাক্ষাতে উঠে এসেছে এক হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্ত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁকেও মুগ্ধ করেছে অলরাউন্ডার অমনজোতের নেওয়া লরার ক্যাচটি।
গত বুধবার দিল্লির লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে বিশ্বকাপজয়ী নারী ক্রিকেটারদের আমন্ত্রণ জানান নরেন্দ্র মোদি। তিনি খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান এবং বলেন, টুর্নামেন্টের শুরুতে তিন ম্যাচে হারের পরেও দল যেভাবে চাপ সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে—তা দেশের মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণার উদাহরণ হয়ে থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার মুখেও দৃঢ় মনোবল ধরে রাখার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎ শেষে সংবাদসংস্থা এএনআইকে অমনজোত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার ক্যাচ নিয়ে মজা করছিলেন। তিনি বললেন—সূর্য ভাইয়া (পুরুষ দলের সূর্যকুমার যাদব) একটা ক্যাচ ধরেছিল, আমি একটা ক্যাচ ধরলাম, আর দুটো বিশ্বকাপ ঘরে ফিরল! আমরা সবাই হেসে উঠেছিলাম।’
এর আগে, পুরুষ দল টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার সময় সূর্যকুমার যাদবের অবিশ্বাস্য ক্যাচ ভাইরাল হয়েছিল। নারী বিশ্বকাপ ফাইনালেও অমনজোত কয়েকবারের চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ নিয়ে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে দেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে ভারত জেতে ৫২ রানে।
বিশ্বকাপ শেষে নিজের শহর চণ্ডীগড়ে ফেরেন অমনজোত। বিমানবন্দরে হাজারো মানুষের ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, ‘পুরো পাঞ্জাব আমাকে স্বাগত জানাতে এসেছে। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি হতে পারে না। পরিবার পাশে না থাকলে এতদূর আসা যায় না।’

শামির বিরুদ্ধে ভরণ–পোষণের অর্থ বাড়ানোর দাবিতে তাঁর সাবেক স্ত্রী হাসিন জাহানের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নোটিশ জারি করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার দেশটির সর্বোচ্চ আদালত শামি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এই নোটিশ পাঠায়।
আবেদনে হাসিন জানান, কলকাতা হাইকোর্ট ভরণ–পোষণ হিসেবে যে মাসিক ৪ লাখ রুপি নির্ধারণ করেছে—তাঁর (হাসিন) জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার এবং মেয়ের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার রুপি পর্যাপ্ত নয়। তিনি আদালতের কাছে ভরণ–পোষণের অর্থ বাড়ানোর অনুরোধ জানান। তাঁর দাবি, বর্তমানে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মেয়ের শিক্ষার খরচসহ প্রয়োজন মেটাতে এই অর্থ যথেষ্ট নয়।
সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গ্রহণ করে শামি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে। তারপর আদালত পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করবে।
হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে অসন্তোষ জানিয়ে হাসিন জাহান বলেন, তিনি ও তাঁর মেয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে এই ভরণ–পোষণ পর্যাপ্ত নয়। সেই কারণেই তিনি সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন।
২০১৮ সালে শামি ও তাঁর স্ত্রী হাসিনের ব্যক্তিগত ও আইনি দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সে সময় হাসিন সংবাদমাধ্যমে এসে শামির বিরুদ্ধে গৃহনির্যাতন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং যৌতুকের দাবির অভিযোগ আনেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় শামির বিরুদ্ধে কলকাতায় মামলা হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে শামি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জবাব আদালতে জমা পড়বে। এরপর সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করবে। এতে দ্বন্দ্বপূর্ণ এই অধ্যায়ের পরবর্তী দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।

সম্প্রতি দুটি সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের টিম ম্যানেজমেন্টের অনেকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন জাহানারা আলম। এই পেসারের অভিযোগ ও মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিসিবি।
জাহানারার অভিযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হচ্ছে ব্যাপক আলোচনা। এবার এই তারকা ক্রিকেটারের ইস্যুতে মুখ খুললেন তামিম ইকবাল। আজ ফেসবুকে এক পোস্টে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক লিখেছেন,
‘জাহানারা আলম যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, সবই গুরুতর এবং সে সব সত্যি হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।’
শুধু নারী ক্রিকেট বলে নয়, যেকোনো ক্ষেত্রে এটি গ্রহণযোগ্য নয় বললেন তামিম,
‘শুধু একজন জাতীয় ক্রিকেটার বা সাবেক অধিনায়ক বলেই নয়, যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটার হোক বা যেকোনো খেলার ক্রীড়াবিদ কিংবা যে কোনো নারী, কারো প্রতিই এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
বিসিবির পাশাপাশি ক্রীড়া পরিষদকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ তামিমের,
‘বিসিবি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বটে। তবে আমি মনে করি, এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কিংবা সরকারী পর্যায়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত, যেখানে বিসিবি সংশ্লিষ্ট কেউ থাকবেন না, যাতে বিন্দুমাত্র পক্ষপাতের সুযোগ না থাকে। যত দ্রুত সম্ভব এই কমিটি গঠন করা উচিত ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপারটিকে দেখা উচিত। দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত শেষ করে দোষী যে-ই হোক, যার যতটুকু দায় থাকুক, উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’
তামিম আরও লিখেছেন,
‘কয়েকদিন আগে জাতীয় দলের পরিবেশ নিয়েও জাহানারা কিছু অভিযোগ করেছেন, যা বিসিবি পরে উড়িয়ে দিয়েছে। একজন ক্রিকেটার যখন দল নিয়ে এত গুরুতর অভিযোগ করেন, সেসব অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত। কিন্তু যাচাই না করেই বিসিবি যেভাবে অতি দ্রুত উড়িয়ে দিয়েছে, কখনোই তা কাম্য নয়।’
ন্যায়বিচার প্রত্যাশা তামিমের,
‘জাহানারার অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা যদি না নেওয়া যায়, যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো মেয়ে ক্রিকেট বা যে কোনো খেলায় আসতে ভয় পাবে, খেলাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পিছপা হবে। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।’

হংকং সিক্সেসে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। স্বাগতিক হংকংয়ের বিপক্ষে তাদের প্রথম ম্যাচটি হয়েছিল পরিত্যক্ত। আকবর আলীর ব্যাটিং তাণ্ডব ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ঘূর্ণি জাদুতে মং ককে পরের ম্যাচে পেল বাংলাদেশ দারুণ জয়।
টস জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক লাহিরু দিলশান। ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৭৫ রান রান। জবাবে ৫.১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমে যায় ৬১ রানে।
মং ককের মিশন রোড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথম ওভারেই ব্যাটিং ঝড় তোলেন বাংলাদেশের ওপনোর হাবিবুর রহমান। ধনঞ্জয়া লক্ষণের এক ওভারে তোলেন ২০ রান। ইনিংসের চতুর্থ বলে অবশ্য গোল্ডেন ডাকে আরেক ওপেনার জিসান আলমকে ফেরান লক্ষণ।
দুই নম্বরে নেমে তাণ্ডব চালান আকবর আলী। ৯ বলে ৩২ রান করেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটার। ইনিংসে ছিল ৪টি ছক্কা ও ২টি চার। যার সৌজন্যে ৬ উইকেটে ৭৫ রান তোলে বাংলাদেশ।
৭৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে প্রথম ওভার থেকেই উইকেট হারাতে থাকে শ্রীলঙ্কা। সর্বোচ্চ ১২ বলে ১৮ রান এসেছে লক্ষণের ব্যাট থেকে। লাহিরু সামারাকুন ৭ বলে ১৩ ও তানুকা দাবারে করেছেন ৩ বলে ১৩ রান। তবে দলকে জেতানোর মতো ইনিংস খেলে যেতে পারেননি কেউ। ২ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের মোসাদ্দেক। ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি।

হংকং সিক্সিংয়ে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় আকবর আলীরা। এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করে ৭১ রান রানে সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
মংকং কক ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শ্রীলঙ্কার আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই ব্যাটিং ঝড় তোলেন শেখ হাবিবুর রহমান। ধনঞ্জয় লক্ষনের এক ওভারে ২০ রান করেন তিনি। তবে দ্বিতীয় ওভাবের জিসান ফিরলে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে দল।
ওয়ানডাউনে নেমে সে ধাক্কা সামাল দেন আকবর আলী। ৯ বলে ৩২ রান করেন জাতীয় দলের এই উইকেটকিপার ব্যাটার। যাতে ছিল ৪টি ছক্কা ও ২টি চার।
শেষ দিকে বরং বিড়ম্বনা বাড়ান মোসাদ্দেক হোসেন ও আবু হায়দার রনি। যেখানে প্রতিটি বল গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে ১০ বলে ৬ রান করেন আবু হায়দার। মোসাদ্দেক করেন ৬ বলে ৮ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৭১ রান।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ধনঞ্জয়, থিরিন্দু ও লাহিরু একটি করে উইকেট তোলেন।