আগে ব্যাটিং করা জিম্বাবুয়ে যে স্কোর পেয়েছিল, আধুনিক ওয়ানডে ক্রিকেটে সেটিকে লড়াকুও বলা যায় না। তবে সেই রান তাড়ায় শুরু থেকেই রীতিমত নাকানিচুবানি খাওয়ার দশা হল পাকিস্তানের। বৃষ্টির বাধায় খেলা বন্ধের আগে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়া সফরকারীরা শেষ পর্যন্ত দিল এর চড়া মাশুল। বৃষ্টি আইনে যে বিশাল জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করল জিম্বাবুয়ে।
বুলাওয়েতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ে গুটিয়ে গিয়েছিল ২০৫ রানেই। ২১ ওভারে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল ৬ উইকটে ৬০ রান করার পর বৃষ্টিতে ভেস্তে যায় খেলা। বৃষ্টি আইনে তাতে ৮০ রানে জয় পেয়েছে জিম্বাবুয়ে।
আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়া সিরিজে পাকিস্তান দলে বাবর-শাহিন-নাসিম |
![]() |
ওপেনাররা স্বাগতিকরা পায় উড়ন্ত সূচনা। মাত্র পাঁচ ওভারেই হয়ে যায় ৪০ রান। জয়লর্ড গাম্বিয়ে রান-আউটে ভাঙে জুটি। এরপর একটা ধস নামে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং অর্ডারে। ৯৯ রানেই চলে যায় পাঁচ উইকেট। সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন সিন উইলিয়ামস (২৩ রান) ও ব্রায়ান বেনেট (২০ রান)। একপ্রান্তে সিকান্দার রাজা থাকলেও তাই ১২৫ রানে ৭ উইকেটে হারিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়ে যায় দলটি।
তবে অষ্টম উইকেটে রিচার্ড এনগারভার কাছ থেকে পান যোগ্য সমর্থন। দুজনে যোগ করেন মহামূল্যবান ৬২ রান। চাপের মুখে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে ৩৯ রানে বিদায় নেন রাজা। তবে জিম্বাবুয়ের দুইশ পার করার মূল কৃতিত্ব এনগারভার। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৫২ বলে খেলেন ৪৮ রানের দারুণ এক ইনিংস। এরপরও ৪০.২ ওভারেই শেষ হয়ে যায় দলের ইনিংস। ৩টি করে উইকেট নেন আঘা সালমান ও ফয়াসাল আকরাম।
মামুলি স্কোর ডিফেন্ড করতে নেমে পাঁচ ওভারের মধ্যেই পাকিস্তানের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলার আভাস দেব ব্লেসিং মুজারাবানি। তিন বাউন্ডারিতে শুরুটা ভালো পেলেও সেটা লম্বা করতে ব্যর্থ হন তিনে নামা কামরান গুলাম।
আরও পড়ুন
হংকং সিক্সেসে’র ফাইনালে পাকিস্তান, হারলো অস্ট্রেলিয়া |
![]() |
নড়বড়ে পথচলার মধ্যেই আক্রমণে এসেই পাকিস্তানকে আরও চেপে ধরেন রাজা। প্রথমে আঘা সালমানকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলার পর একই ওভারে বোল্ড করেন হাসিবুল্লাহ খানকে। অন্যপ্রান্তে উইলউয়ামস ফেরান ইরফান খানকে।
বৃষ্টিতে খেলা বন্ধের আগে পাকিস্তানের যে পরিস্থিতি ছিল, তাতে এখান থেকে এই ম্যাচ জেতা বেশ কঠিন কাজই হয়ে যেত। তবে রিজওয়ান (১৯*) ক্রিজে থাকায় আশাটা কিছুটা হলেও টিকে ছিলই। তবে অনেক প্রচেষ্টার পরও খেলা শুরু না হওয়ায় হার মেনে নিয়ে হয়েছে তার দলকে।
৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৯ পিএম
জিতলেই ইতিহাস। প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের উৎসব। কলম্বোর প্রেমাদাসায় প্রথম দুই ম্যাচের ফল ১-১এ অমিমাংসিত থাকায় ক্যান্ডির পাল্লেকেলেতে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি রূপ পেয়েছে ফাইনাল। পাল্লেকেলেতে অতীত সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশ দলের। শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়টা সূচিত হয়েছে এই মাঠেই। ২০১৩ সালে ৩ উইকেটে জয় থেকে সিরিজ জয়ের সেই টনিক নিয়ে শ্রীলঙ্কার মাঠে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের উৎসবে ফেটে পড়বে মিরাজের দল, এমন স্বপ্নই দেখেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।তবে ১৯ মাস আগে দিল্লীতে ২৮২ রান তাড়া করে ৫৩ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ে শান্ত, মিরাজ, তানজিদ, তানজিমদের সেই গৌরবগাঁথা পাল্লেকেলের মাঠে পুনরাবৃত্তি হয়নি। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ২৮৬ রানের চ্যালেঞ্জটা নিতেই পারেনি বাংলাদেশ দল। ৯৯ রানে হেরে সিরিজের শেষের ছবিটা হয়েছে হতাশার।
প্রেমাদাসার উইকেট অনেকটা মিরপুরের মতো। রান করতে হয় কষ্ট করে। প্রথমে ব্যাট করে আড়াইশ স্কোরকে যথেষ্ট মনে হয়েছে। কিন্তু পাল্লেকেলের উইকেটের বৈশিষ্ট্য একটু আলাদা। উইকেটে বল পড়ে ব্যাটে ঠিকঠাক মতো এসেছে। এমন সুবিধাজনক ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি পিচ পেয়ে কুশল মেন্ডিজের ব্যাট উঠেছে জ্বলে। তার সেঞ্চুরিতে (১১৪ বলে ১৮ বাউন্ডারিতে ১২৪) ভর করে ২৮৫/৭ স্কোর করেছে শ্রীলঙ্কা।
ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ স্পিনারদের সাপুড়ে নৃত্য দেখে ভয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। হয়তবা সে কারণেই স্লো উইকেট প্রস্তুত করার আইডিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়ে ব্যাটারদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন পাল্লেকেলের কিউরেটর।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫০ ওভারের ম্যাচে রেকর্ডটা দারুণ কুশল মেন্ডিজ-আসালাঙ্কার। দু'জনেই ছিল ইতোপূর্বে সেঞ্চুরি-আসালাঙ্কার দুটি, কুশল মেন্ডিজের ১টি। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ম্যাচ উইনিং সেঞ্চুরির তরতাজা স্মৃতি নিয়ে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে নেমেছেন অধিনায়ক আসালাঙ্কা। ২০১৭ সালে ডাম্বুলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে কুশল মেন্ডিজের সেঞ্চুরির অতীত সুখস্মৃতি তো আছেই, চলমান সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি থেকেও নিয়েছেন টনিক। চতুর্থ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশ বোলারদের নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছেড়েছে এই জুটি। ১১৭ বলে যোগ করেছে তারা ১২৪ রান।
গত বছর ডাম্বুলায় নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের সর্বোচ্চ ১৪৫ রানের ইনিংস ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ডের নেশায় বিভোর কুশল মেন্ডিজ এদিন শুরু থেকে করেছেন ইতিবাচক ব্যাটিং। তানজিম হাসান সাকিবকে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগ দিয়ে বাউন্ডারির চুমোয় ইনিংস শুরু করে ৫৮ বলে ফিফটি এবং ৯৫ বলে ওডিআই ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন কুশল মেন্ডিজ। দ্বিতীয় ফিফটিতে লেগেছে তার মাত্র্র ৩৭টি বল। ৯০'র ঘরে এসে রানের জন্য ধুঁকতে হয়নি তাকে। শেষ ১০ রান নিতে লেগেছে তার মাত্র ৬টি বল। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি ইনিংসকে টেনে নিয়েছেন ১২৪ পর্যন্ত। ওডিআই ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসে ১০৮.৭৭ স্ট্রাইক রেটে করেছেন রান। যে ইনিংসে মেরেছেন তিনি ১৮টি বাউন্ডারি। ব্রেক থ্রু দিয়েছেন অকেশনাল স্পিনার শামীম পাটোয়ারী। তার চতুর্থ ওভারে পুল করতে যেয়ে রিটার্ন ক্যাচে থেমেছেন কুশল মেন্ডিজ। শেষ পাওয়ার প্লে'র প্রথম ওভারে আসালাঙ্কাকে (৬৮ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৫৮) পুল শটে খেলার ফাঁদে ফেলে দিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচে থামিয়েছেন তাসকিন।
তিনশ ছাড়িয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস ছিল যে ইনিংসে, সেই ইনিংসটা থেমেছে ২৮৫/৭-এ। শেষ পাওয়ার প্লে'র ৬০ বলে বাংলাদেশ বোলাররা ৬২ রানের বেশি শ্রীলঙ্কার স্কোরশিটে যোগ করতে দেননি। ওই ১০ ওভারে শ্রীলঙ্কার ৪ উইকেট ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ বোলাররা।
মিরাজ এদিন ছিলেন সবচেয়ে মিতব্যয়ী (১০-০-৪৮-২)। পেসার তাসকিনও ছিলেন সফল (২/৫২)। আগের ম্যাচের ফাইফার বাঁ হাতি স্পিনার তানভির এদিন মার খেয়েছেন (৬-০-৪১-১)। তবে অকেশনাল স্পিনার শামীম পাটোয়ারী সিক্সথ বোলারের অভাব ঠিকই পূরণ করেছেন (৪-০-৩০-১)।
তবে যে পিচে প্রথম ইনিংসে লঙ্কান অধিনায়ক আসালাঙ্কা, টপ অর্ডার কুশল মেন্ডিজের ব্যাটে ফুলকি উঠেছে, সেই পিচই বাংলাদেশের ইনিংসে দেখিয়েছে উল্টা চরিত্র। স্পিনারদের বল কখনো থেমে, কখনো অপ্রত্যাশিত লো বাউন্স করে বাংলাদেশ ব্যাটারদের কাজটা কঠিন করে দিয়েছে। ইনিংসের মাঝপথে বাঁ হাতি স্পিনার ওয়েল্লালাগে (২/৩৩), লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গার (২/৩৩) বল স্বাভাবিকভাবে খেলতে পারেনি বাংলাদেশের মিডল এবং লোয়ার অর্ডাররা। পুরো ইনিংসে পার্টনারশিপ বলতে দুটি-৪২ ও ৪৩ রানের!
বাংলাদেশের ইনিংসে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছেন লঙ্কান পেসার আসিথা। তার ইনসুইংয়ে বোল্ড তানজিদ হাসান তামিম (১৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৭)। আর এক পেসার চামিরার বলে প্লেড অন শান্ত (৩ বলে ০)। ৪২ রানের জুটিটা লম্বা করতে পারেননি পারভেজ ইমন। ওয়েল্লালাগেকে সুইপ করতে যেয়ে ফাইন লেগে দিয়েছেন ক্যাচ (৪৪ বলে ৪ বা্উন্ডারিতে ২৮)। অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলবেন বলে পন করেও দলের উপকারে আসতে পারেননি মিরাজ। ওয়েল্লালাগেকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে লং অনে দিয়েছেন ক্যাচ (২৫ বলে ৪ চার, ১ ছক্কায় ২৮)। শামীম পাটোয়ারিও ভরসা দিতে পারেননি। হাসারাঙ্গাকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে স্ট্যাম্পিংয়ে কাটা পড়েছেন (১৮ বলে ১ বাউন্ডারিতে ১২)।
টাইগারদের বিপক্ষে আসিথা ফার্নান্দর ৩ উইকেট শিকার
এক এন্ডে টিমমেটদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখেও হতোদ্যম হননি হৃদয়। তবে ফিফটি পূর্ন করে থেমেছেন তিনি। চামিরার অন এন্ড অফ পিচিং ডেলিভারিতে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে মিডল স্ট্যাম্প উড়ে গেছে তার (৭৮ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৫১)। শেষ স্পেলে সেই চামিরার ১৪৬ কিলোমিটার গতির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব (৮ বলে ৫)। হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্ঠা থেমেছে জাকের আলী অনিকের ২৭ রানের মাথায় এসে। আসিথার বলে ক্রস খেলতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড। এক ইনিংসে ৪টি বোল্ড! কৃতিত্ব যতোটা না লঙ্কান বোলারদের, তার চেয়ে ঢের বেশি অপরাধী বাংলাদেশ ব্যাটাররা। এমন এক ম্যাচে শ্রীলঙ্কার দুই পেসার আসিথা (৩/৩৩)-চামিরা (৩/৫১) দিয়েছেন টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান। তবে ব্যবধানটা গড়ে দিয়েছেন কুশল মেন্ডিজের সেঞ্চুরি।
উইকেটে বোলারদের জন্য সহায়তা কিছু ছিল বটে, তবে সেটা আহামরি কিছু যে নয়, তা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন কুসাল মেন্দিস। তার দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কা তিনশ’র কাছাকাছি টার্গেট দেওয়ার পরও তাই আশা ছিল বাংলাদেশ শিবিরে। তবে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আবারও ভেঙে পড়ল ব্যাটিং অর্ডার। এক তাওহীদ হৃদয় যা কিছুটা লড়লেন, যা কেবল হতাশাই বাড়াল। বিশাল পরাজয়ে টেস্টের পর ওয়ানডে সিরিজেও হারল বাংলাদেশ।
পাল্লেকেল্লেতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কা জিতেছে ৯৯ রানে। স্বাগতিকদের ৭ উইকেটে ২৮৫ রানের জবাবে বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ৩৯.৪ ওভারে ১৮৬ রানেই। শ্রীলঙ্কা সিরিজ জিতল ২-১ ব্যবধানে। এর আগে টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল লঙ্কানরা।
কন্ডিশন বিবেচনায় এই রান তাড়া করাটা মোটেও সহজ হওয়ার ছিল না। বাংলাদেশকে তাই শুরু থেকেই রান তুলতে হত দ্রুত। সেই আভাস ছিল তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটে, তবে পারেননি ইনিংস বড় করতে। আসিথা ফার্নান্দোর বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১৩ বলে তিনটি চারের মারে করেন ১৭ রান।
প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্তর কাছ থেকে একটা দায়িত্বশীল ইনিংসের আশায় ছিল বাংলাদেশ। তবে আরও একবার দলকে হতাশ করেন এই সিরিজের আগে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া এই ব্যাটার। দুশমান্থ চামিরার বলে লাইন মিস করে বোল্ড হন রানের খাতা খোলার আগেই।
২০ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ। তাতে রান হয় বটে, তবে কমে যায় রানের গতি। ফলে ক্রমেই জয়ের জন্য ওভার প্রতি রানের লক্ষ্য যায় বেড়ে, যা চাপ তৈরি করে দুই ব্যাটারের ওপর। দারুণ কিছু শট খেললেও তাই ডট বলের চাপে পড়ে যান ইমন, যা সরাতে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ৩৩ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে।
এরপর তাওহীদ ও মিরাজের ব্যাটে কিছুটা গতি ফেরে বাংলাদেশের ইনিংসে। চতুর্থ উইকেটে দুজন মিলে ৩৯ বলে গড়েন ৪০ রানের জুটি। তবে সেটাও যথেষ্ট ছিল না। দুনিথ ওয়েলালাগের বলে ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টায় লং অফে ক্যাচ দিয়ে থামে বাংলাদেশ অধিনায়কের ইনিংস। ৪ চার ও এক ছক্কায় মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান।
২৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে মাত্র ১২১ রান। তাওহীদ একপ্রান্ত আগলে রাখলেও বড় জুটি না হওয়ায় চাপ প্রতি ওভারেই বেড়ে যায়। আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দিয়ে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে স্টাম্পড হন শামীম (১২ রান)।
আগের ম্যাচে লড়িয়ে ফিফটি রানের ইনিংস খেলা তাওহীদ ধীরলয়ে তুলে নেন আরেকটি অর্ধশতক। ৭৫ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় পা রাখেন ক্যারিয়ারের নবম ফিফটিতে। তবে আরও একবার ব্যর্থ হন ইনিংস লম্বা করতে। বোল্ড করে দেন চামিরা। এর আগে তরুন এই ব্যাটার ৭৮ বলে করেন ৫১ রান।
বাংলাদেশের জয়ের আশাও সেখানেই শেষ হয়ে যায়। জাকের আলি অনিককে একপ্রান্তে রেখে এক ডিজিটে সাজঘরের পথ ধরেন তানজিম হাসান সাকিব ও তাসকিন আহমেদ। কিছু বড় শট খেলে জাকেরের ২৭ রানের ইনিংসের ইতি ঘটে আসিথার বলে বোল্ড হয়ে। এরপর বাকি ছিল কেবলই আনুষ্ঠানিকতার।
এর আগে দিনের শুরুতে এক পরিবর্তন নিয়ে নিয়ে নামা বাংলাদেশ টস হেরে আগে বোলিং পায়। আর সেটা দারুণভাবেই কাজে লাগান তানজিম। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে নিশান মাদুশকাকে ফিরিয়ে শুরুতেই শ্রীলঙ্কাকে ধাক্কা দেন এই ডানহাতি পেসার। অফ স্টাম্পের বাইরের বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে।
প্রেমাদাসার উইকেট অনেকটা মিরপুরের মতো, রান করতে হয় কষ্ট করে। তবে পাল্লেকেলের উইকেটের বৈশিষ্ট্য একটু আলাদা। উইকেটে বল পড়ে ব্যাটে ঠিকঠাক মতো এসেছে। এমন সুবিধাজনক ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি পিচ পেয়ে কুশল মেন্ডিসের ব্যাট উঠেছে জ্বলে। তার সেঞ্চুরিতে (১১৪ বলে ১৮ বাউন্ডারিতে ১২৪) ভর করে ২৮৫/৭ স্কোর করেছে শ্রীলঙ্কা।
ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ স্পিনারদের সাপুড়ে নৃত্য দেখে ভয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। হয়তবা সে কারণেই স্লো উইকেট প্রস্তুত করার আইডিয়া থেকে বের হন পাল্লেকেলের কিউরেটর। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫০ ওভারের ম্যাচে রেকর্ডটা দারুণ কুশল মেন্ডিস-আসালাঙ্কার। দু'টি সেঞ্চুরি আছে আশালাঙ্কার , কুশল মেন্ডিসের ১টি। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ম্যাচ উইনিং সেঞ্চুরির তরতাজা স্মৃতি নিয়ে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে নেমেছেন অধিনায়ক আশালাঙ্কা। ২০১৭ সালে ডাম্বুলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে কুশল মেন্ডিসের সেঞ্চুরির অতীত সুখস্মৃতি তো আছেই, চলমান সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি থেকেও নিয়েছেন টনিক। চতুর্থ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশ বোলারদের কাঁদিয়ে ছেড়েছে এই জুটি। ১১৭ বলে যোগ করেছে তারা ১২৪ রান।
গত বছর ডাম্বুলায় নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের সর্বোচ্চ ১৪৫ রানের ইনিংস ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ডের নেশায় বিভোর কুশল মেন্ডিস এদিন শুরু থেকে করেছেন ইতিবাচক ব্যাটিং। তানজিম হাসান সাকিবকে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগ দিয়ে বাউন্ডারির চুমোয় ইনিংস শুরু করে ৫৮ বলে ফিফটি এবং ৯৫ বলে ওডিআই ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন কুশল। দ্বিতীয় ফিফটিতে লেগেছে তার মাত্র ৩৭টি বল। ৯০'র ঘরে এসে রানের জন্য ধুঁকতে হয়নি তাকে। শেষ ১০ রান নিতে লেগেছে তার মাত্র ৬টি বল। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি ইনিংসকে টেনে নিয়েছেন ১২৪ পর্যন্ত। ওডিআই ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসে ১০৮.৭৭ স্ট্রাইক রেটে করেছেন রান। যে ইনিংসে মেরেছেন তিনি ১৮টি বাউন্ডারি। ব্রেক থ্রু দিয়েছেন অকেশনাল স্পিনার শামীম পাটোয়ারী। তার চতুর্থ ওভারে পুল করতে যেয়ে রিটার্ন ক্যাচে থেমেছেন কুশল মেন্ডিস। শেষ পাওয়ার প্লে'র প্রথম ওভারে আশালাঙ্কাকে (৬৮ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৫৮) থামিয়েছেন তাসকিন। তিনশ ছাড়িয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস ছিল যে ইনিংসে, সেই ইনিংসটা থেমেছে ২৮৫/৭-এ। শেষ পাওয়ার প্লে'র ৬০ বলে বাংলাদেশ বোলাররা ৬৩ রানের বেশি শ্রীলঙ্কার স্কোরশিটে যোগ করতে দেননি। ওই ১০ ওভারে শ্রীলঙ্কার ৪ উইকেট ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ বোলাররা।
মিরাজ এদিন ছিলেন সবচেয়ে মিতব্যয়ী (১০-০-৪৮-২)। পেসার তাসকিনও ছিলেন সফল (২/৫২)। আগের ম্যাচের ফাইফার বাঁ হাতি স্পিনার তানভির এদিন মার খেয়েছেন (৬-০-৪১-১)। তবে অকেশনাল স্পিনার শামীম পাটোয়ারী সিক্সথ বোলারের অভাব ঠিকই পূরণ করেছেন (৪-০-৩০-১)।
পাল্লেকেলেতে অতীত সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশ দলের। শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়টা সূচিত হয়েছে এই মাঠেই। ২০১৩ সালে ৩ উইকেটের জয় থেকে সিরিজ জয়ের টনিক নিয়ে শ্রীলঙ্কার ২৮৫/৭ স্কোরের চ্যালেঞ্জ নিতেই পারে বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ১৯ মাস আগে দিল্লীতে ২৮২ রান তাড়া করে ৫৩ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের ছবিটা এখন ব্যাটের চোখের সামনে ভেসে উঠলেই হয়।
কেশভ মহারাজের চোটে শেষ সময়ে এসে ভাগ্য খুলে গেল সাকিব আল হাসানের। আসছদ গ্লোবাল সুপার লিগে (জিএসএল) দক্ষিণ আফ্রিকা স্পিনারের বদলি হিসেবে বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডারকে দলে নিয়েছে দুবাই ক্যাপিটালস। ফলে প্রথমবারের মত এই টুর্নামেন্টে খেলতে যাচ্ছেন সাকিব।
রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সাকিবকে দলে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দুবাই।
“কেশভ মহারাজের জায়গায় একজন কিংবদন্তি অলরাউন্ডার আমাদের জিএসএলটি২০ অভিযানে যোগ দিয়েছেন। দলে স্বাগতম, সাকিব।”
দুবাইয়ের প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকা মহারাজ সম্প্রতি জিম্বাবুয়ের সাথে সিরিজের প্রথম টেস্টে চোট পান। এরপর ছিটকে যান পুরো সিরিজ থেকেই। এরপর সরে যেতে হয়েছে ১০ জুলাই থেকে শুরু হওয়া জিএসএল থেকেও। আর তার জায়গায় সাকিবকে নিয়ে একই সাথে বাঁহাতি স্পিন ও ব্যাটিংয়ের শক্তিও বাড়িয়ে নিয়েছে দুবাই।
আরও পড়ুন
তানভীরের ফাইফার, রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে টিকে রইল বাংলাদেশ |
![]() |
সাকিবের অবশ্য আগে থেকেই জিএসএলে খেলার একটা সম্ভাবনা ছিল। প্রায় এক বছর ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকায় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে তার নেই কোনো সমস্যা। গতবারের জিএসএল চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স তাকে দলে নিতে আগ্রহী ছিল বলেই জানিয়েছে। তবে নানা বাস্তবতায় তারা শেষ পর্যন্ত সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে নেয়নি তাদের দলে। এবার প্রতিপক্ষ শিবিরে থেকেই রংপুরের বিপক্ষে খেলবেন সাকিব।
সাকিব জাতীয় দলের হয়ে শেষবার খেলেন গত বছর, পাকিস্তানের সাথে টেস্ট সিরিজে। অবসর না নিলেও টেস্ট ও ওয়ানডেতে তিনি আপাতত নেই দলের বিবেচনায়। মাঝে বোলিং অ্যাকশনের ত্রুটির জন্য ছিলেন মাঠেরে বাইরে। এরপর ফেরেন গত মে মাসে, পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) দিয়ে।
এবার জিএসএলে খেলবেন দুবাইয়ের হয়ে, যাদের প্রথম ম্যাচ আগামী ১০ জুলাই। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে সাকিবদের প্রতিপক্ষ সেন্ট্রাল ডিসট্রিক্টস। আর রংপুরেরস সাথে ম্যাচ আগামী ১৬ জুলাই।
প্রথম ম্যাচে প্রায় একই স্কোর নিয়ে বিশাল জয় পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদয়ের সাথে তানজিম হাসান সাকিবের ক্যামিওতে আড়াইশ ছুঁইছুঁই স্কোর যখন পেল বাংলাদেশ, জয়ের আশা কিছুটা হলেও বেড়ে গেল। তবে কুসাল মেন্ডিসের ঝড়ো ফিফটিতে সফরকারীদের চাপে ফেলে দিল লঙ্কানরা। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলা তানভীর ইসলাম এলেন ত্রাতা হয়ে, পাঁচ উইকেট নিয়ে ধস নামালেন ব্যাটিং অর্ডারে। সেই চাপ সামলে একাই লড়লেন জানিথ লিয়ানাগে। তার দারুণ এক ফিফটিতে জয়ের খুব কাছাকাছিও গেলেও শেষ রক্ষা আর হলো না শ্রীলঙ্কার। সিরিজে সমতা টানল বাংলাদেশ।
কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিতেছে ১৬ রানে। টস জিতে আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ গুটিয়ে গিয়েছিল ২৪৮ রানে। রান তাড়ায় ৪৮.৫ ওভারে ২৩২ রানে থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে ওয়ানডেতে জয় খরা কাটল বাংলাদেশের। আর অধিনায়ক হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচেই জয়ের দেখা পেলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। আগামী ৮ জুলাই তার দল মাঠে নামবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে, সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে।
আরও পড়ুন
এক বছরের জন্য স্থগিত হয়ে গেল ভারতের বাংলাদেশ সফর |
![]() |
ব্যাট হাতে শেষের দিকে নেমে দারুণ এক ক্যামিও খেলা তানজিম দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশের এনে দেন সাফল্য। এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফেরেন ওপেনার পথুম নিশাঙ্কা। ব্যাটার রিভিউ নিলেও ‘আম্পায়ার্স কল’-এ বজায় থাকে আউটের সিদ্ধান্ত।
এরপর ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরে শ্রীলঙ্কা। নিশান মাদুশকাকে নিয়ে কুসল শুরু করেন আগ্রাসী ব্যাটিং, যা পাল্টা চাপে ফেলে দেয় বাংলাদেশকে। অষ্টম ওভারে বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামকে দুই চার ও এক ছক্কায় ওড়ান। এরপরের ওভারে ঝড় বয়ে যায় মুস্তাফিজুরের ওপর দিয়ে। বাঁহাতি এই পেসারকে টানা চারটি চার মেরে কুসল স্রেফ ২০ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। মাত্র ৩৫ বলে দ্বিতীয় উইকেটে হয় ৫০ রানের জুটি।
কুসল ও মাদুশকার ব্যাটে চড়ে এক পর্যায়ে শ্রীলঙ্কার স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৭৫। প্রথম ওভারে ১৭ রান দেওয়ার পরও তানভীরের ওপর আস্থা রাখেন মিরাজ, যার প্রতিদান তিনি দেন দুহাতে। আক্রমণে এসেই ফিরিয়ে দেন মাদুশকাকে (২৫ বলে ১৭), ভাঙেন ৬৯ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি।
এরপর বড় উইকেটটাও আসে বাঁহাতি এই স্পিনারের হাত ধরেই। বিপজ্জনক কুসলকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মাত্র ৩১ বলে ৫৬ রান করার পর। এই উইকেটে স্পিন ধরায় এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে আসা শামীম হোসেনকে আক্রমণে আনেন মিরাজ। আর পার্ট টাইম স্পিনে চমকে দেখান তিনি। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা যখন তিনি শিকার বানান, তখন লঙ্কানদের স্কোর ছিল ৪ উইকেটে মাত্র ৯৯।
পরের ওভারেই ফের উইকেট পেতে পারতেন শামীম। তবে কামিন্দু মেন্ডিসের ব্যাট ছুয়ে ক্যাচ উঠলেও তা গ্লাভসে জমাতে পারেননি জাকের আলী অনিক। বেশিক্ষণ অবশ্য টিকতে পারেননি। অন্যপ্রান্তে দারুণ বোলিং করা তানভীর খানিক বাদেই ৩৩ রান করা কামিন্দুকে ফিরিয়ে দেখা পান নিজের তৃতীয় শিকারের।
আরও পড়ুন
ইমন-তাওহীদের ফিফটির পর তানজিমের ক্যামিওতে লড়াকু পুঁজি বাংলাদেশের |
![]() |
এরপর আবারও আঘাত হানেন তানভীর। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাট-প্যাড হয়ে ক্যাচ তুলে দেন দুনিথ ভেলালাগে। এবার সহজ ক্যাচ নেন জাকের আলী। ১৩২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
সপ্তম উইকেটে ২৪ রান যোগ করে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন জানিথ লিয়ানাগে ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, যার ইতি টানেন মিরাজ। ওয়ানডেতে পাঁচ ম্যাচ পর উইকেটের দেখা পান ১৩ রান করা হাসারাঙ্গাকে ফিরিয়ে।
চাপ বজায় রেখে সুযোগ তৈরি করেছিলেন মুস্তাফিজুর। তবে ব্যাটে লেগে লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া লিয়ানাগের ক্যাচ ফেলে দেন জাকের আলি। সেই সময়ে তার রান ছিল ২৮।
নিজের স্পেলের শেষ ওভারে বাংলাদেশকে আরও একবার উল্লাসে ভাসান তানভীর। মাহেশ থিকসানাকে আউট করে পূর্ণ করেন ফাইফার। দুর্দান্ত বোলিং ফিগারে ইনিংস শেষ করেন তিনি ১০ ওভারে ২ মেডেন সহ ৩৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে।
তবে বাংলাদেশ শিবিরে ভীতি ছড়িয়ে শুরুতে জীবন পাওয়া লিয়ানাগে ম্যাচ হেলে দেন শ্রীলঙ্কার দিকে। তার একের পর এক বড় শটের সাথে যোগ হয় মিরাজদের ক্যাচ আর ফিল্ডিং মিসের মিছিল। তাতে বাড়তে থাকে রান, আর কমতে থাকে বাংলাদেশের জয়ের আশা।
ফিফটি পেরিয়ে লিয়ানাগে যখন ম্যাচ বাংলাদেশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবেন বলেই মনে হচ্ছিল, ঠিক সেই সময়েই মহাআকাঙ্ক্ষিত উইকেটটা এনে দেন মুস্তাফিজুর। আগের বলে ছক্কা হজমের পর রিটার্ন ক্যাচে লিয়ানাগেকে থামান ৭৮ রানে।
৪৯তম ওভারে আসিথার ক্যাচ নিজের বলে নিতে ব্যর্থ হন তানজিম। তবে পরের বলেই বোল্ড করেন দুসমান্থ চামিরাকে। বাংলাদেশ পায় রোমাঞ্চকর এক জয়।
এর আগে দিনের শুরুতে টস জিতে আগে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ। একাদশে শামীম ছাড়াও আসেন হাসান মাহমুদ। বাদ পড়েন লিটন দাস ও তাসকিন আহমেদ। শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। আগের ম্যাচে ফিফটি করা তানজিদ হাসান তামিম সাজঘরের পথ ধরেন এক ডিজিটেই।
তিনে নামা শান্ত সেট হয়েও পারেননি ইনিংস বড় করতে। তবে দারুণ গতিতে এগিয়ে যাওয়া ইমন এগিয়ে নেন বাংলাদেশের ইনিংস। তুলনায় তাওহীদ ছিলেন বেশ ধীরগতির। চল্লিশ থেকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মেরে ফিফটিতে পা রাখেন ইমন, যা তার ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক।
আরও পড়ুন
১ বছর পর টি-টোয়েন্টি দলে ফিরলেন সাইফউদ্দিন |
![]() |
তবে এরপর বেশিদূর যেতে পারেননি। থামেন ৬৭ রানে। প্রমোশন পেয়ে পাঁচে নামা মিরাজ দলকে হতাশ করেন আউট হন অল্পেও। ২৩ বলে ২২ রানের ইনিংসে সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন শামীম, তবে বড় শট হাঁকাতে গিয়ে ইতি ঘটে তার পথচলার।
জাকের আলী ও তাওহীদ মিলে এরপর কিছুটা ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন। দলকে দুইশ পার করে তাওহীদ দেখা পান ফিফটির। তবে তিনিও বেশিক্ষণ আর টিকতে পারেননি। ৯ উইকেটে ২১৮ থেকে ২৪৮ রান পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর টেনে নেওয়ার একক কৃতিত্ব কেবল তানজিমের। অপরাজিত থাকেন মাত্র ২১ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৩৩ রানে।
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৮ দিন আগে
১৮ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৮ দিন আগে