তিন ফরম্যাটেই পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও সদ্য শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজের দুটি ম্যাচে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। ভিন্ন ফরম্যাট দিয়ে খানিক বিরতি কাটিয়ে ফের জাতীয় দলে ফিরলেন তারকা ব্যাটার বাবর আজম, পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহ। তিনজনই আছেন নভেম্বর-ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়ের সাদা বলের সফরের স্কোয়াডে।
রোববার এই দুই সফরের জন্য আলাদা আলাদা দল দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। সবগুলো স্কোয়াডেই আছেন বাবর, শাহিন ও নাসিম। আগামী বছর ঘরের মাটিতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পাকিস্তান দুই সফরেই তিনটি করে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সদ্য শেষ হওয়া তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে একাদশে ছিলেন বাবর, শাহিন ও নাসিম। তবে সেই টেস্টে পাকিস্তানের হারের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্টের দল থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়। ওই দুই ম্যাচেই জেতে পাকিস্তান। এবার জাতীয় দলে ফিরলেও আসছে দুই সফরেই খেলা হচ্ছে না তাদের। তিন তারকা ক্রিকেটারকে অস্ট্রেলিয়া সফরের দলে রাখা হলেও জিম্বাবুয়ে সফরে কোনো ফরম্যাটেই রাখা হয়নি একজনকেও। পিসিবি রোটেশন স্ট্র্যাটেজির অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের সাদা বলের কোচ গ্যারি কার্স্টেন অস্ট্রেলিয়া সফরকে সামনে রেখে সরাসরি মেলবোর্নে স্কোয়াডের সাথে যোগ দেবেন।
অস্ট্রেলিয়া সফরের ওয়ানডে স্কোয়াড : আমির জামাল, আবদুল্লাহ শফিক, আরাফাত মিনহাস, বাবর আজম, ফয়সাল আকরাম, হারিস রউফ, হাসিবুল্লাহ, কামরান গুলাম, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ ইরফান খান, নাসিম শাহ, সাইম আইয়ুব, সালমান আলী আগা, শাহীন শাহ আফ্রিদি।
অস্ট্রেলিয়া সফরের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড : আরাফাত মিনহাস, বাবর আজম, হারিস রউফ, হাসিবুল্লাহ, জাহানদাদ খান, মোহাম্মদ আব্বাস আফ্রিদি, মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ ইরফান খান, নাসিম শাহ, ওমাইর বিন ইউসুফ, সাহেবজাদা ফারহান, সালমান আলী আগা, শাহীন শাহ আফ্রিদি, সুফিয়ান মকিম, উসমান খান।
জিম্বাবুয়ে সফরের ওয়ানডে স্কোয়াড :
আমির জামাল, আবদুল্লাহ শফিক, আবরার আহমেদ, আহমেদ দানিয়েল, ফয়সাল আকরাম, হারিস রউফ, হাসিবুল্লাহ, কামরান গুলাম, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ ইরফান খান, সাইম আইয়ুব, সালমান আলী আগা, শাহনওয়াজ দাহানি ও তৈয়ব তাহির।
জিম্বাবুয়ে সফরে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড :
আহমেদ দানিয়েল, আরাফাত মিনহাস, হারিস রউফ, হাসিবুল্লাহ, জাহানদাদ খান, মোহাম্মদ আব্বাস আফ্রিদি, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ ইরফান খান, ওমাইর বিন ইউসুফ, কাসিম আকরাম, সাহিবজাদা ফারহান, সালমান আলী আগা, সুফিয়ান মকিম, তৈয়ব তাহির ও উসমান খান।
পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই বাংলাদেশের মিডল অর্ডার সামলে আসছেন মুশফিকুর রহিম। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য ছয় নাম্বারেই ব্যাটিং করছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। অথচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে মুশফিক নামলেন সাত নাম্বারে। পরে জানা যায়, মূলত আঙুলের চোটের কারণেই দেরিতে ব্যাট করতে নেমেছিলেন মুশফিক।
আরও পড়ুন
মুশফিকের ৬ হাজার টেস্ট রানের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ |
প্রথম ম্যাচে উইকেট কিপিং করার সময়ই এই চোট পেয়েছিলেন মুশফিক। আঙুলে চিড় ধরায় পরের ওয়ানডেতে খেলা নিয়েও তৈরি হয়েছে শঙ্কা। জানা গেছে, এই মুহূর্তে তার আঙুলের যে অবস্থা তাতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুশফিকের না খেলার সম্ভাবনাই বেশি।
তবে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আজ বেশি কিছু পরীক্ষা করা হবে মুশফিকের আঙুলে। তখনই পরিষ্কার জানা যাবে কবে নাগাদ আবার ফিরতে পারবেন এই উইকেট কিপার ব্যাটার। সবকিছু ঠিক থাকলে হয়তো সিরিজের শেষ ম্যাচে আবার মাঠে নামতে পারবেন তিনি।
আরও পড়ুন
রেকর্ড গড়তে আর ৮১ রান দরকার মুশফিকের |
অন্য দিকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাজে ভাবে হারতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। মাত্র ১১ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ দল। ম্যাচ হারতে হয়েছে ৯২ রানে।
ফিল্ড সাজানো নিয়ে অধিনায়ক সাই হোপের সঙ্গে ঝামেলা বাধে পেসার আলজেরি জোসেফের। সেটা তর্কাতর্কি পর্যন্ত গড়িয়েছে। তাতে রেগেমেগে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বোলার আলজারি জোসেফ। ঐ ওভারটির প্রায় পুরোটাই দশজন নিয়ে ফিল্ডিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যদিও জোসেফ পরে মাঠে ফিরে আসেন। এমনই বিরল ঘটনা ঘটেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়-ইংল্যান্ড তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে। আর এই কাজের পরিণতি হিসেবে কোচ ড্যারেন স্যামির সমালোচনার শিকার হচ্ছেন জোসেফ।
ঘটনাটা্ ইংল্যান্ডের ইনিংসের চতুর্থ ওভারে, ঐ সময় বল করতে এসেছিলেন জোসেফ। অধিনায়ক শাই হোপকে ফিল্ডিং সাজানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন পেসার নিজেই। তিনি আসলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চলে একজন ফিল্ডার চেয়েছিলেন। কিন্তু অঞ্চল দিয়ে ইংরেজ ব্যাটার জর্ডান কক্স শট মারার পর অধিনায়কের উপরে রেগে যান জোসেফ। এরপর সেই ওভারেই কক্সকে আউট করেন তিনি। কক্সের গ্লাভসে বল লেগে জমা পড়ে উইকেটকিপার হোপের হাতেই। এসময় অধিনায়কের ওপর ক্ষিপ্ত জোসেফকে কিছু বলতেও দেখা যায়।
আরও পড়ুন
নিউজিল্যান্ড সফরে ইংল্যান্ড দলে ডাক পেলেন তরুণ অলরাউন্ডার |
কিন্তু মূল ঘটনা ঘটে এরপরই। ওভার শেষ হতে অধিনায়কের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। হোপ এবং বাকি ক্যারিবীয় ক্রিকেটারেরা বুঝতেই পারছিলেন না কী করবেন। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ফিল্ডার হিসাবে হেডেন ওয়ালশ জুনিয়রকে দ্রুত নামানোর চেষ্টা করা হয়। যদিও হেডেন মাঠে নামার আগে জোসেফ মাঠে ফিরে আসেন। ক্রিকেটের সাথে যায় না এমন আচরণ দেখে ক্ষুব্ধ ধারাভাষ্যকার মার্ক বাউচার বলেন, “মাঝেমাঝে মাঠে থাকাকালীন অধিনায়ক বা খেলোয়াড় হিসাবে আপনার রাগ হতেই পারে। তবে এ সব কাজ বন্ধ দরজার পিছনে করা উচিত। অধিনায়কের পরিকল্পনায় আস্থা রাখা উচিত।”
খেলা শেষে শাই হোপ অবশ্য আর মনে রাখেননি ম্যাচের মধ্যের সেই ঘটনা, ‘মন্তব্য করতে চাই না। খেলায় এমনটা হতেই পারে।’ তা সে হোপ বিষয়টাকে যতটা হালকা করেই দেখুন না কেন, গুরুত্ব আছে কোচ ড্যারেন স্যামির কাছে। এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘ক্রিকেট মাঠে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। আমরা সবাই বন্ধু হয়ে থাকব। আমি যে সংস্কৃতি তৈরির চেষ্টা করছি, সেখানে এটা মেনে নেওয়া যায় না’।
আরও পড়ুন
‘বাংলাদেশকে বলতে দিন, ইংল্যান্ডও অনেক কিছুই বলেছিল’, বললেন রোহিত |
ব্রেন্ডন কিং ও কেসি কার্টির জোড়া সেঞ্চুরিতে সহজ জয়ে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সেই আনন্দ খানিকটা মলিন হয়ে গেছে আলজেরি জোসেফ মেজাজ হারানোয়!