বড় জয় পেয়েছে ইন্টার মায়ামি। দলের জয়ে দারুণ অবদান রেখেছেন লিওনেল মেসি। হ্যাটট্রিক অ্যাসিস্ট করেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। তবে এই জয়ের পরও শিরোপা হাতছাড়া হলো হাভিয়ার মাসচেরানোর দলের।
মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) আজ নিউ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-১ গোলে জিতেছে মায়ামি। দলের চার গোলের তিনটিই আসে মেসির সহায়তায়। কিন্তু এই জয় ম্লান হয়ে যায় আরেক ম্যাচে নিউ ইয়র্ক সিটির বিপক্ষে ফিলাডেলফিয়ার ১-০ গোলের জয়ে। মৌসুমের সাপোর্টার্স শিল্ড ট্রফিও এই জয়ের সঙ্গে জিতে ফিলাডেলফিয়া।
ইস্টার্ন কনফারেনন্স থেকে ৩২ ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে মায়ামি। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে সিনসিন্নাতি। আর শীর্ষে থাকা ফিলাডেলফিয়ার সংগ্রহ ৬৬ পয়েন্ট। তাতে নিজেদের বাকি থাকা দু’টি ম্যাচে জয় পেলেও এক নম্বরে থাকা ফিলাডেলফিয়াকে টপকাতে পারবে না মেসির দল।
আরও পড়ুন
রেয়াল মাদ্রিদের জয়ে ফ্রান্সের বড় ধাক্কা |
![]() |
ঘরের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে মায়ামির আধিপত্য ছিল দেখার মতো। মায়ামির প্রথম তিনটি গোলই আসে মেসির সহায়তায়। চার গোলের দু’বার করে বল জালে পাঠিয়েছেন তাদেও আয়েন্দে ও জর্দি আলবা। ৩২ মিনিটে আলেন্দের গোলটি আসে মেসির রক্ষণচেরা দুর্দান্ত এক থ্রু পাস থেকে।
মায়ামির পরের গোলটি বার্সেলোনার সাবেক সতীর্থকে দিয়ে করান মেসি। আর্জেন্টাইন মহাতারকার বক্সের ভেতর পাস থেকে গোল করেন আলবা। বিরতির পর ৫৯ মিনিটে নিউ ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যবধান কমান টুরগেমেন।
এক মিনিট পর ফের জাদু দেখান মেসি। প্রায় মাঝমাঠ থেকে দারুণভাবে বল বাড়ান মেসি। সেই পাস ধরে দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধান ৩-১ করেন আয়েন্দে। এরপর ৬৩ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চতুর্থ গোল করেন আলবা।
চলতি মৌসুমে এমএলএসে এ নিয়ে ২৪ গোল এবং অ্যাসিস্ট ১৪টি অ্যাসিস্ট হলো মেসির। ২০২৩ সালে ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পর আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ফুটবলার ৮০ ম্যাচে ৯৭ গোলে অবদান রাখলেন।
No posts available.
৫ অক্টোবর ২০২৫, ৮:২০ পিএম
জাতীয় দলের ক্যাম্পে আগামীকাল যোগ দেবেন হামজা চৌধুরী, পরের দিন আসবেন শমিত সোম। এই দুইজনকে ছাড়াই ২৮জনকে নিয়ে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছিলেন হেড কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। তবে দলে চোটের হানায় এরই মধ্যে ক্যাম্প ছেড়েছেন উইঙ্গার মোহাম্মদ ইবরাহীম ও ফরোয়ার্ড সুমন রেজা।
রোববার কাবরেরা বলেন,
‘সুমন আর ইব্রাহিম দুজনই ভালো অবস্থায় এসেছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যেন ওরা সময়মতো চোট কাটিয়ে ওঠে, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং ক্লাবে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে- যেখানে তারা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে।’
গুরুতর নয় বলে তারিক কাজী, তপু বর্মণ ও আল আমিনরা এখনও আছেন ক্যাম্পেই। তাদেরকে নিয়ে অবশ্য দুশ্চিন্তা থাকছেই।
জাতীয় স্টেডিয়ামে আজকে অনুশীলনের আগে এই তিনজনকে নিয়ে স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘তারিক, তপু ও আল আমিনের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। তারিক আর আলামিন আজই অনুশীলনে ফিরবে, আশা করি তপুও খুব শিগগিরই ফিরবে।’ দল চোটজর্জর দেখেই কোচ কাবরেরা ২৯ সদস্যের স্কোয়াডে নতুন করে যুক্ত করেন মোহামেডানের ডিফেন্ডার জাহিদ হোসেন শান্তকে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় জাতীয় দলের ক্যাম্প। প্রথম দিন হোটেলে রিপোর্ট করেন ২০জন ফুটবলার। তাদের নিয়েই পরদিন থেকে জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরু করেন কাবরেরা। পরে মোহামেডানের আরও ৬ ফুটবলার যোগ দিলে ক্যাম্পের পূর্ণতা পায়।
শনিবার একদিন বিরতির পর রোববার থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় ধাপের অনুশীলন। নতুন করে দুজন ছিটকে গেলেও দলের প্রস্তুতি ভালো হচ্ছে বলে জানান কাবরেরা,
‘অনুশীলন খুব ভালো চলছে। ক্যাম্পের দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত দলের অগ্রগতিতে আমি খুবই খুশি ও ইতিবাচক। সব ঠিকঠাক চলছে আরও চারটি অনুশীলন সেশন বাকি আছে। বড় চ্যালেঞ্জের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়ার সময় এটা।’
মাঠের অনুশীলন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের উইঙ্গার রাকিব হোসেন। এএফসি এশিয়ান কাপের সর্বশেষ ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে গোল করেছিলেন তিনি। এবারও সুযোগ পেলে হংকংয়ের বিপক্ষে গোল করতে চান। রোববার সাংবাদিকদের বলেন,
‘অনুশীলন ভালো হচ্ছে। মাঠের বাইরে আমাদের যেমন ভিডিও সেশন ক্লাস হচ্ছে, মাঠে তেমনভাবে অনুশীলন হচ্ছে। সামনে হামজা ও শমিত আসছে। ওরা এলে দলগতভাবে অনুশীলন করতে পারব। তখন আরও ভালো কিছু হবে।’
হংকং, চায়নার বিপক্ষে আগামী ৯ অক্টোবর জাতীয় স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের খেলায় মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এরপর ১৪ অক্টোবর দুই দলের মধ্যকার ফিরতি ম্যাচটি হবে হংকংয়ের মাটিতে।
লেফট উইংয়ে খেলতে অভ্যস্ত। অ্যাটাকিং মিডফিল্ড, রাইট উইং কিংবা ফরোয়ার্ড পজিশনেও সমানতালে খেলতে পারেন। বয়স মাত্র ১৬। বলা হচ্ছে মেক্সিকান এক তরুণ প্রতিভার কথা। নাম গিলবার্তো মোরা।
চলতি অনূর্ধ্ব-২০ ফিফা বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে নজর কেড়েছেন মোরা। এর আগেই অবশ্য তাকে দলে ভেড়ানোর লড়াইয়ে নেমে পড়ে ইউরোপের জায়ান্ট সব ক্লাব। আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটির, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, আয়াক্সের মতো ক্লাবগুলো ছিল এ তালিকায়।
বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারদর্শী মোরার দিকে নজর ছিল রিয়াল মাদ্রিদেরও। এবার তাকে দলে ভেড়ানোর দৌঁড় যোগ দিয়েছে রিয়ালের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি বার্সেলোনাও। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মুন্ডো দিপোর্তিভো জানিয়েছে, মেক্সিকান ক্লাব তিজুয়ানাতে খেলা মোরাকে নিতে আগ্রহী কাতালান ক্লাবটিও।
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে মেক্সিকোর হয়ে এরই মধ্যে দুই ম্যাচে তিন গোল এবং একটি অ্যাসিস্ট করেছেন মোরা। সবশেষ আজ মরক্কোর বিপক্ষে আজ পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি আসে তার পা থেকে। এর আগে স্পেন অনূর্ধ্ব-২০ দলের বিপক্ষে ২-০ গোলের জেতার ম্যাচের দু’টি গোলই করেন মোরা। গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারানো ম্যাচের একমাত্র গোলের সহায়তা করেন তিনি।
জাতীয় দলের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্সের সঙ্গে ক্লাব ফুটবলেও ৪০টির বেশি ম্যাচ খেলেছেন মোরা। লিগা এমএক্সে তিজুয়ানার সিনিয়র দলের জার্সিতে ৮টি গোলের সঙ্গে চারটি অ্যাসিস্টও আছে বৈচিত্রময় এই ফুটবলারের।
অবশ্য ১৬ বছর বয়সী ফুটবলারকে দলে ভেড়াতে গত বছরই চেষ্টা চালায় বার্সা। স্প্যানিশ ক্লাবটি তাকে লা মাসিয়ায় প্রশিক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
ডানপায়ের খেলোয়াড় হলেও, স্বাচ্ছন্দ্যেই দুই পায়ের ব্যবহার করতে জানেন মোরা। মাঠে তার দূরদর্শী চিন্তাভাবনাও দেখার মতো।
মোরার এজেন্ট ব্রাজিলিয়ান রাফায়েলা পিমেন্টা এরই মধ্যে জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের গ্রীষ্মে ইউরোপিয়ান ফুটবলে পা রাখতে ‘প্রস্তুত’ এই বিস্ময় বালাক।
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকং, চায়নার বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে আগামীকাল ঢাকা আসছেন হামজা চৌধুরী। লন্ডন থেকে বিমানযোগে সকাল ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামবেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ তারকা। এরপর সরাসরি যোগ দেবেন টিম হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় দলের ম্যানেজার আমের খান।
সোমবার ঢাকায় এসেই বিকেলে অনুশীলনে নামবেন হামজা। আজ জাতীয় স্টেডিয়ামে দলের হেড কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কথাতে সেটিই বুঝা গেল, ‘হামজা কাল সকালেই আসছে। সব ঠিক থাকলে তিনটি অনুশীলন সেশন করবে আমাদের সঙ্গে।’ হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ আগামী ৯ অক্টোবর। সেক্ষেত্রে দলের অনুশীলন সেশনও বাকি আছে তিনটি।
নিজের ক্লাব লেস্টার সিটিতে হামজার ম্যাচ ছিল গতকাল শনিবার। সানসা সিটির বিপক্ষে ৩-১ গোলে জেতা ম্যাচে মাঠে নামা হয়নি বাংলাদেশী ডিফেন্ডারের। ওই ম্যাচ খেলেই তিনি রওনা দেন বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
কাল হামজা আসলেও কানাডার প্রবাসী শমিত সোমকে কাবরেরা পাবেন আগামী মঙ্গলবার থেকে। তাকে নিয়ে এদিন স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘শমিতের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু কঠিন। সে পরশু রাতে আসবে, শুধু ম্যাচের আগের দিনই অনুশীলন করতে পারবে।’ কানাডা প্রিমিয়ার লিগে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোর ৪টায় ম্যাচ আছে শমিতের ক্লাব কাভালরি এফসির। ওই ম্যাচ খেলেই তিনি রওনা দেবেন বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে।
পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়ামে হোম ম্যাচ খেলেই বাংলাদেশ দল রওনা দেবে হংকংয়ের উদ্দেশ্যে। দুই দলের মধ্যকার ফিরতি ম্যাচটি হবে হংকংয়ে, আগামী ১৪ অক্টোবর।
প্রথমবার দেশের বাইরের কোনো লিগে খেলছেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ভুটানের নারী ফুটবল লিগে সুযোগ পেয়ে পূরণ হলো বিদেশি লিগে খেলার স্বপ্নও। রয়েল থিম্পু কলেজ এফসির (আরটিসি) হয়ে মাঠে সময়টাও কাটছে স্বপ্নের মতো। সেখানে রীতিমতো ‘গোল মেশিন’ হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই স্ট্রাইকার। ভুটান লিগ, জাতীয় দলে শুরুর দিকের গল্প এবং এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনাসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ে আজ টি স্পোর্টসের সঙ্গে ভুটান থেকে কথা বলেছেন। মুঠোফোনে শামসুন্নাহারের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রুবেল রেহান।
টি-স্পোর্টস: ভুটান লিগে এবারই প্রথম, কেমন সময় কাটছে?
শামসুন্নাহার: হ্যাঁ, এবারই প্রথম। অনেক দিনের একটা ইচ্ছে ছিল দেশের বাইরের লিগে খেলা, সেটা পূরণ হলো। সব মিলিয়ে ভালো কাটছে, আলহামদুলিল্লাহ।
টি-স্পোর্টস: নিজের ইচ্ছে পূরণ হলো রয়েল থিম্পু কলেজ এফসির মাধ্যমে, ক্লাবটির সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট?
শামসুন্নাহার: আছে সব দিক থেকে ভালো। সুযোগ-সুবিধা সব ভালোই। এখানে আলাদা করে থাকি না। এটা একটা কলেজের ক্লাব। এখানে ছেলে-মেয়েদের আলাদা করে হোস্টেল আছে। তবে আমরা বাইরে একটা ফ্ল্যাটে থাকি। এখানে নিজেদের মতো করে থাকা যায়, চাইলে রান্না করেও খাওয়া যায়। একটা ইউনিটের মতো, পাঁচটা বেড, ওয়াশিং মেশিন, মানে সব কিছুই আছে, নিজেদের মতো আর কি।
টি-স্পোর্টস: আপনি তো বসুন্ধরা কিংসের হয়েও খেলেছেন, থিম্পুর সঙ্গে তুলনা করলে কোন ক্লাবেকে এগিয়ে রাখবেন?
শামসুন্নাহার: বসুন্ধরা কিংসে সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি, এই ক্লাবের (রয়েল থিম্পু কলেজ) চেয়ে, কারণ আমি দুই ক্লাবে খেলছি তো...। এ ছাড়া থিম্পুতে টাকা-পয়সাও কম, যেটা বসুন্ধরা কিংসে বেশি ছিল। পেশাদার দিক থেকে বসুন্ধরা কিংস এগিয়ে। আর এটা তো একটা কলেজের ক্লাব।
টি-স্পোর্টস: থিম্পুর হয়ে মাঠে নামলেই গোলের ফুলঝুরি, শুনেছি গোলের সংখ্যাই নাকি ভুলে গেছেন, এখন পর্যন্ত কত গোল করেছেন?
শামসুন্নাহার: একটু দেখে বলি, আমি লিখে রেখেছিলাম (হাসি)। গোল ২২টা, অ্যাসিস্ট ২৩টা। প্রথম ম্যাচের আর গতকালকে (শনিবার) ম্যাচে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হয়েছি। এর আগে কখনও এমন নোট করিনি। কিন্তু এবার সিভি বানাতে গিয়ে দেখলাম কোনো কিছু মনে নেই। বাংলাদেশ দলে কত গোল করছি, কম ম্যাচ খেলছি সেসব কিছুই মনে ছিল না। এবার এই লিগে প্রথমবার বলে লিখে রেখেছিলাম।
টি-স্পোর্টস: ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে তুলেছেন একাধিক ম্যাচে, পুরস্কারের টাকায় কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে?
শামসুন্নাহার: টাকা তো এখনও দেয়নি। কি করব জানি না। পেলে তহুরাকে খাওয়াবো (হাসি)!
টি-স্পোর্টস: তহুরাও ম্যাচসেরা হয়েছে, তাঁর পক্ষ থেকে কী আশ্বাস পেলেন!
শামসুন্নাহার: আসলে এভাবে তো হিসেব করে হয় না। বন্ধুদের মধ্যে এমন হিসেব চলে না। বাইরে খেতে গেলে কখনও সে বিল দেয়, আবার কখনো আমি দিই।
টি-স্পোর্টস: ভুটানের কোন ব্যাপারগুলো দেখে এখন পর্যন্ত আপনাকে মুগ্ধ করেছে?
শামসুন্নাহার: আমি তো তেমন একটা বাইরে যাই না। খেলা, প্রাকটিসের বাইরে আমি বাসাতেই থাকতে পছন্দ করি। তহুরাও তেমন একটা ঘুরতে যায় না। সত্যি কথা বলতে বাংলাদেশ থেকে যারাই ভুটানে আসছে সবাই ঘুরাঘুরি করছে, কিন্তু আমি আর তহুরা এতটা যাইনি কোথাও। কারণ ভালো লাগে না, আরটিসি কলেজের মধ্যেই অনেক সুন্দর। তবে ইচ্ছা আছে একদিন যাব।
টি-স্পোর্টস: ঋতুপর্ণা-মনিকারাও অন্য ক্লাবের হয়ে খেলছেন, সেখানে জাতীয় দলের সতীর্থদের সঙ্গে দেখা-আলাপ হয়?
শামসুন্নাহার: না সেভাবে কখনো যাওয়া হয়নি। তবে সবশেষ যেদিন ট্রান্সপোর্ট আর সিটির খেলার দিন ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলাম। পরে মারিয়া আপু তাদের ওখানে আমাদের নিয়ে গেছে। সেখানেও আমাদের মতো ভালো সুযোগ-সুবিধা। নিজেরা রান্না করেও খেতে পারে। অনেক দিন পর সেদিন বাংলা খাবার খেয়েছিলাম।
টি-স্পোর্টস: বাংলাদেশের হয়ে একসঙ্গে খেলেন, ভুটানে তচঁরা প্রতিপক্ষ, মধুর কোনো খুনসুটি আছে?
শামসুন্নাহার: ম্যাচে আমরা সবাই সবার সেরাটা দিই। এমনিতে খেলা শেষের পরে আমরা অনেক মজা করি। দুষ্টুমি করে বলি- আজকে আসিস তুই আমার সাইড দিয়া, ঠ্যাঙ ভাইঙা দিমু। আমি শামসুন্নাহারকে (সিনিয়র) দাদী ডাকি, ও আমাকে নাতি বলে। ম্যাচের আগে ওকে বলছিলাম আজকে তোর পাস দিয়ে খেলব একটু দেইখা, শুইনা খেলিস। এ রকম অনেক মজা হয়। তবে ওই দিন ম্যাচটা অনেক ফাইটিং ছিল।
টি-স্পোর্টস: বাইরে থেকে দেশের কোন জিনিসগুলো বেশি মিস করছেন?
শামসুন্নাহার: সত্যি বলতে দেশের খাবার মিস করি। এখানে কমিউনিকেশন একটা সমস্যা তো আছেই, ইংরেজিতে কথা বলতে হয়। আমি ইংরেজিতে ততটা সাবলীল না। তবে ম্যাচে কোনো সমস্যা হয় না।
টি-স্পোর্টস: জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া, তারপর বিদেশি লিগে খেলছেন, কখনও ভেবেছিলেন ক্যারিয়ারটা এত সমৃদ্ধ হবে?
শামসুন্নাহার: দেশের বাইরে খেলার স্বপ্নটা দেখা শুরু হয় জাতীয় দলে খেলার পর থেকে। দেশের বাইরে খেলার বিষয়টি তো জানতামই না, এমনকি জাতীয় দল কি সেটাও তো জানতাম না। মজায়-মজায় খেলাটা শুরু করি। পরে তো স্যারেরা বলতো, সাবিনা (খাতুন) অনেক ভালো খেলে, পরে খেলা দেখতে চাইতাম সাবিনা আপুর। জেএফএ কাপ খেলার পর আমরা দুজনের বিকেএসপিতে যাই। যদিও সেই বছর আমাকে আর ঋতুপর্ণাকে বাদ দিয়ে দেয় (হাসি), ছোট ছিলাম তো বেশি তাই। পরে ২০১৭ সালে বাফুফের ক্যাম্পে অনূর্ধ্ব-১৫ দলের জন্য সুযোগ পাই। তারপর থেকে কিছুটা বুঝতে পেরেছিলাম দেশের জন্য খেলা কি।
টি-স্পোর্টস: কতটা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ এখানে?
শামসুন্নাহার: শুরুতে খেলা নিয়ে সমস্যা হতো না। প্রাইমারি লেভেলের পর যখন জেলাভিত্তিক খেলতাম, অনেক দূরে খেলতে যেতাম, তখন অনেক সময় খেলতে যেতে দিতে চাইতো না বাসা থেকে। খেলা নিয়ে কত মিথ্যা কথা বলেছি, লুকিয়ে লুকিয়ে খেলতে গিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা, ধোবাউড়া জেলায়। এমনও আছে বলছি, স্কুলে যাই, পরে রাস্তার পাশে ব্যাগ রেখে অনুশীলনে যেতাম। এই খেলার জন্য মার খেয়েছি হিসেব নেই।
টি-স্পোর্টস: পরিবারের শাসন আর নিজের চেষ্টা সব মিলিয়ে স্বার্থক?
শামসুন্নাহার: তখন যদি পিছিয়ে যেতাম বা মার খেয়ে খেলা ছেড়ে দিতাম, তাহলে এখানে আজ আসতে পারতাম না। মার খেয়েছি, খেলছি... আসলে ফুটবলের জন্য একটা ভালো লাগা ছিল তাই এসব কিছু মনে হতো না।
টি-স্পোর্টস: ফুটবলার না হলে, অন্য কোন পেশা বেছে নিতেন?
শামসুন্নাহার: ফুটবলার না হলে আসলে জানি না কি হতাম। ফুটবল শুরুই তো করছিলাম ক্লাস-থ্রি থেকে। ওই সময় তো আর কি হবো অতদূর ভাবার বয়স হয়নি। তারপর ধীরে ধীরে ফুটবলের মধ্যেই ডুবে গেলাম। আর কিছু নিয়ে ভাবার সময় হয়নি।
টি-স্পোর্টস: দলে আপনার প্রিয় বন্ধু কে?
শামসুন্নাহার: প্রিয় বন্ধু বলতে ওই রকম কেউ-ই নেই। আমরা যারা ময়মনসিংহের আছি সবাই এক হয়ে থাকি। এটা তহুরা কিংবা আরও যারা আছে তারাও এভাবেই চিন্তা করে।
টি-স্পোর্টস: এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কতটুকু দেখেন?
শামসুন্নাহার: চেষ্টা করব কম্পিটিটিভ ম্যাচ খেলতে। গ্রুপের অন্য দলগুলো অনেক ভালো টিম, তারা নিয়মিতই এশিয়ান কাপ, বিশ্বকাপও খেলে, তাদের বিপক্ষে খেলাটাও তো আমাদের জন্য অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। তারপরও মাঠে যখন নামবো চেষ্টা করব দেশের জন্য সর্বোচ্চটা উজাড় করে দিতে।
টি-স্পোর্টস: ফুটবলে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শামসুন্নাহার: কি বলব... ইচ্ছে তো আছে- অনেক স্বপ্নও আছে। সামনে অনেক সুযোগ আছে, কষ্ট করি, দেখা যাক কোথায যেতে পারি। জাতীয় দলের জন্য, দেশের জন্য অনেক কিছু করতে চাই। যেন মানুষ মনে রাখে শামসুন্নাহার জুনিয়র নামে কেউ একজন ছিল।
লামিন ইয়ামাল তাঁর আইকনিক গোল-সেলিব্রেশনকে ট্রেডমার্ক হিসেবে নিবন্ধন করেছেন। এই গ্রীষ্মে তিনি ‘৩০৪’ নামে সেলিব্রেশনটি নিবন্ধন করেন, যা কাতালানে তাঁর নিজ শহরকে রোকাফোন্ডাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। ট্রেডমার্কটি পোশাক থেকে শুরু করে ক্রীড়া সামগ্রীসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্যিক পণ্যসমূহে ব্যবহারের জন্য সুরক্ষিত থাকবে।
ইয়ামাল ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইনটেলেকচুয়েল প্রোপার্টির (ইইউআইপিও) দপ্তরে সাতটি কমিউনিটি ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করেছেন, যেগুলো ২০৩৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এর মধ্যে দুটি তাঁর নিজের নাম ব্যবহার করে, আর বাকি পাঁচটি ‘৩০৪’ সংখ্যা কেন্দ্রিক—যা তাঁর এলাকার (স্পেনের মাতারোর রোকাফোন্ডা) পোস্টাল কোডের শেষ তিন অঙ্ক।
আরও পড়ুন
প্রীতি ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনা দলে দুঃসংবাদ |
![]() |
ইয়ামাল ও তাঁর ব্যবহৃত গ্রাফিক প্রতীক ছাড়াও, আরও কিছু ট্রেডমার্ক করেছেন— এলওয়াই৩০৪, ৩০৪ এবং ৩০৪ এফসি। পাশাপাশি তিনি আরও দুটি ভিজ্যুয়াল ট্রেডমার্ক করেছেন, যেখানে আঙুল দিয়ে ‘৩-০-৪’ সংখ্যা বানানোর ভঙ্গি ফুটে ওঠে।
সেলিব্রেশন ভঙ্গিতে ইয়ামাল হাত ক্রস করে দাঁড়ান। বাম হাতে কনিষ্ঠা, অনামিকা ও মধ্যমা আঙুল বাড়িয়ে ‘৩’ বোঝান, তর্জনী ও বুড়ো আঙুল দিয়ে বৃত্ত বানিয়ে ‘০’, আর ডান হাতে বৃদ্ধা আঙুল ভাঁজ করে বাকি আঙুল বাড়িয়ে ‘৪’। এই উদযাপনে ১৮ বছর বয়সী তারকা ফুটবলার তুলে ধরেন তাঁর বেড়ে ওঠা শ্রমজীবী, বহুসাংস্কৃতিক ও সাধারণ এলাকার প্রতি টান এবং গর্ব।
২০২৪ সালের মে মাসে প্রথম দফায় পোশাক, ক্রীড়া সামগ্রী, ক্যাপ, জ্যাকেট, স্পোর্টস জুতা ও অন্তর্বাসের জন্য তাঁর নামে ট্রেডমার্ক নিবন্ধিত হয়। অল্প সময়ের মধ্যে- এলওয়াই৩০৪, ৩০৪ ও ৩০৪ এফসিকেও অন্য পণ্যের জন্য সুরক্ষা দেওয়া হয়।
এখন তরুণ স্প্যানিশ তারকার অনুমতি ছাড়া যেসব পণ্য বাণিজ্যিকভাবে এসব উদযাপন ব্যবহার করা যাবে না, তার মধ্যে আছে—ফুটবল, গ্লাভস, পুতুল, চশমা, হেলমেট, ঘড়ি, হেডফোন, ব্যাকপ্যাক, ওজন তোলার সরঞ্জাম, এমনকি ইলেকট্রনিক গেমসও।
সম্প্রতি ইয়ামাল হাতের ভঙ্গি দিয়ে বানানো ‘৩০৪’ লোগোকেও সুরক্ষার আওতায় এনেছেন। এই সুরক্ষা শুধু পণ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং শিক্ষা, বিনোদন, ক্রীড়া কার্যক্রম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সঙ্গীত পরিবেশনা, প্রতিযোগিতা ও টুর্নামেন্ট আয়োজনেও প্রযোজ্য হবে।
নিজের প্রতীকী ভঙ্গি ও নাম ট্রেডমার্ক করে ইয়ামাল এখন শুধু নিজের মালিকানার নিশ্চয়তা পেলেন, যাতে অন্য কেউ তাঁর ভাবমূর্তি বাণিজ্যিকভাবে অপব্যবহার করতে না পারে। প্রায় এক বছর আগে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যখন একজন পর্তুগিজ নারী ‘লামিন ইয়ামাল’ নামে পোশাক, বিজ্ঞাপন ও শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য ট্রেডমার্ক আবেদন করেছিলেন।
আরও পড়ুন
মেসির হ্যাটট্রিক অ্যাসিস্ট, তবু স্বপ্নভঙ্গ মায়ামির |
![]() |
তবে কোনো কারণ প্রকাশ না করেই সে আবেদন প্রত্যাহার করায়। খেলোয়াড়ের সঙ্গে সম্পর্কহীন হওয়ায় আবেদনটি ইইউআইপিও দপ্তর শেষ পর্যন্ত নাকচ করেছে। কিন্তু আপিল বা পর্যালোচনার আগেই তা বন্ধ হয়ে যায়।
ইইউআইপিও দপ্তরের সুরক্ষার কারণে ইয়ামাল তাঁর সব প্রতীক ও নামের মালিকানা নিশ্চিত করেছেন। এতে মাঠের বাইরেও, বাণিজ্যিক দুনিয়ায় নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলার সুযোগ পাবেন এই তরুণ তারকা।