২০ আগস্ট ২০২৫, ৬:৪০ এম

হামজা চৌধুরী, ফাহমিদুল ইসলাম, শমিত সোমদের পর আরেক প্রবাসী ফুটবলার নিয়ে এখন আলোচনা দেশের ফুটবল অঙ্গনে। ইংল্যান্ডের ক্লাব সান্ডারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে থাকতেই শুরু হয় তাকে নিয়ে আলোচনা। সবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেই কিউবা মিচেল নাম লেখান বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসে।
জায়ান্ট ক্লাবটির জার্সিতে অভিষেক এবং কাতার থেকে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্রিলিমিনারি ম্যাচ জিতে এই মিডফিল্ডার এখন বাংলাদেশে। কিউবা মিচেল এখন পুরোপুরি বাংলাদেশের। দেশে এসে টি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাঠ ও মাঠের বাইরের নানা কিছু নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন কিউবা।
টি-স্পোর্টস: এই প্রথম বাংলাদেশে এলেন, কেমন লাগছে এখানে?
কিউবা: ভালোই লাগছে। ভিন্ন অভিজ্ঞতা, ইংল্যান্ড থেকে অনেকটাই আলাদা। তবে আমি চেষ্টা করছি এখানকার সংস্কৃতি উপভোগ করতে। এখন পর্যন্ত বেশ ভালোই লাগছে।
টি-স্পোর্টস: আবহাওয়া কেমন লাগছে? খুব গরম আর আর্দ্র, তাই না? অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিংও নিশ্চয়ই…
কিউবা: না, আসলে ইংল্যান্ডে গ্রীষ্মে যে রকম গরম পড়ে, প্রায় একই রকম। মানিয়ে নিতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। তাছাড়া আমি তো কাতারে দলের সঙ্গে গিয়েছিলাম, সেখানে আরও বেশি গরম ছিল। ওটা আমাকে এই আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করেছে।

টি-স্পোর্টস: কাতার সফর শেষে এখন চারদিন হলো বাংলাদেশে আছেন। কোনো বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ নিয়েছেন?
কিউবা: হ্যাঁ খেয়েছি। ক্লাব (বসুন্ধরা কিংস) থেকে আমাকে অনেক রকম রান্না খাওয়ানো হয়েছে- মাছ, মুরগি। বেশ উপভোগ করেছি। আমার মা বাসায় প্রায়ই বাংলাদেশি খাবার রান্না করেন, তাই এটা আমার জন্য নতুন কিছু না। তবে এখানকার খাবারগুলো বেশ আলাদা করে ভালো লেগেছে আমার।
টি-স্পোর্টস: এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সেরা অভিজ্ঞতা কী?
কিউবা: প্রথম অনুশীলনের দিনটা। একাডেমির খেলোয়াড়রা অনুশীলন করছিল, ছবি তুলতে এসেছিল। এটা আমাকে ভীষণভাবে ছুঁয়ে গেছে। কারণ আমি নিজেও একসময় একাডেমির খেলোয়াড় ছিলাম। তাদের মধ্যে একজন আমাকে তার আদর্শ ও রোল মডেল হিসেবে দেখে বলেছিল, তো এটা ভালো লেগেছে।
টি-স্পোর্টস: জ্যামাইকার বদলে বাংলাদেশ কেন বেছে নিলেন? বাবার দিক থেকে তো আপনার জ্যামাইকার যোগসূত্র আছে।
কিউবা: আসলে যখন হামজা (চৌধুরি) বাংলাদেশ দলে যোগ দিল, তখন অনেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড় এটা নিয়ে ভাবতে শুরু করে। আমিও ছিলাম তাদের মতো একজন। তারপর যখন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং ভক্তদের কাছ থেকেও অসংখ্য বার্তা পাই, তখন ওদের ভালোবাসাটা আমাকে আলাদা করে ছুঁয়ে যায়। মনে হলো, ওদের কিছু একটা ফেরত দেওয়া উচিত। জাতীয় দলে খেলে এবং পারফর্ম করেই সেটা করতে পারব ভেবেছিলাম।
টি-স্পোর্টস: এই সিদ্ধান্তের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সবখানে নিজের নাম দেখে আপনার কেমন লেগেছিল?
কিউবা: পাগলাটে! একদম মাথা খারাপ করে দেওয়ার মতো ছিলো। এটা সত্যিই ভীষণ উচ্ছ্বাসের। এর আগে কখনও আমার এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। প্রথমবার এমন হলো।
টি-স্পোর্টস: আপনি বসুন্ধরা কিংসের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অনেকে বলেছে, আপনি আপনার লেভেল কমিয়ে ফেলছেন। তখন কী ভেবেছিলেন?
কিউবা: সান্ডারল্যান্ড ছাড়ার পর সময়টা কঠিন ছিল। ফ্রি এজেন্ট হয়ে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ছিল। ইংল্যান্ডের কয়েকটা ক্লাবে গিয়েছিলাম, কিন্তু কোথাও ঠিক মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। বসুন্ধরা কিংস যখন আমাকে তাদের পরিকল্পনার কথা বলল, একজন তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে তারা আমাকে কীভাবে ব্যবহার করবে, সেটা আমাকে ভীষণভাবে টেনেছিল। এটাই ছিল সিদ্ধান্তের মূল কারণ।
হ্যাঁ, অনেকেই ইতিবাচকভাবে নেয়নি (কিংসের সঙ্গে চুক্তি)। কিন্তু মানুষের সবকিছু তো সামনে আসে না। অনেক কিছু আছে যেগুলো মিডিয়ায় আসে না। আমার মনে হয় এটি তাদের বোঝা উচিত। স্পষ্টতই তারা আমার প্রতি যে সমর্থন এবং আবেগ দেখিয়েছেন তা ইতিবাচক ছিল, এমনকি এই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়টাতেও। আমি মনে করি একজন খেলোয়াড় হিসেবে এটি আমাকে উন্নতি করতে সাহায্য করবে, যদি তারা আমার পাশে থাকে।
টি-স্পোর্টস: ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আসার যাত্রাটা কেমন লাগছে?
কিউবা: ভাষার একটা সমস্যা আছে, কারণ মা বাসায় খুব একটা বাংলায় কথা বলতেন না। কয়েকজন সতীর্থ ছাড়া অনেকে ইংরেজি বলে না। তবে আস্তে আস্তে মানিয়ে নিচ্ছি। সংস্কৃতিও আলাদা, তবে আমি গ্রহণ করার চেষ্টা করছি।
টি-স্পোর্টস: বসুন্ধরা কিংসকে পেশাদার ক্লাব হিসেবে কেমন মনে হয়েছে?
কিউবা: দারুণ। আমি ভেবেছিলাম এখানে হয়তো সুযোগ-সুবিধা কম থাকবে, কিন্তু একেবারেই তা নয়। অনুশীলনের মাঠ, নিজস্ব স্পোর্টস কমপ্লেক্স- সবকিছু আন্তর্জাতিক মানের।
টি-স্পোর্টস: প্রথম জয়ে কেমন অনুভূতি হয়েছিল?
কিউবা: অসাধারণ! অভিষেক ম্যাচ, জয়, আর সমর্থকদের আনন্দ- সব মিলিয়ে এটা ছিল জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি।
টি-স্পোর্টস: বসুন্ধরা কিংস তো এখন এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলছে। আপনি কি ‘ম্যাজিক ম্যান’ হতে পারবেন?
কিউবা: আশা করি তাই হবো। আসলে এশিয়ান টুর্নামেন্টগুলোতেও খেলার সুযোগ পাবো ভেবে এই দলে যোগ দিয়েছি। দলকে এগিয়ে নিতে চাই, জেতাতে চাই।
টি-স্পোর্টস: আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য কী?
কিউবা: এ মৌসুমে লিগ জেতা আর এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে যতদূর সম্ভব এগোনোই মূল লক্ষ্য।

টি-স্পোর্টস: ক’দিন আগে কিংসে আপনার সতীর্থ রাকিব হোসেন বলেছেন কিউবা অনেক ভালো খেলোয়াড় এবং ভালো মানুষ। সতীর্থের কাছ থেকে এমন প্রশংসা পেয়ে কেমন লাগছে?
কিউবা: এটা আমাকে ভালো একটা অনুভূতি দিচ্ছে। অবশ্যই এমনটাই আমি। আমি চাই সবাই এটা জানুক। ফুটবলে আমি যেখানেই যাই, যত নাম বা খ্যাতিই আসুক না কেন, সবসময় স্বাভাবিক আর ভালো মানুষ হিসেবেই থাকতে চাই। তাই হ্যাঁ, ওর (রাকিব) ক্ষেত্রেও একই কথা বলব, আসলে পুরো টিমের খেলোয়াড়দের নিয়েই তাই মনে হয়। তো, এটা আসলেই দারুণ একটা ব্যাপার ছিল। জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
টি-স্পোর্টস: আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
কিউবা: কোনো নির্দিষ্ট ক্লাবের কথা বলতে পারছি না। তবে আমি উন্নতি করতে চাই, থেমে থাকতে চাই না। জাতীয় দল হোক বা ক্লাব- যতটা উচ্চ পর্যায়ে খেলা যায়, খেলতে চাই।
টি-স্পোর্টস: জাতীয় দল নিয়ে স্বপ্ন কী?
কিউবা: বিশ্বকাপে খেলা। কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। আমাদের দলটা গড়ে উঠছে, একসঙ্গে থাকলে সব সম্ভব।
টি-স্পোর্টস: ভক্তদের জন্য কোনো বার্তা দেবেন?
কিউবা: আপনাদের সমর্থন আর ভালোবাসা বিশেষ কিছু। আমি চাই এটা যেন সবসময় থাকে।
No posts available.
২৮ নভেম্বর ২০২৫, ৬:১২ পিএম
২৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪:২২ পিএম

এভারটনের বিপক্ষে হারের পর টটেনহ্যাম হটস্পার ও নটিংহ্যাম ফরেস্টের সঙ্গে ড্র করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ২০২৫–২৬ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই রেড ডেভিলসরা। ১২ ম্যাচে ৫ জয়ের বিপরীতে ৩ ড্র ও ৪ হার তাদের। পয়েন্ট টেবিলে দশম স্থানে আছে ম্যান ইউনাইটেড।
ম্যান ইউনাইটেডের দুর্দশার জন্য কোচ রুবেন আমোরিমের ফরমেশন ও ট্যাকটিকসকে দায়ী করেছেন অনেকেই। তবে নিজের প্রতি অবিচল বিশ্বাস তাঁর। ইতোমধ্যে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা অনুরোধ করলেও নিজের ট্যাকটিকস ও ফরমেশন পরিবর্তন করবেন না তিনি।
নিজের ট্যাকটিকসে দৃঢ় থাকলেও দলের শক্তিবৃদ্ধিতে মোটেও কার্পণ্য করছেন না আমোরিম। ২০২৫–২৬ মৌসুমে বেনিয়ামিন সেসকো, ব্রায়ান এমবেউমোও ম্যাথিউস কুনহার মতো তারকাদের দলে ভিড়িয়েছে ইউনাইটেড। এবার আরও একটি উদ্যোগ নিয়েছে আমোরিম।
আমোরিমের পছন্দের এক তরুণকে দলে টেনেছে ম্যান ইউনাইটেড। কলম্বিয়ার ইয়ং স্টার ক্রিস্টিয়ান ওরোজকোর সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করেছে ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাব।
১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানকে ভেড়ানোর মূল উদ্দেশ্য—এই মৌসুম শেষে ম্যান ইউনাইটেডের হয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন ক্যাসেমিরো। অর্থাৎ ব্রাজিল মিডফিল্ডারের শূন্যস্থান পূরণের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি রেড ডেভিলস কর্তৃপক্ষ।
জানানো হয়েছে, ক্রিস্টিয়ানকে দলে নিতে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করতে হয়েছে ম্যান ইউনাইটেডকে। দলের সঙ্গে থাকলেও বয়স কম থাকায় খেলার সুযোগ থাকছে না ওরোজকোর। ২০২৬ সাল থেকে দলের সঙ্গে যুক্ত হবেন তিনি, তখন তার বয়স হবে ১৮ বছর।
বর্তমানে কলম্বিয়ান ক্লাব ফোর্টালেসা সিইআইএফে খেলছেন ওরোজকো। সেখানে অল্প সময়েই বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। দারুণ ড্রিবলিং ও গতির জন্য ১৭ বছর বয়সী এই তরুণ ইতোমধ্যে ব্যাপক আলোচনায়।

ড্র দিয়ে শুরু, পরের দুই ম্যাচে হার; সবশেষটা আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে। বাংলাদেশ ফুটবল লিগে হতাশার বৃত্তেই আটকে ছিল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। অবশেষে চতুর্থ ম্যাচে কাঙ্ক্ষিত জয় পেল আকাশি-নীলরা। একই দিনে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে হারিয়েছে ফর্টিস এফসি।
শুক্রবার কুমিল্লার ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আবাহনী ২-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ এফসিকে। ম্যাচে অবশ্য ১০ জনের দলে পরিণত হয়েছিল আকাশি-নীলরা।
ম্যাচে দুটি গোল আসে প্রথমার্ধে। ২৫ মিনিটে স্পট-কিক থেকে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন সুলেমান দিয়াবাতে। ডি-বক্সে পড়ে গিয়ে পেনাল্টিটা অবশ্য তিনিই আদায় করে নেন।
এদিন একাদশে দুটি পরিবর্তন আনেন আবাহনী কোচ মারুফুল হক। ইব্রাহিম হোসেনের জায়গায় পাপন সিংহ ও ব্রুনো মাতোসের জায়গায় এনামুল ইসলাম গাজীকে মাঠে নামান তিনি।
৪৩ মিনিটে গাজীর পা থেকেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে আবাহনী। শেখ মোরসালিনের বাঁকানো ফ্রি-কিক থেকে অসাধারণ এক ভলিতে বল জালে জড়ান এই মিডফিল্ডার।
বিরতির পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে পুলিশ। আবাহনীর রক্ষণ আর ভাঙতে পারেননি তারা। ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার পর যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আবাহনীর আলমগীর মোল্লা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। যদিও তা কোনো প্রভাব ফেলেনি আবাহনীর জয়ে। ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ছয়ে উঠে এসেছে তারা। এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে পাঁচে পুলিশ।
মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ–তপন স্টেডিয়ামে ফর্টিসও জয়সূচক গোলটি পায় প্রথমার্ধে। ১৬ মিনিটে পা ওমর বাবুর ফ্রি-কিকে জটলার মধ্য থেকে পা ছুঁইয়ে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান রিয়াজ উদ্দিন সাগর।
দ্বিতীয়ার্ধে আবাহনীর মতো ১০ জনের দলে পরিণত হয় ফর্টিস। ম্যাচের ৭৪ মিনিটে আরামবাগের শহীদুল ইসলামের মুখে কনুই দিয়ে আঘাত করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন আতিকুর রহমান ফাহাদ। কিন্তু এক জন বেশি নিয়ে খেলেও আরামবাগ পারেনি আর ম্যাচে ফিরতে।
৪ ম্যাচে জয়হীন থেকে ১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের নয়ে আছে তারা। জয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ফর্টিস উঠে এসেছে টেবিলের তিনে। কাল ফুটবল লিগে রয়েছে তিনটি ম্যাচ। শীর্ষস্থান দখলের লড়াইয়ে রহমতগঞ্জের মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা কিংস। ৭ পয়েন্ট নিয়ে দুই দলই যৌথভাবে রয়েছে শীর্ষে।

রোসারিও সেন্ট্রালের বিপক্ষে ম্যাচের শুরুর আগে এস্তুদিয়ান্তেস খেলোয়াড়দের প্রতিবাদী আচরণের জের ধরে কঠোর শাস্তি দিয়েছে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)। এএফএ সভাপতি চিকি তাপিয়ার নেতৃত্বে নেওয়া সিদ্ধান্তে দলের ১১ জন শুরুর একাদশের সবাই দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন।
রোসারিও সেন্ট্রালের দলকে দেওয়া সম্মানসূচক ‘পাসিলো’ বা গার্ড অব অনারে মুখ ফিরিয়ে দাঁড়ান এস্তুদিয়ান্তেসের খেলোয়াড়েরা। এই ঘটনার পরই শাস্তির সিদ্ধান্ত আসে। নিষেধাজ্ঞা আগামী টুর্নামেন্ট থেকেই কার্যকর হবে। দলের অধিনায়ক সান্তিয়াগো নুনিয়েসকে তিন মাস মাঠে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হবে না।
শাস্তি পাওয়া অন্য খেলোয়াড়েরা হলেন—মুসলেরা, গোমেজ, পালাসিওস, ফারিয়াস, গনসালেস পিরেজ, আরজামেন্দিয়া, সেত্রে, পিওভি, মেডিনা ও আমোন্দারাইন।
এস্তুদিয়ান্তেসের সাবেক তারকা খেলোয়াড় ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরনকে ছয় মাসের জন্য সব ধরনের ক্রীড়া–সম্পর্কিত কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চিকি তাপিয়া পরিচালিত এএফএর কট্টর সমালোচক ভেরন আগেই এই ট্রফি–বিতর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
রোসারিও সেন্ট্রাল অ্যাপারচুরা ও ক্লসুরা টুর্নামেন্টের বাছাইপর্ব মিলিয়ে সেরা রেকর্ড গড়ায় এএফএ তাদের জন্য বিশেষ এক ‘লিগ চ্যাম্পিয়ন’ ট্রফি ঘোষণা করে। এস্তুদিয়ান্তেস এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে দাবি করে এবং প্রতিবাদ হিসেবে খেলোয়াড়েরা ম্যাচের আগে গার্ড অব অনারে মুখ ফিরিয়ে দাঁড়ান।
বিতর্কের পর মাঠে তারা আরও বড় জবাব দেয়— ক্লসুরার শেষ ষোলোয় রোসারিও সেন্ট্রালকে তাদের ঘরের মাঠে ১–০ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দেয় এস্তুদিয়ান্তেস। কাল সেন্ট্রাল কর্দোবার মুখোমুখি হবে নকআউটে।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আয়ারল্যান্ডের দারা’ও শিয়াকে কনুই দিয়ে গুঁতো মেরে লাল কার্ড দেখেছিলেন পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। এর প্রভাবে ২০২৬ বিশ্বকাপের শুরুতে রোনালদোর অনুপস্থিতি অনেকটা নিশ্চিত ধরে নিয়েছিলেন অনেকেই। তবে শেষ পর্যন্ত তিন ম্যাচ কমিয়ে রোনালদোকে এক ম্যাচে নিষিদ্ধ করে ফিফা। এই সিদ্ধান্ত নিয়েই এখন আইনি লড়াইয়ে পড়ার শঙ্কায় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়েছে, পর্তুগালের বিপক্ষে যেসব দল বিশ্বকাপে মুখোমুখি হবে, তারা চাইলে সুইজারল্যান্ডের ক্রীড়া সালিশি আদালতে (সিএএস) এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে পারে। তবে কোনো দল এমন পদক্ষেপ নেবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
আরও পড়ুন
| শক্তিশালী বাহরাইনকেও হারাল বাংলাদেশ |
|
এমনকি যেসব দেশের খেলোয়াড়েরা নিষেধাজ্ঞা কমানোর সুযোগ পাননি, তারাও ফিফার সিদ্ধান্তটি নজরে রেখেছেন। তবে ফিফার শাস্তি প্রক্রিয়া অনেকটাই বিবেচনাধীন, তাই এমন অভিযোগ প্রমাণ করা কঠিন হতে পারে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিযোগকারী পক্ষকে প্রমাণ করতে হবে- ফিফার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি।
ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, আঘাতের মতো আচরণে জড়ালে খেলোয়াড়কে কমপক্ষে তিন ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা পেতে হয়। তবে একই কোডের ২৭ নম্বর ধারা শাস্তি আংশিক বা পুরোপুরি স্থগিত করার সুযোগ রাখে। ফিফা জানিয়েছে, রোনালদোর বাকি দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা এক বছরের শর্তে স্থগিত রয়েছে। এই সময় তিনি একই ধরনের অপরাধ করলে স্থগিত শাস্তি তাৎক্ষণিক কার্যকর হবে।
৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে হবে বিশ্বকাপের ড্র। স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড ও ওয়েলসের মধ্যে যেকোনো দল প্লে-অফ জিততে পারলে পর্তুগালের সঙ্গে একই গ্রুপে পড়তে পারে।

এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়ান কাপ ২০২৬-এর মূলপর্বে খেলার স্বপ্নে বাংলাদেশ এখন মাত্র এক ম্যাচ দূরে। আজ বাহরাইনকে ২-১ গোলে হারিয়ে লাল-সবুজের কিশোররা বাঁচিয়ে রেখেছে মূলপর্বে খেলার আশা।
এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে টানা চার জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। 'এ' গ্রুপ থেকে স্বাগতিক চীন এখন বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী। তারাও তিন ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে তিনটিতে। সন্ধ্যায় তারা মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার। যে দলটিকে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৫-০ গোলে।
লঙ্কানদের বিপক্ষে চীন জিতলে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হবে তাদের মূল লড়াই। ওই ম্যাচে এগিয়ে যাওয়া দলটিই পাবে এশিয়ান কাপের মূলপর্বের টিকিট।
আরও পড়ুন
| রণক্ষেত্র ফুটবল মাঠ, এক ম্যাচে ১৭ লাল কার্ড |
|
চীনে চংকিংয়ে এদিন প্রথমার্ধে গোল না পেলেও বাংলাদেশ খেলেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। নাজমুল হুদা ফয়সাল, রিফাত ও অপু বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ তৈরি করেন। ২০ ও ২৮ মিনিটে আসে সেরা দুই সুযোগ, কিন্তু ফরোয়ার্ড রিফাত কাজী এগিয়ে নিতে পারেননি দলকে।
প্রথমার্ধে ফ্রি-কিক ও কর্নার থেকেও গোলের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ৩৪ মিনিটে চাপ বাড়ায় বাহরাইন, তবে গোলরক্ষক আলিফ রহমানের অসাধারণ সেভ দলকে ম্যাচে রাখে। এরপর ডিফেন্ডার কামালের গোললাইন ক্লিয়ারে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলা আরও জমে ওঠে। ৪৭ মিনিটে মানিকের নিখুঁত ক্রসে রিফাত শট নেন, তবে বাহরাইন গোলকিপার আরও একবার দেয়াল হয়ে দাঁড়ান।
অবশেষে আসে সাফল্যের দেখা। ৫৯ মিনিটে সাব্বিরের লং থ্রো ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন বাহরাইনের ডিফেন্ডার। সুযোগটি লুফে নিয়ে ‘সুপার সাব’ বায়েজিত দারুণ শটে গোল করে লাল-সবুজকে এগিয়ে নেন। এর ৬ মিনিট পরই ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়, কিন্তু আবারও রিফাতকে থামান বাহরাইনের গোলকিপার। রিবাউন্ডে বায়েজিত শট নিলেও প্রতিপক্ষের গোলকিপার ধরে ফেলেন বল।
৬৮ মিনিটে রিফাতের শট ফিরিয়ে দেন বাহরাইন গোলকিপার। কিন্তু ৭২ মিনিটে আর পারেননি। অধিনায়ক ফয়সালের থ্রু পাস থেকে মানিক বল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দূর থেকে চমৎকার লং শটে করেন দলের দ্বিতীয় গোল।
আরও পড়ুন
| প্রতিপক্ষের মাঠে জনশত্রু ইয়ামালকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় বার্সেলোনা |
|
৮৫ মিনিটে এক গোল শোধ করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে বাহরাইন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতিপক্ষকে আর সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশের কিশোররা।
ম্যাচ শেষে ফুটবলার ও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ভিডিও কলে যুক্ত হন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল।