
সৌদি আরবের লোহিত সাগরের একটি নির্জন দ্বীপে নতুন ঠিকানা খুঁজে পেলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। এই দ্বীপে দুটি বিলাসবহুল ভিলা কিনেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা।
রিজেনারেটিভ ট্যুরিজম প্রকল্প দ্য রেড সি ও আমালা–এর ডেভেলপার রেড সি গ্লোবাল (আরএসজি) জানিয়েছে, ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও তাঁর জীবন সঙ্গী জর্জিনা রদ্রিগেজ এখন আনুষ্ঠানিকভাবে নুজুমা, এ রিটজ-কার্লটন রিজার্ভ রেসিডেন্স–এর বাড়ির মালিক। বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসি দ্বীপভিত্তিক আবাসন প্রকল্পগুলোর একটি দ্য রেড সি রেসিডেন্সেস–এর অংশ এই আল্ট্রা-লাক্সারি ব্র্যান্ডের বাড়িগুলো।
রোনালদোর কেনা ভিলা রেড সি ইন্টারন্যাশনাল প্রকল্পের অংশ। ভিলাগুলো ব্যক্তিগত দ্বীপে গড়ে তোলা। মূল ভূখণ্ড থেকে দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। সেখানে যাতায়াতের একমাত্র উপায় নৌকা বা সি-প্লেন। সাদা বালুতে ঘেরা এই দ্বীপে মাত্র ১৯টি আল্ট্রা-প্রাইভেট ভিলা, চারপাশে স্বচ্ছ নীল জল—এই রিসোর্ট ও আবাসনগুলোতে বিশ্বমানের নকশা ও ব্যক্তিগত সেবার সঙ্গে মিলেছে চোখ জুড়ানো প্রাকৃতিক পরিবেশ।
২০২৩ সালে প্রথম রিসোর্ট চালু হওয়ার পর থেকেই রোনালদো ও জর্জিনা একাধিকবার রেড সি গন্তব্যে গিয়েছেন। স্থল ও জলভিত্তিক নানা অভিযানে অভিজ্ঞতা তাদের ছোট পরিবারকে মুগ্ধ করেছে। পাশাপাশি অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই সেখানে বাড়ি কেনার সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে রোনালদোকে।
দারুণ এই দ্বীপে মুগ্ধ রোনালদো বলেন, ‘লোহিত সাগর সত্যিই এক অসাধারণ জায়গা।
যে মুহূর্তে আমরা প্রথম এখানে এসেছিলাম, জর্জিনা আর আমি দ্বীপটির সঙ্গে এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে এক ধরনের টান অনুভব করেছি—এটি এমন একটি জায়গা যেখানে আমরা শান্তি খুঁজে পাই। এখন যেহেতু এখানে আমাদের নিজস্ব বাড়ি, আমরা চাইলে যেকোনো সময় পরিবারকে নিয়ে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা ও প্রশান্তির মধ্যে মানসম্মত সময় কাটাতে পারি।’
রেড সি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী জন পাগানো বলেন, রোনালদোর বিনিয়োগ এই গন্তব্যের আকর্ষণ প্রমাণ করে। এখানে বিলাসিতা, প্রকৃতি ও গোপনীয়তার সুন্দর সমন্বয় রয়েছে। সব স্থাপনা চলছে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে।
এখন পর্যন্ত এখানে নয়টি বিলাসবহুল হোটেল চালু হয়েছে। শুরা আইল্যান্ডে আরও ১১টি রিসোর্ট চালুর প্রস্তুতি চলছে। থাকবে গলফ কোর্স, রেস্তোরাঁ, শপিং ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। রেড সি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে রিয়াদ, জেদ্দা, দুবাই, দোহা ও মিলানে সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। তাই বিশ্ব তারকাদের জন্য এটি হয়ে উঠছে নিরাপদ ও নিরিবিলি অবকাশকেন্দ্র।
No posts available.
২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩:৫৫ পিএম
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭:৩৮ পিএম
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬:২৯ পিএম

লামিনে ইয়ামালের মধ্যে অনেকেই লিওনেল মেসির ছায়া দেখতে পান। অনেকে আবার ব্রাজিলিয়ান সুপাস্টার নেইমারের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে মনে করেন বার্সেলোনার স্প্যানিশ উইঙ্গারকে। আবার একদল এখনই ইয়ামালকে কারও সঙ্গে তুলনা দিতে রাজি নন।
মাঠে প্রতিনিয়ত ভেলকি দেখানো ১৮ বছর বয়সী ইয়ামাল কিন্তু ফুটবলীয় দক্ষতার একটি জায়গায় ছাড়িয়ে গেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা মেসিকেও। এই উইঙ্গারের সামনে আছে শুধুই নেইমার। গোল কিংবা অ্যাসিস্ট নয়, এক বর্ষ পঞ্জিকায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সফল ড্রিবলিং করেছেন ইয়ামাল।
ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে এক বর্ষ পঞ্জিকায় সর্বোচ্চ ড্রিবলিং করা ফুটবলার নেইমার। ২০১৭ সালে বার্সেলোনা ও পিএসজির হয়ে খেলে ৩৩৫টি সফল ড্রিবলিং করেছেন ৩৩ বছর বয়সী সান্তোসের এই তারকা। এ তালিকায় দুই নম্বরে আছেন ইয়ামাল। ২০২৫ সালে বার্সার ১০ নম্বর জার্সিধারী ৩০৭বার ড্রিবলিং করে সফল হয়েছেন। সর্বোচ্চ ড্রিবলিংয়ের তালিকায় শীর্ষ দশে পাঁচবারই আছেন মেসি।
আরও পড়ুন
| লোহিত সাগরের নির্জন দ্বীপে নতুন ঠিকানা রোনালদোর |
|
চোট আর মাঠের বাইরের বিতর্কে জড়িয়ে এ বছর হঠাৎ কক্ষ্যচূত হয়ে পড়েছিলেন ইয়ামাল। তবে ঘুরে দাড়াতে মোটেও সময় নেননি তিনি। এ ক্লাসিকোতে বার্সার ২-১ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে নিষ্প্রভ ছিলেন। তবে এরপর আবার রুদ্ররূপে ফিরে আসেন ইয়ামাল। নিয়মিতই গোল-অ্যাসিস্ট করে দলের জয়ে অবদান রেখেছেন। এমনকি গোল-অ্যাসিস্ট না করেও মাঠে দারুণ সব কারিকুরি দেখানো পুরোদস্তর পারদর্শী এখন ইয়ামাল।
চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২০ ম্যাচে ৯ গোলের সঙ্গে ১০টি গোলে সহায়তা করেছেন ইয়ামাল। লা লিগায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট তাঁর। সতীর্থদের দিয়ে সাত গোল করিয়েছেন কাতালান ক্লাবটির আক্রমণের মধ্যমণি।
টটেনহ্যামের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে গুরুতর চোটে পড়া আলেকজান্ডার ইসাকের ওপর করা ট্যাকেল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লিভারপুলের প্রধান কোচ আর্নে স্লট। টটেনহ্যাম ডিফেন্ডার মিকি ফন ডে ভেনের ট্যাকলকে তিনি সরাসরি ‘বেপরোয়া’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
শনিবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে লিভারপুল ২–১ গোলে জয় পায়। ম্যাচের শুরুতেই লিভারপুলের প্রথম গোলটি করেন ইসাক। তবে গোল করার মুহূর্তে পেনাল্টি বক্সের ভেতরে ফন ডে ভেনের বাজে স্লাইডিং ট্যাকলে মারাত্মকভাবে আহত হন তিনি।
আশ্চর্যজনকভাবে, ওই চ্যালেঞ্জে কোনো শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নেননি রেফারি। পরে জানা যায়, ইসাকের গোড়ালি ও ফিবুলা হাড় ভেঙে গেছে। সোমবার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে তার। লিভারপুল কোচ আর্নে স্লট নিশ্চিত করেছেন, ওকে অন্তত কয়েক মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে।
ম্যাচটিতে উত্তেজনা আরও বাড়ে দ্বিতীয়ার্ধে। থমাস ফ্রাঙ্কের দল টটেনহ্যাম একপর্যায়ে নয়জনের দলে পরিণত হয়। লাল কার্ড দেখেন জাভি সিমন্স ও ক্রিস্তিয়ান রোমেরো। ইসাককে গুরুতর চোটে ফেলা ফন ডে ভেনের ট্যাকলটি শাস্তির বাইরে থেকেই যায়।
স্লট বলেন, “আমাদের বেশিরভাগ ইনজুরি খেলোয়াড়দের অতিরিক্ত চাপের কারণে হয়নি। ইসাকের চোটের সঙ্গে চাপের কোনো সম্পর্ক নেই। একই কথা প্রযোজ্য ওয়াতারু এন্ডোর ক্ষেত্রেও।”
এসময় ফন ডে ভেনের ট্যাকল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন লিভারপুল কোচ।
“অবশ্যই এক–দুটি চোট হয়তো অতিরিক্ত চাপের সঙ্গে সম্পর্কিত। কোডি গাকপোর পেশির সমস্যা আছে, একই সমস্যা জো গোমেজেরও। তবে ইসাকের চোটটা ছিল একেবারেই বেপরোয়া একটি চ্যালেঞ্জের ফল।”
“জাভি সিমন্সের ট্যাকল নিয়ে আমি আগেও কথা বলেছি। ওটা ছিল পুরোপুরি অনিচ্ছাকৃত। এমন ট্যাকল থেকে সাধারণত কেউ চোট পায় না। কিন্তু ভ্যান ডে ভেনের ট্যাকল- আপনি যদি এমন ট্যাকল ১০ বার করেন, ১০ বারই গুরুতর চোটের ঝুঁকি থাকবে।”
লিভারপুল দলে এখন সবচেয়ে বড় উদ্বেগ ইসাকের অনুপস্থিতি। গুরুত্বপূর্ণ এই ফরোয়ার্ডকে ছাড়াই সামনে ব্যস্ত সূচিতে নামতে হবে ক্লাবটিকে, যা শিরোপা দৌড়ে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফা থেকে স্বস্তির খবর পেল আল নাসর। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর ক্লাবটিকে ফুটবলার নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ফিফা। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি মিলছে সৌদি প্রো লিগের ক্লাবটির।
আল নাসরের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে, এবং মামলা আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মূলত ক্লাবটি ফিফার শাস্তির মুখোমুখি হয়েছিল খেলোয়াড়ের ট্রান্সফারের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে একটি পুরোনো আর্থিক ঝামেলায় জড়িয়ে।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অগাস্টে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে আইমেরিক লাপোর্তকে দলে নেওয়ার চুক্তির অংশ হিসেবে ঠিকমতো অর্থ পরিশোধ না করায় আল নাসরকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। আল নাস্রের কাছ থেকে ২০২৫ সালের ৩১ অগাস্ট ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলটির ৯০ লাখ ইউরো পাওয়ার কথা ছিল। সেটা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ না করায় আল নাস্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো আল নাস্রে যোগ দেওয়ার কয়েক মাস পর, ২০২৩ সালের জুলাই মাসেও ক্লাবটিকে একইরকম নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। ফিফার এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় এখন দলে খেলোয়াড় ভেড়াতে আর কোনো বাধা থাকল না রোনালদোর ক্লাবের।
২০২৫–২৬ মৌসুমে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-তে আগামীকাল রাতে ইরাকের ক্লাব আল জাওরা এসসি-র মুখোমুখি হবে আল নাসর। তবে এই ম্যাচে খেলবনে না পর্তুগিজ মহাতারকা রোনালদো। আগামী ২৭ ডিসেম্বর সৌদি প্রো লিগে আল ওখদুদের বিপক্ষে দেখা যেতে পারে পাঁচবারের ব্যালন ডি’ অর জয়ীকে।
চলতি মৌসুমে লিগে ৯ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আল নাস্র। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আল হিলালের চেয়ে ৪ পয়েন্টে এগিয়ে আছে তারা। লিগে এখন পর্যন্ত ১০ গোল করে শীর্ষ গোলদাতার তালিকায় দুইয়ে আছেন রোনালদো। ‘সিআর সেভেন’ থেকে এক গোল বেশি করেছেন জাতীয় দল ও ক্লাবের সতীর্থ হোয়াও ফেলিক্স।

বাংলাদেশ ফেডারেশন কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। নতুন মৌসুমে প্রতিযোগিতার গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই ড্র করে বসে ফর্টিস এফসির সঙ্গে। সুবিধাজনক অবস্থানে ফিরতে একটা জয় খুব বেশি দরকার ছিল লাল-সাদা শিবিরের। কিন্তু 'বি' গ্রুপ থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তাদেরকে আজ রুখে দিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
মঙ্গলবার কুমিল্লার ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে গোলশূন্য ড্র করে দুই দল। এক পয়েন্ট পেয়ে খুশি মোহামেডানের হেড কোচ আলফাজ আহমেদ। এদিকে জিততে না পারলেও নিজেদের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট বসুন্ধরা কিংস কোচ মারিও গোমেজ।
খেলা শেষে নিজেদের ড্রেসিংরুমের সামনে দাঁড়িয়ে গোমেজ বলেন, 'আমার খেলোয়াড়েরা ভালো খেলেছে, সেটা নিয়ে আমি খুশি। তবে ড্র হওয়ায় পুরোপুরি খুশি নই। তবুও ঠিক আছে— একটি পয়েন্ট যোগ হয়েছে।'
প্রতিযোগিতায় প্রথম দুই ম্যাচে হেরে পয়েন্ট টেবিলের চারে অবস্থান করছে মারিও গোমেজের দল। তাদের ঝুলিতে স্রেফ দুই পয়েন্ট। আজ অবশ্য সুযোগ তৈরি করেও গোল পায়নি দুই দল। গোল না মেলায় কিছুটা আক্ষেপ আছে আর্জেন্টাইন এই কোচের, 'আমাদের কিছু ভালো সুযোগ ছিল, কিন্তু সেগুলো থেকে গোল করতে পারিনি। এই ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ আগের ম্যাচে হেরে এসেছিলাম (লিগের খেলায়)। তাই জয় ফেরাটা জরুরি ছিল। আমরা ভালো খেলেছি, শুধু গোলটাই দরকার ছিল— এইটুকুই।'
গ্রুপ পর্বে বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচ বাকি আছে আরও দুটি। শেষ দুই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ এবং বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। দুই ম্যাচ জিতে পরের রাউন্ডে যেতে আশাবাদী গোমেজ, 'আমরা সব সময়ই জয়ের চেষ্টা করি। অবশ্যই কোয়ালিফাইয়ের সুযোগ এখনও আছে।'
এই গ্রুপ থেকে ভাল সুযোগ আছে মোহামেডানের। তিন খেলায় ৫ পয়েন্ট তাদের ঝুলিতে। শেষ ম্যাচে সাদা-কালোদের প্রতিপক্ষ আরামবাগ। ওই ম্যাচ জিতে কোয়ালিফাই করতে আত্মবিশ্বাসী আলফাজ আহমেদ, 'গ্রুপে আমাদের আরেকটি ম্যাচ আছে। ওই ম্যাচ যদি জিততে পারি তাহলে আমরা কোয়ালিফাই করব এবং সেই ম্যাচের প্রত্যাশায় আমরা থাকছি।'
আজকের ম্যাচে এক পয়েন্ট পাওয়ায় গ্রুপে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে মোহামেডান। দুই ড্র এবং পুলিশের বিপক্ষে এক জয়ে ২০২২-২৩ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নদের সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট।
আজকের ম্যাচে পাওয়া এক পয়েন্ট নিয়ে খুশি কি না জানতে চাইলে আলফাজ বলেন, 'খুশি তো অবশ্যই। তবে জিততে পারলে আরও বেশি খুশি হতাম। তারপরও বলব, খুব বেশি খুশি হওয়ার তেমন কিছু নেই। পরের ম্যাচে যদি আমরা জিততে পারি তাহলে বেশি খুশি হব।'
একই সঙ্গে মোজাফফর, শান্ত, রাহিম, তপুদের পারফরম্যান্সেও খুশি জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আলফাজ। বসুন্ধরা কিংসকে সমীহ করেন জানালেন তিনি, 'সবমিলিয়ে দল ভালো খেলছে এবং আমরা জয়ের জন্যই মাঠে নেমেছিলাম। তারপরও এটা খেলা, প্রতিপক্ষ দল শক্তিশালী। অবশ্যই তাদেরকে সমীহ করতে হবে।'
এই গ্রুপ থেকে তিনটি করে ম্যাচ খেলেছে মোহামেডান ও ফর্টিস। দুই দলেরও পয়েন্টও সমান— ৫ করে। তিন ও চারে থাকা পুলিশ এবং বসুন্ধরা কিংসের পয়েন্ট ৪ ও ৩ করে। দুই দলই একটি করে ম্যাচ কম খেলেছে।

শেষ বাঁশি বাজার পর উল্লাসে ফেটে পড়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের গ্যালারি। নিশ্চুপ বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকেরা। চোখে-মুখে খুশির আভা ছিল সাদা-কালোদের কোচ আলফাজ আহমেদের। ফেডারেশন কাপের লড়াইয়ে তাঁর দল এক এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের থেকে।
মঙ্গলবার কুমিল্লার ভাষা সৈনিক শহীদ নীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংস বনাম মোহামেডানের ম্যাচটি ড্র হয়েছে গোলশূন্য ব্যবধানে। কদিন আগে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় লিগের ম্যাচে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে হেরেছিল মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটি। কুমিল্লায় সেই হারের শোধ না নেওয়া গেলেও মিলেছে স্বস্তির এক পয়েন্ট।
এদিন খেলা শুরুর প্রথম ২০ মিনিট কার্যকরী কোনো আক্রমণ শানাতে পারেনি কোনো দল। বল দখলের লড়াইয়ে অবশ্য এগিয়ে ছিল বসুন্ধরা কিংস। তৃতীয় মিনিটে রাকিবের আড়াআড়ি শট কর্নারের বিনিময়ে ফিস্ট করেন মোহামেডান গোলকিপার সুজন হোসেন। সাদা-কালোরা চেষ্টা করেছে আক্রমণে ওঠার, তবে তপু বর্মণ, সাদ উদ্দিনদের নিয়ে গড়া রক্ষণ দেয়াল টপকাতে পারেননি বার্নার্ড মরিসন, রাফায়েল টুডুরা।
২৯ মিনিটে বক্সের সামনে ইমানুয়েল সানডেকে এলি কেকে ট্যাকল করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন কিংস ফরোয়ার্ড। এরপর রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেন কেকে। পরে ফাহিমের ফ্রি কিক বেরিয়ে যায় পোস্টের অনেকটা দূর দিয়ে। পরের মিনিটে রেফারির সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে বল গ্যালারিতে উড়িয়ে মেরে এবার হলুদ কার্ড দেখেন মরিসন।
খানিক পর ডান কর্নারের কাছ থেকে রাকিবের চমৎকার ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি তাঁর কোনো সতীর্থ। ৩৯ মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলে বক্সের একটু উপরে অনেকটা ফাকায় বল পেয়ে যান জীবন। তবে জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ডের জোরালো শট কাঁপায় পাশের জাল।
এই সময় মোহামেডানের রক্ষণে চাপ ধরে রাখে বসুন্ধরা কিংস। একের পর এক আক্রমণে সাদা-কালোদের ব্যতিব্যস্ত করে রাখেন রাকিব, ফাহিমরা। ৩৭ মিনিটে মোহামেডানের হাফিজুর আর শাকিল তপুর সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জিতে যান রাকিব। ডান কর্নারের কাছ থেকে ক্রস দেন পোস্টের সামনে থাকা সানডেকে। নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড লাফিয়ে হেড নিলেও তা লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
এই অর্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে মোহামেডানের জালে বল ঠেলে দিলেও অফসাইডের কারণে গোল পায়নি বসুন্ধরা কিংস। গোলশূন্য বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মোহামেডান গ্যালারি। মাঠে বোতল ছুঁড়ে মারেন দলটির সমর্থকেরা। ঘটনা মাঠের ভেতরের পাশে লাগানো একটি ব্যানার সাটানোকে কেন্দ্র করে। ম্যাচ কমিশনার সেটি সরিয়ে নিতে বললে তাঁর সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন সাদা-কালো সমর্থকেরা। পরে ব্যানারটি উঠিয়ে নেয় তারা।
৫৭ মিনিটে সুমন রেজার থ্রু পাস ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পারেননি মোজাফ্ফর মোজাফ্ফরভ। তাতে বিপদে পড়তে হয়নি কিংস গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোকে। ৬১ মিনিটে মোজাফ্ফরভের বাঁকানো ফ্রি কিক অনেকটা লাফিয়ে ফেরান জিকো।
৭৮ মিনিটে ফাহিমের কর্নারে ইমানুয়েল টনির দুর্বল হেড ফেরান সুজন। একটু পর বক্সের ভেতরে ভালো জায়গায় বল পেয়ে সানডে বাইরে মেরে হতাশ করেন।
নিরুত্তাপ ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে গোলের সুযোগ হারায় মোহামেডান। ডান দিক থেকে রাহিম উদ্দিনের আড়াআড়ি ক্রসে স্যামুয়েল বোয়াটেং পা ছোঁয়ানোর আগেই দারুণ ক্ষিপ্রতায় কর্নার করে দেন তপু বর্মন। সে কর্নার থেকেও ম্যাচেও ডেডলক খুলতে পারেনি মোহামেডান। তাতে গত ১২ ডিসেম্বর লিগ ম্যাচে কিংসের কাছে হারের ক্ষতে প্রলেপও দেওয়া হয়নি আলফাজ আহমেদের দলের। তবে এক পয়েন্ট নিয়ে নিশ্চিতভাবেই সন্তুষ্ট থাকবে সাদা-কালো শিবির।
এই ড্রয়ে ফেডারেশন কাপের 'বি' গ্রুপ থেকে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থাকল মোহামেডান। তাদের সমান ৫ পয়েন্টে পেয়ে শীর্ষে ফর্টিস এফসি। দুই খেলায় দুই পয়েন্ট নিয়ে এই তালিকার চারে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তিনে থাকা পুলিশের পয়েন্ট তিন।