২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮:২৪ পিএম
নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পর বাংলাদেশ সহ-অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ বলেছেন, ৩০০-৩১০ রান করলে জিততে পারত বাংলাদেশ। আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত তুলে ধরেছেন বিদেশের মাটিতে ভালো ক্রিকেট না খেলতে পারার বিষয়টি। দুজনের দুই রকমের মন্তব্যে আপনার মনে একটা প্রশ্ন জাগতেই পারে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কি স্রেফ খেলার জন্যই খেলছে বাংলাদেশ নাকি খেলোয়াড়দের সামর্থ্য ছিল বড় কিছু করার?
প্রশ্নটা করা এই কারণেই, একই টুর্নামেন্টে যেখানে দলগুলো করছে ৩০০, এমনকি ৩৫০ প্লাস স্কোরও, সেখানে দুই ম্যাচেই যে ব্যাট হাতে খাবি খেল বাংলাদেশ। দুবাইয়ের উইকেটে বড় রান করাটা চ্যালেঞ্জই, তবে সেই ম্যাচে ভারতের সাথে ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে সেখানেই ম্যাচটা হেরে বসে দলটি। অথছ, ওই সময়ে না হয়েছে এমন কোনো দুর্দান্ত বোলিং, না উইকেটে ছিল কোনো জুজু। ব্যাটারদের দায়িত্বহীন শটে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার প্রবণতায় শুরুতেই মেরুদণ্ড ভেঙে যায় দলের।
আরও পড়ুন
ভেসে গেল অস্ট্রেলিয়া-দ.আফ্রিকা লড়াই, চাপ বাড়ল ইংল্যান্ডের |
![]() |
একটা টুর্নামেন্টের শুরুটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে অমন ভয়াবহ এক ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ পায় ভুলে যাওয়ার এক অভিজ্ঞতা। এরপর টেনেটুনে ২২৮ করলেও ম্যাচে সেভাবে লড়াই আর জমাতেই পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের মাঝে কয়েকটি উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছে ভারত, ক্যাচও পড়েছে একটা বটে, তবে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে যাবে এমনটাও মনে হয়নি প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তার গভীরতার কারণেই।
আর এখানেই চলে আসে সামর্থ্যের প্রশ্ন। ভারত এই টুর্নামেন্ট খেলছে দলের তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেরই অন্যতম সেরা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহকে ছাড়া। অথচ ঠিকই তারা হেসেখেলে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই তাদের ব্যাটাররা জানান দিয়েছেন নিজেদের সামর্থ্যের। আর সেটা স্পষ্ট হয়েছে শুবমান গিল ও বিরাট কোহলির দুই সেঞ্চুরিতে।
ভারত ম্যাচে দ্রুত ৫ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশ ২২৮ পর্যন্ত যেতে পেরেছিল তাওহীদ হৃদয়ের লড়াকু সেঞ্চুরির কারণেই। তবে নব্বইয়ের ঘরে যেতে ক্র্যাম্পের কারণে দাঁড়াতেই যেন পারছিলেন না এই তরুণ ব্যাটার। ফলে ২৫০ রানের ভিত থাকলেও তিনি শেষের দিকে সেভাবে রানই বের করতে পারেননি। অর্জন বলতে ওই তার শতকই।
একই ম্যাচে গিল ওপেন করতে নামেন ৫০ ওভার ফিল্ডিংয়ের ক্লান্তি নিয়ে। আর মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়ে, অপরাজিত সেঞ্চুরিতে। একবারও ক্যাম্প হয়নি তার। ম্যাচ শেষেও তার প্রাণশক্তি বলে দিচ্ছিল, চাইলেই অনায়াসে আরও ৫০ ওভার ব্যাট করা সম্ভব তার পক্ষে। তাওহীদ বা বাংলাদেশের অন্য ব্যাটারদের সাথে সামর্থ্যের ফারাকটা এখানেই হয়ে যায় শীর্ষ ব্যাটারদের।
আরও পড়ুন
‘বড় মঞ্চে সাকিবের মত পারফর্ম করতে ব্যর্থ মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ’ |
![]() |
অন্য উদাহারণটি হতে পারেন কোহলি। দুবাইয়ের গরমের মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ায় তিনিও উপহার দেন ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি। চেজ মাস্টার খ্যাত এই ব্যাটার শতক করেছেন নব্বইয়ের বেশি স্ট্রাইক রেটে। চার মারেন মাত্র ৭টি। অর্থাৎ, বাউন্ডারি থেকে মাত্র ২৮ রান করেও তিনি দারুণ একটা স্ট্রাইক রেট বজায় রেখেছেন। দৌড়ে রানই নিয়েছেন ৭২টি।
এর একদিন বাদে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেন করতে নেমে রাওয়ালপিন্ডির ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে শান্ত ৭৭ রান করতে বল খেলেছেন ১১০টি। তিনি কোহলির চেয়ে চার মেরেছেন দুটি বেশি। তবে ডট বলের সংখ্যাও তার বেশি, ৬২টি। আর এখানেই চলে আসে বাংলাদেশ ব্যাটারদের সামর্থ্যের বিষয়টি। একজন ব্যাটার প্রায় ১০ ওভার যদি একটা রানও না বের করতে পারেন, সেই দলের ইনিংস কার্যত নেমে আসে ৪০ ওভারে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই একটা দলের জন্য ৩০০ পার করা স্কোর গড়ার কাজটা ভীষণ কঠিন হয়ে যায়।
তাওহীদের ওই একশ করার আগেই ফিটনেসের কমতি ফুটে ওঠা বা শান্তর ডট বলের হিড়িক যেন বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটের দীনতাই ফুটিয়ে তোলে। অবশ্য দুই ম্যাচে সর্বোচ্চ রান করা দুজনকে উদাহারণ হিসেবে টেনে আনাটা কিছুটা দৃষ্টিকটু লাগতেই পারে। মন্দের ভালো তো ছিলেন তারাই।
তবে অন্যদের দিকে তাকালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ কেন আর কোন লক্ষ্যে খেলছে, তা নিয়েই যে প্রশ্ন জাগতে বাধ্য। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে রিকি পণ্টিং যখন বলেছিলেন, বাংলাদেশের কোনো সম্ভাবনাই দেখছেন না তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক সাধারণত ক্রিকেট নিয়ে ভুল ভবিষ্যৎবাণী কমই করেন।
দুই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটাররা প্রমাণ দিয়েছেন, ভুল ছিলেন না পন্টিং। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যর্থ ছিলেন তিন অভিজ্ঞ সৌম্য সরকার, মেহেদি হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহিম। এদের মধ্যে দুজনই আবার মারেন ডাক। তিনজনের আউটের ডেলিভারি ছিল না খুব বিশেষ কিছু।
তবে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ যেন ছাড়িয়ে গেছে সেই ব্যর্থতার গল্পও। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বিশের ঘরে ভালো শুরু পেয়েও আউট হয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। দুটি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞ একজন ব্যাটারের কাছ থেকে বড় ইনিংস তো দল আশা করতেই পারে। অবশ্য অভিজ্ঞতার বিচারে দলের সবচেয়ে প্রবীণ দুই ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহই তো করেছেন সবচেয়ে বেশি হতাশ।
ভারত ম্যাচ মিস করা মাহমুদউল্লাহ ১০৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর নেমে যেভাবে মিচেল ব্রেসওয়েলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন, তা অবাক করেছে ধারাভাষ্যকারদের। এর আগে একই ভুল করেছেন মুশফিকুরও। অথচ ওই সময়ে তাদের দরকার ছিল দেখেশুনে খেলে ইনিংস মেরামতের। এই টুর্নামেন্টেই ৩৫১ রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার তুলনামূলক দুই অনভিজ্ঞ ব্যাটার জস ইংলিশ ও অ্যালেক্স কেরি যেভাবে জুটি গড়েছেন খুব বেশি আগ্রাসন না দেখিয়েই, তা বাংলাদেশের ২০ বছরের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের জন্য হতে পারে এক শিক্ষা। ডট বলের চাপ এলেও তারা সিঙ্গেলস বের করে সেটা সরিয়েছেন। কয়েকটা বল ডট গেলেই মুশফিকুর বা মাহমুদউল্লাহরা বারবার চাপের মুখে স্রেফ বড় শটেই নিস্তার চান, তা উদ্বেগজনকই।
আরও পড়ুন
রান আউট-ক্যাচ মিসের আক্ষেপে বিদায় বাংলাদেশের |
![]() |
যেহেতু তারা দুজনই আছেন ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায়, সেদিক থেকে বাংলাদেশের বড় চিন্তার কারণ হতে পারেন মিরাজ। মূলত বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে খেললেও এই দলে তিনি এখন নিয়মিত ব্যাট করছেন ওপরের দিকেই। মজার ব্যাপার হল, ওয়ানডেতে তার সেরা সব পারফরম্যান্স এসেছে ব্যাট হাতেই। অবশ্যই সাকিব আল হাসান যুগে এটা বাংলাদেশের জন্য দারুণ খবর। তবে মিরাজের মূল কাজ তো বল হাতে, কারণ দলের চতুর্থ বা পঞ্চম বোলার যে তিনিই।
সেই মিরাজ ১০৫টি ওয়ানডেতে নিয়েছেন মাত্র ১১০ উইকেট। গড়ে প্রতি উইকেট নিতে গুনেছেন ৪৫ রানের বেশি। দলের একজন মূল বোলার যখন দিনের পর দিন গড়পড়তা পারফরম্যান্স উপহার দিবেন, তখন সেটা দলকে বাড়তি চাপে ফেলবেই। হচ্ছেও তাই। মিরাজের করা ১০টি ওভার ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষকে সেভাবে চাপে ফেলতেই পারছে না মাঝের ওভারে। ফলে নিউজিল্যান্ড ম্যাচের মত পেসাররা শুরুটা দারুণ কিছু করলেও মিরাজের স্পেলে প্রতিপক্ষ পাচ্ছে সহজ রান বের করার সুযোগ। তাতে চাপও যাচ্ছে আলগা হয়ে।
সব মিলিয়ে তাই এক ম্যাচ হাতে রেখেই আসর থেকে বিদায় নেওয়া বাংলাদেশ দল ব্যর্থ হল বিরেন্দর শেবাগকে একটা জবাব দিতে। সাবেক ভারত ওপেনার প্রথম ম্যাচের পর বলেছিলেন, দলটা বাংলাদেশ বলেই তাদের কাছে হারার চিন্তাও নাকি হয়নি তার। ওয়াসিম জাফর বা শেন বন্ডের মত সাবেকরা এমন তির্যক মন্তব্য না করলেও বলেছেন, বড় মঞ্চে বাংলাদেশের এমন বাজে প্রদর্শনী অবাক করেছে তাদের।
এই অবাক বিস্ময়ে আছেন বাংলাদেশের সমর্থকরাও, যারা ভারত ম্যাচের আগের দিন রাতে শান্ত-তাসকিন-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের দেখলেন সাবেক ওপেনার তামিম ইকবালের সাথে ডিনার করতে। যেখানে তৈলাক্ত খাবারের সাথে ছিল আবার কোমল পানীয়ও। টুর্নামেন্টে নিজেদের সবচেয়ে বড় ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের নিবেদনের এই চিত্র বলে দেয়, নিজেদের সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা যেন তারা মেনে নেন মাঠে নামার আগেই।
ক্রিকেট পাগল একটা দেশের সমর্থকদের জন্য এই নির্মম সত্য মেনে নেওয়াটা কঠিনই বটে। কারণ, তারা যে প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশকে সেরাদের সেরা হওয়ার। তবে খেলোয়াড়দের সামর্থ্যের কমতি থাকা বা লড়াইয়ের আগে হালকা মেজাজে থাকাটা বলে দেয়, সময় এসেছে ‘রিয়েলিটি চেক’ দেওয়ার। শান্তরা সেটা পাবেন কি?
১ আগস্ট ২০২৫, ৩:৫৯ পিএম
১ আগস্ট ২০২৫, ১:২৮ পিএম
এ বছরের এপ্রিলে সিলেটে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারানোর পরের টেস্ট অধ্যায়টা জিম্বাবুয়ের শুধুই হতাশার। সর্বশেষ ৪ টেস্টের তিনটিতে ইনিংস ব্যবধানে হার, অন্যটি রানের ব্যবধানে। বুলাওয়েতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস হারের শঙ্কা ছিল। তবে নবম জুটির ৬৪ রানে সেই লজ্জা এড়াতে পেরেছে জিম্বাবুয়ে। মাত্র ৮ রানের টার্গেট দিয়ে নিউ জিল্যান্ডকে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে নামিয়েছে। মাত্র ১৪ বলে এই টার্গেট পাড়ি দিয়ে ৯ উইকেটে জিতে সিরিজ শুরু করেছে সফরকারী দলটি।
প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের টার্গেটে বোলিং করেছে নিউ জিল্যান্ড। টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৩১/২, ইনিংস হার এড়ানোর জন্য ১২৮ রানের টার্গেটটা বেশ বড়ই তখন মনে হয়েছে। তৃতীয় দিনের শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে এক পর্যায়ে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ৫৩/৪। ৫ম উইকেট জুটিতে ৫৭ রা যোগ করেও ইনিংস হারের শঙ্কা ছিল জিম্বাবুয়ের। ১১০ থেকে ১২৬, এই ১৬ রানে জিম্বাবুয়ের ৪ উইকেট পড়ে গেলে ইনিংস হারের চোখ রাঙানি দেখেছে স্বাগতিক দল। তবে ৯ম উইকেট জুটির ৬৪ রানে ইনিংস হার এড়িয়েছে জিম্বাবুয়ে।
মাত্র ১ রানের জন্য শিন উইলিয়ামস ফিফটি হাতছাড়া করেছেন। বাঁ হাতি স্পিনার স্যান্টনারের বলে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন শিন উইলিয়ামস (৬৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৯)। ঠিক তৃতীয় দিনের টি ব্রেকের আগে থেমেছে জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে (১৬৫/১০)।
জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস ছিন্ন ভিন্ন করেছে নিউ জিল্যান্ডের যে পেসার (৬/৩৯), সেই হেনরি দ্বিতীয় ইনিংসেও ছড়ি ঘুরিয়েছেন (৩/৫১)। টেস্ট ক্যারিয়ারে এর আগে দুইবার ম্যাচে ৯ উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন। এটা নিয়ে (৯/৯০) সংখ্যাটা তৃতীয়-তে উন্নীত হলো তার। জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিনার স্যান্টনার পেয়েছেন ৪ উইকেট (৪/২৭)।
চোট আর বিশ্রাম মিলিয়ে এমনিতেই ইংল্যান্ড-ভারত চলমান পঞ্চম টেস্টে স্বাগতিকরা খেলছে অনভিজ্ঞ বোলিং লাইনআপ নিয়ে। এবার দলটির জন্য আরেক ধাক্কা হয়ে এসেছে ক্রিস ওকসের চোট। সেটা এতোটাই গুরুতর যে, এই ম্যাচের বাকি অংশ থেকেই ছিটকে গেছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটে প্রথম দিনের শেষের দিকে। বাউন্ডারির লাইনে একটি বল ধরার চেষ্টায় ভেজা আউটফিল্ডে হাত পিছলে পড়ে যান ওকস। পড়ে যাওয়ার ফলে বাঁ কাঁধে বেশ চোট পান এবং সাথে সাথেই কাঁধ চেপে ধরে শুয়ে পড়েন মাঠে।
এরপর ইংল্যান্ড দলের ফিজিও বেন ডেভিস মাঠে এসে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে ওকস মাঠ ছেড়ে যান। রাতেই অভিজ্ঞ এই পেসারের স্ক্যান করানো হয়। সেই স্ক্যান ও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণের পর ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) নিশ্চিত করে, ওকস আর এই ম্যাচে অংশ নিতে পারবেন না। এমনি ব্যাট হাতেও দেখা যাবে না তাকে।
তার এই ছিটকে যাওয়া ইংল্যান্ডকে ভালো বিপদেই ফেলে দিতে পারে। কারণ, অধিনায়ক বেন স্টোকস না খেলায় এই ম্যাচে এমনিতেই চারজন স্পেশালিষ্ট পেসার নিয়ে খেলতে নেমেছে দলটি। ওকস আর বোলিং না করতে পারায় ম্যাচের বাকিটা সামাল দিতে হবে তিন পেসার গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন এবং জশ টাংকে, যারা সম্মিলিতভাবে খেলেছেন মাত্র ১৮ টেস্ট। ফলে চাপ বাড়তে পারে দুই পার্টটাইম স্পিনার বেথেল-রুটের ওপর।
চলমান টেস্টের ভারতের প্রথম ইনিংসে ওকস ১৪ ওভার বল করে ১ উইকেট নেন। সিরিজে তিনি মোট ১৮১ ওভার বোলিং করেছেন। ৫২.১৮ গড়ে নিয়েছেন ১১ উইকেট। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য এই সিরিজে ইংল্যান্ডের একমাত্র পেসার হিসেবে খেলেছেন পাঁচ টেস্টেই। তবে শেষটা হল হতাশার মধ্য দিয়েই।
ইংল্যান্ড-ভারতের মধ্যকার চতুর্থ টেস্টে পাকিস্তানের জার্সি পরা এক দর্শককে মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনার জল এরই মধ্যে গড়িয়েছে অনেকদূর। এবার সেই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে টেস্টে চলাকালীন এই ঘটনাটি ফারুক নাজার নামের ভুক্তভোগী দর্শক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরেন। এরপর থেকেই এটি নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।
সেই ভিডিওতে দেখা যায়, পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের সবুজ রঙের জার্সি পরে ভারত ও ইংল্যান্ডের ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে হাজির হয়েছেন নাজার। এক পর্যায়ে একজন নিরাপত্তাকর্মী এসে তাকে পাকিস্তানের জার্সি ঢেকে ফেলতে বলেন। এই সময়ে সেই নিরাপত্তাকর্মী নিজেকে ল্যাঙ্কাশায়ারের একজন স্টাফ হিসেবে পরিচয় দেন। সাথে জানান, পাকিস্তানের জার্সি ঢাকার জন্য বলার জন্য কন্ট্রোল রুম থেকে নির্দেশ পেয়েই তিনি এটি বলতে এসেছেন। তবে তার সেই অনুরোধ নাজার মানতে অস্বীকৃতি জানান। এই ঘটনার জেরে শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে তাকে মাঠ থেকেই বের করে দেয়।
ঘটনার পর এক বিবৃতিতে ল্যাঙ্কাশায়ার জানায়, দর্শকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে তাদের নিরাপত্তা দল কাজ করে আর এটা তারই অংশ ছিল। তবে নাজারকে মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় যদি কোনো দর্শক কষ্ট পেয়ে থাকেন, সেজন্য তারা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
এরপর কাউন্টি ক্লাবটি বিবৃতিতে আরও দাবি করে, ওই ঘটনার একদিন আগে মাঠের ভেতর ভারতীয় ও পাকিস্তানি সমর্থকদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছিল। আর সেই প্রেক্ষিতেই তাদের নিরাপত্তা দল সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং তারই ধারাবাহিকতা তারা নাজারকে পাকিস্তানের জার্সি ঢেকে ফেলতে বলেছিলেন।
অন্যদিকে যাকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই নাজার এক্স প্ল্যাটফর্মে (সাবেক টুইটার) জানান,
“আমি তো সেখানে কোনো আপত্তিকর আচরণ করিনি। আমি শুধু পাকিস্তানের জার্সি পরেই খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। এটা তো দোষের কিছু না। আমাদের মনে রাখতে হবে এটা ক্রিকেট, এখানে জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের সবারই স্রেফ খেলাটিকেই উদযাপন করা উচিত।”
আগামী সেপ্টেম্বরে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপকে সামনে রেখে বাড়তি প্রস্তুতির সুযোগ তৈরি হল অংশগ্রহণকারী তিন দেশের সামনে। চলতি মাসে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে অংশ নিতে যাচ্ছে পাকিস্তান আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে ইমিরেটস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে বিখ্যাত শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আসর চলবে আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের শুরুতে।
ত্রিদেশীয় এই টুর্নামেন্টে প্রত্যেক দল একে অপরের বিপক্ষে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে সব মিলিয়ে মোট ৬টি ম্যাচ হবে। এরপর পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুই দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে।
এবারের এশিয়া কাপ হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, যা শুরু হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর, আর চলবে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই টুর্নামেন্টও হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতেই।
ত্রিদেশীয় সিরিজের তিন দলের মধ্যে আইসিসির সবশেষ টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে পাকিস্তান সবার চেয়ে এগিয়ে আছে, তাদের অবস্থান ৮ নম্বরে। আফগানিস্তান আছে ৯ নম্বরে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত রয়েছে ১৪ নম্বরে।
বুলাওয়ে টেস্টে প্রথম দিনের হতাশা কাটিয়ে দ্বিতীয় দিন ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্ঠা করেছে জিম্বাবুয়ে। নিউ জিল্যান্ডকে প্রথম ইনিংসে ১৫৮'র বেশি লিড নিতে দেয়নি স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ে ইনিংস হার এড়ানো থেকে ১২৬ রানে পিছিয়ে।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে মাত্র ১৪৯ রানে অল আউট করে দিন শেষে উইকেটহীন ৯২ স্কোরে স্বাগতিক দলকে রান পাহাড়ে চাপা দেয়ার আভাস দিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড। তবে দিনের প্রথম বলে ওপেনিং জুটি বিচ্ছিন্ন করেছেন জিম্বাবুয়ে পেসার মুজারাবানি। তার শর্ট বলে শর্ট লেগে উইল ইয়ং দিয়ে এসেছেন ক্যাচ (৪১)।
দ্বিতীয় উইকেট জুটির ৬৬ রানে স্বাগতিক দলকে হতাশায় ফেলে দিয়েছিলেন ডেভন কনওয়ে-হেনরি নিকোলাস। তবে মুজারাবানির বলে গালিতে নিকোলাম (৩৪) ক্যাচ দেয়ার মধ্য দিয়ে বড় একটা দমকা হাওয়া বয়ে যায় নিউ জিল্যান্ডের ইনিংসের উপর দিয়ে। মাত্র ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদের মুখে পড়ে নিউ জিল্যান্ড।
সেখান থেকে দলের স্কোর তিনশ' ছাড়িয়ে নিয়েছেন ড্যারেল মিচেল। নিয়াম্বুরির ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে থেমেছেন মিচেল ৮০ রানে। ২২৪ মিনিটের যে ইনিংসে ১৫টি চার এর পাশে ছিল একটি ছক্কা। তবে অবধারিত সেঞ্চুরি মিস করেছেন ডেভন কনওয়ে। চিভাঙ্গার আউট সাইড অফ ডেলিভারিতে ডেভন কনওয়ে গালিতে ক্যাচ দিয়ে হাতছাড়া করেছেন ৫ম টেস্ট সেঞ্চুরি।
জিম্বাবুয়ে পেসার মুজারাবানি পেয়েছেন ৩ উইকেট (৩/৭৩)। চিভাঙ্গা পেয়েছেন ২ উইকেট (২/৫১)। প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানে পিছিয়ে পড়া জিম্বাবুয়ে লড়ছে ইনিংস হার এড়াতে। তবে হেনরি (১/১১) এবং ও রোর্কের (১/১৬) বোলিংয়ে স্কোরশিটে ৩১ উঠতে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে ২ উইকেট।
৯ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৭ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে