ম্যাচের আগে রিয়াল মাদ্রিদের ফিরে আসার সম্ভাবনা নিয়ে মিকেল আর্তেতা বলেছিলেন, সাহসী ফুটবল খেলবে তার দল। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে স্বাগতিকদের আরেকটি কামব্যাক রুখে দিতে ম্যাচ জুড়ে ইতিবাচক ফুটবল উপহার দিল তার দল। আর বাঁচা-মরার ম্যাচে ছন্দহীন ফুটবল খেলল কার্লো আনচেলত্তির দল। লড়াই তো নয়ই, উল্টো বিশাল ব্যবধানে হেরেই তাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় ঘণ্টা বাজল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়ালের।
বুধবার রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটের ফিরতি লেগের ম্যাচে আর্সেনাল জিতেছে ২-১ গোলে। প্রথম লেগে ৩-০ গোলে জয়ের সুবাদে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে এগিয়ে সেমিফাইনালে পা রেখেছে আর্সেনাল।
গোলের জন্য মরিয়া রিয়াল দ্বিতীয় মিনিটেই শানায় প্রথম আক্রমণ। কিলিয়ান এমবাপের পাস থেকে বাম দিক থেকে বক্সে প্রবেশ করে শট নেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, যা চলে যায় পোষ্টের বাইরে।
আরও পড়ুন
শততম ম্যাচে ‘১০০’ নম্বর জার্সি গায়ে নেইমারের সঙ্গী অশ্রু |
![]() |
অষ্টম মিনিটে ধাক্কা খায় রিয়াল। কর্নার ক্লিয়ার করতে গিয়ে মিকেল মেরিনোকে টেনে বক্সের ভেতর ফেলে দেন রাউল আসেন্সিও। ভিএআর চেকে পেনাল্টি পায় আর্সেনাল। প্রথমে মার্টিন ওডেগার্ড এগিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত স্পট কিক নেন বুকায়ো সাকা। তার বাঁ পায়ের পানেনকা পেনাল্টি এক হাতে আটকে দিয়ে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন থিবো কোর্তোয়া।
খানিক বাদে দারুণ স্কিলের প্রদর্শনী দেখিয়ে গোলের ভালো একটা সুযোগ তৈরি করেছিলেন জুড বেলিংহাম। তবে বাঁ দিক থেকে তার বাড়ানো পাস নাগাল পাননি বক্সের ভেতর থাকা রদ্রিগো।
ঘড়ির কাটায় বিশ মিনিট পার হওয়ার পর ফের বেজে ওঠে পেনাল্টির বাঁশি। এবার সেটা যায় রিয়ালের পক্ষে। ডি বক্সের ভেতর এমবাপেকে ফাউল করেছিলেন ডেকলান রাইস, এই ভেবে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। সাথে হলুদ কার্ডও। আর্সেনালের খেলোয়াড়দের তুমুল প্রতিবাদের মুখে ভিএআর চেকে যান রেফারি। এরপর নিজেই স্ক্রিনে ফুটেজ দেখে সরে আসেন পেনাল্টির সিদ্ধান্ত থেকে।
রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বাতিলের আগে স্পট কিকের প্রস্তুতি সেরেও ফেলেছিলেন এমবাপে। সেই হতাশার কারণেই কিনা, ৩১তম মিনিটে বক্সের বেশ বাইরে থেকে নেওয়া তার শট চলে পোষ্টের বেশ ওপর দিয়েই।
এরপর কিছুটা কমে যায় ম্যাচের গতি। তবে চল্লিশ মিনিটের পর টানা তিন কর্নার আদায় করে আর্সেনালের ওপর কিছুটা চাপ সৃষ্টি করে রিয়াল। তবে দলটির আক্রমণের দুই প্রাণভোমরা এমবাপে ও ভিনিসিয়ুস প্রথমার্ধের বাকি সময়ের পর এই অংশেও থাকেন নিস্প্রভ।
ইনজুরি টাইম দেওয়া হয় সাত মিনিট, যেখানে কিছুটা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে ভালো একটা আক্রমণ করে আর্সেনাল। রাইসের পাস থেকে বক্সের বাঁদিক থেকে কঠিন এঙ্গেল থেকে বাঁ পায়ে জোরাল শট নেন গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি, যা দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া।
লড়াই জমাতে রিয়ালের গোলের ভীষণ প্রয়োজন হলেও বিরতির আগেই দলটির আক্রমণের খেলোয়াড়রা দেখান বাজে পারফরম্যান্স। ফলে গোলের জন্য ছয়টি শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি দলটি। অন্যদিকে চারটি শটের তিনটিই লক্ষ্যে রাখতে সমর্থ হয় আর্সেনাল।
আরও পড়ুন
ইন্তার বাধায় শেষ আটেই থামল বায়ার্নের পথচলা |
![]() |
রিয়ালের গোলের সামনের এই দুর্দশা চলমান থাকে বিরতির পরেও। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১৫ মিনিটে সেভাবে প্রতিপক্ষকে চাপেই রাখতে পারেনি দলটি। ফলে অধিনায়ক লুকাস ভাজকেজ, ডেভিড আলাবা ও রদ্রিগোকে তুলে ফ্রান গার্সিয়া, এন্দ্রিক ও দানি সেবায়োসকে নামান আনচেলত্তি।
তবে তাতেও কাজের কাজ হয়নি আর। উল্টো ৬৪তম মিনিটে রিয়ালকে স্তব্ধ করে দেন প্রথমার্ধে পেনাল্টি মিস করা সাকা। বক্সের বাইরে থেকে মেরিনোর বাড়ানো থ্রু বল থেকে ক্লিনিক্যাল ফিনিশিংয়ে আর্সেনালকে বড় লিড এনে দেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
তবে সেই রাশ না কাটতেই বল এবার চলে যায় আর্সেনালের জালে। প্রতিপক্ষের সীমানায় চ্যালেঞ্জ করে বলের দখল পেয়ে কোনোমতে শরীরের ভারসাম্য ধরে রেখে বল জালে পাঠিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন ভিনিসিয়ুস।
তবে এরপরই সেই উদ্দীপনা ধরে রাখতে পারেনি রিয়াল। উল্টো ৭৫তম মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন এমবাপে। একটা গোলের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালালেও বারবার আর্সেনালের জমাট ডিফেন্সের সামনে থেমে যায় রিয়ালের সব প্রচেষ্টা। তাতে হতাশা বাড়তে থাকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে, যারা সেজেছিল আরও একটা কামব্যাকের প্রত্যাশায়।
গোলের জন্য রিয়ালের প্রানান্তকর চেষ্টায় বারবার হাইলাইনে উঠে খেলছিল তারা। ফলে প্রায়ই ডিফেন্সে তৈরি হচ্ছিল শুন্যতার। গোলের দেখা না পাওয়া রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেক সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই ঠুকে দেন মার্তিনেল্লি।
ইনজুরি টাইমে কাউন্টার এটাক থেকে দ্রুত বল পেয়ে মেরিনো বাঁদিকে বল দেন মার্তিনেল্লিকে। ফাঁকায় থাকার কারণে অনেকটা সময় নিয়ে প্লেসিং শটে বল জালে পাঠান তিনি। আর সেটাই হতাশার গভীর চাদরে ঢেকে দেয় রিয়ালকে।
১৬ জুন ২০২৫, ৩:২৭ পিএম
১৬ জুন ২০২৫, ২:০২ পিএম
রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণ ও হুমকির ঘটনায় বড় শাস্তিই পেলেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। স্পেনের একটি আদালত এসব ঘটনায় চার ব্যক্তিকে ১৪ থেকে ২২ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানাও দিয়েছে।
আলোচিত ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কোপা দেল রে-তে ম্যাচে রিয়াল ও আতলেতিকো মাদ্রিদের ম্যাচের আগে। রিয়াল মাদ্রিদের ট্রেনিং গ্রাউন্ডের বাইরে ভিনিসিয়ুসের নামে একটি রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি পরা একটি পুতুলকে একটি সেতুর সঙ্গে ঝুলিয়ে দেন একদল আতলেতিকো সমর্থক। সেই পুতুলের পাশে লেখা হয়, “মাদ্রিদ ভিনিসিয়ুসকে ঘৃণা করে।”
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে লা লিগার পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়েরের পর তদন্ত শেষে চার জনকে গ্রেফতার করে স্প্যানিশ পুলিশ। সোমবার মাদ্রিদের একটি আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করে।
এরপর লা লিগা এক বিবৃতিতে জানায়, “একজন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ঘৃণামূলক আচরণের অপরাধে, আর অতিরিক্ত ৭ মাস হুমকির অপরাধে। তিনি এই ঘটনার ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়েছেন, যার ফলে এই ঘটনার প্রভাব আরও বেড়ে যায়।”
বাকি তিন অভিযুক্তদের প্রত্যেকেই ৭ মাস বর্ণবাদের ঘৃণামূলক অপরাধে ও ৭ মাস হুমকির দায়ে কারাদণ্ড পেয়েছেন। সব অভিযুক্তই ভিনিসিয়ুস, রিয়াল মাদ্রিদ, লা লিগা ও স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন, যার ফলে তাদের শাস্তি কিছুটা কমেছে।
কারাদণ্ড ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে রাখা হয়েছে অতিরিক্ত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ। নিচে তা তুলে ধরা হল :
১. প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ১ হাজার ৮৪ ইউরো এবং অন্য তিনজনকে ৭২০ ইউরো জরিমানা করা হয়েছে।
২. চার জনকেই ভিনিসিয়ুস, তার বাসস্থান অথবা রিয়াল মাদ্রিদের ট্রেনিং গ্রাউন্ডের (ভালদেবাবাস) ১,০০০ মিটারের মধ্যে যেতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
৩. লা লিগা বা স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের আওতাভুক্ত যে কোনো ম্যাচের ৪ ঘণ্টা আগে থেকে ম্যাচ শেষের ৪ ঘণ্টা পর পর্যন্ত কোনো স্টেডিয়ামে প্রবেশে তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৪. অভিযুক্তদের ভিনিসিয়ুসের সাথে যেকোনোভাবে যোগাযোগ করা নিষিদ্ধ।
শাস্তির এই শর্তগুলো কারাদণ্ড শেষ হওয়ার চার বছর পর্যন্ত বহাল থাকবে।
ফরাসি ফুটবলে নিজের প্রতিভার জানান দিয়ে নাম লিখিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটিতে। পেপ গার্দিওলার দলে যোগ দিয়ে বড় স্বপ্নই দেখছেন ফ্রান্সের উদীয়মান মিডফিল্ডার রায়ান শেরকি। তার বিশ্বাস, সিটির জার্সিতেই পূরণ হবে তার ব্যালন ডি’অর জয়ের স্বপ্ন।
২১ বছর বয়সী শেরকি সম্প্রতি ফরাসি ক্লাব লিওঁ থেকে ৩৬.৬ মিলিয়ন ইউরোর ট্রান্সফার ফিতে যোগ দিয়েছেন সিটিতে। স্বপ্নের মত কাটানো গত মৌসুমে তিনি জিতেছেন ইউরোপা লিগের মৌসুম সেরা উদীয়মান ফুটবলারের খেতাব। জায়গা করে নেন ইউরোপা লিগের মৌসুমের সেরা একাদশেও। ছিলেন লিগ ওয়ানের শীর্ষ অ্যাসিস্ট করা খেলোয়াড়।
আরও পড়ুন
৫৮ বছর বয়সে ফুটবল মাঠে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন জাপানের কাজুয়োশির |
![]() |
বর্তমানে ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে সিটির সাথে ফ্লোরিডায় অবস্থান করছেন শেরকি। সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে শোনান ব্যালন ডি’অর জয়ের আশার কথা। “আপনি যদি রদ্রিকে দেখেন, সে এখানে খেলেই কিন্তু ব্যালন ডি’অর জিতেছে। তাই এটা তো পরিষ্কার যে, ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলে এটা সম্ভব। আমি এখানে এসেছি জেতার জন্যই। আর আমি জানি ক্লাবও সবকিছু জিততে চায়। তাই এটাই আমার জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ।”
গত মৌসুমে লিওঁর হয়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখিয়েই মূলত সিটি সহ অন্যান্য শীর্ষ ক্লাবের নজরে আসেন শেরকি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৪ ম্যাচে গোল করেন ১২টি, আর অ্যাসিস্ট ২০টি।
আর এই কারণেই শেরকিকে বর্তমানে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সম্ভাবনাময় তরুণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। চলতি মাসেই স্পেনের বিপক্ষে হয়েছে ফ্রান্স জাতীয় দলের অভিষেক। আর সিটির হয়ে অভিষেক হয়ে যেতে পারে আগামী বুধবার ফিলাডেলফিয়ায় মরক্কোর ক্লাব উইদাদ এসির বিপক্ষে ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচ দিয়ে।
পেশাদার ক্যারিয়ারের যে বয়স, সেই বয়সে অনেকেই চলে যান অবসরে। তবে জাপানের কিংবদন্তি ফুটবলার কাজুয়োশি 'কিং কাজু' মিওরা ৫৮ বছরেও যেন থামবার পাত্র নন। ৫৮ বছর বয়সে চোট কাটিয়ে ফিরেছেন পেশাদার ক্যারিয়ারের ৪০তম মৌসুমে।
সম্প্রতি আতলেতিকো সুজুকার হয়ে ওয়াইএসসিসি ইয়োকোহামার বিপক্ষে জাপান ফুটবল লিগ (চতুর্থ স্তর) ম্যাচে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে এই মৌসুমে প্রথমবার খেলেন কাজুয়োশি। ম্যাচের শেষের দিকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামেন তিনি। তার দল জেতে ২-১ গোলে।
২০২৪ সালের জুনে ১৮ মাসের ধারের চুক্তিতে সুজুকায় যোগ দেন কাজুয়োশি। তবে জানুয়ারিতে পাওয়া চোটের কারণে এই মৌসুমে গত সপ্তাহের আগ পর্যন্ত মাঠে নামতে পারেননি অভিজ্ঞ এই ফুটবলার। গত রবিবারের ম্যাচে অবশেষে হয়েছে তার প্রত্যাবর্তন।
আরও পড়ুন
গাড়ি বিক্রেতা-ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ে গড়া অকল্যান্ডের অদ্ভুত ক্লাব বিশ্বকাপ যাত্রা |
![]() |
ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কাজুয়োশি বলেন,
“আমি আবারও মাঠে নিজের সেরাটা দেখাতে চাই। সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাদের সহায়তা পেয়ে আমি আবার ফিরতে পেরেছি। এখন এই জায়গা থেকে আমি আরও গতি বাড়াতে চাই।”
কাজুয়োশি সেই ১৯৮৬ সালে ব্রাজিলের সান্তোস ক্লাবের হয়ে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে জাপানের ভার্দি কাওয়াসাকির হয়ে জিতেছেন টানা দুটি জে-লিগ শিরোপা। লম্বা এক ক্যারিয়ারে খেলেছেন ব্রাজিল, ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালের বিভিন্ন ক্লাবে। আর জাপান জাতীয় দলের হয়ে ৮৯ ম্যাচে করেছেন ৫৫ গোল।
৩২ দলের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা আগেও যেমন ছিল, আসর শুরুর পরও তা চলছে সমানভাবেই। বায়ার্ন মিউনিখ ও নিউজিল্যান্ডের সেমি-প্রফেশনাল দল অকল্যান্ড সিটির মধ্যকার একপেশে ম্যাচের পর প্রশ্নটা জোড়াল হয়েছে আরও। তবে ফুটবলের বিশ্বায়নের দিক চিন্তা করলে ব্যাপারটা দারুণ কিছুই বটে। কলেজের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে শুরু করে মেকানিকদের নিয়ে গড়া একটা দল খেলছে বায়ার্নের মত শীর্ষ ক্লাবের বিপক্ষে, এটা তো কেবল স্বপ্নেই সম্ভব!
ক্লাব বিশ্বকাপের মঞ্চে এমন বিশাল ব্যবধানে জয় আগে দেখা যায়নি। কিন্তু চলমান ক্লাব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দিনেই সেটিই ঘটিয়েছে বায়ার্ন। জার্মান জায়ান্টরা ১০-০ গোলে স্রেফ উড়িয়ে দিল অকল্যান্ড সিটিকে - যা এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের নতুন রেকর্ড।
বিরতির আগেই ৬ গোল করে ফেলা বায়ার্ন যেভাবে ছেলেখেলা করছিল প্রতিপক্ষকে নিয়ে, তাতে ১২-১৫টা গোল হলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকত না। জামাল মুসিয়ালা হ্যাটট্রিকে শেষ পর্যন্ত তারা জিতেছে ‘মাত্র’ ১০ গোলে।
পুরো ম্যাচে গোলের জন্য বায়ার্ন শট নিয়েছে ৩১টি, অন টার্গেট ১৭টি। আর অকল্যান্ড? গোটা ম্যাচে মাত্র ১টা শটই নিতে পেরেছে তারা। সেটাও বা কম কি! এতোটা একপেশে লড়াইয়ে তাদের কাছ থেকে এর বেশি আশা করাটাও যে বোকামির শামিল।
আরও পড়ুন
সিটিতে যোগ দিয়ে ব্যালন ডি'অরের স্বপ্ন দেখছেন শেরকি |
![]() |
সব জায়গাতেই যে দুই দলের অবস্থান দুই মেরুতে। বায়ার্নের স্কোয়াডের বার্ষিক আয় ৯৫১.৫ মিলিয়ন ইউরো, আর অকল্যান্ড স্কোয়াডের আয়? মাত্র ৪৮৮.০০০ ইউরো!
স্কোয়াডের দলগত ট্রান্সফার মূল্য হিসাবে বায়ার্নের নামের পাশে রয়েছে যেখানে প্রায় ৯০৪ মিলিয়ন ইউরো, সেখানে অকল্যান্ডের মূল্য মাত্র ৪.৫৮ মিলিয়ন ইউরো!
অকল্যান্ডের সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া খেলোয়াড়ের আয় মাত্র ৬৬ ইউরো। সেখানে বায়ার্নের তারকা স্ট্রাইকার হ্যারি কেইনের এক সপ্তাহের বেতন (৪.০০০০ ইউরো) পেতে অকল্যান্ডের সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া খেলোয়াড়ের লাগবে ১১৭ বছর!
পেশাদার সব ফুটবলার নিয়ে যেখানে গড়া বায়ার্নের স্কোয়াড, সেখানে অকল্যান্ডের আছেন অপেশাদার সব খেলোয়াড়, যারা অন্য কাজের ফাঁকে খেলেন ক্লাবের হয়ে। লেফট-ব্যাক নাথান লোবো ক্লাব বিশ্বকাপ চলাকালীন হোটেল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিচ্ছেন। দলের অন্য খেলোয়াড়রা কেউ প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক, কেউ কোকা-কোলার সেলস বিক্রয় প্রতিনিধি, কেউবা আবার গাড়ি বিক্রেতা।
এরপরও জানতে চান দুই দলের র্যাঙ্কিং ব্যবধান? বায়ার্ন আছে ৬ নম্বরে। আর অকল্যান্ড ৫ হাজার ৭৪তম স্থানে।
আরও পড়ুন
৫৮ বছর বয়সে ফুটবল মাঠে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন জাপানের কাজুয়োশির |
![]() |
বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব আর সেমি-প্রফেশনাল একটি দলের মাঝে এত এত ব্যবধানের প্রভাব তাই মাঠেও ছিল বিস্তর। তবু অকল্যান্ড সিটির জন্য এটা ছিল একটি স্বপ্নের রাত, যেখানে ১০ গোল খেলেও তারা ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে বড় কিছু খেলোয়াড়দের বিপক্ষে খেলার সুযোগ তো পেয়েছে, যা তাদের কাছে একটা স্বপ্নই ছিল এতদিন ধরে। এটাই হয়ত এই ক্লাব বিশ্বকাপের স্বার্থকতা।
লুসিয়ানো স্পালেত্তিকে ছাঁটাইয়ের পর নতুন কোচ খুঁজে নিতে বেশি সময় নিচ্ছে না ইতালীয় ফুটবল ফেডারেশন (এফআইজিসি)। ইতালি জাতীয় ফুটবল দলের নতুন কোচ হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক মিডফিল্ডার জেনারো গাত্তুসো, যা নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির প্রধান প্রতিনিধি জানলুইজি বুফন।
সবশেষ আন্তর্জাতিক বিরতিতে নরওয়ের কাছে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ৩-০ ব্যবধানে হারের পর স্পালেত্তিকে বরখাস্ত করে এফআইজিসি। এরপর তার অধীনে শেষ ম্যাচে মোলডোভার বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পায় ইতালি। এরপর অবশ্য পরবর্তী কোচ হিসেবে বেশি আলোচনায় এসেছিল ক্লাউদিও রানিয়েরির নাম। শেষ পর্যন্ত দায়িত্বটা পেতে যাচ্ছেন আরেক ইতালিয়ান কোচ গাত্তুসো।
আরও পড়ুন
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে বিপাকে ইন্তারের ইরানিয়ান ফরোয়ার্ড তারেমি |
![]() |
সম্প্রতি ইতালির স্টেট ব্রডকাস্টার রাই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইতালির বিশ্বকাপ জয়ী গোলকিপার বুফন জানান গাত্তুরসোর নিয়োগের বিষয়টি। “আমরা এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি, এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা। প্রেসিডেন্ট আর পুরো ফেডারেশন বিষয়টি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। আমাদের বিশ্বাস, শেষ পর্যন্ত আমরা সেরা সিদ্ধান্তই নিয়েছি।”
৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ইতালি জাতীয় দলের হয়ে ৭৩টি ম্যাচ খেলেছেন। ছিলেন ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও। সবশেষ কোচ হিসেবে ছিলেন ক্রোয়েশিয়ান ক্লাব হাজদুক স্প্লিটের দায়িত্বে। পারস্পরিক সমঝোতায় সেখান থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
আর কোচিং ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে, সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিয়নে খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে ভুমিকার মাধ্যমে। এরপর এসি মিলান, নাপোলি, ভ্যালেন্সিয়া, মার্সেইসহ বিভিন্ন ক্লাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তার কোচিং ক্যারিয়ারের একমাত্র শিরোপা আসে ২০২০ সালে, নাপোলির হয়ে জেতেন কোপা ইতালিয়া। এরপর ২০২১ সালে ফিওরেন্তিনায় দায়িত্ব নেওয়ার ২২ দিনের মাথায় বাতিল করেন চুক্তি।
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৬ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
২০ দিন আগে
২১ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৮ দিন আগে