
ফরম্যাট বদলে গেছে, বদলে গেছে কোচ থেকে শুরু করে দলের বড় একটা অংশ। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বের ফিরতি লেগের ম্যাচ বলেই বার্সেলোনা ভক্তদের মনে ফিরে আসছে দুটি তিক্ত অভিজ্ঞতা। প্রথম লেগে বড় জয় পাওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত বাদ পড়ার ঘটনা যে সহজেই ভোলার নয়। রোমা ও লিভারপুলের বিপক্ষে সেই দুই লড়াইয়ে প্রথম লেগে তাও ছিল বড় জয়। সেখানে এবার ইন্তার মিলানের বিপক্ষে প্রথম লেগে হান্সি ফ্লিকের দল করেছে ড্র। দুর্দান্ত ফর্মে থাকলেও তাই শেষ হাসি হাসতে হলে অতীতের সেই ‘ভূত’ তাড়ানো কিছুটা হলেও কঠিন হতে পারে বার্সেলোনার জন্য।
শুরুটা ছিল রোমাকে দিয়ে। লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজদের নিয়ে গড়া বার্সেলোনার সেই দল শেষ আটের প্রথম লেগে ঘরে মাঠে হেসেখেলেই জেতে ৪-১ গোলে, যেখানে দুটি ছিল আবার আত্মঘাতী গোল। তিন গোলে এগিয়ে থাকায়, আর সাথে দল হিসেবে রোমার সেই সময়ের সেরা পর্যায়ে না থাকা মিলিয়ে বার্সেলোনার সেমিফাইনাল নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছিল। তবে বিধিবাম!
আরও পড়ুন
| ব্রাজিল নয়, জাতীয় দলে রাফিনিয়ার প্রথম পছন্দ ছিল ইতালি! |
|
ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে প্রথম লেগে গোল করা এদিন জেকো শুরুতেই গোল করে ম্যাচ জমিয়ে দেন। ফেভারিট হিসেবে মাঠে নামা বার্সেলোনা অতিরিক্ত ডিফেন্সিত হতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত হজম করে বসে আরও দুই গোল। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-৪। তবে সেই সময়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিপক্ষের মাঠে গোলের হিসেবে এগিয়ে বার্সাকে কাঁদিয়ে সেমিতে চলে যায় রোমাই।
এই ঘটনা যে স্রেফ ‘ফ্লুক’ ছিল না, তা প্রমাণ করতে যেন বার্সেলোনা মঞ্চস্থ করে প্রায় একই রকমের আরেকটি পারফরম্যান্স। সেমিফাইনালে কাম্প নাউয়ে প্রথম লেগে লিভারপুলকে কোনঠাসা করে মেসির দুটি ও সুয়ারেজের এক গোলে দলটি জয় পায় ৩-০ ব্যবধানে। আগের বছর রোমার কাছে ওই হারের পরও দ্বিতীয় লেগে বার্সেলোনা ফাইনালে খেলার পক্ষেই ভোট ছিল বেশি।
তবে আরও একবার তিন গোলের লিড নিয়ে ভজকট পাকিয়ে ফেলে বার্সেলোনা। ৫৩ মিনিট পর্যন্ত অ্যানফিল্ডে এক গোল হজম করলেও এরপরই খেই হারায় তারা। একে একে তিনটি গোল করে বসে লিভারপুল। রোমার বিপক্ষে সেই হারের তরতাজা স্মৃতির কারণেই কিনা, এই অর্ধে প্রতিটি গোল হজক করার সাথে সাথে যেন আরও মলিন ফুটবল উপহার দিতে থাকে বার্সেলোনা। তারই প্রতিশ্রুতিতে আসে বহুল চর্চিত সেই ‘কর্নার টেকেন কুইকলি’ খ্যাত গোলটি, যেখানে বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের অপ্রস্তুত থাকার সুযোগ নিয়ে আচমকাই গোল করে লিভারপুল। ৪-৩ গোলে হারের পর বিধ্বস্ত মেসি-পিকেদের চেহারাই বলে দিচ্ছিল, কীভাবে কি হয়ে গেল সেটা যেন তারা ঠাওরই করতে পারছেন না।
বুধবার মিলানে যে ইয়ামাল-পেদ্রিদেরও একই অভিজ্ঞতা হবে না, ঠিক এই মুহূর্তে জোর গলায় সেটা বোলার অবস্থা নেই বার্সেলোনার বড় সমর্থকেরও। রণটা খুব স্পষ্ট, সাম্প্রতিক ফর্ম কিছুটা খারাপ গেলেও গোটা মৌসুমে ইন্তার খেলছে দুর্দান্ত ফুটবল। তাছাড়া নকআউট পর্বে কোনো দলকেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। এর সাথে যোগ হবে প্রথম লেগে তিন গোল খাওয়া এবং দুটি নকআউট পর্বের ম্যাচে তিন গোলে এগিয়ে থেকেও বাদ পড়ার ভুলে যাওয়ার স্মৃতি।
তবে এবার ভিন্ন কিছু হওয়ার বার্তাও আছে বার্সেলোনার এই দলে। দায়িত্ব নিয়ে প্রথম মৌসুমেই দলটিকে রাতারাতি বদলে দেওয়া হান্সি ফ্লিকের কাছে ইতিবাচক ফুটবলই শেষ কথা। দল ৩-৪ গোলে জিতলেও তাই তিনি আক্ষেপ করেন শেষের দিকে মিস করা একটি গোল নিয়ে। দল লিড নিলে ব পিছিয়ে থাকলেও তিনি খেলান হাই প্রেসিং ফুটবল। ফলে ৯০ মিনিট জুড়ে এই দলটিকে আটকে রাখা প্রায় অসম্ভব এক লড়াই হতে পারে ইন্তারের জন্য।
আরও পড়ুন
| লিভারপুল ছাড়ার ঘোষণা আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের |
|
এর সাথে যোগ করতে হবে লামিন ইয়ালাম আতঙ্ক, যিনি প্রথম লেগে রীতিমত নাচিয়ে ছেড়েছেন ডিফেন্ডারদের। গোলও করেন একটি। সাথে আছেন সেরা ফর্মে থাকা রাফিনিয়া। আর চোট কাটিয়ে এই ম্যাচ দিয়ে বদলি হিসেবে মাঠে ফেরার ভালো সম্ভাবনাই আছে তারকা স্ট্রাইকার রবার্ট লেভনদভস্কির, যাকে ছাড়াই কোপা দেল রের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে ফ্লিকের দল।
সব মিলিয়ে অতীতের ভূত ফিরে আসার সম্ভাবনা যেমন আছে, বার্সেলোনার সামনে তেমনি সুযোগ আছে ঐতিহাসিক ট্রেবল জয়ের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়ার। ফ্লিকের দল কী সেটা করতে পারবে? উত্তর জানা যাবে যার কয়েক ঘণ্টা পরই।
No posts available.
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ৮:৪৭ পিএম
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ৫:৫৫ পিএম

প্রায় সাড়ে তিন মাস পর মাঠে ফেরাটা সুখকর হল না বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের। চার দিনের ব্যবধানে দুবার হারল পিটার বাটলারের দল। প্রথম ফিফা প্রীতি ম্যাচে ৩-০ গোলে হারের পর সোমবার থাইল্যান্ডের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচে পরাজয়ের ব্যবধান ৫-১। প্রায় দুই বছর পর বাংলাদেশের জালে ৫ গোল দিল কোনো দল। তারপরও এই ম্যাচের পর বাংলাদেশ কোচ খুশি। বলেছেন- ‘থাইল্যান্ডে এই টার্ফে আমরা দশবার খেললে নয়বারই হারব।’ তবে নিজেদের মাঠে খেলা হলে টক্কর দিতে পারতেন বলেও জানান ব্রিটিশ কোচ।
ডিফেন্ডারদের একাধিক ভুলে এদিন গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের চেয়ে শারীরিক দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন আফঈদা খন্দকাররা। সেটি মনে করিয়ে দিয়ে কোচ বাটলার ম্যাচ শেষে নিজের প্রতিক্রিয়ায় বলেন,
‘খেলার কিছু দিক নিয়ে আমি সত্যিই সন্তুষ্ট, যদিও কিছু জায়গায় আমরা সংগ্রাম করবই। বিশেষ করে শারীরিক দিক, রিসোর্স, অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধায়।’
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৫১ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে এদিন বাংলাদেশকে বেশ অসহায় লেগেছে। প্রতিপক্ষ কেবল র্যাঙ্কিংয়েই এগিয়ে নয়, দুইবার বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাও আছে তাঁদের। এমন দলের বিপক্ষে তাঁদেরই মাঠে খেলাটা চ্যালেঞ্জিং ছিল আফঈদাদের জন্য। ম্যাচ শেষে তাঁরা পাশে পেয়েছেন কোচ বাটলারকে,
‘আমি দোষারোপ করি না, আবার অজুহাতও খুঁজি না। থাইল্যান্ডে এই টার্ফে আমরা দশবার খেললে নয়বারই হারব। আমরা নিজ মাঠে থাইল্যান্ডকে টক্কর দিতে পারি, কিন্তু এখানে এই পরিবেশে খুব কঠিন।’
সর্বশেষ এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেটিও ছিল তাঁদেরই মাঠে। বাছাইয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনকে ৭-০ গোলে পরাজিত করে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই দলের সঙ্গে এই দলের যেন বিস্তর ফারাক।
ম্যাচ শেষে তবুও ইতিবাচক বাটলার। এদিনের খেলায় তিনি সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছেন বলেও জানান,
‘তবুও আমি আমাদের মেয়েদের নিয়ে গর্বিত। তারা যেভাবে খেলেছে, যেভাবে লড়েছে, আমি খুশি। আমি মনে করি না থাইল্যান্ডের সঙ্গে তুলনা করা উচিত। তারা একেবারেই ভিন্ন স্তরের দল, সম্পূর্ণ আলাদা পর্যায়ে আছে। কিন্তু আমাদের মেয়েরা দারুণ সম্ভাবনা দেখাচ্ছে, এটা স্বীকার করতেই হবে।’
আগামী বছরের মার্চে এশিয়ান কাপে খেলবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গ্রুপে পড়েছে ৯ বারের চ্যাম্পিয়ন চীন ও তিনবারের চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়া। আরেক প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান। ওই টুর্নামেন্টের আগে প্রস্তুতি হিসেবে থাইল্যান্ডে ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ।

সান্তিয়াগো— ভ্রমণ আর গুপ্তধনের সন্ধান ছিল যার একমাত্র নেশা। বিশ্ব দেখার ইচ্ছে নিয়ে দক্ষিণ স্পেনের আন্দালুসিয়ার ছোট্ট গ্রাম থেকে মেষপাল সমেত বেরিয়ে পড়েছিলেন। নতুন দেশ আর সুন্দর ভবিষ্যতের আশায়, বাবার আশীর্বাদপুষ্ট ১৮ বছর বয়সি সান্তিয়াগো ছুটেছিলেন মিশরের পথে, স্বপ্নের খোঁজে।
পথে ঘটেছিল অনেক কিছু। সলোমনের রাজার সাক্ষাৎ, মরক্কোর বাজারে টাকা খোয়ানো, ক্রিস্টাল ব্যবসা, কারাভানের সঙ্গে মরুভূমি মাড়ানো, দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়া, আলকেমিস্টের সাক্ষাৎ, ফাতিমার প্রেমে হাবুডুবু— সবশেষে গন্তব্যে গিয়ে বুঝেছিলেন, আসল গুপ্তধন তাঁর দেশেই, বাড়ির পাশের ভাঙা গির্জায়।
ব্রাজিলিয়ান লেখক পাওলো কোয়েলহোর অমর সৃষ্টি ‘দ্য আলকেমিস্ট’-এর সান্তিয়াগো অবশেষে স্বপ্ন ও সুখ খুঁজে পান। শত ঝঞ্জা পেরিয়ে উপলব্ধি করেন জীবনের প্রকৃত অর্থ। সুকান্ত ভট্টাচার্যের সেই কবিতায় যেমন বলা হয়েছিল—‘আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ, স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার।’ ঠিক সেই স্পর্ধা ও সাহসই দেখিয়েছিলেন সান্তিয়াগো।
তেমনই আঠারো বছর বয়সে লামিন ইয়ামালও এগিয়ে চলেছেন বাষ্পের বেগে। আঠারোর ঘরে পা দেওয়া এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড এখন পার করছেন নানা ঝড় ঝাপটা। কখনও ভুল করছেন, কখনও বিপাকে পড়ছেন; কানে আসছে সমালোচনার ধ্বনি। গোল না পাওয়া, অফ ফর্মে থাকা, বাইরের জীবনকে প্রাধান্য দেওয়া, প্রেমে মশগুল থাকা— সব মিলিয়ে এক ভিন্নরকম সময় পার করছেন বার্সেলোনার তরুণ উইঙ্গার। অথচ ২০২৪-২৫ মৌসুমে গোল-অ্যাসিস্টে দারুণ এক প্রতিভার জানান দিয়েছিলেন। ব্যালন ডি’অর তালিকায়ও ছিলেন ওপরের সারিতে।
নতুন মৌসুমে পা দেওয়া ইয়ামালকে গিলে খাচ্ছে ব্যর্থতা। লা লিগায় এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ৬ ম্যাচে দুটি গোল, চ্যাম্পিয়নস লিগে তিন ম্যাচে একটি। প্রত্যাশার চেয়ে যা কিছুটা কমই বটে। তবে এই সময়ে ইনজুরির সঙ্গেও লড়াই করতে হয়েছে, লিগে বার্সেলোনার ১০ ম্যাচের চারটিই খেলতে পারেননি। ফিফা উইন্ডোতে খেলতে গিয়ে চোট, শারীরিক সমস্যা আর কম গেম টাইম। অস্বস্তিকর অধ্যায়ে বার্সার এই লেফট উইঙ্গার।
লামিন নতুন করে সমালোচিত হচ্ছেন মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোর পর। রাফিনিয়া ও রবার্ট লেভানডফস্কির অনুপস্থিতিতে বাড়তি দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর। কোচ হ্যান্সি ফ্লিক ও সমর্থকরা তাকিয়ে ছিলেন ইয়ামালের দিকে। কিন্তু রোববার রাতে ভুলে যাওয়ার মতো একটি ম্যাচ খেলেছেন এই স্প্যানিয়ারর্ড। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর দর্শকদের দুয়োতে অতিষ্ঠ ছিলেন তিনি। রিয়ালের লেফটব্যাক আলভারো কারেরাস যেন তাঁকে একরকম পকেটেই ঢুকিয়ে রেখেছিলেন। শট নেওয়ার সুযোগ পাননি, ড্রিবলেও সুবিধা করতে পারেননি। পুরো ম্যাচে দুটি শট ও দুটি সুযোগ তৈরি করেছেন, আটবার ড্রিবলের চেষ্টায় সফল হয়েছেন মাত্র চারবার।
মাঠের বাইরের ঘটনাতেও ছিলেন ইয়ামাল। তর্কে জড়ান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও দানি কারভাহালের সঙ্গে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা জানিয়েছে, রিয়ালের রাইট-ব্যাক কারভাহাল তাঁকে বলেন, ‘তুমি অনেক কথা বলো, এখন বলো দেখি!’ ইয়ামাল তখন কারভাহালের দিকে এগিয়ে গেলে তাঁকে থামিয়ে দেন এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। ভিনিসিয়ুস নাকি মজা করে বলেন,
‘ব্যাক পাস ছাড়া আর কিছুই তো করলে না! শুধু ডিফেন্ডারদের কাছেই বল দিলে!’
মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে ইয়ামালের আচরণে ক্ষুব্ধ ছিল বার্নাব্যুর যোদ্ধারা। প্রশ্ন উঠছে— এমন ঘটনার পর ইয়ামাল কি থমকে যাবেন?
মাত্র সাত বছর বয়সে লা মাসিয়ায় যোগ দেওয়া। ১৫ বছর ৯ মাস বয়সে রিয়াল বেটিসের বিপক্ষে বার্সেলোনার হয়ে অভিষেক। ১৬ বছর বয়সে গোল-অ্যাসিস্টে রেকর্ড, ১৬ বছর ৫৭ দিনে জাতীয় দলে অভিষেক, স্পেনের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা— সবই যেন এক অবিশ্বাস্য উত্থান। কিন্তু এখানেই কি শেষ?
সান্তিয়াগোর মতো ১৮ বছর বয়সি ইয়ামাল ভীরু বা কাপুরুষ নন। প্রয়োজন কেবল নিয়ন্ত্রিত জীবনধারা— বাবা-মায়ের দিক নির্দেশনা, প্রেমিকা নিকোর সহযোগিতা, আর কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের সঠিক দিকনির্দেশ। তবেই সান্তিয়াগোর মতো এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ানো ইয়ামাল খুঁজে পাবেন আসল গুপ্তধন এবং নিজের হারানো পারফরম্যান্স।
পাওলো কোয়েলহো যেমন নিজেদের মাকতুব বইয়ে লিখেছেন, ‘বর্তমানকে উপভোগ করার সর্বোত্তম উপায় হলো অতীত ভুলে যাওয়া।’ নিজেকে জানার, বোঝার মধ্য দিয়েই ইয়ামাল পৌঁছাতে পারেন নিজের প্রকৃত গন্তব্যে। তার সঙ্গে ‘চুপ থাকা’ও হতে পারে তাঁর জন্য সবচেয়ে কার্যকর নিয়ামক। ইয়ামালের উচিত, কোথায় থামতে হবে, সেটাও ভালোভাবে জানা। কারণ, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে তাঁর কথার আগুনের আঁচ লেগেছে ৭৮ হাজার দর্শকদেরও।
সাবেক বার্সা মিডফিল্ডার রাফিনিয়া বলেছেন,
‘বয়সের কারণেই এমন আচরণ ইয়ামালের। তাঁর কথাই রিয়ালকে বাড়তি প্রেরণা দিয়েছে।’
আর রিয়ালের সাবেক তারকা গুতির মন্তব্য—
‘রিয়াল আর বার্সার ইতিহাস এখনো পুরোপুরি বোঝার বয়স হয়নি ইয়ামালের। ওর মুখে এমন কথা শুনলে আমারও ভালো লাগত না।’

সিরি’আ লিগে সর্বশেষ ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয় পেয়েছে নাপোলি। এ জয়ে ২০২৫-২৬ মৌসুমে শীর্ষস্থান অক্ষুণ্ন রেখেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। আসরে ৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট ইতালির এই জায়ান্টদের।
শনিবার ইন্টারের বিপক্ষে জয়ের দিনে চোটে পড়েন কেভিন ডি ব্রুইনে। ম্যাচ ঘড়ির ৩৩তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করার সময় উরুতে গুরুতর চোট পান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে মাঠ থেকে তুলে নেওয়া হয় তাঁকে।
জানা গেছে, দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে যাচ্ছেন ডি ব্রুইনে। ম্যাচ শেষে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্ক্যানের পর দেখা যায়, ডি ব্রুইনের উরুতে গুরুতর মাত্রার চিড় ধরা পড়েছে।
ডি ব্রুইনের ইনজুরি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি নাপোলি। তবে সাবেক ম্যানচেস্টার সিটি প্লেমেকারকে যে দীর্ঘ সময় বাইরে থাকতে হতে পারে, সে ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছে ক্লাবটি।
সিরি’আয় ৭ ম্যাচে ৪টি গোল করেছেন ডি ব্রুইনে। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই দারুণ সব সুযোগ তৈরি করে এবং মধ্যমাঠ নিয়ন্ত্রণে রেখে দলকে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সাহায্য করেছেন বেলজিয়ান মিডফিল্ডার।

ম্যাচের আগের দিনই বাংলাদেশ পিটার বাটলার বলেছিলেন- ’তাঁদের বেঞ্চ দেখে মনে হলো এখানে আরেকটা দল বসে আছে। ওরা সম্ভবত পুরো ভিন্ন এক দল মাঠে নামাবে (আজ)।’ হলও তাই; ৭ পরিবর্তন নিয়ে আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামে থাইল্যান্ড। আর সেই দল নিয়ে লাল সবুজের মেয়েদের উড়িয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়েও প্রতিপক্ষের সামনে দেয়াল তুলতে পারেনি পিটার বাটলারের দল।
সোমবার ব্যাংককের চালেম ফ্রা কিয়াত স্পোর্টস সেন্টারে বাংলাদেশকে ৫-১ ব্যবধানে হারিয়েছে থাইল্যান্ড। শুক্রবার প্রথম ম্যাচে হারের ব্যবধান ছিল ৩-০। এদিন থাইল্যান্ডের হয়ে জোড়া গোল করেছেন জিরাপোন মংকোলদি ও ম্যাডিসন ক্যাস্টিন। এক গোল আসে অধিনায়ক সাওয়ালাক পেঙ্গাম পা থেকে। বাংলাদেশের হয়ে ব্যবধান কমানো গোলটি করেন শামসুন্নাহার জুনিয়র।
এই ম্যাচে সবচেয়ে দৃষ্টিকটু লেগেছে বাংলাদেশর রক্ষণ। পাঁচজন রক্ষণে রেখেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার ছিলেন রক্ষণের নেতৃত্বে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কোহাতি কিসকু, শামসুন্নাহার সিনিয়র, নবিরন খাতুন ও শিউলি আজিম।
সর্বশেষ এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পর থেকেই কথা উঠে আফঈদার পারফরম্যান্স নিয়ে। ঘরের মাঠে অনূর্ধ্ব-২০ সাফের পর অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইয়েও তাঁর থেকে আশানুরূপ পারফরম্যান্স দেখা মেলেনি। এদিনও সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছেন তিনিই।
গোলকিপার রুপনা চাকমা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন। তা না হলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। একাধিক সেভ করেছেন এই ম্যাচে। লেফট উইং দিয়ে বেশ কিছু আক্রমণ শানান ঋতুপর্ণা চাকমা। তবে নিখুত ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল মেলেনি।
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটের শুরুতেই গোলের সুযোগ মিস করে থাইল্যান্ড। কর্নারে কাছ থেকে আসা ক্রসে প্রথমে পা ছোয়াতে পারেননি সাওয়ালাক পেঙ্গাম। পরে গোলমুখের সামনে শট নিয়ে আকাশে উড়িয়ে মারেন থাই ফরোয়ার্ড ম্যাডিসন ক্যাস্টিন।
পঞ্চম মিনিটে দলকে বিপদে ফেলছিলেন আফঈদা। স্লো দুর্বল রানের সুযোগ নিয়ে পেছন থেকে টপকে বলে প্রায় টোকা দিচ্ছিলেন থাই অধিনায়ক। শেষ মুহূর্তে অনেকটা উপরে উঠে বিপদমুক্ত করেন গোলকিপার রুপনা।
১২ মিনিটে অধিনায়ক পেঙ্গামের গোলে এগিয়ে যায় থাইল্যান্ড। জিরাপোন মংকোলদি রক্ষণচেড়া পাস ধরে বেরিয়ে যান পেঙ্গাম; তাঁকে তাড়া করেও পাননি শামসুন্নাহার ও শিউলি। বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলকিপারকে পরাস্ত করে নিখুত শটে বাংলাদেশের জালে বল জড়ান পেঙ্গাম।
পিছিয়ে পড়ে পরপর তিনটি আক্রমণ করে বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে কার্যকরী ফিনিশিং দেখা যায়নি।
২৩ মিনিটে হাইলাইন ডিফেন্সে বাংলাদেশের পাতা অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে থাইল্যান্ডের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মংকোলদি। কাঞ্জনাপোর্ন সায়েনখুনের বাড়ানো লং পাসে আমলে নিতে সহজেই বাংলাদেশের দুই ডিফেন্ডার নবীরণ খাতুন ও আফঈদা খন্দকারকে পেছনে ফেরেন তিনি। তাঁকে ঠেকাতে এগিয়ে আসেন রুপনা চাকমা। মংকোলদিও বুদ্ধিদীপ্ত ফরোয়ার্ডের মতো রুপনার মাথার ওপর দিয়ে জালে পাঠান বল।
এক মিনিট পর আবারও রক্ষণের ভুলে গোল হজম করতে বসেছিল বাংলাদেশ। বক্সের অনেকটাই সামনে এগিয়ে এসে বিপদমুক্ত করেন রুপনা। ২৭ মিনিটেও আফঈদা, শামসুন্নাহারদের স্লো রানের সুযোগ নিচ্ছিলেন থাইল্যান্ড ফরোয়ার্ড চাতোয়াং রোদঙ, এবারও দৌড়ে এসে ক্লিয়ার করেন বাংলাদেশ গোলকিপার।
২৯ মিনিটে পাওয়া প্রথম কর্নার থেকে ব্যবধান ২-১ এ নামিয়ে আনে বাংলাদেশ। মারিয়া মান্দার নেওয়া কর্নার কিকে লাফিয়ে শামসুন্নাহার জুনিয়র হেড নিলে বল পোস্টে লেগে জালে প্রবেশ করে।
কিন্তু পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফের ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় থাইল্যান্ড। লং পাস ধরে অনেকটা পেছন থেকে আফঈদা এবং শামসুন্নাহার সিনিয়রকে টপকে বলের নিয়েন্ত্রণ নিয়েই বাংলাদেশের জাল কাঁপান থাইল্যান্ডের ফরোয়ার্ড ম্যাডিসন।
৪০ মিনিটে আবারও বাংলাদেশ অধিনায়ক আফঈদার ভুলে গোল হজম করতে বসেছিল বাংলাদেশ। এই ডিফেন্ডারের পায়ের নিচ দিয়ে বল বের করেন প্রতিপক্ষের এক ফরোয়ার্ড। তবে রুপনার দারুণ সেভে ব্যবধান বাড়েনি। ৩-১ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিয়ে যায় লাল সবুজের মেয়েরা।
বিরতির পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে থাইল্যান্ড। ৫৪ মিনিটে থাই গোলরক্ষকের পাঠানো সরাসরি বল থেকে দলের চতুর্থ গোলটি করেন ম্যাডিসন, ম্যাচে নিজের দ্বিতীয়।
৫৭ মিনিটে নিজেদের বক্সে থাই ফরোয়ার্ড মংকোলদির পায়ে মেরে হলুদ কার্ড দেখেন কোহাতি। পেনাল্টির বাশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিকে ম্যাচে নিজের দ্বিতয়ী গোলটি করেন মংকোলদি। থাইল্যান্ড এগিয়ে যায় ৫-১ গোলে।
৬২ মিনিটে পেঙ্গামের শট রুপনা ঠেকিয়ে দিলেও পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি; ফিরতি শটে পোস্টের উপরে মারেন প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়ক।
৬৯ মিনিটে ম্যাডিসনের চিপ শট অল্পের জন্য খুজে পায়নি জালের দেখা। চার মিনিট পর রুপনার জোড়া সেভে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি থাইল্যান্ডের মেয়েরা। ৭৮ মিনিটে আরও একবার পোস্টের সামনে রুপনার বীরত্বে গোল হজম করেনি বাংলাদেশ। প্রতি আক্রমণে গোলকিপারকে একা পেয়েও শট নিতে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন মনিকা চাকমা। শেষ পর্যন্ত ৫-১ গোলের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাটলারের শিষ্যরা।

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ফিফা প্রীতি ম্যাচে লড়ছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। ব্যাংককের চালেম ফ্রা কিয়াত স্পোর্টস সেন্টারে প্রথমার্ধ শেষে ৩-১ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে গেছে পিটার বাটলারের দল।
এদিন দ্বিতীয় মিনিটের শুরুতেই গোলের সুযোগ মিস করে থাইল্যান্ড। কর্নারে কাছ থেকে আসা ক্রসে প্রথমে পা ছোয়াতে পারেননি সাওয়ালাক পেঙ্গাম। পরে গোলমুখের সামনে শট নিয়ে আকাশে উড়িয়ে মারেন থাই ফরোয়ার্ড ম্যাডিসন ক্যাস্টিন।
পঞ্চম মিনিটে দলকে বিপদে ফেলছিলেন আফঈদা। তাঁর দুর্বল রানের সুযোগ নিয়ে পেছন থেকে টপকে বলে প্রায় টোকা দিচ্ছিলেন থাই অধিনায়ক। শেষ মুহূর্তে অনেকটা উপরে উঠে বিপদমুক্ত করেন গোলকিপার রুপনা।
১২ মিনিটে অধিনায়ক পেঙ্গামের গোলে এগিয়ে যায় থাইল্যান্ড। জিরাপোন মঙলির রক্ষণচেড়া পাস ধরে বেরিয়ে যান পেঙ্গাম; তাঁকে তাড়া করেও পাননি শামসুন্নাহার ও শিউলি। বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলকিপারকে পরাস্ত করে নিখুত শটে বাংলাদেশের জালে বল জড়ান পেঙ্গাম।
পিছিয়ে পড়ে পরপর তিনটি আক্রমণ করে বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে কার্যকরী ফিনিশিং দেখা যায়নি।
২৩ মিনিটে হাইলাইন ডিফেন্সে বাংলাদেশের পাতা অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে থাইল্যান্ডের হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মংকোলদি। কাঞ্জনাপোর্ন সায়েনখুনের বাড়ানো লং পাসে আমলে নিতে সহজেই বাংলাদেশের দুই ডিফেন্ডার নবীরণ খাতুন ও আফঈদা খন্দকারকে পেছনে ফেরেন তিনি। তাঁকে ঠেকাতে এগিয়ে আসেন রুপনা চাকমা। মংকোলদিও বুদ্ধিদীপ্ত ফরোয়ার্ডের মতো রুপনার মাথার ওপর দিয়ে জালে পাঠান বল।
এক মিনিট পর আবারও রক্ষণের ভুলে গোল খেতে বসেছিল বাংলাদেশ। বক্সের অনেকটাই সামনে এগিয়ে এসে বিপদমুক্ত করেন রুপনা। ২৭ মিনিটেও আফঈদা, শামসুন্নাহারদের স্লো রানের সুযোগ নিচ্ছিলেন থাইল্যান্ড ফরোয়ার্ড চাতোয়াং রোদঙ, এবারও দৌড়ে এসে ক্লিয়ার করেন বাংলাদেশ গোলকিপার।
২৯ মিনিটে পাওয়া প্রথম কর্নার থেকে ব্যবধান ২-১ এ নামিয়ে আনে বাংলাদেশ। মারিয়ার নেওয়া কর্নার কিকে লাফিয়ে শামসুন্নাহার জুনিয়র হেড নিলে বল পোস্টে লেগে জালে প্রবেশ করে।
কিন্তু পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফের ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় থাইল্যান্ড। লং পাস ধরে অনেকটা পেছন থেকে আফঈদা এবং শামসুন্নাহার সিনিয়রকে টপকে বলের নিয়েন্ত্রণ নিয়েই বাংলাদেশের জাল কাঁপান থাইল্যান্ডের ফরোয়ার্ড ম্যাডিসন।
৪০ মিনিটে আবারও বাংলাদেশ অধিনায়কের ভুলে গোল হজম করতে বসেছিল বাংলাদেশ। এই ডিফেন্ডারের পায়ের নিচ দিয়ে বল বের করেন প্রতিপক্ষের এক ফরোয়ার্ড। তবে রুপনার দারুণ সেভে ব্যবধান বাড়েনি।