১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫:৪১ পিএম
বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচ মানেই অনেকটা সময় ধরেই দুই দলের খেলোয়াড় থেকে সমর্থক সবার মাঝেই বাড়তি রোমাঞ্চ। তাতে কথার লড়াইও জমে ওঠে বেশ। আসছে টেস্ট সিরিজকে সামনে রেখে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হাসান যা বলেছেন, তাই সেটার জবাবও দিয়ে দিয়েছেন রোহিত শর্মা। ভারত অধিনায়ক বলেছেন, প্রতিপক্ষ শিবির যা ইচ্ছা তা বলতেই পারে, তবে তারা এসবে মনোযোগ দিচ্ছেন না।
পাকিস্তানকে তাদেরই দেশে টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই করে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দল আছে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। ভারতের বিপক্ষে টেস্টে এখনও জয় না পেলেও এবার ভালো সম্ভাবনাই দেখা হচ্ছে সাকিব-মিরাজদের। দেশ ছাড়ার আগে শান্ত বলেছেন, দুই টেস্টেই জেতার জন্য খেলবেন তারা এবং সামর্থ্যের সেরাটা দিলে সেটা বাস্তবে রুপ নিতে পারে।
আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া সিরিজকে সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গ আসলে রোহিত উত্তর দেন স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে। “সব দলই ভারতকে হারাতে চায়, সবাই এটা উপভোগ করে। তাই তাদের মজা করতে দিন। আমরা ভিন্ন ভিন্ন দলের বিপক্ষে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। আমরা শুধু নিজেদের খেলায় মনোযোগ দেব। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া বা অন্য যে দলই হোক না কেন, আমাদের কৌশল একই থাকে। ইংল্যান্ডও এখানে প্রেস কনফারেন্সে অনেক কথাই বলেছিল, কিন্তু আমরা সেদিকে মনোযোগ দেই না। আমরা শুধু ভালো ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করি, প্রতিপক্ষ নিয়ে বেশি ভাবি না।”
বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সিরিজের পর ভারতের পরবর্তী টেস্ট সিরিজ ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে যেতে দুই দলের জন্যই সিরিজটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। অনেকেই তাই বাংলাদেশ সিরিজকে সেই সিরিজের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে দেখছেন।
তবে সরাসরি এতে আপত্তি জানিয়েছেন রোহিত। “এটা মোটেও (অস্ট্রেলিয়া সিরিজের) ড্রেস রিহার্সাল নয়, প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কোথায় খেলি, সেটা বিবেচ্য নয়। আমরা স্রেফ জিততে চাই, এই টেস্ট ও সিরিজ জিততে চাই। এটা ছাড়া খুব বেশি সামনের দিকে নজর দিচ্ছি না আমরা।”
দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভারত সবসময়ই দারুণ একটি দল। বিশেষ করে ঘরের মাটিতে। ফরম্যাট যাই হোক, নিজেদের মাঠে ভারত মাঠে নামে ফেভারিট হিসেবেই। কালেভদ্রে কিছু ম্যাচ প্রতিপক্ষ জিতলেও সিরিজ জেতাটা ভীষণ দুরূহ এক কাজই হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন।
তবে রোহিত মনে করেন, প্রতিটি ম্যাচ জেতার জন্যই তাদের শতভাগ উজাড় করে দিতে হয়, যা ব্যতিক্রম হবে বাংলাদেশের বিপক্ষেও। “দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হারলেই কথা শুরু হয়ে যাবে যে আমরা কীভাবে হেরে গেলাম সেটা নিয়ে। আমি জানি না অন্য দলগুলোর ক্ষেত্রে কী হয়, আমি শুধু নিজেদের নিয়েই বলতে পারি। আমাদের কাছে প্রতিটি সিরিজই গুরুত্বপূর্ণ। সব ম্যাচেই আপনাকে শতভাগ উজাড় করে দিতে হবে। আমরা ক্রিকেট খেলার জন্য খুব কম সময়ই পেয়েছি।”
৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩:০৩ পিএম
৮ নভেম্বর ২০২৪, ১:৪৬ পিএম
প্রথম ম্যাচে অল্প রান নিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে প্রায় হারিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। সেদিন বল হাতে দুর্দান্ত এক স্পেল করা হারিস রউফ আরও একবার জ্বলে উঠলেন। তার ফাইফারে লড়াই করার মত একটা স্কোরও গড়তে ব্যর্থ হল অজিরা। পেশাদার রান তাড়ায় পাকিস্তানকে বড় জয় এনে দিলেন ব্যাটাররা।
অ্যাডিলেডে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পাকিস্তান জয় পেয়েছে ৯ উইকেটে। অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ১৬৩ রানে গুটিয়ে সফরকারীরা ম্যাচ শেষ করেছে মাত্র ২৬.৩ ওভারেই। তিন ম্যাচের সিরিজে সমতা এখন ১-১।
আরও পড়ুন
হংকং সিক্সেসে’র ফাইনালে পাকিস্তান, হারলো অস্ট্রেলিয়া |
অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালোই ছিল। তিন বাউন্ডারিতে দুই ডিজিটে পা রাখার পরই অবশ্য খেই হারান জ্যাক-ফ্রেসার-ম্যাকগ্রাক। শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম শিকার ছিলেন তরুণ এই ডানহাতি ব্যাটার। আরেক ওপেনার ম্যাথু শর্টও ইতিবাচকভাবে ইনিংসের শুরু করলেও বড় করতে হন ব্যর্থ।
চারে নামা জস ইংলিস আগের ম্যাচে খেলেছিলেন দারুণ এক ইনিংস। এদিন অবশ্য হাসেনি তার ব্যাট। রউফের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে করতে পারেন ১৮ রান। এরপর থেকে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডারের ওপর ঝড় বইয়ে দেন রউফ। তার গতির সামনে হিমশিম খান অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা।
নিয়মিত বিরতিতে রউফ উইকেট নেওয়া চালিয়ে যান, ফলে অস্ট্রেলিয়া পায়নি বড় একটি জুটি। একপ্রান্তে স্টিভ স্মিথ কিছুটা লড়াই করেছিলেন, তবে মোহাম্মদ হাসনাইনের বলে ইতি ঘটে তার ৩৫ রানের ইনিংসের। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩৫ ওভারেই শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের। ৮ ওভারে ২৯ রানে ৫ উইকেট নেন রউফ।
আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়া সিরিজে পাকিস্তান দলে বাবর-শাহিন-নাসিম |
আগের ম্যাচে মাত্র ২০৩ রান নিয়েও দারুণ লড়াই জমিয়েছিল পাকিস্তান। তেমন কিছু করতে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল শুরুতে কিছু উইকেট। তবে ক্ল্যাসিক্যাল ও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের মিশ্রনে অজি বোলারদের দাঁড়াতেই দেননি দুই ওপেনার সাইম আইয়ুব ও আবদুল্লাহ শফিক। জুটিতে শতরানের পাশাপাশি দুজনই দেখা পান ফিফটির। কামিন্স-স্টার্ক-জাম্পার মত বিশ্বসেরা বোলারদের পাড়ার বোলার বানিয়ে তারা রানও তোলেন দ্রুততার সাথে।
জুটিতে বেশি আগ্রাসী থাকা সাইম যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে তার সেঞ্চুরি অনিবার্য বলেই মনে হচ্ছিল। তবে বিধিবাম। দলের জয় যখন নিশ্চিত, নেই রানের চাপ, সেই সময়ই ম্যাচের ধারার বিপরীতে আউট হয়ে যান ৮২ রানে। মাত্র ৭১ বলে ইনিংসটি সাজান ৫টি চার ও ৬ ছক্কায়।
বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন শফিকুল্লাহ (৬৯ বলে ৬৪*) ও বাবর আজম (২০ বলে ১৫*)।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল, অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত কোচ তিনি। জাতীয় দলে বেশ আগে একবার কাজ করলেও মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে আবারও বাংলাদেশ দলে দেখার আশা ছিল অনেকেরই৷ সম্প্রতি সেটা পেয়েছে পূর্ণতা। তিনি এখন জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ। নতুন দায়িত্ব নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেছেন, কোচিং ক্যারিয়ারের সব অভিজ্ঞতা দিয়ে জাতীয় দল তথা দেশের ক্রিকেটের উন্নতির জন্য কাজ করবেন তিনি।
দুই দশকের কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে সালাহউদ্দিন ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের সহকারী ও ফিল্ডিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নানা কারণে এরপর আর বাংলাদেশের কোচিংয়ে আর দেখা যায়নি তাকে। তবে কোচ হিসেবে এই সময়ে তিনি হয়েছেন আরও পোক্ত। ঘরোয়া ক্রিকেটের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগিতায় স্বাদ পেয়েছেন বেশ কিছু শিরোপা জয়ের। এবার তার চ্যালেঞ্জ জাতীয় দল নিয়ে।
আরও পড়ুন
বিসিবির কোচিং ওয়ার্কশপে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করলেন সালাহউদ্দিন |
শুক্রবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে সালাহউদ্দিন জানান, কেন তিনি দীর্ঘ বিরতির পর আবার জাতীয় দলের দায়িত্বে ফিরেছেন।
“আমার এখানে পেছনে মূল কারণ যেহেতু অনেকদিন ধরে শুনতেছি যে বোর্ড নাকি দেশী কোচদের একটা প্ল্যাটফর্ম করে দিবে। আমি যদি তাদের সেই পথটা দেখাতে পারি, তাহলে তাদের প্রতি বোর্ডের বিশ্বাসটা বাড়বে, জনগনের বিশ্বাস পারবে এবং সেই তাদের নিজেদেরও বিশ্বাস বাড়বে যে আমরাও আসলে আন্তর্জাতিক লেভেলে ভালো করতে পারি। আমি বিশ্বাস করি এই দায়িত্বটা কেউ না কেউই নেওয়া উচিত ছিল। আমার মনে হয় সেই বিশ্বাসটা যদি আমি রাখতে পারি, পরবর্তী কোচদের জন্য একটা পথ খোলা হয়ে যাবে। যারা কোচ হতে চায়, তাদের জন্য আমার ওপত একটা বড় দায়িত্ব পড়ে গেছে। এটা আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।”
বাংলাদেশ জাতীয় দলের শীর্ষ কয়েকজন খেলোয়াড় ব্যক্তিগতভাবে এখনও কাজ করেন সালাহউদ্দিনের সাথে। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। বিপিএল খেলার সময় গত আসরে ইংলিশ তারকা মঈন আলি বলেছিলেন, সালাহউদ্দিন তার দেখা সেরা পাঁচ কোচের একজন। অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তাই তার কোচ হিসেবে বিশেষ ক্যারিশমাও কাজে দেবে বাংলাদেশ।
যেভাবেই হোক, বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান সালাহউদ্দিন।
“অনেক কারণেই আগে আসতে পারিনি। তবে মনে হয়েছে এখনই সেরা সময়, যখন আমি আবার বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিতে পারব। আমার ইচ্ছা আছে আমার এত বছরের যে অভিজ্ঞতা, সেটা যেন বড় পরিসরে কাজে লাগাতে পারি। এটা যদি দেশের কিছুটা হলেও কাজে আসে, তাহলে কোচিং ক্যারিয়ারের শেষের দিকে গিয়ে আমার নিজেরও ভালো লাগবে।”
প্রথম মেয়াদে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাথে যখন কাজ করেন সালাহউদ্দিন, তখন তিনি পেয়েছিলেন তরুণ মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহকে। প্রায় সবাই এখন চলে এসেছেন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করার তাই এখনই সেরা সময়।
আরও পড়ুন
বিসিবির কোচিং ওয়ার্কশপে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করলেন সালাহউদ্দিন |
তাওহীদ-রিশাদ-শরিফুলদের নিয়ে গড়া এই প্রজন্মকে তাই শীর্ষ পর্যায়ের জন্য তৈরি করার কাজটা যথাযথ চেষ্টা করতে চান সালাহউদ্দিন।
“আগেও পাঁচ বছর জাতীয় দলের সাথে কাজ করেছি। সেই সময় একটা প্রজন্মের সাথে কাজ করেছি। সাকিব, তামিম, মুশফিক, (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ, মাশরাফিদের সাথে কাজ করেছি। সেই সময়ে তারা একটা ধাপ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে, অনেক কিছুই দিয়েছে। পরবর্তী প্রজন্মকে আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে সাহায্য করতে পারি। আমার মনে হয় আমি যদি এটা দিতে পারি, কারও যদি উপকার করতে পারি, সেটা দেশের জন্য ভালো হবে আর সেই খেলোয়াড়ের জন্যও। আমার অভিজ্ঞতা থেকে তাদের মানসিক, টেকনিক্যাল ও টেকটিক্যাল দিক থেকে যদি সাহায্য করতে পারি, আমি তাতে সন্তুষ্ট হব।”