২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬:৪৮ পিএম
দিনের শুরুটা দেখেই নাকি বলে যায় দিনের বাকিটা কেমন যাবে! তবে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ইনিংসের প্রথম দশ ওভার দেখে কেউ যদি এমন ভবিষ্যতবাণী করে থাকেন, তাহলে ইনিংস শেষে চোখ কপালে তোলার দশাই হবে আপনার। মাত্র ৩৫ রানের হারিয়ে বাংলাদেশের সামনে যখন একশর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা, তখনই ত্রাতার ভূমিকায় হাজির হলেন তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলি অনিক। রেকর্ড গড়া এক জুটিতে খাদের কিনারা থেকে দলকে শুধু উদ্ধারই করলেন না তারা, বোলারদের এনে দিলেন লড়াকু একটা স্কোরও।
দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদশ পেয়েছে ২২৮ রানের পুঁজি। জাকের ফিফটি করে আউট হয়ে গেলেও ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে তাওহীদ দেখা পেয়েছেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের।
আরও পড়ুন
জুটির রেকর্ডে সবার ওপরে তাওহীদ-জাকের |
![]() |
দুবাইয়ে ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি, সব ফরম্যাটেই পরে ব্যাটিং করা দলের জয়ের পাল্লাই বেশি ভারি। তবে কিছুটা চমকের জন্ম দিয়েই টস জিতে আগে ব্যাটিং নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। চোটের কারণে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ না থাকায় দলে জায়গা হয় তরুণ ব্যাটার জাকের আলি অনিকের, যিনি সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন দুহাতে।
বাংলাদেশের ইনিংসকে দুই ভাগে ভাগ করাটাই শ্রেয়। কারণ, প্রথম দশ ওভারের ব্যাটিং দেখলে মনে হতেই পারে, এই উইকেটে ব্যাটিং করা বুঝি ভীষণ কঠিন কাজ। প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে সাজঘরের পথ ধরেন অধিনায়ক শান্ত।
একপ্রান্তে তানজিদ হাসান তামিম চমৎকার কিছু শটে রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করলেও বেশিদূর যেতে পারেননি। ২৫ বলে ৪ চারে করেন ২৫ রান। তবে মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসানের ব্যর্থতায় স্রেফ ৩৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।
পরপর দুই বলে দুই উইকেট নেওয়া আকসার প্যাটেলের হ্যাটট্রিকও প্রায় হয়েই যাচ্ছিক। তবে জাকেরের দেওয়া সহজ ক্যাচ স্লিপে নিতে ব্যর্থ হন রোহিত। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে মাত্র ৩৯ রান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে প্রথম দশ ওভারে সবচেয়ে বেশি উইকেট হারানোর তালিকায় এটি এখন যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে। এই তালিকায় যৌথভাবে প্রথম অবস্থানও বাংলাদেশেরই।
এই জুটির শুরুর দিকে এরপর জীবন পান তাওহীদও। কুলদীপের বলে মিড অফে ক্যাচ ফেলে দেন হার্দিক পান্ডিয়া। কয়েক ওভার বাদে তার বলেই স্ট্যাম্পিং হতে হতে গিয়েও বেঁচে যান জাকের।
আরও পড়ুন
আক্সারের হ্যাটট্রিক মিস, জাকেরের ক্যাচ ফেলে রোহিতের মাতম |
![]() |
এরপরই শুরু হয় তাদের লড়াই। আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান হয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বোলারদের ওপর চড়াও হন দুই ব্যাটার। তাদের হাত ধরে একে একে আসে দলীয় ৫০ থেকে শুরু করে ১৫০ রানও। দুজনই তুলে নেন ফিফটি।
যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে দুজনের সেঞ্চুরিই মনে হচ্ছিল অনিবার্য। তবে সেটা আর হয়নি। ৪৩তম ওভারে মোহাম্মদ শামির বলে লং-অনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় জাকেরের ৬৮ রানের ইনিংস।
তবে এর আগেই তার ও তাওহীদের জুটি গড়েছে কয়েকটি রেকর্ড। তাদের দুজনের ১৫৪ রান এখন ষষ্ঠ উইকেটে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসেরই সর্বোচ্চ। আগেরটি ছিল এতদিন দক্ষিণ আফ্রিকার জাস্টিন কেম্প ও মার্ক বাউচার। ২০০৬ আসরে ভারতের বিপক্ষে তারা করেছিলেন ১৩১ রান।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটিও এখন তাওহীদ-জাকেরের। মজার ব্যাপার হল, ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের আগের জুটিতেও ছিল জাকেরের নাম। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনি ও মাহমুদউল্লাহ মিলে যোগ করেছিলেন ১৫০ রান।
জাকেরের বিদায়ের পর ছোট তবে কার্যকর ক্যামিও উপহার দেন রিশাদ হোসেন। বাঁহাতি স্পিনার কুলদীপকে হাঁকান টানা দুই ছক্কা। তার ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান।
এরপর ঝড় তুলতে পারেননি তাওহীদ, কারণ হ্যামস্ট্রিংয়ে আঘাতের কারণে বারবার মাঠেই লুটিয়ে পড়েছেন তিনি। দৌড়ে সেভাবে রানও করতে পারেননি। তবে লড়িয়ে মানসিকতার পরিচয় দিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করেছেন, পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখাও।
আরও পড়ুন
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বিব্রতকর রেকর্ডে আবারও বাংলাদেশের নাম |
![]() |
শেষ ব্যাটার হিসেবে তাওহীদ আউট হয়েছেন ঠিক ১০০ রানেই। ১১৮ বলের ইনিংস সাজান ৬টি চার ও ২ ছক্কায়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে নবম ব্যাটার হিসেবে তাওহীদ টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম ম্যাচেই করেছেন সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে তার আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেঞ্চুরি ছিল কেবল সাবেক ওপেনার তামিম ইকবালের।
৫৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার শামি।
২ আগস্ট ২০২৫, ৭:২২ পিএম
১ আগস্ট ২০২৫, ৩:৫৯ পিএম
গত বছর থেকেই বাংলাদেশের স্থানীয় কোচদের নিয়ে সব পর্যায়েই দেখা মিলছে বাড়তি কদরের। তাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা অভিজ্ঞ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এখন জাতীয় দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। বয়সভিত্তিক ও নারী দলেও ক্রমেই বাড়ছে তাদের কাজের পরিধি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গেম ডেভেলপমেন্ট ইউনিটের হেড অব অপারেশন্স হাবিবুল বাশার মনে করেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও দেশি কোচদের চাহিদা তৈরি হবে।
আর সেই লক্ষ্যেই নতুন নতুন কোচ তৈরির কাজেও নেমেছে বিসিবি। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এখন তাই চলছে তিনদিনব্যাপী 'লেভেল-এ' কোচিং কোর্স, যেখানে ভিন্ন ভিন্ন বয়সের অনেকেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন নিজেকে কোচ হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে।
শনিবার এই কোচিং কোর্সের দ্বিতীয় দিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হাবিবুল। সাবেক বাংলাদশ অধিনায়ক জানান কোর্স নিয়ে ইতিবাচক কথা। “লেভেল-ওয়ান কোর্সের জন্য অনেক আবেদন এসেছে। আমরা যদি কোচদের মান উন্নত করতে পারি, তাদের সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও কিন্তু তাদের একটা চাহিদা তৈরি হতে পারে।”
ক্রিকেটকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে এই ধরনের কোর্সের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন বাশার। “যারা এই কোর্সে অংশ নিচ্ছেন, তারা মূলত গ্রাসরুট পর্যায়ে কাজ করেন। আমরা যদি তাদের আধুনিক পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দিতে পারি, তাদের জ্ঞান ও দক্ষতায় উন্নতি ঘটাতে পারি, তাহলে এর সুফল বাংলাদেশের ক্রিকেটই পাবে। ভবিষ্যতে আমরা আরও বেশি সংখ্যক এমন প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করব।”
এখন দেশি কোচদের যে একটা জাগরণ চলছে, কয়েক বছর আগেও সেটা সেভাবে দেখা যেত না। ফলে সাবেক ক্রিকেটারদের সেভাবে এই পেশায় আশার ব্যাপারে আগ্রহ দেখা যেত না। ফলে বিসিবিকে একটা লম্বা সময় নির্ভর করতে হয়েছে বিদেশী কোচদের ওপরই।
এই চিত্রে বড় পরিবর্তন দেখছেন এখন ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করা হাবিবুল। “আগে যেখানে খেলোয়াড়রা খেলা শেষে কোচিংয়ের দিকে আসতে চাইতেন না, এখন সেই চিত্র বদলে গেছে। এখন অনেক সাবেক ক্রিকেটার, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার, এমনকি যারা এখনও খেলছেন বা খেলা থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছেন, তারাও কোচ হওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এটা খুব ভালো ব্যাপার।”
বোলার হিসেবে আগ্রাসী হলেও প্রাসিধ কৃষ্ণ ব্যাটারদের সেভাবে মৌখিকভাবে আক্রমণ করেন না। ওভাল টেস্টের দ্বিতীয় দিনে জো রুটকেও করেছিলেন নিরীহ এক প্রশংসাসূচক মন্তব্য। কে জানত, এই একটি বাক্যই শেষ পর্যন্ত ইংলিশ তারকা ব্যাটার জো রুটের উইকেটের পথ খুলে দেবে! ভারত পেসার জানালেন, সামান্য এই ঘটনায় রুটের তীব্র প্রতিক্রিয়া তাকেও অবাক করেছে।
বিরতির আগে প্রথম ইনিংসে রুট যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, তখন ইংল্যান্ডের রান ১ উইকেটে ১২৯, অবস্থান বেশ ভালোই। তবে সেই অবস্থান দ্রুতই বদলে যায়। প্রাসিধ, আকাশ দীপ ও মোহাম্মদ সিরাজ বল হাতে দাপট দেখান, যার শুরুটা হয় রুটের উইকেট দিয়ে।
প্রাসিধের করা প্রথম বলটি গ্লাভসে লাগে রুটের। এরপর একটি ওবল-সিম ডেলিভারি সরাসরি রুটের রক্ষণের ফাঁক গলে চলে যায় কিপারের হাতে।। এমন সময়ই প্রাসিধ বলে বসেন, ‘তুমি তো দারুণ ছন্দে আছো!’
বিস্ময়করভাবে এই কথাতেই চটে যান রুট। পরের বলে বাউন্ডারি মারার পর প্রাসিধকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনাকে এগিয়ে এসে হস্তক্ষেপ করতে হয়। তিনি প্রাসিধকে সতর্ক করেন অতিরিক্ত আগ্রাসন দেখানোর জন্য। এই আলোচনা চলে দুই মিনিটেরও বেশি সময় ধরে।
দিনের খেলা শেষে প্রাসিধ বলেন, কাজটা পরিকল্পনা করেই করেছেন তারা।
“আমি বুঝতেই পারিনি রুট এতটা রেগে যাবে। সামান্য একটা কথাই তো বললাম, আর এরপর ব্যাপারটা গালিগালাজ পর্যন্ত গড়াল। আমরা আগে থেকেই ঠিক করেছিলাম যে, তাকে একটু কথাবার্তায় জড়িয়ে রাগিয়ে দিতে হবে। তবে সামান্য এই কথা বলাতেই যে এত বড় প্রতিক্রিয়া হবে, সেটা আমরা ভাবিনি।”
তবে সেই প্রতিক্রিয়ার প্রভাব পড়ে রুটের ব্যাটিংয়ে। এই ঘটনার পর খুব বেশি সময় টিকে থাকতে পারেননি তিনি। মোহাম্মদ সিরাজের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ার আগে করেন ২৯ রান। ২৪৭ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। দিন শেষে ২ উইকেটে ৭৫ করা ভারতের লিড ৫২ রানের।
এ বছরের এপ্রিলে সিলেটে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারানোর পরের টেস্ট অধ্যায়টা জিম্বাবুয়ের শুধুই হতাশার। সর্বশেষ ৪ টেস্টের তিনটিতে ইনিংস ব্যবধানে হার, অন্যটি রানের ব্যবধানে। বুলাওয়েতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস হারের শঙ্কা ছিল। তবে নবম জুটির ৬৪ রানে সেই লজ্জা এড়াতে পেরেছে জিম্বাবুয়ে। মাত্র ৮ রানের টার্গেট দিয়ে নিউ জিল্যান্ডকে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে নামিয়েছে। মাত্র ১৪ বলে এই টার্গেট পাড়ি দিয়ে ৯ উইকেটে জিতে সিরিজ শুরু করেছে সফরকারী দলটি।
প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের টার্গেটে বোলিং করেছে নিউ জিল্যান্ড। টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৩১/২, ইনিংস হার এড়ানোর জন্য ১২৮ রানের টার্গেটটা বেশ বড়ই তখন মনে হয়েছে। তৃতীয় দিনের শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে এক পর্যায়ে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ৫৩/৪। ৫ম উইকেট জুটিতে ৫৭ রা যোগ করেও ইনিংস হারের শঙ্কা ছিল জিম্বাবুয়ের। ১১০ থেকে ১২৬, এই ১৬ রানে জিম্বাবুয়ের ৪ উইকেট পড়ে গেলে ইনিংস হারের চোখ রাঙানি দেখেছে স্বাগতিক দল। তবে ৯ম উইকেট জুটির ৬৪ রানে ইনিংস হার এড়িয়েছে জিম্বাবুয়ে।
মাত্র ১ রানের জন্য শিন উইলিয়ামস ফিফটি হাতছাড়া করেছেন। বাঁ হাতি স্পিনার স্যান্টনারের বলে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন শিন উইলিয়ামস (৬৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৯)। ঠিক তৃতীয় দিনের টি ব্রেকের আগে থেমেছে জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে (১৬৫/১০)।
জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস ছিন্ন ভিন্ন করেছে নিউ জিল্যান্ডের যে পেসার (৬/৩৯), সেই হেনরি দ্বিতীয় ইনিংসেও ছড়ি ঘুরিয়েছেন (৩/৫১)। টেস্ট ক্যারিয়ারে এর আগে দুইবার ম্যাচে ৯ উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন। এটা নিয়ে (৯/৯০) সংখ্যাটা তৃতীয়-তে উন্নীত হলো তার। জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিনার স্যান্টনার পেয়েছেন ৪ উইকেট (৪/২৭)।
চোট আর বিশ্রাম মিলিয়ে এমনিতেই ইংল্যান্ড-ভারত চলমান পঞ্চম টেস্টে স্বাগতিকরা খেলছে অনভিজ্ঞ বোলিং লাইনআপ নিয়ে। এবার দলটির জন্য আরেক ধাক্কা হয়ে এসেছে ক্রিস ওকসের চোট। সেটা এতোটাই গুরুতর যে, এই ম্যাচের বাকি অংশ থেকেই ছিটকে গেছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটে প্রথম দিনের শেষের দিকে। বাউন্ডারির লাইনে একটি বল ধরার চেষ্টায় ভেজা আউটফিল্ডে হাত পিছলে পড়ে যান ওকস। পড়ে যাওয়ার ফলে বাঁ কাঁধে বেশ চোট পান এবং সাথে সাথেই কাঁধ চেপে ধরে শুয়ে পড়েন মাঠে।
এরপর ইংল্যান্ড দলের ফিজিও বেন ডেভিস মাঠে এসে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে ওকস মাঠ ছেড়ে যান। রাতেই অভিজ্ঞ এই পেসারের স্ক্যান করানো হয়। সেই স্ক্যান ও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণের পর ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) নিশ্চিত করে, ওকস আর এই ম্যাচে অংশ নিতে পারবেন না। এমনি ব্যাট হাতেও দেখা যাবে না তাকে।
তার এই ছিটকে যাওয়া ইংল্যান্ডকে ভালো বিপদেই ফেলে দিতে পারে। কারণ, অধিনায়ক বেন স্টোকস না খেলায় এই ম্যাচে এমনিতেই চারজন স্পেশালিষ্ট পেসার নিয়ে খেলতে নেমেছে দলটি। ওকস আর বোলিং না করতে পারায় ম্যাচের বাকিটা সামাল দিতে হবে তিন পেসার গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন এবং জশ টাংকে, যারা সম্মিলিতভাবে খেলেছেন মাত্র ১৮ টেস্ট। ফলে চাপ বাড়তে পারে দুই পার্টটাইম স্পিনার বেথেল-রুটের ওপর।
চলমান টেস্টের ভারতের প্রথম ইনিংসে ওকস ১৪ ওভার বল করে ১ উইকেট নেন। সিরিজে তিনি মোট ১৮১ ওভার বোলিং করেছেন। ৫২.১৮ গড়ে নিয়েছেন ১১ উইকেট। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য এই সিরিজে ইংল্যান্ডের একমাত্র পেসার হিসেবে খেলেছেন পাঁচ টেস্টেই। তবে শেষটা হল হতাশার মধ্য দিয়েই।
ইংল্যান্ড-ভারতের মধ্যকার চতুর্থ টেস্টে পাকিস্তানের জার্সি পরা এক দর্শককে মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনার জল এরই মধ্যে গড়িয়েছে অনেকদূর। এবার সেই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে টেস্টে চলাকালীন এই ঘটনাটি ফারুক নাজার নামের ভুক্তভোগী দর্শক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরেন। এরপর থেকেই এটি নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।
সেই ভিডিওতে দেখা যায়, পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের সবুজ রঙের জার্সি পরে ভারত ও ইংল্যান্ডের ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে হাজির হয়েছেন নাজার। এক পর্যায়ে একজন নিরাপত্তাকর্মী এসে তাকে পাকিস্তানের জার্সি ঢেকে ফেলতে বলেন। এই সময়ে সেই নিরাপত্তাকর্মী নিজেকে ল্যাঙ্কাশায়ারের একজন স্টাফ হিসেবে পরিচয় দেন। সাথে জানান, পাকিস্তানের জার্সি ঢাকার জন্য বলার জন্য কন্ট্রোল রুম থেকে নির্দেশ পেয়েই তিনি এটি বলতে এসেছেন। তবে তার সেই অনুরোধ নাজার মানতে অস্বীকৃতি জানান। এই ঘটনার জেরে শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে তাকে মাঠ থেকেই বের করে দেয়।
ঘটনার পর এক বিবৃতিতে ল্যাঙ্কাশায়ার জানায়, দর্শকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে তাদের নিরাপত্তা দল কাজ করে আর এটা তারই অংশ ছিল। তবে নাজারকে মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় যদি কোনো দর্শক কষ্ট পেয়ে থাকেন, সেজন্য তারা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
এরপর কাউন্টি ক্লাবটি বিবৃতিতে আরও দাবি করে, ওই ঘটনার একদিন আগে মাঠের ভেতর ভারতীয় ও পাকিস্তানি সমর্থকদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছিল। আর সেই প্রেক্ষিতেই তাদের নিরাপত্তা দল সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং তারই ধারাবাহিকতা তারা নাজারকে পাকিস্তানের জার্সি ঢেকে ফেলতে বলেছিলেন।
অন্যদিকে যাকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই নাজার এক্স প্ল্যাটফর্মে (সাবেক টুইটার) জানান,
“আমি তো সেখানে কোনো আপত্তিকর আচরণ করিনি। আমি শুধু পাকিস্তানের জার্সি পরেই খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। এটা তো দোষের কিছু না। আমাদের মনে রাখতে হবে এটা ক্রিকেট, এখানে জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের সবারই স্রেফ খেলাটিকেই উদযাপন করা উচিত।”
১০ দিন আগে
১৭ দিন আগে
১৮ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৮ দিন আগে