১৫ জুলাই ২০২৫, ৪:৫২ পিএম

১৮তম জন্মদিন উদযাপনকে ঘিরে বিতর্কের মুখে পড়েছেন বার্সেলোনা তারকা লামিন ইয়ামাল। স্পেনের সামাজিক অধিকার মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, সেই অনুষ্ঠানে বামন বা উচ্চতায় ছোট আকৃতির মানুষদের বিনোদনের জন্য ভাড়া করা হয়েছিল, যা দেশটির প্রতিবন্ধী অধিকার আইনের লঙ্ঘন বলে বিশ্বাস তাদের।
ইয়ামাল গত ১৩ জুলাই ১৮ বছর বয়সে পা দিয়েছেন। এই উপলক্ষে তিনি বার্সেলোনার বাইরে এক প্রাইভেট পার্টির আয়োজন করেন। সেখানে আগে থেকেই আগত অতিথিদের ফোনে ভিডিও ধারণ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু সেই অনুষ্ঠানের কিছু ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একদল খর্বাকৃতির মানুষদের পার্টিতে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন
| ‘ভবিষ্যতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চেয়েও বড় হবে ক্লাব বিশ্বকাপ’ |
|
এর প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে স্পেনের সামাজিক অধিকার মন্ত্রণালয়। তারা বিষয়টি নিয়ে স্পেনের পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস, অম্বাডসম্যান এবং হেট ক্রাইম দমন দপ্তরের কাছে তদন্তের আবেদন জানিয়েছে। এই ঘটনায় স্পেনের প্রতিবন্ধী অধিকার আইন – যেখানে স্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছে এমন কোনো শো বা প্রদর্শনী আয়োজনের, যা প্রতিবন্ধী মানুষদের নিয়ে উপহাস করে বা তাদের অবমাননা করে, লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি তাদের।
তবে স্পেনের বামন ও এই ধরণের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের মতে, অহেতুক বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে। তারা আরও বলেছে, এটি নৈতিকতা ও আইন বিরোধী কাজ, আর এজন্য তারা আইনি ও সামাজিক পদক্ষেপ নেবে।
অন্যদিকে পরিচয় গোপন রেখে ইয়ামালের জন্মদিনের পার্টিতে পারফর্ম করা এক ব্যক্তি আরএসিওয়ান-কে বলেছেন, কোনো অন্যায়ের শিকার হননি তারা।
“আমরা শুধু আমাদের কাজটাই করেছি, সবাই সেখানে আমাদের প্রাপ্য সম্মান দিয়েছে। এটা নিয়ে তো কারো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমাদের কাজ বিনোদন দেওয়া… আমরা নাচি, ম্যাজিক দেখাই, নানা ধরনের শো করি। আমাদের কেউ অপমান করেনি। এটা লামিন ইয়ামালের পার্টি ছিল বলেই এত কথা হচ্ছে।”
No posts available.
১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:৪৪ এম

লিওনেল মেসি-ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর যুগ এখন প্রায় শেষের দিকে। ফুটবলবিশ্বে এখন রাজত্ব করছেন কিলিয়ান এমবাপে-আর্লিং হলান্ডরা। ম্যানচেস্টার সিটির নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড হলান্ডকে তো অনেকে বর্তমানে সেরাও মনে করেন। ‘গোলমেশিন’ নাম পাওয়া এই স্ট্রাইকার প্রতিনিয়তই মাঠে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে ত্রাস সৃষ্টি করেন। অথচ এই হলান্ডই কিনা ফুটবলার নয়, হতে পারতেন একজন পেশাদার গলফার!
হলান্ডকে তাঁর বাবা কয়েকটি খেলায় বাজিয়ে দেখেছিলেন। এমনকি ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড নামক খেলাতেও ভবিষ্যত গড়তে পারতেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই বাকি পাঁচ-দশ জন কিশোরের চেয়ে দীর্ঘদেহী হওয়ায় লং জাম্পেও বেশ এগিয়ে ছিলেন। এমনকি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে নরওয়েজিয়ান এই তারকা তার বয়সের দীর্ঘতম স্ট্যান্ডিং লং জাম্পে বিশ্বরেকর্ড ভেঙেছিলেন, অবিশ্বাস্য ১.৬৩ মিটার লাফ দিয়ে।
হালান্ডের পিতা আলফ-ইঞ্জে একবার ম্যানচেস্টার সিটির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটকে বলেছিলেন, ‘নরওয়ের হ্যান্ডবল ম্যানেজার চাইতেন সে হ্যান্ডবল খেলুক। আমি মনে করতাম পাশের বাড়িতে টেনিস আর হ্যান্ডবল খেলা বেশ ভালো।’
আরও পড়ুন
| রিয়ালে ড্রেসিংরুমের অস্থিরতার গুঞ্জন নিয়ে মুখ খুললেন বেলিংহাম |
|
তিনি আরও যোগ করেন, ‘বহুমুখিতা গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের একেবারে ভিন্ন দিকগুলো বিকাশের সুযোগ দেয়, এবং আপনি যা কিছু করেন, তাতে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।’
ছোটবেলাতেই অ্যাথলেটিকসে দারুণ দক্ষতায় মুগ্ধতা ছড়িয়েছিলেন হলান্ড। কিন্তু এক জায়গায় বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়েছে তাকে। তবে, গলফ খেলতে বেগ পোহাতে হচ্ছিল ছোট্ট হলান্ডকে। আর এই তাঁর বাবা চেয়েছিলেন নাকি ক্রীড়ার এই বিভাগেই ছেলের ক্যারিয়ার হোক। হলান্ডের বাবার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ছিল না ছেলেকে পেশাদার গলফে দেখা।
সম্প্রতি ‘দ্যা রেস্ট ইজ ফুটবল’ নামক পডকাস্টে গ্যারি লিনেকার ও অ্যালান শিয়ারের সঙ্গে কথা বলার সময় নিজের ছোটবেলা নিয়ে কথা বলেন হালান্ড। হালান্ড বলেন, ‘আপনি বুঝতে পারছেন, এটি আসলেই মজার—কারণ তার (হলান্ডের বাবা) সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ছিল আমি পেশাদার গলফার হই। সেটাই তার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন।’
এরপর হলান্ড যোগ করেন, ‘তাই যখন আমি ১০ বছর বয়সী ছিলাম, সে আমাকে গলফ শুরুর জন্য বাধ্য করেছিল। আমি ১০ থেকে ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে গলফ খেলতাম।’
খেলার কোচ হিসেবে বাবা নাকি বেশ কড়া ছিলেন। পডকাস্টে হলান্ড বলেছেন , ‘আপনি আমাকে কখনো গ্লাভস পরে খেলতে দেখবেন না। কারণ আমার বাবা মারতেন যদি আমি তা করতাম।’
আরও পড়ুন
| দাপট দেখিয়েও সিটির কাছে হেরে খাদের কিনারায় রিয়াল |
|
হলান্ড এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার। তাঁর বাবা নিশ্চয়ই এখন ফুটবলার ছেলের ক্যারিয়ার দেখে আফসোস করবেন না। ম্যান সিটির এই ফুটবলার মাঠে নামলেই গোলের পর গোল করে মুড়ি-মুড়কির মতো রেকর্ড ভাঙছেন।
এই মাসের শুরুতে ২৫ বছর বয়সী তারকা প্রিমিয়ার লিগে দ্রুততম সময়ে গোলের সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙেছেন। এছাড়া ইংলিশ লিগটির ইতিহাসে ১০, ২৫ এবং ৫০ গোলের দ্রুততম রেকর্ডও তাঁর। এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৫ ম্যাচে ২৩ গোলের সঙ্গে সাতটি অ্যাসিস্ট করেছেন হলান্ড।

সংবাদমাধ্যম থেকে সামাজিক মাধ্যম গুঞ্জনের ডাল-পালা ছড়িয়ে পড়েছে বহুদূর। রিয়াল মাদ্রিদের ড্রেসিংরুমে নাকি চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির কোচ জাবি আলোনসোর কোচিংয়ে নাখোশ খেলোয়াড়দের একটি অংশ, এমনটাই বলছে অনেকে।
সবশেষ গতকাল রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে হার নিশ্চিতভাবেই চাপ আরও বেড়েছে রিয়ালের। শেষ পর্যন্ত সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ক্লাবটির ড্রেসিংরুমের পরিস্থিতি নিয়ে নিরবতা ভাঙলেন জুড বেলিংহাম। অনেক গুঞ্জনের মধ্যে একটির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন এই ইংলিশ তারকা মিডফিল্ডারই। কোচ জাবির সঙ্গে নাকি বনিবনা হচ্ছে না তাঁর।
ম্যান সিটির বিপক্ষে ১-২ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচ শেষে গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক আর ড্রেসিংরুমের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন বেলিংহাম। সব গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে ২২ বছর বয়সী ফুটবলার বলছেন, ড্রেসিং রুমের সবাই আলোনসোর পাশেই রয়েছে—এবং তিনি মনে করেন, দলের ঘুরে দাড়ানোর দায়িত্ব খেলোয়াড়দেরই।
আরও পড়ুন
| দাপট দেখিয়েও সিটির কাছে হেরে খাদের কিনারায় রিয়াল |
|
বেলিংহাম বলেন, ‘কোচ সত্যিই চমৎকার। ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে তার দারুণ সম্পর্ক, আর দলের বেশিরভাগ ছেলেদেরও তাই। টানা কয়েকটা ড্রয়ের পর আমরা নিজেদের ভিতরে খুব ভালোভাবে আলোচনা করেছি। ভেবেছিলাম খারাপ সময় পেছনে ফেলেছি, কিন্তু শেষ কয়েকটা ম্যাচে আবার সমস্যায় পড়েছি। কেউ হাল ছাড়ছে না, কেউ অভিযোগ করছে না। আমরা ভুল স্বীকার করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।’
বাইরের কথায় কান না দিয়ে ড্রেসিংরুমে নিজেদের সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজছেন বলে জানান বেলিংহাম, ‘ড্রেসিং রুমের ভেতরে আমরা নিজেরাই সমাধান খুঁজছি, বাইরের কথাবার্তা আমাদের কোনো কাজে আসে না। ম্যাচ ব্যবস্থাপনায় কোথাও ভুল করছি; যখন কিছুটা চাপ সামলাতে হয়, তখনই মনে হয় আমরা গোল খেয়ে বসি—আর এতে আমাদের পরিকল্পনা বদলে যায়, যেভাবে খেলতে চাই সে পথে থাকতে পারি না।
সিটির বিপক্ষের হারলেই চাকরি হারাবেন জাবি, এমন গুঞ্জন উড়ছিল বাতাসে। তবে এসব যে শুধু গুঞ্জনই সেটাও নিশ্চিত করেন বেলিংহাম, ‘আমরা জাবির পাশে আছি। অনেক কথাই বলা হচ্ছে, যার বেশিরভাগই মিথ্যা।’
রিয়াল মাদ্রিদের পরবর্তী পরীক্ষা আগামী রোববার। লা লিগায় দিপোর্তিভো আলাভেসের মুখোমুখি হবে তারা। প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে এই ম্যাচেও ইতিবাচক ফল না পেলে হয়তো গুঞ্জনই বাস্তবে রূপ নেবে।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ- দুই প্রতিযোগিতাতেই রাজত্ব এখন শুধুই আর্সেনালের। নিজেদের লিগে শীর্ষে থাকা গানাররা ইউরোপ সেরা প্রতিযোগতার চলতি আসরে শতভাগ জয়ের ধারা বজায় রেখেছে। সবক’টি ম্যাচেই জয় পাওয়া প্রতিযোগিতার একমাত্র দল তারা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গতকাল রাতে প্রতিপক্ষের মাঠে সহজ এক জয় পেয়েছে আর্সেনাল। বেলজিয়ামের ক্লাব ব্রুগের বিপক্ষে মিকেল আর্তেতার দল জিতেছে ৩-০ গোলে। সফকরীদের হয়ে জোড়া গোল করেন ননি মাদুয়েকে। অন্য গোলটি আসে গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির নৈপুণ্যে।
ছয় ম্যাচে ছয় জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চূড়ায় অবস্থান করা আর্সেনালের পয়েন্ট ১৮। আর ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্যের প্রতিযোগিতায় এবারের মৌসুমে মাত্র এক ম্যাচে জয় পাওয়া ক্লাব ব্রুগ ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে ৩১ নম্বরে।
রাতের আরেক ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করেছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই। স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মাঠে ১৮টি শট নিয়েও লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হয় লুইস এনরিকের দল। প্রতিপক্ষের মাঠে ৭২ শতাংশ বল নিজেদের কাছে রেখে আক্রমণের পসরা সাজালেও আসল কাজই করতে পারেনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।
এই ড্রয়ের পর ছয় ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আছে পিএসজি। আর পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে ২৮ নম্বরে অ্যাথলেটিক বিলবাও।
আরও পড়ুন
| দাপট দেখিয়েও সিটির কাছে হেরে খাদের কিনারায় রিয়াল |
|
ক্লাব ব্রুগের বিপক্ষে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই দূরপাল্লার শট নেন আর্সেনালের মার্টিন ওডেগোর। তবেপ সেই শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন প্রতিপক্ষের গোলকিপার। ২১ মিনিটে আর্সেনালের ডিফেন্ডার পিয়েরো ইনকাপিয়ের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
অবশ্য গোল পেতে খুব একটা অপেক্ষা করতে হয়নি আর্সেনালের। ২৫ মিনিটে ব্যবধান ১-০ করে ইংলিশ ক্লাবটি। সতীর্থের পাস ধরে একজনকে কাটিয়ে, আরেকজনের বাধা এড়িয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে মাদুয়েকের নেওয়া জোরাল শট জাল কাঁপায় ক্লাব ব্রুগের। মাঝেমধ্যে পাল্ট আক্রমণে গোলের সুযোগ তৈরি করে স্বাগতিকরাও।
দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন মাদুয়েকে। বাঁ দিক থেকে মার্তিন জুবিমেন্দি দূরের পোস্টে দারুণ ক্রস বাড়ালে ছুটে গিয়ে হেডে ফাঁকা জালে বল পাঠান ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
কিছুক্ষণ পর ব্যবধান আরও বাড়িয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে আর্সেনাল। ৫৬ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে সহজ জয় নিশ্চিত করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মার্টিনেলি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রাতের অন্য ম্যাচের ফল :
জুভেন্টাস ২:০ পাফোস
বায়ার লেভারকুসেন ২:২ নিউক্যাসল
বেনফিকা ২:০ নাপোলি
বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ২:২ বোদো/গ্লিমট
রিয়াল মাদ্রিদ ১:২ ম্যানচেস্টার সিটি
ভিয়ারিয়াল ২:৩ কোপেনহেগেন

রিয়াল মাদ্রিদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় এই ম্যাচে সমর্থকদের প্রত্যাশার পারদ নিম্নমুখীই ছিল। চলতি মৌসুমে বিপর্যস্ত স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটি কতটুকু লড়াই করে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে সেটার ছিল দেখার। তাঁর ওপর দলের সেরা তারকা কিলিয়ান এমবাপেকে ছাড়াই নামে রিয়াল। ঘরের মাঠে ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছেড়েছে রিয়াল। তবে লস ব্লাঙ্কোসরা হেরেছে লড়াই করেই।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গতকাল রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ছাদ বন্ধ করা নিজেদের মাঠে রদ্রিগোর গোলে শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার পরও দুই দফা গোল খেয়ে হারে জাবি আলোনসোর দল। সিটির হয়ে গোল দুটি করেছেন নিকো ও’রিলি ও আর্লিং হলান্ড।
এ নিয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ আট ম্যাচে মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছে রিয়াল, হার তিনটিতে আর বাকি ম্যাচ ড্র। ম্যান সিটির বিপক্ষে হারের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৬ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে এখন রিয়াল। সমান ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট সংগ্রহ করা পেপ গার্দিওলার সিটির অবস্থান চারে।
আরও পড়ুন
| নেইমার চুপ, জল্পনা বাড়ছে |
|
মাঠে হতশ্রী পারফরম্যান্সে সঙ্গে মড়াঁর ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে রিয়ালে হানা দেয় চোটের ধাক্কা। দলের বড় একটি অংশই এখন মাঠের বাইরে। সিটির বিপক্ষে চলতি মৌসুমে নিজেদের সর্বোচ্চ গোলদাতা এমবাপেকেও পায়নি স্বাগতিকরা।
অবশ্য আক্রমণভাগের মধ্যমণিকে ছাড়া মাঠে নেমেও শট নেওয়ায় আধিপত্য ছিল রিয়ালেরই। ৫২ শতাংশ বল নিজেদের কাছে রেখে ১৬টি শট নিয়েছে তারা। তবে প্রায় সব শটই ছিল লক্ষ্যহীন। ম্যাচে একের পর এক সুযোগ সৃষ্টি করেও সিটির গোলমুখে মাত্র একবারই শট রাখতে পেরেছে রিয়াল। আর ওই একটি শট থেকেই গোল আসে দীর্ঘ খরা কাটানো রদ্রিগোর কাছ থেকে। বিপরীতে ১২ শট নিয়ে আটটি লক্ষ্যে রাখে সিটি।
ম্যাচের শুরু থেকেই সিটির ওপর চাপ বাড়ায় রিয়ালের আক্রমণভাগ। ২৮ মিনিটে ফলও আসে। দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে জুড বেলিংহ্যামের কাছ থেকে বল পেয়ে, দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। টানা ৩২ ম্যাচ পর রদ্রিগোর গোলের অপেক্ষার অবসান ঘটল। এর আগে সবশেষ গত মার্চে আতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে জালের দেখা পেয়েছিলেন ২৪ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
অবশ্য খুব বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। লস ব্লাঙ্কোসদের গোলকিপার থিবো কোর্তোয়ার শিশুসুলভ এক ভুলে ৩৫ মিনিটে সমতায় ফিরে ম্যান সিটি। হায়ান চের্কির কর্নারে ইয়োশকো গাভার্দিওলের হেড গ্লাভসে রাখতে পারেননি রেয়াল গোলরক্ষক। সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা নিকো ও’রাইলি সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন।
মিনিট আটেক পর ব্যবধান ২-১ করে সিটিজেনরা। ৪৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন আর্লিং হলান্ড। বক্সে অ্যান্টনিও রুডিগার হলান্ডকে ফেলে দিলে পেনাল্টি পায় সিটি। কোর্তোয়াকে বোকা বানিয়ে ভুল দিকে পাঠিয়ে সুযোগ কাজে লাগান নরওয়েজিয়ান তারকা ফরোয়ার্ড।
অবশ্য প্রথামার্ধে রিয়ালকে আরেক দফা পিছিয়ে পড়া থেকে বাঁচান সেই কোর্তায়াই। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে দারুণ ডাবল সেভ করেন বেলজিয়ামের গোলকিপার।
দ্বিতীয়ার্ধে গোলের সুযোগ তৈরি করে দুই দলই। রিয়ালকে সমতায় ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন জুড বেলিংহাম। সুযোগ এসেছিল রদ্রিগোরও। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে দারুণ জমে ওঠা ম্যাচে ৬১ মিনিটে জেরেমি ডোকুর বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কোর্তোয়া।
আরও পড়ুন
| মেসির অবসর-পরবর্তী গন্তব্য জানালেন ব্যাকহাম |
|
জাবি আলোনসোর কোচিংয়ে উপক্ষিত এন্দ্রিক মাঠে নামার সুযোগ পান। বদলি নেমে গোলও পেয়ে যাচ্ছিলেন ব্রাজিলিয়ান। ৮৫ মিনিটে তার হেড সিটি গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে ক্রসবারে লেগে বাইরে চলে যায়।
বার্নাব্যুতে শেষ মুহূর্তে গোল করে কত ম্যাচেই তো প্রত্যাবর্তনের মহাকাব্য লিখেছে রিয়াল। সিটির বিপক্ষে ম্যাচেও তার পুনরাবৃত্তির জন্য মরিয়া চেষ্টা চালায় প্রতিযোগিতার সবচেয়ে সফল দলটি। তবে দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া রিয়াল এবার আর পারেনি। তাতে মৌসুমের আরেকটি হতাশাকে সঙ্গী করেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।

শিগগিরই ক্লাব সান্তোসের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে চলেছে নেইমার জুনিয়রের। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের পরবর্তী গন্তব্য কোথায় হতে পারে, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা তুঙ্গে। কয়েকদিন আগেও সাবেক বার্সেলোনা তারকা জানিয়েছেন, কোথায় যাবেন এবং ভবিষ্যত কেমন হবে, তা অজানা তাঁর।
নেইমারকে জড়িয়ে সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন বেড়েছে। ব্রাজিল ও ইউরোপ ভিত্তিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইন্টার মিয়ামিতেই যেতে পারেন নেইমার। সাবেক সতীর্থ লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজও চাচ্ছেন, তিনি যেন মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) পা বাড়ান।
এরইমধ্যে আজ সান্তোসের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো তেইশেইরা জানিয়েছেন, নেইমার স্বদেশি ক্লাবেই থাকবেন। তিনি বলেন,
“নেইমারের চুক্তি নবায়ন এখন সান্তোসের জন্য অগ্রাধিকার। তবে সবকিছুই বাজেটের ওপর নির্ভর করছে। আমরা এমন বাজেট রেখেছি যা আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে। আমরা আলোচনা চালাচ্ছি যাতে নেইমারের বর্তমান চুক্তি ২০২৬ পর্যন্ত মানিয়ে নেওয়া যায়।”
তিনি আরও বলেন,
“আমরা কিছু চুক্তি নবায়ন নিয়ে ভাবছি, বিশেষ করে নেইমারের। আমরা আত্মবিশ্বাসী এ ব্যাপারে। নেইমারের পরিকল্পনাও আগামী বছরের বিশ্বকাপ কেন্দ্র করে। এই সংলাপের উদ্দেশ্য যাতে সে আমাদের সঙ্গেই থাকে।”
চুক্তি নবায়ন কিংবা নতুন ক্লাব নিয়ে এখন পর্যন্ত চুপচাপ নেইমার। চুক্তি নবায়ন বা নতুন ক্লাব—এসবের কিছু নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছেন না তিনি। সামনে ২০২৬ বিশ্বকাপ। ফুটবল বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেইমারকে নিজের ফিটনেসের দিকে নজর দেওয়া উচিত। ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কেউ যদি পুরোপুরি ফিট না থাকে, তবে দলের সঙ্গে নেবেন না।
নেইমার নিজের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে হাটুর অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যদিও চোট ও সার্জারির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি। তবুও তিনি আত্মবিশ্বাসী যে, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের ব্রাজিল স্কোয়াডে থাকবেন।
নেইমার এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের হলুদ জার্সিতে তিনটি বিশ্বকাপে খেলেছেন। ২০১৪ সালে চারটি গোল করেছিলেন, কিন্তু চোটে টুর্নামেন্ট শেষ করতে পারেননি। তার অনুপস্থিতিতে ব্রাজিল সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭–১ গোলে হারে। ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে তিনি দুইটি করে গোল করেছেন, কিন্তু ব্রাজিল দুবারই কোয়ার্টার ফাইনালে ছিটকে যায়।
বর্তমানে ৩৩ বছর বয়সী নেইমার ২০২৩ সালের পর থেকে জাতীয় দলে খেলেননি। ব্রাজিল দলে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো, এস্তেভাও ও রাফিনিয়ার মতো তরুণ ও অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড রয়েছে। তবুও নেইমার আশা করছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন এবং আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে আরও বড় কিছু অর্জন করবেন।