ওয়ানডে রান তাড়ায় বিরাট কোহলি জ্বলে উঠবেন না, এটা যেন কোনোভাবেই হওয়ার নয়। দুবাইয়ের স্লো উইকেটে ভারতের এই ব্যাটিং তারকা আরও একবার জানান দিলেন, কেন তাকে ‘চেজ মাস্টার’ বলা হয়। স্টিভেন স্মিথ ও অ্যালেক্স কেরির ফিফটিতে অবশ্য লড়াকু পুঁজিই পেয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। শুরুতে দুই ওপেনার হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়া ভারতের ইনিংস একাই টানলেন সেই কোহলিই। সেঞ্চুরি মিস করলেও তার ইনিংস ভর করে টানা তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে জায়গা করে নিল ভারত।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। অজিরা গুটিয়ে গিয়েছিল ২৬৪ রানে, শেষের দিকে কিছুটা লড়াই ছাপিয়ে রোহিত শর্মার দল সেই টার্গেট পাড়ি দিয়েছে ১১ বল হাতে রেখে।
আইসিসি ইভেন্টের নকআউট পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটি এখন সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। আগেরটিও ছিল ভারতেরই।
আরও পড়ুন
সেমিফাইনালে মার্করামের খেলা নিয়ে সংশয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা |
![]() |
রান তাড়ায় বেন ডুয়ারসুইসের করা ইনিংসে দ্বিতীয় বলেই চার হাঁকান রোহিত। এরপর ন্যাথান এলিসকে মারেন ছক্কা। তবে ওই ওভারেই ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে তার দেওয়া সহজ ক্যাচ ফেলে দেন কুপার কনোলি। এরপর ডুয়ারসুইসের বলে আরও একবার উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক, তবে এবার ক্যাচ ফেলে দেন মার্নাস লাবুশেন।
অন্যপ্রান্তে অস্বস্তিতে থাকা শুবমান গিল ইনসাইড-এজ হয়ে বোল্ড হয়ে যান ডুয়ারসুইসের বলে। দারুণ ছন্দে ব্যাট করা রোহিতকে এরপর আক্রমণে এসেই ফিরিয়ে দেন কনোলি। তার বাঁহাতি স্পিনে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ার আগে আউট হন ২৮ রানে।
এই উইকেটে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে জাগে জয়ের আশা। তবে শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ক্রমেই ম্যাচে ফিরে আসে ভারত। দুজন মিলে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনারদের সামাল দেন দারুণ দক্ষতায়। এরই মধ্যে ফিফটি হয়ে যায় কোহলি। এরপর একটা সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি একটা, তবে কনোলির বলে মিড-অফে ডাইভ দিয়েও ক্যাচ নিতে পারেননি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটির ইতি টানেন শেষ পর্যন্ত অ্যাডাম জাম্পা। অভিজ্ঞ এই লেগ স্পিনার আইয়ারকে ৪৫ রানে বোল্ড করে ভাঙেন ৯১ রানের জুটি। পাঁচে নামা আকসার প্যাটেল খেলেন কার্যকর এক ক্যামিও ইনিংস। তবে সেট হওয়ার পর তাকে বোল্ড করে ম্যাচে রোমাঞ্চ ফিরিয়ে আনেন এলিস।
শেষ ১২ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ৭২ রান। কোহলি ও লোকেশ রাহুল ভালোভাবেই সেট হওয়ায় ম্যাচ ক্রমেই হেলে যাচ্ছিল ভারতের দিকে। আরও একবার আক্রমণে এসে দারুণ এক গুগলিতে কোহলিকে বিভ্রান্ত করে ক্যাচ বানান জাম্পা। তবে এর আগে মাত্র ৫ চারে ৯৮ বলে ৮৪ রানের ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়া ইনিংস উপহার দেন সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার।
আরও পড়ুন
অধিনায়কত্ব হারিয়ে টি-টোয়েন্টি দল থেকেই বাদ রিজওয়ান, নেই বাবরও |
![]() |
ওই উইকেটের পর ম্যাচে ফের রোমাঞ্চের সম্ভাবনা জাগলেও, রাহুল ও হার্দিক পান্ডিয়া মিলে ভারতকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। জাম্পার করা শেষ ওভারে টানা দুই ছক্কায় হার্দিক দ্রুত ম্যাচ শেষের কাজ সেরে ফেলেন। শেষ মুহূর্তে ২৮ রানে তিনি আউট হলেও ভারতের জয়ে এর প্রভাব আর পড়েনি। রাহুল অপরাজিত থাকেন ৪২ রানে।
এর আগে দিনের শুরুতে আগে ব্যাট করা অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের বড় হাইলাইট ছিলেন ট্রাভিস হেড। ভারতের বিপক্ষে বারবার সেরা সব ইনিংস খেলা এই মারকুটে ওপেনার এদিনও উড়ন্ত ছন্দেই ব্যাট করছিলেন। চার-ছক্কার মারে আভাস দিচ্ছিলেন বড় কিছুর। তবে এবার তিনি আর পারেননি। আক্রমণে এসেই তাকে ৩৯ রানে ফিরিয়ে দেন ভারুন চক্রবর্তী।
অন্য ওপেনার কনোলি রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন। এরপর ভারতের চার স্পিনার দিয়ে সাজানো আক্রমণ সামলে ইনিংস এগিয়ে নেন স্পিনের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সেরা দুই ব্যাটার স্মিথ ও লাবুশেন। জমে ওঠা এই জুটির ভাঙন ধরান রবীন্দ্র জাদেজা। তার শিকার হন লাবুশেন (২৯)।
স্মিথ একপ্রান্ত আগলে খেলেন দুর্দান্ত এক ইনিংস, যেখানে সম্ভাবনা ছিল তার সেঞ্চুরির। তবে ফিরতি স্পেলে এসে মোহাম্মদ শামি তাকে বোল্ড করে দেন ৭৩ রানে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ইনিংস সাজান মাত্র ৪টি চার ও এক ছক্কায়।
২০৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে একটা ফাইটিং স্কোরের দিকে একাই টেনে নেন কেরি। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৬১ রানের লড়িয়ে এক ইনিংস। ৪৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার ছিলেন পেসার শামি।
No posts available.
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৩ এম
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে নিউজিল্যান্ড দলে ফিরেছেন কেন উইলিয়ামসন। একদিনের ফরম্যাটে সর্বশেষ এশিয়া কাপে খেলেছিলেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। গত এক মাস ধরে ফেরার যুদ্ধে ছিলেন উইলিয়ামসন।
আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। উইলিয়ামসন ছাড়াও দলে ফিরেছেন নাথান স্মিথ। জিম্বাবুয়ের সিরিজে চোটে পড়া এই পেস অলরাউন্ডারেরও দলে ডাক পড়েছে।
উইলিয়ামসন ও নাথানের দলে ফেরা নিয়ে নিউজিল্যান্ডের কোচ রব ওয়াল্টার বলেন, ‘কেন ও নাথান তাদের নিজ নিজ চোট এবং অসুস্থতা কাটিয়ে উঠতে কঠোর পরিশ্রম করেছে। আর নাথান এখনও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও, তার অলরাউন্ড দক্ষতা এবং মাঠে পারফরম্যান্স আমাদের মুগ্ধ করেছে।’
আগামী ২৬ অক্টোবরের প্রথম ম্যাচের দুই দিন আগে টাওরাঙ্গায় পৌঁছাবে নিউজিল্যান্ড। ২৯ অক্টোবর হ্যামিলটনে দ্বিতীয় ওয়ানডে। সিরিজের শেষ ম্যাচ ১ নভেম্বর ওয়েলিংটনে।
নিউজিল্যান্ড ওয়ানডে স্কোয়াড:
মিচেল স্যান্টনার (ক্যাপ্টেন), মাইকেল ব্রেইসওয়েল, মার্ক চ্যাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, জেকব ডাফি, জ্যাক ফোলকস, ম্যাট হেনরি, কাইল জেমিসন, টম লাথাম (ওয়িকেটকিপার), ড্যারিল মিচেল, রচিন রবিন্দ্র, নাথান স্মিথ, কেন উইলিয়ামসন ও উইল ইয়ং।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ( বিপিএল) আয়োজনের সত্ব ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের হাতে তুলে দিলে এই আসর থেকে প্রত্যাশিত অর্থ আয়ের সম্ভাবনা আছে। বিপিএলের প্রথম দুই সংস্করনে গেম অন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে ৬৬ কোটি ৫০ লাখ ২৭ হাজার ৯৪৩ টাকা পেয়ে তা জেনে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে মেয়াদ পূর্ণ করতে দেয়নি বিসিবি গেম অন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টকে। ৬ বছরের জন্য বিপিএল আয়োজনের সত্ব গেম অন স্পোর্টস-এর কাছে বিক্রি করে তৃতীয় সংস্করনকে সামনে রেখে সেই চুক্তি বাতিল করেছে বিসিবি।
অধিক মুনাফার আশায় বিপিএলে আয়োজনের পুরো কর্তৃত্ব বিসিবি নিয়েছিল ঠিকই, তবে এই সিদ্ধান্তে বুমেরাং হয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে আকর্ষনীয় আসর বিপিএল আয়োজনে পুরো কর্তৃত্ব নিজেদের হাতে নিয়ে প্রত্যাশিত আয়ের সম্ভাবনা নেই, সর্বশেষ ৯টি সংস্করণে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সে কারণেই অতীতের মতো বিপিএল আয়োজনে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানকে সর্ম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিসিবির সাবেক পরিচালক এবং বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম। গত ১ সেপ্টেম্বরে সিলেটে অনুষ্ঠিত বিসিবি পরিচালনা পরিষদের সভায় আইএমজি স্পোর্টস মার্কেটিং কনসালটিং ফার্মকে বিপিএলের পরবর্তী তিনটি সংস্করণের (১২, ১৩ ও ১৪তম আসর) জন্য বেছে নিয়েছে।
এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) এ অংশ নেয়া ৫টি প্রতিষ্ঠানের (এপেক্স স্পোর্টস কনসালটিং, আইএমজি, রিয়েল ইমপ্যাক্ট এন্ড অ্যাবসলুট লিজেন্ড স্পোর্টস, দ্য আইপিজি গ্রুপ এন্ড মাইন্ট ট্রি লিমিটেড এবং ট্রান্স গ্রুপ) মধ্য থেকে আইএমজির প্রস্তাব বিসিবির কাছে বিবেচ্য হয়েছে। ইতোমধ্যে আইএমজিকে বিপিএলের পরবর্তী ৩ সংস্করণের জন্য চূড়ান্ত করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
বিপিএলের পূর্ববর্তী কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে আগামী সপ্তাহে চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন নব গঠিত বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু-' আইএমজি যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী। ওদের ক্লিন ইমেজ আছে। আইপিএলের প্রথম ৭ সংস্করণের দায়িত্ব ছিল তাদের। বিশ্বসেরা গলফার টাইগার উডসের টুর্নামেন্ট আয়োজন করে ওরা। ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আবার ফিরতে চাইছে আইএমজি। বিপিএলের লোগো বদলে ফেলবে, সব কটি ভেন্যু ব্রান্ডিং করতে চায় আইএমজি। স্পন্সর ডিনার করে স্পন্সর প্রতিষ্ঠানসমূহকে আকৃষ্ট করার পরিকল্পনা আছে ওদের। এমন একটা প্রতিষ্ঠানকে বেছে নেয়ায় বিপিএলের ইমেজ ব্রান্ডিং করতে পারবে বিসিবি।'
শর্ত অনুযায়ী কনসালটিং এবং স্ট্যাটেজিক সার্ভিস ফি এবং কমিশন ফি পাবে আইএমজি। কনসালটিং এবং স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিস ফি হিসেবে বিপিএলের দ্বাদশ সংস্করণের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, ত্রয়োদশ আসরের জন্য ১ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার এবং চতুর্দশ আসরের জন্য ১ লাখ ৮১ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার দেওয়া হবে আইএমজিকে। প্রতিটি সংস্করণের কনসালটিং ফি ৩ থেকে ৪ কিস্তির মধ্যে পরিশোধ করতে হবে বিসিবিকে। এর বাইরে চুক্তির মেয়াদকালে বিদেশী ফ্রাঞ্চাইজি এবং মিডিয়া রাইটস বিক্রি থেকে কমিশনের সুযোগ থাকছে আইএমজির। বিদেশি কোনো ফ্রাঞ্চাইজিকে বিপিএলে আনতে পারলে ওই ফ্রাঞ্চাইজি বিক্রির সত্ব থেকে ৪% পাবে আইএমজি। মিডিয়া রাইটস বিক্রির ক্ষেত্রেও কমিশনের সুযোগ থাকছে আইএমজির।
বিপিএলের কোনো সংস্করণে ১ মিলিয়ন ডলারের নিচে মিডিয়া রাইটস বিক্রি হলে এক কানাকড়িও পাবে না আইএমজি। তবে ১ থেকে ২ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে মিডিয়া রাইটস বিক্রি হলে সেক্ষেত্রে দ্বাদশ সংস্করণের জন্য ১০%, ত্রয়োদশ সংস্করণে ৭.৫০% চতুর্দশ সংস্করনে ৫% হারে কমিশন পাবে আইএমজি। একটি সংস্করণে মিডিয়া রাইটস ২ থেকে ৩ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হলে দ্বাদশ সংস্করণে ১৫%, ত্রয়োদশ সংস্করণে ১১.২৫%, চতুর্দশ সংস্করনে ৭.৫০% কমিশন মানি বরাদ্দ থাকবে আইএমজির। মিডিয়া রাইটস ৩ মিলিয়ন ডলারের উপরে বিক্রি করতে পারলে দ্বাদশ সংস্করণে ২০%, ত্রয়োদশ সংস্করণে ১৫%, চতুর্দশ সংস্করণে ১০% কমিশন মানি পাবে আইএমজি।
নারী বিশ্বকাপে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো ইংল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল। ভারতের বিপক্ষে ৪ রানে জিতে তৃতীয় দল হিসেবে শেষ চারে পৌঁছাল সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। এর আগে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে দুই হেভিওয়েট—অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
ভারতের ইন্দোরে আজ হারমানপ্রীত কৌরদের বিপক্ষে সহজ সমীকরণ মাথায় রেখে মাঠে নামে ইংল্যান্ড। আসরে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচে না হারা দলটির হাতে ছিল তিনটি ম্যাচ। যেকোনো একটি জিতলেই শেষ চার নিশ্চিত হয়ে যেত ইংলিশ মেয়েদের। আর সব ম্যাচ হারলে প্রার্থনা করতে হতো ভারত বা নিউজিল্যান্ড ৭ পয়েন্টের বেশি না পায় তার জন্য। এতকিছুর প্রয়োজন পড়েনি তাদের। বেশ স্বাচ্ছন্দেই সেমিতে উঠেছে ন্যাট সিভার-ব্রান্টরা।
এদিন টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ন্যাট সিভার। তার সিদ্ধান্ত নেহায়েত খারাপ ছিল না তা দলীয় স্কোরবোর্ড সাক্ষ্য দেয়। দলীয় শতকের আগে দুই ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে দলকে ২৮৮ রানের পুঁজি দেন হিদার নাইট।
বাংলাদেশের বিপক্ষে অপরাজিত ৭৯ রানের ইনিংস খেলার পর আজ ইংল্যান্ড নারী দলের এই স্পিন অলরাউন্ডার পেলেন বিশ্বকাপে প্রথম শতকের দেখা। একই সঙ্গে রান সংগ্রহকারীদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছেন তিনি। এদিন ৯১ বল মোকাবিলা করে ১০৯ রান করেন হিদার, যার মধ্যে ছিল ১৫টি বাউন্ডারি ও ১টি ছক্কা।
হিদারের সেঞ্চুরি ছাড়াও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন অ্যামি জোন্স। তিনি ৬৮ বলে ৫৬ রান করেন, যার মধ্যে ছিল ৮টি বাউন্ডারি।
২৮৯ রানের টার্গেটে নেমে শেষ ওভার পর্যন্ত স্বপ্ন দেখিয়েছে ভারতের মেয়েরা। স্মৃতি মন্ধানা, হারমান ও দ্বিপ্তী শর্মা—এই তিনজনই অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন। সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ওপেনার স্মৃতির, যিনি ৮৮ রান করেন।
রানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সঠিক পথেই ছিল ভারত। দলীয় ১৩ রানে প্রাতিকা রাওয়ালকে হারানোর পর হারলিন দেওল ফেরেন ৪২ রানে। তাতে সমস্যা হয়নি। স্মৃতি ও হারমানের শতরান (১২৫ রানের জুটি) দলকে বিপদমুক্ত করেছে এবং আশা দেখিয়েছে।
ন্যাট সিভার-ব্রান্টের বলে ক্যাচ তুলে ব্যাক্তিগত ৭০ রানে হারমান ফিরলে নতুন করে ভারতীয়দের মনে আশা জাগায় স্মৃতি ও দ্বিপ্তী। তাদের জুটি ভেঙে যায় দলীয় ২৩৪ রানে। এরপর দ্রুত রিচা ঘোষ ও দ্বিপ্তীর উইকেট পড়ায় দল কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায়।
শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন দেখেছিল অমানজোত কৌর ও স্নেহা রানা। শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৯ রান। স্মৃতি একবার আটকে দিলেও সিঙ্গেল-ডাবলসে এগিয়ে যায় তারা। শেষ বল আমানজোত বাউন্ডারি হাঁকালেও হার দেখতে হয় ভারতকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি এখন পুরোদস্তুর কোচ। শাই হোপদের হেড মাস্টার হিসেবেই বাংলাদেশ সফরে এসেছেন তিনি। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়লেও সদা হাস্যোজ্জ্বল সামি মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন কথায় এবং কাজে।
শিষ্যদের ব্যাট-বলের তালিম দেওয়ার পাশাপাশি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন সবার সঙ্গে। আইসিসি ইভেন্ট ছাড়াও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সুবাদে ঢাকায় আসার অভিজ্ঞতা রয়েছে স্যামির। পার্থক্য এটুকুই—আগে এসেছিলেন খেলোয়াড় হিসেবে, এবার কোচ হয়ে।
কোচের ভূমিকা ও গাম্ভীর্যতার আড়ালেও নিজস্ব ক্যারিশমা ছড়িয়ে যাচ্ছেন স্যামি। কখনো আদুরে বাংলায় কথা বলছেন, কখনো জানাচ্ছেন প্রিয় খাবারের নাম—বিরিয়ানি। আর এবার খোঁজ করলেন বাংলাদেশ নারী দলের পেস অলরাউন্ডার রিতু মনির।
রিতু মনিকে খোঁজ করার কারণ কী হতে পারে, প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক। কারণ এর আগে বাংলাদেশ নারী দলের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেননি স্যামি। সঙ্গত কারণেই, ব্যক্তিগত পরিচয় থাকার কথাও নয়। কিন্তু হ্যাঁ, অন্য একটি বিশেষ কারণে দেশের এই পেস অলরাউন্ডারকে মনে রেখেছেন ও খোঁজ করেছেন স্যামি।
রিতু মনির আদর্শই হচ্ছেন ড্যারেন স্যামি। দু’জনেই পেস অলরাউন্ডার। এমনকি স্যামির জার্সি নম্বর ৮৮-ও বেছে নিয়েছেন রিতু। এই মিলগুলোর কারণেই তাকে স্মরণে রেখেছেন সামি।
আজ টি স্পোর্টসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সামি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে, আমি আইসিসির একটি পোস্টে তার (রিতুর) একটি সুন্দর ভিডিও দেখেছি। সে বাংলাদেশ নারী দলের ক্রিকেটার। যখন আমি বাংলাদেশি আসি, তখন ও ছিল এক তরুণ তারকা। সে ৮৮ নম্বর জার্সি পরে খেলেছিল। তার সঙ্গে দেখা করে ভালো লেগেছে। সে এখন ভারতে আছে। আশা করি, সে দেশে ফিরবে, আর দেশ ছাড়ার আগে আমি তার সঙ্গে দেখা করতে চাই।’
স্যামি তাকে স্মরণে রেখেছেন—এতে দারুণ আনন্দিত রিতু মনি। নারী বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া এই অলরাউন্ডার তাৎক্ষণিকভাবে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন টি স্পোর্টসকে। রিতু বলেন, ‘যখন শুনলাম যে সে (সামি) আমার কথা বলেছে, আমি এক্সাইটেড হয়ে যাই। আমি তাকে দেখলেই দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরি। পরে আমার পুরো টিম আমাকে সাপোর্ট করে। আসলে আমি তার কত বড় ভক্ত, সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি তার অনেক বড় ভক্ত। যখন সে বাংলাদেশে খেলতে আসতো, তখন তার পেপার কাটিং রেখে দিতাম। তখনই মনে হয়েছিল, যদি আমি একদিন জাতীয় দলে খেলি, তাহলে তার মতো ৮৮ নম্বর জার্সি পরে খেলব। কারণ সেও অলরাউন্ডার, আমিও তাই। এমনকি তার কোনো ম্যাচ আমি কখনো মিস করতাম না।’
স্যামি শুধু রিতুর খোঁজই নেননি দেশের নারী ক্রিকেটারদের দিয়েছেন উপদেশ।বলেছেন অনুশীলন করে নিজেকে প্রস্তুত করো এবং সেটা প্রয়োগ করো।
পাকিস্তানকে
হারিয়ে উড়ন্ত শুরুর পর থমকে গেছে বাংলাদেশে জয়ের চাকা। একাধিক ম্যাচে সুযোগ তৈরি করলেও
শেষ পর্যন্ত বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়তে পারেননি নিগার সুলতানা জ্যোতি, নাহিদা আক্তাররা।
তাই
এখন আর সেমি-ফাইনালের স্বপ্ন দেখছে না দল। বাকি দুই ম্যাচ জিতে সেরা পাঁচে থাকার লক্ষ্যের
কথা বললেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন।
নারী
ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে সোমবার শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। মুম্বাইয়ের
ডিওয়াই পাতিল স্পোর্টস একাডেমি মাঠে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টা ৩০ মিনিটে।
এখন
পর্যন্ত খেলা পাঁচ ম্যাচে এক জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে আট দলের মধ্যে ছয় নম্বরে অবস্থান করছে
বাংলাদেশ। শেষ দুই ম্যাচ জিততে পারলে সমীকরণের মারপ্যাঁচে সেমি-ফাইনালেও খেলার সুযোগ
আছে তাদের।
তবে
সেটি যে বেশ কঠিন তা মেনে নিয়েছেন ফাহিমা। লঙ্কানদের মুখোমুখি হওয়ার আগের দিন সংবাদ
সম্মেলনে তাই সেরা পাঁচে থাকার লক্ষ্যের কথা বললেন অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার।
“হ্যাঁ! আমাদের এখনও সুযোগ আছে (সেমি-ফাইনাল খেলার)। এখনও আমাদের সুযোগ আছে ভালো কিছু... সেরা চারে ওঠা কঠিন তবে আমার মতে, আমরা যদি বাকি ২ ম্যাচ জিততে পারি, তাহলে পাঁচে থাকতে পারব।”
“শুরু থেকেই আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি এবং আশানুরূপ খেলাই খেলেছি সব দলের বিপক্ষে। সেদিক থেকে আমাদের প্রত্যাশাও বেড়ে গিয়েছিল। এখনও আমাদের দলের ওপর ভালো প্রত্যাশা আছে। শেষ ম্যাচ ২টা ভালোভাবে খেলে আমরা পূর্ণ পয়েন্ট নিতে চাই।”
চোটের
কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচ খেলতে পারেননি দলের পেসার মারুফা আক্তার। শ্রীলঙ্কার
বিপক্ষে তাকে পাওয়ার আভাস দিয়ে রাখলেন মারুফা।
“মারুফা
এখন অনেক ভালো আছে। গত ২ দিন খুব ভালো অনুশীলন করেছে। পুরোপুরি ফিট আছে। তাকে আমরা
কালকের ম্যাচে এভেইলেবল পাব।”