
প্রথম দিনের খেলা শেষে আম্পায়ার যখন বেলস ফেলে দেন, মুশফিকুর রহিম তখনও ৯৯ রানে অপরাজিত। একটি রানের জন্য তাই অপেক্ষা করতে হয় ১৭ ঘণ্টার বেশি। তবে আবার মাঠে বেশি অপেক্ষা করেননি মুশফিক। প্রথম ওভারেই তিনি করে ফেললেন ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরি।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই কাঙ্খিত মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক। দেশের ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নেমে শতক করে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম তুলে রাখলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
টেস্ট ইতিহাসে শততম ম্যাচ খেলতে নেমে মুশফিকের আগে সেঞ্চুরি করা ব্যাটার ১০ জন। এবার তিন অঙ্ক ছুঁয়ে যেন একাদশ পূর্ণ করলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক।
১৯৬৮ সালে প্রথম নিজের শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন কলিন কাউড্রি। এরপর একে একে এই তালিকায় যুক্ত হন গর্ডন গ্রিনিজ, জাভেদ মিঁয়াদাদ, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, ইনজামাম উল হক, রিকি পন্টিং (দুই ইনিংসেই), গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা, জো রুট ও ডেভিড ওয়ার্নার।
এই দশজনের মধ্যে শততম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন রুট ও ওয়ার্নার। ২০২২ সালে শততম টেস্টে শতকের তালিকায় যোগ দেন ওয়ার্নার। মুশফিকের সামনে এবার রুট ও ওয়ার্নারের সঙ্গী হওয়ার সুযোগ।
শততম টেস্টে মুশফিকের চেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরি আছে শুধু গর্ডন গ্রিনিজ। ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি শততম টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন ৩৮ বছর ১১ মাস ১২ দিন বয়সে। এই ম্যাচের শুরুতে মুশফিকের বয়স ৩৮ বছর ৬ মাস ১১ দিন।
টেস্ট ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে মুশফিকের এটি ১৩তম সেঞ্চুরি। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে এটিই সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড। ৭৫ টেস্টে ১৩টি সেঞ্চুরি আছে বাঁহাতি অভিজ্ঞ ব্যাটার মুমিনুল হকেরও।
প্রথম দিন প্রথম সেশনে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছিল মুশফিকের। ৯৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা চাপে বাংলাদেশ। সেখান থেকে মুমিনুলের সঙ্গে ১০৭ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়েন মুশফিক।
মুমিনুল ৬৩ রান করে আউট হয়ে গেলে লিটন কুমার দাসের সঙ্গে জুটি বাধেন মুশফিক। প্রথম দিনে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৯০ রান।
সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পথে একদমই ঝুঁকি নেননি অভিজ্ঞ ব্যাটার। সাবধানী ব্যাটিংয়ে রয়েসয়ে খেলে ১৯৫ বলে মাত্র ৫ চার মেরে কাঙ্খিত মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি।
No posts available.
২০ নভেম্বর ২০২৫, ৪:৫৪ পিএম
২০ নভেম্বর ২০২৫, ২:০৩ পিএম
২০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৮ এম

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন প্লেয়ার্স লিস্টে নাম উঠিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ম্যাচের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। ছিলেন সেই দিন ৯৯ রানে ব্যাটিংয়ে।
আর মাত্র ১ রান হলেই শততম টেস্টে সেঞ্চুরির বিরল রেকর্ডে ১০ কৃতিমানের পাশে শোভা পাবে মুশফিকুর রহিমের নাম। এমন একটি স্মরণীয় মুহূর্তের স্বাক্ষী হতে দ্বিতীয় দিন বল মাঠে গড়ানোর বেশ আগেই হাজির দর্শক, বিসিবির একদল পরিচালক। তবে সেই একটি রানের জন্য মুশফিককে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে দ্বিতীয় দিনের নবম বল পর্যন্ত। বাঁ হাতি স্পিনার হামফ্রিসের প্রথম ওভারের ৬টি বলের সব কটি ডট করেছেন মুশফিক। দ্বিতীয় ওভারে পেসার জর্ডান নিল-এর প্রথম বলে লিটন সিঙ্গল নিয়ে প্রান্ত বদল করলে মুশফিকের প্রতীক্ষার অবসান হয়। ১ বল ডট করে পরের বলে
ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে সিঙ্গল নিয়েই ঢুকে গেলেন টেস্টের আর একটি অভিজাত ক্লাবে। কলিন কাউড্রে, জাভেদ মিয়াদাদ, গর্ডন গ্রীনিজ, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, ইনজামাম উল হক, রিকি পন্টিং, গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা, জো রুট এবং ডেভিড ওয়ার্নারের পর ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি টেস্টে সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন মুশফিক।
ভাবুন তো, যে ক্লাবের সদস্যপদ পাননি ভারত, শ্রীলঙ্কা, নিউ জিল্যান্ডের মতো দেশের কোনো লিজেন্ডারি, সেই ক্লাবে মুশফিকুর রহিম!
সেঞ্চুরি টেস্টে সেঞ্চুরির ইনিংসটি থেমেছে ১০৬ রানে। বাঁ হাতি স্পিনার হামফ্রিসের এক্সট্রা বাউন্স ব্যাকফুটে ডিফেন্স করতে যেয়ে স্লিপে বালবার্নির ডাইভিং ক্যাচে থেমেছেন মুশফিক। ২৮৪ মিনিটের ইনিংসে মেরেছেন তিনি ৫টি বাউন্ডারি। ৪র্থ উইকেট জুটিতে লিটনকে সঙ্গে নিয়ে ১০৭ রানে দিয়েছেন মুশফিক নেতৃত্ব।
মুশফিকুরের ইতিহাসময় টেস্টে লিটন ফিরেছেন ছন্দে। মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্ট ম্যাচটি প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে লিটনের শততম ম্যাচ। এমন ম্যাচে ১১ রান করে ৬ষ্ঠ বাংলাদেশী হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মধ্যে টেস্টে ৬ষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে পেয়েছেন ৩ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদ। স্পিনার গ্যাভিন হোয়ে-কে প্যাডেল সুইপ শটে বাউন্ডারিতে পূর্ণ করেছেন ৫ম টেস্ট সেঞ্চুরি। ১৫ মাস পর তার টেস্ট সেঞ্চুরিটি ১৪ ইনিংস বিরতি দিয়ে। মুশফিকুর রহিমের মতো লিটনকেও থামিয়েছেন হামফ্রিস। এবং যথারীতি লিটনও দিয়েছেন স্লিপে ক্যাচ। ২৭৩ মিনিটের ইনিংসে ১২৮ রানে মেরেছেন লিটন ৮ চার, ৪ ছক্কা। এমন একটি দিনে ফিফটি হাতছাড়া করেছেন মিরাজ। ৪৭ রানের মাথায় লেগ স্পিনার গ্যাভিন হোয়ের বলে হাফ হার্টেড শট নিতে যেয়ে পয়েন্টে দিয়েছেন ক্যাচ মিরাজ। যে ইনিংসে মেরেছেন মিরাজ ৪ চার, ১ ছক্কা।
প্রথম দিন বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৯২/৪। দ্বিতীয় দিন শেষ ৬ জুটি যোগ করেছে ১৮৪ রান। থেমেছে বাংলাদেশ ৪৭৬-এ। দ্বিতীয় দিনের টি ব্রেকের আধ ঘন্টা আগে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস।
২ বছর আগে আইরিশ অফ স্পিনার ম্যাকব্রাইন বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুরে পেয়েছিলেন ইনিংসে ৬ উইকেট (৬/১১৮)। সেটাই ছিল প্রথম ১০ টেস্টে তার একমাত্র ৫ উইকেটের ইনিংস। মিরপুরে ফিরে আবার দেখা পেয়েছেন ৬ উইকেট (৬/১০৯)। আগের দিনের ৪ উইকেটের পাশে দ্বিতীয় দিনের শেষ স্পেলে (২.১-০-৯-২) ম্যাকব্রাইন ২ উইকেট পেয়ে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করেছেন।
মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্ট ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখার পথে এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ দল। স্টালির্ংকে রিভিউ আপীলে ফিরিয়ে দিয়ে শুরুটা করেছেন পেসার খালেদ (৬-০-৩০-১)। সময় গড়ানোর সাথে সাথে উইকেটে টার্ন এবং বাউন্স পেয়ে বাংলাদেশের তিন স্পিনার ( হাসান মুরাদ ১০-৩-১০-২, মিরাজ ৩-০-১১-১, তাইজুল ৩-০-৬-১) ছড়িয়েছেন আতঙ্ক। তিন স্পিনারের ঘূর্নিতে রীতিমতো দিশেহারা আয়ারল্যান্ড আরও একটি ইনিংস হারের মুখে। সাড়ে ৭ ঘন্টা ফিল্ডিং করে অতিষ্ঠ আয়ারল্যান্ড টপ এবং মিডল অর্ডার ব্যাটারদের ব্যাটিংয়ে ক্লান্তি ফুটে উঠেছে। ব্যাটিংয়ে নেমে দিনের শেষ ১৬৮ মিনিট হারিয়েছে সফরকারীরা ৯৮ রানে ৫ উইকেট। ফলো অন থেকে বাঁচতে তাদেরকে করতে হবে শেষ ৫ উইকেটে আরও ১৭৯ রান।

দিনের শুরুতেই কাঙ্ক্ষিত মাইলফলক ছুঁয়ে ফেললেন মুশফিকুর রহিম। গড়লেন শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করার ইতিহাস। তার দেখানো পথে নিজের শততম প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তিন অঙ্কের দেখা পেলেন লিটন কুমার দাসও। এরপর দাপট দেখালেন বোলাররা।
সব মিলিয়ে মিরপুর টেস্টের দুই দিন শেষে দারুণ অবস্থানে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষে আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ ৩৮ ওভারে ৯৮ রান।
এর আগে মুশফিক ও লিটনের সেঞ্চুরির সৌজন্যে ৪৭৬ রান করে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের চেয়ে ৩৭৮ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবে আইরিশরা। ফলো-অন এড়াতে তাদের প্রয়োজন আরও ১৭৯ রান।
শততম টেস্টে শতক থেকে মাত্র ১ রান দূরে থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেন মুশফিক। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই বিশ্বের ১১তম ব্যাটার হিসেবে একশতম টেস্টে একশ রানের কীর্তি গড়েন ৩৮ বছর বয়সী ব্যাটার।
এরপর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুশফিক। ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরিতে ১০৬ রান করে আউট হন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডে এখন মুমিনুল হকের পাশেই আছেন মুশফিক।
মুশফিকের বিদায়ে ভাঙে ১০৮ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে জুটি বাধেন লিটন। দুজন মিলে যোগ করেন ১২৩ রান। শুরু থেকে চমৎকার ব্যাটিংয়ে ১৫৮ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি করেন লিটন।
তিন অঙ্ক ছুঁয়েও ইতিবাচক খেলতে থাকেন লিটন। তবে পরপর দুই ওভারে ফিরে যান তারা দুজন। মাত্র ৩ রানের জন্য ফিফটি করতে পারেননি মিরাজ। আর ৮ চার ও ৪ ছক্কায় ১৯২ বলে ১২৮ রানের ইনিংস খেলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লিটন।
শেষ দিকে ইবাদত হোসেন ১৪ বলে ১৮ রান করলে ৪৭৬ রানে থামে বাংলাদেশ।
আইরিশদের পক্ষে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১০৯ রানে ৬ উইকেট নেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। মিরপুরে ২০২৩ সালে খেলা টেস্টে ১১৮ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন অভিজ্ঞ অফ স্পিনার।
পরে ব্যাট করতে নেমে ১০ ওভারে উইকেট পড়তে দেননি আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেনার পল স্টারলিং ও অ্যান্ডি ব্যালবার্নি। ১১তম ওভারে স্টারলিংকে এলবিডব্লিউ করে ব্রেক থ্রু এনে দেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ২৭ রান করে ফেরেন স্টারলিং।
এরপর নিয়মিতই উইকেট হারায় সফরকারীরা। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ৯৮ রানে দিন শেষ করে তারা। চমৎকার বোলিংয়ে ২ উইকেট নেন হাসান মুরাদ। এছাড়া মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের শিকার ১টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৯২/৪) ১৪১.১ ওভারে ৪৭৬ (মুশফিক ১০৬, লিটন ১২৮, মিরাজ ৪৭, তাইজুল ৪, মুরাদ ৮, ইবাদত ১৮ *, খালেদ ৮; নিল ১১-১-৪৭-০, ক্যাম্ফার ১০-০-৩২-০, ম্যাকব্রাইন ৩৩.১-৩-১০৯-৬, হামফ্রিজ ৫০-৫-১৫১-২, হোয়ে ৩৪-৩-১১৫-২, টেক্টর ৩-০-১০-০)
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩৮ ওভারে ৯৮/৫ (বালবার্নি ২১, স্টার্লিং ২৭, কারমাইকেল ১৭, টেক্টর ১৪, ক্যাম্ফার ০, টাকার ১১*, ডোহেনি ২*; ইবাদত ৫-১-১০-০, খালেদ ৬-০-৩০-১, তাইজুল ১২-১-৩২-১, মুরাদ ১০-৩-১০-২, মিরাজ ৩-০-১১-১, মুমিনুল ১-১-০-০)

প্রথম সেশনে একশর আগেই ৩ উইকেট নিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। এরপর একেকটি উইকেটের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা সফরকারীদের। আইরিশ বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে পরের ৩ উইকেটেই শতরানের জুটি গড়ল বাংলাদেশ। যার সৌজন্যে রেকর্ডে পাতায় জায়গা পেল তারা।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে পরপর চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেটে শতকছোঁয়া জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। টেস্ট ইতিহাসে মাত্র তৃতীয়বার দেখা গেল এমন ঘটনা।
এছাড়া বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসেও এক ইনিংসে তিনটি শতরানের এটি তৃতীয় ঘটনা।
আরও পড়ুন
| দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ইতিহাসের পাতায় মুশফিক |
|
প্রথম দিন মাত্র ৯৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর জুটি বাধেন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। মুমিনুল ৬৩ রান করে আউট হলে ভাঙে ১০৭ রানের জুটি।
এরপর লিটন কুমার দাসের সঙ্গে মুশফিক গড়ে তোলেন ১০৮ রানের জুটি। সেঞ্চুরি করে মুশফিকের বিদায়ের পর ষষ্ঠ উইকেটে ১২৩ রান যোগ করেন লিটন ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে ১৯৭৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারত ও ২০২৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাকিস্তানের ব্যাটাররা চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেটে শতকছোঁয়া জুটি গড়েছিলেন।
আর ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ও পরে একই বছর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয়বার এক ইনিংসে তিনটি শতরানের জুটি গড়েছিল বাংলাদেশ। প্রায় এক যুগ পর আবার সেই কীর্তি দেখাল তারা।

কলকাতা টেস্টে ঘাড়ে ব্যথা পাওয়া শুবমান গিলের দ্বিতীয় টেস্ট খেলা নিয়ে ছিল সংশয়। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গুয়াহাটি টেস্ট থেকে ছিটকেই গেলেন ভারতীয় অধিনায়ক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গুয়াহাটি টেস্টে খেলতে পারবেন না গিল। তাঁর পরিবর্তে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবেন উইকেটকিপার ব্যাটার রিশাভ পন্ত। আর একাদশে দেখা যেতে পারে বাঁ-হাতি ওপেনার সাই সুদর্শনকে।
ইডেন গার্ডেনে ৩০ রানে হেরে যাওয়া টেস্টের প্রথম ইনিংসে সুইপ শট খেলতে গিয়ে ঘাড়ে ব্যথা পান গিল। এরপর রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। পরে স্ক্যানের জন্য তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কলকাতা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। পরের দিনই হাসপাতাল থেকে ছুটি পান ২৬ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার। চোট থেকে খানিকটা সেরে উঠলেও তাকে নিয়ে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চায় না ভারত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, পুরোপুরি সুস্থা হতে প্রায় এক সপ্তাহ লাগতে পারে গিলের। ইতিমধ্যে ঘাড়ের ব্যায়াম শুরু করেছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগামী ৩০ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজে দেখা যাবে তাকে।
কলকাতা টেস্টে হেরে দুই ম্যাচের সিরিজে এখন ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে ভারত। শনিবার দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামবে দুই দল। গুয়াহাটির এই টেস্টে ভাঙছে শত বছরের প্রথা। টেস্ট ইতিহাসে এই প্রথম মধাহ্ন বিরতির আগে দেওয়া হবে চা বিরতি, যা পাল্টে দিচ্ছে ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণের রীতি।

ব্রেন্ডান ডগেটের জীবন নাকি দুই অংশে বিভক্ত—একটা কার্পেন্টারের (কাঠমিস্ত্রি), আরেকটা পেশাদার ক্রিকেটারের। অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে একাদশে জায়গা পেয়ে এবার অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অধ্যায় শুরু হচ্ছে সেই কাঠামিস্ত্রির।
আগামীকাল পার্থে প্রথম টেস্টের জন্য একাদশ ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। ফাস্ট বোলার ডগেট সহ অসি দলে আছেন আরেক নতুন মুখ। অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন ওপেনার জ্যাক বেথ ওয়েদারাল্ড। আর বাদ পড়লেন বো ওয়েবস্টার।
২০১৯ সালের পর প্রথমবার একই টেস্টে দুই নতুন খেলোয়াডের অভিষেক হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া দলে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওই টেস্টে একসঙ্গে অভিষেক হয় কার্টিস প্যাটারসন এবং ঝাই রিচার্ডসনের। আর অ্যাশেজে ২০১০-১১ মৌসুমে উসমান খাজা ও মাইকেল বিয়ারের অভিষেকে পর প্রথমবার জোড়া নতুন মুখ দেখা যাবে একই টেস্টে।
আরও পড়ুন
| বোনাস বাঁচাতে লেভানডফস্কিকে গোল করতে নিষেধ করেছিল বার্সা |
|
চোটের কারণে মাঠের বাইরে আছেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারের সঙ্গে ছিটকে গেছেন জশ হ্যাজলউডও। তাতে অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলিং আক্রমণে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা ডগেটের সঙ্গে থাকবেন স্কট বোলান্ড ও মিচেল স্টার্ক। চার প্রধান বোলার নিয়ে একাদশ সাজানো অসি একাদশে অন্যজন স্পিনার নাথান লায়ন। এছাড়া মিডিয়াম পেসার ক্যামেরন গ্রিন তো আছেনই।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেনিং জুটিতে দেখা যাবে উসমান খাজা-ওয়েদারাল্ডকে। মিডল অর্ডারে আছেন মার্নাস লাবুশচাগনে, স্টিভেন স্মিথ (ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক) ও ট্রাভিস হেড। আর উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারি।
হ্যাজলউডের বিকল্প হিসেবেই মূলত অভিষেক হচ্ছে ডগেটের। ৩১ বছর বয়সী এই পেসার দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চমৎকার ছন্দে আছেন। এই মৌসুমে হ্যামস্ট্রিং চোট থেকে ফেরার পর ১৪.৬৯ গড়ে ১৩ উইকেট নিয়েছেন।
কাঠমিস্ত্রি বাবার ঘরে রকহ্যাম্পটনে জন্ম ডগেটের। তবে শেকড় নিউক্যাসল অঞ্চলের ওয়ারিমি আদিবাসী সম্প্রদায়ে। কারপেন্ট্রি কোর্স প্রায় শেষ। সেই সময়ই কুইন্সল্যান্ড তাঁকে দিল রুকি কন্ট্রাক্ট— ওয়েস্টার্ন সাবার্বস ক্লাবে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে।
প্রথম শিল্ড মৌসুমেই ২৮ উইকেট নিয়ে কুইন্সল্যান্ডকে শিরোপা জেতানোর পর ডাক এল জাতীয় দলে। এমন দারুণ সুখবর পেয়েও নিজেকে কাঠমিস্ত্রি ছাড়া কিছু ভাবেননি ডগেট, ‘আমি তখনও নিজেকে কার্পেন্টারই ভাবতাম।’
গত মৌসুমেই শুরু হলো ভাগ্যের মোড় বদল। অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলে মূল তালিকায়ও ছিলেন না। কিন্তু আরেকজনের চোটে ডাকা হলে ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে। সুযোগ বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে, ১৫ রানে ৬ উইকেট নেন। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। গত দুই মৌসুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিয়েছেন ৬৬ উইকেট, গড় ২১.১৬। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার শিল্ড জয়ের নায়ক— সব মিলিয়ে ৩১ বছর বয়সী ডগেটই এখন মূল দলের বাইরে অস্ট্রেলিয়ার সেরা পেসার হিসেবে বিবেচিত।
আরও পড়ুন
| ক্যাম্প ন্যুতে আবারও চ্যাম্পিয়নস লিগ |
|
অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা আরেক অসি ক্রিকেটার ওয়েদারাল্ডও আছেন উড়ন্ত ছন্দে। ডেভিড ওয়ার্নারের অবসরের পর খাজার ছয় নম্বর ওপেনিং পার্টনার হিসেবে তাঁর উপর আস্থা রাখল অস্ট্রেলিয়া।
পার্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার একাদশ :
উসমান খাজা, জেক ওয়েদারাল্ড, মার্নাস লাবুশেন, স্টিভেন স্মিথ ( অধিনায়ক), ট্রাভিস হেড, ক্যামেরন গ্রিন, অ্যালেক্স কেয়ারি (উইকেটকিপার), মিচেল স্টার্ক, নাথান লায়ন, স্কট বোল্যান্ড, ব্রেন্ডান ডগগেট