২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
একটা টেস্ট ম্যাচ শুরুর আগে সবচেয়ে বেশি কোন প্রশ্নটা মাথায় ঘুরপাক খেতে পারে? যেখানটায় ম্যাচটা মাঠে গড়াবে, সেই মাঠটা কেমন? উইকেট কেমন হতে পারে? বা আবহাওয়াটাইবা কেমন ঐ অঞ্চলের? দলে কোনো পরিবর্তন আসবে কি?
কানপুরে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় টেস্টের আগে সবগুলো প্রশ্নেরই উত্তর বেশ কঠিন ও যথেষ্ট জটিলও বটে। এক-দুই কথায় সেসবের সমাধান করা আসলে সম্ভব নয় তাই একে একে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যাক।
সবচেয়ে আগে আসা যাক মাঠের ব্যাপারটায়। কানপুরের বিখ্যাত গ্রিন পার্ক স্টেডিয়াম। ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুর শহরের এই স্টেডিয়ামটার আছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। বাংলাদেশে যখন মহান ভাষা আন্দোলনের দামামায় উত্তাল জনতা, ঠিক সেই সময়টায় অর্থাৎ ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসে সর্বপ্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৫ সালে স্থাপিত এই স্টেডিয়ামটিতে। মজার ব্যাপার হল, ৭২ বছরে মোটে ২৩টা টেস্ট ম্যাচই হয়েছে কানপুরের এই মাঠে।
তুলনা করতে যদি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট টানা হয়, তাহলে মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে বিগত প্রায় দেড় যুগ ধরে। ২০০৬ সাল থেকে এরই মধ্যে মিরপুরে ২৭টা আর সাগরিকায় ২৪টা টেস্ট ম্যাচ আয়োজন হয়ে গেছে।
আসলে ভারতে এতো এতো মাঠে খেলা হয় যে, ঘুরেফিরে একটা মাঠে টেস্ট ম্যাচ আসতেই দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ বছর লেগে যায়। ভারতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হওয়া ইডেন গার্ডেন্সেই ৯০ বছরের ইতিহাসে ম্যাচ হয়েছে মাত্র ৪২টি! এমনকি গেল ৫ বছরে কোনো টেস্ট ম্যাচই সেখানে হয়নি। সবশেষ সেখানে টেস্ট খেলেছিলো বাংলাদেশই। সে হিসেবে অবশ্য একেবারেও কম খেলা হয়নি কানপুরে।
নাম গ্রিন পার্ক। মাঠের চারপাশে প্রচুর সবুজের সমারোহ আছে বটে, কিন্তু যদি উইকেটের দিকে আলোকপাত করা হয়, তাহলে তিল পরিমাণ সবুজও সেখানে খুঁজে পাবেন না আপনি। সবুজ সিগনাল না থাকলেও থাকছে না চেন্নাইয়ের মতো রেড সিগনাল অর্থাৎ লাল মাটির উইকেটও। বাংলাদেশের ঘরের মাঠের মতো কালচে উইকেটই থাকার কথা কানপুরে। তবে তাতেই অবশ্য এতোটা আশাবাদী হবার সুযোগও নেই। কারণ, কালো পিচ হলেও, মিরপুরের মতো এতো টার্ন অবশ্য মিলছে না কানপুর থেকে।
ঐতিহ্যগতভাবে কানপুর ফ্ল্যাট উইকেটই উপহার দেয়। কালো মাটির উইকেট দেখেই যদি কেউ ভাবেন যে মিরপুরের মতো একেবারে একপেশে স্পিন সহায়ক উইকেট হবে, তো সে জায়গাটায় হয়তো তিনি ভুলই করবেন। স্পিনারদের জন্য দরকারি র্যাম্প টার্ন কিংবা অতিরিক্ত কোনো টার্নই যে মিলছে না এই উইকেট থেকে।
বাংলাদেশের স্পিন ইউনিটের বড় ভরসার জায়গা সাকিব আল হাসান তো এই ব্যাপারে বলেই দিয়েছেন যে, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বা ভারতের মতো দলের বিপক্ষে খেলার সময়ে আসলে উইকেটের খুব একটা ভূমিকা থাকে না। বাংলাদেশকে যেভাবেই হোক, চেন্নাইয়ের চেয়ে ভালো খেলাটা মাঠে খেলতে হবে।
শুরুর একটা বা দু’টা সেশনে পেসারদের বেশ সুবিধা মিলবে যদিও চেন্নাইয়ের মতো এতো বাউন্স মিলবে না কানপুরের উইকেট থেকে। দ্রুতই স্পিনারদের পক্ষে কথা বলবে কানপুর। এমনকি শেষ দুটো দিনে উইকেট ভেঙে প্রায় পুরো সুবিধাটাই মিলতে পারে স্পিনারদের।
তবে শেষ দুটো দিন। এখানে ব্যাপারটা একটু জটিলই হয়ে গেছে। শেষ দুটো দিনের হিসেবেটা বদলে যেতে পারে শুরুর দুটো দিনেই। বাংলাদেশে যেমন এই মুহূর্তে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি ঝরছে, একই চিত্র কানপুরেও। তীব্র দাবদাহের ধারা ভেঙে আজ থেকেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়েছে সেখানে।
আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে বেরসিক এই বৃষ্টি ভেস্তে দিতে পারে টেস্টের শুরুর দুই দিন। সেটা ঘটলে কিন্তু ঐ শেষ দুই দিনে স্পিনারদের আধিপত্য মিলবে না দুই দলের কারোরই। তিন দিনের খেলায় ফলও আসবে কিনা সেটাও হয়তো প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। যদিও উপমহাদেশে আবহাওয়ার পূর্বাভাস আর বাস্তবতা কতোখানি মেলে, তা নিশ্চয়ই আমাদের জানা আছে ভালোমতোই।
এবারে আসা যাক, দলের প্রশ্নে। দুই দলে কী কী পরিবর্তনের দেখা মিলতে পারে? আদৌ কি কোনো পরিবর্তনের দেখা মিলবে? চেন্নাইয়ে দুই দলই তিন পেসার আর দুই স্পিনার নিয়ে খেলেছে। যেহেতু চেন্নাইয়ের লাল মাটির উইকেটের মতো অতো পেসবান্ধব উইকেট নয় কানপুর, সেহেতু এটা বলাই যায় যে একজন অতিরিক্ত স্পিনারের দেখা দুই দলেই মিলতে পারে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ অভিজ্ঞ তাইজুল ইসলাম।
টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী তাইজুল পাকিস্তানে রাওয়ালপিন্ডির দুই টেস্টে আনফরচুনেইটলি জায়গা পাননি, তাঁর জায়গা মেলেনি চেন্নাইয়েও। কন্ডিশন বিবেচনায় যৌক্তিত হলেও খানিকটা দূর্ভাগা তো তাইজুল বটেই। তবে এবারে কানপুরের পরিস্থিতি বিবেচনায় একটা সুযোগ তাঁর মিলতেই পারে। সেক্ষেত্রে হয়তোবা বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট পেসার নাহিদ রানাকে একটা বিশ্রাম দিতে পারে।
একটা প্রশ্ন ঘুরেফিরেই আসছে চেন্নাই টেস্টে ব্যাটারদের ব্যর্থতার পর। বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটে একাদশের শুরুর ছয়জনের পাঁচজনই বাঁহাতি। ওপেনিংয়ে শাদমান-জাকির, ওয়ান ডাউনে ক্যাপ্টেন শান্ত, মিডল অর্ডারে মোমিনুল আর সাকিব। অর্থাৎ পাঁচে মুশফিকুর রহিম নামার আগে পর্যন্ত চারজনই বাঁহাতি।
যদিও বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচক হান্নান সরকার ভারত সফরের আগে বলেছিলেন, এই লেফট হ্যান্ড, রাইট হ্যান্ড কম্বিনেশনের চেয়ে তাঁরা আসলে স্কিলটাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছিলেন। তবে মাঠের খেলায় আসলে ফলটা বলেছে ভিন্ন কথাই। সেটা বুমরাহ-সিরাজ কিংবা অশ্বিন-জাদেজাদের পরিকল্পনা সাজাতে হেল্প করছে কিনা সেটা এখন ভাববার বিষয় সেই জায়গাটায় হয়তোবা দুই ওপেনারের একজনকে বিশ্রাম দিয়ে মাহমুদুল হাসান জয় একটা সুযোগ পেতে পারেন।
ভারত দলে অবশ্য চিত্রটা ভিন্ন। স্পিন-পেস দুই বিভাগেই সমানভাবে অবদান রেখেছেন বুমরাহ-অশ্বিনরা। ব্যাট হাতেও অধিনায়ক রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলি ছাড়া আর সবাই রান করেছেন। কাজেই একটা মধুর বিড়ম্বনাতেই হয়তো ভারতের টিম ম্যানেজমেন্টে পড়তে হচ্ছে।
আকসার প্যাটেল শুরুর ম্যাচে খেলেননি। তবে দলে জাদেজার মতো কার্যকর স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স বোলার থাকায় তাঁর মতো একই ধরণের বোলার আকসারের চেয়ে বরং কানপুরের লোকাল বয় কুলদীপ ইয়াদাভ দলে আনতে পারেন ভ্যারিয়েশন। আকাশ দীপের জায়গায় একটা জায়গায়ই হয়তো বদল দেখা যেতে পারে ভারত দলে।
উইকেট, আবহাওয়া কিংবা দল যেমনই হোক না কেন, মাঠের খেলায় বাংলাদেশকে ভালো খেলার ধারায় ফিরতে হবে। পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে বড় কৃতিত্বের সুখ স্মৃতি নিয়েই ভারতে খেলতে গিয়েছিলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল। চেন্নাইয়ে শুরুর টেস্টের সে ব্যর্থতার গল্প ভুলে তাই কানপুরে শান্ত-মুশফিকদের নজরটা সরাসরি তাই জয়ের দিকেই থাকা চাই।
চ্যালেঞ্জ অনেক, লড়াইটাও বেশ শক্ত। আর সে লড়াইটা উপভোগ করতে হলে শুক্রবার ছুটির দিনে দেরি করে ঘুম থেকে উঠলেও, সেটা কোনোক্রমেই সকাল ১০টার বেশি দেরি করা চলবে না। আড়মোড়া ভেঙেই আপনাকে চোখ রাখতে হবে দেশের প্রথম ও একমাত্র স্পোর্টস চ্যানেল টি স্পোর্টসের পর্দায়।
২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:৪৭ পিএম
২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৬ এম
টপ অর্ডারের ব্যাটাররা হলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া সৈনিক মাহমুদউল্লাহ আরও একবার লড়ে গেলেন দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে। রিশাদ হোসেন তুললেন শেষের ঝড়। রান তাড়ায় ওপেন করতে নামা নাইম শেখ লড়লেন শেষ পর্যন্ত। তবে শুরুর দিকে তার ডিফেন্ডিং ব্যাটিংই কাল হলো খুলনা টাইগার্সের। ফরচুন বরিশাল পেল দারুণ এক জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৩০তম ম্যাচে বরিশাল পেয়েছে ৭ রানের জয়। ৯ উইকেটে তামিম ইকবালের দল করেছিল ১৬৭ রান। আশা জাগিয়েও খুলনার ইনিংস থেমেছে ৬ উইকেটে ১৬০ রানে।
ব্যাট হাতে বরিশালের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নময়। একাদশে চার পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামা খুলনার অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ নিজেই ওপেন করেন। আর কী একটা ওভারই না করেছেন জাতীয় দলের এই অলরাউন্ডার। দ্বিতীয় বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে দেন তামিম ইকবালকে। দারুণ এক টার্নিং ডেলিভারিতে এরপর দাভিদ মালানকেও গোল্ডেন ডাক উপহার দিয়ে বোল্ড করেন মিরাজ।
চার মেরে রানের খাতা খোলা মুশফিকুর রহিম খানিক বাদেই হন রান আউট। ১৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়ে যাওয়া বরিশালের রানের গতি এরপর বেশ কমে যায় স্বাভাবিকভাবেই। অষ্টম ওভারে গিয়ে ইনিংসের প্রথম ছয়ের আর আসে তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে।
এরপর জিয়াউর রহমানকেও ছক্কায় উড়িয়ে হাসি ফোটান বরিশাল সমর্থকদের মুখে। তবে সেটা বেশিক্ষণ টেকেনি আর। ফিরতি স্পেলে এসে তাওহীদের ৩৬ রানের ইনিংসের ইতি টানেন মিরাজ। পরের ওভারে ফের উইকেট। এক রানেই থামেন মোহাম্মদ নবি।
সেখান থেকে বরিশালের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাথমিক কাজটা করেন মাহমুদউল্লাহ। আর লড়াকু স্কোর এনে দেওয়ার দায়িত্বটা সামলান রিশাদ। তরুণ এই লেগ স্পিনার জিয়াউরকে হাঁকান হ্যাটট্রিক বাউন্ডারি। চাপের মুখে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলা মাহমুদউল্লাহ ৩ চার ও ২ ছক্কায় আউট হন ঠিক ৫০ রানে।
বিশাল সব ছক্কার সমাহার ঘটানো রিশাদও চলে গিয়েছিলেন ফিফটির খুব কাছে। সেটা শেষ পর্যন্ত না পারলেও খেলেন মাত্র ১৯ বলে ৩৯ রানের খুনে ইনিংস, যা নিশ্চিত করে দেয় বরিশালের দেড়শ রানের স্কোর। ৩৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার ছিলেন মিরাজ।
ব্যাট হাতে খুলনাও পায়নি আদর্শ সূচনা। শূন্য রানে ইমরুল কায়েসকে সাজঘরের পথ দেখান জাহানদাদ খান। এরপর সেই নাইম ও মিরাজের সেই জুটি, যা আদতে দলকে ফেলে দেয় আরও অস্বস্তিদায়ক অবস্থানে। মাঝেমধ্যে কিছু বড় শট খেললেও উভয়ই রান করেন বেশ ধীরলয়ে।
ফলে প্রায় একশ স্ট্রাইক রেটের ব্যাটিংয়ে এই জুটি ৫৯ রান যোগ করলেও তা চাপ বাড়িয় দেয় বেশ। ১০ ওভার শেষে খুলনার বোর্ডে জমা জয় কেবল ৬৪ রান। মোহাম্মদ নবির প্রথম শিকার হয়ে মিরাজ যখন ফেরেন ৩৩ রানে, তখন নাইমের নামের পাশে রান ৩২ বলে ২৮, এক পর্যায়ে যা দাঁড়ায় ৪৪ বলে স্রেফ ৩৫ রানে!
ফলে ক্রিজে গিয়ে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের চাপটা নিতে হয় আফিফ হোসেনকে। রিপন মন্ডলকে চার ও ছক্কা মারা নাইম ৪৯ বলে পূরণ করেন ফিফটি। আফিফ ২৭ রানে বিদায় নেওয়ার পর অবশ্য কয়েকটি বড় শট খেলে খুলনা শিবিরে জয়ের আশার সঞ্চার করেন নাইমই।
৬ বলে ২৫ প্রয়োজন, এমন সমীকরণে টানা দুই ছক্কায় অসম্ভবকে সম্ভব করার দিকে এগিয়ে গেলেও পারেননি আর। ৫৯ বলে ৭৭ রানের ইনিংসটি তাই খুলনাকে উপহার দেয় একরাশ আক্ষেপের। বরিশালের সেরা বোলার জাহানদান ২০ রানে শিকার করেন ২ উইকেট।
পাকিস্তানে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে ভারতের অস্বীকৃতি জানানোর পর থেকে বাতাসে ভাসছে নানা গুঞ্জন। এর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হল নিজেদের জার্সিতে স্বাগতিক হিসেবে পাকিস্তানের নাম না রাখার প্রস্তাব। তবে সেসব উড়িয়েই দিয়েছেন বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) সেক্রেটারি দেবজিৎ সাইকিয়া। তার দাবি, আইসিসির অনুমোদিত অফিসিয়াল লোগো গায়েই টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন রোহিত-কোহলিরা।
অনেক জলঘোলা করেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার অন্য ভারতকে নিতে ব্যর্থ হওয়া পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) শেষ পর্যন্ত মেনে নিতে হয়েছে হাইব্রিড মডেল। যেখানে, ভারতের গ্রুপ পর্বের ও নকআউট পর্বের সব ম্যাচ হবে দুবাইতে। ভারত ফাইনালে গেলে এমনকি সেটাও মাঠে গড়াবে দুবাইতেই। এর মাঝেই জোড়াল হয় গুঞ্জন, জার্সিতে পাকিস্তানের নাম রাখতে আপত্তির কথা নাকি আইসিসিকে জানিয়েছে বিসিসিআই।
ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারত দলের জার্সি এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির লোগো নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটানোর চেষ্টা করেছেন দেবজিৎ সাইকিয়া বলেন। “আইসিসির নির্দেশিকা যাই হোক না কেন, আমরা সেটাই অনুসরণ করব। জার্সির ক্ষেত্রে আমরা আইসিসির নির্দেশনা অনুসরণ করব।”
আরও পড়ুন
তানজিদের বিধ্বংসী ফিফটিতে ঢাকার তৃতীয় জয় |
সাধারণত, অংশগ্রহণকারী দলগুলো সব বৈশ্বিক ইভেন্টে আইসিসির নির্দেশিকা অনুসরণ করে থাকে। মূল জার্সির পাশাপাশি অনুশীলনের কিটও অনুমোদনের জন্য আইসিসি-তে পাঠাতে বাধ্য থাকে দলগুলো।
লোগোর পাশাপাশি আরেকটি আলোচিত বিষয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা পাকিস্তানে যাবেন কিনা, সেটা। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারির সেই অনুষ্ঠানে তার যাওয়া বা না যাওয়ার ব্যাপারে অবশ্য স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি বিসিসিআই। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের পর দ্বিপাক্ষিক বা কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে পাকিস্তানে যায়নি ভারত।
ওপেনার দুজনই পেলেন ভালো শুরু, তবে কেউই পারলেন না দ্রুত রান তোলার কাজটা করতে। চিটাগং কিংসের পরের ব্যাটাররাও পারলেন না পরিস্থিতির চাহিদা মিটিয়ে ব্যাটিং করতে। ফলে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বোর্ডে জমা পড়ল মামুলি স্কোর। রানটা যে একেবারেই যথেষ্ট, তা প্রমাণ করে দিলেন এক তানজিদ হাসান তামিমই। ঢাকা ক্যাপিটালসের এই তরুণ ওপেনার উপহার দিলেন আরও একটি দৃষ্টিনন্দন ইনিংস। যা তার দলকে এনে দিল আসরে তৃতীয় জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ২৯ তম ম্যাচে ঢাকা পেয়েছে অনায়াস জয়। চিটাগংকে ৬ উইকেটে ১৪৮ রানে আটকে দিয়ে থিসারা পেরেরার দল জয় তুলে নিয়েছে ১১ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই।
আরও পড়ুন
জার্সিতে পাকিস্তানের নাম, নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল বিসিসিআই |
রান তাড়ায় ঢাকার শুরুটাই ছিল দুরন্ত। প্রথম কয়েক ওভারে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রানের চাকা সচল রাখেন দুই ওপেনারই। লিটন দাস কিছুটা রয়েসয়ে খেললেও তানজিদ ছিলেন সেরা ছন্দেই। আসরে ঢাকার সেরা এই ব্যাটার শরিফুল ইসলামকে টানা দুই ছক্কায় উড়িয়ে আভাস দেন ভালো কিছুর।
প্রথম ছয় ওভারে ৫৭ রান করে ফেলে ঢাকা। তবে ডট বলের চাপে ক্রমেই চাপে পড়ে যাওয়া লিটন পারেননি বড় ইনিংস খেলতে। হুসনাইন তালাতের বলে আউট হওয়ার আগে ২৮ বলে করতে পারেন মোটে ২৬ রান। তানজিদ মাত্র ২৮ বলে ছক্কা মেরে পা রাখেন ফিফটিতে।
তবে লিটনের মত তার সাথে তাল মেলাতে ব্যর্থ হন মুনিম শাহরিয়ারও। ওয়ানডে মেজাজে খেলা ইনিংসে আলিস আল ইসলামের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তার অবদান ১৮ বলে মাত্র ১২।
তবে ঢাকাকে জেতানোর দায়িত্বটা একর কাঁধে নিয়ে নেওয়া তানজিদ দলকে কোনো বিপদেই পড়তে দেননি। চোখ ধাঁধানো সব শটের পসরা সাজিয়ে উপহার দেন আরও একটি ম্যাচ জেতানো ইনিংস।
আরও পড়ুন
বরিশাল ম্যাচে প্রশ্নবিদ্ধ আলিসের বোলিং অ্যাকশন |
তানজিদ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৯০ রানে। মাত্র ৫৪ বলের ইনিংস সাজান ৭ চার ও ৩ ছক্কায়। এক ছক্কায় ১৪ রানের ইনিংসে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন সাব্বির রহমানও।
ঢাকার এই সহজ জয়ের পটভূমি রচনা হয়ে গিয়েছিল অবশ্য ম্যাচের প্রথম ভাগেই ওপেনিং জুটিতে ৭.২ ওভারে মাত্র ৪০ রান করতে পারেন নাইম ইসলাম ও জুবাইদ আকবারি। আগের ম্যাচে দারুণ এক ইনিংস খেলা নাইম রানের দেখা পান এদিনও, তবে ধীরলয়ের ব্যাটিংয়ে পরের ব্যাটারদের চাপে ফেলে দেন। মোসাদ্দেকে হোসেনের বলে মুনিমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ১১০ স্ট্রাইক রেটে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান।
এরপর শামিম হোসেন, হায়দার আলিরাও পারেননি ঝড় তুলতে। ফলে প্রায় ১৫০ ছুঁইছুঁই একটা স্কোর গড়ে দলটি, যা মোটেও জয়ের মত রান ছিল না।
আরও একবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রশ্নবিদ্ধ হল আলিস আল ইসলামের বোলিং অ্যাকশন। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে চিটাগং কিংসের এই স্পিনারের অধিকাংশ ডেলিভারি সন্দেহজনক ছিল বলে রিপোর্ট দিয়েছেন ম্যাচ রেফারি।
আর তাই বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে হবে আলিসকে। বিপিএলের কারিগরি কমিটির মাধ্যমে জানা গেছে, মিরপুরে আগামী ২৫ জানুয়ারি হবে ডানহাতি এই স্পিনারের অ্যাকশন পরীক্ষা।
আলিসের জন্য এটি বড় এক ধাক্কাই, কারণ এই বিপিএলেই নিজের অভিষেক ম্যাচেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিল তার বোলিং অ্যাকশন। ২০১৯ সালে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খেলা সেই ম্যাচে হ্যাটট্রিকও করেছিলেন তিনি। কয়েক বছর বিরতির পর অ্যাকশন বদলে ফেরার পর অনেকটাই নিজেকে হারিয়ে ফেলেন।
তবে চলতি বিপিএলে আছেন দারুণ ছন্দেই। ৮ ম্যাচে শিকার করেছেন ১১ উইকেট। ওভার প্রতি দিয়েছেন মাত্র ৬.৯০ রান। তবে বরিশালের বিপক্ষে যে ম্যাচে আম্পায়ারদের কাছে সন্দেহজনক লেগেছে তার বেশ কিছু ডেলিভারি, সেখানে খুব একটা ভালো করতে পারেননি৷ তিন ওভারে ২১ রান দেন, পাননি উইকেটের দেখা।
প্রথম ম্যাচে ১৯৮ রান করেও হারতে হয়েছিল বড় ব্যবধানে। দ্বিতীয় ম্যাচে এরচেয়েও কম রান করায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেয়েদের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের আশা ছিল কমই। তবে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার আশা টিকিয়ে রাখার ম্যাচে বোলাররা মামুলি স্কোর নিয়েই জিতিয়ে দিয়েছেন। প্রথমবারের মত তাই জেগেছে বিদেশের মাটিতে সিরিজ জয়ের আশা। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিশ্বাস, ইতিহাস গড়তে সক্ষম হবে তার দল।
প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ায় পরের দুটি ম্যাচ বাংলাদেশের জন্য হয়ে গেছে ফাইনালের মতোই। ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে হলে দুটিতেই যে জেতার বিকল্প নেই৷ সেই লড়াইয়ে ব্যাট হাতে লড়ে যান কেবল নিগারই। তার ৬৮ রানের ইনিংস বাংলাদেশ পুঁজি পায় ১৮৪ রানের। তবে এই রান নিয়েই উজ্জীবিত পারফরম্যান্স উপহার দেন বোলাররা। ৩৫ ওভারে মাত্র ১২৪ রানেই গুটিয়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা।
ম্যাচের পর উচ্ছ্বসিত নিগার বললেন, ইতিহাস গড়েই বিশ্বকাপ খেলার সমীকরণ মেলাবে তার, এই আশা এখন পুরো দলেরই। “সমীকরণের চিন্তা এখনও করছি না। কারণ, প্রথম ম্যাচে হারের একদিন পরই দল এভাবে ঘুরে দাঁড়াবে, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে এটা অনেক কাজে দেবে। দুইটা পয়েন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।৷ তবে মোরাল ভিক্টোরির জন্যও এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাই, পরবর্তী ম্যাচেও এটা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। সিরিজ জয়ের একটা সম্ভাবনা থাকবে। বিদেশে আমরা কখনও সিরিজ জিততে পারিনি, তাই এটা যদি অর্জন করতে পারি, তাহলে সেটা দলের জন্য একটা মাইলস্টোন হয়ে থাকবে।”
আগের ম্যাচে বাংলাদেশকে হারতে হয়েছিল ৯ উইকেটে। ফলে, আরও কম রান কাজটা কঠিন করে দেয় বোলারদের জন্য। তবে তিন স্পিনার নাহিদা আক্তার, রাবেয়া খান ও ফাহিমা খাতুন মিলে ৭ উইকেট ভাগাভাগি করে প্রতিপক্ষের জন্য এই রানই করে তোলেন পাহাড়সম। পেসার মারুফা আক্তার শিকার করেন দুই উইকেট।
নিগার মনে করেন, বোর্ডে যথেষ্ট রান না থাকলেও দল নিজেদের সামর্থ্যে ভরসা রেখেছিল।
“প্রথমত আমি মনে করি দলের মাঝে বিশ্বাসটা অনেক ছিল, যদিও রান অনেক কম ছিল আমাদের। এই ধরনের উইকেটে ২০০ প্লাস না করলে বোলারদের জন্য কাজটা আসলে খুব কঠিন। আমি আগেই বলেছিলাম, আমরা সবাই যেন নিজেদের ওপর বিশ্বাসটা রাখি। কারণ, আমরা যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করতে পারি, তাহলে এটা সম্ভব হবে। সব কৃতিত্ব দলের। প্রতিটা বোলার ও ফিল্ডার যেভাবে ১১০ ভাগ উজাড় করে দিয়েছে, যে নিবেদন দেখিয়েছে তারা… সেটা দুর্দান্ত ছিল। সবার প্রচেষ্টা ছিল জয়ের।”