২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮:২৪ পিএম
নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পর বাংলাদেশ সহ-অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ বলেছেন, ৩০০-৩১০ রান করলে জিততে পারত বাংলাদেশ। আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত তুলে ধরেছেন বিদেশের মাটিতে ভালো ক্রিকেট না খেলতে পারার বিষয়টি। দুজনের দুই রকমের মন্তব্যে আপনার মনে একটা প্রশ্ন জাগতেই পারে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কি স্রেফ খেলার জন্যই খেলছে বাংলাদেশ নাকি খেলোয়াড়দের সামর্থ্য ছিল বড় কিছু করার?
প্রশ্নটা করা এই কারণেই, একই টুর্নামেন্টে যেখানে দলগুলো করছে ৩০০, এমনকি ৩৫০ প্লাস স্কোরও, সেখানে দুই ম্যাচেই যে ব্যাট হাতে খাবি খেল বাংলাদেশ। দুবাইয়ের উইকেটে বড় রান করাটা চ্যালেঞ্জই, তবে সেই ম্যাচে ভারতের সাথে ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে সেখানেই ম্যাচটা হেরে বসে দলটি। অথছ, ওই সময়ে না হয়েছে এমন কোনো দুর্দান্ত বোলিং, না উইকেটে ছিল কোনো জুজু। ব্যাটারদের দায়িত্বহীন শটে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার প্রবণতায় শুরুতেই মেরুদণ্ড ভেঙে যায় দলের।
আরও পড়ুন
ভেসে গেল অস্ট্রেলিয়া-দ.আফ্রিকা লড়াই, চাপ বাড়ল ইংল্যান্ডের |
![]() |
একটা টুর্নামেন্টের শুরুটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে অমন ভয়াবহ এক ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ পায় ভুলে যাওয়ার এক অভিজ্ঞতা। এরপর টেনেটুনে ২২৮ করলেও ম্যাচে সেভাবে লড়াই আর জমাতেই পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের মাঝে কয়েকটি উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছে ভারত, ক্যাচও পড়েছে একটা বটে, তবে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে যাবে এমনটাও মনে হয়নি প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তার গভীরতার কারণেই।
আর এখানেই চলে আসে সামর্থ্যের প্রশ্ন। ভারত এই টুর্নামেন্ট খেলছে দলের তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেরই অন্যতম সেরা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহকে ছাড়া। অথচ ঠিকই তারা হেসেখেলে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই তাদের ব্যাটাররা জানান দিয়েছেন নিজেদের সামর্থ্যের। আর সেটা স্পষ্ট হয়েছে শুবমান গিল ও বিরাট কোহলির দুই সেঞ্চুরিতে।
ভারত ম্যাচে দ্রুত ৫ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশ ২২৮ পর্যন্ত যেতে পেরেছিল তাওহীদ হৃদয়ের লড়াকু সেঞ্চুরির কারণেই। তবে নব্বইয়ের ঘরে যেতে ক্র্যাম্পের কারণে দাঁড়াতেই যেন পারছিলেন না এই তরুণ ব্যাটার। ফলে ২৫০ রানের ভিত থাকলেও তিনি শেষের দিকে সেভাবে রানই বের করতে পারেননি। অর্জন বলতে ওই তার শতকই।
একই ম্যাচে গিল ওপেন করতে নামেন ৫০ ওভার ফিল্ডিংয়ের ক্লান্তি নিয়ে। আর মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়ে, অপরাজিত সেঞ্চুরিতে। একবারও ক্যাম্প হয়নি তার। ম্যাচ শেষেও তার প্রাণশক্তি বলে দিচ্ছিল, চাইলেই অনায়াসে আরও ৫০ ওভার ব্যাট করা সম্ভব তার পক্ষে। তাওহীদ বা বাংলাদেশের অন্য ব্যাটারদের সাথে সামর্থ্যের ফারাকটা এখানেই হয়ে যায় শীর্ষ ব্যাটারদের।
আরও পড়ুন
‘বড় মঞ্চে সাকিবের মত পারফর্ম করতে ব্যর্থ মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ’ |
![]() |
অন্য উদাহারণটি হতে পারেন কোহলি। দুবাইয়ের গরমের মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ায় তিনিও উপহার দেন ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি। চেজ মাস্টার খ্যাত এই ব্যাটার শতক করেছেন নব্বইয়ের বেশি স্ট্রাইক রেটে। চার মারেন মাত্র ৭টি। অর্থাৎ, বাউন্ডারি থেকে মাত্র ২৮ রান করেও তিনি দারুণ একটা স্ট্রাইক রেট বজায় রেখেছেন। দৌড়ে রানই নিয়েছেন ৭২টি।
এর একদিন বাদে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেন করতে নেমে রাওয়ালপিন্ডির ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে শান্ত ৭৭ রান করতে বল খেলেছেন ১১০টি। তিনি কোহলির চেয়ে চার মেরেছেন দুটি বেশি। তবে ডট বলের সংখ্যাও তার বেশি, ৬২টি। আর এখানেই চলে আসে বাংলাদেশ ব্যাটারদের সামর্থ্যের বিষয়টি। একজন ব্যাটার প্রায় ১০ ওভার যদি একটা রানও না বের করতে পারেন, সেই দলের ইনিংস কার্যত নেমে আসে ৪০ ওভারে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই একটা দলের জন্য ৩০০ পার করা স্কোর গড়ার কাজটা ভীষণ কঠিন হয়ে যায়।
তাওহীদের ওই একশ করার আগেই ফিটনেসের কমতি ফুটে ওঠা বা শান্তর ডট বলের হিড়িক যেন বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটের দীনতাই ফুটিয়ে তোলে। অবশ্য দুই ম্যাচে সর্বোচ্চ রান করা দুজনকে উদাহারণ হিসেবে টেনে আনাটা কিছুটা দৃষ্টিকটু লাগতেই পারে। মন্দের ভালো তো ছিলেন তারাই।
তবে অন্যদের দিকে তাকালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ কেন আর কোন লক্ষ্যে খেলছে, তা নিয়েই যে প্রশ্ন জাগতে বাধ্য। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে রিকি পণ্টিং যখন বলেছিলেন, বাংলাদেশের কোনো সম্ভাবনাই দেখছেন না তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক সাধারণত ক্রিকেট নিয়ে ভুল ভবিষ্যৎবাণী কমই করেন।
দুই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটাররা প্রমাণ দিয়েছেন, ভুল ছিলেন না পন্টিং। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যর্থ ছিলেন তিন অভিজ্ঞ সৌম্য সরকার, মেহেদি হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহিম। এদের মধ্যে দুজনই আবার মারেন ডাক। তিনজনের আউটের ডেলিভারি ছিল না খুব বিশেষ কিছু।
তবে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ যেন ছাড়িয়ে গেছে সেই ব্যর্থতার গল্পও। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বিশের ঘরে ভালো শুরু পেয়েও আউট হয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। দুটি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞ একজন ব্যাটারের কাছ থেকে বড় ইনিংস তো দল আশা করতেই পারে। অবশ্য অভিজ্ঞতার বিচারে দলের সবচেয়ে প্রবীণ দুই ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহই তো করেছেন সবচেয়ে বেশি হতাশ।
ভারত ম্যাচ মিস করা মাহমুদউল্লাহ ১০৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর নেমে যেভাবে মিচেল ব্রেসওয়েলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন, তা অবাক করেছে ধারাভাষ্যকারদের। এর আগে একই ভুল করেছেন মুশফিকুরও। অথচ ওই সময়ে তাদের দরকার ছিল দেখেশুনে খেলে ইনিংস মেরামতের। এই টুর্নামেন্টেই ৩৫১ রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার তুলনামূলক দুই অনভিজ্ঞ ব্যাটার জস ইংলিশ ও অ্যালেক্স কেরি যেভাবে জুটি গড়েছেন খুব বেশি আগ্রাসন না দেখিয়েই, তা বাংলাদেশের ২০ বছরের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের জন্য হতে পারে এক শিক্ষা। ডট বলের চাপ এলেও তারা সিঙ্গেলস বের করে সেটা সরিয়েছেন। কয়েকটা বল ডট গেলেই মুশফিকুর বা মাহমুদউল্লাহরা বারবার চাপের মুখে স্রেফ বড় শটেই নিস্তার চান, তা উদ্বেগজনকই।
আরও পড়ুন
রান আউট-ক্যাচ মিসের আক্ষেপে বিদায় বাংলাদেশের |
![]() |
যেহেতু তারা দুজনই আছেন ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায়, সেদিক থেকে বাংলাদেশের বড় চিন্তার কারণ হতে পারেন মিরাজ। মূলত বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে খেললেও এই দলে তিনি এখন নিয়মিত ব্যাট করছেন ওপরের দিকেই। মজার ব্যাপার হল, ওয়ানডেতে তার সেরা সব পারফরম্যান্স এসেছে ব্যাট হাতেই। অবশ্যই সাকিব আল হাসান যুগে এটা বাংলাদেশের জন্য দারুণ খবর। তবে মিরাজের মূল কাজ তো বল হাতে, কারণ দলের চতুর্থ বা পঞ্চম বোলার যে তিনিই।
সেই মিরাজ ১০৫টি ওয়ানডেতে নিয়েছেন মাত্র ১১০ উইকেট। গড়ে প্রতি উইকেট নিতে গুনেছেন ৪৫ রানের বেশি। দলের একজন মূল বোলার যখন দিনের পর দিন গড়পড়তা পারফরম্যান্স উপহার দিবেন, তখন সেটা দলকে বাড়তি চাপে ফেলবেই। হচ্ছেও তাই। মিরাজের করা ১০টি ওভার ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষকে সেভাবে চাপে ফেলতেই পারছে না মাঝের ওভারে। ফলে নিউজিল্যান্ড ম্যাচের মত পেসাররা শুরুটা দারুণ কিছু করলেও মিরাজের স্পেলে প্রতিপক্ষ পাচ্ছে সহজ রান বের করার সুযোগ। তাতে চাপও যাচ্ছে আলগা হয়ে।
সব মিলিয়ে তাই এক ম্যাচ হাতে রেখেই আসর থেকে বিদায় নেওয়া বাংলাদেশ দল ব্যর্থ হল বিরেন্দর শেবাগকে একটা জবাব দিতে। সাবেক ভারত ওপেনার প্রথম ম্যাচের পর বলেছিলেন, দলটা বাংলাদেশ বলেই তাদের কাছে হারার চিন্তাও নাকি হয়নি তার। ওয়াসিম জাফর বা শেন বন্ডের মত সাবেকরা এমন তির্যক মন্তব্য না করলেও বলেছেন, বড় মঞ্চে বাংলাদেশের এমন বাজে প্রদর্শনী অবাক করেছে তাদের।
এই অবাক বিস্ময়ে আছেন বাংলাদেশের সমর্থকরাও, যারা ভারত ম্যাচের আগের দিন রাতে শান্ত-তাসকিন-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের দেখলেন সাবেক ওপেনার তামিম ইকবালের সাথে ডিনার করতে। যেখানে তৈলাক্ত খাবারের সাথে ছিল আবার কোমল পানীয়ও। টুর্নামেন্টে নিজেদের সবচেয়ে বড় ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের নিবেদনের এই চিত্র বলে দেয়, নিজেদের সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা যেন তারা মেনে নেন মাঠে নামার আগেই।
ক্রিকেট পাগল একটা দেশের সমর্থকদের জন্য এই নির্মম সত্য মেনে নেওয়াটা কঠিনই বটে। কারণ, তারা যে প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশকে সেরাদের সেরা হওয়ার। তবে খেলোয়াড়দের সামর্থ্যের কমতি থাকা বা লড়াইয়ের আগে হালকা মেজাজে থাকাটা বলে দেয়, সময় এসেছে ‘রিয়েলিটি চেক’ দেওয়ার। শান্তরা সেটা পাবেন কি?
এক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জলঘোলার মধ্যে নতুন করে শাস্তি পেলেন তাওহীদ হৃদয়। খেলোয়াড় এবং খেলোয়াড় সাপোর্ট স্টাফদের জন্য বিসিবি আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে মোহামেডানের এই ব্যাটারকে। ফলে বসুন্ধরা প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট ক্রিকেট লিগে (ডিপিডিসিএল) তাকে চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গত ২৬ এপ্রিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ম্যাচে মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদের বিরুদ্ধে অন-ফিল্ড আম্পায়ার মনিরুজ্জামান টিঙ্কু এবং আলি আরমান রাজন, তৃতীয় আম্পায়ার মুহাম্মদ কামরুজ্জামান এবং চতুর্থ অফিসিয়াল এটিএম ইকরাম আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে মতবিরোধ দেখানোর অভিযোগ আনেন।
রোববার বিসিবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাওহীদ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং শুনানিতে নিজের পক্ষ সমর্থনের কথা বলেন। তবে আগে জানানো হলেও তিনি আম্পায়ারদের ড্রেসিংরুমে নির্ধারিত শুনানিতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন।
ফলে ডিপিডিসিএল ২০২-২৫ এর আচরণবিধির ধারা ৫.২.৬ অনুসারে ম্যাচ রেফারি আখতার আহমদ তাওহীদে দোষী সাব্যস্ত করে দশ হাজার টাকা জরিমানা এবং একটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেন।
এই ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হওয়ার ফলে সব মিলিয়ে তাওহীদের ডিমেরিট পয়েন্ট হয়েছে ৮। এর ফলে তাকে চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিসিবি, যা কার্যকর হবে এই আসর থেকেই। ফলে জাতীয় দলের এই ব্যাটার মিস করবেন ২৯ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচ।
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই একবার আম্পায়ারের সাথে তর্কে জড়িয়ে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তাওহীদ। পরে সেটা নেমে আসে এক ম্যাচে। খেলেন দুই ম্যাচ। এরপর ফের এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হলে ক্রিকেটারদের প্রতিবাদের পর বিসিবি বাকি এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে এক বছরের জন্য।
নানা কারণেই গত কয়েক মাসে ক্রমেই পথ হারাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। মাঠের বাইরের একের পর এক বিতর্কিত ঘটনার সাথে মাঠের চিত্রটাও আশা জাগানিয়া নয়। দর্শকরাও যেন ক্রমেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এসবের মধ্যে যোগ হয়েছে জিম্বাবুয়ের সাথে টেস্টে বিব্রতকর হার। সময়টা কী আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে ক্রিকেটের জন্য? জাকের আলি অনিকও সেটা মেনে নিচ্ছেন। তবে এটাও মনে করিয়ে দিলেন, ভালো পারফরম্যান্স দিয়ে খারাপ সময় পেছনে ফেলা সম্ভব।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া বাংলাদেশ জাতীয় দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ নিয়ে। বেসরকারি কোনো চ্যানেল সিরিজটি দেখাতে আগ্রহ না দেখানোয় বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দারস্থ হয়েছে সরকারি চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশনের। সিলেটে প্রথম টেস্ট দেখতে চারদিনের একদিনেও চোখে মেলেনি দর্শকদের তেমন সাড়া। সেই ম্যাচেই আবার তিন উইকেটে হেরে যাওয়ায় ক্রিকেটারদের ওপর চাপ যেন বেড়ে গেছে আরও। আর ক্রিকেটের জোয়ারেও যেন বইছে ভাঁটা।
দ্বিতীয় টেস্টের আগের সংবাদ সম্মেলনে শনিবার জাকের অবশ্য শোনালেন ইতিবাচক কথাই।
“আমাদের ভালো পারফরম্যান্স করা উচিত। ভালো পারফরম্যান্সের ওপর তো আর কিছু নেই। আমাদের সবারই তাই লক্ষ্য থাকবে ভালো খেলা। যেহেতু সিনিয়র ক্রিকেটাররা চলে যাবেন, তাই তরুণদের মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগতেই পারে। আমি মনে করি এটা ঠিক হতে কিছুদিন সময় লাগবে। এটা সময়ের সাথে ঠিক হয়ে যাবে।”
আরও পড়ুন
তামিমদের আপত্তির পর স্থগিত হল তাওহীদের শাস্তি |
![]() |
৯৫ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মুশফিকুর রহিম বাদে বেশ তরুণ একটা দল নিয়েই এই সিরিজে খেলছে বাংলাদেশ। কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের বিদায়ের ফলে ক্রমেই দলে বাড়ছে তারুণ্যের ভিড়। আর তাদের মধ্যে অন্যতম সম্ভাবনাময় ও ধারাবাহিক পারফর্মারদের একজন জাকের। প্রথম টেস্টে দুই ইনিংসেই খেলেছেন লড়িয়ে ইনিংস। যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে বোলার হাসান মাহমুদকে অতিরিক্ত বল (৫৮) খেলানোর কারণে কিছুটা সমালোচনা শুনতে হয়েছে তাকে।
তবে কাজটা কেন করেছেন, সেই ব্যাপারে স্পষ্ট অবস্থান রয়েছে এই কিপার-ব্যাটারের।
“(দ্বিতীয় ইনিংসে) ৭ উইকেটে চলে যাওয়া মানে আমাদের হাতে আরও তিনটা উইকেট আছে। আমরা যেহেতু টার্গেট দিচ্ছিলাম, তাই প্রতিটি রানই খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দেখেন, হাসান কিন্তু ৫৮ বল খেলেছে। আমাদের মধ্যে ৩৭ রানের একটা জুটি হয়েছে। এই রান যদি হাসান একাই করত, তাহলে আমার সমস্যা নেই। আমাদের পরিকল্পনা ছিল ম্যাচটা বড় করার, যতদূর সম্ভব টেনে নেওয়ার। চেষ্টা করেছি, হয়নি আসলে।”
টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ছয় থেকে আট নম্বর পজিশনে খেলতে হচ্ছে জাকেরকে। ফলে প্রায় নিয়মিতভাবেই তাকে ইনিংস টেনে নিতে হচ্ছে স্বীকৃত ব্যাটারদের ছাড়াই আর বোলারদের সঙ্গী করে। ফলে কয়েকবারই হারাতে হয়েছে বড় ইনিংস খেলার সুযোগ।
আরও পড়ুন
প্রায় ৩ বছর পর টেস্ট দলে বিজয় |
![]() |
তবে ব্যক্তিগত এসব অর্জন নিয়ে আক্ষেপ নেই জাকেরের।
“ঘরোয়া ও বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই আমি এভাবে ক্রিকেট খেলে অভ্যস্ত। ঘরোয়াতেও আমি ৬-৭ নম্বরে ব্যাট করেছি। তাই টেল এন্ডারদের নিয়ে খেলার অভ্যাস আমার আগেও ছিল। এই কারণেই কিন্তু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আমার সেঞ্চুরি করতে পাঁচ বছর লেগে গেছে। তাই এসব হবেই। এই কঠিন দিকগুলো সামলেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।”
তাওহীদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নতুন মোড়। বসুন্ধরা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য প্রথমে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন তরুণ এই ব্যাটার। পরে সেটা কমে আসে এক ম্যাচে। এরপর আবার সেটা জারি করার সিদ্ধান্ত নিলে আপত্তি জানান তামিম ইকবাল সহ ক্রিকেটাররার। সেটার জেরে শেষ পর্যন্ত তাওহীদের শাস্তি আপাতত স্থগিত করেছে বিসিবি। ফলে এই মৌসুমে আর নিষেধাজ্ঞা থাকছে না মোহামেডানের এই ব্যাটারের।
এর পরিবর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে তাওহীদে শাস্তি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এক বছরের জন্য। অর্থাৎ, আগামী বছরের ডিপিএলের প্রথম ম্যাচে বাকি এক ম্যাচের শাস্তি ভোগ করবেন তিনি।
আরও পড়ুন
প্রায় ৩ বছর পর টেস্ট দলে বিজয় |
![]() |
গত ১২ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে একটি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকতের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তাওহীদ। সেখানেই থেমে না থেকে এরপর সংবাদ সম্মেলনেও আম্পায়ারকে আক্রমণ করে বসেন। সেই কারণে তাকে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করে বিসিবি।
তবে এরপর সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য আপিল করে মোহামেডান। এরপর নাটকীয়ভাবে এক ম্যাচে নামিয়ে আনা হয় শাস্তির মেয়াদ। এরপর বিসিবির চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিসিবিকে জানান বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র এলিট আম্পায়ার।
সেটার প্রেক্ষাপটে শাস্তি কাটিয়ে দুই ম্যাচ খেলে ফেলা তাওহীদের নিষেধাজ্ঞা ফের দুই ম্যাচে নিয়ে যায় বিসিবি, যা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল মোহামেডানের পরবর্তী ম্যাচেই। তবে এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে শুক্রবার বিসিবি কার্যালয়ে মিটিংয়ে বসেন জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার তামিম ইকবাল সহ ডিপিএলের অন্য দলের অনেক খেলোয়াড়রা।
দীর্ঘ সময় ধরে চলা সেই মিটিংয়ের পর তামিম সরাসরি তাওহীদের ওপর আরোপিত দ্বিতীয় মেয়াদে শাস্তি নিয়ে আপত্তি তোলেন। তার মতে, যেহেতু বিসিবি একবার শাস্তি কমিয়েছে, ফলে দুই ম্যাচ খেলার পর আবার শাস্তি দেওয়াটা হাস্যকর ঘটনা। পাশাপাশি এও বলেন, এটা কোনো প্রক্রিয়া মেনে দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ, নিজেদের দোষে বাদ পড়ার হতাশায় ক্যারিবিয়ানরা |
![]() |
এর খানিক বাদে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিসিবি জানায় তাওহীদের শাস্তি স্থগিতের খবর।
“গত ১৯ এপ্রিল আম্পায়ার্স কমিটির ইস্যুকৃত শাস্তি বাতিলের সেই সিদ্ধান্তের পরবর্তী আদেশ অকার্যকর হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির পর সভা হয়েছে, যেখানে বিষয়টি আবারও বিবেচনায় নিয়ে ম্যাচ নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টেকনিক্যাল কমিটি। যা কার্যকর হবে ১২ মাস পর।”
আইসিসি টেস্ট ফান্ডের রেভিনিউ শেয়ারিং মডেল প্রবর্তিত হওয়ায় ২০১৯ সালের মে থেকে বদলে গেছে আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) সূচি। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে থাকা শীর্ষ ৯টি দেশকে নিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ প্রবর্তনের পরিকল্পনা গৃহিত হওয়ায় পর পর দুটি ৪ বছর মেয়াদী এফটিপি চক্রে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরে থাকা তিনটি দল জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান এবং আয়ারল্যান্ডের সাথে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ৯ টি দলের দ্বি-পাক্ষিক টেস্ট সিরিজ খেলা বাধ্যতামূলক নয়।
মূলত সেই কারণেই এফটিপির সর্বশেষ চক্রে (২০১৯-২০২৩ সালের এপ্রিল) জিম্বাবুয়ে এবং টেস্ট ক্রিকেটের নবাগত আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডকে টেস্টে এড়িয়ে চলেছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষস্থানীয় দলগুলো। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান চক্রেও (২০২৩-২৭) একই পথে হাঁটছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হয়ে থাকা দলগুলোর অধিকাংশই।
আইসিসির এফটিপি এখন দ্বি-পাক্ষিক সূচিতে পরিণত হওয়ায়, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জিম্বাবুয়ে,আয়ারল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে আগ্রহী নয় অধিকাংশ টেস্ট দল। অথচ, আইসিসির এফটিপির বিগত চক্রের মত চলমান এফটিপিতেও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে তিন ফরম্যাটের ম্যাচের সিরিজ খেলতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিসিবি। চলমান চক্রে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্ট খেলা থেকে বিরত থেকেছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে জিম্বাবুয়ের টেস্ট উন্নতিতে সহায়কের ভুমিকায় নিউ জিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এফটিপির চলমান চক্রের চার বছরে জিম্বাবুয়ে ১৮টি টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে। সেই তালিকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪টি। এর বাইরে এফটিপির বর্তমান চক্রে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ৮টি ওডিআই এবং ৮টি টি-টোয়েন্টিও খেলার সুযোগ পাচ্ছে।
তিন ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড তুলনামূলক ভালো। চলমান সিরিজের আগে ১৮টি টেস্টে ৮-৭-এ এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। মুখোমুখি ৮১টি ওডিআই ম্যাচে ৫১টি জয়ের বিপরীতে ৩০টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই দলের ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচে ১৮-৭-এ এগিয়ে বাংলাদেশ। এ ছাড়া এক সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে অবদান রাখা জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
সেই কারণেই জিম্বাবুয়ে দলকে আতিথ্য দেয়াকে একটা রেওয়াজে পরিণত করেছে বিসিবি।
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্টে জয়-পরাজয় আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান নড়চড় করবে না। শুধু তা-ই নয়, জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে আতিথ্য দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। হোমে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ৩টি দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ আয়োজনে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বিসিবি।
অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৮ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ২ টেস্ট এবং ৩ ওডিআই ম্যাচের সিরিজ আয়োজন করে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭১ হাজার ৩২৫ টাকা ভর্তুকী দিয়েছে বিসিবি। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ২ টেস্ট, ৩ ওডিআই এবং ২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ আয়োজনে অবশ্য ভর্তুকী গুনতে হয়নি। সেই দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে ২০ লাখ ৫২ হাজার ৫৬৭ টাকা মুনাফা করতে পেরেছে বিসিবি। তবে যুক্তরাষ্ট্র-ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ২০২৪ সালের এপ্রিলে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দিয়ে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড বড় অঙ্ক ভর্তুকী দিয়েছে। প্রচারসত্ব থেকে প্রত্যাশিত অর্থ আয়ের পরও ভর্তুকীর অঙ্ক ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৯৫৫ টাকা!
এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রচারসত্ব বিক্রি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ভর্তুকীর অঙ্কটা কোথায় দাঁড়ায়, সেই হিসাবটা জানা যাবে সিরিজ শেষেই।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে আতিথ্য দিয়ে শুধু আর্থিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না বিসিবি, টেস্টে নীচের সারির দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পারফরমেন্স নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেককে স্মরণীয় করতে চেয়ে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দিয়ে চরম শিক্ষা পেয়েছিল বিসিবি। পূর্ণশক্তির বাংলাদেশ দল ১৫১ রানে হেরেছে সেই টেস্ট। সাড়ে ছয় বছর পর সেই সিলেটে ফিরতি টেস্টেও লজ্জা দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ৩ উইকেটে।
আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) চলমান চক্রের (২০২৩-২৭) সূচি চূড়ান্ত হয়েছে অনেক আগে। বিসিবির পদচ্যুত সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আমলে। সে কারণেই এফটিপির পরবর্তী সূচি (২০২৭-৩১) চূড়ান্ত হওয়ার আগে সতর্ক হওয়ার পক্ষে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম, “ওদের সাথে খেলে উন্নতি হবে কিংবা সিরিজ আয়োজন করা লাভজনক হবে, এমন তো নয়। জিম্বাবুয়ের সাথে টেস্ট সিরিজ এড়াতে পারলে ভালো হতো। আইসিসির পরবর্তী এফটিপির আগে কীভাবে প্লান করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে।”
একদিন আগেই শেষ হওয়া প্রথম টেস্টের ঘন্টাখানেক বাদেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করেছে৷ দলের উল্লেখযোগ্য নাম অভিজ্ঞ ওপেনার এনামুল হক বিজয়, যিনি তিন বছর পর ডাক পেয়েছেন টেস্ট দলে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান সিরিজের শেষ ম্যাচের বাংলাদেশ স্কোয়াডে আরেকটি পরিবর্তন অবশ্য অনিবার্যই ছিল। পিএসএল খেলতে যাওয়া পেসার নাহিদ রানার জায়গায় এসেছেন স্পিনার তানভীর ইসলাম।
টেস্ট দলে ডাক পাওয়া বিজয় পুরষ্কার পেলেন চলমান বসুন্ধরা ঢাকা প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগে অসাধারণ ফর্ম দেখিয়ে। সম্প্রতি স্বীকৃত ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটার হিসেবে ৫০টি সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন ৩২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
টেস্টে অবশ্য বিজয়ের পরিসংখ্যান খুব আশা জাগানিয়া নয়। ৫ টেস্টে ১০ গড়ে রান মাত্র ১০০, নেই কোনো ফিফটি। শেষবার লাল বলের ক্রিকেটে তাকে দেখা গিয়েছিল ২০২২ সালের জুনে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
আর তানভীর এখনও আছেন টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিজ্ঞতা চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের।
আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেটে জিতেছে জিম্বাবুয়ে।
দ্বিতীয় টেস্টের বাংলাদেশ স্কোয়াড :
নাজমুল হোসাইন শান্ত (অধিনায়ক), মাহমুদুল হাসান জয়, শাদমান ইসলাম, এনামুল হক বিজয়, মমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহিদুল ইসলাম, জাকের আলি আনিক, মেহেদি হাসান মিরাজ, হাসান মাহমুদ, খালেদ আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব।
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
১০ দিন আগে
২০ দিন আগে
২০ দিন আগে