২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০১ পিএম

চলতি বছরের এখনও বাকি ২৯ দিন। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য বছর এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। কারণ এই বছরের বাকি দিনগুলোতে আর কোনো খেলা নেই তাদের। আর এই বিদায়ী বছরে নিজেদের সেরা সময়ই কাটিয়েছে বাংলাদেশ।
পরিসংখ্যানের বিচারে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এত সাফল্যময় বছর আর যায়নি বাংলাদেশ দলের। ম্যাচ জয়ের সংখ্যা কিংবা রানের জোয়ার বা ব্যাটারদের চার-ছক্কার ফুলঝুরি অথবা বোলারদের উইকেট শিকারের উৎসব- সব কিছুতেই আগের যে কোনো বছরকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সংখ্যার খেলায় বাংলাদেশের ২০২৫
জয়ের রেকর্ড
প্রায় ২০ বছরের টি-টোয়েন্টি অধ্যায়ে ২০২৫ সালেই সবচেয়ে বেশি ৩০ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০২১ সালে তারা খেলেছিল ২৭টি কুড়ি ওভারের ম্যাচ।
সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার বছরে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জেতার রেকর্ডও গড়েছে বাংলাদেশ। এই বছর তারা জিতেছে ১৫ ম্যাচ। বিপরীতে হেরেছে ১৪টি। জয়-পরাজয়ের অনুপাত ১.০৭১!
২০২৪ সালে ২৪ ম্যাচ খেলে ১২ ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। হেরেছিলও ১২টি। জয়-পরাজয়ের অনুপাত ছিল ১.০০- গত বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে ২০২৫ সাল।
রানের জোয়ার
সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলায় স্বাভাবিকভাবেই বছরে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডও গড়েছে বাংলাদেশ। এই বছর ৩০ ম্যাচে বাংলাদেশের ২৩ ব্যাটার মিলে খেলেছেন ২৪৩টি ইনিংস। সব মিলে তারা করেছেন ৪ হাজার ২৩৯ রান।
২০২৫ সালে দলীয় ব্যাটিং গড় ২২.১৮ ও স্ট্রাইক রেট ১২৫.৯৭। অন্তত ১৫শ রান করা বছরগুলোর মধ্যে রান, ব্যাটিং গড় ও স্ট্রাইক রেট- সবই সর্বোচ্চ।
বছরে সর্বোচ্চ রান ছিল ২০২৪ সালে। সেবার ২৪ ম্যাচে ২১ ব্যাটার মিলে ২০৬ ইনিংস খেলে করেছিলেন ৩ হাজার ১৮৬ রান। দলীয় ব্যাটিং গড় ছিল বিশের নিচে আর স্ট্রাইক রেট ছিল ১২০-র নিচে।
ফিফটির মেলা
বছরে সর্বোচ্চ ফিফটির রেকর্ডটিও ২০২৫ সালে গড়েছে বাংলাদেশ। এই বছর ২৩ ফিফটির সঙ্গে একটি সেঞ্চুরিও করেছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তারা ছাড়িয়ে গেছে গত বছর করা ১৪ ফিফটির রেকর্ড।
এই রেকর্ডে সবচেয়ে বড় অবদান তানজিদ হাসান তামিমের। এই বছর ৮টি পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস খেলেছেন বাঁহাতি ওপেনার। এছাড়া অধিনায়ক লিটন কুমার দাসের ফিফটি ৫টি। আরেক বাঁহাতি ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ৩ ফিফটির সঙ্গে করেছেন বছরের একমাত্র সেঞ্চুরি।
চার-ছক্কার ফুলঝুরি
২০২৫ সালে বাংলাদেশের ব্যাটাররা মেরেছে মোট ২০৬টি ছক্কা। তারা ভেঙে দিয়েছে গত বছর হাঁকানো ১২২টি ছক্কার রেকর্ড। নির্দিষ্ট পঞ্জিকাবর্ষে অন্তত দুইশ ছক্কা মারা বিশ্বের চতুর্থ দেশ বাংলাদেশ।
তাদের আগে এক বছরে দুইশ বা এর বেশি ছক্কার রেকর্ড আছে শুধু ভারত (২০২২ সালে ২৮৯ ও ২০২৪ সালে ২৩৬), ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২০২৪ সালে ২৪৩, ২০২১ সালে ২১৪ ও ২০২৫ সালে ২১৪) ও পাকিস্তানের (২০২৫ সালে ২৩৫)।
ছক্কার রেকর্ডেও সবচেয়ে বড় অবদান তামিমের। বাঁহাতি ওপেনার ২৭ ইনিংসে মেরেছেন ৪১টি ছক্কা। যা এক বছরে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। আরেক ওপেনার ইমনের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৪টি ছক্কা।
এক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডটিও ২০২৫ সালে গড়েছে বাংলাদেশ। মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৯১ রান করার পথে মোট ১৩টি ছক্কা মারে তারা। সেদিন ৯টি ছক্কা মারেন সেঞ্চুরি করা ইমন। যা এক ম্যাচে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ ছক্কা।
ব্যক্তিগত রানেও জোয়ার
২০২৫ সালে ২৭ ম্যাচ খেলে ৮ ফিফটিতে ৭৭৫ রান করেছেন তামিম। এক বছরে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। তিনি ভেঙেছেন ২০২১ সালে মোহাম্মদ নাঈম শেখের গড়া ২৬ ইনিংসে ৫৭৫ রানের রেকর্ড।
চলতি বছরের আগে এক পঞ্জিকাবর্ষে বাংলাদেশের ব্যাটারদের ৫০০ রান করার ঘটনা ছিল মাত্র তিনটি। নাঈম শেখ ছাড়া ২০২২ সালে ৫৪৪ রান করেছিলেন লিটন কুমার দাস। একই বছর আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাট থেকে আসে ৫০০ রান।
আর শুধু ২০২৫ সালেই বাংলাদেশের তিন ব্যাটার পেরিয়েছেন ৫০০ রানের মাইলফলক। তামিম ছাড়াও লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে ৬৩৫ রান। আর ইমন করেছেন ৫১৯ রান।
উইকেটের উৎসব
২০২৫ সালে ৩০ ম্যাচে বাংলাদেশের ২৩ বোলার মিলে নিয়েছেন ১৮৮ উইকেট। যা ভেঙে দিয়েছে ২০২১ সালে ২২ ম্যাচে নেওয়া ১৬০ উইকেটের রেকর্ড।
এই বছর বাংলাদেশের সম্মিলিত বোলিং গড় ২৩.২৯ আর ইকোনমি রেট ৭.৮৪ ও স্ট্রাইক রেট মাত্র ১৭.৮!
২০২১ সালে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ম্যাচই ছিল মিরপুরের স্পিনসহায়ক উইকেটে। তাই সহজেই বেশি উইকেট নিতে পেরেছিলেন বোলাররা। তবে চলতি বছর মিরপুরে তারা খেলেছে মাত্র ৩টি ম্যাচ। অর্থাৎ তুলনামূলক ভালো উইকেট-কন্ডিশনেও সাফল্য পেয়েছেন রিশাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমানরা।
আবার ওপরে রিশাদ
গত বছর ৩৫ উইকেট নেওয়া রিশাদ হোসেন এবার পেয়েছেন ৩৩ উইকেট। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে একাধিক পঞ্জিকাবর্ষে ৩০ বা এর বেশি উইকেটের রেকর্ড গড়েছেন তরুণ লেগ স্পিনার।
সব মিলিয়ে বিদায় নেওয়ার পথে থাকা বছরে অন্তত ২০ উইকেট পেয়েছেন বাংলাদেশের পাঁচ বোলার- রিশাদ (৩৩), মোস্তাফিজ (২৬) তাসকিন (২৪), তানজিম হাসান সাকিব (২৩) ও শেখ মেহেদি হাসান (২২)।
এর আগে ২০২১ সালে মিরপুরের স্পিন সহায়ক উইকেটে বেশিরভাগ ম্যাচ খেলা বছরেও অন্তত ২০ উইকেট নিয়েছিলেন বাংলাদেশের পাঁচ বোলার।
তামিমের বিশ্ব রেকর্ড
ব্যাট হাতে বছরজুড়ে আলো ছড়ানো তামিম বছরের শেষ ম্যাচে গড়েছেন ক্যাচের বিশ্ব রেকর্ড। একের পর এক বল তালুবন্দী করে তিনি নিয়েছেন পাঁচটি ক্যাচ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে নন-উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ক্যাচের রেকর্ড এটিই।
চলতি বছর সব মিলিয়ে মোট ২০টি ক্যাচ নিয়েছেন তামিম। এক বছরে এর চেয়ে বেশি ক্যাচ আছে শুধু আরব আমিরাতের মোহাম্মদ ওয়াসিমের, ২০২৪ সালে ২৪টি।
উইকেটকিপারব্যতীত বাংলাদেশের ফিল্ডাররা ২০২৫ সালে নিয়েছেন মোট ১২০টি ক্যাচ। এবারই প্রথম কোনো নির্দিষ্ট বছরের একশর বেশি ক্যাচ নিয়েছেন তারা। এত দিন সর্বোচ্চ ছিল ২০২৪ সালে নেওয়া ৯৫টি ক্যাচ।
বাদ যায়নি জুটির রেকর্ডও
সব কিছুতে নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়া বছরে পার্টনারশিপেও রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। এই বছর খেলা ৩০ ম্যাচে মোট ২৪টি পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়েছে তারা। যা ভেঙে দিয়েছে গত বছর গড়া ১৫টি পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটির রেকর্ড।
এছাড়া ২০২৫ সালে বাংলাদেশের শতরানের জুটি দুইটি। গত বছরও তারা মোট দুইটি শতরানের জুটি গড়েছিল।
No posts available.
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:৫১ পিএম
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:২৪ পিএম
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:২১ পিএম

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে ওমান। ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলটির নেতৃত্ব দেবেন ওপেনার জতিন্দর সিং। তবে আলোচনার জন্ম দিয়েছে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার আমির কালিমকে দলে না রাখা। এশিয়া কাপে ভালো পারফরম্যান্সের পরও ৪৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার জায়গা পাননি চূড়ান্ত স্কোয়াডে।
ঘোষিত দলে সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন উইকেটকিপার–ব্যাটার ভিনায়ক শুক্লা। বছরের শুরুতে এশিয়া কাপে যে দল খেলেছিল, সেখান থেকে পাঁচটি পরিবর্তন এনেছে ওমান ক্রিকেট বোর্ড।
নতুন করে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন অলরাউন্ডার ওয়াসিম আলি, করণ সোনাভালে ও জে ওডেড্রা। পাশাপাশি পেস আক্রমণ শক্তিশালী করতে দলে যুক্ত করা হয়েছে শফিক জান ও জিতেন রামানন্দিকে। রামানন্দি, ওডেড্রা ও ওয়াসিম আলি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলেছিলেন। শফিক জান ওমানের হয়ে অভিষেক করেন এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টে, যেখানে খেলেছিলেন সোনাভালেও।
এশিয়া কাপের দলে থাকা কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে এবার বাদ পড়েছেন আমির কালিম। সেই টুর্নামেন্টে তিনি ওমানের হয়ে দুটি ফিফটি করেছিলেন এবং পরবর্তীতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও খেলেন। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারকে চূড়ান্ত বিশ্বকাপ দলে রাখেনি টিম ম্যানেজমেন্ট।
অধিনায়ক জতিন্দর সিং ওমানের টি–টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আগের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি দলে জায়গা পাননি, তবে এবার নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছেন তিনি।
২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘বি’ গ্রুপে খেলবে ওমান। গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ সহ-আয়োজক শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ড। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে ওমান।
ওমানের বিশ্বকাপ দল:
জতিন্দর সিং (অধিনায়ক), ভিনায়ক শুক্লা (সহ-অধিনায়ক), মোহাম্মদ নাদিম, শাকিল আহমদ, হাম্মাদ মির্জা, ওয়াসিম আলি, করণ সোনাভালে, ফয়সাল শাহ, নাদিম খান, সুফিয়ান মেহমুদ, জে ওডেড্রা, শফিক জান, আশিস ওডেডারা, জিতেন রামানন্দি, হাসনাইন আলি শাহ।

নিজেদের কিংবদন্তি পেসার লাসিথ মালিঙ্গাকে জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে যুক্ত করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে মঙ্গলবার সাবেক এই পেসারের নিয়োগের খবর নিশ্চিত করেছে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড।
শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলে পরামর্শক-ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করবেন মালিঙ্গা। তবে পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে নয়। আপাতত এক মাসের কিছু বেশি সময়ের জন্য তাকে দলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার ফাস্ট বোলারদের নিয়ে কাজ করবেন মালিঙ্গা। মূলত ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে লঙ্কানরা।
প্রায় ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩০ টেস্টে ১০১ উইকেট, ২২৬ ওয়ানডেতে ৩৩৮ উইকেট ও ৮৪ টি-টোয়েন্টিতে ১০৭ উইকেট নিয়েছেন মালিঙ্গা। খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনে আইপিএলের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কোচিং প্যানেলে আছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কা ও ভারতে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নতুন সংস্করণ শুরু হবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। কলম্বোতে উদ্বোধনী দিনে অবশ্য শ্রীলঙ্কার খেলা নেই। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে তারা।
এরপর 'বি' গ্রুপের বাকি তিন ম্যাচে ওমান (১২ ফেব্রুয়ারি), অস্ট্রেলিয়া (১৬ ফেব্রুয়ারি) ও জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়নরা।

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাঁর আগে দুশ্চিন্তা পাকিস্তান শিবিরে। অস্ট্রেলিয়ায় বিগ ব্যাশ লিগ (বিবিএল) খেলতে গিয়ে হাঁটুর চোটে পড়েছেন দলের অন্যতম সেরা পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি।
শনিবার অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ব্রিসবেন হিটের ম্যাচে ফিল্ডিং করার সময় ডান হাঁটুতে চোট পান শাহিন। খুঁড়িয়ে হাটার পর ওভার শেষ করে বাইরে চলে যান তিনি।
ব্রিসবেন হিট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,
‘এরই মধ্যে শাহিনের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অ্যাডিলেড থেকে ফেরার পর তাঁর হাঁটুর আরও বিস্তারিত পরীক্ষা করা হবে।’
সতর্কতার অংশ হিসেবে আজই বিগ ব্যাশ ছেড়ে দেশে ফিরছেন শাহিন। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ঘনিয়ে আসায় তাঁর দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিসিবি। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে পুনর্বাসন শুরু করবেন শাহিন।
এবারই প্রথমবার বিগ ব্যাশ খেলতে যান শাহিন। তবে শুরুটা ভালো করতে পারেননি বাঁহাতি পেসার। ৪ ম্যাচে পেয়েছেন মোটে ২ উইকেট, ইকোনমি ১১.১৯।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটের মঙ্গলবারের স্থগিত হয়ে যাওয়া খেলা ২৬ ঘণ্টা পিছিয়ে নতুন সূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। নতুন সূচিতে বুধবার দুপুর ৩টায় হবে প্রথম ম্যাচ। আর দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে।
এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিপিএলের মঙ্গলবারের দুই ম্যাচ স্থগিত করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ওই দুই ম্যাচেরই নতুন সূচি এবার জানিয়েছে বিসিবি।
নতুন সূচিতে, বুধবার দুপুর ১টার বদলে দুপুর ৩টায় মুখোমুখি হবে সিলেট টাইটান্স ও চট্টগ্রাম রয়্যালস। বুধবার বাদ জোহর খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাই দুই ঘণ্টা পিছিয়ে শুরু হবে বিপিএলের প্রথম ম্যাচ।
এরপর সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের প্রতিপক্ষ ঢাকা ক্যাপিটালস। এর আগে গত শুক্রবার টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিনেও দুপুর ৩টা ও সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয়েছিল দিনের দুই ম্যাচ।
বুধবারের ম্যাচের জন্য নতুন করে টিকেট কেনার প্রয়োজন নেই দর্শকদের। মঙ্গলবারের জন্য কেনা টিকেট দিয়েই বুধবারের দুই ম্যাচ মাঠে বসে দেখতে পারবেন তারা।
বিপিএলের আর কোনো ম্যাচের সূচি পরিবর্তন করা হয়নি। অর্থাৎ বৃহস্পতি ও শুক্রবার পূর্ব নির্ধারিত সূচিতেই হবে সিলেট পর্বের শেষ চার ম্যাচ।

নিলামে উঠছে স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ। ঐতিহাসিক এই ক্যাপটি ১৯৪৭–৪৮ মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ চলাকালে পরেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক কিংবদন্তি। পরবর্তীতে তিনি ক্যাপটি উপহার দেন ভারতের অলরাউন্ডার শ্রীনিবাসা ওয়াসুদেব সোহোনিকে। সাত দশকেরও বেশি সময় পর এই প্রথম ক্যাপটি প্রকাশ্য নিলামে তোলা হচ্ছে।
ভারতের স্বাধীনতার পর প্রথম বিদেশ সফরে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিল ভারতীয় দল। সেই ঐতিহাসিক সিরিজেই ব্র্যাডম্যানের কাছ থেকে এই ব্যাগি গ্রিনটি উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন সোহোনি। নিলাম আয়োজকদের মতে, ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও নির্ভরযোগ্য উৎসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংগ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হবে।
অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এএপি) জানিয়েছে, ব্র্যাডম্যানের সময়কার বেশিরভাগ ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ এখন জাদুঘরে সংরক্ষিত বা ব্যক্তিগত সংগ্রহে রয়েছে। কিন্তু এই ক্যাপটি কখনোই জনসমক্ষে প্রদর্শিত হয়নি বা বিক্রির জন্য তোলা হয়নি। টানা ৭৫ বছরের বেশি সময় ধরে এটি সোহোনি পরিবারের কাছেই সংরক্ষিত ছিল।
১৯৪৭–৪৮ মৌসুমে সেই সিরিজে ভারতকে ৪–০ ব্যবধানে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সে সময় প্রত্যেক টেস্ট সিরিজের জন্য খেলোয়াড়দের আলাদা ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ দেওয়া হতো। ফলে ব্র্যাডম্যানের পরা প্রতিটি ক্যাপই আলাদা ঐতিহাসিক মূল্য বহন করে। ভারতের বিপক্ষে সেই সিরিজের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ায় এই ক্যাপটির গুরুত্ব আরও বেড়েছে।
লয়েডস অকশনসের প্রতিনিধি লি হেমস বলেছেন, এটি ক্রিকেট ইতিহাসের একেবারে খাঁটি স্মারক, যা স্যার ডন ব্র্যাডম্যান নিজ হাতে উপহার দিয়েছিলেন। ব্র্যাডম্যান ও সোহোনির ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং ক্যাপটির নিরবচ্ছিন্ন মালিকানা ইতিহাস এটিকে সংগ্রাহকদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
নিলামে এই ব্যাগি গ্রিনের প্রারম্ভিক দর ধরা হয়েছে মাত্র এক অস্ট্রেলিয়ান ডলার। আগামী ২৬ জানুয়ারি নিলাম শেষ হবে। ব্যক্তিগত সংগ্রাহক, জাদুঘর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগেও ব্র্যাডম্যানের ব্যাগি গ্রিন নিলামে বড় অঙ্কে বিক্রি হয়েছে। ভারতের বিপক্ষে একই সিরিজের আরেকটি ক্যাপ গত বছর নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ২ কোটি ৬৩ লাখ রুপিতে। সব দিক বিবেচনায় ১৯৪৭–৪৮ মৌসুমের এই ব্যাগি গ্রিন ক্যাপটি ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহকদের কাছে বড় আকর্ষণ হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন আয়োজকেরা।
ডন ব্র্যাডম্যানকে ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ব্যাটার হিসেবে ধরা হয়। ওই সিরিজে তিনি ছয় ইনিংসে ৭১৫ রান করেছিলেন, গড় ছিল ১৭৮.৭৫। তিনটি সেঞ্চুরি ও একটি ডাবল সেঞ্চুরির সৌজন্যে অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দেন তিনি।