ফিল্ড সাজানো নিয়ে অধিনায়ক সাই হোপের সঙ্গে ঝামেলা বাধে পেসার আলজেরি জোসেফের। সেটা তর্কাতর্কি পর্যন্ত গড়িয়েছে। তাতে রেগেমেগে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বোলার আলজারি জোসেফ। ঐ ওভারটির প্রায় পুরোটাই দশজন নিয়ে ফিল্ডিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যদিও জোসেফ পরে মাঠে ফিরে আসেন। এমনই বিরল ঘটনা ঘটেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়-ইংল্যান্ড তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে। আর এই কাজের পরিণতি হিসেবে কোচ ড্যারেন স্যামির সমালোচনার শিকার হচ্ছেন জোসেফ।
ঘটনাটা্ ইংল্যান্ডের ইনিংসের চতুর্থ ওভারে, ঐ সময় বল করতে এসেছিলেন জোসেফ। অধিনায়ক শাই হোপকে ফিল্ডিং সাজানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন পেসার নিজেই। তিনি আসলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চলে একজন ফিল্ডার চেয়েছিলেন। কিন্তু অঞ্চল দিয়ে ইংরেজ ব্যাটার জর্ডান কক্স শট মারার পর অধিনায়কের উপরে রেগে যান জোসেফ। এরপর সেই ওভারেই কক্সকে আউট করেন তিনি। কক্সের গ্লাভসে বল লেগে জমা পড়ে উইকেটকিপার হোপের হাতেই। এসময় অধিনায়কের ওপর ক্ষিপ্ত জোসেফকে কিছু বলতেও দেখা যায়।
আরও পড়ুন
নিউজিল্যান্ড সফরে ইংল্যান্ড দলে ডাক পেলেন তরুণ অলরাউন্ডার |
কিন্তু মূল ঘটনা ঘটে এরপরই। ওভার শেষ হতে অধিনায়কের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। হোপ এবং বাকি ক্যারিবীয় ক্রিকেটারেরা বুঝতেই পারছিলেন না কী করবেন। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ফিল্ডার হিসাবে হেডেন ওয়ালশ জুনিয়রকে দ্রুত নামানোর চেষ্টা করা হয়। যদিও হেডেন মাঠে নামার আগে জোসেফ মাঠে ফিরে আসেন। ক্রিকেটের সাথে যায় না এমন আচরণ দেখে ক্ষুব্ধ ধারাভাষ্যকার মার্ক বাউচার বলেন, “মাঝেমাঝে মাঠে থাকাকালীন অধিনায়ক বা খেলোয়াড় হিসাবে আপনার রাগ হতেই পারে। তবে এ সব কাজ বন্ধ দরজার পিছনে করা উচিত। অধিনায়কের পরিকল্পনায় আস্থা রাখা উচিত।”
খেলা শেষে শাই হোপ অবশ্য আর মনে রাখেননি ম্যাচের মধ্যের সেই ঘটনা, ‘মন্তব্য করতে চাই না। খেলায় এমনটা হতেই পারে।’ তা সে হোপ বিষয়টাকে যতটা হালকা করেই দেখুন না কেন, গুরুত্ব আছে কোচ ড্যারেন স্যামির কাছে। এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘ক্রিকেট মাঠে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। আমরা সবাই বন্ধু হয়ে থাকব। আমি যে সংস্কৃতি তৈরির চেষ্টা করছি, সেখানে এটা মেনে নেওয়া যায় না’।
আরও পড়ুন
‘বাংলাদেশকে বলতে দিন, ইংল্যান্ডও অনেক কিছুই বলেছিল’, বললেন রোহিত |
ব্রেন্ডন কিং ও কেসি কার্টির জোড়া সেঞ্চুরিতে সহজ জয়ে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সেই আনন্দ খানিকটা মলিন হয়ে গেছে আলজেরি জোসেফ মেজাজ হারানোয়!
৮ নভেম্বর ২০২৪, ১:৪৬ পিএম
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল, অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত কোচ তিনি। জাতীয় দলে বেশ আগে একবার কাজ করলেও মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে আবারও বাংলাদেশ দলে দেখার আশা ছিল অনেকেরই৷ সম্প্রতি সেটা পেয়েছে পূর্ণতা। তিনি এখন জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ। নতুন দায়িত্ব নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেছেন, কোচিং ক্যারিয়ারের সব অভিজ্ঞতা দিয়ে জাতীয় দল তথা দেশের ক্রিকেটের উন্নতির জন্য কাজ করবেন তিনি।
দুই দশকের কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে সালাহউদ্দিন ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের সহকারী ও ফিল্ডিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নানা কারণে এরপর আর বাংলাদেশের কোচিংয়ে আর দেখা যায়নি তাকে। তবে কোচ হিসেবে এই সময়ে তিনি হয়েছেন আরও পোক্ত। ঘরোয়া ক্রিকেটের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগিতায় স্বাদ পেয়েছেন বেশ কিছু শিরোপা জয়ের। এবার তার চ্যালেঞ্জ জাতীয় দল নিয়ে।
আরও পড়ুন
বিসিবির কোচিং ওয়ার্কশপে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করলেন সালাহউদ্দিন |
শুক্রবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে সালাহউদ্দিন জানান, কেন তিনি দীর্ঘ বিরতির পর আবার জাতীয় দলের দায়িত্বে ফিরেছেন।
“আমার এখানে পেছনে মূল কারণ যেহেতু অনেকদিন ধরে শুনতেছি যে বোর্ড নাকি দেশী কোচদের একটা প্ল্যাটফর্ম করে দিবে। আমি যদি তাদের সেই পথটা দেখাতে পারি, তাহলে তাদের প্রতি বোর্ডের বিশ্বাসটা বাড়বে, জনগনের বিশ্বাস পারবে এবং সেই তাদের নিজেদেরও বিশ্বাস বাড়বে যে আমরাও আসলে আন্তর্জাতিক লেভেলে ভালো করতে পারি। আমি বিশ্বাস করি এই দায়িত্বটা কেউ না কেউই নেওয়া উচিত ছিল। আমার মনে হয় সেই বিশ্বাসটা যদি আমি রাখতে পারি, পরবর্তী কোচদের জন্য একটা পথ খোলা হয়ে যাবে। যারা কোচ হতে চায়, তাদের জন্য আমার ওপত একটা বড় দায়িত্ব পড়ে গেছে। এটা আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।”
বাংলাদেশ জাতীয় দলের শীর্ষ কয়েকজন খেলোয়াড় ব্যক্তিগতভাবে এখনও কাজ করেন সালাহউদ্দিনের সাথে। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। বিপিএল খেলার সময় গত আসরে ইংলিশ তারকা মঈন আলি বলেছিলেন, সালাহউদ্দিন তার দেখা সেরা পাঁচ কোচের একজন। অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তাই তার কোচ হিসেবে বিশেষ ক্যারিশমাও কাজে দেবে বাংলাদেশ।
যেভাবেই হোক, বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান সালাহউদ্দিন।
“অনেক কারণেই আগে আসতে পারিনি। তবে মনে হয়েছে এখনই সেরা সময়, যখন আমি আবার বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিতে পারব। আমার ইচ্ছা আছে আমার এত বছরের যে অভিজ্ঞতা, সেটা যেন বড় পরিসরে কাজে লাগাতে পারি। এটা যদি দেশের কিছুটা হলেও কাজে আসে, তাহলে কোচিং ক্যারিয়ারের শেষের দিকে গিয়ে আমার নিজেরও ভালো লাগবে।”
প্রথম মেয়াদে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাথে যখন কাজ করেন সালাহউদ্দিন, তখন তিনি পেয়েছিলেন তরুণ মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহকে। প্রায় সবাই এখন চলে এসেছেন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করার তাই এখনই সেরা সময়।
আরও পড়ুন
বিসিবির কোচিং ওয়ার্কশপে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করলেন সালাহউদ্দিন |
তাওহীদ-রিশাদ-শরিফুলদের নিয়ে গড়া এই প্রজন্মকে তাই শীর্ষ পর্যায়ের জন্য তৈরি করার কাজটা যথাযথ চেষ্টা করতে চান সালাহউদ্দিন।
“আগেও পাঁচ বছর জাতীয় দলের সাথে কাজ করেছি। সেই সময় একটা প্রজন্মের সাথে কাজ করেছি। সাকিব, তামিম, মুশফিক, (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ, মাশরাফিদের সাথে কাজ করেছি। সেই সময়ে তারা একটা ধাপ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে, অনেক কিছুই দিয়েছে। পরবর্তী প্রজন্মকে আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে সাহায্য করতে পারি। আমার মনে হয় আমি যদি এটা দিতে পারি, কারও যদি উপকার করতে পারি, সেটা দেশের জন্য ভালো হবে আর সেই খেলোয়াড়ের জন্যও। আমার অভিজ্ঞতা থেকে তাদের মানসিক, টেকনিক্যাল ও টেকটিক্যাল দিক থেকে যদি সাহায্য করতে পারি, আমি তাতে সন্তুষ্ট হব।”
পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই বাংলাদেশের মিডল অর্ডার সামলে আসছেন মুশফিকুর রহিম। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য ছয় নাম্বারেই ব্যাটিং করছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। অথচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে মুশফিক নামলেন সাত নাম্বারে। পরে জানা যায়, মূলত আঙুলের চোটের কারণেই দেরিতে ব্যাট করতে নেমেছিলেন মুশফিক।
আরও পড়ুন
মুশফিকের ৬ হাজার টেস্ট রানের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ |
প্রথম ম্যাচে উইকেট কিপিং করার সময়ই এই চোট পেয়েছিলেন মুশফিক। আঙুলে চিড় ধরায় পরের ওয়ানডেতে খেলা নিয়েও তৈরি হয়েছে শঙ্কা। জানা গেছে, এই মুহূর্তে তার আঙুলের যে অবস্থা তাতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুশফিকের না খেলার সম্ভাবনাই বেশি।
তবে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আজ বেশি কিছু পরীক্ষা করা হবে মুশফিকের আঙুলে। তখনই পরিষ্কার জানা যাবে কবে নাগাদ আবার ফিরতে পারবেন এই উইকেট কিপার ব্যাটার। সবকিছু ঠিক থাকলে হয়তো সিরিজের শেষ ম্যাচে আবার মাঠে নামতে পারবেন তিনি।
আরও পড়ুন
রেকর্ড গড়তে আর ৮১ রান দরকার মুশফিকের |
অন্য দিকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাজে ভাবে হারতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। মাত্র ১১ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ দল। ম্যাচ হারতে হয়েছে ৯২ রানে।