
এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনাল ম্যাচটা একদমই ভালো কাটল না সৌম্য সরকারের। রংপুরের স্পিনের বিপক্ষে ব্যাটই তুলতে পারলেন না খুলনার বাঁহাতি ওপেনার। একের পর এক ডট খেলে উল্টো গড়লেন বিব্রতকর এক রেকর্ড।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে সপ্তম ওভার পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন সৌম্য। দলের বেশিরভাগ বল খেলেও প্রত্যাশামত রান তিনি করতে পারেননি। আবু হাশিমের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২২ বল খেলে করেন মাত্র ৮ রান।
অস্বস্তিময় ইনিংসে সৌম্যর স্ট্রাইক রেট মাত্র ৩৬.৩৬ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে ফাইনাল ম্যাচে অন্তত ২০ বল খেলা ওপেনারদের মধ্যে এটিই সর্বনিম্ন স্ট্রাইক রেটের রেকর্ড।
এত দিন ধরে রেকর্ডটি ছিল ড্যানজা হায়াতের। ২০১২ সালের ক্যারিবিয়ান টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোর বিপক্ষে ২৩ বলে ১২ রান করেছিলেন জ্যামাইকার ওপেনার। যেখানে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৫২.১৭!
প্রায় ১৩ বছর পর হায়াতকে বিব্রতকর রেকর্ডের হাত থেকে মুক্তি দিলেন সৌম্য।
ওপেনারদের বাইরে সব মিলিয়ে হিসেব করলে তালিকার তিন নম্বরে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটার। চলতি বছরের জুলাইয়ে আফগানিস্তানের ওয়াখান টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে মাত্র ২০.০০ স্ট্রাইক রেটে ২০ বলে ৪ রান করেছিলেন পামির লেজেন্ডসের এমাল।
এছাড়া ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার টোয়েন্টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ফাইনালে রাগামা ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ২৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে ২১ বলে অপরাজিত ৬ রান করেছিলেন সারাকেন্স স্পোর্টস ক্লাবের ১১ নম্বর ব্যাটার চামিন্দু পেরেরা।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে রেকর্ডটি ছিল তানবীর হায়দারের। গত বছরের এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ৪০.০০ স্ট্রাইক রেটে ২০ বলে ৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন রংপুরের তানবীর।
No posts available.
৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩:৫৪ পিএম

গাস অ্যাটকিনসনের শর্ট বল পুল করে দিলেন স্টিভ স্মিথ। বল সীমানার ওপারে আছড়ে পড়তেই গর্জে উঠলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। কারণ তার এই ছক্কায়ই নিশ্চিত হয়ে গেল জয়। অ্যাশেজ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
ব্রিসবেনে দিবা-রাত্রির টেস্টে চার দিনের মধ্যে ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৬৫ রানের লক্ষ্য ১০ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলেছে স্মিথের দল।
ম্যাচের চতুর্থ দিন খানিক লড়াই করেন বেন স্টোকস। তবে তাকে থামিয়ে দিয়ে অনায়াসেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম ইনিংসে জো রুটের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ৩৩৪ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছিল ইংল্যান্ড। এর জবাবে ৫ ব্যাটারের ফিফটিতে ৫১১ রান করে অস্ট্রেলিয়া। ১৭৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪১ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা।
ম্যাচের তৃতীয় দিনই একরকম নিশ্চিত হয়ে যায় ইংল্যান্ডের পরাজয়। ৬ উইকেটে ১৩৪ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে তারা। তখনও তারা পিছিয়ে ৪৩ রানে।
সপ্তম উইকেটে স্টোকস ও উইল জ্যাকস মিলে গড়েন লম্বা জুটি। যে কারণে রোববার প্রথম সেশনে কোনো উইকেটই নিতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন
| দ্রাবিড়কে ছুঁয়ে রুটের ঘাড়ে স্মিথের নিঃশ্বাস |
|
দ্বিতীয় সেশনে মাইকেল নেসারের বলে স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে জ্যাকসের বিদায় নিশ্চিত করেন স্মিথ। ৯২ বলে জ্যাকসের ব্যাট থেকে আসে ৪১ রানের ইনিংস। তার বিদায়ে ভাঙে ৯৬ রানের জুটি।
এক ওভার পর স্টোকসকে কট বিহাইন্ড করেন নেসার। ১৫২ বলে ৫০ রান করে ফেরেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। পরে আর বেশিক্ষণ টেকেনি ইংল্যান্ডের ইনিংস।
৪২ রানে ৫ উইকেট নেন নেসার। এটিই তার ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই ইতিবাচক ব্যাটিং করেন ট্রাভিস হেড ও জ্যাক ওয়েদারাল্ড। তবে ষষ্ঠ ওভারে বোল্ড হয়ে যান ২২ বলে ২২ রান করা হেড। এক ওভার পর মার্নাস লাবুশেনকেও ফিরিয়ে দেন অ্যাটকিনসন।
এরপর বেশি সময় নেননি স্মিথ। ২টি করে চার-ছক্কায় মাত্র ৯ বলে ২৩ রান করেন স্মিথ। ওয়েদারাল্ডের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান।
অ্যাডিলেইডে আগামী ১৭ ডিসেম্বর তৃতীয় টেস্টে মুখোমুখি হবে দুই দল।

নানান জল্পনা-কল্পনা, গুঞ্জন, আলোচনা-সমালোচনার পর অবশেষে ভেঙেই গেল স্মৃতি মান্ধানার বিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের তারকা ওপেনার নিজেই জানিয়েছেন এই খবর।
গত ২৩ নভেম্বর সংগীতজ্ঞ পলাশ মুচ্ছলের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল মান্ধানার। সেই আয়োজন ঘিরে ভারতের ক্রিকেটাঙ্গনে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। বিশেষ করে মাসের শুরুতে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জেতায় বিয়ের আনন্দ যেন বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ।
কিন্তু বিয়ের দিনই তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তখন স্থগিত করা হয় সব আয়োজন। পরে পলাশ মুচ্ছলও হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন আবার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে মান্ধানার বন্ধু ও বিয়ের কোরিওগ্রাফারের সঙ্গে ভিন্ন সম্পর্কে জড়িয়ে মান্ধানাকে ধোঁকা দিয়েছেন পলাশ।
শুরু থেকেই এই গুঞ্জন উড়িয়ে দিচ্ছিলেন পলাশ ও তার পরিবার। মান্ধানার তরফ থেকে এই বিষয়ে কিছু বলা হয়নি কখনও। তবে বিয়ে স্থগিত হওয়া দুই সপ্তাহ পর এবার সেটি বাতিলই করে দেওয়ার খবর জানালেন ২৯ বছর বয়সী ওপেনার নিজেই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে দেওয়া বার্তায় অবশ্য কোনো কারণ পরিষ্কার করেননি মান্ধানা। একনজরে দেখে নেওয়া যাক তার বিশদ বার্তা।
“গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা চলছে এবং আমি মনে করি এই সময়ে আমার কথা বলা জরুরি। আমি খুব অন্তঃমুখী মানুষ, আমি সেটাই রাখতে চাই। কিন্তু আমাকে পরিষ্কার করতে হবে যে, বিয়ে বাতিল করা হয়েছে।”
“আমি এখানেই এটি বন্ধ করতে চাই, আপনাদের সকলের কাছেও একই অনুরোধ করছি। দয়া করে এই সময়ে উভয় পরিবারের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে সম্মান করুন এবং আমাদের নিজেদের মতো করে পরিস্থিতি সামলানোর এবং এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিন।”
“আমি বিশ্বাস করি আমাদের সবার জীবনে একটি উচ্চতর উদ্দেশ্য কাজ করে এবং আমার ক্ষেত্রে সেটি সবসময়ই দেশের জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করা। আমি আশা করি যতদিন সম্ভব ভারতের হয়ে খেলতে এবং ট্রফি জিততে থাকব এবং সেটাই চিরকাল আমার মূল লক্ষ্য থাকবে। সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়।”
পরে ভিন্ন এক বার্তায় পলাশ মুচ্ছলও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তবে তিনিও বিয়ে বাতিল হওয়ার কোনো কারণ জানাননি।
“আমি জীবনে এগিয়ে যাওয়ার ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেটি আমার কাছে সবচেয়ে পবিত্র ছিল। সেটি নিয়ে ভিত্তিহীন গুজবের ওপর মানুষের এত সহজ প্রতিক্রিয়া দেখা আমার জন্য অত্যন্ত কষ্টকর।”
“এটি আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন অধ্যায়। আমি এটিকে মর্যাদার সঙ্গে সামলাব, বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে। আমি সত্যিই আশা করি সমাজ হিসেবে কারও সম্পর্কে ভিত্তিহীন গালগল্পের ভিত্তিতে মন্তব্য করার আগে থামতে শিখব- যার উৎস কখনও জানা যায় না। আমাদের কথাগুলো এমনভাবে আঘাত করতে পারে, যা আমরা কখনও বুঝতেও পারি না। আমরা যখন এসব নিয়ে ভাবছি, তখন বিশ্বের বহু মানুষ ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হচ্ছে।”
“আমার টিম তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেবে যারা মিথ্যা ও মানহানিকর কনটেন্ট ছড়াচ্ছে। এই কঠিন সময়ে যারা আমার পাশে ছিলেন, তাদের সকলকে ধন্যবাদ।”

বেন স্টোকস ও উইল জ্যাকসের জমে ওঠা জুটি কোনোভাবেই ভাঙতে পারছিল না অস্ট্রেলিয়া। তখনই যেন জাদু দেখালেন স্টিভ স্মিথ। তবে বল হাতে নয়, বরং স্লিপে দাঁড়িয়ে ক্যাচ নিয়ে। মাইকেল নেসারের বলে বাম দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচে জুটি ভাঙেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।
পরে আরেকটি ক্যাচ নিয়ে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যাচের রেকর্ড। যেখানে তার সঙ্গী ভারতীয় কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড়। তাদের দুজনের ওপরে শুধু ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও সফলতম ব্যাটার জো রুট।
ব্রিসবেনে দিবারাত্রির টেস্টে চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডকে ২৪১ রানে গুটিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। তাদের সামনে এখন লক্ষ্য মাত্র ৬৫ রানের। ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেট নিয়ে দলের সবচেয়ে সফল বোলার নেসার।
আরও পড়ুন
| রোহিতের ২০০০০, জয়সওয়ালের সেঞ্চুরিতে সিরিজ ভারতের |
|
স্লিপে দাঁড়িয়ে স্মিথ নিয়েছেন তিনটি ক্যাচ। যার সৌজন্যে তার ক্যারিয়ারে এখন ক্যাচের সংখ্যা ২১০টি। নন-উইকেটকিপারদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসে ক্যাচের তালিকায় এখন দুই নম্বরে উঠে গেছেন ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটার।
স্মিথের সমান ২১০ ক্যাচ নিয়ে আগে থেকেই দুই নম্বরে ছিলেন দ্রাবিড়। তবে অনেক কম ম্যাচেই তাকে ছুঁয়ে ফেলেছেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ১২১ ম্যাচে নিয়েছেন ২১০ ক্যাচ। আর দ্রাবিড় তার ১৬৪ টেস্টের ক্যারিয়ারে নিয়েছিলেন ২১০টি ক্যাচ।
এই তালিকায় সবার ওপরে রুট। ব্রিসবেন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস পর্যন্ত ১৬০ ম্যাচে রুটের ক্যাচ ২১৩টি। এখনও খেলা চালিয়ে যাওয়ায় সামনের দিনগুলোতে রুট আর স্মিথের মধ্যে ক্যাচের লড়াইটা হয়তো দেখা যাবে জমজমাটভাবে।
তবে অ্যাশেজের হিসেবে অবশ্য এরই মধ্যে সবার ওপরে স্মিথ। ঐতিহ্যবাহী এই সিরিজে ৩৯ ম্যাচে ৬৬ ক্যাচ নিয়েছেন তারকা ব্যাটার। ৩২ ম্যাচে ৫৪ ক্যাচ নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার ইয়ান বোথাম।

সামনের বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজেদের সাপোর্ট স্টাফে বড় নাম যুক্ত করল নামিবিয়া।ভারতের ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ গ্যারি কারস্টেনকে জাতীয় দলের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিল তারা।
নামিবিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে প্রধান কোচ ক্রেইগ উইলিয়ামসের সঙ্গে মিলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হতে যাওয়া বিশ্বকাপের আগে থেকেই কাজ শুরু করে দেবেন কারস্টেন।
ক্রিকেট নামিবিয়ার দেওয়া বিবৃতিতে নতুন দায়িত্বে কাজ শুরুর রোমাঞ্চ জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই ক্রিকেটার।
“ক্রিকেট নামিবিয়ার সঙ্গে কাজ করা নিঃসন্দেহে একটি বিশেষ সুযোগ। তাদের নিষ্ঠা ও দৃঢ়তা আমাকে পুরোপুরি মুগ্ধ করেছে। তাদের নতুন অত্যাধুনিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামই প্রমাণ যে দলগুলোকে বিশ্বের সেরা ক্রিকেট দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতার উপযোগী করে তুলতে কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
“তাদের সিনিয়র পুরুষ দল ভালো পারফর্ম করছে। আর আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে বাড়তি কিছু যোগ করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।”
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে গত কয়েক বছর ধরেই উন্নতির পথে আছে নামিবিয়া। গত তিনটি বিশ্বকাপেই খেলেছে তারা। সামনের বছরের টুর্নামেন্টেও দেখা যাবে দলটিকে। এছাড়া ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সহ-স্বাগতিকও নামিবিয়া।
এগিয়ে যাওয়ার গতি আরও বৃদ্ধি করতেই কারস্টেনকে নিয়োগ দিয়েছে নামিবিয়া। ২০০৪ সালে ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে বিদায় জানানোর পর তিন বছর নিজ দেশেই ঘরোয়া ক্রিকেটে নানান দলে কোচিং করান কারস্টেন।
২০০৭ সালে ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন সাবেক প্রোটিয়া ব্যাটার। তার কোচিংয়ে ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলেরও কোচিং করান তিনি। এছাড়া বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও কোচের ভূমিকায় দেখে গেছে কারস্টেনকে।

সিরিজ জিতেছে ভারত। সিরিজে রান পেয়েছেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই তারকা ব্যাটার রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলি। সিরিজ সেরা হয়েছেন কোহলি। ভারতের ক্রিকেটভক্তদের জন্য বেশ আনন্দের মূর্হুতই বটে।
আজ বিশাখাপত্তনমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে ৯ উইকেটে জিতেছে ভারত। রোহিত-কোহলির ফিফটি আর যশস্বী জয়সওয়ালের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে প্রোটিয়াদের বলে-কয়ে হারাল স্বাগতিকরা।
শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা কুইন্টন ডি ককের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৪৭.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৭০ রান করে। জবাবে ৬১ বল ও ৯ উইকেট বাকি রেখেই জয়ে নোঙর করে স্বাগতিকরা। ১২১ বলে ১১৬ করা যশস্বী হন ম্যাচসেরা। আর তিন ম্যাচের সিরিজে মোট দুই সেঞ্চুরি ও এক ফিফটিতে মোট ৩০২ রান করা কোহলি হন সিরিজসেরা।
ওয়ানডে ক্রিকেটে বর্তমানে সাড়ে তিনশো রানও নিরাপদ নয়। আগের ম্যাচেই সেটি দেখিয়ে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে আজ নিজেরা তিনশো রানের কাছেও যেতে পারেনি। ২৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতের উদ্বোধনী জুটিই বেশিরভাগ কাজ করে দিয়ে যায়। ১৫৫ বলে ১৫৫ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন রোহিত-জয়সওয়াল।
৭৩ বলে ৭৫ করা রোহিত থামেন কেশব মহারাজের বলে ম্যাথু ব্রিৎজকের তালুবন্দি হয়ে। ৭ চার ও ৩ ছয়ে ইনিংসটি সাজান ৩৮ বছর বয়সী ডানহাতি এই ওপেনার। এদিন দারুণ এক মাইফলকও স্পর্শ করেন রোহিত। ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে ২০ হাজার রানের ক্লাবে যোগ দিলেন তিনি। এ তালিকায় বাকিরা হলেন শচিন টেন্ডুলকার (৩৪৩৫৭), বিরাট কোহলি (২৭৯১০), রাহুল দ্রাবিড় (২৪২০৮)।
রোহিত ফেরার পর দ্বিতীয় উইকেটে কোহলি-জয়সওয়ালের ১২৬ রানের জুটিতে হেসেখেলে জয় পায় ভারত। চার ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পান জয়সওয়াল। ১২১ বলে ১১৬ রানের ইনিংসটি খেলতে ১২টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটার।
কোহলি ভক্তরা হয়তো খানিকটা আফসোসই করেছেন। ইশ, যদি দক্ষিণ আফ্রিকার রান আরও বেশি হতো, তবে টানা তিন ম্যাচে হয়তো সেঞ্চুরি দেখা যেত ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরার ব্যাটে। টানা দুই চারে ভারতকে জেতানো কোহলি করেছেন ৪৫ বলে ৬৫ রান। মেরেছেন ৬টি চার ও দু’টি ছক্কা।
এর আগে দীর্ঘ সময় পর টস ভাগ্য খুলে ভারতের। দীর্ঘ ২৫ মাস ও ২০ ম্যাচ পর অবশেষে ওয়ানডে টস জিতে ভারত। সবশেষ ২০২৩ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমি-ফাইনাল ম্যাচের পর ওয়ানডেতে টস জিততেই যেন ভুলে গিয়েছিল ভারত। অবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ২০ ম্যাচের অপেক্ষা ঘোচালেন রাহুল।
টসে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান রাহুল। প্রথম ওভারেই রায়ান রিকেল্টনকে ফিরিয়ে ভারতকে দারুণ সূচনা এনে দেন আর্শদ্বিপ সিং। ১ রানে এক উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি-কক। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকেই ছুটছিল প্রোটিয়ারা। তবে বাভুমাকে কোহলির ক্যাচ বানিয়ে ১১৩ রানের জুটি ভেঙে ভারতকে ম্যাচে ফেরান রবীন্দ্র জাদেজা।
মিডল অর্ডারে ব্রিটজকে এবং ব্রেভিস ভাল শুরু করেন। কিন্তু ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন দু’জনই। ব্রিটজকেকে(২৪) ফেরান প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা আর ব্রেভিসকে(২৯) কুলদীপ যাদব। এডেন মার্করামও ফেরেন ১ রানে।
রান করতে পারেননি কভিন বসচ এবং মার্কো জানসেনও। দক্ষিণ আফ্রিকার রান যখন ১৯৯, এক প্রান্ত আগলে রেখে সেঞ্চুরি করা ডি-কক আউট হন কৃষ্ণার বলে বোল্ড হয়ে। ৮৯ বলে ১০৬ রানের ইনিংস খেলার পথে দারুণ কয়েকটি রেকর্ডেও নাম লেখান তিনি। অবসর থেকে ফেরা এই বাঁহাতি ব্যাটার ২৩তম শতকে বিদেশের মাটিতে সর্বাধিক ওয়ানডে সেঞ্চুরির যৌথ রেকর্ড গড়েছেন। দেশের বাইরে তাঁর মোট সেঞ্চুরি এখন সাতটি। ডি ককের আগে চার ব্যাটার এই সংখ্যা ছুঁয়েছেন।
এছাড়া শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি সনাৎ জয়সুরিয়ার সঙ্গে ভারতের বিপক্ষে সর্বাধিক ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাগাভাগি করলেন ডি ককের। এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ২৩ ইনিংসে ৭টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে সমান সংখ্যাক শতক পাওয়া জয়সুরিয়াকে খেলতে হয়েছে ৮৫ ইনিংস। উইকেটকিপার হিসেবেও সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করলেন ৩২ বছর বয়সী ব্যাটার। কুমার সাঙ্গাকারার সমান ২৩টি সেঞ্চুরি তাঁর।
ডি কক ফেরার পর ৭১ রানে পাঁচ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ দিকে মহারাজের ২৯ বলে ২০ রানের ইনিংসে কোনমতে ২৭০ করে তাঁরা। কুলদীপ এবং প্রসিদ্ধ ৪টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন অর্শদীপ এবং জাদেজা।