টেস্ট ক্রিকেটে চাপের মুখে ব্যাটিং করাটা সবসময়ই কঠিন একটি কাজ। আর সেটা যদি হয় ৩০ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারানোর মত ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর, তাহলে সেখান থেকে খুব ভালো কিছু করা হয়ে ওঠে দুরূহ ব্যাপার। তবে গত কয়েক বছর ধরে এই কাজটা বারবার করে যাচ্ছেন লিটন দাস। চাপের মুখেই যেন বেশি হাসছে তার ব্যাট। এর রহস্য কী? অভিজ্ঞ এই ব্যাটার জানালেন, কঠিন পরিস্থিতেই রান করার সুযোগ বরং বেশি দেখেন তিনি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে এক পর্যায়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ২৬। সেখান থেকে স্কোর শেষ পর্যন্ত যায় ২৬২ পর্যন্ত, যেখানে বড় অবদান রাখেন লিটন। একপ্রান্ত আগলে খেলেন ১৩৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। সেখানে ডিফেন্ড যেমন করেছেন, তেমনি পরিস্থিতি অনুযায়ী আগ্রাসী শটও খেলেছেন বেশ। শুধু এই ইনিংসেই নয়, এর আগেও ৬-৭ নম্বরে নেমে প্রচণ্ড চাপের মুখে দারুণ সব ইনিংস খেলার কীর্তি গড়ার রয়েছে লিটনের।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সব পেসারই নাহিদের আদর্শ
মঙ্গলবার টি-স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিটন তার এসব ইনিংস খেলার শক্তি ও বিশ্বাসের জায়গা তুলে ধরেছেন। “মোটিভ কিছু না, আমার কাছে মনে হয় এটা খুব ভালো একটা সুযোগ। সবসময়ই আমি এটা অনুভব করি, ২৬ রানে ৬ উইকেট, ৫০ রানের আগে ৬ উইকেট, এমন সময়ে বোলিং দল অনেক আক্রমণ করে, এটাই স্বাভাবিক। আমার কাছে এটাই একটা সুযোগ মনে হয় যে এখানে একটা মারলেই চার হয়ে যাবে। চেষ্টা করি সেখানে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করার। অনেক সময় দেখা যায় আপনি ইতিবাচকভাবে ব্যাটিং করলে ব্যাটের কানায় লেগেও বল গ্যাপ দিয়ে চলে যায়। তাই আমি সেটাই করার চেষ্টা করি। ওই অবস্থা থেকে বের হওয়ার দুইটা উপায়, হয় আপনাকে খুব ভালোভাবে টিকে থাকতে হবে, আর নাহলে আক্রমণ করে খেলতে হব। কারণ রানের চাকা সচল হলে স্পিল সরে যাবে, বোলার রান আটকানোর চেষ্টা করবে। আর তখন ভালো বলের সংখ্যা কমে আসবে। আমার কাছে এটাই মনে হয়।”
গত পাঁচ বছরে টেস্ট ক্রিকেটে স্পেশালিষ্ট উইকেটরক্ষক-ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন লিটন। চাপের মুখে জ্বলে ওঠার পাশাপাশি তাতে ফুটে ওঠে এই ফরম্যাটে তার ধারাবাহিকতার দিকটিও। তিন ফরম্যাট বিবেচনা করলেও দেখা যায়, টেস্টেই লিটন সবচেয়ে ভালো করছেন এবং এখানে তার ধারাবাহিকতাও অনেক বেশি।
লিটনও বললেন, টেস্ট ক্রিকেটটা বিশেষভাবে উপভোগও করছেন তিনি। “আমি আসলে এগুলো (রেকর্ড) দেখিনি। আমি টেস্ট ক্রিকেটটা খুব উপভোগ করছি। অনেক আগে থেকেই করতাম। খেলতে চাই অনেকদিন, কারণ আমার কাছে মনে হয় এখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমি এটা খুব উপযোগ করি। আসলে এভাবে কখনও চিন্তা করিনি যে আমার তিন-চার বছরে আমার গড় এত হচ্ছে। আমি শুধু এটাই চিন্তা করি যে ব্যাটিংয়ে আমার দলকে আরও বেশি কিছু দেওয়া যায়। সবসময় ১০০-১৫০ রান হয়ত হবে না, তবে ৫০ রান করলেও যেন এটার একটা প্রভাব থাকে, এটা নিয়েই আমি কাজ করছি।”
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজে ব্যাট হাতে দারুণ খেলার কারণে আসছে ভারত সিরিজেও লিটনকে নিয়ে সবার আশা অনেকটাই বেড়ে গেছে। আগে-পরে এই দলটির বিপক্ষে তার রয়েছে উল্লেখযোগ্য কিছু ইনিংসও। যার মধ্যে রয়েছে ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে করা সেঞ্চুরি, যা অনেকের চোখেই লিটনের অন্যতম সেরা ইনিংস।
তিনি নিজেও শোনালেন ভারত সিরিজ নিয়ে বড় স্বপ্নের কথা। “মানুষ তো আশা নিয়েই বুক বাঁধে। আমি তো আশা করব যেন আমি দুইটা টেস্টের দুইটাতেই ভালো খেলতে পারি। কারণ কঠিন হবে। তাদের দলে কোয়ালিটি বোলিং লাইনআপ আছে। কন্ডিশন তাদের পক্ষে, একটু কঠিন থাকবেই সবকিছুতে। তবে চেষ্টার কোনো কমতি থাকবে না। এখানে অনুশীলন আছে, ভারতেও আছে। চেষ্টা করব যতদূর সম্ভব খাপ খাইয়ে নিতে।”
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২:৩৪ এম
খেলাটা যেখানেই হোক, সেটা ঢাকা, চেন্নাই, দুবাই, মেলবোর্ন - বিরাট কোহলি সবসময় সবজায়গায় থাকেন একই। নিজের নামের মতো। নামটা 'কিং কোহলি...' আমি বলছি না। বিশ্ব ক্রিকেটের সব অনুরাগীরাই তাকে এই নামেই চেনেন, ডাকেন। দিল্লির ‘চিকু’ যেনো পুরো ভারতীয় ক্রিকেটের অথবা তারচেয়েও বড় কিছু।
এই বছরই কোহলি ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছেন বিশ্বকাপ ট্রফিটা উঁচিয়ে। এখন বাড়তি নজর তাই টেস্ট ক্রিকেটে। অবশ্য সেটা সবসময় ছিল তার। এই ফরম্যাটকেই মেনেছেন, বলেছেন সেরা বলে। চেন্নাই টেস্টের আগেও কিন্তু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভাবনার কারণ এক কোহলি।
তবে বাংলাদেশের বোলাররা কোহলিকে থামাতে পারেন। সাত বাংলাদেশি বোলার কোহলিকে আউট করেছেন। এরমধ্যে তাইজুল ইসলাম সর্বোচ্চ দুবার। চিপকে কী খেলা হবে এই স্পিনারের, তার জন্যও করতে হচ্ছে অপেক্ষা। তাইজুল ছাড়াও মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান, এবাদত হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, তাসকিন আহমেদ, জুবায়ের লিখনরাও আছেন সেই তালিকায়। চিপকে অবশ্য জোড়া ইনিংস পাচ্ছে, সুযোগ থাকবে কানপুরেও।
এরই মধ্যে ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে কোহলিকে বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬ বার আউট করেছেন সাকিব। একবার বোল্ডের সাথে এক স্টাম্পিং, ফিল্ডাররা সাহায্য করেছে চারবার। টেস্টে একবার হলেও ওয়ানডে পাঁচ আর বাংলাদেশের জার্সিতে টি-টোয়েন্টিতে আরেকবার।
এমনিতে কোহলি মানেই যেকোনো মানদণ্ডে ৫০ এর বেশি গড়। বাংলাদেশের সাথেও তাই। ৯ ইনিংসের কোহলি রান করেছেন ৪৩৭। গড় ৫৪ এর বেশি। দুই সেঞ্চুরির কোহলির ব্যাটে রয়েছে ডাবল সেঞ্চুরিও।
চেন্নাইয়ে বুধবারে সাকিব ব্যাট হাতেই ব্যস্ত ছিলেন, বল হাতে না। কাউন্টিতে সারের হয়ে ম্যাচে ৯ উইকেট তোলা সাকিব অবশ্য বল হাতেও ফিরতে চাইবেন, ফেরাতে চাইবেন কোহলিকে।
একটা তথ্য বলে রাখা ভালো, এশিয়ান স্পিনারদের মধ্যে তিন ফরম্যাটে সাকিবকে বেশিবার আউট করা বোলার সাকিব। সাকিবরা ব্যাটিংয়ে ব্যস্ত থাকলেও কোহলির জন্য বুধবারের চিপক ব্যস্ত থাকেনি। ৪৪ টেস্ট গড়ের চিপকে যা ম্যাচে না থাকলেও হলো, বাংলাদেশিরা তো তাই চাইবে! আর চাইবে সাকিব বা অন্য যেকেউ ফেরাক কোহলিকে।
পাকিস্তানকে তাদের ঘরের মাঠে হোয়াইট ওয়াশ করতে বাংলাদেশের বোলাররা দারুণ ভূমিকা রেখেছেন। পেসার কিংবা স্পিনার দুই পক্ষই অবদান রেখেছেন সমান তালে। ভারতের সাথে ভালো করতেও বাংলাদেশ দল তাকিয়ে থাকবে বোলিং ডিপার্টমান্টের দিকেই। ভারতের লম্বা ব্যাটিং লাইনআপকে আটকাতে বোলারদের দারুণ কিছু করার বিকল্প নেই। অভিজ্ঞতার বিচারে বাংলাদেশের পেসাররা পিছিয়ে থাকলেও সামর্থ্যের দিক থেকে দলের ওপর আস্থা রাখতে চান অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত।
পাকিস্তান সফরে সাকিব, মিরাজরা যেমন উইকেট নিয়েছেন তেমনি নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদরাও সময়ে সময়ে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন। অভিজ্ঞতার বিচারে বাংলাদেশের পেসাররা পিছিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ অধিনায়ক আস্থা রাখতে চান তাদের সামর্থের ওপর। “আমাদের খুব ভালো অভিজ্ঞ স্পিন আক্রমণ আছে। গত কয়েক বছর ধরে আমাদের পেস বিভাগও দারুণ। আমি জানি, তারা তেমন অভিজ্ঞ নয়। তবে সামর্থ্য আছে। আমি স্পিন বা পেস নিয়ে ভাবছি না। আমাদের যে কন্ডিশন দেওয়া হবে, দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি, আমাদের ক্রিকেটাররা দ্রুত মানিয়ে নেবে এবং দলের জন্য ভালো করবে।”
ঘরের মাঠে ভারত স্বভাবতই ফেভারিট হিসেবে খেলতে নামবে। তাদের বোলিং লাইনআপও ডের এগিয়ে বাংলাদেশ থেকে। তবে সেগুলো নিয়ে চিন্তা করছেন না শান্ত। তার নজর নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করার দিকেই। “যেটা বললাম, ফল নিয়ে ভাবছি না। শুধু প্রক্রিয়া নিয়ে চিন্তা করছি। দলে যে ৫-৬ জন বোলার আছে, তারা সবাই লম্বা সময় ধরে ভালো বোলিং করতে পারে। আমি আশা করি, তারা নিজেদের কাজটা করবে।”
চেন্নাইয়ে বুধবারের উত্তাপের অনেকেই অনুশীলন করেছেন, তবে সাকিব আল হাসান যেন একটু বেশি বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকলেন। না দেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয় বলে বলছি না। অন্য কারণও আছে। কাউন্টি খেলছিলেন সারের হয়, টনটনের হাড় কাঁপানো শীত না হলেও আপনি হয়তো সোয়েটারের সাকিবকে দেখেছেন। সেই ঠান্ডা থেকে একেবারে অসহনীয় গরম। সাকিবকে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। সেটার সাথে মানিয়ে নিতে দুই ঘণ্টার ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন।
দেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয়ের পোস্টারের রং হারিয়েছে খানিক। ব্যাটিং ফর্মটা একেবারেই সায় দিচ্ছে না। গেলো ওয়ানডে বিশ্বকাপে এই চেন্নাইতে ভুগেছিলেন চোখের সমস্যা। সেই শুরু। যে সমস্যার কেবল বেড়েছেই। যা ভুগিয়েছে ব্যাটিংয়েও। সেই ব্যাটেই দিয়েছেন শান। চেন্নাইয়ের উত্তাপে সাকিবের ব্যাটে ধার।
টনটনের শীত থেকে চেন্নাইয়ের ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গরম। একেবারে ১৮০ টার্ন করার ব্যাপারটা কী কেবল সাকিবের সাথেই যায়? হয়তো। দেড় দশকের লম্বা ক্যারিয়ার, যতবার বিদ্ধ হয়েছেন সমালোচনার তীরে ততোবারই ফিরেছেন। এবারও? উত্তর এক সাকিবের কাছেই।
এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়ামের ইতিহাস যতোই পুরাতন হোক, বাংলাদেশের টেস্ট খেলা হয়নি তবে আইপিএলের কল্যাণে টেস্ট খেলছেন এমন বাংলাদেশিদের মধ্যে সাকিবের চিপক অভিজ্ঞতা সবচেয়ে বেশি। তা কতটা সাকিব আর টাইগাররা কাজে লাগায় তা আপনি জেনে যাবেন চেন্নাই টেস্ট শেষেই।
৮ ঘণ্টা আগে
৮ ঘণ্টা আগে
১ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ ঘণ্টা আগে
৮ ঘণ্টা আগে
১ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ ঘণ্টা আগে
৮ ঘণ্টা আগে
১ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ ঘণ্টা আগে
৮ ঘণ্টা আগে
১ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে