টেস্ট ক্রিকেটে চাপের মুখে ব্যাটিং করাটা সবসময়ই কঠিন একটি কাজ। আর সেটা যদি হয় ৩০ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারানোর মত ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর, তাহলে সেখান থেকে খুব ভালো কিছু করা হয়ে ওঠে দুরূহ ব্যাপার। তবে গত কয়েক বছর ধরে এই কাজটা বারবার করে যাচ্ছেন লিটন দাস। চাপের মুখেই যেন বেশি হাসছে তার ব্যাট। এর রহস্য কী? অভিজ্ঞ এই ব্যাটার জানালেন, কঠিন পরিস্থিতেই রান করার সুযোগ বরং বেশি দেখেন তিনি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে এক পর্যায়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ২৬। সেখান থেকে স্কোর শেষ পর্যন্ত যায় ২৬২ পর্যন্ত, যেখানে বড় অবদান রাখেন লিটন। একপ্রান্ত আগলে খেলেন ১৩৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। সেখানে ডিফেন্ড যেমন করেছেন, তেমনি পরিস্থিতি অনুযায়ী আগ্রাসী শটও খেলেছেন বেশ। শুধু এই ইনিংসেই নয়, এর আগেও ৬-৭ নম্বরে নেমে প্রচণ্ড চাপের মুখে দারুণ সব ইনিংস খেলার কীর্তি গড়ার রয়েছে লিটনের।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সব পেসারই নাহিদের আদর্শ
মঙ্গলবার টি-স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিটন তার এসব ইনিংস খেলার শক্তি ও বিশ্বাসের জায়গা তুলে ধরেছেন। “মোটিভ কিছু না, আমার কাছে মনে হয় এটা খুব ভালো একটা সুযোগ। সবসময়ই আমি এটা অনুভব করি, ২৬ রানে ৬ উইকেট, ৫০ রানের আগে ৬ উইকেট, এমন সময়ে বোলিং দল অনেক আক্রমণ করে, এটাই স্বাভাবিক। আমার কাছে এটাই একটা সুযোগ মনে হয় যে এখানে একটা মারলেই চার হয়ে যাবে। চেষ্টা করি সেখানে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করার। অনেক সময় দেখা যায় আপনি ইতিবাচকভাবে ব্যাটিং করলে ব্যাটের কানায় লেগেও বল গ্যাপ দিয়ে চলে যায়। তাই আমি সেটাই করার চেষ্টা করি। ওই অবস্থা থেকে বের হওয়ার দুইটা উপায়, হয় আপনাকে খুব ভালোভাবে টিকে থাকতে হবে, আর নাহলে আক্রমণ করে খেলতে হব। কারণ রানের চাকা সচল হলে স্পিল সরে যাবে, বোলার রান আটকানোর চেষ্টা করবে। আর তখন ভালো বলের সংখ্যা কমে আসবে। আমার কাছে এটাই মনে হয়।”
গত পাঁচ বছরে টেস্ট ক্রিকেটে স্পেশালিষ্ট উইকেটরক্ষক-ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন লিটন। চাপের মুখে জ্বলে ওঠার পাশাপাশি তাতে ফুটে ওঠে এই ফরম্যাটে তার ধারাবাহিকতার দিকটিও। তিন ফরম্যাট বিবেচনা করলেও দেখা যায়, টেস্টেই লিটন সবচেয়ে ভালো করছেন এবং এখানে তার ধারাবাহিকতাও অনেক বেশি।
লিটনও বললেন, টেস্ট ক্রিকেটটা বিশেষভাবে উপভোগও করছেন তিনি। “আমি আসলে এগুলো (রেকর্ড) দেখিনি। আমি টেস্ট ক্রিকেটটা খুব উপভোগ করছি। অনেক আগে থেকেই করতাম। খেলতে চাই অনেকদিন, কারণ আমার কাছে মনে হয় এখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমি এটা খুব উপযোগ করি। আসলে এভাবে কখনও চিন্তা করিনি যে আমার তিন-চার বছরে আমার গড় এত হচ্ছে। আমি শুধু এটাই চিন্তা করি যে ব্যাটিংয়ে আমার দলকে আরও বেশি কিছু দেওয়া যায়। সবসময় ১০০-১৫০ রান হয়ত হবে না, তবে ৫০ রান করলেও যেন এটার একটা প্রভাব থাকে, এটা নিয়েই আমি কাজ করছি।”
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজে ব্যাট হাতে দারুণ খেলার কারণে আসছে ভারত সিরিজেও লিটনকে নিয়ে সবার আশা অনেকটাই বেড়ে গেছে। আগে-পরে এই দলটির বিপক্ষে তার রয়েছে উল্লেখযোগ্য কিছু ইনিংসও। যার মধ্যে রয়েছে ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে করা সেঞ্চুরি, যা অনেকের চোখেই লিটনের অন্যতম সেরা ইনিংস।
তিনি নিজেও শোনালেন ভারত সিরিজ নিয়ে বড় স্বপ্নের কথা। “মানুষ তো আশা নিয়েই বুক বাঁধে। আমি তো আশা করব যেন আমি দুইটা টেস্টের দুইটাতেই ভালো খেলতে পারি। কারণ কঠিন হবে। তাদের দলে কোয়ালিটি বোলিং লাইনআপ আছে। কন্ডিশন তাদের পক্ষে, একটু কঠিন থাকবেই সবকিছুতে। তবে চেষ্টার কোনো কমতি থাকবে না। এখানে অনুশীলন আছে, ভারতেও আছে। চেষ্টা করব যতদূর সম্ভব খাপ খাইয়ে নিতে।”
৭ মে ২০২৫, ৯:২৯ পিএম
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে তীব্র সামরিক উত্তেজনার জেরে পিএসএলের পর বন্ধ হয়ে গেল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগও (আইপিএল) পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে ভারতের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের একটি সূত্র।
শুক্রবার হিন্দুস্তান টাইমসের সাথে আলাপচারিতায় ভারত ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) একটি সূত্র আইপিএল স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
“আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য আইপিএল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। খেলোয়াড়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তাই আমরা আপাতত টুর্নামেন্টটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টুর্নামেন্টটি আবার কবে থেকে শুরু হতে পারে, তা নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই মুহুর্তে আমাদের কাছে জাতীয় স্বার্থই সর্বাধিক গুরুত্বের বিষয়।”
ভারত সরকার, আইপিএলের ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে একাধিক বৈঠকের পরে বিসিসিআই টুর্নামেন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে।
আইপিএলে অংশ নেওয়া বিদেশী খেলোয়াড়দের জন্য চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে। বোর্ডের বেশ কয়েকটি সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসেরকে নিশ্চিত করেছে যে, আইপিএলের বাকি অংশ ল ভবিষ্যতে শুরু এবং টুর্নামেন্ট এগিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় সরকারের পরামর্শ অনুসরণ করবে।
গত বৃহস্পতিবার ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ চলাকালীন, স্টেডিয়ামের চারটি ফ্ল্যাডলাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। শুরুতে টেকনিক্যাল ত্রুটির কথা বলা হলেও খুব শীঘ্রই খেলোয়াড় এবং আম্পায়াররা মাঠ ছাড়তে শুরু করেন। পরে দর্শকদের স্টেডিয়ামে ছাড়তে বলা হয়েছিল।
গত মাসে কাশ্মীরে এক সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে গত বুধবার পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় ভারত। অন্যদিকে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে। পাল্টা জবাব হিসেবে পাকিস্তান সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণ করে। ফলশ্রুতিতে দুই দেশই বৃহস্পতিবার একে অপরের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলার অভিযোগ তোলে।
গত বৃহস্পতিবার পিএসএলে করাচি কিংস এবং পেশোয়ার জালমি রাওয়ালপিন্ডিতে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু স্টেডিয়ামের কাছে একটি ড্রোন পড়ার পর ম্যাচটি বাতিল করা হয়। এর জেরে এরপর পিএসএলের বাকি অংশ সরিয়ে নেওয়া হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
গত কয়েকদিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও পাল্টাপাল্টি আক্রমণের প্রভাব শেষ পর্যন্ত সরাসরি পড়ল ক্রিকেটে। নিরাপত্তার কারনে পাকিস্তান থেকে সরিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) বাকি অংশ। ফলে অনিশ্চয়তা জেগেছে চলতি মাসে বাংলাদেশ দলের পাকিস্তানের সম্ভাব্য সফর নিয়েও।
উল্লেখ্য, এই মাসের শেষের দিকে পাকিস্তানে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দলের সফর করার কথা রয়েছে। এই সিরিজটি আইসিসির এফটিপির অংশ, তাই বিসিবির পক্ষে আগেভাগে এই সিরিজ বাতিল করাট সহজ সিদ্ধান্ত হবে না।
তার আগে পিএসএল সরিয়ে নেওয়ার এই ঘোষণা আসল পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের দেওয়া বিবৃতির পর, যেখানে তিনি খেলোয়াড়দের ওপর হামলা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ২৮টি ভারতীয় ড্রোন ‘নিষ্ক্রিয়’ করেছে, যার মধ্যে একটি রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে কাছে ধরা পড়ে। তিনি এও জানান, পাকিস্তান ও বিদেশি ক্রিকেটারদের লক্ষ্য করে এটি ছিল প্রতিবেশী দেশ ভারতের ইচ্ছাকৃত এক হামলা।
এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) জানিয়েছে, পিএসএল-এর বাকি ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন সূচি পরে জানানো হবে।
এই সিদ্ধান্তটি পিসিবি চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভির সাথে পিএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের একাধিক বৈঠকের পর নেওয়া হয়েছে। নাকভি বিবৃতিতে বলেছেন, “খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
গত বৃহস্পতিবার পিএসএলে করাচি কিংস এবং পেশোয়ার জালমি রাওয়ালপিন্ডিতে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু স্টেডিয়ামের কাছে একটি ড্রোন পড়ার পর ম্যাচটি বাতিল করা হয়।
এবারের পিএসএলে ৩৭ জন বিদেশি খেলোয়াড় অংশ নিয়েছেন। যাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানের খেলোয়াড়।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনার কারণে পিএসএল খেলার জন্য পাকিস্তানে অবস্থান করা বিদেশি খেলোয়াড়রা দেশটিতে আর থাকতে চাননি। ফলে বাধ্য হয়েই পিসিবিকে ভেন্যু লিগ স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
গত মাসে কাশ্মীরে এক সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে বুধবার পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় ভারত। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এর পাল্টা জবাব হিসেবে পাকিস্তান সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণ করে। উভয় দেশই বৃহস্পতিবার একে অপরের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলার অভিযোগ তোলে।
ইএসপিএন তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিদেশী খেলোয়াড়রা ইতিমধ্যেই পাকিস্তান থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছেন। তবে বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা দেশে ফিরে আসতে চাচ্ছেন বলেই খবর। আরব আমিরাতে কবে থেকে সেখানে বাকি ম্যাচগুলো শুরু হবে, তা জানা যায়নি এখনও।
পিএসএল ফের শুরুতে কোনো ধরণের বিলম্ব হলে তা পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সূচিতেও বড় রকমের প্রভাব ফেলতে পারে, যেখানে সবার আগে প্রশ্নের মুখে পড়বে বাংলাদেশের সাথে সিরিজ।
আগামী ২৫ মে ফয়সালাবাদে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শুরুর কথা রয়েছে। তবে ডেইলি সানকে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, এই মুহূর্তে পাকিস্তান সফরের সম্ভাবনা নিয়ে তারাও চিন্তিত।
টেস্ট ফর্মটা ভালো না হলেও অধিনায়ক হওয়ায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলার ছিল জোর সম্ভাবনা৷ তবে সময়ের ডাকে সাড়া দিলেন রোহিত শর্মা৷ লাল বলের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
গত বছর জুড়েই দেশে ও দেশের বাইরে টেস্টে ভীষণ মলিন পারফরম্যান্স ছিল রোহিতের। এক-দুটি ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন বটে, তবে ব্যাটে ছিল না সেই চেনা ধার। ফর্ম নিয়ে প্রবল চাপের মুখে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অধিনায়ক হয়েও নিজেকে সরিয়ে নেন একাদশ থেকে। এরপর রঞ্জি ট্রফিতে খেলায় আশা ছিল ইংল্যান্ড সিরিজ খেলার।
তবে বুধবার ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে রোহিত জানিয়েছেন, তার টেস্ট অধ্যায় শেষ। “আমি আপনাদের সবাইকে জানাতে চাই যে আমি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি। সাদা পোশাকে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা ছিল আমার জন্য সর্বোচ্চ সম্মান। বছরের পর বছর ধরে আপনাদের ভালবাসা এবং সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। আমি ওয়ানডেতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে যাব।”
গত বছর ভারতকে টি -টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতিয়ে রোহিত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন। এই বছরের শুরুতে তার অধিনায়কত্বে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জেতে ভারত। তবে গেল বছর টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে তার রেকর্ড ভালো ছিল না। ভারত নিউজিল্যান্ডের কাছে হোম টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হয়। এরপর বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিও ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় ভারত। যদিও পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনি নেতৃত্ব দেন তিন ম্যাচে। ওপেনিং ছেড়ে ব্যাট করেন মিডল অর্ডারে।
শেষটা মলিন হলেও টেস্টে রোহিতের অভিষেকটা ছিল স্মরণীয়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেন ১৭৭ রান। ক্যারিয়ারের শুরুর বছরগুলোতে মিডল-অর্ডারে ব্যাটিংয়ের পর ২০১৯ সালে টেস্টে ওপেনার হিসেবে যাত্রা শুরু হয় ডানহাতি এই ব্যাটারের।
বিরাট কোহলি ২০২২ সালে টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করার পরে রোহিত ভারতের লাল দলের কাপ্তান হন। তার অধিনায়কত্বে ভারত ২০২৩ সালে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলেছিল।
রোহিত খেলেছেন মোট ৬৭টি টেস্ট। রান করেছেব ৪ হাজার ৩০১। গড় ৪০.৫৭। সেঞ্চুরি ১২টি আর ফিফটি ১৮টি।
খুব দ্রুতই বদলে যাওয়া ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব পড়ছে দুই দেশের মধ্যকার অন্যান্য সম্পর্কে। সবশেষ পাকিস্তানে ভারত হামলা চালানোর পর দেশটির নিরাপত্তা নিয়ে জেগেছে সংশয়, যেখানে স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসছে পিএসএল খেলতে অবস্থান করা বিদেশী খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার বিষয়টি। বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানাকে নিয়ে তাই উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খেলোয়াড়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করা তাদের কাছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে এখন।
এক বিবৃতিতে বুধবার বিসিবি জানিয়েছে, পাকিস্তানে গত ২৪ ঘন্টা ধরে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা। বর্তমানে পিএসএলের অংশ বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে বোর্ড অগ্রাধিকার দিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের সাথে ভারতের খেলাই উচিত না : গম্ভীর |
![]() |
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লেগ স্পিনার রিশাদ ও নাহিদ রানার সাথে বোর্ড নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ব্যক্তিগতভাবেও সেখানকার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। দুই বাংলাদেশি ক্রিকেটারের নিরাপত্তা ও মানসিক শান্তি নিশ্চিত করতে পিএসএলের সিইও সালমান নাসির এবং রিশাদের সাথে সরাসরি কথাও বলেছেন।
বিসিবি বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এবং ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাথে সমন্বয় করে যোগাযোগ রাখছে, যা সামনেও অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার রাতে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের শিয়ালকোট, ভাওয়ালপুর, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরসহ ছয়টি স্থানে হামলা চালায় ভারত। এর প্রতিশোধ হিসেবে বুধবার ভোর রাতে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। এরপর করাচিতে সব অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়।
আরও পড়ুন
অল্প সাজাতেই পার পেলেন রাবাদা |
![]() |
দুই দেশের মধ্যকার এই যুদ্ধময় আবহের সূত্রপাত গত ২২শে এপ্রিল। সেদিন কাশ্মীরের পহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন। এরপর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক ক্রমেই তিক্ত হয়ে উঠেছে। বুধবারের হামলার পর তাই পিএসএলে অংশ নেওয়া খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার দিকটি বড় এক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ব জুড়েই।
সাবেক খেলোয়াড়ের সাথে রয়েছে রাজনৈতিক পরিচিতিও। এরপরও ভারত জাতীয় দলের প্রধান কোচ হওয়ায় পাকিস্তানের সাথে দেশটির চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে তার অবস্থান নিরপেক্ষ থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছিল। তবে সেই পথে হাঁটলেন না সাবেক এই ওপেনার। সাফ জানিয়ে দিলেন, প্রতিবেশী দেশের সাথে আপাপত কোনো টুর্নামেন্টেই খেলার পক্ষে নন তিনি।
গত ২২শে এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন। এরপর থেকে ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি শক্ত পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করা, আটারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ রাখা এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের রাশ টেনে ধরা। স্বাভাবিকভাবেই এতে চলে আসছে এই বছরের এশিয়া কাপের প্রসঙ্গ, যেখানে মুখোমুখি হওয়ার কথা রয়েছে দুই দেশের।
আরও পড়ুন
অল্প সাজাতেই পার পেলেন রাবাদা |
![]() |
গত মঙ্গলবার দিল্লিতে এবিপির এক অনুষ্ঠানে ভারতের নিরপেক্ষ ভেন্যুতে পাকিস্তানের সাথে খেলা চালিয়ে যাওয়া উচিত কিনা, এই প্রশ্নে সপাটে ব্যাট চালান গম্ভীর।
“এই ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত উত্তর হল একেবারেই না। যতক্ষণ পর্যন্ত না এই (সন্ত্রাসবাদ) বন্ধ হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনও সম্পর্কই থাকা উচিত নয়।”
২০১৩ সালের জানুয়ারির পর পাকিস্তানের সাথে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা থেকে বিরত রয়েছে ভারত। এই দুই দল এরপর থেকে কেবল খেলে আসছে এশিয়া কাপ এবং আইসিসি ইভেন্টেই। এই বছরের শুরুতে দুই দেশ সবশেষ দুবাইয়ে মুখোমুখি হয়েছিল আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, যে টুর্নামেন্ট খেলতে পাকিস্তানে যেতে রাজি হয়নি ভারত। সামনে ছেলেদের এশিয়া কাপ, নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৬ সালে ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফের দুই দেশের একে অপরের মুখোমুখি হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন
খালেদ-তানভীরদের তোপে প্রথম ম্যাচে ‘এ’ দলের বড় জয় |
![]() |
ভারতের হয়ে ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতা গম্ভীর অবশ্য মনে করেন, নিকট ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সাথে না খেলাই উত্তম।
“দেখুন, শেষ পর্যন্ত আমরা তাদের সাথে খেলব কি খেলব না, এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। আমি আগেও বলেছি, কোনো ক্রিকেট ম্যাচ, বলিউড বা দুই দেশের মধ্যকার অন্য যেকোনো কর্মকাণ্ড ভারতীয় সৈন্য এবং ভারতীয় নাগরিকদের জীবনের চেয়ে কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নয়। এসব ম্যাচ চলতেই থাকবে, সিনেমাও তৈরি হবে, গায়করা এখানে এসে পারফর্ম করে যাবেন… তবে প্রিয়জনকে হারানোর সাথে কিছুরই তুলনা চলে না। সরকার যেই সিদ্ধান্ত নেবে, আমাদের এতে পুরোপুরি সম্মত থাকা উচিত।”