বাংলাদেশের ক্রিকেটের শুরু থেকেই দলের শক্তি জায়গা হয়ে এসেছে স্পিন বিভাগ। বরাবরই তাই বাংলাদেশ দলে দেখা গেছে স্পিনারদের আধিক্য। হাতেগোনা কয়েকজন পেসার অবশ্য তার মাঝেও আলো ছড়িয়েছেন। এখন অবশ্য যুগ বদলেছে। এখন জাতীয় দলে দাপট দেখাচ্ছেন পেসাররাই, যার সবশেষ সংযোজন নাহিদ রানা। গতিময় এই পেসার বলেছেন, বাংলাদেশের সব পেসারকে আদর্শ মেনেই পথচলায় এগিয়েছে তার।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় তরুণ যে পেসাররা উঠে আসেন বা আসছেন, তাদের জন্য দেশের পেসারদের মধ্যে অনুপ্রেরণা খুঁজে নেওয়াটা একটু কঠিনই। কারণ, হাতেগোনা এক-দুইজন বাদে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শীর্ষ মানের পেসার বাংলাদেশ দলে ধারাবাহিক দেখা যায়নি। ফলে উঠতি পেসারদের অনেকেরই আইডল থাকেন ভিনদেশী কোর্টনি ওয়ালস, শোয়েব আক্তার, ব্রেট লি, গ্লেন ম্যাকগ্রাথ, ডেল স্টেইনরা।
তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে নাহিদ জানিয়েছেন, পূর্বসূরিরাই তাকে পেসার হতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। “সত্যি বলতে আমি কাউকে সেভাবে ফলো করি না। তবে বাংলাদেশে আমার সব পেস বোলারদেরই আমার ভালো লাগে। কারণ তাদের খেলা দেখেই আমি বড় হয়েছি। তাই নির্দিষ্ট কেউ একজন নেই। বাংলাদেশের সব পেসারদেরই আমার পছন্দ, যারা আমার সিনিয়র।”
আরও পড়ুন: কাউন্টিতে প্রথম দিনে সাকিবের ৩ স্পেল, ৪ উইকেট
সেটা না হলেও সব পেসারদেরই একজন আইডল থাকেন, যার মত তিনি হতে চান। তবে এখানেও ব্যতিক্রম নাহিদ। “আসলে আমি কারও মত হতে চাই না। আমি নাহিদ রানা, বাংলাদেশের নাহিদ রানাই হতে চাই।”
টেস্টে আগে অভিষেক হলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে হওয়া সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজ দিয়েই মূলত শোরগোল ফেলে দিয়েছেন নাহিদ। পেসারদের দেশ পাকিস্তানে গিয়ে তাদেরই দেশের ব্যাটাদের গতি দিয়ে রীতিমত খাবি খাইয়েছেন এই ডানহাতি পেসার। কিছু স্পেলে ধারাবাহিকভাবে বল করেছেন ঘণ্টায় ১৪৫ কি.মি গতিতে। কিছু ডেলিভারি পার করেছে ১৫০ কি.মি, বাংলাদেশের একজন পেসারের জন্য যা স্বপ্নের সমতুল্যই ছিল এতদিন।
তবে নিরাবেগ নাহিদ বললেন, বেশি গতিতে বল করার আলাদা ভাবনা নিয়ে বোলিং করেননি তিনি। “এটা কখনও অনুভব করিনি যে আমাকে (ঘণ্টায়) ১৫২ কি.মি গতিতে বোলিং করতে হবে। একটা জিনিসই সবসময় মাথায় ছিল যে আমাকে প্ল্যান যেটা দেওয়া হয়েছে, সেই অনুযায়ী বোলিং করেছি বা আমার নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করেছি।”
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ে বড় অবদান ছিল নাহিদের। দুইবার আউট করেছেন পাকিস্তানের সেরা ব্যাটার বাবর আজমকে আর দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট নেওয়া যা স্পেল উপহার দিয়েছেন, তা অনেকটাই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য।
দলের জয়ে অবদান রাখতে পারাটাই নাহিদকে বেশি তৃপ্তি দিচ্ছে। “স্বপ্নের মত না আসলে। কিন্তু আমি যেটা আশা করেছিলাম, বা দল আমার কাছে যা আশা করেছিল, সেটা করতে পেরেছি। দেশ ছাড়ার আগে বলেছিলাম দেশের জন্য কিছু করতে চাই। সেটা করতে পেরেছি তাই ভালো লাগছে।”
তৃতীয় দিনের খেলা শেষে মুমিনুল হক আশা করছিলেন ২৭০ থেকে ৩০০ রানের লিড নেওয়ার। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে তার এমন প্রত্যাশা ভুল ছিল না। তবে ব্যাটারদের সেই দায়িত্বটা তো বুঝতে হবে এবং মাঠে করে দেখাতে হবে। এর কিছুই হলো না চতুর্থ দিনে। ভালো অবস্থানে থেকেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় দুইশর কম টার্গেট দিতে পারল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। পুরো ম্যাচে হতাশ করা বোলাররাও পারলেন না বিশেষ কিছু করে দেখাতে। রান তাড়ায় কিছুটা নাটকীয়তা জন্ম দেওয়ার পর রেকর্ড গড়ে স্মরণীয় এক জয় তুলে নিল জিম্বাবুয়ে।
সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে ১৭৪ রানের টার্গেটে জিম্বাবুয়ে জয় তুলে নিয়েছে ৩ উইকেটের। দুই ম্যাচের সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার শান্ত ও জাকের আলি অনিকের কাছে দলের আশা ছিল বড় একটা জুটির, যা দলকে নিয়ে যেতে পারত সুবিধাজনক অবস্থায়। তবে একরাশ হতাশারই জন্ম দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দিনের দ্বিতীয় ডেলিভারিতেই তাকে আউট করেন ব্লেসিং মুজারাবানি। বাউন্সারে টাইমিং না করতে পেরে লং লেগে ক্যাচ তুলে ৬০ রানে থামে শান্তর ইনিংস।
বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ভীতি সঞ্চার করার মুজারাবনি এরপর দেখা পেয়ে যান ফাইফারের। স্রেফ ১১ রানেই সাজঘরের পথ ধরতে হয় মেহেদি হাসান মিরাজকে। তাইজুল ইসলামও অল্পে ফিরলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে সেখান থেকে লড়াই চালান জাকের ও হাসান মাহমুদ মিলে।
ওভারের পর হাসান কাটিয়ে দেন ব্লক করে। আর অন্যপ্রান্তে সুযোগ বুঝে রান বের করা জাকের আলি তুলে নেন ফিফটি। তবে হাসানের ওপর অতিরিক্ত বিশ্বাস রাখার কারণেই কিনা, একটা পর্যায়ে গিয়ে তাকে ওভারের পাঁচটা ডেলিভারিই খেলার ভার দিয়ে দেন জাকের। শেষ পর্যন্ত সেটাই কাল হয় দলের জন্য।
ওয়েলিংটন মাসাকাদজার পরপর দুই বলে দুই উইকেট পতনের পর দ্রুত রান বের করার চেষ্টায় ৫৮ রানে থামতে হয় দারুণ এক ইনিংস খেলা জাকেরকে। ৭২ রানে ৬ উইকেট নেন মুজারাবানি।
চতুর্থ ইনিংসে ১৭৪ বা তার বেশি রান তাড়া করে টেস্ট জয়ের রেকর্ড জিম্বাবুয়ের ইতিহাসে নেই। সেই কারণেই হয়ত ব্যাটিং সহায়ক এই উইকেটেও কিছুটা জয়ের আশা ছিল বাংলাদেশ শিবিরে। তবে সেটা মিলিয়ে যেতে সময় লাগেনি খুব একটা। প্রথম দশ ওভারে পেসার ও স্পিনাররা কেউই পারেননি ব্যাটারদের চাপে রাখতে।
উল্টো জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার রান করতে থাকেব ইতিবাচক ব্যাটিংয়েই। উইকেটের জন্য মরিয়া হওয়ার কারণেই কিনা, প্রতি ওভারেই দেখা মেলে বাজে ডেলিভারির। ফলে চার-ছক্কায় সহজেই রানের চাকা সচল রাখেন ব্যাটাররা। আর এতে দ্রুতই ম্যাচের লাগাম একেবারেই চলে যায় জিম্বাবুয়ের হাতে।
অবশেষে দলীয় শতক থেকে পাঁচ রান দূরে থাকতে আসে ব্রেকথ্রু। মিরাজের বলে মিড অফে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন বেন কারান। তবে তার আগে উপহার দেন ৪৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। স্পেলে শুরু থেকেই এলোমেলো বোলিং করা আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম অন্যপ্রান্তে ছন্দ খুঁজে পান নিক ওয়েলচকে ফিরিয়ে। ২ উইকেটে ১১৭ রান নিয়ে চার বিরতিতে যায় জিম্বাবুয়ে।
সেখান থেকে ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে দরকার ছিল দ্রুত কয়েকটি উইকেট। আর মিরাজের হাত ধরে সেটা চলেও আসে। প্রথমে সিন উইলিয়ামসকে শিকারের পর ইনিংসের ৩৩তম ওভারে এনে দেন বড় উইকেট। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫৮ রান করা ব্রায়ান বেন্নেট। ১২৮ রানে প্রতিপক্ষের ৪ উইকেট তুলে কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরার আভাস জাগে বাংলাদেশ দলে।
সেই পালে আরও হাওয়া দেন তাইজুল। লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন অভিজ্ঞ ক্রেইগ এরভিন। পরের ওভারে ফের উইকেট। দারুণ এক টার্নিং ডেলিভারিতে নায়াশা মায়াভোকে ক্লিন বোল্ড করে ইনিংসে চতুর্থ উইকেটের দেখা পান মিরাজ।
ক্রমেই জমা ওঠে ম্যাচে এরপর বাংলাদেশকে কিছুটা চাপে ফেলে ওইয়েলিংটন মাসাকাদজা। তাইজুলের পরপর দুই ওভারে ছক্কা ও চার মেরে অনেকটাই চাপ সরান। জিম্বাবুয়ের দরকার যখন আর মাত্র ১৩ রান, ঠিক তখন ফের বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে হাজির হন মিরাজ। মাসাকাদজাকে বোল্ড করে প্রাণ ফেরার স্বাগতিক শিবিরে।
তবে ওই ওভারেই চার মেরে জিম্বাবুয়েকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান রিচার্ড এনগারভা। তাইজুলের করা পরের ওভারের প্রথম বলেই আসে আরেকটি চার। খানিক বাদে ওয়েসলি মাধেভেরের আরেকটি বাউন্ডারিতে ঐতিহাসিক এক জয় নিশ্চিত হয় জিম্বাবুয়ের। বিফলে যায় মিরাজের ৫৪ রানে ৫ উইকেটের দারুণ এক স্পেল।
ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের ঘটনায় অনেকটা সময় ধরেই আইন-আদালতের মধ্য দিয়ে যাওয়া মাইকেল স্লেটার পেলেন বড় শাস্তিই। সহিংসতার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় চার বছরের স্থগিত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ওপেনার।
তবে ৫৫ বছর বয়সী স্লেটারকে এযাত্রায় আর জেলে যেতে হচ্ছে না। কারণ, তিনি এরই মধ্যে জামিন না পাওয়ায় ২০২৪ সাল থেকে এক বছরেরও বেশি সময় কারাগারে কাটিয়েছেন।
১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৭৪টি টেস্ট খেলা স্লেটার দুটি সাধারণ আক্রমণ, একজনকে অবৈধভাবে আঘাত করা, একজনকে শারীরিক ক্ষতির জন্য আক্রমণ করা, একটি চুরির ঘটনা এবং দুটি শ্বাসরোধের অভিযোগে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন।
রায়ের বিচারক গ্লেন ক্যাশ মঙ্গলবার স্লেটারকে বলেন, “আপনি যে একজন মাদকসেবী, তা স্পষ্ট। মদ্যপান করাটা আপনার একটা অভ্যাস হয়ে গেছে, আপনার পুনর্বাসন সহজ হবে না।”
২০২৪ সালের এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের একটি আদালতে জামিন আবেদন নাকচ হওয়ার পর সেখানেই স্লেটার অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর থেকেই তিনি পুলিশি হেফাজতে ছিলেন এবং এক বছরেরও বেশি সময় কাটান কারাগারেই।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আট বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে স্লেটার ৫ হাজার ৩১২ রান রান করেন। ২০০৪ সালে অবসর নেওয়ার পর তিনি ধারাভাষ্যকার হিসেবে নতুন অধ্যায় শুরু করেন। প্রথমে যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ৪-এ এবং পরে অস্ট্রেলিয়ার সেভেন নেটওয়ার্কে দেখা যায় তাকে, যেখান থেকে তাকে ২০২১ সালে বাদ দেওয়া হয়।
২০২২ সালে সিডনির একটি আদালত স্লেটারকে দুটি সাধারণ আক্রমণ এবং একজন নারীকে ইভটিজিংয়ের চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। শাস্তি হিসেবে তাকে দুই বছরের কমিউনিটি কারেকশনস আদেশে দণ্ডিত করা হয়।
লিড বাড়িয়ে নেওয়ার কাজটা প্রথম সেশনে কঠিন হয়ে গেল বৈরী আবহাওয়ায়। কিছুটা সহায়ক কন্ডিশনে এরপর দ্রুত কয়েকটি উইকেটে চাপ তৈরি করল জিম্বাবুয়ে। যখনই একটা জুটি জমে যাওয়ার পথে, তখনই আসল আঘাত। মুমিনুল হক ফিফটি মিস করলেও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে পথ দেখালেন দারুণ এক ইনিংসে। বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে তাই কিছুটা এগিয়েই থাকল স্বাগতিকরা।
সিলেটে আগেভাগেই শেষ হয়ে যাওয়া তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের লিড ১১২ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে স্কোর দাঁড়িয়েছে ৫৭ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৪। ক্রিজে আছেন শান্ত (৬০*) ও জাকের আলি অনিক (২১*)।
বৃষ্টি ও ভেজা আউটফিল্ডের কারণে ভেসে যায় সকালের সেশন। ১ উইকেটে ৫৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশনে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। আগের দিন সংগ্রাম করে ব্যাট করা মাহমুদুল হাসান জয় পারেননি বেশিক্ষণ টিকতে। ব্লেসিং মুজারাবানির বাউন্সার তার গ্লাভলে লেগে জমা হয় প্রথম স্লিপে থাকা ফিল্ডারের হাতে।
৬৫ রানের জুটিতে এরপর বাংলাদেশকে আশা দেখান শান্ত ও মুমিনুল। দুজনেই সমান গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ফিফটির দিকে। লিডও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ৬৫ রানের জুটি যখন ক্রমেই জমে যাচ্ছিল, তখনই আঘাত হানেন ভিক্টর নিয়াউচি। ৬ বাউন্ডারিতে ৪৭ রানে থামান মুমিনুলকে।
চা বিরতির ঠিক আগে ফের বাংলাদেশের চাপ বাড়ান মুজারাবানি। প্রথম ইনিংসের মত এই দফায়ও মাত্র চার রান করে ক্যাচ আউটে শেষ হয় দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের ইনিংস।
তবে একপ্রান্ত আগলে ২৬ রানে জীবন পাওয়া শান্ত তুলে নেন ফিফটি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে সাবধানী ব্যাটিং করে জাকের আলি। বৃষ্টির কারণে আগেভাগে খেলা শেষ হওয়ার আগে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৩৯ রান।
চলতি বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের ব্যস্ততা খুব একটা নেই। তারপরও বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বেড়ে যাওয়ায় ২০২৫ সালে বেতন এবং ম্যাচ ফি থেকে খেলোয়াড়দের আয়ের অঙ্ক দুই কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এই বছরে আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামে (এফটিপি) থাকা দ্বি-পাক্ষিক সফরসূচিতে ৬ টেস্ট, ১০ ওডিআই এবং ১২ টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা বাংলাদেশের। পাশাপাপাশি সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে গ্রুপ পর্বের বাধা বেরুতে না পারলেও ৩টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
নির্ধারিত ম্যাচগুলোর সব ক'টি খেলতে পারলে একজন ক্রিকেটার শুধু এই খাত থেকে আয় করবেন ১ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা! এই বছরটিতে বেতন এবং ম্যাচ ফি থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আয়ের হাতছানি ছিল অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন আহমেদের সামনে। তবে 'এ' প্লাস গ্রেডে মাসে ১০ লাখ টাকা বেতনের ক্যাটাগরিতে থাকা একমাত্র এই ক্রিকেটার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ মিস করায় তার আয়ের অঙ্ক এবার হচ্ছে না প্রত্যাশিত।
আর শুধুমাত্র লাল বলের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থেকেও বেতন-ম্যাচ ফি খাত থেকে সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হকের আয় ছাড়িয়ে যাবে কোটি টাকা।
আগামী বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ততা বাড়ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। ফলে বেতন-ম্যাচ ফি খাত থেকে চুক্তিবদ্ধ এক একজন ক্রিকেটারের আয়ের হতে পারে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। আইসিসির এফটিপিতে ২০২৬ সালে ৮ টেস্ট, ২০ ওডিআই, ১২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বরাদ্দ আছে বাংলাদেশ দলের। এর সঙ্গে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারত-শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ৪ ম্যাচ এবং পরবর্তী ধাপে উত্তীর্ন হলে ক্রিকেটারদের আয়ের সীমা ছুঁয়ে ছাড়িয়ে যাবে অতীতের সব রেকর্ডকে।
বর্ধিত ম্যাচ ফি'র হিসাবে কোনো ক্রিকেটার ২০২৬ সালে সবকটি ম্যাচ খেলতে পারলে বছর শেষে ম্যাচ ফি'র অঙ্কটা দুই কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই করবে। এর সাথে বেতন থেকে বছরে কারো কারো কোটি টাকা আয়ের সুযোগ তো আছেই। এর বাইরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) এবং বিদেশে ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট থেকে মোটা অঙ্ক আয়ের সুযোগ তো থাকছে।
এক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মধ্যে বছরে আয়ের হিসেবে পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এবার পালা সাকিবের উত্তরসূরিদের। নিজেকে ফিট রেখে আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে মগ্ন থাকলে তাসকিন, নাজমুল হোসেন শান্তদের আয়ের অঙ্ক পাঁচ কোটি টাকা ছুঁয়ে যাওয়াও অসম্ভব কিছু নয়।
তবে বিসিবির চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের বেতন এবং ম্যাচ ফি জ্যামিতিক হারে বেড়ে যাওয়াকে স্বাভাবিক বলছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট।
“ক্রিকেটারদের বেতন এবং ম্যাচ ফি বাড়িয়ে প্রশংসা পাচ্ছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক ভাই। তবে আমি এটাকে স্বাভাবিকই বলবো। কারণ, বাংলাদেশের ক্রিকেটের ব্রান্ড ভেল্যুটা জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জন্য বেড়েছে। আইসিসি,এসিসি বিভিন্ন খাত থেকে বিসিবির আয়ের মাধ্যম ক্রিকেটাররাই।”
চোটের কারণে চলতি বছর অনেকটাই মিস করলেও গত বছরটা কাটিয়েছেন দুর্দান্ত। তার একটা স্বীকৃতি পেলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। উইজডেন ক্রিকেটার্সের আলমানাকের ২০২৫ সংস্করণের ছেলেদের লিডিং ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের এই তারকা পেসার।
বুমরাহ ২০২৪ সালে ইতিহাস গড়েন প্রথম টেস্ট বোলার হিসেবে ২০-এর কম গড়ে ২০০ উইকেটে শিকার করে। উইজডেনের সম্পাদক লরেন্স বুথ তাকে ‘অনায়াসেই বছরের সেরা তারকা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। গেল বছর টেস্টে বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭১টি উইকেট নেওয়া বুমরাহ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়েও।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বছরের শেষের দিকে বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে বুমরাহ হাজির হন সেরা ছন্দে। চার টেস্টে মাত্র ১৩.০৬ গড়ে নেন ৩১ উইকেট।
বুমরাহর স্বদেশী স্মৃতি মান্ধানা উইজডেনের লিডিং নারী ক্রিকেটার হয়েছেন। ২০২৪ সালে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ভারত ওপেনার ১ হাজার ৫৫৯ রান করেন, যা মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্যালেন্ডার বছরে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড। ওয়ানডেতে করেন চারটি শতক, যা আরেকটি রেকর্ড। গত জুনে টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের দশ উইকেটে জয়ের ম্যাচে খেলেন ১৪৯ রানের ইনিংস।
উইজডেনের লিডিং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার খেতাব জিতেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে ব্যাটার নিকোলাস পুরান।
উইজডেনের সবচেয়ে পুরনো পুরষ্কার - বর্ষসেরা ক্রিকেটার, যা একজন খেলোয়ার কেবল একবারই জিততে পারেন ইংলিশ হোম সিজনে পারফরম্যান্সের জন্য, সেখানে আছেন সারের তিন ক্রিকেটার গাস আটকিনসন, জেমি স্মিথ এবং ড্যান ওয়ার্লাল। আর দুজন হ্যাম্পশায়ারের লিয়াম ডসন ও ইংল্যান্ডের নারী দলের স্পিনার সোফি ইক্লেস্টোন।
বছরের সেরা পারফরম্যান্সের জন্য উইজডেন ট্রফি জিতেছেন নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে তিনি পুনেতে দ্বিতীয় টেস্টে ১৩ উইকেটের নেন এই বাঁহাতি স্পিনার, যা নিউজিল্যান্ডকে ভারতকে ৩-০ ব্যবধানে হারাতে রাখে অবদান।
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৬ দিন আগে
৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৭ দিন আগে
২০ দিন আগে
২১ দিন আগে
২১ দিন আগে