ঠিকঠাক টাইমিং, দারুণ শব্দ... ব্যাটার বিরাট কোহলি। অফ ফর্ম কিংবা ৩৬ ডাকতে থাকা কোহলির ব্যাটিং কাছ থেকে দেখতে সবসময় সুন্দর। কানপুরের উত্তাপ দুপুরেও যখন দাঁড়িয়ে থাকাই দায়, তখনও তাই কোহলির ব্যাটিং দেখা যায়।
একটু ভিন্ন প্রসঙ্গ তবে ঘুরেফিরে আসবেনই এই কোহলি৷ হোর্হে ভালদানো, অনেকেই তাকে ডাকে, দ্য ফিলোসফার অব ফুটবল নামে৷ ২০১৪ সালের নভেম্বরে লিওনেল মেসিতে মুগ্ধ হয়ে এই আর্জেন্টাইন ভদ্রলোক বলেছিলেন, “গোটা দুনিয়ার সেরা ফুটবলার মেসি৷ আর দ্বিতীয় সেরা ফুটবলার হচ্ছে ইনজুরিতে থাকা মেসি৷ তার কাছাকাছি কেউ নেই…” - কোহলিও অনেকটা এমন। যার ব্যাটিং দেখাটা সবসময় দারুণ এক অভিজ্ঞতা।
হুট করে তীব্র নিবেদন আর অনুশীলনের কোহলিকে দেখে বলাই যায়, এই সময়ে এখনো দুনিয়া সেরা ব্যাটসম্যান কোহলি৷ আর দ্বিতীয় সেরা ক্রিকেটার অফ ফর্মের কোহলি৷ যার আশেপাশে আসলে কেউ নেই।
প্রশ্ন করতেই পারেন, আদতেই কী অফ ফর্ম? টেস্টের শেষ চার ইনিংসে ফিফটি না পাওয়া কোহলিকে অফ ফর্মের বলা যায়? পোর্ট অব স্পেনে রান আউটের আগে ১৩১, সেঞ্চুরিয়নে ৩৮ এর পরে ৭৬... এরপরে ৪৬, ১২ আর বাংলাদেশের সাথে চেন্নাইয়ে ৬ ও ১৭।
সাম্প্রতিক সময়ে স্পিনটা বেশ ভোগাচ্ছে কোহলিকে। একটা সময়, স্পিনে অপ্রতিরোধ্য কোহলি এখন স্পিনেই ভুগছে বেশি। বয়স? নাকি অফ ফর্ম?
অবশ্য যখন দুপুরে ব্যাটিং অনুশীলন করতে আসলেন, তখনই খবর পাওয়ার কথা কোহলির। আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে সেরা দশেই নেই ভারতের এই তারকা ব্যাটার। বাংলাদেশের সাথে দুই ইনিংসে দ্রুত ফেরায় টেস্টে সেরা ১০ ব্যাটারের নাম থেকে ছিটকে গেছেন বর্তমান সময়ের ক্রিকেটের পোস্টার বয়।
কোহলির বর্তমান অবস্থান ১৩ তে। সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটারের সাম্রাজ্যে ধ্বস। ৬ বছর পর নেমে গেছেন সেরা দশের বাইরে। ফিরতেই চাইবেন কোহলি, ৩৬ ডাকতে থাকলেও।
কোচিং ক্যারিয়ারের একেবারের শুরুর দিনগুলোতে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সহকারী ও ফিল্ডিং কোচ। এরপর দীর্ঘ একটা সময় ছিলেন স্রেফ ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচিং নিয়েই। অভিজ্ঞতায় পোক্ত হয়ে মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন সম্প্রতি আবার ফিরেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি)। কাজ করবেন সহকারী কোচ হিসেবে। অভিজ্ঞ এই কোচ মনে করেন, জাতীয় দলের সাথে তার কিছু কাজ এখনও বাকি রয়ে গেছে।
প্রথম দফায় ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের সাথে কাজ করেন সালাহউদ্দিন। সেই সময়ে তার অধীনে ছিলেন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা। এরপর নানা সময়ে বাংলাদেশ দলে তার যুক্ত হওয়ার খবর আসলেও তা আর বাস্তবে রুপ নেয়নি। মাঝের এই সময়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সালাহউদ্দিন দুহাতে সাফল্যের দেখা পেয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ও পরীক্ষিত কোচও তিনি। এরপরও জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ খুঁজে পাচ্ছেন তিনি।
রোববার সাংবাদিকদের সাথে এক আলাপচারিতায় সালাহউদ্দিন শুনিয়েছেন দেশের ক্রিকেটের জন্য অবদান রাখার তাগিদের কথা। “আমার কাছে মনে হয়, এখন সঠিক সময়। আমি হয়তো কোচিং আর বেশি দিন নাও করাতে পারি। হয়ত আর চার-পাঁচ বছর। তাই আমার মনে হয়, এটাই সেরা সময়। আমার দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারের শেষে আমি যদি আরও একটা প্রজন্মকে সাহায্য করতে পারি, তাহলে সেটা আমার নিজের কাছেও ভালো লাগবে। আপনি শুধু সব জেনে গেলেন, কিন্তু কোনো প্রদীপ জ্বালালেন না, সেটা তো ঠিক হবে না। এই কাজটা যদি ভালোভাবে করতে পারি, কিছুটা সাহায্য হলেও আমি মনে করি সেটা ভালো হবে।”
সালাউদ্দিনের সাথে বিসিবি চুক্তি করেছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত। সালাহউদ্দিনের দলের সাথে কাজটা শুরু হবে চলতি মাসের ক্যারিবিয়ান সফর দিয়ে। সেটা শেষ হতেই আবার চলে আসবে বিপিএলের ব্যস্ততা। ফলে সব মিলিয়ে কাজ করার জন্য তিনি পাবেন কিছুটা কম সময়ই।
তবে অভিজ্ঞতা থেকে এর মধ্যেই যতোটা সম্ভব খেলোয়াড়দের শাণিত করতে চান সালাহউদ্দিন। “চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত সময় যতটুকুই হোক না কেন, আমি যদি কারও জীবনে সামান্যতম প্রভাব রাখতে পারি, তাহলে সেটাই সার্থকতা হবে বলে মনে করি। আমি হয়তো রাতারাতি অনেক পরিবর্তন আনতে পারব না। কিন্তু আমার একটা কথা, বা একটা কিছুতে যদি তার জীবনে কিছু পরিবর্তন হয়, তাহলে সেটাই আমার অনেক বড় সার্থকতা হবে।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরুর কথা থাকলেও এরই মধ্যে কয়েকজন টেস্ট দলের খেলোয়াড়ের সাথে অনুশীলনে দেখা যাচ্ছে সালাহউদ্দিনকে। তার ইচ্ছা, সব উপায়েই সহকারী কোচ হিসেবে দলকে সাহায্য করা। “চেষ্টা করব আমাদের ছেলেরা যেন আরেকটু আত্মবিশ্বাসী হয়। সেই সাথে আমাদের যে বিদেশি কোচরা আছে, তাদের সাথে যোগাযোগটা যেন আরেকটু ভালো সেদিকে যায় সেই লক্ষ রাখব।”
রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে দশ বছরের বেশি সময় ধরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা থেকে বিরত আছে ভারত ও পাকিস্তান। ফলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই দেখার অন্যতম মূল ও প্রধান মঞ্চ হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন আইসিসি ইভেন্ট। ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে না আসছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও। তবে পাকিস্তানে হতে যাওয়া এই আসর খেলতে ভারত দেশটিকে যেতে বেঁকে বসেছে। পাকিস্তানও নমনীয় না হয়ে প্রয়োজনে ভারতকে ছাড়াই টুর্নামেন্ট এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। তবে দেশটির সাবেক কিপার-ব্যাটার রশিদ লতিফ মনে করেন, এই দল ছাড়া আইসিসির যেকোনো ইভেন্টই মূল্যহীন হয়ে যাবে।
লম্বা সময় ধরে ভারত প্রতিবেশী পাকিস্তানে না গেলেও পাকিস্তান দুটি বিশ্বকাপ খেলতে এখন পর্যন্ত ভারতে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপও। তবে ভারতের অবস্থান আগের মতোই। পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে অনীহার কারণে তারা এরই মধ্যে আইসিসিকে জানিয়ে দিয়েছে হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্ট আয়োজনের। এর এর জবাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নকভি। সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকেই দাবি তুলছেন ভারতকে বাদ দিয়েই সব দল নিয়ে খেলার।
সম্প্রতি স্থানীয় নিউজ শো-তে এই প্রসঙ্গে লতিফ বলেছেন, এই বিষয়টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। “শুধুমাত্র পাকিস্তান আর ভারত আছে বলেই আইসিসি টিকে আছে। পাকিস্তান সরকারও যদি ভারতের মতো বলে যে, আমরা খেলব না, তাহলে আইসিসির কোনো লাভ হবে না। কারণ কেউ আর ম্যাচ দেখবে না। এটা আমরা বলতে পারি যে ভারত দ্বিপাক্ষিক ম্যাচ খেলতে চায় না। তবে আপনি আইসিসি ইভেন্টগুলোকে না করতে পারবেন না, কারণ আপনি ইতিমধ্যেই এখানে খেলার জন্য চুক্তি করেছেন। ভারতকে (পাকিস্তানে না যাওয়ার) শক্ত কারণ দেখাতে হবে। ভারত যদি এই সময় না আসে, তাহলে পাকিস্তান টুর্নামেন্টে অংশ না নেওয়ার মাধ্যমে বড় পদক্ষেপ নেবে।”
দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে ভারতে না গেলেও আইসিসি ইভেন্টে নিয়ম মেনে দুইবার ভারতে গেছে পাকিস্তান। তবে ভারত এমনকি এশিয়া কাপ খেলতেও দল পাঠায়নি পাকিস্তানে। ফলে স্রেফ ভারতের ম্যাচগুলো আয়োজন করতে হয়েছে ভিন্ন আরেকটি দেশে।
এবারও ভারত ক্রিকেট বোর্ড একই দাবি তোলায় হতাশ সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক লতিফ। “এটা যদি একটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বা এশিয়া কাপ হয়, তাহলে দলগুলিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ভারত সেখানে খেলতে চায় কি না। কিন্তু এটা একটা আইসিসি ইভেন্ট। চক্রটি ২০২৪-২০৩১ সালের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে। সব ব্রডকাস্টার এবং স্পনসররা এই ব্যাপারে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন এই মর্মে যে, দলগুলো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বা বিশ্বকাপে অংশ নেবে।”
সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে হওয়ার কথা রয়েছে পরবর্তী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।