
টুর্নামেন্টের মাঝপথে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হারাল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। কাঁধের আঘাতের কারণে আইপিএলের বাকী অংশ থেকে ছিটকে গেছেন লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা।
জাম্পা টুর্নামেন্টের প্রথম দুটি ম্যাচে ইমপ্যাক্ট সাব হিসাবে খেলেছিলেন। দুটিতেই ছিলেন ব্যয়বহুল (১/৪৮ ও ১/৪৬)।
এরপর থেকে তিনি কাঁধে ব্যথা অনুভব করছিলেন। এজন্য মিস করেন পরের চারটি ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যেতে বাধ্য হলেন।
সম্ভাবনা ছিল জাম্পার চোট থেকে সেরে আইপিএলের শেষ ভাগে ফেরার। তবে সেদিকে আর যায়নি হায়দরাবাদ। অজি স্পিনারের জায়গায় তারা বদলি হিসেবে স্কোয়াডে নিয়েছে ২১ বছর বয়সী কর্ণাটকের ব্যাটার আর স্মারানকে।
ছয় ম্যাচ শেষে জাম্পার দলের জয় মাত্র দুটি। পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান নবম।
আইপিএলের পরের অংশে ফেরার সম্ভাবনা না থাকায় বেশ লম্বা সময়ই মাঠের বাইরে থাকতে হবে জাম্পাকে। আগামী জুলাইয়ের শেষের দিকে ক্যারিবিয়ান সফর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার টি -টোয়েন্টি সিরিজের আগ পর্যন্ত তার আর খেলার সম্ভাবনা নেই।

২০২৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে জয়ের জন্য শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। হার্দিক পান্ডিয়ার ফুল টস বল ছয় মারতে চেয়েছিলেন ডেভিড মিলার। লং–অফে সুর্যকুমার যাদব অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ নেন। বল ফেলে না দিয়ে বাউন্ডারি লাইন পার হয়ে আবার ভিতরে এসে ধরে ফেলেন ভারত অলরাউন্ডার।
যদি সেদিনের সেই বলটি ছক্কা হতো, প্রোটিয়াদের সামনে ভালো সুযোগ থাকত। কিন্তু তা হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্বপ্নভঙ্গ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার।
আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হতে এখনও ৬২ দিন বাকি। তার আগে ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মারকুটে এই ব্যাটার। আগামীকাল থেকে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু প্রোটিয়াদের। তার আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে মিলার জানিয়েছেন, আগের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও ভালো পারফর্ম করতে প্রস্তুত তারা।
তিনি বলেন,
“এ নিয়ে (বিশ্বকাপ) আমি ভিন্ন ভিন্ন মানুষ এবং এমন সব দলের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা বছরের পর বছর নানা ট্রফি ও বিশ্বকাপ জিতেছে।”
মিলার বলেন,
“আমি মনে করি না বিশ্বকাপ জেতার জন্য একটি নির্দিষ্ট রেসিপি আছে। আমি মনে করি, এটা একটি দলগত প্রচেষ্টা, যেখানে ম্যানেজমেন্ট এবং খেলোয়াড়রা সবাই অংশগ্রহণ করে।”
২০২৪ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের পর কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন মিলার। পরে স্ত্রী ক্যামিলা তাকে সান্ত্বনা দেন।

দেশের ক্রিকেটে সামনের সব ব্যস্ততা বিপিএল ঘিরে। তবে সেটি এক পাশে রেখে বিগ ব্যাশ লিগ বেছে নিলেন রিশাদ হোসেন। অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে মঙ্গলবার রাতে দেশ ছাড়লেন তরুণ লেগ স্পিনার।
বিগ ব্যাশে হোবার্ট হারিকেন্সের জার্সিতে খেলবেন রিশাদ। ওই দলের হেড অব স্ট্র্যাটেজি হিসেবে আছেন কিংবদন্তি রিকি পন্টিং। তার তত্ত্বাবধানেই বিগ ব্যাশ খেলবেন বাংলাদেশের ২৩ বছর বয়সী স্পিনিং অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে আগেই বিগ ব্যাশের পুরো মৌসুমের ছাড়পত্র পেয়েছেন রিশাদ। তাই একেবারে সব ম্যচ খেলেই দেশে ফিরবেন। যে কারণে এবারের বিপিএলে দেখা যাবে না তাকে।
আগামী ১৪ ডিসেম্বর শুরু হবে বিগ ব্যাশের নতুন মৌসুম। টুর্নামেন্টের তৃতীয় দিন সিডনি থান্ডারের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পথচলা শুরু হবে রিশাদের হোবার্টের। প্রথম পর্বে তাদের শেষ ম্যাচ ১৪ জানুয়ারি। সেরা চারে থাকতে পারলে বাড়বে ম্যাচের সংখ্যা।
বিগ ব্যাশ লিগে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার রিশাদ। গত বছর সাকিব আল হাসানের পর প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে বিগ ব্যাশে দল পান রিশাদ। তবে ড্রাফট থেকে সরাসরি সুযোগ পাওয়া রিশাদই প্রথম।
২০১৪ সালে অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকার্সের হয়ে ২টি ও ২০১৫ সালে মেলবোর্ন রেনেগেডসের হয়ে ৪টি ম্যাচ খেলেন সাকিব। এর মধ্যে প্রথমবার সুযোগ পান ইয়োহান বোথার বদলি হিসেবে, পরের বার তিনি খেলেন আন্দ্রে রাসেলের বদলি হয়ে।
রিশাদের ক্যারিয়ারে দেশের বাইরে দ্বিতীয় লিগ হতে চলেছে বিগ ব্যাশ। চলতি বছর পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) ৭ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে লাহোর কালান্দার্সের শিরোপা জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন বাংলাদেশের লেগ স্পিনার।

টেস্ট ক্রিকেটকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে ‘বাজবল’ নামক নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিল ইংল্যান্ড। ক্রিকেটের দীর্ঘ ফরম্যাটে দ্রুত রান তোলা কিংবা প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে বেন স্টোকস ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের যৌথ প্রয়াস বেশ কার্যকরও হয়েছিল।
তবে ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ‘বাজবল’ তত্ত্ব অস্ট্রেলিয়ায় এসে যেন মৃতপ্রায়। অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে ভরাডুবির পর ব্রিসবেনে পিংক বলের টেস্টে স্টোকসরা ফিরে গেছেন ‘পুরনো ধাঁচের টেস্ট ক্রিকেটে’।
স্টোকস গর্বের সঙ্গে বলতেন—যেমন চাপই আসুক, আক্রমণাত্মক ব্যাটিং চালিয়ে যাবেন তিনি। অথচ সেই স্টোকসই ব্রিসবেনে দ্বিতীয় ইনিংসে ধীরস্থির ও রক্ষণাত্মক ব্যাটিং বেছে নেন। সপ্তম উইকেটে উইল জ্যাকসকে সঙ্গী করে খাদের কিনারায় থাকা দলকে দেন দু’দণ্ড স্বস্তি। ১৬৫ বল মোকাবিলা করে দু’জনে মিলে করেন ৬০ রান। অবশ্য শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হাতছাড়া হয় ইংল্যান্ডের। তবে ‘ওল্ড ফ্যাশন টেস্ট ক্রিকেট’ খেলে আরও একবার বাজবল তত্ত্ব উস্কে দেন স্টোকস।
২–০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে ইংল্যান্ড এখন অনেকটাই দিশেহারা। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এমনিতেই ইংল্যান্ডের ইতিহাস রঙহীন-ফ্যাকাশে। তার মধ্যে স্টোকস ঘোষণা দিয়েছিলেন খেরোখাতায় লেপ্টে যাওয়া দুর্নাম মুছে ফেলবেন। কার্যত তাঁর দল ব্যর্থতার খোলসে বন্দি।
উপায়ন্ত না পেয়ে হন্তদন্ত হয়ে স্টোকস হুংকার ছুঁড়েন—ইংল্যান্ডে দুর্বলচিত্তের খেলোয়াড়দের কোনো জায়গা নেই।
কেন দল পিছিয়ে পড়েছে, কেন চোখে চোখ রেখে লড়াই হয়নি, সে বিষয়ে দীর্ঘ ব্যাখ্যাও দিয়েছেন স্টোকস।
পিংক–বল টেস্টে হারের পর ম্যাককালাম জানিয়েছিলেন, প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি ছিল না সফরকারীদের; বরং অতিরিক্ত অনুশীলন সেশন করেছেন স্টোকসরা। আজ তিনি জানিয়েছেন, মনোবল না থাকলে অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের পক্ষে ফেরাটা কঠিন হবে। বাজবল খেলার চেয়ে বরং গুডবলের ক্রিকেটের দিকেই নজর সফরকারীদের।
ক্যাপ্টেনের কথার সঙ্গে একমত হয়ে ম্যাককালাম বলেন,
“আমি তাঁর (স্টোকস) সঙ্গে একমত। তাঁর কথার থেকে এটি কোনোভাবেই ভিন্ন হতে পারে না। এটা এমন একটি দেশ নয় যেখানে তুমি তোমার কাজে পুরোপুরি নিবেদিত না থাকলে ভালো কিছু আশা করতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন,
“এখানে (অস্ট্রেলিয়া) এলে পেছনে তাকানো বা পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। নিজের ওপর সন্দেহ করলে বা চ্যালেঞ্জ থেকে সরে দাঁড়ালে চলবে না।”
ম্যাককালাম যোগ করেন,
“এই দেশে এসে যদি তোমার মনোবল দুর্বল থাকে, তাহলে তোমার কোনো সুযোগ নেই। তোমাকে শক্ত হতে হবে, কঠিন হতে হবে, এবং পরিস্থিতি সামলে এগিয়ে যেতে হবে।”

শেফিল্ড শিল্ড ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ। চলতি মৌসুম শেষেই ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তাঁর লাল বলের ঘরোয়া অধ্যায় শেষ হতে যাচ্ছে। তবে জাতীয় দলের টেস্ট ক্রিকেটের জন্য নিজেকে উন্মুক্ত রাখছেন তিনি।
প্রায় এক বছর ধরে সাদা জার্সি পরা হয়নি মার্শের। সবশেষ খেলেছেন গত বছর ভারতের বিপক্ষে এমসিজিতে বক্সিং ডে টেস্টে। ২০০৯ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় মার্শের। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দলটির হয়ে শেফিল্ড শিল্ডে ৫৫ ম্যাচে ২৭৪৪ রান ও ৮২ উইকেট ঝুলিতে নিয়েছেন।
ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ালেও মার্শের মনোযোগ বিগ ব্যাশ লিগে (বিবিএল)। পার্থ স্কর্চার্সের হয়ে খেলছেন তিনি। সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে।
এক বিবৃতিতে মার্শ বলেন,
‘ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে শেফিল্ড শিল্ড খেলা আমার জন্য ছিল সম্মানের। পার্থ স্কর্চার্স ও দলের প্রতি আমার প্রতিশ্রুতি আগের মতোই থাকবে। ডব্লিউএ ক্রিকেট আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, ভবিষ্যতেও যেকোনোভাবে অবদান রাখতে চাই।’
মার্শের অবসরের খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার কোচ ও সাবেক ক্রিকেটার অ্যাডাম ভোজেস। তাঁর ভাষায়,
‘মিচ শেফিল্ড শিল্ড ক্রিকেটারের আসল উদাহরণ। সতীর্থ হিসেবে কিংবা এখন কোচ হিসেবে— সবসময়ই দেখেছি, দলকে তিনি সর্বোচ্চটা দিয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁর উন্নতি দেখা ছিল বিশেষ অভিজ্ঞতা। মাঠের ভেতরে-বাইরে অসাধারণ চরিত্রের অধিকারী তিনি।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হেরে যাওয়ার ৪ দিন পর শাস্তি পেল ভারত। মন্থর ওভার রেটের কারণে ভারতের ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফির ১০ শতাংশ করে কেটে নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এই খবর জানিয়েছে আইসিসি। অথচ ম্যাচটি শেষ হয়েছে গত সপ্তাহের বুধবার।
রায়পুরে ওই ম্যাচে ৩৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে রেকর্ড গড়া জয় পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচ শেষ হওয়ার চার দিন পর জানা গেল, সেদিন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ২ ওভার পিছিয়ে ছিল ভারত।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ওভারের জন্য ম্যাচ ফির ৫ শতাংশ করে মোট ১০ শতাংশ জরিমানা করা হয় স্বাগতিকদের।
ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল নিজেদের দায় স্বীকার করে নেওয়ায় আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন পড়েনি।
পরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ জিতে ট্রফি নিজেদের কাছেই রেখে দেয় ভারত।