২৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪:৫৩ এম
চলতি মৌসুমে দুটি এল ক্লাসিকোতে ছিল না কোনো প্রাণ। হেসেখেলেই জেতে বার্সেলোনা। কোপা দেল রের ফাইনালের প্রথমার্ধে এক গোল হজম করে যেন সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুই গোল দিয়ে জয়ের আশা জাগাল লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলা হান্সি ফ্লিকের দল সমতা টানল শুরুতে, এরপর জুলস কুন্দের শেষ সময়ের গোলে নিশ্চিত করল মৌসুমে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা।
সেভিয়ায় রোববার কোপা দেল রের এল ক্লাসিকো ফাইনালে রিয়ালকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ সমতায় শেষের পর অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান গড়ে দেন কুন্দে। এই মৌসুমে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে এটি ফ্লিকের দলের হ্যাটট্রিক জয়। এই ফাইনালের আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালেও রিয়ালকে হারিয়েছিল বার্সেলোনা।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে কোপা দেল রের শিরোপার জয়ীদের তালিকায় নিজেদের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে বার্সেলোনা। তারা এই প্রতিযোগিতা জিতেছে এই নিয়ে ৩২ বার। রিয়ালের নামের পাশে রয়েছে ২০টি, তারা আছে তিনে। দুইয়ে থাকা আথলেতিক বিলবাও জিতেছে ২৪ বার।
আরও পড়ুন
ফাইনাল উপভোগ করতে চান বার্সা কোচ |
![]() |
চলতি মৌসুমে এর আগে লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে খেলেছিল দুই দল। দুটিতেই ফ্লিকের দলের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল। উভয় ম্যাচেই বার্সেলোনার আক্রমণাত্মক ফুটবলের কাছে মার খায় লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। এই ম্যাচেও হয়নি তার ব্যতিক্রম।
প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রাখে বার্সেলোনা। তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে জুলস কুন্দের হেড চলে যায় পোষ্টের ওপর দিয়ে। ম্যাচের আগে রেফারি রিকার্ডো ডি বার্গোস বেনগোয়েটেক্সিয়াকে নিয়ে বিতর্কের কারণে বাড়তি চোখ ছিল তার দিকে। তবে সেই চাপ সামলে ম্যাচের প্রথম দিকে ভালো কিছু সিদ্ধান্তই নেন তিনি।
প্রথম দশ মিনিটে সেভাবে আক্রমণ শানাতে না পারা রিয়াল বড় ধাক্কা খায় ফেরলন্ড মন্ডির চোটে। ভঙ্গুর রক্ষণভাগে তার বদলি হিসেবে অনভিজ্ঞ ফ্রাঙ্ক গার্সিয়াকে নামান আনচেলত্তি। তবে তাতেও চিত্রে আসেনি কোনো বদল। বারবার উইং ধরে আক্রমণে উঠছিলেন ইয়ামাল, আর গতিতে হার মানাচ্ছিলেন রিয়ালের ডিফেন্ডারদের।
১৬তম মিনিটে রাফিনিয়ার ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের বক্সের ভেতর পড়ে যান ফেদেরিকো ভালভের্দে, তখন বল তার হাতে লাগলে পেনাল্টির আবেদন জানায় বার্সেলোনা। তবে রেফারি তাতে সাড়া দেননি।
২১তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ক্রসে দারুণ এক হেডার লক্ষ্যেই রেখেছিলেন কুন্দে, তবে শেষ মুহূর্তে বাম হাতে ফিস্ট করে ক্লিয়ার করে রিয়ালকে বাঁচান থিবো কোর্তোয়া।
আরও পড়ুন
এফএ কাপ জিতে ‘বড় ক্ষতি’ এড়াতে চান গার্দিওলা |
![]() |
তবে এর ৭ মিনিট পর আর শেষ রক্ষা করতে পারেননি তিনি। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বাঁদিক থেকে গতিতে রিয়ালের খেলোয়াড়দের নিয়ে ছেলেখেলা করা ইয়ামাল বল বাড়ান বক্সের একটু বাইরে ফাঁকায় থাকা পেদ্রির দিকে। স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার সময় নিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা।
প্রথমার্ধে রিয়ালের সেরা খেলোয়াড় জুড বেলিংহাম ৩৫তম মিনিটে দানি সেবায়োসের পাস থেকে বল জালে পাঠালেও অফসাইডে থাকায় আর মেলেনি গোল।
৪৩তম মিনিটে রাফিনিয়ার কর্নার জটলার মধ্যে ডিফ্লেকশনের পর ফিরে আসে পোস্টে লেগে। এর এক মিনিট বাদে আরেকটি কর্নার থেকেও বার্সেলোনা পেয়েছিল ভালো সুযোগ, তবে কাজে লাগাতে পারেনি।
একতরফা প্রথম ৪৫ মিনিটে রিয়াল গোলের জন্য নিতে পারে মাত্র একটি শট, সেটাও থাকেনি লক্ষ্যে। আর আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া বার্সেলোনা ৭টি শটের চারটিই রাখে লক্ষ্যে।
বিরতিতে রদ্রিগোর জায়গায় কিলিয়ান এমবাপেকে নামায় রিয়াল। এই অর্ধের শুরুতেই ভিন্ন ছন্দে হাজির হয় দলটি। ৪৮তম মিনিটে বার্সেলোনার একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বলের দখল নিয়ে ডান দিকে ক্রস বাড়ান বেলিংহাম। প্রথম টাচে শট না নিয়ে কিছুটা কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নেন ভিনিসিয়ুস, যা ফেরান ওজসিচ সেজেনি। ফিরতি বল পেয়ে ফের ব্রাজিল তারকা শট নিলে কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক।
এমবাপে মাঠে নামার পর থেকেই বেড়ে যায় রিয়ালের আক্রমণের ধার। ৫৫তম মিনিটে ড্রিবলিং করে বক্সে প্রবেশ করে বল বাড়ান ভিনিসিয়ুসের দিকে। তবে আরও একবার প্রথম টাচে শট না করে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ফিফার বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
বিরতির আগে টানা আক্রমণ করে যাওয়া বার্সেলোনা এই অর্ধের শুরু থেকে কিছুটা ব্যস্ত সময় কাটায়। আর সেটা হচ্ছিল যার কারণে, সেই এমবাপেই শেষ পর্যন্ত রিয়ালকে ম্যাচ ফেরান। বক্সের বাইরে বল নিয়ে আগুয়ান গতিতে এগিয়ে যাওয়া ফরাসি তারকাকে টেনে ফেলে দেন পেদ্রি। রিয়ালের তীব্র প্রতিবাদের মুখে স্রেফ হলুদ কার্ড পান তিনি।
এরপর ফ্রি-কিক থেকে বার্সেলোনা খেলোয়াড়দের দেয়ালের মধ্য দিয়ে বুলেট গতির এক শটে বল জালে পাঠান এমবাপেই। এই প্রথম পেশাদার ক্যারিয়ারে সরাসরি ফ্রি-কিক থেকে গোলের দেখা পেয়েছেন সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন
রেফারি পরিবর্তন না হলেও ফাইনালে অংশ নেবে রিয়াল |
![]() |
একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া রিয়াল খানিক বাদে পেয়েছিল দারুণ সুযোগ। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে ভিনিসিয়ুস পাস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ছয় গজে ফাঁকায় থাকা এমবাপের দিকে। তবে সেযাত্রায় বার্সেলোনা ক্লিয়ার করতে সমর্থ হয়।
প্রথমার্ধের ঠিক বিপরীত ফুটবল খেলা বার্সেলোনাকে এই দ্বিতীয়ার্ধে চেনাই ছিল দায়। একটা গোল হজমের পরও গুছিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লিডও নিয়ে ফেলে রিয়াল। ৭৭তম মিনিটে আর্দা গুলেরের কর্নার থেকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক হেডারে গোল করেন ফরাসি মিডফিল্ডার অহেলিয়া চুয়ামেনি।
৮২তম মিনিটে পেদ্রির পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ পায়ের কার্লিং শট নেন ইয়ামাল, যা দারুণ ক্ষিপ্রতায় থামান কোর্তোয়া। তবে এর একটু পর তার ভুলে গোল হজম করে বসে রিয়াল। প্রায় মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বলের দখল নিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন স্রেফ ফেররান তরেস। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ব্যর্থ হন কোর্তোয়া, আর ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার পারেননি ক্লিয়ারেন্স করতে।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে গোল করে যেন প্রাণ ফিরে পায় বার্সেলোনা শিবির। নব্বই মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার একটু আগে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ভিনিসিয়ুস।
ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, ঠিক তখন ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে রিয়ালকে প্রায় বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাউল আসেন্সিও। রাফিনিয়াকে ডি-বক্সের মধ্যে ফাউল করে হজম করেন পেনাল্টি। তবে ভিএআর চেকের পর ডাইভ দেওয়ার কারণে পেনাল্টি বাতিল করে রাফিনিয়াকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম দশ মিনিট চলে আক্রমণ ও পাল্টা-আক্রমণের মধ্য দিয়ে। ১০৩তম মিনিটে বক্সের ভেতর সতীর্থের পাস পেয়ে বাঁদিক থেকে জটলার মধ্যে শট নেন তরেস, যা অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে। যদি থাকত, খুঁজে নিত জালের ঠিকানা। কারণ, কোর্তোয়ারও চেয়ে দেখা ছাড়া আর করার ছিল না কিছুই।
১০৭তম মিনিটে আরও একবার রিয়ালের জালে বল পাঠান তরেস। তবে তিনি অফসাইডে থাকাই এই দফায় হতাশই হতে হয় বার্সেলোনাকে। এর মিনিট পাঁচেক পর দুর্দান্ত একটি সুযোগ তৈরি করেন রিয়াল মিডফিল্ডার গুলের। তার ক্রসে ঝাঁপিয়েও হেডার দিতে পারেননি বেলিংহাম।
১১৬তম মিনিটে রিয়ালের সর্বনাশ করেন লুকা মদ্রিচ। নিজেদের অর্ধে অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডারের ভুল পাস থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান কুন্দে। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে প্লেসিং শটে পরাস্ত করেন কোর্তোয়া। এর মিনিট খানেক বাদেই বার্সেলোনার বক্সে ফাউলের শিকার হন এমবাপে। শুরুতে পেনাল্টির বাঁশি বাজলেও তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা বাতিল হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজার ঠিক আগে উত্তেজনা দেখা দেয় রিয়ালের ডাগআউটে। বদলি হিসেবে আগেই উঠে যাওয়া রুডিগার রেফারিকে উদ্দেশ্য করে একটা বস্তু ছুড়ে মারেন। শাস্তি হিসেবে তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয়। এরপর যোগ হয় রিয়ালের হারের দুঃখ।
১ দিন আগে
৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৯ দিন আগে
২১ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৮ দিন আগে
১৫ জুন ২০২৫, ২:৪৭ পিএম
ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে এখন থাকার কথা ছিল ইন্তার মিলান স্কোয়াডের সাথে। তবে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তেহরানে আটকে পড়েছেন দলটির ইরানিয়ান ফরোয়ার্ড মেহদী তারেমি। ইরান-ইসরায়েল চলমান উত্তেজনার কারণে তিনি সময়মতো ক্লাবে ফিরতে পারছেন না। ফলে মিস করতে যাচ্ছেন ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শুরুটা।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইন্তারের ক্লাবের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সেরি আ দলটির ক্লাব বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সময় এটা বড় এক ধাক্কাই।
গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বিরতিতে দেশের হয়ে খেলতে ইরানে যান তারেমি। সেখানে গিয়ে তিনি উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে খেলেন। ওই ম্যাচে তিনি একটি গোল করেন, আর ইরাম ম্যাচটি জেতে ৩-০ ব্যবধানে।
আরও পড়ুন
বার্সেলোনায় ‘যোগ দিচ্ছেন’ স্প্যানিশ গোলরক্ষক গার্সিয়া |
![]() |
তবে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির হঠাৎ অবনতির ঘটায় ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভ্রমণ জটিলতায় পড়ে গেছেন তারেমি। মিস করেছেন নির্ধারিত ফ্লাইট। কবে যোগ দিতে পারবেন ইন্তারের সাথে, তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চিয়তা। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইতালিতে না ফেরায় তাকে ছাড়াই ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রের পাড়ি জমাচ্ছে ইন্তার।
এখন পর্যন্ত ৩২ বছর বয়সী তারেমির ব্যাপারে ইন্তার বা ইরান ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে শনিবার ইতালির শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়া দৈনিক লা গাজ্জেত্তা দেল্লো স্পোর্ত জানিয়েছে,
“ইরানিয়ান স্ট্রাইকার তারেমি ইন্টার মিলানের সাথে যোগ দিচ্ছেন না। প্রথম ম্যাচে না, এমনকি পরবর্তী কোনোটিতেও না।”
ইন্তার তাদের ক্লাব বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করবে আগামী মঙ্গলবার, মেক্সিকোর ক্লাব মনতের্রের বিপক্ষে। লা গাজ্জেত্তা দেল্লো স্পোর্তের দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে এই ম্যাচের পাশাপাশি পুরো আসরেও তারেমির খেলার সম্ভাবনা আর নেই।
গুঞ্জনটা বাতাসে ভাসছিল কয়েকদিন ধরেই। গত মৌসুমে লা লিগার অন্যতম সেরা গোলরক্ষক হোয়ান গার্সিয়াকে দলে নিতে প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন করে ফেলেছে বার্সেলোনা, খবর স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের। সব ঠিক থাকলে খুব দ্রুতই নাকি আসতে যাচ্ছে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
ইএসপিএন সূত্রের বরাত দিয়ে নিশ্চিত করেছে, গার্সিয়াকে দলে টানার জন্য এস্পানিওলের সাথে তার চুক্তিতে থাকা ২৫ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করেছে বার্সেলোনা। কাতালান ক্লাবটি শুক্রবার এই অর্থ লা লিগার অ্যাকাউন্টে জমা দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে। আশা করা হচ্ছে, দলবদলের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হবে।
আরও পড়ুন
ক্লাব ফুটবলে ফ্রান্সেই প্রত্যাবর্তন পগবার? |
![]() |
২৪ বছর বয়সী গার্সিয়া বার্সার সঙ্গে ছয় বছরের জন্য চুক্তি করতে যাচ্ছেন, যা ২০৩১ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। গ্রীষ্মে যোগ দেওয়া হলেও মূল গোলরক্ষক হওয়াটা তার জন্য হবে কঠিন কাজই। কারণ, তাকে লড়তে হবে মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন, ভয়েচেখ শেজনি ও ইনাকি পেনিয়ার সাথে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের কয়েকটি ক্লাবও নাকি গার্সিয়ার প্রতি আগ্রহী ছিল। গত গ্রীষ্মেও আর্সেনাল তাকে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আর এই বছর তাকে দলে পেতে যোগাযোগ করে ম্যানচেস্টার সিটি, অ্যাস্টন ভিলা, নিউক্যাসল ইউনাইটেড ও বোর্নমাউথও। তবে সব ক্লাবকে পেছনে ফেলে গার্সিয়াকে পরবর্তী ঠিকানা হিসেবে বেছে নিয়েছেন বার্সেলোনাকেই।
এস্পানিওল অবশ্য নিজেদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে গার্সিয়াকে হারাতে চায়নি। কিন্তু চুক্তিতে থাকা নির্ধারিত রিলিজ ক্লজের কারণে ও স্প্যানিশ এই গোলরক্ষকের ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছার কারণে তারা কিছুই করতে পারেনি শেষ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন
রিয়ালে নাম লেখালেন আর্জেন্টিনার প্রতিভাবান মিডফিল্ডার মাস্তান্তুয়ানো |
![]() |
গত মৌসুমে লা লিগা সহ তিনটি ঘরোয়া শিরোপা জেতে বার্সেলোনা। মৌসুমের শুরুতে টের স্টেগেন চোটে পড়লে ক্লাবটিতে যোগ দেন শেজনি। এরপর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে এখন তিনি আছেন স্থায়ী চুক্তির খুব কাছাকাছি অবস্থানে।
দেড় বছরের বেশি মাঠের বাইরে থাকার পর আবারও প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ফেরার দ্বারপ্রান্তে পল পগবা। ইএসপিএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিগ ওয়ানের ক্লাব মোনাকোর সঙ্গে চুক্তির আলোচনায় রয়েছেন এই ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী এই মিডফিল্ডার।
পগবা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে টেস্টোস্টেরনের অতিরিক্ত মাত্রা ধরা পড়ায় চার বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন। আপিলের পর সেই নিষেধাজ্ঞা ১৮ মাসে নেমে আসে। তবে তার মাঠে ফেরাটা কঠিন হয়ে যায় সেই সময়ের ক্লাব য়্যুভেন্তাস গত নভেম্বরে চুক্তি বাতিল করায়। এরপর আর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেননি পগবা।
৩২ বছর বয়সী পগবা তাই এখন ফ্রি এজেন্ট। বিভিন্ন সময়ে সৌদি প্রো লিগ ও আসছে ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ দলগুলোর তাকে নিয়ে আগ্রহের খবর এসেছে। তবে কোনোটাই পায়নি গতি। আর সবশেষ সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন জানিয়েছে, মোনাকোর সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে ফ্রান্সের ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী এই মিডফিল্ডারের।
পগবার ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ফ্রান্সেই। ২০০৯ সালে লে আভর ছেড়ে ১৬ বছর বয়সে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন। এরপর আর কখনই ফরাসি দলের হয়ে খেলেননি তিনি। ২০১১ সালে ইউনাইটেডের সিনিয়র দলে অভিষেক হলেও সেভাবে ম্যাচ খেলতে না পারায় ২০১২ সালে নাম লেখান য়্যুভেন্তুসে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত সেখানে প্রথম দফায় জেতেন ৪টি সেরি আ শিরোপা।
এরপর ২০১৬ সালে তৎকালীন রেকর্ড ট্রান্সফার ফি-তে (৮৯ মিলিয়ন ইউরা) ইউনাইটেডে ফেরেন। জেতেন ইউরোপা লিগ ও লিগ কাপ। ২০১৮ সালে ফ্রান্সের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ২০২২ সালে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আবার ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ফেরেন য়্যুভেন্তুসে।
তবে চোটের কারণে সেভাবে খেলতেই পারেননি আর। উল্টো এসবের প্রভাবে মিস করেন ২০২২ বিশ্বকাপও। এরপর আসে বড় ধাক্কাটা। ডোপিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় ৪ বছরের নিষেধাজ্ঞা পান, যা পরে কমে আসায় টিকে যায় ক্যারিয়ার।
১৩ জুন ২০২৫, ৭:৪১ পিএম
গুঞ্জনই শেষ পর্যন্ত হল সত্যি। আর্জেন্টিনার সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান ফুটবলার ফ্রাঙ্কো মাস্তান্তুয়ানোকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে টানার ঘোষণা দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এর মধ্য দিয়ে স্প্যানিশ ক্লাবটি তরুণ এই ফুটবলারকে পাওয়ার ক্ষেত্রে পেছনে ফেলেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পিএসজিকে।
রিয়াল শুক্রবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, মাস্তান্তুয়ানোর সাথে তাদের ছয় মৌসুমের চুক্তি হয়েছে, যা কার্যকর হবে আগামী ১৪ আগস্ট থেকে ২০৩১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।
মাত্র ১৭ বছর বয়সেই রিভার প্লেটের জার্সিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিহে আলোচনায় জন্ম দিয়েছেন মাস্তান্তুয়ানো। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আর্জেন্টাইন ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে গোলদাতা হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন
রেকর্ড গড়ে লিভারপুলে যোগ দিচ্ছেন ভির্টস |
![]() |
মাস্তান্তুয়ানো রিভার প্লেটের একাডেমিতে ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খেলেছেন। তাকে ক্লাবটির ভবিষ্যৎ তারকা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। ফলে ২০২৪-২৫ মৌসুমে জায়গা করে নেন রিভার প্লেটের সিনিয়র দলের সদস্য। দলটির হয়ে জিতেছেন আর্জেন্টাইন সুপার কাপ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্জনের মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেকের।
এই কারণেই রিয়ালের বেশ আগে থেকেই তাকে দলে পাওয়ার লড়াইয়ে ছিল পিএসজি। আলোচনা এগিয়ে গিয়েছিল অনেকদূরও। তবে গেল দুই সপ্তাহে রিয়াল আগ্রহ দেখানোর পরই বদলে যায় চিত্র। আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথেই সম্মতি জানান মাস্তান্তুয়ানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে দলে পাওয়ার জন্য কয়েক কিস্তিতে ৪৫ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করবে রিয়াল।
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ফ্লোরিয়ান ভির্টসকে দলে টানতে যাচ্ছে লিভারপুল। লেভারকুসেনের তারকা মিডফিল্ডারকে কেনার জন্য সব মিলিয়ে রেকর্ড ট্রান্সফার ফি গুনতে হচ্ছে ইংলিশ ক্লাবটিকে। ইএসপিএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জার্মান প্লেমেকারকে দলে নিতে চুক্তিতে সম্মত হয়েছে দুই ক্লাব। চুক্তির অর্থ যেতে পারে ১৩৬.৩ মিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত, যা হতে যাচ্ছে ব্রিটিশ ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ট্রান্সফার।
এর আগে গত সপ্তাহে খবরে এসেছিল, ভির্টসের জন্য ১৫০ মিলিয়ন ইউরো ট্রান্সফার ফি-এর প্রস্তাব দেবে লিভারপুল। এরপর বাতাসে ভাসে গুঞ্জন, লেভারকুসেনের চাওয়া ১৩৫ থেকে ১৪০ মিলিয়ন ইউরোর একটি প্যাকেজ, যেখানে থাকবে নানা বোনাসও। ইএসপিএন বলছে, শেষ পর্যন্ত এর থেকে কম অর্থেই দুই পক্ষ রাজি হয়েছে প্যাজেকের অর্থের পরিমাণ নিয়ে।
আরও পড়ুন
বার্সা বা রিয়াল হলে আমাকে বিদায় করে দিত : গার্দিওলা |
![]() |
প্রাথমিকভাবে ১১৭.৫ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করবে লিভারপুল। এর সাথে আগামী মৌসুমগুলোতে যোগ হতে পারে ১৮ মিলিয়নের বেশি অতিরিক্ত বোনাস, যা কার্যকর হবে আর্নে স্লটের দলের শিরোপা জেতা ও তার ম্যাচ খেলার সংখ্যার বিচারে। চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছরের।
চুক্তির সব শর্ত পূরণ হলে ভির্টসই হবেন ব্রিটিশ ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল খেলোয়াড়। এখন পর্যন্ত রেকর্ডটি রয়েছে চেলসির মইসিস কাইসেডোর দখলে। ২০২৩ সালে ব্রাইটন থেকে তাকে তিনি যোগ দেন ১১৫ মিলিয়ন ইউরোর ট্রান্সফার-এর বিনিময়ে।
২২ বছর বয়সী ভির্টসের এই চুক্তি লিভারপুলের ইতিহাসেও সবচেয়ে ব্যয়বহুল ট্রান্সফার হতে যাচ্ছে। এর আগে ২০২২ সালে দারউইন নুনেজকে ৮৫ মিলিয়নে ইউরোর বিনিময়ে দলে নিয়েছিল তারা।
ভির্টসকে দলে নিতে লিভারপুলকে লড়তে হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ, ম্যানচেস্টার সিটি ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোকে। যদিও বায়ার্ন ছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে অন্য কোনো দলই তার প্রতি আগ্রহের কথা জানায়নি।
আরও পড়ুন
স্টার্লিং-গ্রিলিশকে ছাড়াই ক্লাব বিশ্বকাপে চেলসি-সিটি |
![]() |
নতুন মৌসুমকে সামনে রেখে ভির্টস হচ্ছেন প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের দ্বিতীয় সাইনিং। এর আগে তারা লেভারকুসেন থেকেই তারা দলে টেনেছে জেরেমি ফ্রিমপংকে।