২০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২০ এম

দলের ফরোয়ার্ডরা নিয়মিত ভূরিভূরি গোল করে বড় জয়ে ভূমিকা রাখবে, এমনটাই তো সবসময় চায় যেকোনো ক্লাব। আর স্ট্রাইকারদের কাজই তো গোল করা। তবে ক্লাব থেকে যদি নির্দেশ দেওয়া হয়, ‘আর গোল করার প্রয়োজন নেই’। শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও এমনটাই নাকি ঘটেছে বাসেলোনার তারকা ফরোয়ার্ড রবার্ট লেভানডফস্কির সঙ্গে।
২০২২-২৩ মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখ ছেড়ে তখন বার্সায় যোগ দিয়েছেন লেভানডফস্কি। মৌসুমের প্রায় শেষ দিকের কথা। লা লিগা জয় তখন নিশ্চিত কাতালান ক্লাবটির। ওই মৌসুমে লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায়ও বাকিদের ধরাছোঁয়ার বাইরে ক্লাবটির ফরোয়ার্ড লেভানডফস্কি। আর ঠিক এমন সময় নাকি পোলিশ তারকাকে গোল করতে নিষেধ করে বার্সা।
সম্প্রতি লেভানডফস্কির জীবনী নিয়ে প্রকাশিত একটি বই ‘লেভানডোভস্কি: দ্য রিয়াল ওয়ান’ এ এমনটাই দাবী করেছেন লেখক সেবাস্তিয়ান স্টাশেভস্কি। লিগের দুটি ম্যাচ বাকি থাকতেই চ্যাম্পিয়ন হয় জাভি হার্নান্দেজের বার্সা। সেই সময় নাকি লেভানডফস্কিকে বার্সেলোনার কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার জন্য ডাকা হয়। তখন ২৩ গোল করে স্প্যানিশ লিগটির শীর্ষ গোলদাতা ছিলেন তিনি। দুইয়ে থাকা প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে। ঠিক তখনই নাকি আসে সেই অদ্ভুত অনুরোধ।
আরও পড়ুন
| আফ্রিকার বর্ষসেরা হয়ে ইতিহাস হাকিমির |
|
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগতে পারে কেন প্রথম মৌসুমেই লেভানডফস্কিকে ‘গোল করা বন্ধ করতে’ বলেছিল বার্সা ? গোল করতে নিষেধ করার এমন অদ্ভুত অনুরোধ শুনে ৩৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড তাজ্জব বনে যান। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের কোনো ক্লাব থেকে এমন অনুরোধ শুনেননি তিনি।
বিষয়টি কৌশলগত কারণে নয়—বরং আর্থিক কারণে এই অনুরোধ করা হয়েছিল। আর্থিকভাবে বেশ সংকটে ছিল তখন বার্সেলোনা। মূলত ২৫ লাখ ইউরো বোনাস এড়াতে চেয়েছিল ক্লাবটি। বায়ার্নের সঙ্গে বার্সার চুক্তিতে উল্লেখ ছিল এমন এক শর্ত যেখানে বলা হয়েছিল, লেভানডফস্কি যদি লিগে ২৫টি গোল করেন, তবে তার ট্রান্সফারের পারফরম্যান্স-সংক্রান্ত বোনাস হিসেবে জার্মান ক্লাবটিকে ২.৫ মিলিয়ন ইউরো দিতে হবে।
বার্সেলোনার তখন লিগ জয় নিশ্চিত, সঙ্গে লেভানডফস্কির সর্বোচ্চ গোলদাতাও হওয়াও নিশ্চিত। আর্থিকভাবে চাপে থাকা ক্লাবটি তখন বাড়তি খরচের বোঝা বাড়াতে অপারগ ছিল।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য ক্লাবের কথা রেখেছিলেন লেভানডফস্কি। লিগের শেষ দুটি ম্যাচে পুরো সময় খেললেও কোনো গোল করেননি তিনি। এরপরও অবশ্য পিচিচি ট্রফি জিততে কোনো সমস্যাই হয়নি তাঁর। নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী করিম বেনজেমা থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন লেভা।
চলতি মৌসুমেও দারুণ ছন্দে আছেন লেভানডফস্কি। লা লিগায় ৯ ম্যাচ খেলে ৭ গোল করেছেন তিনি। ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে চুক্তি আছে বার্সার। গুঞ্জন তাঁর সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করবে না বার্সা।
No posts available.
২০ নভেম্বর ২০২৫, ১:১৪ পিএম

ভারতকে ২২ বছর পর গত মঙ্গলবার হারায় বাংলাদেশ। ম্যাচে একমাত্র গোলটি শেখ মোরছালিনের। তবে এই গোলে বড় অবদান রাকিব হোসেনের। তাঁর দারুণ অ্যাসিস্টেই আসে ম্যাচে জয়সূচক গোলটি। খেলার পর নায়ক বনে যান মোরছালিন; অনেকটা আড়ালে ঢাকা পরে উইঙ্গার রাকিবের অবদান। ক্যারিয়ারজুড়েই অনেকটা নীরবে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন জাতীয় দল ও বসুন্ধরা কিংসের ২৭ বছর বয়সি তারকা ফুটবলার। ভারত ম্যাচে পাওয়া ঐতিহাসিক জয় এবং নিজের ব্যক্তিগত নানা বিষয়ে কথা বলেছেন টি-স্পোর্টসের সঙ্গে।
টি-স্পোর্টস: অবশেষে ভারতের বিপক্ষে জয়, তাতে আছে আপনার বড় অবদান। কেমন লাগছে জয়সূচক গোলে অ্যাসিস্ট করে?
রাকিব হোসেন: খুব ভালো লাগছে, কারণ ২২ বছর পর ওদের হারাইছি। তা ছাড়া ওদের সঙ্গে একটা দ্বৈরথ তো আছেই। এই ম্যাচ জয়ের জন্য সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করে। দেখেন খেলা দেখতে কত মানুষ আসছে এবং সারা দেশেই মানুষ টিভিতে খেলা দেখেছে। তো মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি তাই বেশি ভালো লাগছে। আমার কাছে ভালো লাগছে যে আমি গোলে অ্যাসিস্ট করছি। কিন্তু ওই সময়ে মোরছালিন ওখানে না আসলে তো গোল হতো না। ওর কৃতিত্ব বেশি।
টি-স্পোর্টস: প্রতি আক্রমণে সফল হতে আপনি, মোরছালিন, ফাহিমদের নিয়ে কি কোনো আলাদা অনুশীলন হয়েছিল?
রাকিব হোসেন: আমাদের আগের (নেপাল) ম্যাচের পর থেকেই এটা নিয়ে কাজ করেছেন কোচ (হাভিয়ের কাবরেরা)। সহকারী কোচ (ডেভিড) আমাদেরকে বলেছে যে ওরা (ভারত) সবাই অ্যাটাকে আসে, ওই সময়ে ওদের নিচের দিকে খেলোয়াড় থাকে না। এটার সুযোগ নিতে বলা হয়েছিল, মাঠে আমরা সেটিই বাস্তবায়ন করেছি।
টি-স্পোর্টস: মোরছালিনকে ক্রসটা দিয়ে আপনি মাটিতে পড়ে গেলেন, এরপর ওই দুই এক সেকেন্ডের ভাবনায় কি মনে হয়েছিল, মোরছালিন পারবে ভারতের গোলকিপারকে পরাস্ত করতে, কিংবা তাঁর ওপর আস্থা ছিল আপনার?
রাকিব হোসেন: হ্যা আমার ওর (মোরছালিন) উপর বিশ্বাস ছিল। জানতাম ও গোলকিপারের আগে বল পেলে গোল করে দেবে। আমি বাঁ পায়ে ক্রস দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু যখন পড়ে যাচ্ছিলাম তখন ডান পাঁ দিয়েই ক্রস দিয়ে দেই।
টি-স্পোর্টস: গোলের পর আপনাকে মোরছালিন কি বলেছে, বা আপনি মোরছালিনকে কি বলেছেন?
রাকিব হোসেন: আমি ওরে বলছি ধন্যবাদ, ভালো গোল করেছো। ও আমাকে বলেছে- ভাই ভালো একটা বল দিয়েছেন। আর গোলের পর তো সবাই অনেক মজা করে সেভাবে বেশি কথা তো হয় না।
টি-স্পোর্টস: অনেকে বলে, আপনাদের দুজনের রসায়ন ভালো। এটার রহস্য কি?
রাকিব হোসেন: ওর সঙ্গে আমার তো আজকে না অনেক আগে থেকেই ভালো বোঝাপড়া। ও বসুন্ধরা কিংসে যখন ছিল তখন থেকেই… এক জায়গায় হলে আমরা আমরা মজা করি। ক্লাবে এবং জাতীয় দলে ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক ভালো।
টি-স্পোর্টস: এদিন আপনার নিচে ছিলেন সমিত সোম। রাইট ব্যাকে সাদ উদ্দিন। বেশিরভাগ সময় এই দুজনের কাছ থেকে বল পেয়েছেন। সমিতের সঙ্গে আপনার বোঝাপড়া এখন কেমন?
রাকিব হোসেন: সমিতদা অনেক ভালো মানুষ, মনের মানুষ। উনি অনেক মিশুক, আমাদের সঙ্গে মিশে, কথা বলে; খাওয়া-দাওয়ার পর আমাদের সঙ্গে বসে। মাঠেও ওর সঙ্গে দারুণ কাটে। তাঁর কাছে বল দিলে নিশ্চিত থাকা যায় সে বলটা রাখবে, নয়ত যত কঠিন পরিস্থিতিই হোক ও বল নিয়ে বের হয়ে যায়। কিন্তু ওর খেলাটা ফুটে না, মানুষের হয়ত চোখে পড়ে না। কিন্তু সমিতদা অনেক বড় মাপের খেলোয়াড়। সে অ্যাটাকিংয়ে অনেক চান্স ক্রিয়েট করে।
টি-স্পোর্টস: আপনাকে বলা হয় এশিয়ার অন্যতম সেরা গতিময় উইঙ্গার। শুনেছেন এরকম কিছু বা এসব পৌঁছায় আপনার কাছে?
রাকিব হোসেন: আসলে এটা আমি যে শুনি নাই তা না। এবার আমার কোচও (কাবরেরা) এটা নিয়ে আমাকে বলেছে, আগে-পরেও অনেকবার শুনেছি। ম্যাচের পর সে (কোচ) আমাকে জানায় যে তুমি বল পায়ে আজ ৩৪ কিলোমিটার গতিতে দৌড়েছো, শাবাস।
টি-স্পোর্টস: কোচের কাছ থেকে এমন প্রশংসা পেয়ে কেমন লাগছে?
রাকিব হোসেন: ভালো করলে মানুষ ভালো বলবে। তখন সবকিছু ভালো লাগে। দল জিতছে এখন মানুষ প্রশংসা করছে, আমার প্রশংসা করছে, শুনতে ভালোই লাগে। তাই চেষ্টা করি মাঠে যতক্ষণ থাকি ভালো খেলতে, দেশের জন্য খেলতে। অনেক সময় হয়, অনেক সময় হয় না। শেষ ম্যাচে যেমন হয়ে গেছে।
টি-স্পোর্টস: হামজা চৌধুরীর মতো একজন তারকা ফুটবলারের সঙ্গে খেলছেন, ড্রেসিংরুম শেয়ার করছেন, সবকিছুর অভিজ্ঞতা কেমন?
রাকিব হোসেন: কাল্পনিক, কাল্পনিক। কখনোই ভাবি নাই তাঁর (হামজা) মতো খেলোয়াড় আমরা পাবো এবং তাঁর সঙ্গে আমরা খেলতে পারব। অনেক ভাগ্যবান যে তাঁর সঙ্গে খেলতে পারছি। সর্বশেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে সেই আমাদের বাঁচিয়ে রাখছে। দেখেন ডিফেন্সে সে অনেক সাহায্য করছে। ভারতের একটা নিশ্চিত গোল সে ঠেকিয়ে দিছে। আগের ম্যাচগুলোতে সে গোল করছে। কিন্তু এই ম্যাচে তাঁর মধ্যে জয়ের ক্ষুধা দেখেছি।
টি-স্পোর্টস: ওই দিন জয়ের পর ড্রেসিংরুমে সমিত, তপু, সোহেল রানাদের নাচতে দেখা গেছে। ওই পার্টিতে আপনি ছিলেন না কেন, নাচতে না জানা, নাকি অন্য কারণে?
রাকিব হোসেন: না, না। আমিও নাচছি (হাসি)। আমিও ওখানে ছিলাম। আসলে আমি একটু পড়ে যোগ দিয়েছিলাম। মাঠে ভাইয়া আসছিল, ওনাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেরি হয়ে যায়।
টি-স্পোর্টস: ম্যাচ জয়ের পর উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং বাফুফে প্রেসিডেন্ট তাবিথ আউয়াল আপনাদের ড্রেসিংরুমে যান। কি বলছিলেন তাঁরা?
রাকিব হোসেন: ওনারা খুব অ্যাপ্রিশিয়েট করছে। বলছে তোমরা আজ ইতিহাস রচনা করছো। এই জয়টা আমাদের খুব দরকার ছিল। তখন এটা আমাদের খুব ভালো লাগছে।
টি-স্পোর্টস: অনেক সময় দেখা যায় পারফরম্যান্স করেও আপনি লাইমলাইটে নেই। আড়ালে থাকা কি আপনার নিয়তি, নাকি নিজেই চান না আপনাকে নিয়ে মানুষ আলোচনা করুক
রাকিব হোসেন: আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ না, থাকতে পছন্দ করি না। একটা পেজ (ফেসবুক) আছে কিন্তু ওটা আমি চালাই না। একটা ছোট ভাই চালায়। এমন না যে ওরে আমি ছবি দেই বা বলি তুই ছবি পোস্ট কর। ও নিজে থেকে কিছু পোস্ট করে। আমার ফেসবুক পেজ খোলা কিন্তু খেলায় আসার অনেক পড়ে। কারণ আমি এসব পছন্দ করি না। আমি চাই খেলায় মনোযোগ থাকুক।
টি-স্পোর্টস: বাংলাদেশ ফুটবল লিগে সর্বশেষ দুই মৌসুমে দেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ গোল আপনার (২০২৩-২৪ মৌসুমে ১০ গোল এবং ২০২৪-২৫ মৌসুমে ১১ গোল)। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকং ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আছে দুই গোল। এবার লিগে ব্যক্তিগত লক্ষ্য কি?
রাকিব হোসেন: গতবার আমরা লিগ জিততে পারি নাই। এবার ঘরোয়া সব ট্রফি জিততে চাই। আর ব্যক্তিগত লক্ষ্য বললে- আমি এবার আগের দুই মৌসুমের চেয়ে বেশি গোল করতে চাই।
টি-স্পোর্টস: এখন পর্যন্ত আপনার ক্যারিয়ারে সেরা ম্যাচ কোনটি?
রাকিব হোসেন: এই যে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেললাম এটাই আমার কাছে সবচেয়ে সেরা ম্যাচ। কারণ ওটা একটা ঐতিহাসিক ম্যাচ ছিল। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের এর আগে কিন্তু আমরা ভারতকে হারাতে পারিনি। এই টুর্নামেন্টে ওদেরকে প্রথমবার হারালাম।
টি-স্পোর্টস: একটা শিরোপা আবার কবে জিতবে বাংলাদেশ?
রাকিব হোসেন: ইনশা আল্লাহ আগামী সাফেই আমরা শিরোপা জিতব।
টি-স্পোর্টস: বাড়িতে আছেন। এবারের যাওয়াটা কি একটু ভিন্ন মনে হয়েছে?
রাকিব হোসেন: হ্যা। কারণ সবাই খুশি, ভারতকে হারাইছি না? তাঁরা যেন ঈদের মতো খুশি।

চোট থেকে ফিরে মাঠে নিয়মিত হতে শুরু করেছেন নেইমার। সান্তোসের হয়ে আজ মাঠে নেমে গোলও পেয়েছেন। তবে তাঁর দল ১-১ গোলে ড্র করে মিরাসলের বিপক্ষে। আর ম্যাচ শেষে ক্ষমা চাইলেন ক্লাবটির ‘রাজপুত্র’ নেইমার।
ঘরের মাঠে ব্রাজিলের লিগ সিরি ‘আ’তে আজ সকালে মিরাসলের মুখোমুখি হয় সান্তোস। ম্যাচের ৪ মিনিটেই দলকে এগিয়ে নেন নেইমার। ৬০ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। তবে ম্যাচের নায়ক হতে যাওয়া নেইমার হঠাৎ বনে যান খলনায়ক। বক্সে প্রতিপক্ষের এক ফুটবলারকে ফাউল করে বসেন ৩৩ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান তারকা। পেনাল্টি পেয়ে যায় সফরকারীরা। স্পট কিক থেকে সমতায়ও ফিরে তারা। তাতে মূল্যবান তিন পয়েন্ট অর্জনের সুযোগ হারায় সান্তোস।
এই ড্রয়ের পর লিগে ৩৪ ম্যাচ শেষে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ১৬ নম্বরে আছে সান্তোস। অবনমন অঞ্চল থেকে মাত্র এক পয়েন্ট দূরত্বে আছে নেইমারের দল। তাতে লিগের শেষ অংশের প্রতিটি ম্যাচই এখন তাদের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
ম্যাচে গোল করেও পরে নিজের ভুলে গোল দল হজম করায় ক্ষমা চান নেইমার। ম্যাচ শেষে ইনস্টগ্রামে তিনি লিখেছেন, আমরা চ্যাম্পিয়নশিপের অন্যতম সেরা দলের বিপক্ষে খেললাম। জয়ের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এবং আমি মনে করি জয় আমাদের প্রাপ্য ছিল। দলের সবাইকে এবং সমর্থকদের অভিনন্দন, যারা আবারও একটি দারুণ উৎসব করেছে! আমরা এই শেষ পর্বে একসঙ্গে লড়ব। প্রতিটি পয়েন্ট, সবকিছুই গুরুত্বপূর্ণ হবে!
এরপর নেইমার লিখেন, ‘বি:দ্র: পেনাল্টি নিয়ে দুঃখিত... এখানে অনেক ভিন্ন ধরনের মানদণ্ড আছে, আমি জানি না আসলে কী বলব, শুধু মেনে নিতে হবে! যুদ্ধ থেমে যাবে না, সান্তোস জয়ী হোক!’
চলতি মৌসুম শেষে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে শেষ হয়ে যাবেন নেইমার। গুঞ্জন আছে মেজর সকার লিগে ইন্টার মায়ামিতে সাবেক বার্সেলোনা সতীর্থ লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজের সঙ্গে আবার ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর পুনর্মিলনী দেখা যেতে পারে।

আর্জেন্টিনার ইতিহাসের অন্যতম সফল কোচ লিওনেল স্কালোনি। অনেকের মতে আলবিসেলেস্তাদের ইতিহাসেরই সেরা কোচ স্কালোনি। ২৮ বছর ট্রফি খরায় থাকা দক্ষিণ আমেরিকার এই পরাশক্তি তো তাঁর হাত ধরেই একের পর এক সাফল্য পেয়েছে। ৩৬ বছর পর দেশকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন। এমন একজন কোচকে তো আর সহজে হাতছাড়া করা যায় না।
আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া চান স্কালোনি আরও অনেক বছর দলের ডাগআউট সামলাবেন। ২০২২ বিশ্বকাপ জয়ী এই কোচকে আগামী বিশ্বকাপ সহ আরো একটি বিশ্বকাপের দায়িত্ব দিতে চান তিনি।
ওলে সামিট ২০২৫ নামে একটি বিশেষ সম্মেলনে আর্জেন্টিনার কোচিং নিয়ে কথা বলেন এএএফএ সভাপতি। স্কালোনির প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমরা ক্রীড়া প্রকল্প নিয়ে ভেবে দেখেছি: আমি চাই স্ক্যালোনি এবং তার পুরো কোচিং স্টাফ ২০৩০ সাল পর্যন্ত থাকুক। যদি আমি শুধু ফলাফলের কথা ভাবতাম, তবে আমি তাকে নিয়োগ দিতাম না। আমি এমন একটি জাতীয় দলের প্রকল্প নিয়ে ভাবছিলাম, যা আমাদের কাছে কখনো আগে ছিল না।’
আরও পড়ুন
| হোন্ডা ফুটসাল লিগ উদ্বোধন করলেন জামাল ভূঁইয়া |
|
স্কালোনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে টালমাটাল অবস্থা ছিল আর্জেন্টিনার। দলে সমন্বয়ের অভাব, খেলোয়াড়দের মধ্যে আত্ববিশ্বাসের ঘাটতি আর যোগ্য নেতৃত্বহীনতা। এমন সংকটের সময়ই ২০১৮ সালে হাল ধরেন স্কালোনি। বাকিটা তো ইতিহাসই। ৪৭ বছর বয়সী এই কোচের কোচিংয়ে ২০২১ কোপা আমেরিকা, ফিনাসিমা, ২০২২ বিশ্বকাপ এরপর ২০২৪ কোপা আমেরিকা জিতে লিওনেল মেসিরা।
২০১৮ সালের ২ আগস্ট নিয়োগ পাওয়া স্কালোনির অধীন আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচ খেলে ৭ সেপ্টেম্বর, গুয়াতেমালার বিপক্ষে। সব মিলিয়ে স্কালোনির কোচিংয়ে ৯০ ম্যাচ খেলে ৬৭টিতেই জিতেছে আলবিসেলেস্তেরা, ড্র করেছে ১৪ ম্যাচ, হার মাত্র ৯টি। মাঝে টানা ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত (২৪ জয়, ১১ ড্র) থাকার রেকর্ডও গড়ে তাঁর দল।

গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ নৈশভোজে যোগ দেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। জমকালো এই ডিনারে পর্তুগিজ মহাতারকাকে সঙ্গ দেন বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজ। নৈশভোজে সৌদি যুবরাজ সালমান ছাড়াও টেসলা ও এক্সের মালিক ইলন মাস্ক ও ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর মতো বিশ্বের বড় নাম উপস্থিত ছিলেন।
ইস্ট রুমের সামনের সারিতে বসেন রোনালদো। খুব কাছ থেকেই ট্রাম্প ও ক্রাউন প্রিন্স অতিথিদের উদ্দেশ্যে প্রদান দেন। ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে রোনালদোকে বিশেষভাবে স্মরণ করেন। ছোট ছেলে ব্যারনকে রোনালদোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মুহূর্ত নিয়ে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, তাঁর কণিষ্ঠ পুত্র ব্যারন রোনালদোর বড় ভক্ত এবং রোনালদোকে দেখার সুযোগ পেয়ে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন, ‘ব্যারন তাকে দেখেছে। এবং আমি মনে করি, সে এখন তার বাবাকে একটু বেশি সম্মান করে, শুধু এই কারণে যে আমি আপনাকে (রোনালদো) তার সঙ্গে পরিচয় করিয়েছি।’
নৈশভোজের পর রোনালদোর হাতে একটি বিশেষ উপহার তুলে দেন ট্রাম্প। আল নাসরের তারকা ফরোয়ার্ডকে ওভাল অফিসে আমন্ত্রণ জানিয়ে হোয়াইট হাউসের একটি বিশেষ সোনার চাবি উপহার দেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে ফুটবল তারকার জন্য এটি একটি প্রতীকী সম্মানসূচক উপহার।
আরও পড়ুন
| বোনাস বাঁচাতে লেভানডফস্কিকে গোল করতে নিষেধ করেছিল বার্সা |
|
রোনালদোও দারুণ এই উপহারে মুগ্ধ হন এবং সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। সেই পোস্টে সিআর সেভেন লিখেন, ‘আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, মাননীয় প্রেসিডেন্ট। আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য এবং আপনার সঙ্গে ফার্স্ট লেডির উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য, যা আমার স্ত্রী জর্জিনা এবং আমার প্রতি ছিল। আমাদের প্রত্যেকের কাছে দেওয়ার মতো অর্থবহ কিছু আছে। আমার অংশের জন্য আমি প্রস্তুত আছি, যাতে আমরা নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে পারি—এমন ভবিষ্যৎ গঠনে যা সাহস, দায়িত্ব এবং স্থায়ী শান্তি দ্বারা সংজ্ঞায়িত হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে অনেক দির পরই পা রেখেছেন রোনালদো। সবশেষ মার্কিন মুল্লুকে সফর করেছিলেন ২০১৪ সালে। আগামী বছর বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে তাঁকে আবারও যুক্তরাষ্ট্রে আসতে হবে। আরেকবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের হাত থেকে এই অধরা স্বীকৃতি যে নিতে চাইবেন রোনালদো। ক্যারিয়ারে একমাত্র বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুটটাই শুধু পাওয়া হয়নি ৪০ বছর বয়সী মহাতারকার।

বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের (বিএইচএল) আয়োজিত হোন্ডা ফুটসাল লিগ (এইচএফএল) ২০২৫-এর পর্দা উঠেছে। গতকাল বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারের (বিসিএফসিসি) কার্নিভাল হলে উদ্বোধন হয় এই টুর্নামেন্টের।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। বিশেষ মুহূর্ত হিসেবে মোটো হোন্ডা দ্য অ্যামাজোনিয়া লিমিটেড-এর পক্ষ থেকে নেইমার জুনিয়রের স্বাক্ষরিত একটি ব্রাজিলিয়ান জার্সি তুলে দেওয়া হয় জামাল ভূঁইয়ার হাতে। বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব সুসুমু মরিসাওয়া এবং চিফ মার্কেটিং অফিসার জনাব শাহ্ মোহাম্মদ আশিকুর রহমান এই স্মারকটি তাঁর হাতে তুলে দেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ৩২টি অংশগ্রহণকারী দলের লোগো উন্মোচন এবং টুর্নামেন্টের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। দেশে ফুটবলের পুনর্জাগরণে অনুপ্রাণিত হয়ে, আন্তর্জাতিক মানের ফুটবলে তরুণদের আগ্রহ বাড়াতে এই উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ হোন্ডা।
সব ধরনের খেলা বিশেষ করে ফুটবলের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর লক্ষ্যে এবারের আয়োজনকে সাজানো হয় হোন্ডা স্পোর্টস চ্যালেঞ্জ-এর তিন মূল বার্তা ‘জয়’ (এনজয়িং চ্যালেঞ্জেস), ‘গ্রোথ’ (গ্রোথিং চ্যালেঞ্জেস) এবং কানেক্টেড (কানেক্টিং চ্যালেঞ্জেস) কে কেন্দ্র করে। তরুণদের খেলাধুলায় যুক্ত করতে অনুষ্ঠানের পুরো পরিকল্পনাই সাজানো হয় এই চেতনার ভিত্তিতে।