১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৬:২০ পিএম

ভক্তরা মুখিয়ে থাকেন তাদের পছন্দের ফুটবলারের খেলায় মত্ত হয়ে থাকতে, তাঁর গোল করা দেখতে। কিন্তু নেইমার ভক্তদের জন্য এ যেন এক বিলাসীতা। যখন তাদের আকুল হয়ে চেয়ে থাকতে হয়--ব্যস, খেলুক বা না খেলুক, চোটে না পরুক নেইমার।
কিন্তু বলে না, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যে হয়। নেইমারের ক্ষেত্রেও তাই। মাঠে নামলেই কেন যেন চোটের কবলেই পড়তে হয় তাঁকে। বুধবার রাতে এক মাইলফলকের ম্যাচেও সেই দুঃখই সঙ্গী হলো তাঁর। সান্তোসের মাঠ ভিলা বেলমিরোতে তার শততম ম্যাচ। তাই মাঠে নেমেছিলেন ‘১০০’ নম্বর জার্সি গায়ে। অনেকটা দিন পর জায়গা করে নিয়েছিলেন শুরুর একাদশে। তাঁকে দেখতে মাঠে ছিল দর্শকের ভীড়, গ্যালারিতে ছিল উন্মাদনা। ম্যাচে দলের শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু স্বপ্নময় সেই আবহ বদলে গেল দুঃস্বপ্নে। প্রথমার্ধেই নেইমারকে মাঠ ছাড়তে হলো অশ্রুসিক্ত চোখে।
আরও পড়ুন
| সাহসী ফুটবলে রিয়ালকে হারিয়ে সেমিতে আর্সেনাল |
|
চোট দুর্ভাগ্য নেইমারের নিত্যসঙ্গী হয়ে আছে সান্তোসেও। অনেক দিন বাইরে থাকার পর গত রোববার ফ্লুমিনেসির বিপক্ষে ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে ফেরেন তিনি। বুধবার আতলেতিকো মিনেইরোর বিপক্ষে তাঁকে শুরুর একাদশে রাখেন কোচ সেজার সাম্পাইয়ো।
নেইমারের ফিট থাকা নিয়ে সংশয় অবশ্য ছিল শুরু থেকেই। দুই উরুতেই মোটা করে টেপ পেচিয়ে নামতে দেখা যায় তাঁকে। মাঠেও খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না তিনি।
তাঁর দল অবশ্য ২৪ ও ২৭তম মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। তবে ভুগতে থাকা নেইমার ৩৪ তম মিনিটের পর আর পারলেন না। বাঁ উরুতে হাত রেখে একটু খোঁড়াতে দেখা যায় তাকে। ডাগআউটের দিকে ইশারা করেন বদলির জন্য। উরু চেপে বসে পড়েন মাঠে। এতক্ষণ ধরে উল্লাস করতে থাকা গ্যালারিও তখন প্রায় নিশ্চুপ।
সান্তোসে নিজের ১০০ তম ম্যাচের দিনেও এমন করুণ, অসহায় পরিণতিতে কান্না ছাড়া আর কিছুই সঙ্গী হলো না নেইমারের। সেই কান্না তিনি চেপেও রাখতে পারেননি। তাঁর চোখ জোড়া অশ্রুসিক্ত হয়েছে মাঠেই। সতীর্থ ও প্রতিপক্ষ দুদিক থেকেই সকলে তখন নেইমরাকে স্বান্তনা দিচ্ছেন। শেষমেশ দুজনের সহায়তায় কার্টে বসে মাঠ ছাড়েন নেইমার। আর সে সময় গ্যালারি থেকে আসতে থাকে জোর করতালির আওয়াজ।
চোটে পড়ে আগেও নানা সময়ে চোখের পানিতে মাঠ ছেড়েছেন নেইমার। সৌদি আরবের আল-হিলাল থেকে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে গিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার মাঠে নামেন তিনি। টানা সাতটি ম্যাচে খেলেন এই তারকা, আস্তে আস্তে তাঁর মাঠে থাকার সময় বাড়তে থাকে। তবে গত ২ মার্চ করিঞ্চাসের বিপক্ষে ম্যাচে আবার চোটে পড়ে বাইরে থাকেন ছয় সপ্তাহ।
আরও পড়ুন
| ইন্তার বাধায় শেষ আটেই থামল বায়ার্নের পথচলা |
|
মাঝে ব্রাজিল জাতীয় দলে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত ওই চোটের কারণে মার্চের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দুটি ম্যাচে তিনি খেলতে পারেননি। যে উরুর চোটের কারণে তিনি বাইরে ছিলেন, সেখানেই আবার সমস্যা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। চোটের ধরন কী বা কতটা গুরুতর, তা অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানানো হয়নি।
No posts available.
১১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩৯ পিএম

সময় গড়াচ্ছে, বয়স বাড়ছে, তবু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পা আগের মতোই দৌড়াচ্ছে। তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পর্তুগালের মহাতারকা জানালেন, শিগগিরই বুটজোড়া আলমারিতে তুলে রাখবেন তিনি। রোনালদোর কথায়, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপই হবে তাঁর শেষ বিশ্বকাপ।
নিজের অবসর প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল কেবল নিউজ নেটওয়ার্ককে (সিএনএন) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোনালদো বলেন ,
‘হ্যাঁ, এটাই (২০২৬ বিশ্বকাপ) আমার শেষ বিশ্বকাপ। তখন আমার বয়স হবে ৪১, আমি মনে করি বড় মঞ্চে সেটিই হবে সঠিক সময় থামার।‘
কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ আয়োজনে হতে যাচ্ছে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ। সেই মঞ্চেই ছয় নম্বর ও শেষবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন রোনালদো।
বর্তমানে সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে খেলছেন রোনালদো। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে তাঁর গোলসংখ্যা ৯৫৩। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ১৪৩ গোলও রোনালদোর দখলে। সম্প্রতি ৪০ বছর বয়সী এই তারকা জানিয়েছেন, এক হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে চান তিনি।
গত সপ্তাহে জনপ্রিয় সাংবাদিক পিয়ার্স মর্গানের সঙ্গে এক শো'তে রোনালদো জানিয়েছিলেন, ‘শিগগিরই’ অবসর নেবেন তিনি। এবার আরও স্পষ্ট করে বললেন নিজের অবসরের কথা,
‘সত্যি বলতে, যখন আমি ‘শিগগিরই’ বলেছি, এর মানে এক বা দুই বছরের মধ্যেই আমি খেলা ছাড়ব।‘
পর্তুগাল এখনও ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার রাতে আয়ারল্যান্ডকে হারাতে পারলেই নিশ্চিত হবে রোনালদোর শেষ বিশ্বকাপ মঞ্চ।

ঘরের মাঠে ১৩ নভেম্বর প্রীতি ম্যাচে নেপাল ও এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ১৮ নভেম্বর ভারতের সঙ্গে খেলবে বাংলাদেশ। এই দুটি ম্যাচ খেলতে আজ মঙ্গলবার রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছেন সমিত সোম।
কানাডায় গতকাল সোমবার ম্যাচ খেলেন সমিত। সেই ম্যাচ খেলেই দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন কাভালরি এফসির এই মিডফিল্ডার।
আগামীকাল বুধবার পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটের আলোয় প্রাকটিস করবে হাভিয়ের কাবরেরার দল। ম্যাচ যেহেতু পরের দিন রাত ৮টায় সে কারণেই সন্ধ্যার পর ম্যাচের আগে শেষ সেশনটা করতে চান বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ।
সব ঠিক থাকলে বিকেল পর্যন্ত বিশ্রাম নিয়ে এদিন দলের সঙ্গে অনুশীলন সেশন করবেন সমিত। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নেপালের বিপক্ষে পরের দিন মাঠে দেখা যাবে তাঁকে। ধারণা করা হচ্ছে বদলি হিসেবে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে দেখা যাবে ২৮ বছর বয়সি ফুটবলারকে।
এদিকে টালমাটাল পরিস্থিতি সামলে ম্যাচের দুই দিন আগে মঙ্গলবার ঢাকায় এসে পৌঁছায় নেপাল। লাল সবুজের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলতে আজ বিকেলে ঢাকায় এসেছে নেপাল। সাম্প্রতিক সময়ে নেপালের ফুটবলাররা ঘরোয়া লিগের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। এই অস্থিরতার মধ্যে অবশ্য নির্ধারিত সূচিতে ঢাকায় আসলো নেপাল জাতীয় ফুটবল দল।

বিশ্ব ফুটবলে বর্ণবাদ এক অন্ধকার ছায়া। ফিফা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করলেও বাস্তবে এর প্রতিরোধ চ্যালেঞ্জ বটে। বিশেষ করে স্পেনের ফুটবলে বর্ণবাদের শিকড় যেন আরও গভীরে।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গত মৌসুমে স্পেনে সবচেয়ে বেশি বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন বার্সেলোনার তারকা লামিন ইয়ামাল।
স্প্যানিশ অবজারভেটরি অব রেসিজম অ্যান্ড জেনোফোবিয়া (ওবেরাক্সে)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪–২৫ মৌসুমে সামাজিক মাধ্যমে লামিন ইয়ামালকে লক্ষ্য করে ২০ হাজারের বেশি বর্ণবাদী মন্তব্য করা হয়েছে। মোট বর্ণবাদী আক্রমণের প্রায় ৬০ শতাংশই এই তারকাকে লক্ষ্য করে করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর ‘ফারো’ সিস্টেমে ৩৩ হাজার ৪৩৮টি ঘৃণামূলক পোস্ট শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এর মাত্র ৩৩ শতাংশ পোস্ট সরিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। ফেসবুক থেকে ৬২ শতাংশ পোস্ট মুছে ফেলা হয়েছে, আর ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) থেকে মাত্র ১০ শতাংশ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রিয়াল মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। মোট আক্রমণের প্রায় ২৯ শতাংশের শিকার হয়েছেন তিনি।
ইনাকি উইলিয়ামস, নিকো উইলিয়ামস, কিলিয়ান এমবাপে, আলেহান্দ্রো বালদে, ব্রাহিম দিয়াজ, রাফিনিয়া এবং আনসু ফাতিও ছিলেন টার্গেটে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব পোস্টে অনেক সময় খেলোয়াড়দের ‘সমাজের হুমকি’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ওবেরাক্সে জানিয়েছে, বড় ম্যাচগুলোর সময় অনলাইনে ঘৃণাবাচক বার্তার প্রবণতা বেড়ে যায়। উদাহরণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে অক্টোবরে অনুষ্ঠিত এল ক্লাসিকো ম্যাচ। সেসময় রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার ম্যাচে বর্ণবাদী পোস্টের সংখ্যা হঠাৎই বেড়ে যায়। ২৭ ও ২৮ অক্টোবরের মধ্যে ওই দুই দিনে প্রায় ছয় হাজারের বেশি পোস্ট শনাক্ত হয়, যার বেশিরভাগই ইয়ামাল, রাফিনিয়া ও আনসু ফাতিকে লক্ষ্য করে লেখা। বর্ণবাদ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলার পর ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও ছিলেন আক্রমণের শিকার।
স্পেনের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এলমা সাইস বলেছেন,
‘কোনো ধরনের অপমানের স্থান সমাজে নেই, বিশেষ করে এমন অপমান যা মানুষকে অমানবিক করে তোলে, এমনকি খেলাধুলার ক্ষেত্রেও না।‘

ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে বড় অঘটনের জন্ম দিল আফ্রিকার দেশ উগান্ডা। কাতারে যুবা বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে ফ্রান্স অনূর্ধ্ব–১৭ দলকে ০-১ গোলে হারাল উগান্ডা অনূর্ধ্ব-১৭ দল। ইউরোপের এই পরাশক্তিকে হারিয়ে ৪৮ দলের বিশ্বকাপে পরের রাউন্ডের টিকিটও কেটেছে তারা।
অবশ্য উগান্ডার কাছে হারলেও গ্রুপ পর্বের বাধা উতরাতে পেরেছে ফ্রান্স অনূর্ধ্ব–১৭ দল। গ্রুপ ‘কে’ এর দলগুলোর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি এক লড়াই জমে উঠে। গ্রুপপর্বের তিনটি ম্যাচ শেষে ফ্রান্স, উগান্ডা, কানাডা, আর চিলি তিনটি দলেরই সমান ৪ পয়েন্ট দাড়ায়। তাতে পরের পর্বে যাওয়ার সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায় গোল ব্যবধান।
গ্রুপ ‘কে’ এর চারটি দলই এক জয়, এক হার এবং একটি ম্যাচ ড্র করে। তবে গোল ব্যবধানে (+১) এগিয়ে থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যুবা বিশ্বকাপের পরের পর্ব নিশ্চিত করে ফ্রান্স। কানাডা আর উগান্ডার গোল ব্যবধান শূন্য হলেও মুখোমুখি লড়াইয়ে উগান্ডাকে হারানোয় পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থেকে শেষ করে কানাডা। আর গ্রুপ পর্বে সেরা দুইয়ে না থাকলেও প্রতিযোগিতার মোট ১২টি গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে থাকা সেরা আট দলে থেকে নক-আউট পর্ব নিশ্চিত করে উগান্ডা।
ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচে চোখে চোখ রেখেই লড়েছে উগান্ডা। দৃঢ় রক্ষণভাগ আর ভয়ডরহীন আক্রমণাত্মক খেলার মিশ্রণে উগান্ডা তরুণরা ফরাসিদের পুরো ম্যাচজুড়ে চাপে রাখে। ম্যাচের ১৫ মিনিট পার হতেই উগান্ডার জেমস বোগেরের গোলই ব্যবধান গড়ে দেয়। ডি-বক্সের ভেতর থেকে বাঁকানো এক শটে বল পাঠান জালের কোণে। আফ্রিকার দেশটির ফুটবল ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায় হয়েই থাকবে এই মুহূর্ত।
অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় পর্বের টিকিট কেটেছে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭ দল। গ্রুপপর্বের তিনটি ম্যাচই জিতে পরের পর্বে পা রাখে আলবিসেলেস্তা যুবারা। দুই জয় আর এক ড্রয়ে ব্রাজিলও গ্রুপসেরা হয়েছে।

বাজি কেলেঙ্কারিতে তুরস্কের ফুটবলে রীতিমতো ঝড় উঠেছে। ফুটবল ম্যাচে অবৈধ জুয়াখেলার অভিযোগে ছয় তুর্কি রেফারিকে সাময়িকভাবে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ইস্তাম্বুলের একটি আদালত। এছাড়া বাজির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে দেশটির পেশাদার লিগের ১ হাজার ২৪ জন খেলোয়াড়কে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে টার্কিশ ফুটবল ফেডারেশন (টিএফএফ)।
তুর্কি ফুটবল ফেডারেশনের (টিএফএফ) বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, যেসব খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ফুটবলে বাজি ধরার প্রমাণ মিলেছে, তাদের সবাইকে পেশাদার ফুটবল শৃঙ্খলাবিধি বোর্ডে (পিএফডিকে) পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কের শীর্ষ লিগেরই ২৭ জন খেলোয়াড় রয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তের পর টিএফএফ তুরস্কের তৃতীয় ও চতুর্থ বিভাগের সব ম্যাচ দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে। তবে শীর্ষ দুই বিভাগে খেলা আপাতত চালু থাকবে।
এর আগে গত শুক্রবার থেকে আটক থাকা আরও ১১ রেফারিকে গত সোমবার আদালতের তত্ত্বাবধানে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। টিএফএফ জানিয়েছে, ম্যাচে বাজি ধরার অভিযোগে ১ হাজার ২৪ ফুটবলারকে এরই মধ্যে শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির সামনে তলব করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ফুটবলারদের সাময়িকভাবে নিষিদ্ধও করা হয়েছে।
বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ফলে ক্লাবগুলোর স্কোয়াডে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ কারণে টিএফএফ বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার কাছে শীতকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে অতিরিক্ত ১৫ দিন সময় চেয়েছে, যাতে ক্লাবগুলো নতুন খেলোয়াড় আনতে পারে।
তুরস্কের অন্যতম বড় ক্লাব বেসিকতাস জানায়, তাদের দুই ফুটবলারের নামও পিএফডিকে-র তালিকায় আছে। তবে এক বিবৃতিতে ক্লাবটির কর্তৃপক্ষ ‘নিজেদের খেলোয়াড়দের নির্দোষ বলে বিশ্বাস’ দাবী করে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাজি ও ম্যাচ ফিক্সিং তদন্তের অংশ হিসেবে অন্তত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন ক্লাব চেয়ারম্যানও আছেন।
এই কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হয় ২৭ অক্টোবর, যখন টিএফএফ সভাপতি ইব্রাহিম হাজিওসমানওগলু জানান, শত শত রেফারি বাজি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত। তার দাবি অনুযায়ী, তুরস্কের পেশাদার লিগে কর্মরত ৫৭১ জন রেফারির মধ্যে ৩৭১ জনের বাজির অ্যাকাউন্ট ছিল এবং ১৫২ জন সক্রিয়ভাবে বাজি ধরতেন।
এদের মধ্যে শীর্ষ দুই বিভাগের ৭ জন প্রধান রেফারি ও ১৫ জন সহকারী রেফারি রয়েছেন। নিচের স্তরের লিগ থেকে আরও ৩৬ জন ‘ক্লাসিফাইড’ রেফারি ও ৯৪ জন সহকারী রেফারির নাম পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত ছয়জনই তৃতীয় ও চতুর্থ বিভাগের সহকারী রেফারি। একই তদন্তের অংশ হিসেবে ম্যাচ ফিক্সিং ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে প্রথম বিভাগের ক্লাব আয়ুপসপোরের সভাপতিকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে গত শুক্রবার থেকে আটক থাকা আরও ১১ রেফারিকে গত সোমবার আদালতের তত্ত্বাবধানে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। টিএফএফ জানিয়েছে, ম্যাচে বাজি ধরার অভিযোগে ১ হাজার ২৪ ফুটবলারকে এরই মধ্যে শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির সামনে তলব করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ফুটবলারদের সাময়িকভাবে নিষিদ্ধও করা হয়েছে।
জুয়ায় জড়িত থাকায় তুরস্কে ১৪৯ জন রেফারি বরখাস্ত ০১ নভেম্বর ২০২৫ জুয়ায় জড়িত থাকায় তুরস্কে ১৪৯ জন রেফারি বরখাস্ত এক বিবৃতিতে টিএফএফের পক্ষ থেকে বলা হয়,
‘১ হাজার ২৪ ফুটবলারকে সতর্কতামূলকভাবে শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির (পিএফডিকে) কাছে পাঠানোর কারণে ক্লাবগুলো তাদের দলীয় ঘাটতি পূরণের জন্য জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া নিচ্ছে। তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ইব্রাহিম হাজিওসমানোগ্লু তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ইব্রাহিম হাজিওসমানোগ্লুএএফপি এর অংশ হিসেবে ফিফার সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে, যাতে ২০২৫-২৬ শীতকালীন দলবদলের সঙ্গে মিলিয়ে জাতীয় স্তরে অতিরিক্ত ১৫ দিনের দলবদল ও নিবন্ধনের সময় অনুমোদিত হয়।’
তুরস্কের তৃতীয় ও চতুর্থ বিভাগ, যেখানে সন্দেহভাজন খেলোয়াড়দের মধ্যে ৯০০ জনের বেশি খেলেন, দুই সপ্তাহ ধরে এ দুটি স্তরের লিগ স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া প্রথম বিভাগের ২৭ জন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধেও জুয়ায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে, যাঁদের মধ্যে আছেন গালাতাসারায়ের খেলা জাতীয় দলের ফুটবলার ডিফেন্ডার এরেন এলমালিও। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে পেশাদার ফুটবল লিগে জুয়া কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল ১৪৯ জন রেফারি ও সহকারী রেফারিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে টিএফএফ। তুরস্কের পেশাদার ফুটবল লিগের ম্যাচে বাজি ধরার অভিযোগ উঠেছিল এসব রেফারি ও সহকারী রেফারির বিরুদ্ধে।
এই সিদ্ধান্তের পর টিএফএফ তুরস্কের তৃতীয় ও চতুর্থ বিভাগের সব ম্যাচ দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে। তবে শীর্ষ দুই বিভাগে খেলা আপাতত চালু থাকবে।
হাজিওসমানওগলু জানান, ১০ জন রেফারি প্রত্যেকে ১০ হাজারের বেশি বাজি ধরেছেন। একজন রেফারি একাই ১৮ হাজার ২২৭টি বাজি ধরেছেন, আর ১৪২ জন ১ হাজারটির বেশি ম্যাচে বাজি রেখেছেন। কিছু রেফারি অবশ্য মাত্র একবার বাজি ধরেছেন।
খেলোয়াড়, কোচ কিংবা রেফারি কারও জন্যই বাজি ধরা অনুমোদিত নয়। টিএফএফ, ফিফা ও উয়েফা তিন সংস্থার নিয়মেই এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এরই মধ্যে তুর্কি প্রসিকিউটররা ২১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ১৭ জন রেফারি ও দুই ফুটবল ক্লাবের সভাপতি।