১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৬:২০ পিএম

ভক্তরা মুখিয়ে থাকেন তাদের পছন্দের ফুটবলারের খেলায় মত্ত হয়ে থাকতে, তাঁর গোল করা দেখতে। কিন্তু নেইমার ভক্তদের জন্য এ যেন এক বিলাসীতা। যখন তাদের আকুল হয়ে চেয়ে থাকতে হয়--ব্যস, খেলুক বা না খেলুক, চোটে না পরুক নেইমার।
কিন্তু বলে না, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যে হয়। নেইমারের ক্ষেত্রেও তাই। মাঠে নামলেই কেন যেন চোটের কবলেই পড়তে হয় তাঁকে। বুধবার রাতে এক মাইলফলকের ম্যাচেও সেই দুঃখই সঙ্গী হলো তাঁর। সান্তোসের মাঠ ভিলা বেলমিরোতে তার শততম ম্যাচ। তাই মাঠে নেমেছিলেন ‘১০০’ নম্বর জার্সি গায়ে। অনেকটা দিন পর জায়গা করে নিয়েছিলেন শুরুর একাদশে। তাঁকে দেখতে মাঠে ছিল দর্শকের ভীড়, গ্যালারিতে ছিল উন্মাদনা। ম্যাচে দলের শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু স্বপ্নময় সেই আবহ বদলে গেল দুঃস্বপ্নে। প্রথমার্ধেই নেইমারকে মাঠ ছাড়তে হলো অশ্রুসিক্ত চোখে।
আরও পড়ুন
| সাহসী ফুটবলে রিয়ালকে হারিয়ে সেমিতে আর্সেনাল |
|
চোট দুর্ভাগ্য নেইমারের নিত্যসঙ্গী হয়ে আছে সান্তোসেও। অনেক দিন বাইরে থাকার পর গত রোববার ফ্লুমিনেসির বিপক্ষে ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে ফেরেন তিনি। বুধবার আতলেতিকো মিনেইরোর বিপক্ষে তাঁকে শুরুর একাদশে রাখেন কোচ সেজার সাম্পাইয়ো।
নেইমারের ফিট থাকা নিয়ে সংশয় অবশ্য ছিল শুরু থেকেই। দুই উরুতেই মোটা করে টেপ পেচিয়ে নামতে দেখা যায় তাঁকে। মাঠেও খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না তিনি।
তাঁর দল অবশ্য ২৪ ও ২৭তম মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। তবে ভুগতে থাকা নেইমার ৩৪ তম মিনিটের পর আর পারলেন না। বাঁ উরুতে হাত রেখে একটু খোঁড়াতে দেখা যায় তাকে। ডাগআউটের দিকে ইশারা করেন বদলির জন্য। উরু চেপে বসে পড়েন মাঠে। এতক্ষণ ধরে উল্লাস করতে থাকা গ্যালারিও তখন প্রায় নিশ্চুপ।
সান্তোসে নিজের ১০০ তম ম্যাচের দিনেও এমন করুণ, অসহায় পরিণতিতে কান্না ছাড়া আর কিছুই সঙ্গী হলো না নেইমারের। সেই কান্না তিনি চেপেও রাখতে পারেননি। তাঁর চোখ জোড়া অশ্রুসিক্ত হয়েছে মাঠেই। সতীর্থ ও প্রতিপক্ষ দুদিক থেকেই সকলে তখন নেইমরাকে স্বান্তনা দিচ্ছেন। শেষমেশ দুজনের সহায়তায় কার্টে বসে মাঠ ছাড়েন নেইমার। আর সে সময় গ্যালারি থেকে আসতে থাকে জোর করতালির আওয়াজ।
চোটে পড়ে আগেও নানা সময়ে চোখের পানিতে মাঠ ছেড়েছেন নেইমার। সৌদি আরবের আল-হিলাল থেকে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে গিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার মাঠে নামেন তিনি। টানা সাতটি ম্যাচে খেলেন এই তারকা, আস্তে আস্তে তাঁর মাঠে থাকার সময় বাড়তে থাকে। তবে গত ২ মার্চ করিঞ্চাসের বিপক্ষে ম্যাচে আবার চোটে পড়ে বাইরে থাকেন ছয় সপ্তাহ।
আরও পড়ুন
| ইন্তার বাধায় শেষ আটেই থামল বায়ার্নের পথচলা |
|
মাঝে ব্রাজিল জাতীয় দলে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত ওই চোটের কারণে মার্চের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দুটি ম্যাচে তিনি খেলতে পারেননি। যে উরুর চোটের কারণে তিনি বাইরে ছিলেন, সেখানেই আবার সমস্যা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। চোটের ধরন কী বা কতটা গুরুতর, তা অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানানো হয়নি।
No posts available.
২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৩ এম
২৮ অক্টোবর ২০২৫, ৭:৪০ পিএম

জিতলে নিশ্চিত শেষ আট। হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়। ২০২৫ কারাবাও কাপের এমন এক শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ব্রাইটনের মুখোমুখি হবে আর্সেনাল।
আর্সেনালের ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে আগামী শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে দুইটায় মাঠে গড়াবে বাঁচা-মরা এই ম্যাচ। ম্যাচের আগে দুঃসবাদ জানালেন গার্নারদের স্প্যানিশ কোচ মিকেল আরতেতা।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে আরতেতা জানিয়েছেন, কারাবাও কাপে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে উইলিয়াম সালিবা ও গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লিকে পাচ্ছে না আর্সেনাল। দুইজনই চোটে ভুগছেন। তবে দুটি সুসংবাদও দিয়েছেন তিনি। ডেকলান রাইস ও রিকার্ডো কালাফিওরি চোট কাটিয়ে প্রস্তুত ঘরের মাঠে লড়াইয়ের জন্য।
আরতেতা বলেছেন,
‘সালিবা খেলতে পারবেন না। সে চোটে। রাইস ও কালাফিওরি প্রস্তুত পরের ম্যাচের জন্য। সালিবার মতো মার্তিনেল্লিও চোটে। তাকেও পাওয়া যাবে না পরের ম্যাচে।’
বুকায়ো সাকা গত সপ্তাহে অসুস্থ ছিলেন। ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ম্যাচে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে তাঁকে বদলি করা হয়। তবে আরতেতা নিশ্চিত করেছেন ব্রাইটনের বিপক্ষে দেখা যাবে সাকাকে।

এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে গ্রুপ পর্বের শুরুটা বাংলাদেশের পাঁচবারের লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের জন্য শুভ হয়নি। প্রথম ম্যাচে ওমানের লিগ চ্যাম্পিয়ন আল সিবের বিপক্ষে ২-৩ গোলে হারের পর কোয়ার্টার ফাইনালের আশা রক্ষার জন্য ক্লাব আল আনসারের বিপক্ষে জয় একমাত্র বিকল্প ছিল। লিগে দেশের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী ক্লাব দেখল মুদ্রার উল্টোপিঠ। লেবাননের জায়ান্টদের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরে মারিও গোমেজের দলের কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে।
কুয়েতের আল সাবাহ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় ‘বি’ গ্রুপের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আল আনসারের বিপক্ষে খেলতে নামে বাংলাদেশ। দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ও লেবাননের ক্লাব—দু’দলই হার দেখেছিল। হারের ব্যবধানও একই, ২-৩ গোলে। আজ যে দল জিতবে, তারা শেষ আট নিশ্চিতের পথে এগিয়ে যাবে—এমন সহজ সমীকরণ মেলাতে পারেনি বসুন্ধরা কিংস। লিগ থেকে কার্যত বিদায়ঘণ্টা বেজেছে বাংলাদেশের ক্লাবটির।
আরও পড়ুন
| ফিফা বিশ্বকাপে আকাশছোঁয়া বিস্ময়, সৌদি আরবের ‘স্কাই স্টেডিয়াম’ |
|
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসের প্রতিপক্ষ ক্লাব আল কুয়েত। এটি অনেকটা নিয়মরক্ষার ম্যাচ। গ্রুপ ‘বি’ থেকে শীর্ষ পয়েন্টধারীরাই পা রাখবে শেষ আটে। সেক্ষেত্রে লড়াইটা হবে আল সিব ও আল আনসারের মধ্যে।
এদিন ম্যাচঘড়ির ১৫ মিনিটে লিড নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয় বসুন্ধরা কিংসের। কর্নার থেকে সিনিয়র সোহেল রানার জোরালো শট মাজিদি ওসমানের পা ছুঁয়ে পৌঁছে রাকিব হোসেনের সামনে। জাতীয় দলের এই ফরোয়ার্ড হেলায় নষ্ট করেন সুযোগ। তাঁর ডান পায়ের শট বারের অনেক ওপর দিয়ে চলে যায়। নিজের এই হেন কাণ্ডের জন্য বিরক্তিও প্রকাশ করেন ২৬ বছর বয়সী রাইট উইঙ্গার।
২০তম মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে একপ্রকার ছোঁ মেরে বল নেন নাবীব নেওয়াজ জীবন। পাস দেন দরিয়েলতন গোমেজ নাসিমেন্তোকে। বল পেয়েই ছুটতে থাকেন ব্রাজিলীয়ান রাইট উইঙ্গার। তাঁকে থামাতে পেছন পেছন ছোটেন আনসারের চার-পাঁচজন ফুটবলার। তাতে অবশ্য কাজ হয়নি, চিতার বেগে বক্সে ঢুকে পড়েন দরিয়েলতন। ওয়ান-টু অ্যাকশনে চলে যান একপর্যায়ে। তাঁর সামনে তখন কেবল প্রতিপক্ষ গোলকিপার আসাদ। বসুন্ধরা কিংসের দুর্ভাগ্য নাকি দরিয়েলতনের—কে জানে—ব্রাজিলীয়ান উইঙ্গারের আগেই বল পৌঁছে যায় আল আনসার গোলকিপারের গ্লাভসে।
আরও পড়ুন
| ক্যানসারের কাছে হার মানলেন সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড |
|
২৯তম মিনিটে আক্রমণে ওঠে ক্লাব আল আনসার। বাংলাদেশের রক্ষণদেয়ালের আশপাশে বল ওয়ান-টু খেলতে থাকে দলটির ফরোয়ার্ডরা। বারবার চেষ্টাতেও সুযোগ হচ্ছিল না ডিফেন্সে চিড় ধরানোর। উপায়ন্তর না পেয়ে দূরপাল্লার শট নেন আবুবকর জিবরিন আকুকি। লেবানিজ মিডফিল্ডারের সে শটে চোখের শান্তির চেয়ে বিরক্তিই বেশি ঠেকেছে।
৩২তম মিনিটে একপ্রকার গোল পেয়ে যাচ্ছিল আল আনসার। বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠে দলটি। মিডফিল্ডে প্রথমে দুজনকে কাটিয়ে বল যায় ওসমানের কাছে। বল পাওয়া মাত্রই তপু বর্মনকে ড্রিবল করে বক্সের কাছে পৌঁছে যান ৩১ বছর বয়সী এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। তবে তাঁর প্রচেষ্টা বিফলে যায়—আড়াআড়ি শট বারের ডানপ্রান্ত ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
ওসমান ফের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ান বসুন্ধরা কিংসের জন্য। এর জন্য অবশ্য বেশি দায়ী কিংস ডিফেন্ডার তাজউদ্দিন। মিডফিল্ড থেকে রফিক মাদনিনের দূরপাল্লার শট হেডে ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলেন , হিতে বিপরীত হয়। বক্সের বাইরে চাতক পাখির মতো অপেক্ষমাণ ওসমান চেস্ট ট্র্যাপে বল নিয়ন্ত্রণে নেন। কয়েক গজ সামনে থেকে শটও নেন। কিংস এ যাত্রাতেও বেঁচে যায়। শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান তপু। ওসমানের বাঁ পায়ের জোরালো শট সোজা গিয়ে লাগে বসুন্ধরা কিংস অধিনায়ক তপুর বুকে। তাতেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বল চলে যায় বারের অনেক ওপরে।
আরও পড়ুন
| ক্ষুব্ধ বাটলার হঠাৎ খুশি |
|
শেষ রক্ষা অবশ্য হয়নি বসুন্ধরা কিংসের। ৪৩ মিনিটে গোল হজম করে বাংলাদেশের ক্লাব। গোলবার থেকে প্রায় ১৯–২০ গজ দূরে আল আনসারের ফিলিস্তিনি ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ হেবাউসকে ফাউল করে বসেন রাকিব। সেটপিস থেকে স্পটকিকের দায়িত্ব পড়ে হেবাউসের। তাঁর বুলেটগতির শট দারুণ হেডে জালে জড়ান আকুকি। নাইজেরীয় ফরোয়ার্ডের বল বারের সামনে পৌঁছে। সেটি ক্লিয়ার করতে গিয়ে উল্টো জালে জড়িয়ে বসুন্ধরা কিংস গোলরক্ষক শ্রাবন।
দ্বিতীয়ার্ধে ৫২ মিনিটে লিড দ্বিগুণ করার সুযোগ তৈরি হয় ক্লাব আল আনসারের। ডি বক্সের মধ্যে এমানুয়েল টনির কড়া ট্যাকেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন হেবাউস। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। আলি তনাই কিক নেন—বারের ডানদিকে মারা সে শট দারুণভাবে রুখে দেন শ্রাবন।
আরও পড়ুন
| নেগ্রেইরা কেলেঙ্কারিতে আবার আইনি চাপে বার্সা |
|
৭৬ মিনিটে লিড দ্বিগুণ করে ক্লাব আল আনসার। বক্সে গোলের উদ্দেশ্যে শট নেওয়ার আগে তপুর পায়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে যান আকুকি। তাতেই পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। সেখান থেকে গোল করেন হিশেম খালফাল্লাহ। যদিও রেফারির এ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
বসুন্ধরা কিংসের কফিনে শেষ পেরেক ডুকে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে। মিডফিল্ড থেকে পাওয়া বল নিয়ে বক্সের সামনে পৌঁছে যান হেবাউস। যদিও তাঁর সামনে ছিলেন তাজউদ্দিন ও টনি। বসুন্ধরার দুই মিডফিল্ডারকে ড্রিবলিং করে বাঁ প্রান্ত দিয়ে চিপ শট নেন ফিলিস্তিনি ফরোয়ার্ড। তাতেই ৩-০ গোলে হেরে চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টারে ওঠার স্বপ্ন ফিকে হয়ে পড়ে বসুন্ধরা কিংসের।

২০৩৪ ফিফা বিশ্বকাপকে ইতিহাসের সবচেয়ে ভবিষ্যতমুখী ও সাহসী টুর্নামেন্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে চায় সৌদি আরব। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন, সরকারের প্রস্তাবনায় রয়েছে এমন একটি স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা, যা পৃথিবীর কোনো স্থাপনার মতো হবে না। এটি হবে আকাশে উঁচু একটি স্কাইস্ক্রেপারের (আকাশছোঁয়া ভবন) ওপর। স্টেডিয়ামের উচ্চতা ১১৫০ ফুট হবে।
দিয়ারিও এএসের প্রতিবেদন, নামের মতোই ‘স্কাই স্টেডিয়াম’ হবে নেওম শহরের কেন্দ্রে। নেওম হলো দেশটির উত্তর-পশ্চিম মরুভূমিতে নির্মাণাধীন একটি স্মার্ট মেগাসিটি। সৌদি আরবের অন্যতম বৃহৎ তেল কোম্পানির সহায়তায় স্টেডিয়ামটি সম্পূর্ণ সৌর ও বায়ু শক্তিতে চলবে। দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৬ হাজার।
আরও পড়ুন
| ক্যানসারের কাছে হার মানলেন সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড |
|
প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্মাণকাজ শুরু হবে ২০২৭ সালে, আর কাজ শেষ হওয়ার আশা করা যাচ্ছে ২০৩২ সালে। সৌদি কর্মকর্তাদের মতে, এই স্টেডিয়াম হবে দেশের ক্রীড়া অবকাঠামোর পরিবর্তনশীল প্রকল্পের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।
দেশব্যাপী ১৫টি নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সৌদি সরকারের- যেগুলো সর্বাধুনিক স্থাপত্য ও টেকসই প্রযুক্তি অনুযায়ী নকশা করা হবে।
আরও পড়ুন
| ক্ষুব্ধ বাটলার হঠাৎ খুশি |
|
নেওম বিশ্বের অন্যতম সাহসী নগর উন্নয়ন প্রকল্প, যা গাড়িহীন, এআই-চালিত এবং মরুভূমি ও পাহাড়ের মধ্যে বিস্তৃত। বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তাবিত এক স্টেডিয়াম এমনভাবে ডিজাইন করা হবে, যা পাহাড়ের পাশে তৈরি হবে। নৌকা বা ট্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে প্রবেশযোগ্য করা হবে।
তবে স্কাইস্ক্রেপারের উপরে স্টেডিয়ামের ধারণাটি সেই ভবিষ্যতমুখী স্বপ্নকে আরও দূরে নিয়ে গেছে। বিশ্বাস করা যেন কঠিন হবে, ফুটবল স্টেডিয়াম আকাশের মেঘের মধ্যে অবস্থান করছে।

বয়স ৪২। এই বয়সে অনেক ফুটবলার দিব্যি মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিনশিপের ব্রিস্টল সিটির সাবেক ফরোয়ার্ড মারভিন ব্রাউনকে হার মানতে হলো মরনব্যাধী ক্যানসারের কাছে।
আজ বিবিসি স্পোর্টসের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর গতকাল (সোমবার) নিজ বাসায় পরলোকগমন করেছেন মারভিন। পিত্তনালীর ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি।
জানা গেছে, দীর্ঘসময় হাসপাতালে থাকার পর গত সপ্তাহে বাড়িতে ফেরেন মারভিন। পরিবারের সঙ্গে কিছুদিন ব্যয় করেন। এরপর সোমবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
১৯৯৯ সালে মাত্র ১৬ বছর ৭১ দিন বয়সে চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক হয়েছিল মারভিনের। ২০০৪ সালে ফরেস্ট গ্রিন রোভার্সে নাম লেখানোর আগ পর্যন্ত অভিষিক্ত ক্লাবের জার্সিতে ২৬ ম্যাচ খেলেন তিনি। ক্লাবটির অনূর্ধ্ব ১৬ ১৭ দলের নির্ভরযোগ্য প্লেয়ার ছিলেন ইংল্যান্ডের ইংলিশ ফুটবলার।
খেলোয়াড়ি জীবন শেষে ২০২৪ সালে কোরশাম টাউন এফসির জয়েন্ট ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন মারভিন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্লাবের খেলোয়াড় ও স্টাফদের মধ্যমণি হয়ে ওঠেন। তাঁর যোগদানের পরই ১০টি ম্যাচ জিতে টাউন এফসি। অথচ সেসময়ে বেশ খারাপ সময় পার করছিল ক্লাবটি।
সাদামাটা জীবন যাপন করা মারভিন মৃত্যুকালে পরিবারের জন্য তেমন কিছুই রেখে যেতে পারেননি। ফলে তার পরিবারের জন্য কমিউনিটি এবং মানুষের সাহায্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। ফান্ডরেইজারের মাধ্যমে তাঁর স্ত্রী আলেক্সিস এবং দুই কন্যার জন্য ৬৩ হাজার পাউন্ডেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। এই অর্থ পরিবারকে সাময়িকভাবে আর্থিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে, যেমন দৈনন্দিন খরচ, চিকিৎসা খরচ, এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তার জন্য।

সাড়ে তিন মাস পর মাঠে ফিরে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হারে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। পরের ম্যাচে পরাজয়ের ব্যবধান আরও বেড়েছে, ফল ৫-১। দুটি হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর হেড কোচ পিটার বাটলারের ভিন্ন মত; হঠাৎ ক্ষুব্ধ, হঠাৎ খুশি।
গত শুক্রবার ব্যাংককের থনবুরি প্রাকটিস গ্রাউন্ডে হারের পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় বাটলার বলেন,
'কয়েকজন ফুটবলার ভুল মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছে, এমন গাফিলতি আমি কিছুতেই সহ্য করব না।'
এক দিন যেতেই বদলায় নারীদের ব্রিটিশ কোচের সুর। দ্বিতীয় ম্যাচের আগের দিন রোববার জানান,
‘কয়েকজনের সঙ্গে আমি আলাদাভাবে কথা বলেছি। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।’
সোমবার মাঠে নেমে মেয়েদের পারফরম্যান্সের উন্নতি কতটা হয়েছে তা হয়ত ম্যাচের স্কোর লাইনেই দৃশ্যমান।
সেই ম্যাচ শেষে কোচের প্রতিক্রিয়া কেমন হয় সেটি ছিল জানার অপেক্ষা। এবার বাটলারের সুর আরও নরম,
‘খেলার কিছু দিক নিয়ে আমি সত্যিই সন্তুষ্ট, যদিও কিছু জায়গায় আমরা সংগ্রাম করবই। বিশেষ করে শারীরিক দিক, রিসোর্স, অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধায়।’
সুযোগ-সুবিধায় ও অনুশীলনে পিছিয়ে থেকে আগের ম্যাচেও তো নেমেছিল বাংলাদেশ। তবে সেই ম্যাচের পর কেন ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন সেটি কিছুটা বিস্ময়। এমনকি ৫-১ গোলে হারের পর এটাও জানান, থাইল্যান্ডে তাদের মাঠে ১০ বার খেললে বাংলাদেশ নাকি ৯ বারই হারবে। যদিও দেশ ছাড়ার আগে জেতার কথাই বলে যান বাংলাদেশ কোচ।
ভারতের কাছে হেরে ২০২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় হতে যাওয়া এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করতে পারেনি থাইল্যান্ড। তবে দুবার বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাদের। কিন্তু তাদের বিপক্ষে লড়াই করতে পারবে না বাংলাদেশ, এমনটা মনে করেন না সাবেক ও বিশ্লেষকেরা।
সে যাই হোক, বাস্তবতাই হয়ত বুঝিয়ে দিতে চাইছেন বাটলার। তবে সেটি একেক ম্যাচে একেক রকম কেন তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। আবার ম্যাচ খারাপ খেললে সেটি শুধরে দেবেন কোচ। ড্রেসিংরুমে কথা বলে সমস্যা ঠিক করে নেবেন, খেলোয়াড়েরাও হয়তো এমনটাই প্রত্যাশা করেন। বাটলার হাঁটলেন ভিন্ন পথে, বাফুফের পাঠানো ভিডিও বার্তায় খেলোয়াড়দের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিলেন।
কঠিন বাস্তবতার মুখে বাটলারের দল এবারই প্রথমস তা-ও কিন্তু নয়। গত জুন-জুলাইয়ে মিয়ানমারে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই খেলেন ঋতুপর্ণা-মনিকারা। তখনকার র্যাঙ্কিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা ঘরের মাঠের মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারায় তাঁরা।
সেই টুর্নামেন্টেই প্রথম ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনকে ৭-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে বাংলাদেশ। কিন্তু ওই দলের সঙ্গে এই দলের যেন বিস্তর পার্থক্য। ঠিক এখানেই কি দ্বিমত বাটলারের?
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার রেহানা পারভীনের টি-স্পোর্টসকে বলেন,
‘তিন মাস আগের আর পরের দলের সঙ্গে অনেক পার্থক্য। এখানে কোচ দায় এড়াতে পারেন না। ফলাফল যাই হোক আমাদের কিছু জায়গায় দুর্বলতা স্পস্ট মনে হলো। ডিফেন্সে যারা আছে তাঁদের খারাপ বলব না, তবে অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে। জানি না মাসুরা (পারভীন), সাবিনাদের (খাতুন) কেন দলে নেওয়া হচ্ছে না। তারা তো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। বড় ম্যাচে আমাদের অভিজ্ঞ ফুটবলার নামাতে হবে।’
সাফজয়ী সাবেক ফুটবলার সীরাত জাহান স্বপ্নার মতে, খেলোয়াড়দের কারো কোনো সমস্যা বা ঘাটতি থাকলে কোচ যেন তাঁদের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করেন। তিনি বললেন,
‘যেহেতু আমি এই কোচের সঙ্গে কাজ করিনি, তাঁর সম্পর্কে বলতে পারব না। তবে কোনো খেলোয়াড়ের যদি অপ্রোচ বা খেলায় ঘাটতি থাকে, সেটা তাঁকে আলাদাভাবে বলতে পারেন।’
অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের দলে ফেরানো প্রসঙ্গে স্বপ্না বলেন,
‘যদি মাসুরা-সাবিনারা ফিট থাকে, আর দলে অভিজ্ঞতার যদি ঘাটতি থাকে, তাহলে তাদরে ফেরানো যেতে পারে। এটা আমার ব্যক্তিগত মত।’
সবশেষ ম্যাচে বাংলাদেশের রক্ষণের দুর্বলতা ছিল স্পষ্ট। অধিনায়ক আফঈদাসহ শামসুন্নাহার (সিনিয়র), নবিরনদের স্লো রানের সুযোগ নিয়েছে প্রতিপক্ষ দলটি। বাংলাদেশের পাঁচটি গোল হজমের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল কোচের হাই লাইন ডিফেন্স। থ্রু পাস, উড়ন্ত বলে প্রায় সময়ই বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের পরাস্ত করেছেন স্বাগতিক ফরোয়ার্ডরা। খুব সহজেই গোলের সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা। গোলরক্ষক রুপ্না চাকমা কয়েক দফা পোস্ট থেকে বেরিয়ে এসেও দলকে গোল হজম থেকে রক্ষা করতে পারেননি। এই ম্যাচে তারপরও একাধিক সেভ করেছেন তিনি, তা না হলে পরাজয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারতো।
প্রথম ম্যাচে হারের পর সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলা কোচের তির্যক মন্তব্য কতটা শৃঙ্খলাবদ্ধ- তা নিয়ে হচ্ছে সমালোচনা। নিয়ম-শৃঙ্খলা নিয়ে শিষ্যদের সবচেয়ে বেশি পাঠ করিয়ে থাকেন কোচরা। সেই নিয়মের অধ্যায় তো আবার কোচদের জন্যও রয়েছে!
হাই লাইন ডিফেন্সকেই হারের বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। থাইল্যান্ড থেকে দল আজ দেশে ফেরার কথা। সফরে কোচ বাটলারের দুই-তিন দফায় মন্তব্য কীভাবে দেখছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ অবশ্য এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন। থাইল্যান্ড সফর নিয়ে আগামীকাল সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।