যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হওয়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে আসেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বাফুফে ভবনে বৈঠক করেন সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারের সাথে।
এর পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আসন্ন ২৬ অক্টোবরের নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। আসিফ মাহমুদ জানান,
“পূর্বের কাউন্সিলরদের রেখে নির্বাচন করার বিপক্ষে আমি। কিন্তু ফিফার নিয়ম ও বাফুফের যে স্বায়ত্তশাসন সেটার প্রতি সম্মান রাখতেই হবে। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, ডিএফএর অনেক কাউন্সিলরই পলাতক আছেন। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনটা আসলে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে, সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে।”
এরইমাঝে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি। তবে জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে আগের মতো। কারণ ডিএফএতে হাত দেয়ার সুযোগ নেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। বাফুফের নির্বাচনে ভোট দেয় ডিএফএ প্রতিনিধিরা। ডিএফএ নিয়ে সরাসরি সমালোচনা করেন তিনি,
“ভোট আসলেই ডিএফএগুলো সরব হয়। নিয়মিত জেলা পর্যায়ে লিগ হয় না। এরকমটাই শুনেছি। এর দায় যারা এত দিন ছিলেন বাফুফেতে তাদের।”
দেশের ফুটবলে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা বলা ও বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে বলে জানিয়েছেন আসিফ মাহমুদ।
৭ আগস্ট ২০২৫, ৪:১৬ পিএম
গাজায় এবার এক সাবেক তারকা ফুটবলারকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলী বাহিনী। ফিলিস্তিন জাতীয় দলের ‘পেলে’ বলে খ্যাত সাবেক ফরোয়ার্ড সুলাইমান আল-ওবেঈদ হামলায় নিহত হয়েছেন। ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে ৪১ বছর বয়সী ওবেঈদ গাজার দক্ষিণাংশে মানবিক সহায়তা পেতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। এমন সময় হঠাৎ আক্রমণে নিহত হন তিনি। ফিলিস্তিন ফুটবল এসোসিয়েশন (পিএএফ) এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করেছে।
গাজায় জন্ম নেয়া সুলাইমান ক্যারিয়ার শুরু করেন সার্ভিসেস বিচ ক্লাবের হয়ে, এরপর ওয়েস্ট ব্যাংকের ক্লাব আল আমারি ইয়ুথের হয়ে খেলেছেন দীর্ঘ সময়। বেশ ক’বার হন সর্বোচ্চ গোলদাতা। পাঁচ সন্তানের জনক সুলাইমানকে ‘পেলে অব প্যালেস্টাইন’ বলা হয়! ২০০৭ সালে শুরু হয় তাঁর জাতীয় দলের ক্যারিয়ার। শেষ ম্যাচটি খেলেন ২০১৩ সালে। জাতীয় দলের হয়ে ২৪ ম্যাচে ২ গোল করেছেন আক্রমণাত্মক এই ফুটবলার।
ফিলিস্তিন ফুটবল এসোসিয়েশন জানিয়েছে-
“দীর্ঘ পেশাদার ক্যারিয়ারে আল-ওবাঈদ ১০০’র বেশি গোল করেছেন। ফিলিস্তিন ফুটবলের বড় এক তারকা সে।”
গাজা স্ট্রিপ পেশাদার লিগে পরপর তিন মৌসুম সর্বোচ্চ গোলদাতাও ছিল আল-ওবাঈদ। ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে গোল্ডেন বুটের পুরস্কার জেতে সে।
সুলাইমানের মৃত্যুতে গভীর শোক নেমে এসেছে বিশ্ব ফুটবল অঙ্গনে! কিংবদন্তি এরিক কাঁতোয়া তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে লিখেছেন-
“ফিলিস্তিন জাতীয় দলের ফুটবলার সুলাইমান আল-ওবাঈদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল! আমরা তাদের আর কত গণহত্যা করতে দেব? ফিলিস্তিনের মুক্তি চাই।”
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের গণহত্যা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত খেলাধুলা সংশ্লিষ্ট শহীদের সংখ্যা ৬৬২! ফুটবল এসোসিয়েশন সংশ্লিষ্ট শহীদ মানুষের সংখ্যা ৩২১! শোকস্তব্ধ ফিলিস্তিনের ক্রীড়াঙ্গন। এদিকে, সম্প্রতি ফিলিস্তিন অলিম্পিক কমিটি জানিয়েছে শুধু গত জুলাই মাসেই গাজা ও পশ্চিম তীরে ৪০ জন ফিলিস্তিনি অ্যাথলেটকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
গাজায় গণহত্যা শুরু হওয়ার পর থেকে গত ২২/২৩ মাসে ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে অসাধ্য সাধন করেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। চারটি শ্রেয়তর দলের বিপক্ষে অপরাজিত থাকার রেশ হিসেবে এক ধাক্কায় ২৪ ধাপ উত্তরণ হয়েছে আফঈদা-সাগরিকাদের। ১২৮ থেকে ১০৪ নাম্বারে উত্তরণ হয়েছে নারীদের। বাংলাদেশ হয়েছে 'বেস্ট ক্লাইম্বার!' ফিফা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হালনাগাদ র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের এই উত্তরণকে আলাদাভাবে উল্লেখ করেছে, কারণ এটিই ছিল যে কোন দেশের সর্বোচ্চ লাফ। ১৯৭ দেশের র্যাঙ্কিংয়ে এখন ১০০’র মধ্যে ঢোকার অপেক্ষায় বাংলাদেশ দল।
একের পর এক সুখবর আসছে নারী ফুটবল ঘিরে। প্রথমবারের মত এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে নারীরা। আছে ২০২৭ নারী বিশ্বকাপে খেলার হাতছানি। সেইক্ষণে ইতিহাস সেরা র্যাঙ্কিংয়ে নারী দল। সর্বশেষ র্যাঙ্কিংয়ে ৮০.৫১ পয়েন্ট যোগ হয়েছে বাংলাদেশের হিসেবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এককালীন হিসেবে এত পয়েন্ট আর কখনও পায়নি বাংলাদেশের ফুটবল। এগিয়েছে ভারতও, ৭ ধাপ এগিয়ে তাদের র্যাঙ্কিং এখন ৬৩! যে মিয়ানমারকে হারিয়ে বাংলাদেশ এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বে তাদের র্যাঙ্কিং একধাপ নেমেছে, তারা আছে ৫৬ নাম্বারে।
২১১ দেশের পুরুষ র্যাঙ্কিং ইতিহাসে অবশ্য সেরা লাফ ২৮ ধাপের, যদিও পুরুষ দলের বর্তমান র্যাঙ্কিং ১৮৪! সাফল্যের বিচারে ইতিমধ্যে এগিয়ে গেছে নারীরা। এরআগে ২০১৩ ও ২০১৭ সালে দু’বার ১০০ নাম্বার র্যাঙ্কিংয়ে পৌঁছেছিল নারী দল।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আগে প্রীতি ম্যাচে জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার মত শক্তিশালী দু’টি দেশের বিপক্ষে ড্র করে বাংলাদেশ। এরপর এশিয়ান কাপে হারায় মিয়ানমার ও বাহরাইনের মত শক্তিশালী দলকে, যার প্রভাব পড়েছে র্যাঙ্কিংয়ে।
ইউরো রানার্সআপ স্পেন টেবিলের শীর্ষে উঠেছে। দুই নাম্বারে নেমে গেছে সবচে সফল দেশ যুক্তরাষ্ট্র। পরের দুই অবস্থানে সুইডেন ও ইংল্যান্ড। কোপা আমেরিকা জিতলেও তিন ধাপ অবনমন হয়েছে ব্রাজিলের, তারা আছে ৭ নাম্বারে। শীর্ষ দশে আছে এশিয়ার দুই দেশ, জাপান ৮ নাম্বারে, আর উত্তর কোরিয়া ১০ নাম্বারে। চীন ১৬ ও দক্ষিণ কোরিয়া আছে ২১ নাম্বারে।
এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দারুণ সূচনা করল বাংলাদেশ। র্যাঙ্কিংয়ে ২১ ধাপ এগিয়ে থাকা শক্তিশালী লাওসকে বড় ব্যবধানেই হারাল পিটার বাটলারের দল, যা ভালোভাবেই আশা জাগাল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।
ভিয়েনতায়েনে নিউ লাওস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বুধবারের ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
এই জয়ে ‘এইচ’ গ্রুপে আপাতত শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। এখান থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে সরাসরি জায়গা মিলবে চলতি বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য মূল পর্বে। রানার্স-আপ হলেও থাকবে সুযোগ। সেরা তিন রানার্স-আপ দলও পাবে মূল পর্বের টিকিট।
সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক মিলিয়ে লাওসের বিপক্ষে এটা ছিল বাংলাদেশের প্রথম সাক্ষাৎ। প্রথম ২০ মিনিটে কয়েকটি ভালো সুযোগ নষ্টের পর ৩৬তম মিনিটে মেলে সাফল্য। শান্তি মার্ডির কর্নার থেকে হেড করে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন মোসাম্মাৎ সাগরিকা।
এরপর ৫৮তম মিনিটে মুনকি আক্তার দারুণ একটি ড্রিবলিংয়ের পর নিখুঁত শটে ব্যবধান ২-০ করেন। তবে ইনজুরি টাইমে লাওস এক গোল শোধ দিলে কিছুটা রোমাঞ্চ জাগে ম্যাচে। তবে শেষ মুহূর্তে তৃষ্ণার পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করে জয় নিশ্চিত করেন সাগরিকা।
বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচে ৮ আগস্ট, প্রতিপক্ষ পূর্ব তিমুর, এরপর ১০ আগস্ট শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে সাগরিকারা।
চলতি বছর কয়েকবারই চোটের শিকার হয়েছেন। আর তাই লিওনেল মেসির সাম্প্রতিক চোটের বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। তবে ইন্টার মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাসচেরানো বেশ নির্ভারই আছেন বিষয়টি নিয়ে। তিনি আশাবাদী, আর্জেন্টিনা তারকার চোট গুরুতর হবে না।
গত শনিবার লিগস কাপের ম্যাচে নেকাক্সা-এর বিপক্ষে ম্যাচের ১১তম মিনিটে ডান পায়ে চোটে পেয়ে মাঠ ছাড়েন মেসি। এরপর সেখান থেকে সরাসরি চলে যান ড্রেসিংরুমে। মায়ামি এক বিবৃতিতে জানায়, ৮ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসির ফেরাটা নির্ভর করছে তার চোটের ধরণ এবং সেরে ওঠার প্রক্রিয়ার ওপর।
এই চোটের কারণে বুধবার পুমাস ইউএনএএম-এর বিপক্ষে লিগস কাপের ম্যাচ মিস করবেন মেসি। তবে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মাসচেরানো বলেছেন, শীঘ্রই ফিরেন তাদের অধিনায়ক।
“আমি মেসির সাথে কথা বলেছি। ক্লাব যে বিবৃতিটি দিয়েছে, সেটা খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। মেসির চোটের খারাপ খবরের মধ্যেও এটা কিছুটা ভালো দিক যে, চোটটা বড় নয়। আমরা মেসির বেলায় মাঠে ফেরার সময় নিয়ে কোনো অনুমান করতে চাই না। সাধারণত সে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। তাই কালকের (লিগস কাপ) ম্যাচে না খেললেও তার ফেরার বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।”
মাসচেরানো আশাবাদী হলেও মেসির পরবর্তী ম্যাচে অংশ নেওয়া নিয়েও এখনো অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে। বুধবারের ম্যাচের পর মায়ামির পরের ম্যাচ আগামী রবিবার, এমএলএসে তাদের প্রতিপক্ষ অরল্যান্ডো সিটি।
তবে তার আগে মেসিকে ছাড়া লিগস কাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই মায়ামির সামনে। নতুন ফরম্যাট অনুযায়ী, প্রতিটি লিগ থেকে সেরা চারটি দলই উঠবে নকআউট পর্বে। দুই ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে মায়ামি এখন তৃতীয় স্থানে।
নতুন মৌসুম থেকে সেরি আ-তে ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। রেফারিরা এখন থেকে স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শক ও টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে ভিএআরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন ইতালির ফুটবল ফেডারেশনের রেফারিং নিয়োগ কর্মকর্তা জিয়ানলুকা রোক্কি।
ভিএআর প্রযুক্তি রেফারিদেদ মাঠের সিদ্ধান্তের যথার্থতা আনার জন্যই চালু করা হয়েছিল। তবে সেটার ব্যাখ্যার অভাব প্রায়ই সময়েই গ্যালারিতে থাকা দর্শক ও খেলোয়াড়দের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে। সেদিক থেকে সেরি আয় রেফারিদের তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভিএআরের এই সরাসরি ব্যাখ্যা প্রদান হতে পারে দারুণ এক পদক্ষেপ। কারণ, এটা শুধু একটি সিদ্ধান্তের স্বচ্ছতাই নয়, সাথে দর্শকদের অভিজ্ঞতাকেও উন্নত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত মঙ্গলবার ইতালীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোক্কিও শোনান ইতিবাচক কথা।
“এটা রেফারি ও দর্শকের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এর মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্তগুলোকে আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও সহজবোধ্য করতে চাই।”
রোক্কি আরও জানান, এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার জন্য নির্বাচিত রেফারিদের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। সেখানে তাদেরকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা একই রকম ভাষায় এবং আরও স্পষ্টভাবে সিদ্ধান্তগুলো ব্যাখ্যা করতে পারেন।
ইতালির আগে এই ধরনের সরাসরি সিদ্ধান্ত ঘোষণার ব্যবস্থা ইংল্যান্ড ও জার্মানিসহ কয়েকটি ইউরোপিয়ান দেশে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। এছাড়া বিশ্বকাপে এবং ফিফা কিছু টুর্নামেন্টেও রেফারিদের সিদ্ধান্তগুলো মাইক্রোফোনের মাধ্যমে মাঠেই ঘোষণা করতে দেখা গেছে, যা সাধারণ দর্শকরা ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন।