টেস্ট ক্রিকেটে চা বিরতির আগে সাকিব আল হাসান একাই করেছেন প্রায় ৩০ ওভার, শেষ কবে এমনটা দেখা গেছে? উত্তর খুঁজতে বেগ পাবারই কথা। কাউন্টিতে সারের হয়ে নিজের অভিষেক ম্যাচের প্রথম দিন ঠিক সেটাই দেখা গেল। সমারসেটের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম দিনে দলের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ওভারই করলেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। আর শেষ সেশনের তিন উইকেট নিয়ে হলেন দলের সেরা বোলারও।
ইংলিশ কন্ডিশনে স্পিনারদের আধিপত্য বরাবরই কম৷ ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে মাত্র এক ম্যাচের জন্য সারের সাকিবকে মরিয়া হয়ে নেওয়ার মূল কারণ অবশ্য সেই স্পিনই। এই ম্যাচে দলটির একমাত্র স্বীকৃত স্পিনার তিনিই৷ আর সেটার বহিঃপ্রকাশ ঘটে প্রথম ঘন্টাতেই।
মাত্র ১১তম ওভারেই সাকিবকে আক্রমণে আনা হয়। সেই ওভারে চারটি ডট সহ দেন তিন রান। পরের ওভারে একটি বাউন্ডারি সহ হজম করেন ৭ রান। নিজের প্রথম পাঁচ ওভারে ২০ রান দেওয়া সাকিব পরের দুই ওভারে চেপে ধরেন ব্যাটারদের। রান বের করার কোনো সুযোগ না দিয়ে উপহার দেন টানা দুটি মেডেন ওভার।
আরও পড়ুন: নিশাঙ্কার সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে ধরাশায়ী করল শ্রীলঙ্কা
টানা স্পেলে করা অষ্টম ওভারে সাকিব তিন সিঙ্গেলসে দেন তিন রান। পরের ওভারে নেন আরেকটি মেডেন। দশম ওভারে কিছুটা খরুচে ছিলেন, আসে ছয় রান। পরের ওভার থেকে আসেনি কোনো রান।
প্রথম স্পেল শেষের পর সাকিবের দ্বিতীয় স্পেল শুরু হয় মাঝে দুই ওভার (২৯ ও ৩০তম) বাদেই। ব্যক্তিগত দ্বাদশ ওভারে দেন মোটে এক রান। ১৩তম ওভারে ফের মেডেন আসে সাকিবের কাছ থেকে। পরের দুই ওভারে দেন চার রান। বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওভারটি আসে পরেরটিতেই। পরপর দুই বলে চার মারেন টম অ্যাবেল। সেই ওভার থেকে আসে ৯ রান।
পরের কয়েকটি ওভারে আঁটসাঁট বোলিংয়ের পর শেষ পর্যন্ত নিজের ২২তম ওভারে গিয়ে উইকেটের দেখা পান সাকিব। ক্লিন বোল্ড করেন ৪৯ রান করা অ্যাবেলকে। এই ওভারটিও হয় মেডেন। বাংলাদেশ তারকার পরবর্তী ওভারের চিত্রটাও ছিল একই।
চা বিরতির আগ পর্যন্ত এভাবেই একপ্রান্ত ধরে সাকিবকে দিয়ে বোলিং করায় সারে। ২৮ ওভারে ৭ মেডেন সহ ১ উইকেট নিতে গুনেন ৭৯ রান। ইকোনমি রেট মাত্র ২.৮২। প্রথম দুই সেশনে বল হাতে ব্যস্ত সময় পার করা সাকিব শেষ সেশনে বোলিংয়ে আসেন একদম শেষ বেলায়।
প্রথম দুই ওভারে দেন দশ রান। পরের ওভারে পান দ্বিতীয় উইকেটের দেখা। বড় শট খেলতে গিয়ে লাইন মিস করা ক্যাসি অ্যালড্রিজকে বোল্ড করেন ১৫ রানে। ক্রিজে গিয়ে সাকিবকে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করা ক্রেইগ ওভারটন একটি চার মারলেও সুবিধা করতে পারেননি। স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন ওই ওভারেই।
এরপর দিনের শেষ ওভারে রান্ডেলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সমারসেটের ইনিংসের ইতি টানেন সাকিবই। ৫ উইকেটে ৩০৫ থেকে মাত্র ১২ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারিয়েছে দলটি।
তাতে প্রথম ইনিংসে সাকিবের ফিগারটা বেশ ভালোই দাঁড়িয়ে গেছে : ৩৩.৪-৭-৯৭-৪।
সমারসেট প্রথম ইনিংসে ৯৫.৪ ওভারে করেছে ৩১৭ রান। দলীয় সর্বোচ্চ ১৩২ রান করে শেষ বেলায় আউট হয়েছেন টম ব্যান্টন।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:০০ এম
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩:০৭ এম
ভারতের মাটিতে সফরকারী দলের জন্য অধিকাংশ পেসারদের জন্য অপেক্ষা করে কঠিন পরীক্ষা। তবে চলমান চেন্নাই টেস্টের প্রথম দিনে হাসান মাহমুদ দেখিয়েছেন, এখানেও বল হাতে ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ জানানোর স্কিল তার আছে। প্রথম সেশনে দুই দিকে সুইং করিয়ে খাবি খাইয়েছেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির মত ব্যাটারদেরও। তরুণ এই পেসার মনে করেন, নিজের শক্তির জায়গা কাজে লাগিয়েই সফলতা পেয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের পথে দ্বিতীয় টেস্টর দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন হাসান। সেই ফর্ম ধরে রেখে এই টেস্টের প্রথম স্পেলে ব্যাটারদের কাঁপন ধরিয়ে দেন এই ডানহাতি পেসার। একে একে ফেরান রোহিত, শুবমান গিল ও কোহলিকে। ফিরতি স্পেলে এসে পরে শিকার বানান রিশাভ পান্তকেও। প্রথম দিনে চার উইকেট নিয়ে হাসানই বাংলাদেশের সেরা বোলার।
দিনের খেলে শেষে সংবাদ সম্মেলনে হাসান বলেছেন, স্রেফ পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করার চেষ্টা করেছেন তিনি। “আমার প্ল্যান খুব সিম্পল ছিল। নতুন বলে আমি নিজের শক্তি অনুযায়ী বোলিংয়ের চেষ্টা করেছি। যেটা আমি ভালো পারি, সেটাই পুরো সময় করতে চেয়েছি। এরই ফল পেয়েছি। সবাই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। আমি নিজের জোনে ছিলাম। যেকোনো ব্যাটসম্যানের উইকেট নেওয়া আনন্দের বিষয়। তো খুব ভালো লাগছে। যেটা বললাম, আমার প্ল্যান খুব সিম্পল ছিল। শেপ ঠিক রেখে সিম আপ করার চেষ্টা করেছি, শেপ এওয়ে করার চেষ্টা করেছি।”
ভারতের মাটিতে ২০০০ সালের পর সফরকারী একটি দলের মাত্র দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টেস্টের প্রথম দিনে চার বা বেশি উইকেট নিয়েছেন হাসান। এর আগে এই কীর্তি ছিল কেবল সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ডেল স্টেইনের। তিনি নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। কাল পাঁচ উইকেট শিকারের সম্ভাবনা থাকবে হাসানের সামনেও।
টানা দুই টেস্টে পাকিস্তানের পর ভারতের মাটিতেও পাঁচ উইকেট নিতে পারলে সেটা হাসানের জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে বরাবরই নিরাবেগ এই উদীয়মান পেসার এই ক্ষেত্রেও দেখালেন না বাড়তি আবেগ। “টেস্ট ম্যাচে উইকেট পাওয়াই আনন্দদায়ক আমার কাছে। পাকিস্তানে ৫ উইকেট পেয়েছি, ওটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চেষ্টা করছি, যতটুকু দলের জন্য করতে পারি নিজের সেরাটা দিয়ে।”
লাল মাটির উইকেটের পাশাপাশি দুই দলের স্কোয়াডে স্পিনারদের আধিক্যের কারণে মনে হচ্ছিল, চেন্নাই টেস্টে হয়ত স্পিনাররা ভালো করবেন। তবে প্রথম দিনে সেটা আর হয়নি। দাপট দেখিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। তবে সেটা সামলে দারুণ এক সেঞ্চুরিতে ভারতকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। ঘরের মাঠ বলেই এখানকার উইকেটের আচরণ তার খুব চেনা। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ভারত স্পিনার জানিয়েছেন, সময় যত গড়াবে স্পিনাররা ততই সফলতা পাবেন।
এই টেস্টে দুই দলই নেমেছে একাদশে তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে। টসে জিতে আগে বোলিং নেওয়া বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন হাসান মাহমুদ। তিনি সহ অন্য দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ গতি, সুইং, মুভমেন্ট দিয়ে ভালোই ভুগিয়েছেন ব্যাটারদের। তাতে এক পর্যায়ে ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়েছিল ভারত। সেখান থেকে অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভারতের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন অশ্বিন।
দিনের খেলা শেষে চেন্নাইয়ের ঘরের ছেলে অশ্বিন বলেছেন, দ্বিতীয় দিনেও পেসাররা উইকেট বেশ কিছুটা সাহায্য পাবেন। “এটা একটা সাধারণ, চিরচেনা চেন্নাই উইকেট, যেখানে ওভারস্পিন করলে কিছুটা বাউন্স থাকবে। ম্যাচের অনেক পরের দিকে উইকেট তার খেলা দেখাতে শুরু করবে। স্পিনাররা পরের দিকে সুবিধা পাবে। আমরা যদি সিম সুন্দর রাখতে পারি, তাহলে গতিময়, ভালো ক্যারি, ভালো বাউন্সের জন্য যথেষ্ট উপাদান থাকবে। নতুন বল কিছুটা কাজ করে দেবে, বোলারদের জন্যও কিছু সাহায্য থাকবে। আগামীকাল আমাদের নতুন করে শুরু করতে হবে।”
অশ্বিন যখন নেমেছিলেন, ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ভারত রীতিমত কাঁপছিল। স্পেশালিষ্ট স্পিনার হিসেবে খেললেও অশ্বিন ব্যাটার হিসেবে অনেকবার দেখিয়েছেন তার উইলোর জাদু। আর সেটাই আরও একবার হাজির হয় প্রচণ্ড চাপের মুখেই। রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে গড়েন দুর্দান্ত ১৯৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি, যা ভারতকে দিন শেষে এনে দিয়েছে ৬ উইকেটে ৩৩৯ রানের স্কোর।
এই পথচলায় অশ্বিন তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক। ৫০০ উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে সেঞ্চুরি করার দিক থেকে কেউ নেই তার ধারেকাছেও। এমন ব্যাটিংয়ের রহস্য কী? অশ্বিন শোনালেন নিজেকে শাণিত করার গল্প। “অবশ্যই, আমি সবসময় আমার ব্যাট অফ স্টাম্পের বাইরে চালিয়ে এসেছি। মাত্রই একটা টুর্নামেন্ট খেলে এসেছি যা আমাকে সাহায্য করেছে। কিছু জিনিস নিয়ে কাজ করেছি। এই ধরণের উইকেটে যেখানে একটু স্পাইস আছে, সেখানে আপনি যদি শট খেলতে চান, তাহলে রিশাভের (পান্তের) মতই খেলতে হবে।”
ভারতের মাটিতে বরাবরই দাপট দেখান স্পিনাররাই। সেই দেশে গিয়ে একটা টেস্টের প্রথম দিনে ভারতের ব্যাটারদের নাকানিচুবানি খাওয়ানো তাই যেকোনো বোলারের জন্য পরম আরাধ্য এক বিষয়। বাংলাদেশের পেস বিপ্লবের অন্যতম সেনানী হাসান মাহমুদ চেন্নাই টেস্টের প্রথম দুই সেশনে ঠিক সেটাই করে দেখিয়েছেন। আর সেটা তাকে পাশে বসিয়েছে ইতিহাসের অন্যতম সেরা পেসার দক্ষিণ আফ্রিয়ার ডেল স্টেইনের পাশে।
দিনের শুরুতেই অফস্ট্যাম্পের বাইরে দারুণ এক ডেলিভারিতে রোহিত শর্মাকে বিভ্রান্ত করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান হাসান। পরের ওভারে লেগ স্ট্যাম্পের বল তাড়া করে কট বিহাইন্ড হন শুবমান গিল, এবারও বোলার সেই হাসান। টানা তৃতীয় ওভারে উইকেট শিকার করে নিজের পরের ওভারে বিরাট কোহলিকেও ফেরান তরুণ এই পেসার।
লাঞ্চ বিরতির পর বিপজ্জনক হয়ে ওঠা রিশাভ পান্তকেও এরপর সাজঘরের পথ দেখান হাসান। ভারতের ইনিংসে প্রথম চারটি উইকেটই তাতে যায় তার ঝুলিতে। আর স্পেলের চিত্রটা দাঁড়ায় বাঁধিয়ে রাখার মত ৯-৩-১৯-৪!
দিনের বাকি অংশে আর উইকেট না পেলেও এই চার উইকেটই হাসানকে জায়গা করে দিয়েছে বিরল এক ক্লাবে, যেখানে এতদিন ছিলেন কেবল স্টেইন। আর সেটা হল ভারতের মাটিতে এই শতকে ভারতের মাটিতে বিদেশী পেসার হিসেবে টেস্টের প্রথম দিনে চার বা তার বেশি উইকেট নেওয়া।
স্টেইন সেই কীর্তি গড়েছিলেন ২০০৮ সালে, আহমেদাবাদ টেস্টে। প্রথম দিনের প্রথম সেশনে তার করা বলগুলো যেন গোলার মত গিয়ে বিঁধেছিল ভারত ব্যাটারদের। তাল সামলাতে না পেরে ২০ ওভারে গুটিয়ে যায় স্রেফ ৭৬ রানে। ২৩ রানে ৫ উইকেট নেন স্টেইন। সেই টেস্টে শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছিল ইনিংস ও ৯০ রানে।
হাসানের ওই স্পেলের পরও অবশ্য চেন্নাইয়ে চালকের আসনে রয়েছে এখন ভারতই। প্রথম দিন শেষ করেছে ৬ উইকেটে ৩৩৯ রানে। ১৯৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন (১০২) ও রবীন্দ্র জাদেজা (৮৬)।
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে