
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা লড়াইটা এবার ত্রিমুখী। একদিন লিভারপুল এগিয়ে যাচ্ছে তো অন্যদিন পেপ গার্দিওলার সিটি, তাদের মাঝে আর্সেনালও হাজির। প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিল বলছে সিটি, লিভারপুলকে টপকে আর্সেনালই এখন টেবিল টপার। তবে ম্যাচ একটা বেশি খেলেছে মিকেল আর্তেতার দল। অন্যদিকে রাতে মাঠে নামছে সিটি-লিভারপুল, যে ম্যাচ গড়ে দিতে পারে চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের ভাগ্য। তবে ম্যাচটা যদি ড্র হয়? তাহলে লাভের লাভ হবে আর্সেনালের। গানাররা গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চলে আসবে প্রিমিয়ার লিগে পয়েন্ট টেবিলে সবার ওপরে।
আর্সেনালকে শিরোপা রেসে ধরে, একটা প্রশ্ন চলে এসেছে। আর্সেনাল শেষ কবে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতেছিল? সিটি,লিভারপুল কিংবা চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দাপটে যে আর্সেনালের লিগ জেতা হয়ে উঠেনি বহুদিন। মাঝে লেস্টার সিটি এসে সবাইকে চমকে দিলেও আর্সেনালের জন্য যে সাম্প্রতিক সময়ে সেরা চারে থাকাই বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হতো।
‘ইনভিনসিবল আর্সেনাল’। প্রায় দুই দশক আগে আর্সেনাল শেষ যেবার ঘরে তুলেছিল প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। আর্সেন ওয়েঙ্গারের সেই দলটাই নামের সাথে জুড়ে গিয়েছিলো সেই তকমাটা। ২০০৩-০৪ মৌসুমে সেবার কোনো ম্যাচ না হেরে প্রিমিয়ার লিগে জেতে আর্সেনাল। এরপর আর ট্রফিটা নিয়ে উদযাপনের সুযোগ মেলেনি লন্ডনের ক্লাব সমর্থকদের।
আরও পড়ুন: এমবাপেকে কেনার লড়াইয়ে শামিল হতে চায় আর্সেনালও!
মাঝে তো আর্সেনাল বনে গিয়েছিল ট্রলের পাত্রও। তবে আর্তেতার ফেরা আর্সেনালকেও ফিরিয়েছে। দল গুছিয়ে নিয়ে আর্সেনাল সমর্থকদের শিরোপার আশা দেখাচ্ছে। গত মৌসুমে তো লিগ জয়ের পথেই ছিল গানাররা। তবে আবারও সেই ‘চোক’ করার ব্যাপারটা যে চেপে ধরেছিল তাদের। না হয় ৮ পয়েন্টে এগিয়ে থেকেও সিটির কাছে শিরোপা হারায় তারা?
নতুন মৌসুম, নতুন স্বপ্ন নিয়ে আবারও পথচলা শুরু। শুরুটা এবারও দারুণ তবে মাঝে এসে আবারও খেই হারিয়ে বসে আর্তেতার দল। আরও একবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় আর্সেনালকে নিয়ে মজা নেওয়া। তবে বছর ঘুরতেই বদলে যায় আর্সেনালের চেহারা। রীতিমত প্রতিপক্ষকে নিয়ে তারা শুরু করে ছেলেখেলা। এই বছর প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচ খেলে সব কয়টিতেই জয় পেয়েছে আর্সেনাল। প্রতিপক্ষকে প্রায় প্রতি ম্যাচেই তারা উড়িয়ে দিচ্ছে। ৩৩ গোলের বিপরীতে তারা গোল কনসিড করেছে মোটে পাঁচটা।
চলতি মৌসুমে কোনো ম্যাচ না হেরে নতুন এক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে আর্সেনাল। চতুর্থ দল হিসেবে বছরের শুরুর টানা আট ম্যাচ জিতেছে তারা। এর আগে এই কীর্তি ছিল লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। মজার ব্যাপার এই তিন দলই যে বছর এই রেকর্ডে নাম লিখিয়েছিল তারা শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ঘরেই তুলেছিল।
আর্সেনাল তাই সে স্বপ্ন দেখতেই পারে। বিশেষে করে বুকায়ো সাকা কিংবা কাই হাভার্টজদের মৌসুমের মাঝপথে জ্বলে উঠা, মিডফিল্ডে ডেকলাইন রাইস, ওডেগার্ডদের বোঝাপড়া সেই সাথে ডিফেন্সে সালিবা ও গাব্রিয়ালদের সলিড ডিফেন্সের সেই আশার পালে দিচ্ছে হাওয়া।
সেই সাথে স্বপ্ন দেখানো মিকেল আর্তেতা তো আছেনই। যার মগজের খেলা প্রিমিয়ার লিগকে জমিয়ে তুলেছে দ্বিমুখী থেকে ত্রিমুখী লড়াইয়ে।
No posts available.
৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৪ এম

‘জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত।’ লিভারপুল ছাড়ার পর এমনটাই বলেছিলেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। ফুটবলে হাতেখড়ি হয়েছিল এখানেই। অল রেডদের একাডেমি থেকে বেড়ে উঠে ক্লাবের হয়ে পেয়েছেন অনেক সাফল্যও। চিরচেনা সেই ক্লাব ছেড়ে চলতি মৌসুমে আর্নল্ড যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। এবার সেই সাবেক হয়ে যাওয়ার ক্লাবেরই মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন ইংলিশ ফুল-ব্যাক।
আগামীকাল বাংলাদেশ সময় রাত দু’টায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের মুখোমুখি হবে লিভারপুল। আর এই ম্যাচে আলোচনার কেন্দ্রে আছেন আর্নল্ড। দুই দশকের সম্পর্কে ছেদ টানার পর যে তিনি ফিরছেন অ্যান ফিল্ডে। দীর্ঘ সময় যে ক্লাবটির জার্সিকে ভালোবেসে দাপিয়ে বেড়িয়েছিলেন মাঠে, এখন সেই লিভারপুলের বিপক্ষেই ঝাপিয়ে পড়তে হবে আর্নল্ডকে।
প্রাক্তন ক্লাবের মাঠে নামা কঠিনই হবে বলছেন আর্নল্ড। অ্যামাজনের অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ‘প্রাইম ভিডিওকে’ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘ঘরে’ ফেরা নিয়ে কথা বলেন রিয়াল মাদ্রিদের রাইট- ব্যাক।
তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ড্রয়ের সময়ই অনুমান করতে পেরেছিলেন সাবেক ক্লাবের মুখোমুখি হবে হবে আর্নল্ডকে, ‘যখন ড্র হয়েছিল, সবাই জানতো এটা হতে পারে। এটা যেন নিয়তি ছিল। তারা শীর্ষ দল, তাই আমি জানতাম যে এক সময় আমি সেখানে ফিরে যাব বা মাদ্রিদে লিভারপুলের বিপক্ষে খেলব, যদিও এটি কিছুটা তাড়াতাড়ি হয়েছে, এবং এটা নিয়ে আমার মিশ্র অনুভূতি আছে।’
আরও পড়ুন
| ‘হলান্ড এখন মেসি-রোনালদোর পর্যায়ের ফুটবলার’ |
|
লিভারপুল ছাড়লেও ইংলিশ ক্লাবটির জন্য ভালোবাসা এতটুকু কমেনি আর্নল্ডের। আগামীকাল রিয়ালের হয়ে অল রেডদের বিপক্ষে গোল করলে উদযপান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী ডিফেন্ডার, ‘যদি আমি গোল করি, উদযাপন করব না। আমি সবসময় ক্লাবকে ভালোবাসব। আমি সর্বদা লিভারপুলের ভক্ত থাকব। আমি সর্বদা সেই সুযোগ এবং আমাদের অর্জিত জিনিসগুলোর জন্য কৃতজ্ঞ থাকব, যা চিরকাল আমার সাথে থাকবে। তাই যা কিছু ঘটুক, আমার লিভারপুলের প্রতি অনুভূতি কোনো পরিবর্তন হবে না। সেখানে এমন স্মৃতি আছে যা আমার জীবনের জন্য চিরস্থায়ী থাকবে, এবং তা কখনো বদলাবে না।’
লিভারপুল ছাড়ার পর ক্লাবটির সমর্থকদের রোষাণলেও পড়েন আর্নল্ড। ফ্রি এজেন্ট হয়েই রিয়ালে যোগ দেন তিনি। তবে অ্যান ফিল্ডে দর্শকরা তাঁর সঙ্গে যেমন আচারণই করুক, কোনো অভিযোগ থাকবে না বলছেন রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবলার, ‘আমি মনে করি, যেভাবেই আমাকে গ্রহন করা হবে, এটি দর্শকদের সিদ্ধান্ত।’
সম্প্রতি চোট থেকে সেরে ওঠার পর ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে বেঞ্চে ছিলেন আর্নল্ড। পুরোপুরি ফিট থাকলে লিভারপুলের বিপেক্ষে শুরুর একাদশে দেখা যেতে পারে তাকে। অন্যথায় ফেদে ভালভের্দে খেলতে পারেন তাঁর পজিশনে। তাতে বদলি হিসেবে নামতে পারেন আর্নল্ড।
২০০৪ সালে মাত্র ৬ বছর বয়সে লিভারপুল একাডেমিতে যোগ দেন আর্নল্ড। এরপর অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ দল হয়ে মূল দলে আসেন ২০১৬ সালে। তখন থেকেই লিভারপুলের রক্ষণভাগের অন্যতম ভরসা তিনি।
লিভারপুল মূল দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৫৪ ম্যাচ খেলেছেন আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। গোল করেছেন ২৩টি, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৯২টি। ক্লাবটির হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ, প্রিমিয়ার লিগ, ক্লাব বিশ্বকাপসহ জিতেছেন আটটি ট্রফি।

গোল, গোল আর গোল। মাঠে আর্লিং হলান্ডের কাজ একটাই। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে ছিন্নভিন্ন করে জাল কাঁপানো। ‘গোলমেশিন’ কিংবা ‘দানব’ খ্যাতি তো অনেক আগেই কুড়িয়েছেন। ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলার মতে নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড নাকি লিওনেল মেসি-ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন।
সবশেষ গতকাল বোর্নমাউথের বিপক্ষে ম্যান সিটির ৩-১ গোলে জয় পাওয়া ম্যাচে জোড়া গোল করেন হলান্ড। ম্যাচের প্রথম দুটি গোলই আসে এই তারকার ফরোয়ার্ডের নৈপুণ্যে।
দলের সেরা তারকার এমন দুর্দান্ত ছন্দ গার্দিওলারকে যেন মেসি-রোনালদোর সঙ্গে তুলনা করতেই বাধ্য করল। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিটি কোচ বলছেন, হলান্ডের গোল করার দক্ষতা তাকে মেসি-রোনালদোর ক্যারিয়ারের সেরা সময়ের মতো নির্ভরযোগ্য ও নিখুঁত করে তুলেছে।
আরও পড়ুন
| গোলে ফিরলেন ইয়ামাল, সহজ জয় বার্সার |
|
ফুটবলের দুই কিংবদন্তির সঙ্গে হলান্ডের তুলনা করে গার্দিওলার বলেছেন, “আমরা অবশ্যই আবারও দারুণ খেলেছি, আর আর্লিং ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। এটা কিছুটা এমন, মেসি বা ক্রিশ্চিয়ানোর সঙ্গে খেললে হয়—তাদের প্রভাব এতটাই বড়।’
হল্যান্ড কি আসলেই সেই স্তরে পৌঁছেছেন কিনা এমন প্রশ্নে গার্দিওলা তাঁর গোলের সংখ্যার দিকেই তাকাতে বলেন, ‘তিনি কি সেই স্তরে পৌঁছেছেন? ওর সংখ্যাগুলো (গোলের) দেখুন না! অবশ্যই, তিনি ক্রিশ্চিয়ানো ও মেসির সমান সংখ্যার স্তরে আছেন।’
তবে ব্যবধানটা শুধু মেসি-রোনালদোর লম্বা সময়ের ধারবাহিকতাটাই বলছেন গার্দিওলার, ‘ফারাক হলো, ক্রিশ্চিয়ানো ও মেসি এটা ১৫ বছর ধরে করছেন। মেসি এখনো এমএলএসে (মেজর লিগ সকার) খেলছেন, সেখানে প্রতিদিন দুই-তিনটি গোল করেন। ক্রিশ্চিয়ানোও সৌদি লিগে একইভাবে গোল করেন। কিন্তু হাল্যান্ডও এখন সেই স্তরেই পৌঁছেছেন, এবং তাকে ছাড়া আমাদের জয় পাওয়া কঠিন হত।’
শিষ্যের প্রশংসা করে গার্দিওলার আরও বলেন, হাল্যান্ডের গোল করার দৃঢ়তা এবং শেখার ইচ্ছাই তার মূল বৈশিষ্ট্য। আক্রমণে হলান্ডের আগ্রসী চরিত্র এবং শট নেওয়ার ধরণের তারিফ করেন সিটি কোচ, ‘সে কিভাবে শট নেয়, দেখেছেন কি? শট নেওয়ার পর ঘাসের উপরই যেন ঝুঁকে পড়ছেন, মনে হয় সে বলছে ‘আমি গোল করবই।’
আরও পড়ুন
| হলান্ডের জোড়া গোলে সিটির বাজিমাত |
|
প্রিমিয়ার লিগের চলতি মৌসুমে ১০ ম্যাচে ১৩ গোল করেছেন হলান্ড। আর চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তাঁর মোট গোল ১৮টি।
ইংলিশ ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পর লিগে ১০৭ ম্যাচে হলান্ড করেছেন ৯৮ গোল। আর দুই গোল করলেই লিগের ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে গোলের সেঞ্চুরি করবেন ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। তিনি ভেঙে দেবেন ১২৪ ম্যাচে লিগে শততম গোল করা অ্যালান শিয়ারের রেকর্ড।

মনোযোগ কি তবে ফুটবলে ফেরাতে পারলেন লামিনে ইয়ামাল। মাঠের বাইরে নানান ঘটনায় একাগ্রতা হারিয়ে ফেলা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেখানে থেকে বোধহয় বেরিয়ে এলেন বার্সেলোনার তারকা উইঙ্গার। গোলে ফিরেছেন ইয়ামাল, সঙ্গে তাঁর ক্লাবে ফিরেছে কক্ষ্যপথে।
লা লিগায় গতকাল রাতে এলচের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। ইয়ামালের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়ানো দুই গোল করেন ফারমিন লোপেজ ও মাকার্সা রাশফোর্ড। এলচের হয়ে বার্সার জালে বল পাঠান রাফা মির।
এই জয়ে শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান কমাল বার্সা। ১১ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে কাতালান ক্লাবটির অবস্থান করছে দুইয়ে। সমান ম্যাচে এক নম্বরে থাকা জাবি আলোনসোর রিয়ালের পয়েন্ট ৩০।
আরও পড়ুন
| হলান্ডের জোড়া গোলে সিটির বাজিমাত |
|
সচারচর বল দখলে রেখে ম্যাচে আধিপত্যের চেষ্টা করে বার্সা। তবে ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষের চেয়ে বার্সার পায়েই বল কম ছিল। ৪৯ শতাংশ বল দখলে রেখে ১৭টি শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রাখে হান্সি ফ্লিকের দল। বিপরীতে নয়টি শট নেওয়া স্বাগতিকরা গোলমুখে শট নেয় দুটি।
প্রথমে বল জালে পাঠায় এলচে। তবে রেফারি অফসাইডের সংকেত দিতেই উদ্যাপন থেমে যায় তাদের। তারপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বার্সা। নয় মিনিটে আলেহান্দ্রো বালদে’র পাসে থেকে চমৎকারভাবে বাম পায়ে কেটে ভেতরে ঢুকে গোলপোস্টের কোণে দুর্দান্ত শট নিয়ে দলকে এগিয়ে দেন ইয়ামাল।
দুই মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ হয় — আদ্রিয়া পেদ্রোসার ভুলের সুযোগ নিয়ে ফারমিন লোপেজ বল ছিনিয়ে নিয়ে ক্রস করেন, আর ফেরান তোরেস সহজেই ফাঁকা জালে বল পাঠান।
বিরতির তিন মিনিট আগে রাফা মির এলচের হয়ে ব্যবধান কমান। বার্সার অফসাইড ফাঁদকে ফাঁকি দিয়ে ব্যবধান ২-১ করেন স্প্যানিশ উইঙ্গার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই র্যাশফোর্ড গোল করলেও, ফারমিনের অফসাইড থাকার কারণে তা বাতিল হয়। তবু ইংল্যান্ড তারকাকে থামানো যায়নি — কিছুক্ষণ পরই ফারমিনের পাস থেকে বল পেয়ে জোরালো শটে ইনাকি পেনিয়াকে পরাস্ত করেন এই ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে রাফা মির দু’বার পোস্টে আঘাত করেন, তবে তার চেষ্টা এলচের প্রত্যাবর্তন সম্ভব করেনি।
বার্সার পরের ম্যাচ আগামী বুধবার। চ্যাম্পিয়নস লিগে ক্লাব ব্রুজের আতিথেয়তা নেবে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

আর্লিং হলান্ড গোল করেছেন। একটি নয়, দুইটি। নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকারের জোড়া গোলের রাতে ম্যানচেস্টার সিটি পেয়ে গেল দারুণ এক জয়। ২০২৫–২৬ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে গোল্ডের বুটের দৌড়ে এগিয়ে যাওয়ার রাতে এফসি বোর্নমাউথকে ৩-১ গোলে হারাতে বড় ভূমিকা ছিল হলান্ডের।
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে শুরু হওয়া ম্যাচের প্রথমার্ধে ২-১ গোলে এগিয়ে থাকা সিটি পরের অর্ধে আরও একটি গোল করে। বোর্নমাউথের একমাত্র গোল শোধ করেন জার্মান মিডফিল্ডার টেইলর অ্যাডামস।
এ জয়ে লিগের পয়েন্ট টেবিলে দুইয়ে উঠে এসেছে পেপ গার্দিওলার দল। আসরে ১০ ম্যাচে ৬ জয়ের বিপরীতে ৩ হার এবং ১ ড্র সিটিজেনদের। দলটির পয়েন্ট ১৯। শীর্ষে থাকা আর্সেনাল থেকে ৬ পয়েন্ট পিছিয়ে তারা। বোর্নমাউথ দুই থেকে নেমে গেছে চারে, ১৮ পয়েন্ট তাদের। তিনে লিভারপুল, যাদের পয়েন্ট সমান ১৮।
ম্যাচের ১৭ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে নিজেদের প্রথম গোল আদায় করে ম্যানসিটি। মিডফিল্ডার রায়ান শেরকির হেড থেকে পাওয়া বল নিয়ন্ত্রণে নেন আর্লিং হলান্ড। তীব্র গতিতে ঢুকে পড়েন ডি বক্সে এবং বাঁ-পায়ের জাদু দেখিয়ে করেন গোল।
১৯ মিনিটে ফের আক্রমণে যায় ম্যানসিটি। জারমে ডোকুর চেষ্টা বৃথা যায়। ততক্ষণে ডিফেন্স লাইন শক্তিশালী করে তোলে বোর্নমাউথের ডিফেন্সাররা।
অতিথিরা ঘুরে দাঁড়াতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ২৫ মিনিটে কর্নার থেকে আসা শট হাত দিয়ে রুখে দেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। বল পড়ে টেইলর অ্যাডামসের কাছে, যিনি সহজেই গোল করে বোর্নমাউথকে সমতায় ফেরান।
২৯ মিনিটে বের্নার্দো সিলভার শট হাতে লেগে যায় ডি বক্সে থাকা আলেক্স হিমেনেজের হাতে। রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন, যা থেকে প্রিমিয়ার লিগে নিজের ১৩তম গোল আদায় করেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার।
৪৯ মিনিটে ডি বক্সের আগে ফাউলের শিকার হন ফিল ফোডেন। স্পটকিক নেন হলান্ড। ডোর্জে পেট্রোভিচ বলটি রুখে দেন। প্রথমার্ধ ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে ম্যানসিটি।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫২ মিনিটে বড় অঘটন থেকে বেঁচে যায় ম্যানসিটি। এই যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন দোন্নারুম্মা, যিনি দুর্দান্ত গতির শট রুখে দেন। তবে ৫৯ মিনিটে স্কোর ৩-১ করে ফেলে সিটিজেনরা। বোর্নমাউথের দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক দিয়ে আলতো করে নিকো গঞ্জালেজের দিকে বল বাড়ান ফিল ফোডেন। এরপর ইংলিশ ডিফেন্ডার বক্সে ঢুকে বাঁ-পায়ের জোরালো শটের মাধ্যমে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান।
দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে গোল শোধের চেষ্টা করে অতিথিরা। তা সম্ভব হয়নি। তবে একটি বিষয়ে তারা এগিয়ে ছিল—বল পজিশন ধরে রাখা। প্রায় ৫২ শতাংশ বল বোর্নমাউথের দখলে ছিল।

অ্যানফিল্ডে শনিবার রাতে অভিন্ন লক্ষ্যে নেমেছিল লিভারপুল ও অ্যাস্টন ভিলা। জয় পেতে, বৃত্ত ভাঙতে সব প্রস্তুতি নিয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু কোনোভাবেই ভাঙছিল না ডেডলক। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে একপ্রকার লিভারপুলকে গোল ‘উপহার’ দেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
আর্জেন্টাইন গোলকিপারের ভুলেই গোলমুখ খোলে লিভারপুল। লিগে চতুর্থ গোল পেতে মোহাম্মদ সালাহকে কার্যত সহায়তা করেন মার্তিনেজ।
ডিফেন্সে থাকা সতীর্থের উদ্দেশে বল বাড়াতে গিয়ে একটু জোরে মেরে ফেলেন তিনি। বলটি সরাসরি পৌঁছে যায় ডি বক্সে থাকা সালাহর পায়ে, আর এক টাচে সেখান থেকেই গোল আদায় করেন মিসরীয় ফরোয়ার্ড।
অ্যানফিল্ডে দ্বিতীয়ার্ধে আরও একটি গোল হজম করে অ্যাস্টন ভিলা। ২–০ গোলে পিছিয়ে থেকে পয়েন্ট টেবিলের নিচের দিকে নেমে যায় দলটি। স্বাভাবিকভাবেই, ভিলার এই হার বা পিছিয়ে পড়ার দায় এসে পড়ে মার্তিনেজের ঘাড়ে।
আর্জেন্টিনার এই বিশ্বকাপজয়ী গোলকিপার হার মানতে নারাজ। ইনস্টাগ্রামে নিজের দুটি সাদা–কালো ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন,
‘আমি হারি না। আমি হয় জিতি, নয় শিখি।’
এর আগে ম্যাচ শেষে কোচ উনাই এমেরি বলেন,
‘পাউ তখন ঠিক জায়গায় ছিল, পাস নেওয়ার জন্যও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু আজ (কাল) ভুল হয়েছে। পরের ম্যাচগুলোতে এই ভুলগুলো থেকে শিখে আরও শক্ত দল হিসেবে ফিরতে হবে।’