
টাইব্রেকারে পোর্তোর শেষ শটটি ডেভিড রায়া রুখে দিতেই উল্লাসে ফেটে পড়েছিল এমিরেটস স্টেডিয়াম। আর্সেনালের মত একটি দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিতেই যে ভুলে গিয়েছিল এক যুগের বেশি সময় ধরে। খেলোয়াড়, কোচ ও সমর্থকদের মাঝে তাই ছড়িয়ে পড়েছিল আনন্দের রেণু। উচ্ছ্বসিত মিকেল আর্তেতা বলেছেন, এই পর্যায়ে যাওয়াটাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।
কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছিল পোর্তো। ফিরতি লেগে গত মঙ্গলবার ঘরের মাঠে প্রথমার্ধে লিয়েন্দ্রো ট্রসার্ডের গোলে সমতা টানে আর্সেনাল। অতিরিক্ত সময়েও ১-১ সমতা থাকার টাইব্রেকারে লন্ডনের ক্লাবটির ত্রাতা হিসেবে হাজির হন গোলরক্ষক রায়া। আটকে দেন প্রতিপক্ষের দুটি শট। তাতে আর্তেতার দল টাইব্রেকারে জেতে ৪-২ ব্যবধানে।
আরও পড়ুন: শিরোপা কি তবে আর্সেনালের?
১৪ বছর আগে এই পোর্তোকে হারিয়েই সবশেষ এই প্রতিযোগিতার শেষ আটে খেলেছিল আর্সেনাল। দীর্ঘ বিরতির পর আরও একবার পর্তুগিজ ক্লাবটিকে পরাজিত করে পরের ধাপে পা রেখেছে ইংলিশ ক্লাবটি।
ম্যাচের পর আর্তেতা বলেছেন, এই জয়ে তাদের পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে। “অবিশ্বাস্য ব্যাপার, আমরা এখানেই থাকতে চাই। আমরা ধৈর্য ধরেছি, কঠোর পরিশ্রম করেছি, অনেক লোকেরা ভালো ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং কঠিন মুহূর্তে সাহস দেখিয়েছে। আর আপনি এখানেই নিজেদের দেখতে চাইবেন।”

২০১০ সালে শেষ যখন আর্সেনাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ আটে খেলেছিল, তখন দলটির কোচ ছিলেন কিংবদন্তি আর্সেন ওয়েঙ্গার। এরপর থেকে দলটিতে এসেছে অনেক পরিবর্তন। ফরাসি কোচও সরে গেছেন অনেক বছর হয়ে গেছে। এবারের আগে শেষ ছয় মৌসুমে তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি।
স্বাভাবিকভাবেই তাই দলের পারফরম্যান্স নিয়ে আর্তেতার খুশির মাত্রা একটু বেশিই। “১৪ বছর বছর হয়ে গেছে, যা আর্সেনালের মতো একটি ক্লাবের জন্য লম্বা সময় এবং এটা বলে দেয় যে কাজটা কতটা কঠিন ছিল। আমরা স্টেডিয়ামে একটি অবিশ্বাস্য আবহ তৈরি করতে শুরু করছিলাম, আমরা সবাই এটি সম্পূর্ণ করার জন্য চাপ দিয়েছিলাম এবং একসাথে আমরা তা করেছি।”
No posts available.
৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম

বছরটা মোটেও ভালো যায়নি রিয়াল মাদ্রিদের। ২০২৫ সালে কোনো শিরোপার ছোঁয়াই পায়নি স্প্যানিশ জায়ান্টরা। গোল করা কিংবা গোল ঠেকানো—কোথাও সুবিধা করতে পারেনি রিয়াল। পুরো বছর আক্রমণভাগের বেহাল দশার সঙ্গে ক্লাবটির রক্ষণভাগও ছিল ভঙ্গুর। বর্নাঢ্য ইতিহাসে এমন ব্যর্থতায় ভরা একটি হতাশার বছরই দেখতে হয়েছে লস ব্লাঙ্কোসদের।
কার্লো আনচেলোত্তির বিদায়ের পর ঘরের ছেলে জাবি আলোনসোকে নিয়ে শুরুটা দারুণ করেছিল রিয়াল। তবে আশার বেলুন চুপসে যেতে খুব একটা সময় লাগেনি। ‘গ্যালাক্টিকো’ দল নিয়েও মাঠে ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সে সমর্থকদের হতাশ করেছে ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাবটি। দলের আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা কিলিয়ান এমবাপে নিয়মিত গোল পেলেও বাকিরা ছিলেন যেন কেবল দর্শক। ফরাসি ফরোয়ার্ডের ওপর চরম নির্ভরশীলতা রিয়ালের সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলেছে।
চোটের কারণে রক্ষণ ছিল খাপছাড়া। ২০২৫ সালে রিয়াল মাদ্রিদের ডিফেন্স নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলাই করেছে প্রতিপক্ষ দলগুলো। গোল খাওয়ায় এই বছর ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে রিয়ালের অবস্থান দুইয়ে। ৬৭ ম্যাচে ৮০ গোল হজম করেছে জাবির দল। কিলিয়ান এমবাপে-ভিনিসিয়ুস জুনিয়রদের চেয়ে বেশি গোল হজম করেছে শুধু টটেনহ্যাম হটেম্পার। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটির জালে ৮৪ বার বল পাঠিয়েছে প্রতিপক্ষরা। রিয়ালের গোলমুখ লক্ষ্য করে ৭৯৩টি শট নিয়েছে বিপক্ষ দলের ফুটবলাররা।
রিয়ালের অবস্থা আরও বাজে হতে পারতো। তবে ক্লাবটির গোলপোস্টে দেয়াল হয়ে সেটা হতে দেননি থিবো কোর্তোয়া। ২০২৫ সালে ১৭৪টি সেভ করেছেন বেলজিয়ান গোলকিপার। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে যা সর্বোচ্চ।
অন্যান্য ক্লাবগুলো থেকে গোল করাতেও অনেক পিছিয়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। লা লিগায় ১৮ ম্যাচে রিয়াল গোল করেছে ৩৬ টি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার চেয়ে যা ১৫ গোল কম। ৩৬ গোল করতে এমবাপে-ভিনিসিয়ুসরা শট নিয়েছে ১২৮ টি। গোল করার হার মাত্র ২৮.১২ শতাংশ। যেখানে বার্সার ১৩৬ শট নিয়ে গোল পাওয়ার হার ৩৫.৫ শতাংশ।
এ বছর গোল করার এই হারে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের ৬৬টি দল রিয়ালের চেয়ে এগিয়ে। মজার বিষয় হচ্ছে সবচেয়ে বেশি গোল হজম করা টটেনহ্যামই এ তালিকায় সবার ওপরে (৪৬.৫ শতাংশ)। শুধু লক্ষ্যে শট নেওয়ার হিসেবে রিয়ালের ওপরে আছে শুধু বার্সেলোনা (১৩৬) ও বায়ার্ন মিউনিখ (১২৯)।
কোচের ওপর আস্থাহীনতা ক্রমশই প্রকট হচ্ছে। পাশাপাশি দলের ভেতরে অন্তঃকোন্দলের গুঞ্জন তো আছেই। সব মিলিয়ে পুরোনো বছরের হতাশা ঝেড়ে এখন নতুন বছরে সবকিছু নতুন করে শুরু করাটাই এখন রিয়ালের বড় চ্যালেঞ্জ।

ফুটবলের প্রাণ সমর্থকরা। গ্যালারি থেকে তাঁরা শুধু খেলাই দেখেন না, রং-বেরঙের জার্সি পরে, স্লোগান আর হর্ষধ্বনিতে উৎসাহ দিয়ে দলের জয়ের আনন্দকে দ্বিগুণ করেন। খেলোয়াড়রাও সমর্থকদের সমর্থনে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পান। প্রিয় দলকে সাহস যোগাতে অনেক সময় পাগলামোও করে বসেন অনেকে।
আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে (আফকন) ডি আর কঙ্গোর এক সমর্থকের অভিনব সমর্থন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভক্ত দলের পুরো ম্যাচে ঠাঁয় দাড়িয়ে ছিলেন। তাঁর দাড়িয়ে থাকার কায়দা দেখে মনে হচ্ছিল, অবিকল কোনো মূর্তি!
আফকনে গত শনিবার সেনেগালের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করা ম্যাচে কঙ্গোর ওই সমর্থক ১১৫ মিনিট ‘লুমুম্বা পোজ’ নিয়ে দাঁড়িয়ে খেলা দেখেছেন। মূলত দেশটির স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা এবং দেশের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী প্যাট্রিস লুমুম্বার ভাষ্কার্য্যের ভঙ্গিতে দাড়িয়ে ছিলেন কঙ্গোর সমর্থক। লুমুম্বা ১৯৬০ সালে কঙ্গো স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন এবং পরবর্তীতে রাজনৈতিক কারণে নিহত হন। তাঁর ভাবমূর্তি, কথা ও প্রতিরোধের দৃষ্টান্ত ৬৫ বছর পর আজও কঙ্গো ও আফ্রিকায় একটি ঐতিহাসিক প্রতীক বা চেতনার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
কঙ্গোর অনেক কবি সাহিত্যিকের মতে, ‘লুমুম্বা পোজ’ শুধু একটি শারীরিক ভঙ্গিই নয় — এটি ধৈর্য, প্রতিরোধ, জাতীয় গর্ব ও ইতিহাসের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের প্রতীক। ফুটবল স্টেডিয়ামে এমন ভঙ্গি নেওয়া মানে কেবল খেলা দেখা নয়, বরং লুমুম্বার আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও ঐতিহাসিক মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো বলে মনে করে কঙ্গোর সমর্থকরা।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী লুমুম্বার চেহারা কিংবা মুখোভঙ্গির সঙ্গেও দারুণ মিল আছে ওই সমর্থকের। সেনেগালের বিপক্ষে ম্যাচের পর গতকাল রাতে বতসোয়ানার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জেতা কঙ্গোর ম্যাচেও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভঙ্গিতে মূর্তির মতো দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
চলতি আফকনে দারুণ খেলছে ডি আর কঙ্গো। গ্রুপ ‘ডি’ থেকে দুই জয় ও এক ড্রয়ে সাত পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থেকে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে দলটি। ৫২ বছর পর বিশ্বকাপে খেলারও দ্বারপ্রান্তে আছে আফ্রিকার দেশটি। আফ্রিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্লে-অফ ফাইনালে টাইব্রেকারে নাইজেরিয়াকে ৪-৩ গোলে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফ নিশ্চিত করে তারা।

বর্নাঢ্য ক্যারিয়ারে কতভাবে যে গোল করেছেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো সে হিসেব করতে গেলে দিন পার হবে। বাঁ পায়ে, ডান পায়ে, হেডে, উরুঁ দিয়ে বুকের সাহায্যে জালে বল জড়িয়েছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। কালেভদ্রে দু’একটি অদ্ভুত গোলও করেছেন রোনালদো। সবশেষ গতকাল রাতে দেখা গেল ‘সিআর সেভেনের’ আরেকটি অন্যরকম এক গোল।
সৌদি প্রো লিগে গতকাল আল ইত্তিফাকের বিপক্ষে ম্যাচের ৬৭ মিনিটের ঘটনা। ১-১ গোলে সমতায় ম্যাচ। আক্রমণে উঠেছে আল নাসর। ডি-বক্সে হেডে বল জালে জড়ানোর চেষ্টা করেন রোনালদো। তবে ব্যর্থ হয়ে পড়ে যান আল নাসরের ৪০ বছর বয়সী ফুটবলার।
তারপর আরেক দফা লক্ষ্যভেদ করার চেষ্টা করে আল নাসরের আরেক ফুটবলার। সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হওয়ার পর বল পেয়ে যান আল নাসরের প্রথম গোলদাতা ফেলিক্স। আল ইত্তিফাকের গোলকিপারের বাঁ পাশ লক্ষ্য করে শট নেন পর্তুগিজ উইঙ্গার। তবে তাঁর ওই শট লাগে রোনালদোর পিঠে, দিক পরিবর্তন করে বল জড়িয়ে যায় জালে, গোল! রোনালদোর গোল।
এমন অপ্রত্যাশিত গোল পেয়ে অবাক হওয়ার সঙ্গে জাতীয় দলের সতীর্থ ফেলিক্সের সঙ্গে উদযাপনেও মেতে ওঠেন রোনালদো। সৌদির এই লিগে দু’জনই সমান ১৩ গোল করে শীর্ষে আছেন। হাজার গোলের পথে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলা রোনালদোর ক্যারিয়ার গোল হলো ৯৫৭টি।
আল ইত্তিফাকের বিপক্ষে ভাগ্যক্রমে পাওয়া এই গোলের পরও অবশ্য জয় নিশ্চিত করতে পারেনি আল নাসর। রোনালদোর পিঠ দিয়ে করা গোলের পর ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পরশেষ দিকে গোল খেয়ে এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় আল নাসররে।
এ মৌসুমে আল নাসরের জয়রথ থামাতে পারছিল না কেউ। লিগে প্রথম ১০ ম্যাচের সবক’টিতে জেতে জর্জে জেসুসের দল। অবশেষে আল নাসরকে রুখে দিল আল ইত্তিফাক। জোড়া গোল করে এই ম্যাচে ইত্তিফাকের নায়ক ডাচ ফরোয়ার্ড জর্জিনিও ওয়াইনালডাম। ১৬ মিনিটে প্রথম গোলের পর ৮০ মিনিটে জোড়া গোল পূর্ণ করে দলকে এক পয়েন্ট এনে দেন তিনি।
এই ড্রয়ের পর ১১ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষেই আছে আল নাসর। সমান ম্যাচে তিন পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আল তাউন।

উড়ছিল অ্যাস্টন ভিলা। আর্সেনালের মুখোমুখি হওয়ার আগে সবশেষ টানা ১১ ম্যাচে জয় পেয়েছে ক্লাবটি। এরমধ্যে আবার সবশেষ দেখায় গানারদের ২-১ গোলে হারায় উনাই এমেরির দল। সব মিলিয়ে মানসিকভাবে বেশ এগিয়ে থেকে আর্সেনালের বিপক্ষে মাঠে নামে অ্যাস্টন ভিলা।
তবে ম্যাচ শেষে টানেল দিয়ে যখন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ মাঠ ছাড়ছিলেন, দৃঢ় মানসিকতার অ্যাস্টন ভিলার এই গোলকিপারের মুখের দিকে তাকানোই যাচ্ছিল না। গুনে গুনে এক হালি গোল হজম করে যে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা গোলকিপার।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে অ্যাস্টন ভিলাকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আর্সেনাল। দুর্দান্ত এই জয়ে এক মাসের মধ্যেই সবশেষ হারের শোধ তুলল মিকেল আর্তেতার দল। ঘরের মাঠে বড় জয়ে একটি করে গোল করেন গ্যাব্রিয়েল, মার্টিন জুবিমেন্দি, লিয়ান্দ্রো ত্রোসার্ড ও গ্যাব্রয়েল জেসুস।
অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে পোক্ত হলো আর্সেনাল। দুইয়ে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির থেকে পাঁচ পয়েন্ট এগিয়ে গানাররা। ১৯ ম্যাচে ১৪ জয়, ৩ ড্র ও ২হারে ৪৫ পয়েন্ট সংগ্রহ তাদের। আর সমান ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে অ্যাস্টন ভিলা।
প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ আট ম্যাচের সবক’টিতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া ভিলা আর্সেনালের বিপক্ষে নূন্যতম প্রতিরোধও গড়তে পারেনি। পজেশন এগিয়ে থাকলেও ও আক্রমণে গানারদের সামনে দাড়াতেই পারেনি সফরকারীরা।
শুরু থেকেই আক্রমণে কিছুটা এগিয়ে ছিল আর্সেনাল। প্রথমার্ধে শট নেওয়া এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। শুরুর অর্ধে দুটি দারুণ সুযোগই পান ভিক্টর ইয়োকেরেস, তবে সুইডিশ ফরোয়ার্ডের দু’টি হেডের একটিও লক্ষ্যে ছিল না।
দ্বিতীয়ার্ধে রুদ্ররুপে ফিরে আর্সেনাল। চার মিনিটের ব্যবধানেই ব্যবধান ২-০ তরে তারা। ৪৮ মিনিটে আর্জেন্টাইন গোলকিপার মার্তিনেজের ভুলের মাশুল দেয় ভিলা। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল দখলে নিতে লাফিয়ে ওঠেন ৩৩ বছর বয়সী গোলকিপার, তার সামনে লাফিয়ে ওঠেন গাব্রিয়েলও, তবে বল তাঁর হাতে লেগে গাব্রিয়েলের শরীরে ছুঁয়ে জালে জড়ায়।
দ্রুতই ব্যবধান দ্বিগুন করেন জুবিমেন্দি। ডি-বক্সে মার্টিন ওডেগোরের বাড়ানো থ্রু পাস থেকে প্রথম ছোঁয়ার শটে লক্ষ্যভেদ করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। ৬৫ মিনিটে ওডেগোরের নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন মার্তিনেজ।
অবশ্য ব্যবধান ৩-০ করা গোল পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি আর্সেনালকে। মিনিট চারেক পর ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বুলেট গতির শটে পোস্ট ঘেঁষে বল জালে পাঠান ত্রোসার্ড। বেলজিয়ান উইঙ্গারের নেওয়া শট চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না মার্তিনেজের।
ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড জেসুস ৭৭ মিনিটে বদলি হয়ে মাঠে নেমেই চমক দেখান। মাঠে নামার পর এক মিনিট যেতে না যেতেই আর্সেনালের হালি পূর্ণ করেন তিনি। ত্রোসার্ডের বাড়ানো বল থেকে নিখুঁত শটে গোলটি করেন জেসুস। তারপর যোগ করা সময়ে খুব কাছ থেকে বল জালে পাঠিয়ে কেবল হারের ব্যবধানটাই কমান ওলি ওয়াটকিন্স।

প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল ২০২৫–২৬ মৌসুমে শিরোপা লড়াইয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। টেবিলে চার নম্বরে থাকা দলটির মাঠের বাইরের পরিস্থিতিও খুব একটা স্বস্তির নয়। চলতি মৌসুমে সেট-পিস থেকে বারবার গোল হজমের ব্যর্থতার দায় নিয়ে ক্লাব ছাড়লেন সেট-পিস কোচ অ্যারন ব্রিগস।
শনিবার উলভারহ্যাম্পটনের বিপক্ষে অ্যানফিল্ডে ২–১ ব্যবধানে জয় পায় লিভারপুল। তবে ম্যাচে অতিথিদের একমাত্র গোলটি আসে সেট-পিস থেকে। যা আবারও দলের দুর্বল জায়গাটিকে সামনে নিয়ে আসে।
চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সেট-পিস থেকে ইতোমধ্যে ১২টি গোল হজম করেছে অল রেডসরা। এই ধারাবাহিক ব্যর্থতার প্রেক্ষিতেই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান ব্রিগস।
২০২৪–২৫ মৌসুমের শুরুতে আর্নে স্লটের সহকারী হিসেবে লিভারপুলে যোগ দিয়েছিলেন বিগ্রস। আগের মৌসুমে সেট-পিস পরিকল্পনায় ইতিবাচক প্রভাব রাখলেও নতুন মৌসুমে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি।
পরিসংখ্যানও লিভারপুলের জন্য চিন্তার কারণ। প্রিমিয়ার লিগে বোর্নমাউথ ও নটিংহ্যাম ফরেস্টের সঙ্গে যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি সেট-পিস গোল হজম করেছে লিভারপুল। শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে ফিরতে হলে এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠাই এখন অ্যানফিল্ডের ক্লাবটির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।