২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এবার অধিনায়কত্ব না থাকলেও বিদেশের মাটিতে আরেকটি সিরিজ জয় নিশ্চিত করা রান এলো তার ব্যাট থেকেই। মঞ্চটা আগের দিন তৈরি করে দিয়েছিল জাকির হাসান। ছোট রান তাড়ায় শুরুতেই পাকিস্তান বোলারদের চাপে ফেলে দেওয়া এই ওপেনার শেষ দিন অবশ্য বেশিদূর যেতে পারলেন না। তবে ইতিহাস গড়ার পথে সব ব্যাটাররাই অবদান রাখলেন সম্মিলিতভাবে।
তাতে শেষ পর্যন্ত ধরা দিল বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক জয়, যা টাইগারদের এনে দিল পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ।
রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ১৮৫ রান তাড়া করে বাংলাদেশ জিতেছে ৬ উইকেটে। প্রথম টেস্ট নাজমুল হোসেন শান্তর দল জিতেছিল ১০ উইকেটে।
এর মধ্য নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয়বার বিদেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। আগের দুটি ছিল ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে (২-০) ও ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে (১-০)।
আলো স্বল্পতার কারণে আগের দিন খেলা আগেভাগে শেষ হওয়ার আগে রীতিমত টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করেন জাকির হাসান। ৭ ওভারেই বোর্ডে জমা হয় ৪২ রান। অল্প রান ডিফেন্ড করা পাকিস্তান বোলারদের ওপর চাপ তৈরি করে কিছুটা। পঞ্চম দিন সকালে এই রেশ ধরে রাখার প্রয়াস শুরুতেই দেখান আরেক ওপেনার শাদমান। দিনের দ্বিতীয় বলে চার মেরে শুভসূচনা করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
একটি চার মেরে জাকির ভালো কিছুর আশা জাগালেও সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মীর হামজার দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে শেষ হয় তার সম্ভাবনাময় ইনিংসের। তার আগে অবশ্য ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন গুরুত্বপূর্ণ ৩৯ বলে ৪০ রান।
এরপর টানা কয়েকটি ওভারে রানের চাকা ভীষণ ধীর হয়ে যায়। এরই মাঝে হামহার বলে খোঁচা দিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান শাদমান। তবে সেটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। পরের ওভারেই ফেরেন তিনিও। খুররাম শাহজাদের অফস্ট্যাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে মিড-অফে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে করেন ২৪।
৭০ রানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় উইকেটের পতনে পাকিস্তান শিবিরে জাগে জয়ের আশা। বোলাররাও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপ তৈরি করেন বেশ। তবে লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত ঝুঁকিহীন ক্রিকেট খেলার দিকে মনোযোগ দিয়ে দলকে বিপদমুক্ত রাখেন নাজমুল হাসান শান্ত ও মুমিনুল হক। দুজ নই ভালোভাবেই সেট হয়ে যান
তবে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই অধিনায়ককে হারায় বাংলাদেশ। আঘা সালমানকে চার মারার পরের বলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হন শান্ত। লেগ সাইডের ডেলিভারি ডিফেন্ড করলেও তা সরাসরি চলে যায় শর্ট লেগে থাকা ফিল্ডারের হাতে।
দুই ওভার বাদে ৬ রানে থাকা অবস্থায় মুশফিকুর রহিমের বিরুদ্ধে লেগ বিফোরের জোড়াল আবেদন তুলেছিল পাকিস্তান। তবে রিভিউ নিয়েও সফলতার দেখা পায়নি তারা। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে রান আর ফিকে হয়ে যায় পাকিস্তানের সিরিজ ড্রয়ের আশা।
মুমিনুল-মুশফিকুর জুটি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল, তাতে তাদের হাত ধরেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে ক্ষণিকের ভুলে বিপদ ডেকে আনেন মুমিনুল। ম্যাচের ধারার বিপরীতে আবরার আহমেদের বলে টপ-এজ হয়ে ক্যাচ দিয়ে ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন অভিজ্ঞ এই বাঁহাতি ব্যাটার।
জয় থেকে বাংলাদেশ তখন ৩০ রান দুরত্বে। ক্রিজে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার মুশফিকুর ও সাকিব আল হাসান। জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারার কাজটা তারাই সামলান। দুজন অপরাজিত থাকেন যথাক্রমে (২২*) ও (২১*) রানে।
এর আগে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ করেছিল ২৬২ রান। হাসান মাহমুদের পাঁচ উইকেটে পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে গুটিয়ে দিয়ে পায় ১৮৫ রানের টার্গেট।
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৭ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৮ দিন আগে