দুই ম্যাচ হাতে রেখে এরই মধ্যে প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত করে ফেলেছে রংপুর রাইডার্স। শেষ দুই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চারে থাকা অন্য দুই দল ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই দুই ম্যাচেও জয়ের ধারা বজায় রাখতে চায় রংপুর।
আসছে দুটি ম্যাচ তাই হালকাভাবে নিতে চান না রংপুর কোচ সোহেল ইসলাম। শীর্ষে থেকেই কোয়ালিফায়ারে খেলার দিকে চোখ তার। জানালেন, বরিশাল ও কুমিল্লার বিপক্ষে জয় ছাড়া আর কিছু ভাবছেন না তারা।
আরও পড়ুন: এই রংপুরকে থামাবে কে?
"আমাদের দুইটা ম্যাচ আছে কুমিল্লার সাথে এবং বরিশালের সাথে। ওই দুই ম্যাচেই নির্ভর করবে এক দুই কে হবে। আমরাও রেসে আছি। আমরা সেরা দুইয়েই শেষ করতে চাই। সেভাবেই আমরা মানসিকভাবে তৈরি হচ্ছি। এক দুটি ম্যাচ আছে। আমাদের পারফরম্যান্সের যে ধারাবাহিকতা আছে। আমরা এটা ধরে রাখতে চাই।"
দলটার বড় শক্তির জায়গা সাকিব আল হাসান। শেষ দুই ম্যাচে ব্যাট হাতেও দারুণ ছন্দে আছেন এই অলরাউন্ডার। প্রথম দিকে ভুগলেও সঠিক সময়েই সাকিবের ফর্মে ফেরাটা স্বস্তি রংপুরের জন্য।
সাকিবকে নিয়ে রংপুরের কোচ বলেন, "সাকিব যখন রান করবে, দলে তার ইম্পেক্ট স্বাভাবিকভাবে বেশি থাকে। সবাই অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হয়। ও জানে ওর কখন কী অনুশীলন করতে হবে। সে সেগুলো নিয়েই অনুশীলন করে।"
৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৫:২৬ পিএম
এক ম্যাচ আগেই দল জেতার পর বলেছিলেন, বাউন্ডারি ছোট করাটা ঠিক হয়নি। এটা বোলারদের জন্য কাজটা কঠিন করে ফেলেছে। সেই তামিম ইকবাল রংপুর রাইডার্সের কাছে রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ বলে হারের পর প্রশংসাই করলেন টুর্নামেন্টের। হাই-স্কোরিং ম্যাচে দল হারলেও দর্শকদের দিক বিবেচনায় খুশিই বরিশাল অধিনায়ক।
ঢাকার পর এবারের বিপিএলে বাউন্ডারি সীমানা কিছুটা ছোটই রাখা হয়েছে। ভালো উইকেটের পাশাপাশি এই কারণেও শুরু থেকেই তাই দেখা মিলছে বড় স্কোরের। পাল্লা দিয়ে রান করেছেন দেশি ও বিদেশী ব্যাটাররা। তারই ধারায় রংপুরের বিপক্ষে ১৯৭ রানের বিশাল পুঁজি পেয়েছিল বরিশাল। তবে দুর্দান্ত এক রান তাড়ায় শেষ ওভারে ২৬ রান নিয়ে জিতে যায় রংপুর।
আরও পড়ুন
প্রথম বলের ছক্কায় জয়ের বিশ্বাস পেয়েছেন সোহান |
ম্যাচের পর তামিম তাই বড় করে দেখলেন উইকেট ও জমজমাট ক্রিকেটেরই। “এমন ম্যাচ পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই হচ্ছে। হেরে খারাপ লাগলেও তাই খুশি যে, টুর্নামেন্টটা ভালো হচ্ছে। এজন্য মাঠ কর্মীদের কৃতিত্ব দিতে হবে। যেভাবে উইকেট তৈরি করা হচ্ছে, সেটা দুর্দান্ত।”
এই ম্যাচে দিয়ে দীর্ঘ সময় পর রানের মধ্যে ফিরেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক ও বরিশাল ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। সাথে তামিমের ভালো ইনিংসের পর মায়ার্সের খুনে ফিফটিতে জয়ের সুবাসই পাচ্ছিল দলটি। তবে সেই মায়ার্সের করা ২০তম ওভারেই সব মিলিয়ে ৩০ রান তুলে ৩ উইকেটের জয় তুলেন নুরুল হাসান সোহান।
অমন অবিশ্বাস্য ইনিংসের জন্য তামিমের বাহবা পেলেন সোহান। “শান্ত আজকে খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। দারুণভাবে শুরুর দিকের চাপ সামাল দিয়েছে। মায়ার্সও দুর্দান্ত ছিল। আমরা হয়ত এই ম্যাচটা হেরে গেছি, তবে সোহানকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। সে যেভাবে ব্যাট করেছে, সেটা ছিল অবিশ্বাস্য। শেষ ওভারে ২৬ রান ডিফেন্ড করাটা যেকোনো বোলারের জন্যই সহজ কাজ। সোহানের তাই কৃতিত্ব প্রাপ্যই।”
ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা হলেও কিছু কিছু ম্যাচ ও পরিস্থিতি থাকে, যেখানে একটি ম্যাচে নির্দিষ্ট দলের জেতা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে শেষ ওভারের আগে ঠিক তেমনই এক সমীকরণে ছিল রংপুর রাইডার্স। তবে শেষ ওভারে ২৬ রান নিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন নুরুল হাসান সোহান। এমন একটি ইনিংস খেলার পর রংপুর অধিনায়ক বলেছেন, কাইল মায়ার্সের প্রথম বলে ছক্কা মেরেই জয়ের আশা বেড়ে যায় তার।
সোহান ক্রিজে যান ১৯তম ওভারে। তিনি অন্যপ্রান্তে থাকা অবস্থায় দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে প্রায় হারের দুয়ারে চলে যায় রংপুর। ৬ বলে প্রয়োজন ছিল ২৬ রান। সেখান থেকে প্রথম বলে ছক্কা মেরে জয়ের আশা টিকিয়ে রাখেন সোহান। এরপর টানা দুই বাউন্ডারি মারার পর পর ছয় ও চার মেরে শেষ বলে সমীকরণ নিয়ে আসেন এক বলে মাত্র ২ রানে। শেষ বলে ছক্কা মেরে অভিজ্ঞ এই কিপার-ব্যাটার তার দলকে এনে দেন দুর্দান্ত এক জয়।
আরও পড়ুন
৬,৪,৪,৬,৪,৬ - রুপকথার গল্প লিখে রংপুরকে জেতালেন সোহান |
ম্যাচে সেরার খেতাব জেতা সোহান সংবাদ সম্মেলনে এসে শুনিয়েছেন রোমাঞ্চে ভরপুর শেষ ওভারের পেছনের গল্প। “আমি যখন ক্রিজে যাচ্ছিলাম, তখন খুশদিল আমাকে বলছিল যে, এই জায়গা থেকেও আমাদের পক্ষে জেতা সম্ভব। আর শেষ ওভারের আগে রাব্বি ভাই বললেন, ‘তুমি ৬টা বল খেলো। শেপে থাকলে হয়ে যাবে। এটা আমাদের মাঝে যোগাযোগ থেকেই হয়েছে। প্রথম বলে ছয় মারার পর বিশ্বাসটা আরও বেড়েছে যে সম্ভব।”
বরিশালের সেরা বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদির চার ওভারের কোটা আগেই পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় শেষ ওভারের জন্য দলটি বেছে নেয় মিডিয়াম পেসার মায়ার্সকে। ২০ রানের বেশি ডিফেন্ড করার কাজটা পার্টটাইম বোলাররা অধিকাংশ সময়ই করে ফেলেন সফলভাবে। তবে সোহানকে করা ওভারটিতে একেবারেই এলেমেলো বোলিং করেছেন।
তবে সোহান মনে করেন, কাজটা তবুও বেশ কঠিনই ছিল। “দেখেন, বোলার যেই থাকুক, তাদের বোলিং আক্রমণ খুবই ভালো। তবে যেটা বললাম, রাব্বি ভাইয়ের সাথে যখন কথা হচ্ছিল, তখন থেকেই বিশ্বাসটা হচ্ছিল।”
সোহানের ক্যারিয়ারে এমন কাছাকাছি ইনিংস আগেও রয়েছে বেশ কিছু। কয়েকটি জেতাতে পেরেছেন, আবার কয়েকবার হয়েছেন ব্যর্থ। তবে শেষের দিকে নেমে ফিনিশিং টাচ দেওয়ার যে দায়িত্ব, অন্তত রংপুরের জার্সিতে সে কাজে বেশ সফলই তিনি।
আরও পড়ুন
মায়ার্সের মারমুখী ফিফটিতে রান পাহাড়ে বরিশাল |
এমন একটা ইনিংস খেলার পরও যদি তাকে নিয়ে মাতামাতি না হয়, তাহলে অবাক হবেন না বলে জানিয়েছেন সোহান। “ইনিংসটা বলতে, আমি যখন নামি, ২০-৩০ রান সবাই ভুলেই যায়। এটা নতুন কিছু না। তবে সবচেয় বড় ব্যাপার যেটা, দলের জন্য অবদান রাখতে পারছি। আর যেহেতু দলকে জেতাতে পেরেছি, তাই এটা আমার খেলা অন্যতম সেরা ইনিংস।”
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৬ রান। ক্রিজে নুরুল হাসান সোহান। ফরচুন বরিশালের দিকে প্রায় হেলে পড়া ম্যাচ জিততে রংপুর রাইডার্সের ভরসা কেবলই মিরাকেল। তবে কাইল মায়ার্সের করা সেই ওভারে রুপকথারই জন্ম দিলেন রংপুর অধিনায়ক। শেষ বলে ছক্কা মেরে বিপিএলের ইতিহাসের অন্যতম সেরা থ্রিলারে সোহান দলকে এনে দিলেন জয়। তাতে রংপুর তুলে নিল আসরে ষষ্ঠ ম্যাচে তাদের ষষ্ঠ জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) বৃহস্পতিবারের হাইভোল্টেজ ম্যাচে রংপুর জিতেছে ৩ উইকেটে। বরিশালের করা ৫ উইকেটে ১৯৭ রান সোহানের দল পাড়ি দিয়েছে শেষ বলে।
ব্যাট হাতে ঝড় তোলা মায়ার্স বল হাতেও ইনিংসের প্রথম ওভারটা করেন বেশ ভালো। ওপর প্রান্তে আক্রমণে এসেই আঘাত হানেন তানভীর ইসলাম। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অ্যালেক্স হেলস ডাউন দ্য উইকেটে এসে বড় শট মারতে গিয়ে হন স্টাম্পড। চার মেরে রানের খাতা খোলেন আরেক ফর্মে থাকা ব্যাটার সাইফ হাসান।
তবে পাওয়ার প্লেতে ওপেনার তৌফিক খান সেভাবে তাল মেলাতে না পারায় মাত্র ৩৪ রান তুলতে পারে রংপুর। রংপুরের চাপ বাড়িয়ে এরপর দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হয়ে যান সাইফ। ফাহিম আশরাফের বলে করেছিলেন পুল, টাইমিংও ছিল ভালো। তবে বাউন্ডারি লাইনে থাকা রিশাদ হোসেনকেই খুঁজে নেন। ১৯ বলে সাইফের অবদান ২২ রান।
আরও পড়ুন
প্রথম বলের ছক্কায় জয়ের বিশ্বাস পেয়েছেন সোহান |
শুরুটা ধীরলয়ে করা তৌফিক রানের চাকা সচল করেন তানভীরের এক ওভারে দুই ছক্কা ও একটা চার মেরে। এরপর রিশাদকেও ওড়ান ছক্কায়। তবে অতি আগ্রাসী হতে গিয়েই কিনা, শর্ট পিচ ডেলিভারিতে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে ৩৮ রানে ফেরেন ওই ওভারেই।
চাপের মুখে এরপর খুশদিল ও ইফতিখারের সেই জুটি। প্রায় প্রতি ওভারেই চার বা ছক্কা বের করে নিচ্ছিলেন দুই পাকিস্তান ব্যাটার। তবে বল-রানের ব্যবধান কমানোর চাপ ক্রমশ বাড়ছিল। সেটা সরাতে স্বদেশী শাহিন শাহ আফ্রিদির ওপর চড়াও হন খুশদিল। হাঁকান এক ওভারেই দুই ছক্কা।
এরপর জাহানদাদ খানকে দুটি চার ও এক ছক্কায় উড়িয়ে ফিফটির কাছাকাছি চলে যান ইফতিখার। তবে ১৮তম ওভারে দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে রংপুর ব্যাটারদের চাপে ফেলে দেন শাহিন। শেষ পর্যন্ত বড় শট মারতে গিয়ে ওই ওভারেই ফিফটি থেকে দুই রান দূরে থাকতে আউট হয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন ইফতিখার।
জাহানদাদকে টানা দুই ছক্কা মেরে রংপুর শিবিরে ফের জয়ের আশা জাগান খুশদিল। তবে এরপরই লং অফে ক্যাচ দিয়ে ২৪ বলে ৪৮ রানে বিদায় নিতে হয় তাকেও। অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউটে কাঁটা পড়েন শেখ মাহেদি হাসান। ডাক মারেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও। এরপরই সোহানের খুনে ব্যাটিংয়ে রংপুরের সেই অবিশ্বাস্য জয়।
আরও পড়ুন
মায়ার্সের মারমুখী ফিফটিতে রান পাহাড়ে বরিশাল |
প্রথম বলে ছক্কা মারার পর টানা দুই বাউন্ডারি মারেন। এরপর ছক্কার ও চারের পর নাটকীয়ভাবে শেষ বলে আরেকটি ছয়ে সীমানা পার করিয়ে রংপুর দল ও দর্শকদের উল্লাসে ভাসান সোহান। মাত্র ৭ বলে ৩২ রান করেন রংপুর অধিনায়ক।
এর আগে দিনের শুরুতে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বরিশালকে স্বপ্নের শুরু এনে দেন তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়ক তামিম ইনিংসের শুরুতে কিছুটা ধীরগতিতে এগিয়ে গেলেও এরপর ফিরে পান ছন্দ। আর আসর জুড়ে রানের জন্য ধুঁকতে থাকা শান্ত প্রথম বল থেকেই রান করেন আত্মবিশ্বাসের সাথে।
তাতে ফিফটি পেরিয়ে জুটি গড়ায় সেঞ্চুরির দিকে। তবে এক ওভারে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। শান্ত ও তামিম করেন যথাক্রমে (৪১ ও ৪০ রান)। তাওহীদ হৃদয়ের শুরুটা ভালো হলেও পারেননি ইনিংস লম্বা করতে। অল্পে ফেরেন মাহমুদউল্লাহও।
বরিশালের বিপদ বাড়িয়ে মায়ার্সকেও প্রায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রাব্বি। তবে ক্যাচ আউট হলেও নো বলের কারণে বেঁচে যান ক্যারিবিয়ান ব্যাটার। জীবন পেয়ে সিলেটের দর্শকদের বিনোদনের খোরাক যোগান মায়ার্স। শেষ কয়েক ওভারে চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে তুলে নেন আগ্রাসী এক ফিফটি, যা বরিশালকে নিয়ে যায় বড় স্কোরের দিকে।
আরও পড়ুন
হাইভোল্টেজ ম্যাচে আগে বোলিংয়ে রংপুর |
মায়ার্স শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন মাত্র ২৯ বলে ৬১ রানে। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে মাত্র ৬ বলে ২০ রানের ক্যামিও খেলেন ফাহিম আশরাফ। রংপুরের বোলারদের জন্য কঠিন এক দিনে সেরা ছিলেন আকিফ জাভেদ, চার ওভারে ১৬ রানে তার শিকার এক উইকেট।
ইনিংসের শুরু থেকেই ছন্দময় ব্যাটিং করলেন ফর্মের সাথে লড়াই করা নাজমুল হোসেন শান্ত। শুরুতে আড়ষ্ট তামিম ইকবালও ছন্দ ফিরে পেলেন। ফরচুন বরিশাল পেল শক্ত ভিত। জোড়া আঘাতে দুজনকেই ফেরালেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। তবে একবার জীবন পাওয়া কাইল মায়ার্সের ঝড়ো ফিফটিতে প্রায় দুইশ ছুঁইছুঁই পুঁজি পেয়ে গেল বরিশাল।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) বৃহস্পতিবারের প্রথম ম্যাচে বরিশাল ২০ ওভারে বোর্ডে জমা করতে পেরেছে ৫ উইকেটে ১৯৭ রান।
ইনিংসের প্রথম ওভারে তামিমকে রান বের করার কোনো সুযোগই না দিয়ে মেইডেন নেন শেখ মাহেদি হাসান। আরেক অফ স্পিনার ইফতেখার আহমেদকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন শান্ত। তামিম অন্যপ্রান্তে সংগ্রাম করলেও জাতীয় দলের অধিনায়ক মাহেদিকে ছক্কা ও আকিফ জাভেদকে চার মেরে আভাস দেন ফর্মে ফেরার।
প্রথম ১৪ বলে মাত্র ৪ রান করা তামিম মাহেদির এক ওভারে দুটি বাউন্ডারিতে কিছুটা চাপ সরান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে গতিময় পেসার নাহিদ রানাকে আক্রমণে তিনটি চার সহ ১৪ রান নিয়ে স্বাগত জানান শান্ত।
ক্রমেই ছন্দ ফিরে পাওয়া তামিম এরপর ইফতেখারকে লং-অন দিয়ে দুটি ছক্কার মাঝে একটি চারও হাঁকান। জমে ওঠা এই জুটি ১০ ওভারে সংগ্রহ করে ৮১ রান, যা বরিশালকে ১৮০-২০০ রানের স্কোরের আশা যোগায়।
শেষ পর্যন্ত ফিরতি স্পেলে এসে শান্তকে ফিরিয়ে রংপুর শিবিরে স্বস্তি এনে দেন রাব্বি। তার আগে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৪১ রান আসে শান্তর ব্যাট থেকে। মুখোমুখি প্রথম বলেই ডিপ মিড-উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে দেন কাইল মায়ার্স। তবে ঘটনাবহুল ওভারটা হাসিতেই শেষ হয় রাব্বির। এবার তার শিকার আরেক সেট ব্যাটার তামিম, যার ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ৪০ রান।
কয়েকটি বড় শটে তাওহীদ হৃদয় চাপ বাড়তে দেননি এরপর। তবে ২৩ রানে তার বিদায়ের পরই মাহমুদউল্লাহও দ্রুত আউট হলে ম্যাচে ফেরার আভাস দেন রংপুরের বোলাররা। তার আগেই মায়ার্সকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে সেই কাজটা প্রায় পূর্ণ করেই ফেলেছিলেন রাব্বি। তবে বিধিবাম!
তবে ওই বলেই ৩০ গজের ভেতর অতিরিক্ত ফিল্ডার রাখে রংপুর। ফলে নো বল দেন আম্পায়ার। ফ্রি হিট থেকে ছক্কার পর এরপরের ৪ বলে ১৮ রান নেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটার। নাহিদের করা ১৯তম ওভারে আসে ২২ রান।
পেসারদের জন্য কঠিন এক দিনে শেষ ওভারে খরুচে ছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনও। মায়ার্সের হাতেই হজম করেন তিন ছক্কা। ওভারে আসে ২২ রান। ব্যাট হাতে ঝড় তোলা মায়ার্স মাত্র ২৯ বলে অপরাজিত থাকেন ৬১ রানে। ইনিংস সাজান ৭টি ছক্কা ও এক চারে।
চার ওভারে মাত্র ১৬ রানে ১ উইকেট নিয়ে রংপুরের সেরা বোলার ছিলেন আকিফ জাভেদ।
গত আসর থেকেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অন্যতম আকর্ষণীয় ম্যাচ হয়ে দাঁড়িয়েছে রংপুর রাইডার্স ও ফরচুন বরিশাল। তারকায় ঠাসা এই দলের চলতি আসরের প্রথম সাক্ষাতে জয় পেয়েছিল নুরুল হাসান সোহানের দল। সিলেটে দল দুটির দ্বিতীয় লড়াইয়ে টস জিতে আগে ফিল্ডিং নিয়েছে রংপুর।
আগের ম্যাচের রংপুর দল থেকে বাদ পড়েছেন তরুণ ব্যাটার আজিজুল হাকিম। তার জায়গায় খেলবেন তৌফিক খান।
ঢাকায় রংপুর ও বরিশালের প্রথম ম্যাচটি ছিল একপেশে। মাত্র ১২৪ রানে গুটিয়ে যাওয়া তামিম ইকবালের দল বল হাতেও পারেনি লড়াই জমাতে। হেরে যায় ৮ উইকেটে। তবে এরপর ঘুরে দাঁড়িয়ে সিলেটে টানা দুই ম্যাচ জিতেছে বরিশাল। এবার চোখ হ্যাটট্রিক জয়ের দিকে।
আরও পড়ুন
প্রথম বলের ছক্কায় জয়ের বিশ্বাস পেয়েছেন সোহান |
বিপরীতে আসরে অপরাজিত রংপুরের জন্য ম্যাচটা জয়ের ধারা বজায় রাখার। একে একে টানা পাচঁ ম্যাচ জিতেছে একবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়নরা। টপ অর্ডারে অ্যালেক্স হেলস, সাইফ হাসানরা আছেন ভালো ছন্দে। আর বল হাতে নাহিদ রানা, শেখ মাহেদিরাও করছেন ভালো। ব্যাটে-বলে সমান অবদান রাখছেন দুই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার খুশদিল শাহ ও ইফতেখার আহমেদ।
রংপুর রাইডার্স একাদশ :
তৌফিক খান, অ্যালেক্স হেলস, সাইফ হাসান, ইফতেখার আহমেদ, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক), শেখ মাহেদী হাসান, নাহিদ রানা, আকিফ জাভেদ, কামরুল ইসলাম রাব্বি।
ফরচুন বরিশাল একাদশ :
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক),তাওহীদ হৃদয়, ফাহিম আশরাফ, জাহানদাদ খান, মাহমুদউল্লাহ, কাইল মায়ার্স, মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, রিশাদ হোসেন, শাহীন শাহ আফ্রিদি, তানভীর ইসলাম।
রংপুর-বরিশাল সহ বিপিএলের সব ম্যাচ, হাইলাইটস দেখতে চোখ রাখুন দেশের একমাত্র স্পোর্টস চ্যানেল টি স্পোর্টস নেটওয়ার্কে।
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৯ দিন আগে
১০ দিন আগে
১৯ দিন আগে
২২ দিন আগে