২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:১২ পিএম

প্রতিকূল আবহাওয়া, তীব্র শীত আর বিপদসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর অষ্টম সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ (মানাসলু) জয় করেছেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী তৌফিক আহমেদ তমাল। বুধবার নেপালের স্থানীয় সময় দিবাগত রাত ৩টায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ১৬৩ মিটারেরে এই চূড়া জয় করেন তিনি।
বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী পর্বতগুলোর একটি মানাসলু। মানাসলু পশ্চিম-মধ্য নেপালের মানসিরি হিমালে অবস্থিত। নামের উৎপত্তি সংস্কৃত ‘মনসা’ থেকে, যার অর্থ ‘বুদ্ধি’ বা ‘আত্মা’, তাই মানাসলুর অর্থ দাঁড়ায় ‘আত্মার পর্বত’। এই পর্বত প্রথম আরোহণ করেন তোশিও ইমানিশি ও গ্যালজেন নরবু (১৯৫৬)। উচ্চতায় ৮ম হলেও, প্রাণঘাতী পর্বতগুলোর মধ্যে এটি চতুর্থ।
বর্তমানে নিরাপদে ক্যাম্প–৪ এর পথে নেমে এসেছেন তমাল। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযানের বাংলাদেশ সমন্বয়ক মহিউদ্দিন আল মুহিত। এই অভিযান পরিচালনা করে নেপালের খ্যাতনামা পর্বতারোহণ সংস্থা ‘সেভেন সামিটস’।
মুহিত বলেন,
‘তমালের এই সাফল্য কেবল তার একার নয়, এটি পুরো বাংলাদেশের অর্জন। তার একাগ্রতা, সাহস ও দীর্ঘ প্রস্তুতি আজ সার্থক হয়েছে। আমরা গর্বিত এবং তার নিরাপদে দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছি।’
গত ১ সেপ্টেম্বর এই শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নেপালে রওনা দেন তিনি। সম্প্রতি রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে জাতীয় পতাকা তুলে দেন বাংলাদেশের প্রথম নারী এভারেস্ট জয়ী নিশাত মজুমদার। অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল তরুণ প্রজন্মকে পর্বতারোহণের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার সঙ্গে পরিচয় করানো।
পর্বতারোহী তৌফিক আহমেদ তমালের এই গৌরব অর্জনে এই কঠিন পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৪ বছর আগে। গত ১৪ বছর ধরে দেশে-বিদেশে নিয়মিত ট্রেকিং ও উচ্চ পর্বতারোহণে যুক্ত ছিলেন।
ভারতের নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে মৌলিক ও উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন তমাল। এর আগে, তিনি ৫০০০–৬০০০ মিটার উচ্চতার সাতটি এবং ৬৫০০ মিটার উঁচু দুটি শৃঙ্গ জয় করেন। উল্লেখযোগ্য অভিযানের মধ্যে রয়েছে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শীতকালীন থার্পু চুল্লি অভিযান, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ভাগীরথী-২ (৬৫১২ মিটার) জয়, এবং ২০২৪ সালে বিশ্বের অন্যতম কঠিন শৃঙ্গ মাউন্ট আমা দাবলাম (৬৮১৪ মিটার) জয়।
No posts available.
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৮:৪৬ পিএম
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৬:৩৯ পিএম

ডব্লিউডব্লিউইকে বিদায় জানাচ্ছেন সুপারস্টার জন সিনা। আগামী সোমবার রাতে ‘র’-এ শেষবারের মতো রিংয়ে উঠবেন তিনি। নিউইয়র্কের ঐতিহাসিক ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হবে তাঁর বিদায়ী ম্যাচ।
২৩ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারকে স্মরণ করে সামাজিক মাধ্যমে (এক্সে) এক বার্তায় সিনা বলেন,
“এই সময়ে আমি ৫৪৪টি ম্যাচ খেলেছি, যা ডব্লিউডব্লিউই ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আমার সবচেয়ে প্রিয় ম্যাচ… সেটাই যা সামনে আসছে। আর সেটাই হবে শেষ ম্যাচ।”
ডব্লিউডব্লিউই কতৃপক্ষ এখনও জানায়নি শেষবার কার বিপক্ষে রিংয়ে নামবেন সিনা। বর্তমানে তিনি তাঁর বিদায়ী সফর ‘লাস্ট টাইম ইজ নাউ’ নিয়ে ব্যস্ত। ১৩ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘স্যাটারডে নাইট’স মেইন ইভেন্ট’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সিনার বিদায়ী সফর শেষ হবে।
এক সপ্তাহ আগেই নিজ শহর বোস্টনে ডমিনিক মিস্টেরিওকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইন্টারকন্টিনেন্টাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সিনা।

নারী কাবাডি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর শুরু হচ্ছে আগামী সোমবার। ঢাকায় অনুষ্ঠেয় এ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে আজ ঢাকায় পা রেখেছে ভারত ও জাঞ্জিবার নারী কাবাডি দল।
টুর্নামেন্টে স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও অংশ নিচ্ছে আর্জেন্টিনা, চাইনিজ তাইপে, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইরান, ভারত, জাপান, কেনিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল, থাইল্যান্ড, উগান্ডা ও জাঞ্জিবার। স্ট্যান্ডবাই দল হিসেবে রয়েছে পাকিস্তান ও পোল্যান্ড।
২০১২ সালে প্রথমবারের মতো ভারতের পাটনায় অনুষ্ঠিত হয় মেয়েদের কাবাডি বিশ্বকাপ। সেবার জাপানের কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরেছিল বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্বাগতিক ভারত, রানার্স-আপ ইরান।
বিশ্বকাপের সব ম্যাচ হবে মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে। ২৫ নভেম্বর ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হবে আসর।

ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে পর্দা নামলো এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপের। ৮ নভেম্বর পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল ৩০ টি দেশের আর্চাররা।
টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত ও দলীয় ইভেন্টে পদক তালিকায় শীর্ষে ভারত। ৬টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ্য ও ১টি ব্রোঞ্জ মিলিয়ে ১০টি পদক জিতেছে প্রতিবেশি দেশ। ২টি স্বর্ণ, ৪টি রৌপ্য ও ৪ টি ব্রোঞ্জ জিতেছে দক্ষিণ কোরিয়া। আয়োজক বাংলাদেশ একটি রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ জিতেছে।
আজ দিনের শুরু হয় রিকার্ভ নারী দলগত ইভেন্টের ফাইনাল দিয়ে। চাইনিজ তাইপেকে ৬-০ সেট পয়েন্টে (৫৪-৫২, ৫৭-৫৫, ৫৬-৫১) হারিয়ে স্বর্ণপদক জিতে দক্ষিণ কোরিয়া। কোরিয়ার হয়ে খেলেন জ্যাং মিনহি, কিম সু রিন, নাম সু হিউন। উজবেকিস্তানকে ৬-০ সেট পয়েন্টে হারিয়ে আগেই এই ইভেন্টের ব্রোঞ্জ পেয়েছিল মালয়েশিয়া।
রিকার্ভ পুরুষ দলগত ফাইনালে জমজমাট লড়াই হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতের। টাইব্রেকারে ৫-৪ সেট পয়েন্টের ব্যবধানে (৫৬-৫৬, ৫৬-৫৬, ৫৭-৫১, ৫৭-৫৩) জিতে স্বর্ণপদক নিজেদের করে নেয় ভারত।
চার সেটে দুই দলের পয়েন্ট সমান (৪-৪) হলে টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। সেখানেও তিন তীর ছোঁড়ার লড়াইয়ে দুই দল ২৯ স্কোর করে, তবে তীর কেন্দ্রবিন্দুর কাছাকাছি হওয়ার সুবাদে ২৯+ পয়েন্ট নিয়ে জিতে যায় সঞ্জয় ইয়াশদীপ ভোগে, অতনু দাস ও রাহুলকে নিয়ে গড়া ভারত দল। এই ইভেন্টের ব্রোঞ্জ আগের দিন জিতেছিল উজবেকিস্তান।
রিকার্ভ দলগত মিশ্র দ্বৈতে একপেশে লড়াইয়ে ৬-২ সেট পয়েন্টে (৩৬-৩৫, ৩৬-৩৭, ৩৪-৩৬, ৩৪-৩৫) উজবেকিস্তানকে হারিয়ে স্বর্ণপদক পেয়েছে চাইনিজ তাইপে। চাইনিজ তাইপের হয়ে খেলেন লি তিসাই-চি ও তাই ইউ-হুসুয়ান জুটি।
রিকার্ভ দলগত মিশ্র দ্বৈতের ব্রোঞ্জ নির্ধারণী ম্যাচে ভারতকে ৬-০ সেট পয়েন্টে উড়িয়ে দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যাং মিনহি-সিও মিনগি জুটি।
দিনের দ্বিতীয় সেশনে রিকার্ভ নারী এককে স্বর্ণপদক জিতেছেন ভারতের অঙ্কিতা ভাকাত। ফাইনালে ৭-৩ সেট পয়েন্টে (২৯-২৭, ২৬-২৬, ২৬-২৮, ২৯-২৮, ২৯-২৮) হারিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নাম সুহেউনকে।
এ ইভেন্টের ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে টাইব্রেকারে ৬-৫ সেট পয়েন্টে জিতেছেন ভারতের দ্বীপিকা কুমারী, হারিয়েছেন স্বদেশী সঙ্গীতাকে। ৫-৫ সমতার পর টাইব্রেকারে দুজনের ১০ স্কোর করেন, তবে কেন্দ্রবিন্দুর কাছাকাছি নিশানা ভেদ করে জয় পান দ্বীপিকা।
রিকার্ভ পুরুষ এককের ফাইনাল দিয়ে শেষ হয় এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ। এই ইভেন্টে হয়েছে ‘অল ইন্ডিয়া’ ফাইনালে। ভারতের ধীরাজ বোম্মাদেভারা ৬-২ সেট পয়েন্টে (২৮-২৮, ২৯-২৬, ২৮-২৮, ২৮-২৬) স্বদেশি রাহুলকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জিতে নেন। এই ইভেন্টের ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সিও মিনগি ৭-১ সেট পয়েন্টে স্বদেশি জ্যাং চিয়েহাওয়ান হারিয়েছেন।

ষষ্ঠ ইসলামিক সলিডারিটি গেমসের মিশ্র দ্বৈতে রৌপ্য বিজয়ী খৈ খৈ সাই মারমা দেশে ফিরেছেন। আজ বিকাল সাড়ে তিনটায় বাংলাদেশ বিমানবন্দরে পা রাখেন তিনি। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের বাকি সদস্যরা পবিত্র ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরবেন।
খৈ খৈকে বিমানবন্দরে ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সহ-সভাপতি খোন্দকার হাসান মুনীর সুমনসহ অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ষষ্ঠ ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে টেবিল টেনিসে মিশ্র দ্বৈতের ফাইনালে উঠে মো. জাবেদ আহমেদ–খৈ খৈ সাই মারমা জুটি বাংলাদেশকে রৌপ্য পদক এনে দেন। সেমিফাইনালে তাঁরা বাহারাইনকে ৩–১ সেটে হারিয়েছিলেন। যদিও ফাইনালে তুরস্কের কাছে হেরে স্বর্ণপদক জেতা হয়নি। রুপার পদক জিতে আজ বিকালে খৈ খৈ সাই মারমা দেশে ফেরেন। মিশ্র দ্বৈতের অপর সদস্য মো. জাবেদ আহমেদ ওমরা শেষে দেশে প্রত্যাবর্তন করবেন।

২৪তম এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপের পর্দা নামল আজ। প্রতিযোগিতার কম্পাউন্ড মিশ্র দলগত ইভেন্টে রুপা জিতেছেন হিমু বাছাড় ও বন্যা আক্তার। কম্পাউন্ড নারী এককে ব্রোঞ্জ জিতেছেন কুলসুম আক্তার মনি। এই তিন আর্চারের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে শুক্রবার বিকেলে প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী শেষে এই ঘোষণা দেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আসিফ মাহমুদ বলেন,
‘অলিম্পিকে গোল্ড মেডেল পেতে যাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাদের মতো সুযোগ-সুবিধা থাকতে হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যে সক্ষমতা রয়েছে, সেভাবেই আমরা তাদের সহযোগিতা করব। এটা সত্যি, বিশ্বের বহুল জনসংখ্যার দেশের একটি হলেও অলিম্পিকে গোল্ড নেই আমাদের। আশা করি, এই আর্চারির মাধ্যমে গোল্ড পাব। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি ঘোষণাও দিতে চাই—প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের পক্ষে যে তিনজন মেডেল পেয়েছেন, তাদের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে দশ লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করছি।’
উপদেষ্টার এমন ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত বন্যা আক্তার। তিনি বলেন,
‘মাননীয় ক্রীড়া উপদেষ্টা সত্যিই এমন ঘোষণা দিয়ে থাকেন, তাহলে এর চেয়ে খুশির খবর আর কিছু নেই। এতে আর্চারিতে আমাদের আগ্রহ আরও বাড়বে। আরও মনোযোগী হতে পারব আমরা। শুধু তাই নয়, অনেকেই হয়তো আর্চারি ছেড়ে বিদেশে চলে যান—সেক্ষেত্রে এসব সম্ভাবনাও কমে আসবে। সব মিলিয়ে আমি খুবই খুশি এমন একটি আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণার কথা শুনে।’