শেষবার কোনো প্রতিযোগিতায় রিয়াল মাদ্রিদ ফাইনাল হেরেছিল কবে? উত্তর খুঁজতে কিছুটা বিপাকেই পড়ার কথা। গুগল বলছে শেষবার রিয়াল ফাইনালে হেরেছে ২০২৩ সালে। লস ব্লাঙ্কোদের হারার তেতো স্বাদটা দিয়েছিল এই বার্সেলোনাই। তাও সেই একই প্রতিযোগিতায়। ঠিক দুই বছর বাদে সেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি করলো বার্সেলোনা। এবার অবশ্য জয়ের ব্যবধানে রয়েছে বড় ফারাক।
জেদ্দার কিংস আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে রবিবার রাতে রিয়ালকে নিয়ে ছেলে খেলায় মেতেছিল বার্সেলোনা। মরুর বুকে তপ্ত গরমে রিয়ালকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে হান্সি ফ্লিকের দল। তাতে কোচ হিসেবে বার্সেলোনার ডাগআউটে প্রথম শিরোপার দেখা পেয়েছেন এই জার্মান কোচ। স্প্যানিশ সুপার কাপে বার্সেলোনা ফিরে পেয়েছে তাদের হারানো মুকুট। রেকর্ড ১৫তম বারের মত শিরোপাটা ঘরে তুলেছে তারা।
ম্যাচটা রিয়ালের জন্য ছিল প্রতিশোধের মঞ্চ। শেষ এল ক্লাসিকোতে ঘরের মাঠে রিয়ালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বার্সেলোনা। অবশ্য মাঠে দেখা মিলেছে উল্টো চিত্রের। প্রতিশোধের জায়গায় রিয়ালকে আরও এক দুঃস্বপ্নের রাতই উপহার দিয়েছে বার্সেলোনা।
আরও পড়ুন
রিয়ালকে উড়িয়ে দেওয়া বার্সাকে নিয়ে গর্বিত ফ্লিক |
যার দায়টা রিয়াল সমর্থকরা দিতে পারে জোড়া তালি দিয়ে চলা তাদের রক্ষণকে। লুকাস ভাসকেজ, চুয়েমেনি কিংবা রুডিগারদের একের পর এক ভুল রিয়ালকে বিপাকে ফেলেছে। বার্সেলোনার প্রেসিং আর হাই লাইন ডিফেন্সে আরও একবার খাবি খেয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
তারকা নির্ভর রিয়ালকে প্রথমআর্ধেই ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে তারুণ্য নির্ভর বার্সেলোনা। এমন চিত্র রিয়াল সমর্থকদের জন্য বেশ হৃদয়বিদারকই। বলের দখল কিংবা সুযোগ তৈরি সব দিক থেকেই এগিয়ে ছিল কাতালান ক্লাবটি।
ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই রিয়ালকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। তবে চাপ সামলে ম্যাচের প্রথম গোলের দেখা পায় রিয়ালই। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে দেন কিলিয়ান এমবাপে। গেল এল ক্লাসিকোতে দুইবার গোল করলেও অফ সাইডে বাতিল হয়েছিল এমবাপের গোল। তবে এদিন আর বার্সেলোনা ডিফেন্ডাররা আটকাতে পারেননি এমবাপেকে।
প্রতিআক্রমণ থেকে ম্যাচের পাঁচ মিনিটের মাথায় রিয়ালকে এগিয়ে দেন কিলিয়ান এমবাপে। নিজেদের আর্ধ থেকে প্রায় একাই বার্সেলোনা ডিফেন্ডার খাবি খাইয়ে বল জালে জড়ান ফরাসি অধিনায়ক। এই একটা মুহূর্তই রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকরা প্রথমআর্ধে উদযাপনের সুযোগ পেয়েছিল। এরপরের গল্প পুরটাই বার্সেলোনার।
আরও পড়ুন
ফোরেন্তিনো পেরেজকে নকশীকাঁথা, জার্সি উপহার দিয়ে এলেন বাংলাদেশ সমর্থকেরা |
যার শুরু ২২ মিনিটে লামিন ইয়ামালের হাত ধরে। এমবাপের করা চোখ ধাঁধানো গোলকে ভুলিয়ে দিতে ২০ মিনিটও সময় নেননি ১৭ বছর বয়সী এই তরুণ। রুডিগার, চুয়েমেনির মতো অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার দর্শক বানিয়ে কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে ডি বক্সের ভেতর থেকে আড়াআড়ি এক শটে বার্সাকে সমতায় ফেরান ইয়ামাল।
এই একটা গোল বদলে দেয় পুরো ম্যাচের চিত্র। এরপর রিয়ালকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলায় মাতে বার্সেলোনা। ৩৬ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে গাভিকে ফাউল করে বসেন রিয়াল মিডফিল্ডার কামাভিঙ্গা। ভিএআরের সাহয্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক থেকে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন রবার্ট লেভানডফস্কি। তিন মিনিটে বাদে বার্সেলোনা আবারও পায় গোলের দেখা। তিন নম্বর গোলটা আসে রাফিনিয়ার কাছ থেকে।
দুই রিয়াল ডিফেন্ডার লুকাস ভাস্কেজ ও চুয়েমেনির মাঝখানে বিরাট ফাঁকা জায়গা কাজে লাগাতে ভুল করেননি রাফিনিয়া। কুন্দের বাড়ানো বল থেকে জোরালো হেডে জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড। যোগ করা সময়ে আরও একবার গোলের দেখা মেলে বার্সেলোনার। এবার প্রতিআক্রমণে রাফিনিয়ার বাড়ানো বল থেকে ব্যবধান বাড়ান বালদে। তাতে প্রথমআর্ধেই ম্যাচ হেলে পড়ে বার্সেলোনার দিকে।
দ্বিতীয়ার্ধেও বার্সেলোনা শুরু করে একই তালে। বিরতি থেকে ফেরার তিন মিনিটের মাথায় মেলে গোলের দেখা। প্রতিআক্রমণ থেকে আরও একবার গোলের দেখা পান রাফিনিয়া। তবে ম্যাচ জমে উঠে ৫৭ মিনিটে সেজনির লাল কার্ডে। কিলিয়ান এমবাপেকে ডি বক্সের বাইরে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন বার্সা গোলকিপার। সেই ফাউল থেকে গোল করে রিয়ালের হয়ে ব্যবধান কমান রদ্রিগো।
আরও পড়ুন
ভিনিসিয়ুস হয়ে বাঁচা সহজ নয় : আনচেলত্তি |
দশ জনের বার্সেলোনা অবশ্য এরপর আক্রমণের ধারা কমায়। তাতে গতি কমে খেলারও। রিয়ালের সামনে ম্যাচে ফেরার সুযোগ থাকলেও বার্সেলোনার দারুণ ডিফেন্ডিংয়ে সেটা আর হয়ে উঠেনি। বদলি হিসেবে নামা ইনাকি পেনিয়ার দারুণ কিছু সেইভে রিয়ালও আর পারেনি গোলের ব্যবধান কমাতে। তাতে ৫-২ গোলের বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।
২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৪:০৬ পিএম
২১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম
২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৯:১৯ পিএম
স্প্যানিশ রেডিও ওন্দা সেরো সোমবার দাবি তুলেছিল মৌসুম শেষেই রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তবে তাদের সেই দাবি ২৪ ঘণ্টাও ধোপে টেকেনি। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি খোলসা করেছেন রিয়ালে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। নিজ ইচ্ছায় রিয়াল যে তিনি ছাড়তে চান না সে ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন ইতালিয়ান এই কোচ।
রিয়ালের সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে বেশ সমালোচনার মুখেই পড়েছেন আনচেলত্তি। ফলে চলতি মৌসুমে যাই হোক, লস ব্লাঙ্কোসদের ডেরা আনচেলত্তি ছাড়তে চান বলেই জানিয়েছিল ওন্দা সেরো। তাতে রিয়াল সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান আবেগি ভিডিও বানিয়ে ফেলেছিল আনচেলত্তিকে নিয়ে। অনেকে আবার তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছিল রিয়াল কোচের বিদায়ের খবরে। যার কারণ অবশ্য রিয়ালের সাম্প্রতিক ফর্ম।
তবে মঙ্গলবার সালজবুর্গের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আনচেলত্তি জানালেন ভিন্ন কথা। নিজ ইচ্ছায় রিয়াল ছাড়তে চান না বলেই দিয়ে রাখলেন ইঙ্গিত, “ব্যাপারটা আমি পরিষ্কার করে দিতে চাই। এই ক্লাব আমি কবে ছাড়বো সেটা আমার উপর নির্ভর করছে না। জানি সেটা আসবে একদিন। তবে কবে সেটা তা মোটেও আমার সিদ্ধান্ত হবে না।”
রিয়ালের সাথে আনচেলত্তির চুক্তির মেয়াদ আছে ২০২৬ পর্যন্ত। তবে ৬৫ বছর বয়সী এই কোচ রিয়ালের ডেরায় থাকতে চান কমপক্ষে ২০২৯ সাল পর্যন্ত। ততদিন পর্যন্ত রিয়ালে সভাপতি হিসেবে থাকবেন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। একসাথে দুজন বিদায় নিতে পারলে দারুণ হবে বলেও মন্তব্য করেছেন আনচেলত্তি।
“এটা যে কোনো সময়ই হতে পারে। কালকে, পরের সপ্তাহে, এক বছর কিংবা পাঁচ বছর। ফ্লোরেন্তিনো এখানে আরও চার বছর আছে, আমার ইচ্ছে এখানে আরও চার বছর থাকা, যাতে দুজন একসাথে বিদায় জানাতে পারি ক্লাবকে।”
গেল মৌসুমে রিয়ালকে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতালেও চলতি মৌসুমে রিয়ালের পারফরম্যান্সে দেখা মিলেছে অধারাবাহিকতার ছাপ। যা নিয়েই মূলত সমালোচনার মুখে পড়েছেন আনচেলত্তি। তবে মৌসুমের মাঝপথে এসে তার দলের অবস্থান লা লিগার শীর্ষে। চ্যাম্পিয়নস লিগে টেবিলের ২০ নম্বরে থাকলেও ভালোভাবেই সুযোগ আছে নকআউট পর্বে যাওয়ার। এছাড়া তারা জায়গা করে নিয়েছে কোপা দেল রের কোয়ার্টার ফাইনালেও।
প্রথমার্ধে ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাব বেশ কঠিন পরীক্ষাই নিয়েছিল আবাহনীর। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর তারা আটকে রাখতে পারেনি আকাশী-নীলদের। শেষ মুহূর্তের ঝলকে তারা শেষ পর্যন্ত ৩-০ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। দিনের অন্য ম্যাচে জয় পেয়েছে রহমতগঞ্জ। চট্টগ্রাম আবাহনীকে তারা উড়িয়ে দিয়েছে ৩-০ গোলে।
দুই দল জয় তুলে নেওয়ায় জমে উঠেছে ফেডারেশন কাপের গ্রুপ ‘বি’-এর শীর্ষস্থানের লড়াই। তিন ম্যাচ খেলে তিনটাতেই জয় পেয়েছে দুই দলই। সমান নয় পয়েন্ট হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় টেবিল টপার রহমতগঞ্জ। তাই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কে হবে সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। যে ম্যাচে আবার লড়বে দুই দল। ম্যাচ ড্র হলে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে গ্রুপ সেরা হয়ে পরের পর্বে যাবে রহমতগঞ্জ।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে এদিন দুই দল শুরুটা করেছে ধীরগতির। তবে সময়ের সাথে সাথে জমে উঠে ম্যাচ। দুই দলই পেয়েছিল বেশ কিছু সুযোগ, তবে কাজের কাজ গোলের দেখাই মেলেনি কারও। তাতে গোল ছাড়াই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধেও খেলা চলে একই তালে। তবে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে ঝিন্টু মিয়ার এক ভুলে কপাল খোলে আবাহনীর। এনামুল গাজিকে আটকাতে গিয়ে বক্সে ট্যাকেল করে বসেন ঝিন্টু। রেফারি সাথে সাথেই বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পট কিক থেকে আবাহনীকে এগিয়ে দেন ইয়াসিন।
এই গোলটাই যেন পাল্টে দেয় ম্যাচের চিত্র। তিন মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে তারা। আগের পেনাল্টি আদায় করা সেই এনামুল গাজীর নাম জড়িয়ে এখানেও। তার দেওয়া পাস দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুর্দান্ত এক শটে জাল খুঁজে নেন মুরাদ। ৭১ তম মিনিটে তিন নম্বর গোলটা আসে মাহাদি ইউসুফের বাঁ পায়ের চমৎকার ফিনিশিংয়ে।
দিনের অন্য ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে পাত্তাই দেয়নি রহমতগঞ্জ। প্রথমার্ধেই জোড়া গোল করে তারা নিয়ন্ত্রণ নেয় ম্যাচের। ৩২ মিনিটে প্রথম গোলটা করেন রহমতগঞ্জ অধিনায়ক মোস্তফা আব্দুল খালিক। ৩৮ মিনিটে স্যামুয়েল বোয়াটেংকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন সাজন মিয়া। মিনিট তিনেক বাদে কর্নার থেকে ভেসে আসা বল বুলেট গতির এক শটে জালে জড়ান বোয়াটেং।
দ্বিতীয়ার্ধেও চাপ ধরে রাখে রহমতগঞ্জ। ৭১ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান তোহা। তাতে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রহমতগঞ্জ।
লিওনেল মেসিকে নিয়ে কটু মন্তব্য করতে সাবেক ফুটবলারদের সচারাচর দেখা যায় না। আর্জেন্টাইন অধিনায়কও খুব একটা মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে বিতর্কে জড়ান না। সোমবার মেক্সিকান ক্লাব আমেরিকার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে দেখা মিলেছে অন্য এক মেসির। মেজাজ হারিয়ে করেন ভিন্ন রকম এক উদযাপন। যা মোটেও ভালোভাবে নেয়নি দেশটির সাবেক ফুটবলার আদোলফো বাউতিস্তা। প্রশ্ন তুলেছেন মেসির পেশাদারিত্ব নিয়েও।
ক্লাব আমেরিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে লম্বা বিরতি কাটিয়ে মাঠে ফেরেন মেসি। ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিক সমর্থকরা মেসিকে দুয়ো দিতে থাকেন। লম্বা ক্যারিয়ারে প্রতিপক্ষের মাঠে মেসির এমন অভিজ্ঞতা নতুন না। তবে এদিন নিজের মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি সাবেক বার্সেলোনা তারকা।
৩৫ মিনিটে গোল করে ক্লাব আমেরিকান সমর্থকদের জবাবটা দেন ভিন্ন এক উদযাপনে। বিশ্বকাপের তুলনা টেনে খোঁচা দেন তাদের। ইঙ্গিত দিয়ে বোঝান আর্জেন্টিনার আছে তিনটা বিশ্বকাপ, মেক্সিকোর নেই একটাও। মেসির এমন উদযাপন যে বিতর্ক তৈরি করবে তা অনুমিতই ছিল। ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে তো চলতে থাকে পক্ষে বিপক্ষে মতামতও।
যেখানে নাম লেখান সাবেক মেক্সিকান মিডফিল্ডার আদোলফো বাউতিস্তা। ইনস্টাগ্রামে মেসির সাথে খেলার একটা ছবি দিয়ে বাউতিস্তা লিখেন, “তোমার প্রতি আমার যথেষ্ট সম্মান রয়েছে। তবে আমার দেশকে এভাবে অসম্মান করা তোমার পেশাদারিত্বের ও শিক্ষার অভাবের দিকেই ইঙ্গিত দেয়।”
মাঠের বাইরের এমন সব কাণ্ডে খুব একটা গা ভাসাতে দেখা যায় না মেসিকে। বাউতিস্তার সমালোচনার জবাব মেসি দেন কিনা, সেদিকেই নজর এখন।
লা লিগায় রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু না। প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন ক্লাব থেকে মেলে নানা সব অভিযোগ। ব্যতিক্রম ঘটেনি চলতি মৌসুমেও। তবে কার্লো আনচেলত্তি ও দিয়েগো সিমিওনের মধ্যে চলা বাক-বিতণ্ডা এবার বেশ জমে উঠেছে। গেল কিছু দিন ধরে সংবাদ সম্মেলনে সুযোগ পেলেই দুই কোচ যেন একে অপরকে ঢিল ছুড়ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আনচেলত্তির স্মৃতিশক্তি নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন আতলেতিকো মাদ্রিদ কোচ।
গেল সপ্তাহে সেলতা ভিগোর বিপক্ষে কোপা দেল রের শেষ ষোলোতে ৫-২ গোলে জয় তুলে নিয়েছিল রিয়াল। সেই ম্যাচে শেষে রেফারির বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল সেলতা ভিগোর পক্ষ থেকে। এই ঘটনা যেন সিমিওনেকে সুযোগ করে দেয় রিয়ালকে খোঁচা দেওয়ার। সংবাদ সম্মেলনে এই নিয়ে কথা উঠতেই তিনি বলেছিলেন, ‘ এ আর নতুন কি! গেল ১০০ বছর ধরেই তো এমনটা হয়ে আসছে’।
সিমিওনের এমন উত্তরে যে কার্লো আনচেলত্তি বসে থাকবেন না তাও জানা ছিল। রিয়াল কোচ জবাবটা দিয়েছেন কড়া ভাষায়, “১২৫ ধরে রিয়াল মাদ্রিদ কেমন দাপট দেখিয়েছে তা গোটা দুনিয়াই জানে। যা হয়তো অনেকেরই গায়ে লাগে।” হেতাফে ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচের সাথে একই সুরে তাল মিলিয়েছিলেন রিয়াল মিডফিল্ডার দানি সেবায়োস, “মাদ্রিদের কাছে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে দুইবার হারের বেদনা হয়তো ভুলতে পারছেন না তিনি। তাই এমনসব বলছেন তিনি।”
রিয়ালের থেকে ছোঁড়া এমন মন্তব্যের জবাবে সিমিওনে মনে করিয়ে দিয়েছেন আগের কথা। প্রশ্ন তুলেছেন আনচেলত্তির স্মৃতিশক্তি নিয়েও, “সহকর্মীদের নিয়ে উল্টা-পাল্টা মন্তব্য করার মতো লোক আমি না। তাদের আগের কিছু কথা মনে করিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। যখন তিনি(আনচেলত্তি) বায়ার্নের কোচ হিসেবে রিয়ালের বিপক্ষে খেলেছিলেন তখন তো মাঠে যা ঘটেছিল তা নিয়ে ঠিকই প্রশ্ন তুলেছিলেন। ভুলে গেলে চলবে না, সেবায়োসও কিন্তু বেতিসে থাকতে রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।”
দুই কোচের কথার লড়াইয়ের মাঝে অবশ্য আতলেতিকোকে টপকে রিয়াল দখল করেছে লা লিগার শীর্ষস্থান। ২০ ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট ৪৬, সমান ম্যাচে আতলেতিকোর পয়েন্ট ৪৪।
লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে রিয়াল মাদ্রিদ এই মুহূর্তে আছে সবার ওপরে। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টেবিলে অবশ্য চিত্রটা উল্টোই। অবস্থান বিশ নম্বরে। কোপা দেল রে’র কোয়ার্টার ফাইনালও হয়েছে নিশ্চিত। স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে উড়ে গেলেও কাগজে-কলমের হিসেবে রিয়াল এখনো সব প্রতিযোগিতায় টিকে আছে। তবে সমর্থকরা খুব একটা খুশি নন দলের পারফরম্যান্সে। সমালোচিত হচ্ছেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। হয়ত সেটাই তাতিয়ে দিয়েছে আনচেলত্তিকে। তাই মৌসুম শেষেই বিদায় জানাতে চান রিয়ালকে, খবর এমনটাই।
স্প্যানিশ রেডিও ওন্দা সেরোর দাবি ঠিক এমনটাই। তাদের মতে, চলতি মৌসুমে রিয়াল যেমন পারফর্মই করুক, মৌসুম শেষে লস ব্লাঙ্কোসদের ডাগআউটে নিজের অধ্যায়ের ইতি টানতে চান আনচেলত্তি।
আরও পড়ুন
পিএসজিতে যোগ দিয়েও কেন সিটির বিপক্ষে নেই খাভালেস্কেলিয়া? |
চলতি মৌসুমে এল ক্লাসিকোতে দুই হার আনচেলত্তিকে ফেলেছে তুমুল সমালোচনার মুখে। দুটিতেই হান্সি ফ্লিকের দলের কাছে স্রেফ উড়ে গেছে রিয়াল। সেই সাথে দলের পারফরম্যান্সের অধারাবাহিকতাও পরিস্থিতি করে তুলেছে জটিল। তাতে ২০২৬ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ থাকলেও এক মৌসুম আগেই রিয়ালের ডেরা ছাড়তে চান আনচেলত্তি।
একই রিপোর্টে ওন্দা সেরো আরও দাবি করছে, আনচেলত্তি রিয়াল ছাড়লে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন রিয়ালের সাবেক মিডফিল্ডার জাবি আলোনসো। বর্তমানে তিনি লেভারকুসেনের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। গেল মৌসুমে তো ক্লাবটিকে ইতিহাস গড়ে জিতিয়েছেন বুন্দেসলিগার শিরোপাও। সব মিলিয়ে পুরো মৌসুমে হেরেছেন কেবল একটা ম্যাচই। তারপর থেকেই আলোনসোর রিয়ালে আসার গুঞ্জন চলছে। সেই গুঞ্জনের পালে যেন হাওয়া দিচ্ছে ওন্দা সেরোর চমক জাগানিয়া রিপোর্ট।
২০২১ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে রিয়ালের দায়িত্ব নেন আনচেলত্তি। প্রথম মৌসুমে এসেই বার্নাব্যু-তে ফিরিয়ে আনেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা। এরপর গত মৌসুমেও রিয়ালকে জেতান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগা। সব মিলিয়ে রিয়ালের হয়ে দুই মেয়াদে আনচেলত্তি জিতেছেন ১৫ টি শিরোপা। কোচ হিসেবে রিয়ালের ডাগআউটে যা সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্র নয়, সান্তোসেই ফিরছেন ‘ঘরের ছেলে’ নেইমার? |
৪ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
২১ দিন আগে
২২ দিন আগে