নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ঝড়ো ফিফটিতে রেকর্ড গড়েছেন লিটন কুমার দাস। তার সামনে এখন আরেক অর্জনের হাতছানি। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি জিততে পারলেই বাংলাদেশের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে জয়ের ফিফটির স্বাদ পাবেন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
১০৮ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৪৯ ম্যাচে দলকে জিততে দেখেছেন লিটন। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সোমবারের ম্যাচ জিতলেই এই ফরম্যাটে অন্যরকম এই ফিফটি হয়ে যাবে বাংলাদেশ অধিনায়কের।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে জয়ের ফিফটি আছে শুধু দুজনের- মুস্তাফিজুর রহমান (১১২ ম্যাচে ৫৩) ও সাকিব আল হাসান (১২৭ ম্যাচে ৫২)। তাদের পরেই আছেন লিটন ও মাহমুদউল্লাহ (১৪১ ম্যাচে ৪৯)।
আরও পড়ুন
প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে দামি ফুটবলার এখন ইসাক |
![]() |
সোমবারের ম্যাচটি জিতলে অধিনায়ক হিসেবেও দারুণ এক অর্জন ধরা দেবে লিটনের। এখন পর্যন্ত তার নেতৃত্বে ১৭ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ৯টি জিতেছে বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলে ১৮ ম্যাচে ১০ জয় হয়ে যাবে তার। জয়ের হার হবে ৫৫.৫৬ শতাংশ।
বাংলাদেশের অধিনায়কদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচে জয় পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ (৪৩ ম্যাচে ১৬), সাকিব (৩৯ ম্যাচে ১৬), মাশরাফি বিন মর্তুজা (২৮ ম্যাচে ১০) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (২৪ ম্যাচে ১০)। তাদের কারও জয়ের হারই ৪১.৬৬-র বেশি নয়।
ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারেও একটি রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে লিটন। ১০৮ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ১৩ ফিফটি করেছেন ৩০ বছর বয়সী ব্যাটার। ১২৭ ম্যাচে সাকিবের ফিফটিও সমান ১৩টি।
চলতি সিরিজে আরেকটি ফিফটি করতে পারলেই সাকিবকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ফিফটির মালিক হবেন লিটন।
No posts available.
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৮ এম
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৪৯ এম
অন্তর্মুখী স্বভাব, কথা কম বলা, কারও সঙ্গে তেমন মিশতে না পারা- লিটন কুমার দাসের ক্যারিয়ারের শুরু থেকে নানান সময়ে শোনা গেছে এসব কথা। তাই জাতীয় দলে তাকে অধিনায়কত্ব দেওয়া নিয়েও সংশয়ে ছিল বিসিবি। তবে লিটন বললেন, সেসব শুধুই শোনা কথা। তাই কান না দেওয়াই ভালো।
২০২১ সালে প্রথমবার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেন লিটন। পরের বছর ভারতের বিপক্ষে আবার খণ্ডকালীন দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। পরের বছর আফগানিস্তান ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেও অধিনায়কত্ব করায় ভাবা হচ্ছিল, লিটনই হবেন জাতীয় দলের নতুন কান্ডারি।
কিন্তু ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর লিটনকে আর দায়িত্ব দেয়নি বিসিবি। তখন বোর্ডের পক্ষ থেকেই অনানুষ্ঠানিকভাবে শোনা গেছে, অধিনায়কত্ব উপভোগ করেন না লিটন। তাই তাকে আপাতত বিবেচনা করা হচ্ছে না জাতীয় দলের নেতৃত্বে।।
আরও পড়ুন
জোড়া কীর্তির পর লিটন, ‘ক্রিকেটার হয়েছি, রেকর্ড হবেই’ |
![]() |
তবে সময়ের পালাক্রমে লিটন এখন টি-টোয়েন্টি দলের স্থায়ী অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে টানা তিন সিরিজ জিতে গেছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজ জয়ের পর এলো তার অধিনায়কত্ব উপভোগের প্রসঙ্গ।
সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের প্রতিক্রিয়ায় শোনা কথাকে উড়িয়ে দিলেন লিটন।
“আমার মুখ থেকে কখনও কি শুনেছেন যে আমি (অধিনায়কত্ব) উপভোগ করি কী করি না? কাজেই কিছু কিছু সময় শোনা কথায় কান না দেওয়া ভালো।”
এরপর অধিনায়কত্ব নিয়ে নিজের ভাবনাও জানান স্টাইলিশ এই ব্যাটার।
“আমি অনেক উপভোগ করি (অধিনায়কত্ব)। উপভোগ করি বলেই দায়িত্ব নিয়েছি। পরপর কয়েকটি সিরিজ আমরা ভালো ক্রিকেটও খেলছি। আমি পারফর্ম করছি, এটাও দলের জন্য দরকার। কারণ নেতা যখন পারফর্ম করে না, দল মানসিকভাবে একটু পিছিয়ে থাকে।”
আরও পড়ুন
হৃদয় বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, ওকে নিয়ে চিন্তিত নই: লিটন |
![]() |
“সেদিক থেকে বলব, আমার দলের যেহেতু সবাই পারফর্ম করছে, আমারও একটা চ্যালেঞ্জ ছিল যেন ইনপুট দিতে পারি (ব্যাট হাতে), পারফর্ম যেন করতে পারি। সেদিক থেকে আমি খুবই খুশি যে দলের একটি অংশ হিসেবে প্রভাব রাখতে পারছি।”
লিটনের অধিনায়কত্বে এখন পর্যন্ত ১৯ টি-টোয়েন্টির মধ্যে ১০টি জিতেছে বাংলাদেশ। তার জয়ের হার ৫২.৬৩ শতাংশ। বাংলাদেশের হয়ে অন্তত ৫ ম্যাচ জেতা আর কোনো অধিনায়কের জয়ের হার ৫০ শতাংশের বেশি নেই।
এই ফরম্যাটের লিটনের চেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ের রেকর্ড আছে বাংলাদেশের শুধু দুই অধিনায়কের। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ৩৯ ম্যাচের ১৬টি জিতেছে বাংলাদেশ, মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে ৪৩ ম্যাচে ১৬টি।
পাকিস্তান সিরিজের ব্যর্থতা ঝেরে ফেলে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দারুণ তিনটি ম্যাচ কাটালেন লিটন কুমার দাস। তিন ম্যাচে তিনি গড়লেন একাধিক কীর্তি। তবে এসব নিয়ে ভাবেন না লিটন। সিরিজ শেষে তিনি বললেন, রেকর্ডের চেয়ে ইম্প্যাক্ট রাখার দিকেই বেশি মনোযোগ তার।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবারের ম্যাচে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৬ বলে ৭৩ রান করেন লিটন। এই এক ইনিংসে তিনি গড়েন জোড়া কীর্তি।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৪টি ফিফটির মালিক লিটন। নেদারল্যান্ডস সিরিজে জোড়া ফিফটি করে সাকিব আল হাসানকে (১৩) টপকে এককভাবে এই রেকর্ড গড়েছেন লিটন।
আরও পড়ুন
তিন ম্যাচে দুই ভাইয়ের ৪ সেঞ্চুরি |
![]() |
এছাড়া শেষ ম্যাচে মারা ৪টি ছক্কার পর বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে এখন সর্বোচ্চ ছয়েরও মালিক লিটন। তবে এই তালিকায় লিটনের সঙ্গী, ৩১টি ম্যাচ বেশি খেলা সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
সিরিজ শেষে টি স্পোর্টসকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এসব রেকর্ড মনে করিয়ে দেওয়া হয় লিটনকে। তখন তিনি বলেন, রেকর্ড নিয়ে কখনও চিন্তাই করেন না।
“আমি কখনও রেকর্ডের জন্য খেলি না। যদি রেকর্ডের কথা চিন্তা করতাম... আমার অনেক ফিফটি মিস গিয়েছে অ্যাটাকিং ক্রিকেট খেলতে গিয়ে। যদি আমি রেকর্ডের কথা চিন্তা করতাম, ওই সময় হয়তো নিজেকে সময় দিয়ে রেকর্ড গড়ার চেষ্টা করতাম।”
রেকর্ডের চেয়ে বরং দলের হয়ে ইম্প্যাক্ট রাখার দিকেই বেশি জোর লিটনের।
“আমি সবসময় ইম্প্যাক্ট রাখার চিন্তা করি। যদি মনে হয় যে, ওই সময়টায় দলকে বাউন্ডারি দিতে হবে, আমি চেষ্টা করি বাউন্ডারি মারার। রেকর্ড হবেই। ক্রিকেটার যেহেতু হয়েছি, রেকর্ড একটা না একটা হবেই। ভালো হোক বা খারাপ। তবে কীভাবে ধারাবাহিক খেলে যাচ্ছি, কোন প্রক্রিয়ায় খেলে যাচ্ছি সেটা গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রথম ম্যাচে ২৯ বলে অপরাজিত ৫৪, দ্বিতীয়টিতে ১৮ বলে অপরাজিত ১৮* আর শেষ ম্যাচে ৭৩ রান। সবমিলিয়ে ১৫৫.৯১ স্ট্রাইক রেট ও ১৪৫ গড়ে ১৪৫ রান করে সিরিজের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন লিটন।
এক সিরিজ আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের সাফল্যেও ম্যান অব দা সিরিজ হয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার মতে, ইম্প্যাক্ট রাখতে পারেন বলেই জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
আরও পড়ুন
হৃদয় বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, ওকে নিয়ে চিন্তিত নই: লিটন |
![]() |
“একটা সিরিজ সেরা মানুষ তখনই হয়, যখন সে ইম্প্যাক্ট রাখে। আমার মনে হয় দুইটা সিরিজেই আমি ইম্প্যাক্ট রেখেছি। এটাও ঠিক, প্রতি সিরিজে আপনি ভালো খেলবেন না। আমি চেষ্টা করব ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য। তবে যদি না হয়, আমি হতাশ হবো না। আবার কামব্যাকের চেষ্টা করব।”
শেষ ম্যাচে লিটন যখন ৭৩ রানে আউট হন, তখনও ইনিংসে বাকি ছিল ৩৫ বল। তাই সেঞ্চুরির সুযোগ বেশ ভালোভাবেই ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের। কিন্তু রান রেট বাড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে যান স্টাইলিশ ওপেনার।
তবে এটি নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই তার।
“(সেঞ্চুরি মিসের) আক্ষেপ নেই৷ উইকেট এতটা সহজও ছিল না। একটা নির্দিষ্ট সময়ে খুব কঠিন হয়ে গিয়েছিল। যেহেতু তাদের দুজন বাঁহাতি ভালো করছিল। ওখান থেকে বের হয়ে যদি ইনিংস শেষ করতে পারতাম তাহলে গেম সিনারিও অন্যরকম হলেও হতে পারত। তবে আমি খুশি। যেই ইন্টেন্ট সহকারে ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। তাতে আমি খুশি।”
রুবিন হারমান ও জর্ডান হারমান- দক্ষিণ আফ্রিকা 'এ' দলের দুই ভাই। বিশ্ব ক্রিকেটে একই দলে দুই ভাইয়ের খেলার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে এই প্রোটিয়া দুই ভাই নজর কেড়েছেন নিজেদের ব্যাটিং পারফরম্যান্স দিয়ে।
নিউ জিল্যান্ড 'এ' দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের আনঅফিসিয়াল ওয়ানডে সিরিজে দুই ভাই মিলে করেছেন ৪টি সেঞ্চুরি। দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজ জয়ে ব্যাট হাতে সবচেয়ে সফল প্রিটোরিয়ার হারমান পরিবারের এই দুই ভাই।
দুজনই করেন দুইটি করে সেঞ্চুরি। অপরাজিত দুই সেঞ্চুরিতে জর্ডান করেন ১০১* ও ১৮৬* রান। আর রুবিনের ব্যাট থেকে আসে ১৫৮* ও ১০৯ রানের দুটি ইনিংস। সিরিজের রান সংগ্রাহকদের তালিকায়ও সবার ওপরে তারা দুই ভাই।
আরও পড়ুন
হৃদয় বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, ওকে নিয়ে চিন্তিত নই: লিটন |
![]() |
বেনোনিতে গত ৩০ আগস্ট শুরু হয় নিউ জিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার এই সিরিজ। প্রথম ম্যাচে কিছুই করতে পারেননি ছোট ভাই জর্ডান। তবে দায়িত্ব নেন বড় ভাই রুবিন। মাত্র ৯৩ বলে ১৮ ও ৭ ছক্কায় ১৫৮ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এটিই রুবিনের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
পরের ম্যাচে একসঙ্গে জ্বলে ওঠেন দুই ভাই। ২৪৯ রানের লক্ষ্যে দ্বিতীয় উইকেটে তারা দুজন গড়েন ১৫৪ রানের জুটি। মাত্র ৯৮ বলে ১০৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হন রুবিন। তবে ১০৫ বলে ১০১ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন জর্ডান।
একই মাঠে বুধবার হওয়া সিরিজের শেষ ম্যাচে শুরুতেই বিদায় নেন রুবিন। বড় ভাই আউট হওয়ার পর উইকেটে যান জর্ডান। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ২৬ চার ও ৩ ছক্কায় তিনি খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ১৮৬ রানের ইনিংস।
সব মিলিয়ে ২৮৭ রান করে জর্ডানই সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আর ২৮০ রান নিয়ে দুই নম্বরে তার বড় ভাই রুবিন।
লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ২৬ ম্যাচ খেলে জর্ডানের সেঞ্চুরি ৪টি। এছাড়া ২৮ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তার সেঞ্চুরি আছে চারটি, আর ৫৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও সেঞ্চুরি দুটি। জাতীয় দলের হয়ে এখনও তার অভিষেক হয়নি।
বড় ভাই রুবিন এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলে ফেলেছেন পাঁচটি টি-টোয়েন্টি। গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার নম্বরে নেমে ৪ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৬ বলে অপরাজিত ৬৩ রানের ইনিংসে দলকে জিতিয়ে ম্যাচ-সেরার স্বীকৃতি পান তিনি।
একের পর এক বড় শটে নেদারল্যান্ডসের বোলারদের তুলাধুনা করছিলেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু অন্য প্রান্তে পুরোপুরি বিপরীত তাওহিদ হৃদয়। কোনোভাবেই ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছে অল্প রানে।
হৃদয়ের এই দুরাবস্থা চলছে বছরের শুরু থেকেই। তবে তাকে নিয়ে চিন্তার কিছু দেখেন না লিটন কুমার দাস। বরং বাংলাদেশ অধিনায়কের আশা, এশিয়া কাপের ম্যাচ দিয়েই ঘুরে দাঁড়াবেন ২৪ বছর বয়সী ব্যাটার।
আরও পড়ুন
হান্ড্রেডে বাজিমাত করে জাতীয় দলে কক্স |
![]() |
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটিং পাননি হৃদয়। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তিন নম্বরে নামানো হয় তাকে। লিটনের ব্যাটে তখন রীতিমতো উড়ছে বাংলাদেশ। কিন্তু হৃদয় যেন ওড়া দূরে থাক, হাঁটতেও চাইলেন না।
দুই বাঁহাতি স্পিনার টিম প্রিঙ্গেল ও ড্যানিয়েল ডোরামের বলে একের পর এক ডট খেলে ১৪ বলে ৯ রান করে আউট হয়ে যান হৃদয়। তার এমন ব্যাটিংয়ের কারণে সাময়িক সময়ের জন্য চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ দলও।
তবে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে হৃদয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন লিটন।
“নির্দিষ্ট দিনে এরকম স্ট্রাগল আসতে পারে। আমি এটা নিয়ে একদম চিন্তিত নই। আমি জানি, এই দলের জন্য হৃদয় কী করতে পারে। অধিনায়ক হিসেবে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে, সে এশিয়া কাপে ঘুরে দাঁড়াবে এবং ভালো ক্রিকেট খেলবে।”
এসময় নেদারল্যান্ডসের দুই বোলারের কৃতিত্বের কথাও বলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“কোনো ব্যাটার সেট হয়ে খেলা আর কোনো ব্যাটার এসেই ভালো ডেলিভারি পেয়ে গেলে একটু কঠিন হয়ে যায়। আমার মনে হয়, হৃদয়ের আজকের ব্যাটিংয়ে একটু আনলাকি ছিল। ও যখন নেমেছে, দুই দিক থেকে বাঁহাতি স্পিনার বোলিং করছিল এবং উইকেট থেকেও সাহায্য পাচ্ছিল।”
আরও পড়ুন
এশিয়া কাপের জন্য আমরা ভালোভাবে প্রস্তুত: লিটন |
![]() |
তবে হৃদয়ের দুর্দশা শুধু এই এক ম্যাচেই নয়। চলতি বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুর্বল বোলিংয়ের বিপক্ষে ২৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংস ছাড়া তেমন কিছু করতে পারেননি হৃদয়। সব মিলিয়ে ১২ ইনিংসে ২০.৪৫ গড় ও ১১০.৮৩ স্ট্রাইক রেটে এই বছর তার সংগ্রহ মাত্র ২২৫ রান।
তবু তাকে নিয়ে চিন্তা করতে চান না লিটন।
“আমি হৃদয়কে নিয়ে একদমই চিন্তিত নই। আমার মনে হয়, সে বড় ম্যাচের খেলোয়াড় এবং সে ঘুরে দাঁড়াবে।”
একশ বলের ক্রিকেট দা হান্ড্রেডে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেলেন জর্ডান কক্স। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়া এই ব্যাটারকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজের দলে ডেকে নিল ইংল্যান্ড।
সদ্য সমাপ্ত দা হান্ড্রেড টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন কক্স। ওভাল ইনভিন্সিবলসের হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ে তিনিই জেতেন আসরের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার।
ওভালের হয়ে ৯ ইনিংসে ৬১.১৬ গড় ও ১৭৩.৯৩ স্ট্রাইক রেটে আসরের সর্বোচ্চ ৩৬৭ রান করেন কক্স। লর্ডসে ট্রেন্ট রকেটসের বিপক্ষে ফাইনালে ২৬ রানে জিতে টানা তৃতীয় শিরোপা জেতে তার দল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচেও ২৮ বলে ৪০ রান করেছিলেন কক্স।
আরও পড়ুন
হৃদয় বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, ওকে নিয়ে চিন্তিত নই: লিটন |
![]() |
চোটের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ভুগেছেন কক্স। নিউ জিল্যান্ডে টেস্ট অভিষেকের আগের দিন আঙুল ভেঙে যায় তার। এরপর এসেক্সের হয়ে সেঞ্চুরি করার সময় ভোগেন সাইড স্ট্রেইনে। তবু ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের কারণে আবারও জাতীয় দলের দরজা খুলল তার জন্য।
ইংল্যান্ডের হয়ে এখন পর্যন্ত দুই টি–টোয়েন্টি ও তিনটি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি টি–টোয়েন্টিতে করেছিলেন ১৭ ও শূন্য রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে খেলেছিলেন তিনটি ওয়ানডে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজে আবার ইংল্যান্ডের হয়ে খেলবেন তিনি। জ্যাকব বেথেল নেতৃত্ব দেবেন এই দ্বিতীয় সারির দলকে। প্রাথমিক ১৪ জনের দলে বিশেষজ্ঞ ব্যাটারের ঘাটতি থাকায় ধারণা করা হচ্ছিল, কোনো অলরাউন্ডারকে ৬ নম্বরে খেলাতে হবে। কক্সের অন্তর্ভুক্তিতে সেই সমস্যা মিটল।
ডাবলিনে আগামী ১৭, ১৯ ও ২১ সেপ্টেম্বর হবে সিরিজের ম্যাচ তিনটি।