লিভারপুল ছাড়ার ঘোষণাটা যখন দিয়েছেন, তখন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড কেবল বলেছেন এই মৌসুম শেষেই তার বিদায়ের কথা। তবে এবার ক্লাব ফুটবলের মৌসুম শেষেই ক্যালেন্ডারে যোগ হয়েছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। আর সেই কারণেই তার সম্ভাব্য পরবর্তী ঠিকানা হতে যাওয়া রিয়াল মাদ্রিদ বেশি অপেক্ষা করতে রাজি নয়। ইংলিশ ডিফেন্ডারকে এই টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই তারা দলভুক্ত করতে চাচ্ছে বলেই খবর।
সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএনকে জানিয়েছে, জুনেই আলেকজান্ডার-আর্নল্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের দলে টানার জন্য কাজ করছে রিয়াল। এজন্য ক্লাব বিশ্বকাপ শুরুর আগে তাকে ক্লাব ছাড়তে দেওয়ার জন্য লিভারপুলের সাথে আলোচনায় যাওয়ার পরিকল্পনাও নাকি আছে তাদের।
আরও পড়ুন
| অ্যানফিল্ড-রোম ‘ট্র্যাজেডি’ পেছনে ফেলতে পারবে বার্সেলোনা? |
|
লিভারপুল গত সোমবার জানায়, আলেকজান্ডার-আর্নল্ড তাদেরকে তার বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এই গ্রীষ্মে ক্লাব ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। সেই মোতাবেক ৩০ জুন চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তিনি অ্যানফিল্ড ছেড়ে চলে যাবেন।
তবে আগামী ১৪ জুন থেকে ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু হওয়ায় আলেকজান্ডার-আর্নল্ডকে জুলাইয়ের আগে দলে পেতে চাচ্ছে রিয়াল। ২৬ বছর বয়সী এই রাইট-ব্যাকের সাথে এরই মধ্যে মৌখিক সম্মতিতে পৌঁছে গেছে স্প্যানিশ ক্লাবটি। দুই পক্ষই তার ‘ফ্রি এজেন্ট’ হিসেবে লিভারপুল ছাড়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
আর সেটা সফল করতে চুক্তির মেয়াদ শেষের আগে আলেকজান্ডার-আর্নল্ডেকে নেওয়ার জন্য লিভারপুলকে নাকি গ্রহণযোগ্য একটা ফি দিতেও রাজি রিয়াল।
দানি কারভাহাল ও এদের মিলিতাওয়ের লম্বা চোটের পর গত জানুয়ারিতেও আলেকজান্ডার-আর্নল্ডকে দলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল রিয়াল। তবে সেই দফায় তাদের হতাশ করে লিভারপুল। তবে এবার খেলোয়াড় নিজেই ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ায় ক্লাবটির সামনে রিয়ালের সাথে তাকে আগেভাগে ছেড়ে দেওয়াটাই হতে পারে যৌক্তিক সমাধান।
আরও পড়ুন
| ব্রাজিল নয়, জাতীয় দলে রাফিনিয়ার প্রথম পছন্দ ছিল ইতালি! |
|
ক্লাব বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের রিয়ালের প্রথম ম্যাচ আগামী ১৮ জুন, প্রতিপক্ষ সৌদি প্রো লিগ চ্যাম্পিয়ন আল হিলাল। পরের দুটি ম্যাচ যথাক্রমে ২২ জুন (পাচুকা) ও ২৬ জুন (সালজবার্গ)।
No posts available.
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:২৪ এম
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৬ পিএম

ফুটবলে বেশ কয়েক বছর ধরেই বিনিয়োগ করে আসছে সৌদি আরব। মধ্য প্রাচ্যের দেশটিতে ইতিমধ্যেই দারুণ ঘরোয়া লিগও আছে। সৌদি প্রো লিগে বর্তমানে ফুটবলের অনেক তারকা-মহাতারকারা নাম লিখিয়েছেন। নিজেদের দেশ ছাড়াও ইউরোপের একাধিক ফুটবল ক্লাবের মালিকানাও আছে দেশটির। এবার সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের চোখ পড়েছে স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাব বার্সেলোনার দিকে।
স্প্যানিশ একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বিশাল অঙ্কের অর্থ নিয়ে বার্সার মালিকানা কেনার বিষয় বিবেচনা করছে। টাকার অঙ্ক দেখলে রীতিমতো চোখ কপালে উঠবে। সংখ্যাটা ১০ বিলিয়ন ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা।
স্পেনের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন শো ‘এল চিরিঙ্গুইতো’-এর ফ্রাঁসোয়া গালার্দো জানিয়েছেন, সৌদি যুবরাজ বার্সেলোনার অংশীদারিত্ব কেনার কথা ভাবছেন। এটি মূলত সৌদি আরবের ক্রীড়া খাতে প্রভাব বিস্তারের কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা হতে পারে সরাসরি বিনিয়োগের মাধ্যমে অথবা পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআএফ) এর মাধ্যমে।
আরও পড়ুন
| টানা চতুর্থ জয়ে আর্সেনালের আরও কাছে ম্যানসিটি |
|
দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে জর্জরিত বার্সা। সৌদি যুবরাজের এই প্রস্তাবে বেশ আনন্দিতই হওয়ার কথা কাতালান ক্লাবটির। এই প্রস্তাব সফলতার মুখ দেখলে তাত্ত্বিকভাবে বার্সেলোনার বিপুল ঋণের বোঝা পুরোপুরি দূর হয়ে যেতে পারে। পাশপাশি আমূল বদলে যেতে পারে ক্লাবটির ভবিষ্যতও। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবটি বার্সেলোনার আনুমানিক ২.৫ বিলিয়ন ইউরোর ঋণ মেটাতে সক্ষম হবে এবং তাত্ত্বিকভাবে ক্রাউন প্রিন্সকে ক্লাবের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট তহবিল প্রদান করবে।
তবে বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। বার্সেলোনা কিংবা রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাব কখনো পুরোপুরি একক মালিকানায় থাকা সম্ভব নয়। বার্সা দীর্ঘদিন ধরেই সোসিও-ভিত্তিক মালিকানার অধীনে পরিচালিত হয়, তাই আইনগতভাবে ক্লাবটি সম্পূর্ণরূপে কেনা সম্ভব নয়। ক্লাবটি সদস্যদের মালিকানায়, যারা নির্বাচনী ও শাসন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, অর্থাৎ কোনো এক ব্যক্তি—দেশি বা বিদেশি—এককভাবে ক্লাবটি কিনতে পারে না। যদিও ভবিষ্যতে সৌদি পিআইএফ আলাদা বাণিজ্যিক শাখায় বিনিয়োগ করতে পারে, পুরো ক্লাব অধিগ্রহণের চেষ্টা কাঠামোগতভাবে অসম্ভই।
স্পেনে অনেকে তাই এই প্রস্তাবটিকে প্রাথমিক যাচাই হিসেবে দেখছেন। সরাসরি মালিকানা পরিবর্তনের উদ্দেশ্য হিসেবে নয়। তবুও, এই চোখধঁধানো সংখ্যা—যা ফুটবল ইতিহাসে নজিরবিহীন—অনেকের মনেই কৌতূহল জন্মিয়েছে। কারণ বার্সেলোনা এখনও আর্থিক অস্থিরতার মধ্যেই রয়েছে।
সৌদি আরবের ফুটবল সম্প্রসারণ ইতিমধ্যেই অপ্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছেছে। সৌদি যুবরাজ বিপুল বিনিয়োগে সৌদি প্রো লিগ, উচ্চ-প্রোফাইলের ফুটবলার কেনা এবং গুরুত্বপূর্ণ ক্লাব অধিগ্রহণে কাড়িকাড়ি টাকা খরচ করছেন। বার্সেলোনার জন্য প্রস্তাবিত এই অর্থের পরিমাণ তাদের ‘ভিশন ২০৩০’ কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূলত মরুর দেশটির অর্থনীতি বৈচিত্র্যকরণ এবং ফুটবলকে আন্তর্জাতিক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করার লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি এই পরিকল্পনা তাদের।

চিকন সুতোয় ঝুলছিল তাঁর চাকরি। রিয়াল মাদ্রিদের হার কিংবা ড্রতেই প্রায় নিশ্চিত রিয়াল মাদ্রিদের ডাগ-আউট ছাড়তে হতো জাবি আলোনসোর। তবে শঙ্কা থেকে আপাতত নিস্তার। জয় পেয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
গতকাল রাতে লা লিগায় দিপোর্তিভো আলাভাসের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে রিয়াল। প্রতিপক্ষের মাঠে স্বস্তির জয়ে শুরুতে দুর্দান্ত একক নৈপুণ্যের এক গোলে সফরকারীদের এগিয়ে দেন কিলিয়ান এমবাপে। এরপর আলাভেস সমতায় ফিরলেও রদ্রিগোর সৌজন্যে জয়সূচক গোল পেয়ে যায় লস ব্লাঙ্কোসরা। টানা ৩২ ম্যাচ গোল না পাওয়া রদিগ্রো টানা দুই ম্যাচে গোল করলেন।
এই জয়ে লা লিগায় পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে আনল রিয়াল মাদ্রিদ। ১৭ ম্যাচে ১২ জয়, তিন ড্র আর দুই হারে জাবি আলোনসোর দলের পয়েন্ট ৩৯। চার পয়েন্ট বেশি নিয়ে চূড়ায় বার্সা।
চলতি মৌসুমে মাঠে নামলেই গোল পাওয়া এমবাপে এবারও রিয়ালের ভরাসার প্রতীক হয়ে প্রথমে লিড এনে দেন। হাঁটুর চোটের কারণে আগের ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে বেঞ্চে থাকলেও, এই ম্যাচে দলে ফিরতে ফেরেন রিয়ালের আক্রমণভাগের মধ্যমণি। ম্যাচের শুরুর দিকে এমবাপেকে কিছুটা খুঁড়িয়ে চলতে দেখা গেলেও, ফরাসি তারকা ফরোয়ার্ডই ছিলেন মাঠের সবচেয়ে প্রভাব রাখা খেলোয়াড়।
আরও পড়ুন
| টানা চতুর্থ জয়ে আর্সেনালের আরও কাছে ম্যানসিটি |
|
এছাড়া বাঁ প্রান্তে আলভারো কারেরাস ও ফ্রান গার্সিয়া নিষিদ্ধ থাকায় এবং ফেরলান্ড মেন্ডি সহ রক্ষণে কয়েকজন চোটে মাঠের বাইরে থাকায় লেফট-ব্যাক পজিশনে অভিষেক হয় ভিক্টর ভালদেপেনাসের।
ম্যাচের শুরুতে এমবাপের একটি শট ডিফ্লেকশনে বাইরে চলে যায় এবং পরে আরেকটি শট অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। একের পর এক চেষ্টা বৃথা যায়নি। ২৫ মিনিটে দেখা যায় ভিন্টেজ এমবাপেকে। জুড বেলিংহামের রক্ষণচেরা পাস থেকে দুরন্ত গতিতে সামনে এগিয়ে গিয়ে ডান দিকের ওপরের কোণে নিখুঁত শট নেন এমবাপে। ২০২৫-২৬ মৌসুমে লিগে এটি তাঁর ১৭তম গোল। মৌসুমের সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৭ গোল।
দুই মিনিটের মধ্যেই বল জালে জড়ান জুড বেলিংহামও, তবে হ্যান্ডবলের কারণে বাতিল হয়ে যায় ইংলিশ মিডফিল্ডারের গোল। পিছিয়ে পড়া আলাভেসও থেমে থেমে আক্রমণে উঠে। প্রথামার্ধের যোগ করা সময়ে সফলও হতে পারত স্বাগতিকরা। তবে রিয়ালের দেয়াল থিবো কোর্তোয়ার কাছে পরাস্ত হয় হয় আলাভেস। পাবলো ইবানেজের শট কোর্তোয়া মাথা দিয়ে অসাধারণভাবে ঠেকিয়ে দেন।
বিরতির পর আবারও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে রিয়াল। এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের শট ঠেকান আলাভেস গোলকিপার আন্তোনিও সিভেরা। আর এই সুযোগ নষ্টের মাশুল রিয়ালকে দিতে হয় ৬৮মিনিটে। কার্লোস ভিসেন্তে গোলে ব্যবধান ১-১ করে আলাভেস।
গোল খেয়ে আরও একবার পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা চেপে বসে রিয়ালের। তবে লা লিগার ৩৬বারের চ্যাম্পিয়নদের উদ্ধারকর্তা হিসেবে আর্বিভাব হয় রদ্রিগোর। তবে এই গোলে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের অবদানই বেশি। দারুণ ক্ষিপ্রতায় বাঁ দিক থেকে প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বিপদজনক জায়াগায় বল বাড়ান। আর আর ছয় গজের ভেতর থেকে গোল লক্ষ্যভেদ করতে মোটেও ভুল করেননি ভিনিসিয়ুসের ব্রাজিলিয়ান সতীর্থ রদ্রিগো। নিজের ভবিষ্যৎ যে এই জয়ের ওপর নির্ভর করতে পারে, তা জানতেন বলেই কোচ জাবির উদ্যাপন ছিল দেখার মতো।
এরপর একটি পেনাল্টি পেতে পারত রিয়াল। আলভাসের খেলোয়াড় নাহুয়েল তেনালিয়ার বক্সে ভিনিসিয়ুসকে ফাউল করলেও রেফারি সাড়া দেননি। যোগ করা সময়ে বেলিংহামও ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল, তবে শেষ পর্যন্ত নূন্যতম ব্যবধানেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল।

সেলহার্স্ট পার্কে আজ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে মাত্র ৩৮ শতাংশ বল দখলে রাখতে সক্ষম হয় ক্রিস্টাল প্যালেস। অথচ ম্যাচজুড়ে প্রতিপক্ষমুখী ১৬ বার শট নিয়েছে অলিভার গ্লাসনারের শিষ্যরা।
মুহুর্মুহু আক্রমণ চালিয়েও ৩–০ গোলে হেরে যায় ক্রিস্টাল প্যালেস। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই, পুরো ম্যাচজুড়ে স্নায়ুচাপে ভুগেছেন সিটিজেন কোচ পেপ গার্দিওলা। ম্যাচ শেষে তিনি প্রতিপক্ষের দাপটের কথা স্বীকার করেন।
সিটিজেন বস গার্দিওলা বলেন,
“এখানে খেলতে আসা সত্যিই খুব কঠিন। জেরেমি পিনো, মাতেতা ও ইসমাইলা সারকে নিয়ে তারা যখন আক্রমণে ওঠে, তা দেখোর মতো হয়ে ওঠে।”
তিনি যোগ করেন,
“ক্রিস্টাল প্যালেসের ডিফেন্সও দুর্দান্ত—খুবই শক্ত। মোটকথা, তারা একটি ভালো দল। এই মৌসুমে তারা যা করছে, সেটাই তার প্রমাণ।”
প্রিমিয়ার লিগে টানা চার জয় তুলে নিয়েছে ম্যানসিটি। পয়েন্ট টেবিলেও এগিয়ে তারা। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের থেকে সিটিজেনদের ব্যবধান মাত্র দুই পয়েন্ট। লিগের মাঝপথে কিছুটা পথ হারালেও এখন আবার দাপুটে ছন্দে ফিরেছে গার্দিওলার দল।
পেপ বলেন,
“আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, নিয়মিত পরিশ্রম করছি। এখনও আমরা সেরা অবস্থায় নেই, আরও উন্নতি করতে হবে। তবে এটা ঠিক যে আমরা ভালো অবস্থানে আছি এবং খেলোয়াড়রা দারুণ পারফর্ম করছে।”
এ সময় মাতেউস নুনেসের প্রশংসা করেন গার্দিওলা। তাঁর মতে, মাতেউস একজন অসাধারণ ফুলব্যাক। পর্তুগিজ এই ডিফেন্ডারের সঙ্গে আর্লিং হলান্ডের দারুণ বোঝাপড়া রয়েছে বলেও মনে করেন স্প্যানিশ কোচ।
তিনি বলেন,
“মাতেউস দিন দিন আরও ভালো হচ্ছে। সে একজন দারুণ ফুলব্যাক, আর হলান্ডের সঙ্গে তার বোঝাপড়াও চমৎকার।”
হলান্ডের জোড়া গোলের বিপরীতে একটি গোল করেন ফিল ফোডেন। তবে পারফরম্যান্সে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন পেপ।
তিনি বলেন,
“ফোডেন আজ খুব একটা ভালো খেলেনি। সে বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করেছে। প্রতিটি কাজে সে একটু তাড়াহুড়ো করছিল। তাকে আরও শান্তভাবে খেলতে হবে, বল ধরে রাখতে হবে এবং ঠিক সময় বুঝে গতি বাড়াতে হবে। তবে এসব বলার পরও বলতে হয়, দলের জন্য সে দারুণ কাজ করছে।”

ম্যাচ ঘড়ির তখন ১২ মিনিট। সহজ লক্ষ্য পূরণ করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল ক্রিস্টাল প্যালেসের। তা হেলায় নষ্ট করেন জেরেমি পিনো। তাতেই ম্যানেজার অলিভার গ্লাসনারের মাথায় হাত। বিড় বিড় করে এটা-ওটা বলতে থাকেন। নিজ মাথার চুল হাতের মুষ্টিতে ভরে হেঁচকা টানও দেন।
এমনও হয় না কী, ইশ! তখন কত কী বলছিলেন ক্রিস্টাল প্যালেস ম্যানেজার।
প্রিমিয়ার লিগের রাউন্ড অব সিক্সটিনের ম্যাচে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় ঘরের মাঠ সেলহার্স্ট পার্কে ম্যানচেস্টার সিটিকে আতিথ্য দিয়েছিল ক্রিস্টাল প্যালেস। মুহুর্মুহু আক্রমণ চালিয়েও গোল করতে না পারার ব্যর্থতা শেষ পর্যন্ত ইশ আর আক্ষেপে পরিণত হয় দ্য ঈগলসের।
পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে যাওয়ার মিশনে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ৩–০ গোলে হারিয়েছে পেপ গার্দিওলার দল। অতিথি দলের হয়ে জোড়া গোল করেছেন আর্লিং হলান্ড। অন্য গোলটি করেন ফিল ফোডেন। লিগে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার হলান্ডের গোল সংখ্যা দাঁড়াল ১৭। আর টানা চার ম্যাচে গোল পেলেন ইংলিশ স্ট্রাইকার ফিল ফোডেন।
ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে গেল ম্যানসিটি। সিটিজেনদের বর্তমান পয়েন্ট ৩৪। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের থেকে ২ পয়েন্ট পিছিয়ে তারা। তবে অ্যাস্টন ভিলা নিশ্বাস ফেলছে সিটির ঘাড়ে—৩৩ পয়েন্ট ভিলার।
ম্যাচে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ম্যানসিটির। অতিথিরা ৬২ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখেছে, ৩৮ শতাংশ ছিল ক্রিস্টালের। তবু মোট শটে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। বল দখলে পিছিয়ে থেকেও জোরালো আক্রমণ চালিয়েছে তারা।
ক্রিস্টাল ১৬ বার শট নিয়েছে, যার মধ্যে ৪টি গোলমুখে। অতিথিরা ৭টি শটের মধ্যে ৬টি গোলমুখে রাখতে সক্ষম হয়। বিগ চাঞ্চ তৈরিতেও এগিয়ে সিটি। ২টি বড় সুযোগ তৈরি করেছে তারা, একটিই তৈরি করেছে ক্রিস্টাল। তবে তা থেকে গোল আদায় হয়নি।
বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হওয়া ম্যাচের ৪০ মিনিটে ডেডলক ভাঙে ম্যানচেস্টার সিটি। সিটিজেনদের লিড উপহার দেন হলান্ড। মাতেউস নুনেসের ক্রস হেডারে ক্রিস্টাল প্যালেসের জালে গোল করেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার।
হলান্ডের গোলের মাত্র কিছু মিনিট পরই সিটির ওপর ঝড় বয়ে যায়। ৩০ সেকেন্ডের ব্যবধানে দুইবার বিপদ থেকে বেঁচে যায় সফরকারীরা। বিশেষ করে ফিলিপ মাতেতাকে রুখে যেভাবে দারুণ এক সেভ করলেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা, তা ছিল দেখার মতো।
এর আগে ম্যাচের ১২তম মিনিটে ক্রিস্টাল প্যালেস একপ্রকার গোল পেতে যাচ্ছিল। মধ্যমাঠ থেকে ওঠা আক্রমণে সামনে কেবল সিটি গোলকিপারকে বাঁধা হিসেবে পান জেরমি পিনো। ওয়ান-টু পজিশনে থাকা ক্রিস্টাল ফরোয়ার্ড সেই সুযোগ নষ্ট করেন। ক্রসবারে লেগে বল মাঠের বাইরে চলে যায়। ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে যায় ম্যানসিটি।
দ্বিতীয়ার্ধে লিড দ্বিগুণ করে ম্যানসিটি। এবার ত্রাতা হয়ে এলেন ফিল ফোডেন। বক্সের বাইরে থেকে পায়ের শটে জালে গোল করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড। প্রিমিয়ার লিগে টানা চতুর্থ ম্যাচে গোল পেলেন এই লেফট উইঙ্গার। এর আগে সান্ডারল্যান্ড, ফুলহ্যাম ও লিডসের বিপক্ষে গোল করেছিলেন তিনি।
৮০ মিনিটে একটি গোল শোধের সুযোগ পায় ক্রিস্টাল প্যালেস। সার গোলমুখে শট নিয়েছিলেন। কিন্তু তা সিটি ডিফেন্সের বাধায় ফিরে আসে। কয়েক ধাপে আক্রমণ চালায় তারা, তবে কার্যত ব্যর্থ হয়।
৮৩ মিনিটে বদলি হয়ে নামা এডওয়ার্ড এনকেতিয়াহ স্ব-উদ্যোগে চেষ্টা চালান। সিটির কয়েকজন ড্রিবলিং করে বক্সের বাইরে থেকে বুলেটগত শট নেন। এ যাত্রাতেও ঝাঁপিয়ে দলকে রক্ষা করেন ইতালির গোলরক্ষক।
৮৭ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ওঠে সিটি। একাই নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে আক্রমণে যান সাভিনহো। যদিও ডি-বক্সে ক্রিস্টাল গোলকিপার হেন্ডারসনের বাধার মুখে পড়েন। সেখান থেকে পেনাল্টি পায় সিটি, যা আদায় করেন হলান্ড। মাটি কামড়ে যাওয়া বল সুনিপুনভাবে জালে যায়।
এই মৌসুমে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার হলান্ড শট নিয়েছেন ৫৯টি, আর ১৭টি গোল করেছেন। লিগে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইগর থিয়াগোর থেকে হলান্ড ছয়টি গোল এগিয়ে রয়েছেন। সুযোগ তৈরি করার পাশাপাশি তাঁর অ্যাসিস্ট সংখ্যা—৩টি।

সাফ নারী ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে আজ রোববার ভারতের ইস্টবেঙ্গলের কাছে ৭-০ গোলে হেরেছে নাসরিন স্পোর্টস একাডেমি। এক ম্যাচ হাতে থাকতেই বিদায় ঘণ্টা বেজেছে বাংলাদেশের ক্লাবটির।
নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে বাংলাদেশের ক্লাবের জালে ৪ গোল দেয় ইস্টবেঙ্গল। সপ্তম মিনিটে গোলবন্যা শুরু হয় ফাজিলার ইকুয়াপুথের মাধ্যমে। এরপর তিনি হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ২৭ ও ৪৫ মিনিটে গোল করে।
দ্বিতীয়ার্ধের ৭৪ ও ৯০ মিনিটেও জাল কাঁপান ফাজিলা। একাই ৫ গোল করেন ফাজিলা। অন্য দুই গোল আসে সুলঞ্জনা রাউল ও জ্যোতি চৌহানের কাছ থেকে।
তিন ম্যাচে এক ড্র ও ২ হারে এক পয়েন্ট নিয়ে ৫ দলের মধ্যে টেবিলের তলানিতে নাসরিন। প্রথম ম্যাচে নেপালের এপিএফের কাছে ৪-০ গোলে হেরেছে তারা। এরপর ড্র করে করাচি সিটির বিপক্ষে।
আগামী ১৭ ডিসেম্বর শেষ ম্যাচে ভুটানের ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডের মুখোমুখি হবেন সানজিদা-প্রীতিরা।