
স্প্যানিশ ক্লাব ডেপোর্তিভো আলাভেস থেকে গ্রীষ্মে দল বদলের মৌসুমে ফরাসি ক্লাব স্ট্রাসবুর্গে যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত নামটা অনেকের কাছেই অপরিচিত ছিল। তবে লিগ ওয়ানের ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হইচই রটিয়ে দিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী জোয়াকিন পানিচেল্লি। ক্লাবটির হয়ে মাঠে নেমেই আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ড করছেন গোলের পর গোল।
কনফারেন্স লিগে গতকাল রাতে দল যখন ০-১ গোলে পিছিয়ে তখনই সমতাসূচক গোলটি আসে পানিচেল্লির একক নৈপুণ্যে। পোল্যান্ডের ক্লাব যাগিয়েলোনিয়া বিয়ালিস্টকের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক বাইসাইকেল কিকে জাল কাঁপান তিনি।
আরও পড়ুন
| বার্সার আপিল খারিজ, এল ক্লাসিকোতে নিষিদ্ধই থাকছেন ফ্লিক |
|
কোচ লিয়াম রোসেনিওর তরুণ দলের প্রাণভোমরা হয়ে উঠেছেন পানিচেল্লি। লিগ ওয়ানে ২০২৫-২৬ মৌসুমে এখন পর্যন্ত আট ম্যাচে সাত গোল করেছেন। ফরাসি লিগটির এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা রিভার প্লেটের যুবদলের সাবেক এই স্ট্রাইকার। ১৯৬২–৬৩ মৌসুমের পর স্ট্রাসবুর্গের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে লিগের প্রথম আট ম্যাচে সাত গোল করলেন তিনি।
পানিচেল্লির দুর্দান্ত ছন্দে তার দল স্ট্রাসবুর্গসও পয়েন্ট টেবিলে ভালো অবস্থানে আছে। লিগ ওয়ানে শীর্ষে থাকা মার্শেই থেকে মাত্র দুই পয়েন্ট কম নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে স্ট্রাসবুর্গস। ৮ ম্যাচে তাদের অর্জন ১৬ পয়েন্ট। দুইয়ে থাকা প্যারিস সেন্ট জার্মেই থেকে মাত্র এক পয়েন্ট কম পানিচেল্লির স্ট্রাসবুর্গের।
লিগের শীর্ষ গোলদাতা পানিচেল্লি সবশেষ ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন পিএসজির এর বিপক্ষে ৩–৩ ড্র ম্যাচে পানিচেল্লি কাছ থেকে আসে জোড়া গোল। আন্তর্জাতিক বিরতির আগে আঁজে-র বিপক্ষে দলের ৫–০ গোলের জয়েও দু’বার বল জালে পাঠান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
পিএসজির বিপক্ষে প্রথমে দারুণ এক হেডে দলের সমতাসূচক গোলটি করেন। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে স্ট্রাসবুর্গের লিড দ্বিগুণ করেন। ‘ওটা আমার দেখা সেরা হেডগুলোর একটি’। ম্যাচ শেষে পানিচেল্লির প্রথম গোলের প্রশংসা এভাবেই করেন কোচ রোসেনিওর।
স্ট্রার্সবুগের কোচ আরও যোগ করেন, ‘আজ (গত শনিবার) রাতে একজন সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে ওর পারফরম্যান্স ছিল অবিশ্বাস্য। যেভাবে গোলগুলো করেছে, যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে — অবিশ্বাস্য!
স্ট্রাসবুর্গের খেলায় পানিচেল্লির প্রভাব কতটা সেটা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। ক্লাবটির হয়ে প্রতি ৮৯ মিনিটে এক গোল দিচ্ছেন তিনি। আটটি ম্যাচের সবকটিতেই খেলেছেন (এর মধ্যে সাতটিতে শুরুর একাদশে)। স্ট্রাইকার হিসেবে যেমন স্বচ্ছন্দ, তেমনি সতীর্থ এমানুয়েল এমেগা-র সঙ্গেও দারুণ জুটি গড়েছেন।
পানিচেল্লির পারফরম্যান্সে অবশ্য একেবারেই অবাক হচ্ছেন না কোচ রোনেনিওর। কঠিন পরিশ্রমের ফলই নাকি পাচ্ছে শিষ্য, ‘আমি মোটেও অবাক হইনা। কারণ সে প্রতিদিন অনুশীলনে নিজের সর্বোচ্চটা দেয়। সে কঠোর পরিশ্রম করে, আর ওর সঙ্গে কাজ করাটা সত্যিই আনন্দের।’
২০২৩ সাল থেকে ইংলিশ ক্লাব চেলসির মালিকানা গ্রুপ ব্লু-কো (ব্লুকো) এর নিয়ন্ত্রণে থাকা স্ট্রাসবুর্গ তরুণ প্রতিভা দিয়ে নতুন দল গঠন করছে। আর সেই দলের হয়ে ইতিহাস লিখতেই যেন যোগ দিয়েছেন পানিচেল্লি।
ফুটবলার পরিবারের সন্তান পানিচেল্লি। বেড়ে উঠেছেন আর্জেন্টিনায়। সাবেক ক্লাব রিভার প্লেট-এ তেমন প্রভাব ফেলতে না পারলেও, পরবর্তীতে লা লিগার ক্লাব ডিপোর্তিভো আলাভেস-এ যোগ দেন। সেখানেই হাঁটুর (এসিএল) ইনজুরি তার ক্যারিয়ারে সাময়িক বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন
| আফগানিস্তানের বিপক্ষে হামজাদের ম্যাচ জাতীয় স্টেডিয়ামে |
|
চোট থেকে সেরে উঠে পানিচেল্লি স্পেনের দ্বিতীয় সারির লিগের ক্লাব মিরান্দেস-এ ধারে যোগ দেন। এই ক্লাবেই নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরেন। করেন ২০টিরও বেশি গোল পাশাপাশি আটটি অ্যাসিস্ট।
স্ট্রাসবুর্গে যোগ দেওয়ার পর থেকেই যেন আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছেন পানিচেল্লি। ক্লাবের হয়ে প্রথম ম্যাচেই করেন গোল, সেই ধারাই বজায় রেখেছেন এখনো। তাঁর সঙ্গে ফরাসি ক্লাবটি চুক্তি রয়েছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত।
দুর্দান্ত এই ছন্দ ধরে রাখলে হয়তো আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনির নজরে পড়তে পারেন পানিচেল্লি। কে জানে হয়তো লিওনেল মেসি-জুলিয়ান আলভারেজের সঙ্গে ২০২৭ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেতেও পারেন।
No posts available.
২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৪:৫৭ পিএম

প্রায় সাড়ে তিন মাস পর মাঠে ফেরাটা রাঙাতে পারেনি বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। দুই ম্যাচের ফিফা প্রীতি সিরিজের প্রথমটিতে ৩-০ গোলে হেরে মাঠ ছেড়েছে পিটার জেমস বাটলারের দল। ম্যাচ শেষে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ব্রিটিশ কোচ বললেন— 'কয়েকজন ফুটবলার ভুল মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছে, এমন গাফিলতি কিছুতেই সহ্য করব না।'
খেলোয়াড়দের ডিসিপ্লিন ইস্যুতে শুরু থেকেই কঠোর কোচ বাটলার। শুক্রবার থাইল্যান্ডে হারের পর আরও একবার নিজের অবস্থান জানান দেন তিনি। এই ম্যাচে শুরুর একাদশে ঋতুপর্ণা চাকমা, মারিয়া মান্ডা ও মনিকা চাকমাদের নিয়ে শক্তিশালী একাদশ নামান বাটলার। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে মোসাম্মত সাগরিকা, হালিমা আক্তার, জয়নব বিবি রিতা, মুনকি আক্তার, সিনহা জাহান শিখাসহ একাধিক তরুণ ফুটবলার বদলি হিসেবে মাঠে নামান বাটলার। এই অর্ধে আরও দুই গোল হজম করে বাংলাদেশ।
ম্যাচ শেষে বাটলার বললেন হার-জিত নয়, লড়াকু মানসিকতা দেখতে চান তিনি,
'আমরা প্রচুর তরুণ খেলোয়াড়কে সুযোগ দিয়েছি। ম্যাচটি জাতীয় দলের ম্যাচের মতো লাগেনি। বরং উন্নয়নমূলক বা প্রস্তুতি ম্যাচের মতো লেগেছে। ভবিষ্যতে এমন ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকতে হবে। আবারও বলছি, এই ম্যাচ থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। কখনো কখনো হেরে যেওয়া ম্যাচ অনেক কিছু শেখায়।'
'কেউ যদি আমার দলে খেলতে চায়, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চায়, তাহলে এমন মানসিকতা নিয়ে আসতে পারবে না, যা কি না জাতীয় দলের সঙ্গে মানানসই নয়। হার-জিতের চেয়েও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি শেখার প্রক্রিয়া এবং সম্মানের বিষয়।'
যোগ করেন বাটলার।
ম্যাচটি নিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) বেশ প্রচারণা চালালেও থাইল্যান্ডে উত্তাপ ছিল না তেমন একটা। দলটির ফেসবুক ও ইনস্ট্রাগ্রামে সবশেষ কয়েক দিনের পোস্টে ছিল সোমবারের ম্যাচ নিয়ে বেশি আগ্রহ। ওই ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে তারা।
বাংলাদেশের অনেকের কাছে বিষয়টি নজরে আসে। যে মাঠে আজ খেলা হয়েছে সেটি ছিল একটি বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রাকটিস গ্রাউন্ড। আয়োজন নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বাটলার,
'আমি জানি না আদৌ এটি টায়ার-১ প্রীতি ম্যাচ ছিল কি না। কারণ আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে এমন পরিবেশে খেলেছি, যেখানে আলোর মাত্রা অতটা ভালো ছিল না।'
থাইল্যান্ডে দুই ম্যাচের ফিফা প্রীতি সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে আগামী সোমবার।

সিরি-আয় দারুণ এক মৌসুম পার করছেন নিকো পাজ। কোমোর জার্সিতে প্রত্যেক ম্যাচেই আলো ছড়াচ্ছেন আর্জেন্টাইন এই তরুণ উইঙ্গার। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ধারে যোগ দেন কোমোতে। উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের সৌজন্যে তাঁকে দলে ভেড়ানোর দৌড়ে নেমেছে জায়ান্ট ক্লাবগুলো।
গোল ডটকমের প্রতিবেদন, নিকোকে ভেড়াতে ৫৮ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত ইতালিয়ান জায়ান্ট ইন্টার মিলান। তবে এই পথে আছে কিছু বাধা ও জটিলতা। আরেক স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ দুটি বিশেষ শর্তে নিকোকে কোমোতে পাঠিয়েছিল।
রিয়াল মাদ্রিদ চাইলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত) ৯ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে আবারও নিকোকে বার্নাব্যুতে ফেরাতে পারবে। অন্য কোনো ক্লাব যত দামই দিক, রিয়াল চাইলে এই কম মূল্যেই আবারও তাঁকে নিতে পারবে।
আরেকটি শর্ত- যদি কোমো এখন পাজকে বিক্রি করে, তাহলে বিক্রির মোট অর্থের ৫০ শতাংশ যাবে রিয়ালের অ্যাকাউন্টে। ইন্টার যদি ৫৮ মিলিয়ন ইউরোয় ২১ বছর বয়সী এই তরুণ তারকাকে কেনে, তার অর্ধেক ২৯ মিলিয়ন ইউরো পাবে রিয়াল।
নিজেকে নিংড়ে দিয়ে পাজ কমোর হয়ে এরই মধ্যে ৮ ম্যাচে চার গোল ও চার অ্যাসিস্ট করেছেন। মাদ্রিদ ছাড়লেও এখন তাঁর দ্রুত উত্থান আলোড়ন তৈরি করেছে। ক্লাবটি তাঁকে আবারও ফেরাতে পারে বলে আলোচনা হচ্ছে।
কোমোর কোচ সেস্ক ফ্যাব্রেগাসের অধীনে নিকো পাজ নিজেকে দারুণ একজন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ও উইঙ্গার হিসেবে গড়েছেন। যদিও ইন্টার তাঁকে ভেড়ানোর ব্যাপারে বেশ দৃঢ়, কিন্তু শেষ সিদ্ধান্তের নিয়ন্ত্রণ রিয়াল মাদ্রিদ ও খেলোয়াড়ের নিজের হাতে।
এই মুহূর্তে কোমো সিরি-আতে পয়েন্ট টেবিলের ছয় নম্বরে আছে। তবে ইউরোপীয় ফুটবলের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ট্রান্সফার গল্পগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠছে পাজের ভবিষ্যৎ।

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল প্রায় সাড়ে তিন মাস পর মাঠে নামল, তবে ফেরাটা উজ্জ্বল হয়নি। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের ফিফা প্রীতি সিরিজের প্রথমটিতে হেরে গেছে পিটার জেমস বাটলারের দল।
আজ শুক্রবার ব্যাংককের থনবুরি বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের মেয়েরা থাইল্যান্ডের কাছে হেরেছে ৩-০ গোলে। প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুই গোল হজম করে অতিথিরা।
ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুন ও আফঈদা খন্দকারদের নিয়ে শক্তিশালী একাদশ মাঠে নামান কোচ বাটলার। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ১২ বছর আগে ৯-০ গোলে হারের শোধ নেওয়ার সুযোগ এসেছিল আজ। সেটি তো সম্ভব হয়নি, উল্টো তালিকায় আরেকটি হার যুক্ত হলো।
আরও পড়ুন
| মোরছালিন-দিয়াবাতের জোড়ায় ফেডারেশন কাপে জয়ে শুরু আবাহনীর |
|
সবশেষ গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ নারী দল। মিয়ানমারে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের খেলায় মূল পর্বের টিকিট নিয়েই দেশে ফেরে তারা। তারপর ঋতুপর্ণা, শামসুন্নাহার, তহুরাসহ দলের বেশ কয়েকজন ফুটবলার ব্যস্ত ছিলেন ভুটানের নারী লিগ খেলায়। বাকিদের নিয়ে চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেডে ক্যাম্প করেন ব্রিটিশ কোচ বাটলার।
আগামী বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় হবে এশিয়ান কাপের ২১তম সংস্করণ। সেই প্রতিযোগিতায় যাওয়ার আগে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে বড় ধাক্কা খেলেন আফঈদারা।
থাইল্যান্ডে দ্বিতীয় ফিফা প্রীতি ম্যাচ হবে আগামী সোমবার। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার না হলেও দ্বিতীয় ম্যাচটি দেখার সুযোগ পাবেন দেশের ফুটবলপ্রেমিরা তবে কোন চ্যানেলে দেখানো হবে, তা এখনো জানা যায়নি।

রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড এন্দ্রিকের ভবিষ্যৎ নিয়ে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। জানুয়ারির ট্রান্সফার উইন্ডোতেই হয়তো ছেড়ে যেতে পারেন বার্নাব্যু। লক্ষ্য একটাই—২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলে নিজের জায়গা নিশ্চিত করা।
গোল ডটকমের প্রতিবেদন, রিয়ালের কোচ জাবি আলোনসো আপাতত এন্দ্রিককে ধারে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে রাজি হয়েছেন। গত মৌসুমে কোপা দেল রেতে ছয় ম্যাচে পাঁচ গোল করা এই ১৯ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড এবার পর্যন্ত এক মিনিটও মাঠে নামতে পারেননি। মৌসুমের শুরুতে হ্যামস্ট্রিং চোটে পড়েছিলে, তারপর পুরোপুরি ফিট হলেও সুযোগ মেলেনি প্রথম একাদশে।
জানুয়ারিতে নতুন ক্লাবে যোগ দেওয়ার আগে কিছু স্পষ্ট শর্ত বেঁধে দিয়েছেন এন্দ্রিক। তিনি চান ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের (ইংল্যান্ড, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি) কোনো ক্লাবে খেলতে। বিকল্প হিসেবে বিবেচনায় আছে পর্তুগালের তিন জায়ান্ট—বেনফিকা, স্পোর্টিং সিপি ও পোর্তো।
আরও পড়ুন
| মোরছালিন-দিয়াবাতের জোড়ায় ফেডারেশন কাপে জয়ে শুরু আবাহনীর |
|
এন্দ্রিকের দাবি, নতুন দলটি অবশ্যই ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় খেলবে এবং ঘরোয়া ট্রফি জয়ের লড়াইয়ে থাকবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, ক্লাবটি আক্রমণাত্মক খেলার ধারা বজায় রাখবে—যাতে নিজের শক্তির জায়গা কাজে লাগাতে পারেন এই ফরোয়ার্ড।
ব্রাজিলের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৪ ম্যাচ খেলে তিন গোল করেছেন এন্দ্রিক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলে ডাক পাচ্ছেন না তিনি। বিশ্বকাপের আর কয়েক মাস বাকি, ব্রাজিল ইতিমধ্যে জায়গা নিশ্চিত করেছে। এমন সময়ে নিয়মিত খেলার সুযোগ না পাওয়া তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই নতুন ক্লাব খুঁজে মাঠে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তরুণ ফরোয়ার্ড।
তবে এন্দ্রিকের পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করেছেন রিয়ালের কোচ জাবি আলোনসো। তিনি বলেছেন, ‘সবাই খেলতে চায়, বিশেষ করে তরুণরা। কিন্তু এখন আমরা প্রতিটি ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। এন্দ্রিককে ধৈর্য ধরতে হবে, প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা রিয়াল মাদ্রিদ—এখানে সময় এলে সুযোগ আসবেই।’
তবুও শেষ পর্যন্ত আলোনসো নিজেই জানুয়ারিতে ধারে ছাড়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ফলে এন্দ্রিকের ক্লাব ভবিষ্যৎ এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।

ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টি থেকে গোল পেল আবাহনী। মনোবল না হারিয়ে লড়াই করে গেল ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স ক্লাব। তবে শেখ মোরছালিন আর সোলেমান দিয়াবাতের দারুণ পারফরম্যান্সের সামনে পেরে উঠল না তারা। দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল পরিশোধ করলেও ৬ গোলের ম্যাচ জিততে পারেনি ফকিরেরপুল। মৌসুমেরই প্রথম জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মারুফুল হকের দল।
ফেডারেশন কাপের খেলায় শুক্রবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স ক্লাবকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে ঢাকা আবাহনী। জোড়া গোল করেছেন আবাহনীর দুজন- মোরছালিন ও দিয়াবাতে। লিগে দুই ম্যাচে জয়হীন (একটি ড্র, একটিতে হার) থাকার পর ফেডারেশন কাপে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে শুরু করল প্রতিযোগিতার বর্তমান রানার্সআপরা।
এই মৌসুমে ঘরোয়া ফুটবল লিগ এবং এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ মিলিয়ে মোট ৩ ম্যাচ খেলে আবাহনী। যেখানে দলটি করতে পেরেছিল স্রেফ এক গোল। আর মৌসুমের চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নেমেই কি না আকাশি-নীলরা প্রতিপক্ষের জাল কাঁপালেন চারবার! আগের একটি গোলও আসে দিয়াবাতের পা থেকেই; লিগে ব্রাদার্সের বিপক্ষে ২-১ গোলে হারা ম্যাচে।
এদিন চতুর্থ মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় আক্রমণে পেনাল্টি আদায় করে নেয় আবাহনী। মাঝ মাঠ থেকে লং পাস ধরে ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢোকেন দিয়াবাতে। সামনে এগিয়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে দিয়াবাতের পায়ে মেরে বসেন ফকিরেরপুল গোলকিপার সাজু আহমেদ। হলুদ কার্ড দেখার সঙ্গে পেনাল্টিও হজম করতে হয় তাঁকে। ষষ্ঠ মিনিটে সফল স্পট কিকে লক্ষ্যভেদ করেন দিয়াবাতে।
১৪ মিনিটে গোল না পাওয়ার হতাশায় পুড়ে ফকিরেরপুল। জটলার মধ্যে বক্সের একটু সামনে থেকে নেওয়া মোস্তফা মাহমুদ আবদেল খালেকের শট খুজে নিচ্ছিল জাল। আবাহনীর গোলকিপাল প্রিতম বাঁ দিকে ঝাপিয়ে বলের নাগাল পাননি। তবে শেষ পর্যন্ত পোস্টে লেগে ফিরে আসে বল।
দুই মিনিট পর মারান্দির দূরপাল্লার শট বেরিয়ে যায় আবাহনীর বক্সের বা পাশ ঘেঁষে। ২৪ মিনিটে বক্সের মধ্যে দিয়াবাতের দারুণ ক্যাটব্যাকে পা ছোয়াতে পারেননি আবাহনীর কেউ। পরের মিনিটে আকাশি-নীল রক্ষণের পরীক্ষা নেন ফকিরেরপুলের আবদেল খালেক, মারান্দিরা।
২৬ মিনিটে দারুণ ক্ষীপ্রতায় বক্সে ঢুকে ডান প্রান্ত থেকে আরেকটি কাটব্যাক দেন দিয়াবাতে, তবে বলের লাইনেই দাঁড়াতে পারেননি আল আমিন। পরের মিনিটে বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আগের মৌসুমে পুলিশ এফসিতে খেলা এই ফরোয়ার্ড।
৩৩ মিনিটে মোরছালিনের দারুণ ফিনিশিংয়ে লিড দ্বিগুণ করে আবাহনী। আক্রমণের শুরু মাঝ মাঠে শাকিলের থেকে। এরপর দিয়াবাতের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে বক্সের ঠিক সামনে থেকে আড়াআড়ি ও নিচু শটে দুরের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়ান জাতীয় দলের এই মিডফিল্ডার। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি ফকিরেরপুল গোলকিপার সাজু। ৯ অক্টোবর জাতীয় স্টেডিয়ামে হংকং, চায়নার বিপক্ষে ৩-৪ ব্যবধানে বাংলাদেশের হারা ম্যাচেও গোল পেয়েছিলেন মোরছালিন।
মোরছালিনের দারুণ ফিনিশিংয়ের পর আল আমিন আটকে যান সাজুর ব্লকে। পোস্টে ঢুকে আড়াআড়ি কোন থেকে সাজুকে পরাস্ত করতে পারলে গোল পেতে পারতেন আল আমিন। তবে সোজা প্রতিপক্ষ গোলকিপার শরীর বরাবর মেরে বসেন তিনি।
দলকে লিড বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ এনে দেন দিয়াবাতে। ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করেন তিনি। স্পট কিক নিতে এসে সাজুর হাতের নিচ দিয়ে বল ঠেলে ম্যাচে গোলের জোড়া পূর্ণ করেন আবাহনীর মালির ফরোয়ার্ড। আবাহনী এগিয়ে যায় ৩-০ ব্যবধানে।
বিরতির পর যেন কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে ধানমন্ডি পাড়ার ক্লাবটির মিডফিল্ড। সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক গোল পরিশোধ করেন ফকিরেরপুলের শান্ত টুডু। আবদেল খালেকের বল ধরে সামনে থাকা আবাহনীর দুই ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান ও কামরুলকে কাটিয়ে বক্সের সামনে থেকে শট নেন পোষ্টে; অনেকটা এগিয়ে আসা গোলকিপার প্রিতমের মাথার উপর দিয়ে বল সরাসরি খুজে নেয় জাল।
৫৬ মিনিটে ম্যাচ জমিয়ে তোলার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করে ফকিরেরপুল। ডানপ্রান্ত দিয়ে পেনাল্টি সীমানায় ঢুকে পড়েন বেন ইবরাহীম। এরপর একটা দারুণ কাটব্যাক; তবে গোলমুখের সামনে আবদেল খালেক যে ভুলটা করলেন সেটা হয়ত বিশ্বাস হয়নি তার নিজেরও। পা ছোয়াতে পারলে নিশ্চিতপ্রায় গোল!
ফকিরেরপুলের ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে ৬৪ মিনিটে আবাহনীর ব্যবধান ৪-১-এ বাড়িয়ে নেন মোরছালিন। ৬ মিনিট পর বেন ইবরাহীমের পাস থেকে আরেকবার ব্যবধান কমান মো. রিয়াদ। ৭৯ মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ মিস করে মোরছালিন। পরের মিনিটে আরও একবার তাঁকে গোলবঞ্চিত করেন প্রতিপক্ষের গোলকিপার।
কুমিল্লায় ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের অপর ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি। এই দুটি ম্যাচের পর এক মাসেরও বেশি সময়ের বিরতিতে যাবে ফেডারেশন কাপ। আগামী ২ ডিসেম্বর ‘বি’ গ্রুপের মোহামেডান-ফর্টিস ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরবে ফেডারেশন কাপের লড়াই।