২৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৩ পিএম
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করলেন তাওহিদ হৃদয়। রানের দেখা পেলেন সৌম্য সরকারও। বল হাতে আলো ছড়ালেন শরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনরা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ ও ঘরের মাঠে নেদারল্যান্ডস সিরিজ সামনে রেখে মাসের শুরু থেকেই চলছে বাংলাদেশের প্রাথমিক দলের অনুশীলন ক্যাম্প। সেই ক্যাম্পের শেষ দিনে নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্তরা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সন্ধ্যার ম্যাচে জাকের আলির নেতৃত্বাধীন বিসিবি সবুজ দলের সামনে পাত্তাই পায়নি লিটনের লাল দল। আগে ব্যাট করে ২০৩ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় সবুজ দল। জবাবে ২০ বল বাকি থাকতে ১৩৫ রানে অলআউট লাল দল।
আরও পড়ুন
১১ বছর পর বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস |
![]() |
৬৮ রানে জিতে যায় জাকেরের দল।
সবুজ দলের বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে অবদান রাখেন সবাই। শুরুতে ঝড় তোলার আভাস দিয়ে ১২ বলে ২১ রান করে ফেরেন শান্ত। পরে এইচপি দল থেকে আসা মাহফিজুল ইসলাম রবিনকে নিয়ে ৮২ রানের জুটি গড়েন সৌম্য।
৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৯ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ পড়া সৌম্য। আর রবিনের ব্যাট থেকে আসে ২৭ বলে ৪৪ রান।
এইচপির আরেক ব্যাটার আহরার আমিন পিয়ান অবশ্য ভালো করতে পারেননি। ১৪ রান করতে ১৬ বল খেলে ফেলেন তিনি।
অধিনায়ক জাকেরের ব্যাট থেকে আসে ৩ ছক্কায় ২৩ বলে ৩৫ রান। শেখ মেহেদী হাসান খেলেন ১২ বলে ১৭ রানের ইনিংস।
৩ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে ফেলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তানজিদ হাসান সাকিবের ৩ ওভারে খরচ ৪৩ রান। রিশাদ হোসেন ৪ ওভারে ৪১ রান। মুস্তাফিজুর রহমান ৩ ওভারে মাত্র ১৪ রান খরচ করে নেন ১ উইকেট।
রান তাড়ায় ব্যর্থ লাল দলের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম (৭ বলে 8) ও পারভেজ হোসেন ইমন (৩ বলে ১)। লিটন কুমার দাস ও হৃদয় মিলে চেষ্টা করেন দলকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু ৭ চারে ২৭ বলে ৩৩ রান করে আউট হয়ে যান লিটন।
আরও পড়ুন
বিহারির পথ ধরে দল বদলে ফেলছেন শঙ্কর |
![]() |
হৃদয়ের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের মধ্য দিয়ে। ড্রেসিং রুমের ফেরার আগে ৩ চারের সঙ্গে ৬টি ছক্কা মেরে মাত্র ২৭ বলে ৫৬ রান করেন মিডল-অর্ডারের নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটার।
তবে এরপর আর কেউ রান না পেলে অল্পেই গুটিয়ে যায় লাল দল।
৩ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন শরিফুল। সাইফউদ্দিনের শিকার ১৯ রানে ৩ উইকেট।
No posts available.
১২ অক্টোবর ২০২৫, ২:০৭ পিএম
১২ অক্টোবর ২০২৫, ১:২২ পিএম
ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সুখবর পেল বাংলাদেশ। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দুই সিরিজের শুরু থেকে খেলতে পারবেন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক ও দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটার লিটন কুমার দাস।
গত মাসে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়ে অনুশীলনের সময় পিঠের পাশের পেশিতে চোট পান লিটন কুমার দাস। যে কারণে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচ দুইটি খেলতে পারেননি ৩১ ছুঁইছুঁই এই কিপার-ব্যাটার।
পরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগেই দেশে ফিরে আসেন লিটন। তার জায়গায় এশিয়া কাপের ওই দুই ম্যাচ ও পরে আফগান সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেন জাকের আলি অনিক।
ভারত ও পাকিস্তানের কাছে হারলেও, জাকেরের নেতৃত্বে আফগানদের টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। তবে টপ-অর্ডারে লিটনের অনুপস্থিতিতে এরই মধ্যে ওয়ানডে সিরিজের দুই ম্যাচ হেরে গেছে তারা।
দেশে ফিরে পুনর্বাসনে ব্যস্ত থাকা লিটন এরই মধ্যে রানিং শুরু করে দিয়েছেন। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগেই মাঠে ফেরার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার, এমনটাই জানা গেছে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ থেকে।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী ১৮ অক্টোবর শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। একই মাঠে পরের দুই ম্যাচ ২১ ও ২৩ তারিখ।
পরে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি সিরিজের ম্যাচ হবে যথাক্রমে ২৯, ২৯ ও ৩১ অক্টোবর।
পায়ের পেশির টানে দুবার মাঠ ছেড়ে যাওয়া রহমত শাহকে শেষ ম্যাচে পাচ্ছে না আফগানিস্তান। এখনও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানায়নি তারা। তবে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন আফগান দলের ফিজিও নির্মালান থানাবালাসিঙ্গাম।
আবু ধাবিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৫তম ওভারে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে প্রথম পায়ের পেশির টানে মাঠ ছাড়েন রহমত। পরে নবম উইকেটের পতনের পর ৪৫তম ওভারে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
রিশাদ হোসেনের এক বল খেলার পর পেশির টান অনুভব করেন ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের সবচেয়ে সফল এই ব্যাটার। বেশ কিছুক্ষণ মাঠেই শুশ্রূষা দেওয়া হয় ৩২ বছর বয়সী ব্যাটারকে। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি।
এক পর্যায়ে নিজ পায়ে দাঁড়াতেও পারছিলেন না তিনি। তাই বাইরে থেকে হুইল চেয়ার এনে মাঠের বাইরে নেওয়া হয় রহমতকে। তখনই বোঝা যাচ্ছিল, হয়তো লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে গেলেন আফগানিস্তানের নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটার।
ম্যাচ শেষে ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে সেই কথাই বলেন ফিজিও নির্মালান।
“দূর্ভাগ্যবশত সে তার চোটের কাছে হেরে গেছে। যে কারণে এখন মাঠের বাইরে। আমরা আগামীকাল (রোববার) পরীক্ষানিরীক্ষা করব। তবে আমার মনে হয়, বেশ কিছু দিনের জন্য তাকে বাইরেই থাকতে হবে।”
একই মাঠে মঙ্গলবার সিরিজের শেষ ম্যাচে লড়বে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান।
দুই ম্যাচ ১১১ বল, ৫৫ রান ও ৮ উইকেট- বিপরীতে নেই কোনো বাউন্ডারি। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে রশিদ খানের পারফরম্যান্স এটি। যা দেখে দলের স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ মনে করছেন, রশিদের নামের ভারেই নুয়ে পড়ছে বাংলাদেশের ব্যাটিং।
আবু ধাবিতে শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয়ের দারুণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। মেহেদী হাসান মিরাজ, তানজিম হাসান সাকিবদের চমৎকার বোলিংয়ে আফগানদের মাত্র ১৯০ রানে আটকে ফেলেছিল তারা।
এরপর ব্যাট হাতে আর লড়াই করতেই পারেনি তারা। শুরুতে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের তোপ, আর পরে রশিদের ঘূর্ণির সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন ব্যাটাররা। ফলে এখন পর্যায়ে ৫ উইকেটে ৯৯ থেকে মাত্র ১০৯ রানে গুটিয়ে যায় তারা।
৮.৩ ওভারে ২ মেডেনসহ মাত্র ১৭ রানে ৫ উইকেট নেন রশিদ। এর আগে প্রথম ম্যাচেও ৩৮ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। এমনকি টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিন ম্যাচেও ওভারপ্রতি মাত্র ৫ রান খরচায় ৬ উইকেট নিয়ে তিনিই ছিলেন দুই দলের সেরা বোলার।
রশিদের বিপক্ষে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তাই মুশতাক বললেন, রশিদের নাম না দেখে তার বল দেখা উচিত বাংলাদেশের ব্যাটারদের।
“আমার নিজস্ব পর্যবেক্ষণ হলো, তারা (ব্যাটাররা) রশিদকে খেলছে, তার বল নয়। সে বলের অনেক বেশি স্পিন করায় না। অবশ্যই অনেক বড় বোলার। খুবই অভিজ্ঞ ও উইকেট টেকার।”
“তার বিপক্ষে খেলার চ্যালেঞ্জ বেশি কারণ ধারাবাহিকভাবে একই লেংথে বল করে। তাই আমার মনে হয়, কখনও কখনও বোলারকে না খেলে, বলটা খেলা উচিত।”
পাকিস্তানি এই স্পিন কোচের মতে, ভালো বলের বিপক্ষে রানের পথ বের করতে হবে বাংলাদেশের ব্যাটারদের।
“দ্রুত উন্নতি করতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মূলত টেম্পারমেন্টের ব্যাপার। ভালো টেম্পারমেন্ট থাকলে যে কোনো বোলারের বিপক্ষে খেলতে পারবে। রশিদকে অভিনন্দন। আফগানিস্তানের হয়ে অনেক বছর ধরে সে সফল। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের জন্য বলব, বল খেলার পথ বের করতে হবে, বোলারকে নয়।”
আমরা গর্ব করে বলি, '৫০ ওভারের ক্রিকেট আমাদের প্রিয় ফরম্যাট'। আইসিসির পূর্ণ সব সদস্যকে এই ফরম্যাটে হারিয়ে বৃত্ত পূরণ করেছি আমরা। এই গর্বও করি। আইসিসির শর্ত পূরণ করে ২০১৫, ২০১৯ এমনকি ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সরাসরি কোয়ালিফাই করেছে। ২০১৫ থেকে লম্বা সময় ধরে ওডিআই র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ৭ নম্বরে। সেখান থেকে অবনমন হতে হতে এখন ১০। ২০২৭ বিশ্বকাপে সরসরি কোয়ালিফাই করার স্বপ্ন ধীরে ধীরে ফিকে হচ্ছে।
একদিবসীয় ক্রিকেটে কেনো এই পরিনতি ? টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেখানে টানা ৪টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ দল, সেখানে ওডিআই সিরিজে বিপরীত চিত্র। গত বছর হোমে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-১ সিরিজ জয়ের পর টানা ৪টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোমে ২-১ এ হার দিয়ে শুরু ব্যর্থতম অধ্যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ০-৩, শ্রীলঙ্কা সফরে ২-১, সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে আফগানিস্তানের কাছে ইতোমধ্যে ০-২।
রাজনৈতিক মামলায় সাকিব নিষিদ্ধ, মাহামুদুল্লাহ, মুশফিক নিয়েছেন প্রিয় ফরম্যাট থেকে অবসর। তাতেই এলোমেলো বাংলাদেশ।
সমমানের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজের প্রথম ২টিতে জয়ের অতীত আছে বাংলাদেশের। পরবর্তী তিনটিতে সেখানে হার।
যে প্রতিপক্ষকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০তে হারিয়ে হোয়াইট ওয়াশের উৎসব করেছে বাংলাদেশ, প্রায় একই দল নিয়ে ওডিআই সিরিজে সেই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তো আত্মবিশ্বাসে টুইটম্বুর থাকার কথা বাংলাদেশ দলের। অথচ, সারজা থেকে আবুধাবিতে ভেন্যু স্থানান্তর হওয়ায় ভেঙে চুরে খান খান বাংলাদেশ দল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে হার ৫ উইকেটে, দ্বিতীয় ম্যাচে হার ৮১ রানে। প্রিয় ফরম্যাটে আফগানিস্তানের কাছে সর্বনিম্ন স্কোরের (১০৯/১০) অপবাদও পেয়েছে বাংলাদেশ শনিবার রাতে। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপের ম্যাচে আবুধাবিতে ১১৯ রানে অল আউট হয়ে ১৩৬ রানে হারের লজ্জাটা মনে করিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ দল ৭ বছর পর সেই একই ভেন্যুতে।
কাকতালীয় হলেও সত্য, চলমান ওডিআই সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ দল হেরেছে আফগানিস্তানের দুই বোলারের কাছে। প্রথম ম্যাচে ওমরজাই-রশিদ খান নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে পেসার ওমরজাইয়ের ৩টি শিকারের পাশে লেগ স্পিনার রশিদ খানের ৫টি উইকেট।
মিরাজ (৩/৪২), তানজিম (২/৩৫), রিশাদের (২/৩৭) বোলিংয়ে আফগানিস্তানকে ১৯০ রানে ইনিংস গুটিয়ে দিয়ে, ইব্রাহিম জাদরানকে সেঞ্চুরি করতে না দিয়ে (১৪০ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৯৫) কী হাসিখুশি দলকে না দেখেছে দর্শক।
টার্গেট মাত্র ১৯১। উইকেটে বল যতোই ঘুরুক, এটা তো মামুলি টার্গেট হওয়ার কথা। কিন্তু শুরু থেকে বাংলাদেশ ব্যাকফুটে। নতুন বলে ওমরজাইয়ের সুইং এই ম্যাচেও বুঝতে পারেনি বাংলাদেশ টপ অর্ডাররা। শর্ট বলেও উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার প্রবনতা লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশের প্রথম ৪ উইকেটের তিনটি পেয়েছেন এই আফগান পেসার, অন্যটি রান আউট।
ইনিংসের ৫ম ডেলিভারিটি ছিল আউটসাইড অফ, সেই বলে খেলতে যেয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম (০)। ওমরজাইয়ের তৃতীয় এবং ইনিংসের ৫ম ওভারে স্কোয়ার লেগে খেলে ২ রান নিতে যেয়ে শান্ত'র রান আউটে কাটা পড়ার দৃশ্যও (৭) ভাল লাগেনি কারো। ওমরজাইয়ের ৪র্থ এবং ইনিংসের ৭ম ওভারে শর্ট বলে আপার কাট করতে যেয়ে ডিপ থার্ডম্যানে সাইফ দিয়েছেন নিজেকে সঁপে (২৩ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ২২)। এই বোলারের ৬ষ্ঠ এবং ইনিংসের ১১তম ওভারে অ্যাঙ্গেল ডেলিভারিতে পেছনের পায়ের উরুতে বলের আঘাতে এলবিডাব্লুউ মিরাজ (৪)।
স্কোরটা যখন ৫০/৪, তখন লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস পাবে কোথা থেকে ? জাকের আলী অনিক-তাওহিদ হৃদয় ৫ম উইকেট জুটিতে ৩৬ বলে ২৯ রানে লড়াইয়ে ফেরার স্বপ্ন দেখালেও সেই স্বপ্ন ভঙ্গে করেছেন হৃদয়। প্রথম স্পেলে (২-০-৭-০) উইকেটহীন রশিদ খান দ্বিতীয় স্পেলে (৬.৩-২-১০-৫) ভয়ংকর রূপ ছড়াতে পেরেছেন হৃদয়ের ভুলে। রশিদ খানের গুগলি যেখানে ধরতে পারছে না কেউ, সেখানে এই লেগ স্পিনারকে কেনো সুইপ শটে বেছে নেয়া হবে ? তার পরিণতি ভোগ করেছে হৃদয়, সোহান। সুইপ করতে যেয়ে এলবিডাব্লুউতে (৩৪ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৪) হৃদয়ের কাটা পড়ার মধ্য দিয়ে শুরু। শেষ ৫টি উইকেটের পতন হয়েছে মাত্র ১০ রানে!
এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের মুখোমুখি লড়াইয়ে দু'দলের বোলারদের মধ্যে সর্বাধিক উইকেট ছিল সাকিব আল হাসানের (১৫ ম্যাচে ৩০ উইকেট)। সাকিবকে টপকে গেছেন শনিবার রাতে রশিদ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওডিআই ক্রিকেটে ১৮ ম্যাচে তার উইকেটসংখ্যা এখন ৩২টি।
বাংলাদেশের স্থায়ীত্ব হওয়া ১৭১ বলের ইনিংসে ডট বলের সংখ্যা ১১৫টি। অর্থাৎ স্কোরিং শট মাত্র ৫৬টি। ওডিআই ক্রিকেটে এই দলটাকে পুরোনো রূপে ফিরিয়ে আনাটাই যে এখন বিসিবির বড় চ্যালেঞ্জ।
রশিদ খানের ফুল লেংথ ডেলিভারি না বুঝেই স্লগ করতে চাইলেন তাওহিদ হৃদয়। কিন্তু ব্যাটেই লাগাতে পারলেন না মিডল-অর্ডার ব্যাটার। বোল্ড হয়ে ধরলেন ড্রেসিং রুমের পথ। সেই যে শুরু, এরপর রশিদের স্পিন বিষে নাকাল হলেন আরও ৪ ব্যাটার।
বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাত্র ১৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে স্পিনারদের তালিকায় আরও একটু ওপরে উঠে গেলেন রশিদ। ওয়ানডেতে এটি তার ষষ্ঠ ৫ উইকেট। স্পিনারদের মধ্যে যা এই ফরম্যাটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
৩৫০ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৩৪১ ইনিংসে হাত ঘুরিয়ে ১০ বার ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি অফ স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। তার ঠিক পরে আছেন শহিদ আফ্রিদি। পাকিস্তানি তারকা ৩৭২ ইনিংসে ৯ বার নিয়েছেন ৫ উইকেট।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ২০০ উইকেট পূর্ণ করা রশিদ এবার নিজের ১০৮তম ইনিংসে নিলেন ষষ্ঠ ৫ উইকেট। যার সৌজন্যে বসলেন মুরালি ও আফ্রিদির ঠিক পরেই। রশিদের সমান ৬ বার ৫ উইকেট আছে পাকিস্তানের সাকলায়েন মুশতাকের, তবে ১৬৫ ইনিংসে।
প্রথম ওয়ানডেতেও দারুণ বোলিং করেছিলেন রশিদ। সেদিন ৩৮ রানে তার ঝুলিতে জমা পড়েছিল ৩টি উইকেট। এবার দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে রীতিমতো নাচিয়ে ছেড়েছেন।
নিজের ষষ্ঠ ও বাংলাদেশের ইনিংসের ২৩তম ওভারে পরপর দুই বলে নুরুল হাসান সোহান ও তানজিম হাসান সাকিবকে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান রশিদ। পরের বলে রিশাদ হোসেনকেও এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার।
তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়ায় হ্যাটট্রিকের স্বাদ পাওয়া হয়নি রশিদের। সেটি না পেলেও পরে তানভির ইসলাম ও রিশাদকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার।
দুই ম্যাচ মিলিয়ে ১৮.৩ ওভারে মাত্র ৫৫ রান খরচ করে রশিদের শিকার ৮টি উইকেট। ওভারপ্রতি খরচ ৩ রানেরও কম। তার এই ১১১ বলে একটিও বাউন্ডারি মারতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা।