১২ নভেম্বর ২০২৪, ৬:৩৩ পিএম

হাতে আছে চার মাসেরও কম সময়। আইসিসির আর দশটা টুর্নামেন্ট হলে এমন সময়ে আয়োজক দেশ ব্যস্ত থাকে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে, সূচিও প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় বা হওয়ার পথে থাকে। ভেন্যুগুলোতে চলে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। তবে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পাকিস্তানে হওয়ার এই সময়েও রয়েছে ব্যাপক অনিশ্চয়তা। ভারত কোনোভাবেই যাবে না প্রতিবেশী দেশে খেলতে, আর ছাড় দিতে নারাজ পাকিস্তানও। তাদের দাবি, হয় ভারতকে তাদের দেশে আসতে হবে বা রোহিত-কোহলিকে ছাড়াই আয়োজন হবে এবারের আসরের।
সবকিছু ঠিক থাকলে, গত সোমবার থেকে ১০০ দিনের কাউন্টডাউন শুরু হতো আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫-এর। লাহোরে হত বিশাল আয়োজন। জানানো হতো টুর্নামেন্টের সূচি। কিন্তু তা আর হলো কই। এর পেছনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের অনড় অবস্থানও কম দায়ী নয়।
আরও পড়ুন
| ‘ভারত-পাকিস্তান আছে বলেই আইসিসি টিকে আছে’ |
|
পাকিস্তানে হিয়ে খেলার ক্ষেত্রে গোড়ামি যে শুধু ভারতেরই নয়। পাকিস্তানও যেন পণ করেছে, একচুল ছাড় ভয় ভারত ক্রিকেট বোর্ডকে। ২০২৩ সালের এশিয়া কাপের হাইব্রিড মডেলকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তারা কিছুতেই মানবে না। গেল বছর এশিয়া কাপে ভারত ছাড়া বাকি দলগুলো খেলেছে পাকিস্তানের মাঠে। শুধু ভারতের জন্যে শ্রীলঙ্কাতেও বসাতে হয়েছিল ভেন্যু। তবে এবার পাকিস্তান তাতেও রাজী না।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) আইসিসিকে ই-মেইলে জানিয়েছে, তারা পাকিস্তানে খেলতে যেতে অপারগ। ভারত সরকার তাদের পাঠাবেন না। প্রস্তাব দিয়েছে হাইব্রিড মডেলে তাদের ম্যাচগুলো অন্য আরেকটি দেশের রাখার জন্য। সেটা আবার আইসিসি পাকিস্তানকে মেইল করে জানিয়েছে।
পাকিস্তানের বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, ভারত যদি এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে না আসে, তবে মাইনাস ইন্ডিয়া বা বয়কট ইন্ডিয়া নীতিতে এগোতে পারে পাকিস্তান। অর্থাৎ, ভারতকে ছাড়াই টুর্নামেনট আয়োজনের কথা ভাবছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। গণমাধ্যমগুলো এমনও বলছে, ভারত পাকিস্তানে না খেলা অব্দি পাকিস্তানও কোন টুর্নামেন্টেই ভারতের সঙ্গে আর খেলবে না। পিসিবিও নাকি এগোচ্ছে এমন পরিকলল্পনার দিকেই।
আরও পড়ুন
| রউফের ফাইফারে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিল পাকিস্তান |
|
ভারত-পাকিস্তানের বৈরিতা তো নতুন কিছু না। তবে এরপরেও দুই দলের মধ্যে সফর ছিল প্রায় নিয়মিত। মাঝে শুধু ১৯৬২ থেকে ১৯৭৭ সাল দুবার যুদ্ধে জড়িয়ে আসা যাওয়া বন্ধ ছিল দুই দেশ। এর আগে-পরেও একাধিকবার সফর বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। তবে একুশ শতকে কোনো যুদ্ধ না লাগলেও এক যুগ ধরে ভারত-পাকিস্তান একে অপরের দেশে সফর করে না।
পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে সবশেষ ভারতে গেছে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। আর ভারতীয় দলের সর্বশেষ পাকিস্তান সফর ২০০৭ সালে। এর পরের বছরও ভারতের একটি দল পাকিস্তানে গেছে, তবে সেটা এশিয়া কাপের জন্য। এর পর থেকে চলছে লম্বা বিরতি। আর গত ৮ বছরে দুই ফরম্যাটের দুটি বিশ্বকাপ খেলতে দুইবার ভারতে গেছে পাকিস্তান।
গত বছর এশিয়া কাপের জন্য ভারতীয় দলের পাকিস্তানে যাওয়া না–যাওয়া নিয়ে যখন তুমুল আলোচনা, তখন জাভেদ মিয়াঁদাদের একটি মন্তব্য ভারতীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। মিয়াঁদাদ বলেছিলেন, “ভারত জানে পাকিস্তানের কাছে হারলে তাদের দেশের মানুষ ছেড়ে কথা বলবে না। এমনকি নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত উধাও হয়ে যাবেন, ভারতের জনগণ তাঁকেও ছাড়বে না। এই ভয়ৈই ভারত আসে না। পাকিস্তানে যদি তারা খেলতে না আসে, তাহলে তারা জাহান্নামে যাক।”
পাকিস্তানে না যাওয়া নিয়ে বিসিসিআই সব সময়ই সরকারের অনুমোদন না থাকার কথা বলে। কিন্তু ভারত সরকারের কেউ কখনোই স্পষ্ট করে বলেন না ঠিক কী কারণে অনুমতি দেওয়া হয় না। আর এ ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমে ভারতের ক্রিকেট–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা একটা শব্দই নিয়মিত উচ্চারণ করে থাকেন—‘নিরাপত্তা’।
আরও পড়ুন
| ভারতের অংশগ্রহণে পাকিস্তানেই হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, আশা পিসিবির |
|
পাকিস্তানে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে কিন্তু শঙ্কা কমবেশি সব দেশেরই থাকে। ২০০৯ সালের মার্চে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর হামলার ঘটনায় তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনেই চলে গিয়েছিল পাকিস্তানের ভেন্যু। এমনকি ২০১১ বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক হলেও পাকিস্তানে শেষ পর্যন্ত কোনো ম্যাচই হয়নি।
পাকিস্তানে ভারত ক্রিকেট দলের সফর বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে লাহোরের ঘটনা ছিল সবার জন্য ‘কমন ফ্যাক্টর’। লাহোর হামলার পরবর্তী ছয় বছর কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশই আর পাকিস্তানে সফর করেনি। তবে ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের মাধ্যমে আবার দরজা খোলার পর গত কয়েক বছরে প্রায সব দেশই পাকিস্তানে খেলতে গেছে। বাকি কেবল ভারতই।
এর পেছনে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর টানা চার দিন মুম্বাইয়ে দফায় দফায় সন্ত্রাসী হামলার কারণটিও জড়িত। ওই হামলায় প্রায় পৌনে দুই শ মানুষ নিহত হয়। মুম্বাইয়ে সেই সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করে ভারত। এতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠেকে তলানিতে । সঙ্গে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর হামলার ঘটনা মিলিয়ে ভারত, পাকিস্তানে ক্রিকেট দল পাঠানো বন্ধ করে দেয়।
২০১৫ সালের শেষে সম্ভাবনা দেখা দেয় পিসিবি আর বিসিসিআইয়ের মধ্যকার এক বৈঠকের আহবানে। বৈঠকের দিন ওয়াংখেড়েতে হানা দেন শিবসেনার কর্মীরা। প্রায় দুই শর মতো শিবসেনা বিসিসিআই প্রধান শশাঙ্ক মনোহরসহ অন্যদের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখলে পিসিবি-বিসিসিআই বৈঠক পণ্ড হয়ে যায়।
বিসিসিআইয়ের তখনকার সচিব অনুরাগ ঠাকুর বলেছিলেন, “আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা নিয়ে আলোচনা করতে পারি তিনটি শর্তে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা, ভারতীয় ক্রিকেটারদের স্বার্থ এবং ভারতীয় জনগণের অনুভূতিকে প্রাধান্য দিয়ে।”
তবে সেই শর্ত পূরণ হয়েছে নাকি হয়নি, আজ অব্দি তা নিয়ে কোনো পক্ষ থেকেই আসেনি পরিস্কার কোন বক্তব্য। ২০২৩ সালের এশিয়া কাপ এবং ওয়ানডে বিশ্বকাপ ঘিরে দুই দেশের ক্রিকেট সম্পর্ক পুনরায় চালু নিয়ে আবার ব্যাপক মাত্রায় আলোচনা তৈরি হয়েছিল। পাকিস্তান সব ভুলে কিন্তু বিশ্বকাপেও খেলেছে ভারতে গিয়ে। আবার ভারতের ইচ্ছেনুযায়ী হাইব্রিড মডেলও দিয়েছে এশিয়া কাপে। তবে পাকিস্তানে গিয়ে খেলার ব্যাপারে অতীতের অবস্থান পরিবর্তন এখন ও নিকট ভবিষ্যতেও হয়ত করবে না ভারত।
আর সেই কারণেই উঠছে প্রশ্ন, অল্প সময়ের মধ্যে আয়োজক দেশ ও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও ক্ষমতাধর ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই - দুই পক্ষকে খুশি রেখে আইসিসি কী পারবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঠিক সময়ে আয়োজনে এগিয়ে যেতে? বাস্তবতা বলছে, খুব জটিল সময় অপেক্ষা করছে ৫০ ওভারের এই টুর্নামেন্টের জন্য।
No posts available.
৭ নভেম্বর ২০২৫, ৪:২৬ পিএম
৭ নভেম্বর ২০২৫, ২:৫৯ পিএম

বিশ্বকাপ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক লরা ভলভার্টকে (১০১) আউট করতে যে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ নিয়েছিলেন অমনজোত কৌর, সেটিই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয় ভারতের পক্ষে। পরে ম্যাচ শেষে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেছিলেন, ‘ওই ক্যাচটা জীবনের সবচেয়ে বড় মুহূর্ত ছিল।’
ভারত বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ এখনো সারা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে সতেজ। আর এই সাফল্যের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দলের সাক্ষাতে উঠে এসেছে এক হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্ত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁকেও মুগ্ধ করেছে অলরাউন্ডার অমনজোতের নেওয়া লরার ক্যাচটি।
গত বুধবার দিল্লির লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে বিশ্বকাপজয়ী নারী ক্রিকেটারদের আমন্ত্রণ জানান নরেন্দ্র মোদি। তিনি খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান এবং বলেন, টুর্নামেন্টের শুরুতে তিন ম্যাচে হারের পরেও দল যেভাবে চাপ সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে—তা দেশের মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণার উদাহরণ হয়ে থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার মুখেও দৃঢ় মনোবল ধরে রাখার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎ শেষে সংবাদসংস্থা এএনআইকে অমনজোত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার ক্যাচ নিয়ে মজা করছিলেন। তিনি বললেন—সূর্য ভাইয়া (পুরুষ দলের সূর্যকুমার যাদব) একটা ক্যাচ ধরেছিল, আমি একটা ক্যাচ ধরলাম, আর দুটো বিশ্বকাপ ঘরে ফিরল! আমরা সবাই হেসে উঠেছিলাম।’
এর আগে, পুরুষ দল টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার সময় সূর্যকুমার যাদবের অবিশ্বাস্য ক্যাচ ভাইরাল হয়েছিল। নারী বিশ্বকাপ ফাইনালেও অমনজোত কয়েকবারের চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ নিয়ে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে দেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে ভারত জেতে ৫২ রানে।
বিশ্বকাপ শেষে নিজের শহর চণ্ডীগড়ে ফেরেন অমনজোত। বিমানবন্দরে হাজারো মানুষের ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, ‘পুরো পাঞ্জাব আমাকে স্বাগত জানাতে এসেছে। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি হতে পারে না। পরিবার পাশে না থাকলে এতদূর আসা যায় না।’

শামির বিরুদ্ধে ভরণ–পোষণের অর্থ বাড়ানোর দাবিতে তাঁর সাবেক স্ত্রী হাসিন জাহানের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নোটিশ জারি করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার দেশটির সর্বোচ্চ আদালত শামি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এই নোটিশ পাঠায়।
আবেদনে হাসিন জানান, কলকাতা হাইকোর্ট ভরণ–পোষণ হিসেবে যে মাসিক ৪ লাখ রুপি নির্ধারণ করেছে—তাঁর (হাসিন) জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার এবং মেয়ের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার রুপি পর্যাপ্ত নয়। তিনি আদালতের কাছে ভরণ–পোষণের অর্থ বাড়ানোর অনুরোধ জানান। তাঁর দাবি, বর্তমানে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মেয়ের শিক্ষার খরচসহ প্রয়োজন মেটাতে এই অর্থ যথেষ্ট নয়।
সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গ্রহণ করে শামি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে। তারপর আদালত পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করবে।
হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে অসন্তোষ জানিয়ে হাসিন জাহান বলেন, তিনি ও তাঁর মেয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে এই ভরণ–পোষণ পর্যাপ্ত নয়। সেই কারণেই তিনি সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন।
২০১৮ সালে শামি ও তাঁর স্ত্রী হাসিনের ব্যক্তিগত ও আইনি দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সে সময় হাসিন সংবাদমাধ্যমে এসে শামির বিরুদ্ধে গৃহনির্যাতন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং যৌতুকের দাবির অভিযোগ আনেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় শামির বিরুদ্ধে কলকাতায় মামলা হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে শামি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জবাব আদালতে জমা পড়বে। এরপর সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করবে। এতে দ্বন্দ্বপূর্ণ এই অধ্যায়ের পরবর্তী দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।

সম্প্রতি দুটি সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের টিম ম্যানেজমেন্টের অনেকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন জাহানারা আলম। এই পেসারের অভিযোগ ও মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিসিবি।
জাহানারার অভিযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হচ্ছে ব্যাপক আলোচনা। এবার এই তারকা ক্রিকেটারের ইস্যুতে মুখ খুললেন তামিম ইকবাল। আজ ফেসবুকে এক পোস্টে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক লিখেছেন,
‘জাহানারা আলম যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, সবই গুরুতর এবং সে সব সত্যি হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।’
শুধু নারী ক্রিকেট বলে নয়, যেকোনো ক্ষেত্রে এটি গ্রহণযোগ্য নয় বললেন তামিম,
‘শুধু একজন জাতীয় ক্রিকেটার বা সাবেক অধিনায়ক বলেই নয়, যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটার হোক বা যেকোনো খেলার ক্রীড়াবিদ কিংবা যে কোনো নারী, কারো প্রতিই এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
বিসিবির পাশাপাশি ক্রীড়া পরিষদকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ তামিমের,
‘বিসিবি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বটে। তবে আমি মনে করি, এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কিংবা সরকারী পর্যায়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত, যেখানে বিসিবি সংশ্লিষ্ট কেউ থাকবেন না, যাতে বিন্দুমাত্র পক্ষপাতের সুযোগ না থাকে। যত দ্রুত সম্ভব এই কমিটি গঠন করা উচিত ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপারটিকে দেখা উচিত। দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত শেষ করে দোষী যে-ই হোক, যার যতটুকু দায় থাকুক, উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’
তামিম আরও লিখেছেন,
‘কয়েকদিন আগে জাতীয় দলের পরিবেশ নিয়েও জাহানারা কিছু অভিযোগ করেছেন, যা বিসিবি পরে উড়িয়ে দিয়েছে। একজন ক্রিকেটার যখন দল নিয়ে এত গুরুতর অভিযোগ করেন, সেসব অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত। কিন্তু যাচাই না করেই বিসিবি যেভাবে অতি দ্রুত উড়িয়ে দিয়েছে, কখনোই তা কাম্য নয়।’
ন্যায়বিচার প্রত্যাশা তামিমের,
‘জাহানারার অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা যদি না নেওয়া যায়, যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো মেয়ে ক্রিকেট বা যে কোনো খেলায় আসতে ভয় পাবে, খেলাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পিছপা হবে। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।’

হংকং সিক্সেসে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। স্বাগতিক হংকংয়ের বিপক্ষে তাদের প্রথম ম্যাচটি হয়েছিল পরিত্যক্ত। আকবর আলীর ব্যাটিং তাণ্ডব ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ঘূর্ণি জাদুতে মং ককে পরের ম্যাচে পেল বাংলাদেশ দারুণ জয়।
টস জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক লাহিরু দিলশান। ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৭৫ রান রান। জবাবে ৫.১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমে যায় ৬১ রানে।
মং ককের মিশন রোড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথম ওভারেই ব্যাটিং ঝড় তোলেন বাংলাদেশের ওপনোর হাবিবুর রহমান। ধনঞ্জয়া লক্ষণের এক ওভারে তোলেন ২০ রান। ইনিংসের চতুর্থ বলে অবশ্য গোল্ডেন ডাকে আরেক ওপেনার জিসান আলমকে ফেরান লক্ষণ।
দুই নম্বরে নেমে তাণ্ডব চালান আকবর আলী। ৯ বলে ৩২ রান করেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটার। ইনিংসে ছিল ৪টি ছক্কা ও ২টি চার। যার সৌজন্যে ৬ উইকেটে ৭৫ রান তোলে বাংলাদেশ।
৭৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে প্রথম ওভার থেকেই উইকেট হারাতে থাকে শ্রীলঙ্কা। সর্বোচ্চ ১২ বলে ১৮ রান এসেছে লক্ষণের ব্যাট থেকে। লাহিরু সামারাকুন ৭ বলে ১৩ ও তানুকা দাবারে করেছেন ৩ বলে ১৩ রান। তবে দলকে জেতানোর মতো ইনিংস খেলে যেতে পারেননি কেউ। ২ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের মোসাদ্দেক। ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি।

হংকং সিক্সিংয়ে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় আকবর আলীরা। এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করে ৭১ রান রানে সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
মংকং কক ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শ্রীলঙ্কার আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই ব্যাটিং ঝড় তোলেন শেখ হাবিবুর রহমান। ধনঞ্জয় লক্ষনের এক ওভারে ২০ রান করেন তিনি। তবে দ্বিতীয় ওভাবের জিসান ফিরলে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে দল।
ওয়ানডাউনে নেমে সে ধাক্কা সামাল দেন আকবর আলী। ৯ বলে ৩২ রান করেন জাতীয় দলের এই উইকেটকিপার ব্যাটার। যাতে ছিল ৪টি ছক্কা ও ২টি চার।
শেষ দিকে বরং বিড়ম্বনা বাড়ান মোসাদ্দেক হোসেন ও আবু হায়দার রনি। যেখানে প্রতিটি বল গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে ১০ বলে ৬ রান করেন আবু হায়দার। মোসাদ্দেক করেন ৬ বলে ৮ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৭১ রান।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ধনঞ্জয়, থিরিন্দু ও লাহিরু একটি করে উইকেট তোলেন।