
চোট থেকে ফিরে মাঠে নিয়মিত হতে শুরু করেছেন নেইমার। সান্তোসের হয়ে আজ মাঠে নেমে গোলও পেয়েছেন। তবে তাঁর দল ১-১ গোলে ড্র করে মিরাসলের বিপক্ষে। আর ম্যাচ শেষে ক্ষমা চাইলেন ক্লাবটির ‘রাজপুত্র’ নেইমার।
ঘরের মাঠে ব্রাজিলের লিগ সিরি ‘আ’তে আজ সকালে মিরাসলের মুখোমুখি হয় সান্তোস। ম্যাচের ৪ মিনিটেই দলকে এগিয়ে নেন নেইমার। ৬০ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। তবে ম্যাচের নায়ক হতে যাওয়া নেইমার হঠাৎ বনে যান খলনায়ক। বক্সে প্রতিপক্ষের এক ফুটবলারকে ফাউল করে বসেন ৩৩ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান তারকা। পেনাল্টি পেয়ে যায় সফরকারীরা। স্পট কিক থেকে সমতায়ও ফিরে তারা। তাতে মূল্যবান তিন পয়েন্ট অর্জনের সুযোগ হারায় সান্তোস।
এই ড্রয়ের পর লিগে ৩৪ ম্যাচ শেষে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ১৬ নম্বরে আছে সান্তোস। অবনমন অঞ্চল থেকে মাত্র এক পয়েন্ট দূরত্বে আছে নেইমারের দল। তাতে লিগের শেষ অংশের প্রতিটি ম্যাচই এখন তাদের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
ম্যাচে গোল করেও পরে নিজের ভুলে গোল দল হজম করায় ক্ষমা চান নেইমার। ম্যাচ শেষে ইনস্টগ্রামে তিনি লিখেছেন, আমরা চ্যাম্পিয়নশিপের অন্যতম সেরা দলের বিপক্ষে খেললাম। জয়ের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এবং আমি মনে করি জয় আমাদের প্রাপ্য ছিল। দলের সবাইকে এবং সমর্থকদের অভিনন্দন, যারা আবারও একটি দারুণ উৎসব করেছে! আমরা এই শেষ পর্বে একসঙ্গে লড়ব। প্রতিটি পয়েন্ট, সবকিছুই গুরুত্বপূর্ণ হবে!
এরপর নেইমার লিখেন, ‘বি:দ্র: পেনাল্টি নিয়ে দুঃখিত... এখানে অনেক ভিন্ন ধরনের মানদণ্ড আছে, আমি জানি না আসলে কী বলব, শুধু মেনে নিতে হবে! যুদ্ধ থেমে যাবে না, সান্তোস জয়ী হোক!’
চলতি মৌসুম শেষে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে শেষ হয়ে যাবেন নেইমার। গুঞ্জন আছে মেজর সকার লিগে ইন্টার মায়ামিতে সাবেক বার্সেলোনা সতীর্থ লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজের সঙ্গে আবার ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর পুনর্মিলনী দেখা যেতে পারে।
No posts available.

৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩। জুভেন্টাসের হয়ে এম্পোলির বিপক্ষে ২৮ মিনিট খেললেন। এরপর দীর্ঘ বিরতি। ২৬ মাস পর শেষ পর্যন্ত আবার মাঠে ফিরছেন পল পগবা। আগামিকাল লিগ আঁ’তে রেন-এর বিপক্ষে ম্যাচে দেখা যেতে পারে এএস মোনাকোর ফরাসি ফুটবলারকে।
ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সব ধরনের ফুটবল থেক সাময়িক নিষিদ্ধ হন পল পগবা। সে সময় তিনি খেলতেন ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে। তদন্ত শেষে নিষিদ্ধ দ্রব্য সেবনের সত্যতা মেলায় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে ৪ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। পগবা অবশ্য সবসময়ই দাবি করেছেন যে ডোপ টেস্টের ঘটনা একটি ভুল ছিল। তিনি দাবি করে এসেছেন, তাঁর খাবারে কোনো অবৈধ উপাদান মেশানো হয়।
আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে আপিলের প্রেক্ষিতে পগবার নিষেধাজ্ঞা ৪ বছর থেকে নেমে আসে ১৮ মাসে। তাতে ফুটবল ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন ৩২ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। কিন্তু গত নভেম্বরে পারস্পরিক সমঝোতায় পগবার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে জুভেন্টাস। পেশাদার ক্যারিয়ার ক্যারিয়ারে আবারও অনিশ্চতার মুখে পড়েন।
আরও পড়ুন
| এই তারকাদের দেখা যাবে না ২০২৬ বিশ্বকাপে |
|
শেষ পর্যন্ত এএস মোনাকো পগবাকে দুই বছরের জন্য নিজেদের করে নেওয়ায় নতুন পথচলা হয় তাঁর। ফরাসি ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তিতে সই করার সময়ে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় পগবাকে।
ফের ফুটবলে ফেরার মধ্য দিয়ে ফ্রান্স জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার স্বপ্নও দেখেন পগবা। মাঠে নিয়মিতই অনুশীলন করছেন বিশ্বকাপ জয়ী এই ফরাসি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। ইএসপিএন জানিয়েছে, মোনাকোর পরের ম্যাচে শেষ সময়ে কয়েক মিনিট মাঠে নামার সুযোগ পেতে পারেন পগবা। তাকে আগামী কয়েক সপ্তাহে ধীরে ধীরে মাঠে সময় দেওয়াও পরিকল্পনা আছে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করার পর ২০১২-১৩ মৌসুমে জুভেন্টাসে যোগ দেন পগবা। চার বছর পর আবার ইংলিশ ক্লাবটিতে ফেরেন তিনি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় দফায় ফের জুভেন্টাসেই পাড়ি জমান ২০২২-২৩ মৌসুমে। ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে ৯১ ম্যাচ খেলে ১১ গোল করেছেন তিনি।

ঘরের ছেলে ফেরাতেই কিনা কে জানে আর্জেন্টিনার লিগের সিস্টেমই পাল্টে গেল। আর তাতে শৈশবের ক্লাবে ফিরে ইতিহাস লিখলেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াও। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশেন (এএফএ) রোসারিও সেন্ট্রালকে লিগ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছে।
১৯৮৬-৮৭ মৌসুমের পর এই প্রথম লিগ জিতল ডি মারিয়ার ক্লাব রোসারিও সেন্ট্রাল। ৩৯ বছর পর ঘরের ছেলের প্রত্যাবর্তন রাঙাল তাঁরা লিগ শিরোপা জিতে।
আর্জেন্টিনার লিগে এবার পাল্টে গেছে চ্যাম্পিয়ন দল নির্ধারণের নিয়ম। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির ঘরোয়া ফুটবল লিগের সিস্টেম কিছুটা জটিলই মনে হতে পারে অনেকের কাছে। মূলত তাদের প্রধান টুর্নামেন্ট হচ্ছে অপার্তুরা এবং ক্লাউসুরা।
আরও পড়ুন
| এই তারকাদের দেখা যাবে না ২০২৬ বিশ্বকাপে |
|
আর্জেন্টিনার সাধারণ সিস্টেমে প্রতি বছর দুটি আলাদা টুর্নামেন্ট হয়, অপার্তুরা (যা বছরের প্রথম অংশে হয়) এবং ক্লাউসুরা (যা বছরের দ্বিতীয় অংশে হয়)। প্রতিটি টুর্নামেন্টের পর প্লে-অফ হয় এবং ওই টুর্নামেন্টের আলাদা চ্যাম্পিয়ন নির্ধারিত হয়।
অপার্তুরা চ্যাম্পিয়ন দলের বিপক্ষে ক্লাউসুরা চ্যাম্পিয়নের মধ্যে একটি সুপার ফাইনাল ম্যাচ হয়। যেটি সবচেয়ে বড় শিরোপা ধরা হয়ে থাকে। তবে এবার একটু পরিবর্তন হয়েছে। আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন নতুন নিয়ম অনুযায়ী দুটি টুর্নামেন্টের পয়েন্ট যোগ করে হিসাব করা হয়েছে। অর্থাৎ, অপার্তুরা এবং ক্লাউসুরা টুর্নামেন্টের পয়েন্টগুলো যোগ করে যে দল সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট অর্জন করবে তাদের লিগ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করবে।
রোসারিও সেন্ট্রাল ২০২৫ সালের দুটি টুর্নামেন্টের পয়েন্ট যোগ করে মোট ৬৬ পয়েন্ট অর্জন করেছে। এই পয়েন্টের ভিত্তিতে তারা পয়েন্ট টেবিলে প্রথম স্থানে ছিল, তাই ডি মারিয়ার ক্লাবই চ্যাম্পিয়ন হয়। দুই নম্বরে থাকা বোকা জুনিয়র্স থেকে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল তারা।
রোসারিও সেন্ট্রাল সামাজিক মাধ্যমে লিখেছে, ‘আমরা বছরের সেরা দল।’ পেশাদার যুগে এ নিয়ে আটটি বড় শিরোপা জিতল তারা। রোসারিও সেন্ট্রালের সভাপতি আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টসকে’ বলেছেন, ‘এই পরিকল্পনা গত কয়েক বছর ধরে চলমান, যাতে ভবিষ্যতে বার্ষিক চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করা যায়। এই টুর্নামেন্ট অ্পার্তুরা, ক্লাউসুরা এবং কোপা দে ক্যাম্পিয়োনেসের সঙ্গে যুক্ত হবে। বার্ষিক চ্যাম্পিয়ন ফিরবে, বর্তমান চ্যাম্পিয়নকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে
তিনি আরো যোগ করেন, ‘এটি আমাদের মতো একটি ক্লাবের জন্য পুরোপুরি প্রাপ্য, যারা প্রথম ম্যাচ থেকেই শেষ পর্যন্ত শীর্ষে ছিল, সবার থেকে বেশি পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে, এবং পুরো বছর শুধু দুটি ম্যাচ হেরেছি আমরা। আমরা খুব খুশি এবং গর্বিত। এই একটি ট্রফিরই অভাব ছিল আমাদের।’
আরও পড়ুন
| সান্তোসের হয়ে গোল করেও নেইমারের ক্ষমা প্রার্থনা |
|
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ডি মারিয়া রোসারিওতে ফিরেই ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘এখানে চ্যাম্পিয়ন হওয়া, এটি আমার একমাত্র লক্ষ্য। ফিরে আসার স্বপ্ন ছিল, তা পূর্ণ করেছি। এখন পরবর্তী লক্ষ্য হল সেন্ট্রালকে চ্যাম্পিয়ন করা, এবং এটিই আমার এবং আমার পরিবারের আকাঙ্ক্ষা।’
২০০৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর, রোসারিও সেন্ট্রালের ব্লু অ্যান্ড ইয়েলো জার্সিতে অভিষেক হয় ‘এল ফিদিও’ নামে পরিচিত ডি মারিয়ার। ইউরোপ পাড়ি দেওয়ার আগে ৩৯ ম্যাচে ছয়টি গোল করেন। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে পুরো ইউরোপ চষে বেড়িয়ে সেন্ট্রালে ফিরে এসে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্লাউসুরা টুর্নামেন্টে ১৫ ম্যাচে ৭টি গোল ও ৬টি অ্যাসিস্ট করেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫, ৮:২৩ পিএম

২০২৬ ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের আর বেশি দেরি নেই। বাছাইপর্বে ইতোমধ্যে জায়গা নিশ্চিত করেছে ৪২ দল। বাকি আছে ৬ দল। এর মধ্যে ইউরোপ থেকে ৪টি, আর আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ থেকে ২টি দল জায়গা পাবে মূলপর্বে।
ইউরোপীয় বাছাইয়ের ১২ দল সরাসরি বিশ্বকাপে উঠেছে। প্লে-অফে এসেছে আরও ১২ দল। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নেশনস লিগের সেরা ৪ গ্রুপ জয়ী। মোট ১৬ দলকে নিয়ে হবে প্লে-অফ।
সুইজারল্যান্ডের জুরিখে
আজ নির্ধারিত হয়েছে ইউরোপ ও আন্তঃমহাদেশীয় অঞ্চলের প্লে-অফের ড্র। ইউরোপীয় প্লে- অফে
চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি গ্রুপের ফাইনাল জয়ী
দল পাবে বিশ্বকাপের টিকিট।
ইউরোপিয়ান বাছাইপর্বের সেমিফাইনালে কে কার মুখোমুখি
গ্রুপ এ
ইতালি বনাম উত্তর আয়ারল্যান্ড
ওয়েলস বনাম বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা
গ্রুপ বি
ইউক্রেন বনাম সুইডেন
পোলান্ড বনাম আলবেনিয়া
গ্রুপ সি
তুরস্ক বনাম রোমানিয়া
স্লোভাকিয়া বনাম কসোভো
গ্রুপ ডি
ডেনমার্ক বনাম উত্তর ম্যাসেডোনিয়া
চেক প্রজাতন্ত্র বনাম আয়ারল্যান্ড
প্লে-অফের সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ২৬ মার্চ, আর ফাইনাল ৩১ মার্চ। চার গ্রুপের চার চ্যাম্পিয়ন দলই পাবে বিশ্বকাপের শেষ চারটি ইউরোপিয়ান স্পট।
আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ
খেলবে ৬টি দল। র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকায় ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো এবং ইরাক সরাসরি
আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফের ফাইনালে পৌঁছেছে।
সেমিফাইনাল ১:
নিউ ক্যালেডোনিয়া বনাম
জ্যামাইকা
বিজয়ী দলের পরবর্তী (ফাইনাল)
প্রতিপক্ষ: ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো
সেমিফাইনাল ২:
বলিভিয়া বনাম সুরিনাম
বিজয়ী দলের পরবর্তী (ফাইনাল)
প্রতিপক্ষ: ইরাক
২৩ থেকে ৩১ মার্চ মেক্সিকোর
গুয়াদালাহারা ও মন্তেরেতে হবে এই প্লে-অফ।

২০২৬ সালে ফিফা বিশ্বকাপ হবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে। এখন থেকে ঠিক ৭ মাস পর। ওয়াশিংটন ডিসিতে আগামী মাসের ৫ তারিখ হবে গ্রুপ পর্বের ড্র। প্রথমবারের মতো এবারের বিশ্বকাপ হবে ৪৮ দল নিয়ে। এর মধ্যে ৪২ দলের খেলা নিশ্চিত হয়েছে। উইয়েফা থেকে চার দল আসবে প্লে-অফ খেলে। আর মার্চ মাসে ইন্টার কন্টিনেন্টাল প্লে-অফ থেকে দুটি দল তাদের বিশ্বকাপ টিকিট কাটবে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা তাদের বিশ্বকাপ টিকিট নিশ্চিত করেছে, আছে তাদেরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল এবং ২০২৪ সালের ইউরো জেতা স্পেন। আগেরবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সও আসন্ন বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে।
এই টুর্নামেন্টই হবে লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ। থাকছেন লামিনে ইয়ামাল,ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, ওসমান দেম্বেলে এবং কিলিয়ান এমবাপের মতো তারকারা। তবে মেসির সঙ্গে তুলনা টানতে কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্ব আসরে দেখা যাবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে। টমাস টুখেলের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের দায়িত্ব থাকবে হ্যারি কেইনের কাঁধে। ডার্ক হর্সখ্যাত নরওয়ের হয়ে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ফুটবলের গ্রান্ডস্ট্যান্ডে আসছেন আর্লিং হলান্ড।
প্লে-অফ থেকে দুর্দান্ত কিছু নাম আসার চেষ্টা করবে এই বিশ্বকাপে। কিন্তু কিছু তারকাদের নাম এরই মধ্যে কাটা গেছে; যাদের দেশ বিশ্বকাপ খেলার রেস থেকে ছিটকে গেছে। যেখানে দুটি করে নাম আফ্রিকান, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার। যেসব তারকাকে দেখা যাবে না এবারের বিশ্বকাপে, তার ছোট একটি তালিকা দেওয়া হলো নিচে।
খিচা কাভারৎসখেলিয়া (জর্জিয়া)
২০২৪ ইউরোর অন্যতম সারপ্রাইজিং প্যাকেজ ছিল জর্জিরা। শেষ দল উঠার পেছনে দারুণ অবদান ছিল খিচার। কিন্তু প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) তারকা পারেননি তাঁর দল নিয়ে গ্রেটেস্ট শো-তে অংশ নিতে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে পাওয়া ৩-০ গোলের জয়ে জোড়া গোল ছিল কাভারৎসখেলিয়ার। কিন্তু স্পেন ও তুরস্কের সঙ্গে দুই ম্যাচে হারের পর সেই বুলগেরিয়ার বিপক্ষে ফিরতি দেখায় পরাজয় ১-২ ব্যবধানে। তাতে ‘ই’ গ্রুপ থেকে তৃতীয় হয়ে বিদায় ঘণ্টা বাজে জর্জিয়ার।
ব্রায়ান এমবেউমো (ক্যামেরুন)
ব্রায়ান এমবেউমোর জন্ম ফ্রান্সে। দেশটির হয়ে অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-২০ এবং অনূর্ধ্ব-২৩ এর হয়ে খেলেছেন। পরবর্তীতে নিজের বাবার দেশ ক্যামেরুনের হয়ে অভিষেক হয় সিনিয়র পর্যায়ে। কিন্তু তাঁর দেশ দল ক্যামেরুন লজ্জার পরাজয় বরণ করে তুলনামূলক দুর্বল কেপ ভার্দের বিপক্ষে। ম্যাচে ৯০ মিনিট খেলেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা এমবেউমো ও তাঁর সতীর্থ আন্দ্রে ওনানা। এর আগে ক্যামেরুন হারে ডি আর কঙ্গোর বিপক্ষেও। যে কারণে এবারের বিশ্বকাপে দেখা যাবে না ক্যামেরুনকে। অথচ আফ্রিকান অঞ্চল থেকে সবচেয়ে বেশিবার (৮বার) বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাদের।
দুসান ভ্লাহোভিচ (সার্বিয়া)
২০১৪ সালের পর এবারই প্রথম বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে ব্যর্থ হলো সার্বিয়া। এই ব্যর্থতা তাদের জন্য বিরাট লজ্জার। ঘরের মাঠে গত অক্টোবরে আলবানিয়ার কাছে ১-০ গোলে হারের পর দ্রাগান স্টকোভিচ হেড কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দেন। আনুষ্ঠানিকভাবে গত বৃহস্পতিবার ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ডের কাছে ২-০ ব্যবধানে হারের পর বিদায় নিশ্চিত হয় সার্বিয়ার। তাই জুভেন্টাস তারকাকে দেখা যাবে না ২০২৬ বিশ্বকাপে।
ডমিনিক সবোসলাই (হাঙ্গেরি)
গ্রুপ ‘এফ’ ছিল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সবচেয়ে নাটকীয় এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণদের মধ্যে একটি। আর্মেনিয়াকে ৯-১ গোলে হারিয়ে শীর্ষস্থান অর্জন করে পর্তুগাল। কিন্তু ১৬ নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কঠিন লড়াইয়ে ২-৩ ব্যবধানে হার মানে হাঙ্গেরি। তাদেরকে টপকে দুইয়ে অবস্থান করে আয়ারল্যান্ড। তাতে প্লে-অফ থেকে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে আয়ারল্যান্ড। আর বিদায় নিশ্চিত হয়েছে হাঙ্গেরির। টটেনহ্যাম হটস্পারের সাবেক তারকা এবং বর্তমানে এজে আল্কমারে খেলা ট্রয় প্যারোট হ্যাটট্রিক করেন আয়ারল্যান্ডের হয়ে। নিজের তৃতীয় গোলটা আসে যোগ করা সময়ের ৬ মিনিটের মাথায়। উল্লাসে ফেটে পড়েন তিনি; অন্যদিকে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাঙ্গেরির লিভারপুল মিডফিল্ডার ডমিনিক সবোসলাই। ড্র হলেও আশা বেঁচে থাকত হাঙ্গেরির।
২০২৬ বিশ্বকাপে থাকছেন না অ্যালেক্সিজ সানচেজ (চিলি), ভিক্টোর ওসিমেন (নাইজেরিয়া), বেঞ্জামিন সেসকো (স্লোভেনিয়া), কেইলর নাভেস (কোস্টারিকা), সারহু গুইরাস্যিরা (গিনি)।

ভারতকে ২২ বছর পর গত মঙ্গলবার হারায় বাংলাদেশ। ম্যাচে একমাত্র গোলটি শেখ মোরছালিনের। তবে এই গোলে বড় অবদান রাকিব হোসেনের। তাঁর দারুণ অ্যাসিস্টেই আসে ম্যাচে জয়সূচক গোলটি। খেলার পর নায়ক বনে যান মোরছালিন; অনেকটা আড়ালে ঢাকা পরে উইঙ্গার রাকিবের অবদান। ক্যারিয়ারজুড়েই অনেকটা নীরবে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন জাতীয় দল ও বসুন্ধরা কিংসের ২৭ বছর বয়সি তারকা ফুটবলার। ভারত ম্যাচে পাওয়া ঐতিহাসিক জয় এবং নিজের ব্যক্তিগত নানা বিষয়ে কথা বলেছেন টি-স্পোর্টসের সঙ্গে।
টি-স্পোর্টস: অবশেষে ভারতের বিপক্ষে জয়, তাতে আছে আপনার বড় অবদান। কেমন লাগছে জয়সূচক গোলে অ্যাসিস্ট করে?
রাকিব হোসেন: খুব ভালো লাগছে, কারণ ২২ বছর পর ওদের হারাইছি। তা ছাড়া ওদের সঙ্গে একটা দ্বৈরথ তো আছেই। এই ম্যাচ জয়ের জন্য সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করে। দেখেন খেলা দেখতে কত মানুষ আসছে এবং সারা দেশেই মানুষ টিভিতে খেলা দেখেছে। তো মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি তাই বেশি ভালো লাগছে। আমার কাছে ভালো লাগছে যে আমি গোলে অ্যাসিস্ট করছি। কিন্তু ওই সময়ে মোরছালিন ওখানে না আসলে তো গোল হতো না। ওর কৃতিত্ব বেশি।
টি-স্পোর্টস: প্রতি আক্রমণে সফল হতে আপনি, মোরছালিন, ফাহিমদের নিয়ে কি কোনো আলাদা অনুশীলন হয়েছিল?
রাকিব হোসেন: আমাদের আগের (নেপাল) ম্যাচের পর থেকেই এটা নিয়ে কাজ করেছেন কোচ (হাভিয়ের কাবরেরা)। সহকারী কোচ (ডেভিড) আমাদেরকে বলেছে যে ওরা (ভারত) সবাই অ্যাটাকে আসে, ওই সময়ে ওদের নিচের দিকে খেলোয়াড় থাকে না। এটার সুযোগ নিতে বলা হয়েছিল, মাঠে আমরা সেটিই বাস্তবায়ন করেছি।
টি-স্পোর্টস: মোরছালিনকে ক্রসটা দিয়ে আপনি মাটিতে পড়ে গেলেন, এরপর ওই দুই এক সেকেন্ডের ভাবনায় কি মনে হয়েছিল, মোরছালিন পারবে ভারতের গোলকিপারকে পরাস্ত করতে, কিংবা তাঁর ওপর আস্থা ছিল আপনার?
রাকিব হোসেন: হ্যা আমার ওর (মোরছালিন) উপর বিশ্বাস ছিল। জানতাম ও গোলকিপারের আগে বল পেলে গোল করে দেবে। আমি বাঁ পায়ে ক্রস দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু যখন পড়ে যাচ্ছিলাম তখন ডান পাঁ দিয়েই ক্রস দিয়ে দেই।
টি-স্পোর্টস: গোলের পর আপনাকে মোরছালিন কি বলেছে, বা আপনি মোরছালিনকে কি বলেছেন?
রাকিব হোসেন: আমি ওরে বলছি ধন্যবাদ, ভালো গোল করেছো। ও আমাকে বলেছে- ভাই ভালো একটা বল দিয়েছেন। আর গোলের পর তো সবাই অনেক মজা করে সেভাবে বেশি কথা তো হয় না।
টি-স্পোর্টস: অনেকে বলে, আপনাদের দুজনের রসায়ন ভালো। এটার রহস্য কি?
রাকিব হোসেন: ওর সঙ্গে আমার তো আজকে না অনেক আগে থেকেই ভালো বোঝাপড়া। ও বসুন্ধরা কিংসে যখন ছিল তখন থেকেই… এক জায়গায় হলে আমরা আমরা মজা করি। ক্লাবে এবং জাতীয় দলে ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক ভালো।
টি-স্পোর্টস: এদিন আপনার নিচে ছিলেন সমিত সোম। রাইট ব্যাকে সাদ উদ্দিন। বেশিরভাগ সময় এই দুজনের কাছ থেকে বল পেয়েছেন। সমিতের সঙ্গে আপনার বোঝাপড়া এখন কেমন?
রাকিব হোসেন: সমিতদা অনেক ভালো মানুষ, মনের মানুষ। উনি অনেক মিশুক, আমাদের সঙ্গে মিশে, কথা বলে; খাওয়া-দাওয়ার পর আমাদের সঙ্গে বসে। মাঠেও ওর সঙ্গে দারুণ কাটে। তাঁর কাছে বল দিলে নিশ্চিত থাকা যায় সে বলটা রাখবে, নয়ত যত কঠিন পরিস্থিতিই হোক ও বল নিয়ে বের হয়ে যায়। কিন্তু ওর খেলাটা ফুটে না, মানুষের হয়ত চোখে পড়ে না। কিন্তু সমিতদা অনেক বড় মাপের খেলোয়াড়। সে অ্যাটাকিংয়ে অনেক চান্স ক্রিয়েট করে।
টি-স্পোর্টস: আপনাকে বলা হয় এশিয়ার অন্যতম সেরা গতিময় উইঙ্গার। শুনেছেন এরকম কিছু বা এসব পৌঁছায় আপনার কাছে?
রাকিব হোসেন: আসলে এটা আমি যে শুনি নাই তা না। এবার আমার কোচও (কাবরেরা) এটা নিয়ে আমাকে বলেছে, আগে-পরেও অনেকবার শুনেছি। ম্যাচের পর সে (কোচ) আমাকে জানায় যে তুমি বল পায়ে আজ ৩৪ কিলোমিটার গতিতে দৌড়েছো, শাবাস।
টি-স্পোর্টস: কোচের কাছ থেকে এমন প্রশংসা পেয়ে কেমন লাগছে?
রাকিব হোসেন: ভালো করলে মানুষ ভালো বলবে। তখন সবকিছু ভালো লাগে। দল জিতছে এখন মানুষ প্রশংসা করছে, আমার প্রশংসা করছে, শুনতে ভালোই লাগে। তাই চেষ্টা করি মাঠে যতক্ষণ থাকি ভালো খেলতে, দেশের জন্য খেলতে। অনেক সময় হয়, অনেক সময় হয় না। শেষ ম্যাচে যেমন হয়ে গেছে।
টি-স্পোর্টস: হামজা চৌধুরীর মতো একজন তারকা ফুটবলারের সঙ্গে খেলছেন, ড্রেসিংরুম শেয়ার করছেন, সবকিছুর অভিজ্ঞতা কেমন?
রাকিব হোসেন: কাল্পনিক, কাল্পনিক। কখনোই ভাবি নাই তাঁর (হামজা) মতো খেলোয়াড় আমরা পাবো এবং তাঁর সঙ্গে আমরা খেলতে পারব। অনেক ভাগ্যবান যে তাঁর সঙ্গে খেলতে পারছি। সর্বশেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে সেই আমাদের বাঁচিয়ে রাখছে। দেখেন ডিফেন্সে সে অনেক সাহায্য করছে। ভারতের একটা নিশ্চিত গোল সে ঠেকিয়ে দিছে। আগের ম্যাচগুলোতে সে গোল করছে। কিন্তু এই ম্যাচে তাঁর মধ্যে জয়ের ক্ষুধা দেখেছি।
টি-স্পোর্টস: ওই দিন জয়ের পর ড্রেসিংরুমে সমিত, তপু, সোহেল রানাদের নাচতে দেখা গেছে। ওই পার্টিতে আপনি ছিলেন না কেন, নাচতে না জানা, নাকি অন্য কারণে?
রাকিব হোসেন: না, না। আমিও নাচছি (হাসি)। আমিও ওখানে ছিলাম। আসলে আমি একটু পড়ে যোগ দিয়েছিলাম। মাঠে ভাইয়া আসছিল, ওনাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেরি হয়ে যায়।
টি-স্পোর্টস: ম্যাচ জয়ের পর উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং বাফুফে প্রেসিডেন্ট তাবিথ আউয়াল আপনাদের ড্রেসিংরুমে যান। কি বলছিলেন তাঁরা?
রাকিব হোসেন: ওনারা খুব অ্যাপ্রিশিয়েট করছে। বলছে তোমরা আজ ইতিহাস রচনা করছো। এই জয়টা আমাদের খুব দরকার ছিল। তখন এটা আমাদের খুব ভালো লাগছে।
টি-স্পোর্টস: অনেক সময় দেখা যায় পারফরম্যান্স করেও আপনি লাইমলাইটে নেই। আড়ালে থাকা কি আপনার নিয়তি, নাকি নিজেই চান না আপনাকে নিয়ে মানুষ আলোচনা করুক
রাকিব হোসেন: আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ না, থাকতে পছন্দ করি না। একটা পেজ (ফেসবুক) আছে কিন্তু ওটা আমি চালাই না। একটা ছোট ভাই চালায়। এমন না যে ওরে আমি ছবি দেই বা বলি তুই ছবি পোস্ট কর। ও নিজে থেকে কিছু পোস্ট করে। আমার ফেসবুক পেজ খোলা কিন্তু খেলায় আসার অনেক পড়ে। কারণ আমি এসব পছন্দ করি না। আমি চাই খেলায় মনোযোগ থাকুক।
টি-স্পোর্টস: বাংলাদেশ ফুটবল লিগে সর্বশেষ দুই মৌসুমে দেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ গোল আপনার (২০২৩-২৪ মৌসুমে ১০ গোল এবং ২০২৪-২৫ মৌসুমে ১১ গোল)। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকং ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আছে দুই গোল। এবার লিগে ব্যক্তিগত লক্ষ্য কি?
রাকিব হোসেন: গতবার আমরা লিগ জিততে পারি নাই। এবার ঘরোয়া সব ট্রফি জিততে চাই। আর ব্যক্তিগত লক্ষ্য বললে- আমি এবার আগের দুই মৌসুমের চেয়ে বেশি গোল করতে চাই।
টি-স্পোর্টস: এখন পর্যন্ত আপনার ক্যারিয়ারে সেরা ম্যাচ কোনটি?
রাকিব হোসেন: এই যে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেললাম এটাই আমার কাছে সবচেয়ে সেরা ম্যাচ। কারণ ওটা একটা ঐতিহাসিক ম্যাচ ছিল। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের এর আগে কিন্তু আমরা ভারতকে হারাতে পারিনি। এই টুর্নামেন্টে ওদেরকে প্রথমবার হারালাম।
টি-স্পোর্টস: একটা শিরোপা আবার কবে জিতবে বাংলাদেশ?
রাকিব হোসেন: ইনশা আল্লাহ আগামী সাফেই আমরা শিরোপা জিতব।
টি-স্পোর্টস: বাড়িতে আছেন। এবারের যাওয়াটা কি একটু ভিন্ন মনে হয়েছে?
রাকিব হোসেন: হ্যা। কারণ সবাই খুশি, ভারতকে হারাইছি না? তাঁরা যেন ঈদের মতো খুশি।